হিরণ মিত্র
তথাকথিত আকারহীন আকার, চোখের সামনে ভেসে-ওঠা একটা জটিল ক্রিয়া। সাধারণ যুক্তিহীন, কতগুলো আকার, পরতে-পরতে ভেসে বেড়াতে লাগল, কখনো কাছে এলো, কখনো দূরে সরে গেল, অ-দেখা, স্রোতের টানে, কী এক গতি, অদৃশ্যে ক্রিয়া করে চলেছে। এমন সব অল্প বয়সে, সেইভাবে ঘটত না। যা প্রবীণ বয়সে ঘটতে লাগল। যুক্তিগুলো শিথিল হয়ে যেতে লাগল। যেভাবে বেঁচে থাকা, নিশ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া যান্ত্রিক বাধ্যতামূলক, শরীর বয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো, রূপ বয়ে নিয়ে যাওয়া। একি রূপের বোঝা? অথবা রূপের সঙ্গে নতুন বোঝাপড়া? নতুন দৃশ্য কথোপকথন? কাদের প্রভাব? কেন এমন ভঙ্গি? আশ্বস্ত হওয়ার, আশ্রয় পাওয়ার ভঙ্গিটাই বা কী?
আধা শহরে, যেখানে আমার জন্ম, কৈশোর কাটানো, সেখানে জটিলতা প্রায় নেই, বিচিত্র এক স্বপ্ন আছে। ভবিষ্যৎ বলে কিছু একটা কাল্পনিক ব্যাপার আছে। একসময় জানা গেল, ওসব কিছুই নেই, ফিরে দেখারও নেই, সামনে দেখারও নেই। গাথা বা মিথ নির্মাণই আসল নির্মাণ। সেই নির্মাণে কিছু উপলক্ষ লাগে। এই মাত্র।
মনের নানা আলো-আঁধার নানা রূপ দেখাতে পারে, এই ভাবনারও জন্ম জানা ছিল না। হঠাৎই পাওয়া। একসময় রূপকে স্বীকার করে নেওয়া। এই স্বীকার করে নেওয়ারও কোনো পূর্ব প্রস্তাব ছিল কিনা বলা যাচ্ছে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, আকারে-আকারে সংঘাত, যাপন-বিচিত্রতা, মনুষ্যজন, তাদের আচার-ব্যবহার, নানা মাধ্যমের নিজস্ব নিয়ম, বে-নিয়ম, এগুলো প্রতিপাদ্য হয়ে যেতে লাগল অজান্তেই। তবে ওইভাবেই দেখা যাক। সামনের রাস্তাটা আঁধারে, রহস্যের জাল বুনছে। ওই পথটাই শ্রেয়, উত্তেজনা আছে, অনিশ্চয়তা আছে, বৈচিত্র আছে, একটা সুখ-অনুভব আছে। মিশে গেলাম ওই জলের স্রোতে।
আশ্রয় কেউ দেয়ও না, আশ্রয় কেউ পায়ও না। একটা দৃশ্য আশ্রয়ের কল্পনা আমরা বানিয়ে তুলি। ভাবি মাথার ওপর ছাদ আছে। আসলে ভ্রম। একবার কলকাতার বইমেলায়, অনেক ত্রিপলের ছাউনি দিয়ে ঢেকে রাখা, যে-জায়গাটায় পৌঁছলাম, সেখানটায় কোনো ছাউনি ছিল না। কালো আকাশ ছিল। কিন্তু আমি সারাক্ষণ ভেবে গেলাম, একটা ছাদের তলায় বসে আছি। একবারও মনে হয়নি একটা ছাদহীন, কালো আকাশ, কল্পিত ছাদ বনে আছে। বহু পরে উঠে পড়ার আগে, হঠাৎই বুঝলাম, মহাশূন্য একটা প্রকা- ছাদ। আমার চিত্র অনুষঙ্গ এমনই হঠাৎ আবিষ্কার। হঠাৎ একদিন জানলাম, আসলে আমি চিত্রীই নই। চিত্র নামক কিছু দৃশ্য অভ্যাস হয়তো আছে, ছবির মতো দেখতে কিছু ছবি হয়তো আমি আঁকি, আসলে যা সবই ভ্রম, কালো আকাশ। মহাশূন্য! তেমনি ভাস্কর্য রচনা, এরকমই ভ্রম। 888sport live chatীরা মশকরা করে, ভৎর্সনা করে। মানুষজন, দর্শক, তারাও এই ভ্রমে আক্রান্ত। তারাও ভাবে, ওগুলো ছবি। আসলে ছবির মতো দেখতে। যাঁরা 888sport live chatী, যাঁদের কদর আছে, বাজারদরও আছে, তাঁদের দেখে, আমরা নিজেদের মধ্যে অমন ছাদ রচনা করি। মূল্যমান ঠিক করি। দর্শক খুঁজি। সবই ভ্রম।
এই চিত্র-ভ্রম নানা চিত্র দেখায়। একটি বাদামের খাদ্য বা মূল বস্ত্ত সেই খোসার ভেতরে থাকে। বাইরের খোসাকে বর্জন করা হয়। তাকে ভাঙতে হয়। কিছু পাওয়ার জন্য কিছু ভেঙে ফেলা। আমরা তথাকথিত 888sport live chatীরা, 888sport live chatবোধ পাওয়ার জন্য এমন করেই নিজেদের ভাঙি। আমরা হয়ে যাই খোসা, ভেতরের ফলটি উপভোগ করেন প্রতিষ্ঠিত 888sport live chatীরা। সেই প্রতিষ্ঠিত 888sport live chatীদের ধারণ করার জন্য এমন সামাজিক আধার, খোসা, আবর্জনার প্রয়োজন পড়ে। খোসা বোধ নিয়ে নিজেদের কাজের আবর্জনার মধ্যে থাকতে-থাকতে, ভ্রমকে সত্য বলে চিহ্নিত করতে-করতে, লক্ষ করি, খোসার গায়ের বিচিত্র কারুকার্য। ভেতরের ফলটি কেমন, তার গন্ধ কেমন, স্বাদ কেমন সেসব ভাবনা পাশে সরিয়ে রেখে, খোসার গায়ের অপূর্ব চিত্র, ঘুরিয়ে-ঘুরিয়ে দেখে যাই। মোহিত হই। ইচ্ছে করে না, ফলটি হাত দিয়ে ভাঙি। ওই নকশার ছন্দকে কোনোভাবে বিঘ্নিত করি, চিত্ররসের আনন্দ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করি। এসব কিছুই ইচ্ছে করে না। অনন্তকাল ওই নকশা, কারুকার্য, হাতে ধরে বসে থাকি। আমার আর চিত্রী হওয়া হয়ে ওঠে না।
888sport live chatী, প্রতিষ্ঠিত, প্রথিতযশা, এসব কথার মধ্যে একটা শেস্নষ আছে, হয়তো সত্য, হয়তো সত্য না, একটা না-পাওয়ার বেদনা যেন উঁকি মারছে। কিন্তু সেই বেদনা থেকে চিত্র জন্মায় না। এই বেদনা বা দুঃখ কোনো যথার্থ প্রকাশ নয়। যেভাবে খোসার গায়ের কারুকার্য আমাকে মোহিত করে, সেভাবেই, দৃশ্য জন্মায় আমার মধ্যে কোনো যুক্তি বা পূর্বাপর ভূমিকা ছাড়াই। কেমন শূন্যতায় দৃশ্য দেখিয়ে যায় দৃশ্য। একটি ছোট্ট গ্রামে গিয়েছি একটি অনুষ্ঠানে। হঠাৎ অনুরোধ এলো, দৃশ্য রচনার। এগিয়ে এলো একটি সাদা ক্যানভাস, এবং কিছু রং। কোনো প্রস্ত্ততি ছিল না, ভাবনাও দানা বাঁধেনি। তাকিয়ে দেখলাম, বেশ কিছুটা, শুধু ঘন পারস্য দেশীয় নীল রং সামনে পড়ে আছে। একটা মোটা দেয়াল রং করার তুলিও চোখে পড়ল। এক খাবলা ঘন নীল সাদা ক্যানভাসের ওপর দিকটায় মাখিয়ে দিলাম। বেশ একটা আকাশ-চেতনা জেগে উঠল। তুলিটা জলে ধুয়ে, নিচের অংশটা ভিজিয়ে দিলাম। হালকা জোলো, নীলচে রঙের প্রলেপ পড়ল। সেই প্রলেপের ওপর একটা তুলির পেছনের অংশ দিয়ে কিছুটা রং ছেঁচে তুলে দিতে চাইলাম। একটা গাছের বেড়ে ওঠার আকৃতি, রেখা টেনে-টেনে, কর্কশ রেখা। গাছ ডালপালা মেলে থাকার চেহারা নিল। পাওয়া গেল সামান্য লাল রং, আঙুল দিয়ে বুলিয়ে দিলাম গাছের গায়ে। জল ধুয়ে ছায়ার মতো,
রং গড়িয়ে পড়ল, ওই ভেজা নীলচে অংশে। আমি আঁকিনি এই দৃশ্য। দৃশ্য আমাকে আঁকল। কোনো প্রতিষ্ঠা ছাড়াই। গিয়েছিলাম প্রাকৃতিক দৃশ্যভরা ছোট্ট সুন্দর একটা গ্রামে। মনুষ্যজনের আতিথেয়তা, অমন সবুজ ধানক্ষেত, হাওয়ার দোলা, গাছপালার মতো ছবি, নিজের মতো জেগে ছিল। আমি অংশ নিলাম তাতে। আমার কৌতূহল, ঔৎসুক্য, ভালোলাগা, মনের স্বস্তি, পড়ে থাকা পারস্য দেশীয় নীল, কোনো পূর্বপরিকল্পনা ছাড়াই, একটা অনুভবে নিয়ে যায়। সে-ই ঠিক করে দেয়, কতটা আঁকা হবে, কোথায় ইতি টানা হবে, সে-দৃশ্য কতটা ভাসমান থাকবে। 888sport sign up bonus, স্বপ্ন সবই এমন ভাসমান। তার কাল নেই। সময়-চেতনা নেই, মুখ অস্পষ্ট।
আমরাও এই শরীরে কাল-চেতনাহীন, অস্পষ্ট মুখে বাস করে যাই দু-দন্ড। স্পর্শ করতে চাই, একটা আস্তর। আঁকড়ে ধরি ভ্রমকে; রূপের ভ্রম, দৃশ্যের ভ্রম, সম্পর্কের ভ্রম, এমনকি আলো ও আঁধারের ভ্রমকেও।
888sport live chat প্রতিষ্ঠা তাই একটা ভ্রম। তবু এই ক্রিয়া থেকে আমাদের নিরস্ত করা গেল না। তা শুধু ভ্রমকে উন্মোচনের জন্য নয়, তাকে প্রশ্ন করার জন্যও নয়, তার মোহে মোহিত হওয়ার জন্যও নয়, এক আবিষ্টতা। একটা আরামবোধ। সেই বিবরণ। একটা সরুগলি। রেললাইনের ধারে। দিনে দুবার ট্রেন যায়। সারাদিন সুনসান লাইনটা একা থাকে। ছোট্ট একটা চায়ের দোকান। দোকানি গরম বড় একটা চায়ের ভাঁড় এগিয়ে দিলো। একপাশে পড়ে থাকা গুঁড়িটার ওপর গিয়ে বসলাম। চুমুক দিলাম চায়ে। আঃ! এমনই বড়ই আরাম চিত্র রচনায়। চিত্র বাতিলে।
শুধু জেগে থাকে একটা বোধ। রচনায় ছুঁয়ে থাকে। কোনো পূর্বপরিকল্পনা নেই। কখনো সাদা আকাশ, কখনো কালো আকাশ, দৃশ্য তার মতো ডানা মেলে। কোথা থেকে আসে, কোথায় যায়, কোনো নির্দিষ্ট ছক নেই।
কোনো একজন ভিনদেশি 888sport live chatী বলেছিল, অন্ধকার আকাশে পাখি যেমন চোখে না দেখলেও পৌঁছে যায় তার গন্তব্যস্থলে, তেমনি বিমূর্ততা রূপ খুঁজে নেয়। কিন্তু একথা তার জানা ছিল না, ওই পাখি বয়ে চলেছে এক অদৃশ্য চৌম্বক ক্ষেত্র, যা তাকে তার অভীপ্সায় পৌঁছে দিচ্ছে। কিন্তু বিমূর্ততারও এমন কোনো অভীপ্সা নেই। হয়তো কোনো অদৃশ্য চৌম্বক ক্ষেত্র তারও মধ্যে প্রতিষ্ঠিত আছে। এই প্রতিষ্ঠা সেই প্রতিষ্ঠা নয়, এটাই যা তফাৎ।
এই প্রতিষ্ঠাকে আবিষ্কার করার মধ্যে, অংশ নেওয়ার মধ্যেই জন্ম নেয় ওই পারস্য নীল, রক্তলাল, অন্ধকার-কালো, অতিউজ্জ্বল সাদা, মধ্যাহ্নের হলুদ, ঢলেপড়া সূর্য আলোর কমলা, ধন্যবাদ তাদের, প্রণাম।
দুই
নিজের সম্বন্ধে ধারণা, আর তাকে ঘিরে উপলব্ধি, মন্তব্য এ নিয়ে কিছুকাল আগে লেখার পর কয়েকদিন কেটে যায়। এক সকালে হঠাৎ ঘুম ভেঙে আবার নিজের সঙ্গে কথা বলা শুরু করি। এই ব্যক্তিগত ভাবনা প্রকাশ করার ইচ্ছে ছিল না।
ইতোমধ্যে দেখা করতে আসা, দিল্লিনিবাসী দূরের এক বন্ধুকে পড়ে শোনাই। দর্শনের ছাত্র, এই ছেলেটি একসময় আমাকে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করত। কিছুটা বিরক্তি, কিছুটা মজা, সেই প্রশ্নের সামনে দাঁড়াতে উৎসাহ দিত। ভালো লাগত, আসলে প্রশ্নই তো উত্তর। একটা সময় ডিসকোর্স চালু ছিল আমাদের সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীতে। কবি, গাইয়ে-বাজিয়েদের সঙ্গে চিত্র-আলোচনা। ভাবনার নানা স্রোত বইতো তখন। পারিপার্শ্বের সঙ্গে কথা চালানো।
একজন যে-মাপেরই 888sport live chatী হোক, বা যে এই চর্চায় ব্যস্ত, তার তাগিদ কোথা থেকে আসে। মোটিভেশন। একতরফা, একক চেষ্টায়। নিজস্ব কল্পনায়, শুধু 888sport live chatের জন্ম হয় না। ‘অপর’ এক বিশেষ অবস্থান নিয়ে থাকে। এই ‘অপর’কে স্বীকার করে নেওয়া, তার উপস্থিতি অহরহ টের পাওয়া, তার দ্বারা উসকানি পাওয়ার আগ্রহ, আমার দীর্ঘদিনের চাহিদা, ইদানীং সেই চাহিদা বিশেষ আর পূরণ হচ্ছে না। প্রশ্ন করে কেউ আমাকে আর বিব্রত করছে না। উসকানি বা প্রভোকেশনের অভাব টের পাচ্ছি দিন-দিন।
ওপরের এই ভাবনা বিশেষ স্বীকৃত নয় 888sport live chatমহলে। 888sport live chatী সাধারণ অর্থে নিজের সিদ্ধিতে যখন পৌঁছান তখন তাঁর সমস্ত কর্মই বিশেষ প্রকাশ হয়ে ওঠার কথা। আমার ভাবনা এখান থেকেই বাঁক নেয়। আমি একটা ঘর্ষণ ক্রিয়াকে তার জন্মের উৎস হিসেবে দেখি। বিরোধ, বিত-া, নানা অভিমুখ, 888sport live chatের মধ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে – এটা আমার বিশ্বাস।
জীবন সাধারণভাবে বয়ে চলে। তার নিজস্ব এক ছন্দ ও চাহিদা আছে। পরিপার্শ্ব যেমনই হোক, ভিন্ন-ভিন্ন সমাজ, তার আচার, আচরণ ছায়া ফেলতে চায়, 888sport live chatের চৌহদ্দিতে। তবু কি ছায়া ফেলে? চেতনা একটা বড় ভূমিকা নেয়। চেতন, অব-চেতন, স-চেতন। নানা অবস্থানে নিয়ে যায় 888sport live chatীকে। আমি রচনার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ি, স্বপ্নে ভিন্ন বাস্তব দেখা দেয়। ভিন্ন রচনা আমাকেই রচনা করতে থাকে। আমি স্বপ্নে তার সঙ্গ দিই।
হতাশা, ক্ষক্ষাভ, উষ্মা, এসব ব্যবহারিক বাহ্যিক, অভিপ্রকাশ তখন গৌণ। রচনার অমোঘ আকর্ষণ। চৌম্বক ক্ষেত্র, দ্রম্নত নিয়ে যায়, অনাবিষ্কৃত একটা ক্ষেত্রভূমিতে, যেখানে জমে আছে বিস্ময়। অপার বিস্ময়, কৌতূহলই আসল সূত্র। বৌদ্ধিক ও দার্শনিক অনুভব। এ সবকিছুর অলক্ষক্ষ্য ক্রিয়া করে যায়। অনেক গভীর থেকে উঠে আসে বোধ, উপলব্ধি, দৃশ্য, রেখার গতি, তার ছন্দ, রঙের মনস্তত্ত্বের নানা কাহিনি। সাধারণভাবে একনজরে একে উপলব্ধি নাও করা যেতে পারে, আবার চকিতে সে কিছু সংকেত, কিছু বার্তা হাওয়ার ঝাপটার মতো ছড়িয়ে দিয়ে যেতেও পারে, মূল বিষয় মন ও শরীরের এক তালে, ছন্দে, পরিপূরক হয়ে ওঠা। আমি দর্শক হিসেবে কতটা আগ্রহী, ওই ভাষা ওই সংকেতকে স্পর্শ করার জন্য? ছুঁয়ে দেখার আনন্দ আমাকে কতটা বিভোর করে। সমস্যার শুরু এই সূত্র থেকেই। একটা বৃত্ত সম্পূর্ণতা পাওয়ার আগ্রহ আমার মধ্যে থেকেই যায়।
দর্শকও একজন 888sport live chatী। সেও রচনাকার। আমি 888sport live chatী হয়তো মধ্যস্থতা করছি। আমার রচনাটির উপলক্ষ করে। 888sport live chat, 888sport live chatী ও দর্শকের অদৃশ্য বৃত্ত সম্পূর্ণ হয় তখনই, যখন সে আগ্রহভরে অংশ নেয় আমার 888sport live chatকর্মটির সামনে। এ-কথা বোঝাতে হয়তো আমি অসমর্থ, আমার প্রিয় দর্শকদের যে দীর্ঘপ্রক্রিয়া, উপলব্ধি, পরিশ্রম ঘিরে আছে, একটি 888sport live chatকর্মের শরীরে, তাকে এক লহমায় হঠাৎ করে বুঝে ওঠার কিছু অন্তরায় আছে।
চিত্র নির্বাক। আক্ষরিক অর্থে। কিন্তু সত্যিই কি সে নির্বাক? তার ভাষা দৃশ্যভাষা, দৃশ্যেরও সংলাপ আছে। তারও স্বর প্রক্ষেপণ আছে। বহুদূর বিসত্মৃত হয় সেই প্রক্ষেপণ। দর্শক তাই একপ্রকার শ্রোতাও। সেও পাঠ নেয় 888sport live chatকর্মের। যেসব ইন্দ্রিয়, তার যে ভিন্ন-ভিন্ন ক্রিয়া, শারীরিক, তারাও সীমাকে অতিক্রম করে। সে নানা ভূমিকা নিতে থাকে। এই অভ্যাস, এই চর্চা, এই রীতির অভাব আজ ঘটেছে বলে, 888sport live chat তাৎক্ষণিক, সংবাদসর্বস্ব, উত্তেজক, যৌন উত্তেজক নানা পন্থাকে আশ্রয় করছে। 888sport live chatের মধ্যে স্থিতি হারিয়ে যাচ্ছে। আমার হতাশা তাই নির্দিষ্ট।
আমার চিত্র-রচনার উৎস বেশ কিছুটা বিচিত্র, প্রথাবিরুদ্ধ। দীর্ঘ নানা নৃত্য বা অভিনয় কর্মশালায় যুক্ত থাকতে-থাকতে, শরীরী ভাষা আমার দৃশ্যভাষার চৌহদ্দিতে ঢুকে পড়েছে। সবকিছুই তখন অনুষ্ঠান মনে হতে থাকে।
চিরাচরিত 888sport live chat অভ্যাসের বাইরে, একটা উঠোনের জন্ম হয়। যেখানে ঘটে যেতে থাকে জীবনের নানা বাঁকের অপ্রচলিত অভিপ্রকাশ। কখনো অক্ষরের রূপে, কখনো স্থাপত্যের রূপে, কখনো আলো-আঁধারের রহস্যের রূপে, তারা নিজেদের দেখিয়েই চলল। প্রচলিত বিমূর্ত রচনা নিয়ে যে ধারণা, অর্থাৎ সাযুজ্যকে স্তরে-স্তরে বিনির্মাণ করতে-করতে মিতব্যয়ী বিমূর্ততার জন্ম, যাকে পরিভাষায় বলে প্রসেস অব এলিমিনেশন, আমার কাজ ঠিক তার বিপরীতে, প্রসেস অব অ্যাডিং বা সংযুক্তিকরণের মধ্য দিয়ে রূপ-আবিষ্কার, বিস্মিত হওয়া প্রাণশক্তিকে হঠাৎ খুঁজে পাওয়া। সেখানেই বিতর্ক, সেখানেই বিপত্তি।
বিশ্ব জুড়ে এর কোনো জাতিভেদ নেই। নানা সমাজের নানা সংস্কার হয়তো আছে, সমাজের সংস্কৃতির ছায়া নিশ্চয়ই পড়ে, দৃশ্য রচনায়, কিন্তু মনের গহনে, যে-অনুভবের জগৎ আশ্রয় নিয়ে আছে, তার সঙ্গে সহবাস করতে হয়। এই সহবাসে অপূর্ব এক ছন্দের সন্ধান পাওয়া যায়। যে-ছন্দায়িত থাকে, প্রতি মুহূর্তেই, তাকে বিশেষভাবে, বিশেষ মুহূর্তে খুঁজে নিতে হয় না, সেই ছন্দকে। সে স্বতঃস্ফূর্ততায় ভরপুর বলেই, আপনাআপনি ভঙ্গিমায় জাগ্রত থাকে। থাকতে বাধ্য হয়।
বিষাদ, ভারাক্রান্ত মন, বিচ্ছিন্নতা, তাকে আরো গহনে ভিন্ন আবিষ্কারে কৌতূহলী করে তোলে।
সে তখন নিজের রচনাতেই আবিষ্কার করে, যেন জলোচ্ছ্বাসের মধ্যে জেগে থাকা এক দ্বীপপুঞ্জকে। দর্শক সেই নাম-না-জানা দ্বীপের হাজারো অজানা পথে নিজেকে আবিষ্কার করতে-করতে অনুভবের ভিন্ন মাত্রায় যাত্রা করে। এমনি আমি ভেবে যাই। এই আকাঙক্ষায় কোনো খাদ নেই। কোনো বানানো অসিস্ত নেই। যদিও কথিত আছে আমাদের সমস্ত মননই এক প্রক্ষেপণ। প্রক্ষেপিত উইশফুল থিংকিং, আমাদের বিভ্রান্ত করে তবু আমরা নিরস্ত হই না।
‘888sport live chat কী এবং কেন’র সঙ্গে 888sport live chatী এমনই অংশ হয়ে ওঠে। তার আর অন্য অসিস্ত কল্পনা করা যায় না। এক রাতে স্বপ্নে কথা বলছিলাম কোনো এক মুখচেনা যায় না, এমন ব্যক্তির সঙ্গে। বোঝাতে চাইছিলাম দূরসমুদ্রে জেলে মানুষটি একটি সামান্য নৌকাতে কীভাবে ভার সামলে চলেছে, উত্তাল সমুদ্রের ঢেউয়ের মধ্যেও। বলছিলাম, তখন মানুষটি সমুদ্র বনে গেছে। সমুদ্র কি কখনো সমুদ্রে ডুবে যায়? এই যে মানুষটি যে প্রকৃতির অংশ সমস্ত সমুদ্রকে ধারণ করেছে শরীরে, দীর্ঘ অভ্যাসে, দীর্ঘ যাপনে এমন এক অপূর্ব ক্ষমতার অধিকারী সে! তেমনি চিত্র, চিত্রীকে চিত্র বানায়। দীর্ঘ যাত্রাপথে, বিভেদ ভুলে চিত্রে সমস্ত গুণ ধারণ করে নেয়। চিত্রীর নিজের মধ্যে অন্তত এটাই তার অভীপ্সা, চাহিদা। তা পূরণ হবে কি হবে না, তার জন্য অনন্ত অপেক্ষা, তার।
চিত্র থেকে চিত্রী যেমন বিচ্ছিন্ন হয়, তেমনি একাত্ম হওয়া। এই ক্রিয়া, প্রক্রিয়াই তাকে জাগ্রত করে রাখে, দীর্ঘ জীবন দেয়, মৃত্যুর পরেও। r

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.