তখন
নদীর শরীর ছিল ক্ষীণাঙ্গী তন্বীর মত
দু’তীরে 888sport sign up bonusর নামে জেগে ছিলো চর
চরের কাদায়-জলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিলো চাঁদ,
আর পূর্ণিমা বলেছে এসে, বেঁচে থাকো আরো কিছুকাল।
(‘এই রাত, এই নদী’, বিশ্বজিৎ চৌধুরী)
অলকেশ ঘোষ পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় একা থাকতে ভালোবাসেন। নদী আর পাহাড়, সাগর আর প্রকৃতি সবই অলকেশ অনুধাবন করেছেন। তাঁর প্রতিটি ক্যানভাসে প্রকৃতির রং খেলা করে। তাঁকে আমরা একজন প্রকৃতিবাদী 888sport live chatী হিসেবে আখ্যা দিতে পারি। (life and works)
গ্যালারি কসমস প্রকাশিত তাঁর লাইফ অ্যান্ড ওয়ার্কস বই থেকে আমরা অলকেশ ঘোষকে খুঁজে পাই ছয়টি ধাপে 888sport live chatচর্চারত। একাগ্রমনে এই ছয়টি বিষয় বা অধ্যায়ে তিনি মনোনিবেশ করেছেন। এ-প্রদর্শনীতে তাঁর আঁকা পুরনো কিছু কাজ রয়েছে, সেই সঙ্গে অতিসম্প্রতি আঁকা কাজের উপস্থিতি দর্শকদের কাছে তাঁর 888sport live chat সৃষ্টির ক্ষমতাকে নতুন করে জাহির করে দেয়। ছয়টি পর্যায়ের কাজগুলো নিয়ে অল্পবিস্তর আলোচনা করলে বোঝা যায়, তিনি জয়নুল, কামরুল, সফিউদ্দীন, কিবরিয়া, আমিনুল ইসলাম, কাইয়ুম চৌধুরীর পথ ধরেই হাঁটেন। পশ্চিমা 888sport live chatীদের অনুকরণে অলকেশের ক্যানভাস তৈরি হয়নি। পাশ্চাত্যের অনুসরণ ছিল, তিনি সরাসরি রং, আলোছায়া, ফর্ম ধার করেননি। অলকেশ এ-প্রদর্শনীতে রেখাচিত্র খুব একটা রাখেননি, যদিও তাঁর আশির দশক থেকে শূন্য দশকের প্রথম দিকের কিছু ড্রইংয়ে অভিনব রেখার প্রয়োগ দেখা যায়। দ্রম্নত টানের কালি-কলম আর কালির ধোয়ায় বিষয়ের বাস্তবধর্মী আকৃতি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ২০০৫-এর আঁকা কিছু কালি-কলমে ওয়াশ নদীতে ভাসমান নৌকা ও মানুষ জীবন্ত আবহ তৈরি করেছে। অন্যদিকে তাঁর অনেক আগে কিছু কলমের কাজে দেখা যায় আলোকচিত্রের আবহ তৈরির প্রবণতা। আশির দশকের রেখাচিত্রের সঙ্গে সাম্প্রতিক রেখাচিত্র অলকেশ অনেক বেশি দ্রম্নত রেখার ব্যবহার ও প্রতীকাশ্রিত করে তুলেছেন। প্রতিকৃতি চিত্রে অলকেশের লক্ষ্য থাকে এক দেখাতেই প্রতিকৃতিটি চেনা। ড্রাই প্যাস্টেল থেকে শুরু করে জল, তেল, অ্যাক্রিলিক সব মাধ্যমে অলকেশ ঘোষ প্রতিকৃতির মানুষটিকে প্রাণবন্ত করে তোলেন। তাঁর প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসংখ্য প্রতিকৃতিই আমাদের সে-কথাটি জানিয়ে দেয়। ১৯৯০-৯৭ পর্যন্ত সাপ্তাহিক বিচিত্রার প্রচ্ছদপটে প্রকাশিত প্রতিকৃতিগুলো তাঁর প্রতিকৃতি চিত্রের মুন্শিয়ানা সম্পর্কে জানান দেয়।
প্রকৃতির বন্দনায় অলকেশ বারবার নিজেকে প্রকৃতিতে নিয়ে যান। প্রকৃতির কাছে গিয়ে তিনি ছাত্রজীবনে যে-রং আত্মস্থ করেছিলেন, তার অন্তর্গত সত্য আজ পর্যন্ত ক্যানভাসে প্রকাশ করে যাচ্ছেন। প্রকৃতির ছবি আঁকতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি বেছে নিয়েছেন উড়ে যাওয়া পাখির ঝাঁক। এ-প্রদর্শনীর সবচেয়ে দৃষ্টিগ্রাহী ছবিটিও হলো ‘ফ্লাইং বার্ডস’। এ-ছবিটি ২০১০ সালে আঁকা।
অগণিত পাখি বিকেলের আকাশে উড়ে যাচ্ছে। নিচে প্রকৃতিতে পাখি আর আকাশের ছায়া ক্যানভাসকে আলাদা রূপ দিয়েছে। গভীর বনজঙ্গল আর উদার আকাশ প্রকৃতির সব অংশ নিয়েই অলকেশ ছবি আঁকেন। ইম্প্রেশনিস্ট 888sport live chatীদের প্রকৃতি নিয়ে আঁকা ছবিগুলোতে রঙের বুনটের সঙ্গে যেমন আলোছায়ার উপস্থিতি অনিবার্য ছিল, অলকেশের কাজেও সে-বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে। 888sport live chatী রফিকুন নবীর মতে, ‘অলকেশ 888sport live chatরচনার বিষয়টিকে আত্মার সঙ্গে মিশিয়ে নিয়েছেন। আর তাই অলকেশের কাজে আমরা প্রাণ খুঁজে পাই।’ প্রকৃতিতে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য ফুলের রং অলকেশ তাঁর ক্যানভাসে হাজির করেছেন দক্ষতার সঙ্গে। রঙের স্ট্রোক আর চড়া গতির রেখা ফুলেল ক্যানভাস প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
অলকেশ সবসময় গ্রামীণ জনপদ নিয়ে কাজ করেন। শহুরে জীবন তাঁর ক্যানভাসে সরব থাকে; কিন্তু গ্রামীণ জনপদ তাঁর কাছ থেকে হারিয়ে যায়নি। ১৯৮২ সালের কাজে যেমন নদীর প্রবহমানতা জলের ধোয়ায় প্রাণবন্ত করেছেন, তেমনি একেবারে হালের সুন্দরবন নিয়ে আঁকা জলরঙে তিনি প্রাণসঞ্চার করেছেন। 888sport live chatী মুর্তজা বশীর তাঁর জলরঙকে আত্মার স্ফুরণ হিসেবে উলেস্নখ করেছেন। প্রকৃতি নিয়ে, গ্রামীণ জনপদ নিয়ে আঁকা অসংখ্য কাজের মধ্য থেকে এবারের প্রদর্শনীতে রেখেছেন অল্পসংখ্যক ছবি। নদীকে নিয়ে অলকেশের দীর্ঘ ভাবনা আছে। তাঁর আঁকা একেবারে সাম্প্রতিক কাজে নদীর বুকে চলা নৌকার সারি আর আকাশকে চড়া রঙের প্রলেপে বুনটধর্মী আবহ দেখা যায়। জলরং, তেলরং, অ্যাক্রিলিকে আঁকা নদীর ছবিগুলো আমাদের দৃষ্টিকে স্বসিত্ম দেয়। পাহাড়ি জনপদ নিয়ে অলকেশ দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেছেন। ‘রিভার অ্যান্ড হিল’, ‘হিলি রিভার’, ‘বোটস ইন রিভার সাঙ্গু’ এমন অসংখ্য শিরোনামে অলকেশ ছবি এঁকেছেন।
পাহাড়ি নিসর্গের ছবিতে তিনি বাউস আই ভিউ থেকে বেশিরভাগ বিষয়কে দেখেছেন। পাখির দৃষ্টির পরিপ্রেক্ষেতেপাহাড়ের ওপর থেকে দেখা নদীর পরিবেশে যে রং আর রেখা থাকে এসব ছবিতে তিনি সেটি প্রকাশ করেছেন।
পাহাড়ি জনপদের মানুষ, বসতবাড়ি, এসবকে জীবন্ত করে তুলেছেন কোনো কোনো কাজে। কিছু কাজ একেবারে জলরঙের ওয়াশ পদ্ধতিতে করা, আবার কিছু কাজ তেলরং পদ্ধতিতে করা। অতীত ও বর্তমানের নগরকে অলকেশ চর্চা করেছেন নিবিড়ভাবে। 888sport appর একসময়ের রাজধানী সোনারগাঁর পানাম সিটিতে দাঁড়িয়ে থাকা ভগ্নপ্রায় দালানগুলো অলকেশের ক্যানভাসে হাজির হয়েছে নতুন রূপে। পুরনো দালানকোঠার সঙ্গে আধুনিক 888sport appকেও তিনি জীবন্ত করে তুলেছেন কিছু কাজে। দিনের প্রাণচঞ্চল 888sport appর সঙ্গে রাতের নিস্তব্ধ অল্প আলোর 888sport appকে তিনি এঁকেছেন সাবলীলভাবে। অলকেশ ঘোষের এবারের প্রদর্শনীটি সামগ্রিক কাজের সমাবেশ বলা যায়। দর্শক এক দেখাতেই অলকেশ ঘোষের কাজ সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন।
888sport apps জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী মিলনায়তনে গ্যালারি কসমস ও জাতীয় জাদুঘরের যৌথ আয়োজনে এ-প্রদর্শনীটি শুরু হয় গত ১৫ অক্টোবর এবং শেষ হয় ২২ অক্টোবর। r


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.