মুক্তিযুদ্ধের কলকাতার মন – একটি নব-পরিচয়

মন তো মানুষেরই হয়। তা বলে কি জনপদের কোনো মন থাকতে নেই? মুশকিল হলো, জনপদবাসী কোনো একক নয়, সমষ্টি। সকলের মন একই রকম কলে ছাঁটা হবে, একই ক্ষুরে সবাই মাথা কামাবে – এমনটা ভাবার কোনো সংগত কারণ দেখি না। ইতিহাসের পাতা তলিয়ে দেখলে টের পাই, যারাই এমনটা ভেবে বসেছেন তারাই ডুবেছেন। এমনকি যুদ্ধ বা রাষ্ট্রবিপ্লবের মতো সময় – যখন মন এক বিশেষ মাদক প্রবণতায় চালিত হয় – তখনো মন একমাত্রিক হতে পারে না। কলকাতার মতো বহুধাবিভক্ত নগরের বেলায় ওই একমাত্রিকতার তত্ত্ব একেবারেই খাটে না। বছরখানেক ধরে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের কলকাতা নিয়ে খোঁজখবর করতে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতা বারংবার হলো। বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তান-888sport appsের মুক্তিযুদ্ধ সেদিনের কলকাতার বুকে কোন অভিঘাত আনল, তার তত্ত্বতালাশ করতে গিয়েও অনেকান্ত উপলব্ধি হলো।

অতিমারির টানাপড়েনের দরুন একাত্তরের কলকাতার এই অনেকান্ত মনকে নতুন করে বোঝার কাজ পূর্ণতা পেল না। সভাসমিতির অনুকূল পরিবেশ ছিল না। কলকাতায় 888sport apps উপদূতাবাস বা কলকাতা প্রেস ক্লাব বা হালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর তৎপরতায় যা হয়েছে তা নিতান্তই ঔপচারিক। এসব আয়োজন জড়ো হওয়া দর্শক-শ্রোতার দরবারে কোনো তাকলাগানো সূত্র সরবরাহ করেছে – এমন খোঁজ পাইনি। কলেজ-ইউনিভার্সিটি স্তরে কিছু উদ্যোগ শোনা গেলেও তা জুম বা গুগলমিটের মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে হয়েছে। এ-ধরনের ওয়েবিনার দুই বাংলাকে আরো কাছে আনার মোক্ষম সুযোগ দিলেও তা সারস্বত আঙিনার মুষ্টিমেয়র মধ্যে আটক। এর বাইরে বড়ো ধরনের গবেষণার কোনো খবর নেই। বলাকা, এবং জলঘড়ি, নবান্ন-এর মতো কয়েকটি লিটল ম্যাগাজিনের বিশেষ 888sport free bet বা ক্রোড়পত্র বাদ দিলে একাত্তর তো কোন ছার, দেশ হিসেবে 888sport appsের সুবর্ণজয়ন্তীকে উদ্‌যাপনের লগ্নে কলকাতা যে শীতলতা দেখাল তা কারোর মনোবেদনা, কারোর মনঃক্ষুণ্ন হওয়ার রাস্তা খুলে রেখেছে।

অথচ 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একাত্তরের কলকাতা বা ব্যাপকার্থে পশ্চিমবঙ্গ যে কত আলোড়িত ছিল, পক্ষে-বিপক্ষে তা কত উত্তাপ সঞ্চার করেছে, তা ওয়াকিবহাল বাঙালিমাত্রেই জানেন। ছাপার অক্ষরে তার অসংখ্য সাক্ষ্য রয়ে গেছে। এর মধ্যে একটিকে আজ বিশদ বিশ্লেষণের জন্য বেছে নিতে চাই। এটি পরিচয় পত্রিকার ‘বর্ষ ৪১’-এর দ্বিতীয়-তৃতীয় যুগ্ম 888sport free bet বা ‘শারদীয় ১৩৭৮’ 888sport free bet। সে আমলে বামপন্থী ধারার পত্রিকার মধ্যে পরিচয় দুই বাংলাতেই সমাদর পেত। মতাদর্শের দিক থেকে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়ার ঘনিষ্ঠ হলেও তা দলীয় মুখপত্র ছিল না। আজো নয়। সবচেয়ে বড়ো কথা, দুই বাংলার বিদ্বৎসমাজের একটি প্রভাবশালী অংশ এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের কলকাতায় পরিচয়ের ৮৯ মহাত্মা গান্ধি রোডের ঠিকানা হয়ে উঠেছিল কলকাতায় আগত লেখক-888sport live chatী-888sport live footballিকদের অন্যতম ঘাঁটি। এমনকি কলকাতার একেবারে কেন্দ্রে ১৪৪নং ধর্মতলা স্ট্রিটে মুক্তিসংগ্রামী 888sport live chatী-সংস্থার মহলা ঘরের যাবতীয় রসদ জুগিয়ে যেতেন পরিচয় গোষ্ঠীর উদ্যোগী সদস্যরা। তাঁদের মধ্যে পরিচয়ের দুই সম্পাদক দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তরুণ সান্যাল ছিলেন অগ্রণী। তখন পরিচয়ের উপদেশকমণ্ডলীতে ছিলেন গিরিজাপতি ভট্টাচার্য, হিরণকুমার সান্যাল, সুশোভন সরকার, অমরেন্দ্রপ্রসাদ মিত্র, গোপাল হালদার, বিষ্ণু দে, চিন্মোহন সেহানবীশ, সুভাষ মুখোপাধ্যায় ও গোলাম কুদ্দুস। বাঙালির সাংস্কৃতিক ইতিহাসের চর্চা করেন এমন কাউকে এই বিদগ্ধ চিন্তাবিদদের পরিচয় দিতে হবে না। পরিচয় আজ একানব্বই বছরে পা দিয়েছে। সদ্যপ্রয়াত দেবেশ রায়, অরুণ সেন, শঙ্খ ঘোষ শেষনিশ্বাস ফেলার মুহূর্ত অবধি পরিচয়ের উপদেশকমণ্ডলীতে ছিলেন।

এমনিতে বাংলা আশ্বিন বা গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডারের অক্টোবর মাসের মধ্যেই শারদীয় 888sport free bet বেরোনোর চল থাকলেও সেবার পরিচয়ের এই 888sport free bet বেরিয়েছিল ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বরের কিছুদিন পর। হয়তো ১৯৭২-এর জানুয়ারিতে। এর প্রমাণ এর ৩৩২ পাতায় আছে। দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলমে ‘মণি সিং-এর জীবনের একটি অধ্যায়’ নামে একটি রিপোর্টাজের সূচনায় দীপেন্দ্রনাথ

লিখছেন –

পূর্ব পাকিস্থানে (বর্তমান বাঙলাদেশ) হাজংদের সশস্ত্র সংগ্রামের নায়ক এই মানুষটিকে আয়ুব আমলে তাঁর দেশবাসী জেল ভেঙে ছিনিয়ে আনে। ইয়াহিয়া আবার তাঁকে বন্দী করলেও ২৫এ মার্চের পর স্বাধীন বাঙলাদেশের রাজশাহী জেল থেকে তিনি বেরিয়ে আসেন।

তারপর নতুন ইতিহাস। আজও তার নির্মাণ চলছে। এবং এখনও তিনি তার সঙ্গে একই ভাবে যুক্ত।

সম্প্রতি গঠিত বাঙলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা-পরিষদে তিনি বাঙলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধি। আর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নায়ক।

পত্রিকা থেকে হুবহু তুলে দেওয়া এই উদ্ধৃতি থেকেই স্পষ্ট যে পরিচয়ের এই 888sport free bet যখন ছাপাখানায় যাচ্ছে তার আগেই শেখ মুজিবুর রহমানকে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক 888sport apps পথ চলতে শুরু করেছে। উদ্ধৃতির আরো দুটি অংশে পাঠকদের নজর ঘোরাতে চাইব। এক, ‘বাঙলাদেশ’ বানানটি। এখন ‘ঙ’ একেবারেই উঠে গেছে। তখন ‘888sport apps’ ও ‘বাঙলাদেশ’ দুটি বানানই চালু ছিল। দুই, মণি সিংহকে ‘মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নায়ক’ হিসেবে তুলে ধরা।

বরাবরই সমাজ-888sport live football-রাজনীতি-অর্থনীতি-সংস্কৃতি নিয়ে 888sport live ছেপে এসেছে পরিচয়। সমগুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে গল্প, 888sport app download apk। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দ তাতে অন্তরায় হয়নি। পূর্ব পাকিস্তানের মাটিতে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন এমন অনেকের লেখা পরিচয়ের আলোচ্য 888sport free betয় আছে। যেমন ‘এক চিল্‌তে কালো কাপড়’ শিরোনামে একটি দীর্ঘ 888sport live লিখেছেন রণেশ দাশগুপ্ত। ‘স্বপ্নের সানুদেশে’ শিরোনামে 888sport app download apk লিখেছেন আল মাহমুদ। 888sport live footballিক মূল্যমানে এই 888sport free betটি অতীব সমৃদ্ধ। এই আলোচনায় আমরা একেকটি লেখার সবিস্তার বিশ্লেষণে যাব না। বেছে নেব সেইসব লেখা যা দিয়ে একাত্তরের কলকাতার মন পড়ে নেওয়া যায়।

দুই

‘এই মর্মে অভিযোগ উঠেছে যে পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবীরা ওপার বাঙলার মানুষের জন্যে যেমন দরদে আত্মহারা হয়েছেন এপার বাঙলার মানুষের জন্যে তেমন মুখর নন। এপারে কি অনর্থ ঘটছে না! তাহলে এত উপেক্ষা কেন?’

অতি-সংবেদী এই কথামুখ দিয়ে ‘বুদ্ধিজীবীর বক্তব্য’ শুরু করেছেন অন্নদাশঙ্কর রায় (১৯০৪-২০০২ খ্রিষ্টাব্দ)। 888sport appsের বিদ্বৎসমাজে অন্নদাশঙ্করের অবস্থান মোটের ওপর অটুট। ওঁর ‘ভুল হয়ে গেছে বিলকুল/ আর সবকিছু ভাগ হয়ে গেছে/ ভাগ হয়নিকো নজরুল’ কালে কালে প্রবচনের মহিমা পেয়েছে। তবু এটুকু না বললেই নয় যে, ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসের আধিকারিক হিসেবে অন্নদাশঙ্কর দুই বাংলাকেই হাতের তালুর মতো জানতেন। পাশাপাশি সারস্বত চর্চাতেও অবিরাম ছিলেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির প্রথম সভাপতি হিসেবে অন্নদাশঙ্করের নির্বাচন এক অর্থে এরই স্বীকৃতি।

এহেন অন্নদাশঙ্কর যখন তাঁর সপ্তকে সুর বেঁধে 888sport liveের সূচনা করছেন তখন বুঝতে হবে ওপার বাংলা-এপার বাংলার দ্বন্দ্বসমাসের নির্মাণে সবটুকুই মিলনমধুর ছিল না, তাতে তিতকুটে স্বাদ না থাকুক অম্বলের ভাগ ছিল বলার মতো। এর মধ্যে ঘটি-বাঙালের পুরনো কাসুন্দি তো ছিলই। তাছাড়া পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতের মাটিতে আসা দেড় কোটি শরণার্থীর সিংহভাগই কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় থিতু হয়েছিলেন বলে সদর-মফস্বলের রোজনামচায় যে অবশ্যম্ভাবী পরিবর্তন এসেছিল তা সকলের কাছে অভিপ্রেত ছিল না। এ তো গেল সাধারণ জনজীবনের কথা; কিন্তু অন্নদাশঙ্করের বয়ান অনুসারে পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবীরা নিরঙ্কুশভাবে ‘ওপার বাঙলার মানুষের’ এই সংকটের দিনে ‘দরদে আত্মহারা’ হয়েছিলেন। অনেক ভেবে দেখেছি যে, পশ্চিমবঙ্গের পিকিংপন্থী বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে এ নিয়ে কিছু বিরোধী যুক্তি থাকলেও বুদ্ধিজীবীদের বেশির ভাগই ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শরিক।

কেন? অল্প কথায় এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন অন্নদাশঙ্কর।

বাঙলাদেশের অভ্যন্তরে গত চব্বিশ বছরে কী ঘটেছে-না-ঘটেছে সে-বিষয়ে আমাদের কারো কোনো সাক্ষাৎ অভিজ্ঞতা ছিল না। আনুপূর্বিক বিবরণও আমরা কেউ জানতাম না। ঘরের ওদিককার দরজাটা একরকম বন্ধ ছিল। বিশেষত মিলিটারি ডিকটেটরশিপ শুরু হবার পর থেকে। শেষের দিকে তো এমন হয় যে চিঠিপত্র যায়-আসে লণ্ডন বা নিউইয়র্ক ঘুরে। পত্রিকা তো একদম নিষিদ্ধ। রাশিয়ার লৌহযবনিকার কথা শুনেছি। সেটা কি এই বাঁশের যবনিকার চেয়েও দুর্ভেদ্য?

তথ্যপ্রযুক্তির এই রমরমার দিনেও আমরা উত্তর কোরিয়ার অন্দরমহল সম্পর্কে কিছুই জানি না। এমনকি চিনের মতো দেশের সেটুকুই জানি যেটুকু সেদেশের অনুমোদিত সংবাদ সংস্থা রাষ্ট্র করেন। কাজেই যে চব্বিশ বছরের কথা অন্নদাশঙ্কর বলছেন সে সময়সীমায় এতো অনচ্ছতার বাতাবরণ সত্যিই গড়ে উঠেছিল। নতুবা অন্নদাশঙ্করের মতো উঁচু দরের আমলার কলমে এ-ধরনের জবানবন্দি বেরোত না।

ফলে ২৫ মার্চের মর্মান্তিক ঘটনার পর থেকে পরিস্থিতি যেদিকে বাঁক নিল সেদিকে চোখ রেখে অন্নদাশঙ্করের মতো মানুষকে জনস্রোতে নেমে এসে প্রতিবাদ-সহমর্মিতা-প্রতিরোধের নেতৃত্ব দিতে হয়েছিল। অন্নদাশঙ্করের জবান অনুযায়ী –

বন্ধুরা একদিন এসে বলেন, “শেখ মুজিবর রহমানকে ওরা নকল বিচারের পর নির্ঘাত বধ করবে। আমাদের কথার ফল কিছু হবে বলে মনে হয় না, তবু এটা আমাদের কর্তব্য। এটুকু যদি না করি তার পরে মুখ দেখাব কী করে! মানুষের জন্যে মানুষের কি এইটুকুও করতে নেই।”

আমি অভিভূত হয়ে বলি, “অনেক আগে করা উচিত ছিল। আসুন, করা যাক।”

আমরা যা করেছি ঠিকই করেছি।

কোনো সাফাই গাওয়া নয়। নাম না করে আন্তোনিও গ্রামশি-কথিত অর্গানিক ইন্টেলেকচুয়ালদের ভূমিকা আমাদের মতো দেশে কতটা সদর্থক হতে পারে তা নিয়ে কিঞ্চিৎ সংশয় পোষণ করার পর 888sport liveের পরের অংশে অন্নদাশঙ্কর লিখেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের কোন অনর্থের দিক থেকে বুদ্ধিজীবীরা মুখ ঘুরিয়ে রয়েছেন।

মনে রাখতে হবে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তখন টালমাটাল দশা। কোনো সরকার স্থায়ী হচ্ছে না। যুবকদের এক উজ্জ্বল অংশ চাইছেন সমাজতান্ত্রিক চিনের ধাঁচে কৃষক বিদ্রোহের মহড়া দিতে। তাঁদের নকশাল বলে দেগে দিয়ে নির্মমভাবে অত্যাচার করার পরিবেশ তৈরি করেছে পুলিশ ও প্রশাসন। এর পাল্টা মার নেমে আসছে সাধারণ মানুষের ওপর। সন্ধের পর পথেঘাটে লোকজন কমে যাচ্ছে। বুদ্ধিজীবীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। এই অবস্থায় বুদ্ধিজীবীর ভূমিকা কী হবে? অন্নদাশঙ্কর লিখছেন – ‘শেখ মুজিবকে বধ করতে উদ্যত হলে কী করা উচিত সে বিষয়ে আমার ধারণ অতি স্পষ্ট কিন্তু একজন নিরীহ পথচারীকে অতর্কিতে আক্রমণ করলে আমার কী করা উচিত তা আমার ধারণাতীত।’ তাছাড়া মুখ খুললেও শাঁখের করাতের দশা। এদিকেও কাটে, ওদিকেও কাটে। এসব বিষয় তর্কসাপেক্ষ বলে, চট করে কোনো ঐকমত্যে পৌঁছনো যায় না। অথচ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ক্যাম্পাসের মধ্যেই গুলি করে মারা হয়েছে। শৌচাগারে গা-888sport app দিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। প্রাণসংশয় যেখানে প্রাত্যহিকতা, সেখানে ‘এপার বাঙলার মানুষের জন্যে তেমন মুখর’ না হওয়ার পেছনে কিছু যুক্তিসংগত কারণ বুদ্ধিজীবীদের কাছে ছিল।

অন্নদাশঙ্কর এখানে উল্লেখ না করলেও ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের মাটিতে যে বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞ হয়েছিল তারও ভয়ঙ্কর অভিঘাত ছিল পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবীদের মনে। সন্ত্রস্ত বাতাবরণই জন্ম দিয়েছিল নৈঃশব্দ্যের সংস্কৃতির।

অন্নদাশঙ্কর শেষ করেছিলেন এই বলে যে, ‘বুদ্ধিজীবীদের দিকে না তাকিয়ে জনসাধারণ যদি নিজের দিকে তাকায় তা হলে দেখবে যে জনমতই সবচেয়ে প্রবল শক্তি।’ তাঁর মতকে পত্রিকার একেবারে প্রথমে ছেপে পরিচয় বুঝিয়েছিল যে, এপার বাংলা-ওপার বাংলার সমকালীন রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বুদ্ধিজীবীদের মানসিকতার সংকট তাদের ভাবাচ্ছে।

তিন

তবে 888sport live নয়, 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধকে একাত্তরের কলকাতা কোন চোখে দেখছিল তার জলজ্যান্ত ছবি ধরা আছে পরিচয়ের এই ‘শারদীয় ১৩৭৮’ 888sport free betয় বেরোনো একটি গল্পে – সৌরী ঘটকের ‘যন্ত্রণা’। ছোটো নয়, বড়ো গল্প।

সৌরী ঘটকের নাম এই আলোচক আগে শোনেননি। বাজারচলতি 888sport live footballপঞ্জিতেও নামটি দুর্লভ। অথচ গল্পটি তাক-লাগানো। হাওড়া-ফারাক্কা প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কামরায় একদল যাত্রীর সফরনামা। নৈশযাত্রা। একদিকে কুড়ি-888sport cricket BPL rateের চার তরুণ, যাদের মুখপাত্র এই গল্পের কথক, নিবাস কাটোয়ার পরের স্টেশন গঙ্গাটিকুরি, পেশা শিক্ষকতা। অন্যদিকে তাদের পাঁচমিশিলি সহযাত্রীকুল, যাদের মধ্যে আলাদা করে নজর কাড়ছেন ‘সামরিক ঢঙে পোষাক পরা’ তিন যুবক। রাত যত গড়াচ্ছে তত যাত্রীদের মধ্যে কৌতূহল বাড়ছে। বাড়ছে উৎকণ্ঠা। একসময় জানা যাচ্ছে তিন যুবকের নাম ফজলে করিম, সামশুল আলম, আবদুল জব্বার। বাড়ি যথাক্রমে কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, 888sport app শহর। রাতের ট্রেনে তাঁরা চলেছেন বহরমপুর। সকালেই 888sport appsে ঢুকে পড়বেন পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যুঝতে।

কথায় কথায় দু-তরফের অপরিচয় কাটছে। আবার মুখোশের আড়াল খসে মুখ বেরিয়ে পড়ছে। কোনো মুখে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের রং লেগে। কোনো মুখে যুদ্ধের কবলে পড়া শোক থমথম করছে। গল্পের মাঝামাঝি কথক কবুল করছেন যে, ‘বাঙলাদেশ বলতে আমি বুঝি পশ্চিমবাঙলা, সেই বাঙালি বলতে পশ্চিমবাঙলার সাড়ে চার কোটি মানুষ। পূর্ব বাঙলার সাড়ে সাত কোটি মানুষ সম্পর্কে আমার ধারণা ওরা সব গরিব মুসলমান, জটিল রাজনৈতিক তত্ত্বের ওরা বোঝেই বা কি, আর করবেই বা কি? ভাষা নিয়ে গুলি চলেছে কি হরতাল হয়েছে তো কি হয়েছে। এরকম গুলি আমাদের দেশে উঠতে-বসতে চলে, ও-রকম হরতাল খেতে-শুতে হয়।’ গল্পের শেষাশেষি, অপরিচয়ের আড়াল খানিক কেটে যাওয়ার পর দেখা যায়, কথকের সুর একেবারে বদলে গেছে। তীব্র আত্মসমীক্ষার স্বর ফুটে উঠেছে তাতে।

খালি মনে পড়ছে তিনটি তরুণের মুখ। ওরা ও আমি একই বাঙালি জাত। একই নদী বয়ে গিয়েছে দু দেশের ওপর দিয়ে, একই পাখি গান গায় দু দেশের বনে, একই ভাষায় কথা বলি আমরা, একই আমাদের সংস্কৃতি, একই 888sport live football।

আর এই ভাষা, সংস্কৃতি, মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য ওরা তিনজন চলেছে প্রাণ দিতে আর আমি চলেছি ঘরে উষ্ণশয্যায়?

এই উপলব্ধিই কথকের ‘যন্ত্রণা’র উৎস।

তবে 888sport live বা গল্প নয়, পরিচয়ের এই 888sport free bet 888sport app download for androidীয় হয়ে থাকবে একগুচ্ছ 888sport app download apkর জন্য। তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিস্থানীয় সব কবিই লিখেছেন। প্রেমেন্দ্র মিত্রের (১৯০৪-১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দ) ‘আমরা’য় পঙ্‌ক্তিতে যেন অন্নদাশঙ্কর-কথিত জনসাধারণের কাক্সিক্ষত জনমতেরই তপ্ত শঙ্খধ্বনি। তাতে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের যাবতীয় রণসজ্জার সামনে দাঁড়িয়ে ভিয়েতনামের মরণপণ লড়াইয়ের পাশেই স্বীকৃতি পাচ্ছে 888sport apps। 888sport app download apkটি অনবদ্য, অথচ আমরা ভুলে গেছি। তাই আরেকবার মনে করে নেওয়া যাক।

আমরা

আমরা শুধু  চেঁচিয়ে গলা ফাটাই

           তোমরা কথা বলবে জনান্তিকে।

মিছিল হয়ে লক্ষ পায়ে হাঁটি,

           তোমরা যাতে পাও সে নিভৃতিকে।

যে সাধনায় কুণ্ডলিনী জাগে

          অমারাতে আমরা তারই শব।

ঝাঁঝরা বুকের আসন পেতেই কাল

               ভাবী যুগের ধেয়ায় মহোৎসব।

বাঙলাদেশ আর আমরা ভিয়েৎনাম,

              আমরা যেথায় যত বিস্ফোরণ;

ছিন্নমস্তা এই শতাব্দী শুধু

              জাগছে বুকে আরেক উত্তরণ।

ঝলমলানো ইতিহাসের পাতা

        একদা যা খুলবে ভাবীকাল,

আমরা তারি বাতিল পাণ্ডুলিপি

        কালির ছোপে এবং রক্তে লাল।

এরপরেই ছাপা হয়েছে বিষ্ণু দে-র (১৯০৯-৮২ খ্রিষ্টাব্দ) 888sport app download apk – ‘১৯৪৭-৭১, অনুজের গান’। শিরোনামে যে-কালখণ্ডের উল্লেখ, তাতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে 888sport appsের আবির্ভাবলগ্ন সূচিত। ‘অনুজ’ এখানে কে? পশ্চিমবঙ্গ কি? ঐতিহাসিকভাবে যা বৃহৎবঙ্গের এক কর্তিত রূপ? সংশয় কাটে প্রথম চার পঙ্‌ক্তিতে।

আত্মীয়, এসো দুর্গতদেরও ঘরে

তোমাদের ঊষা আমাদেরও সন্ধ্যায়।

দুঃসহ জ্বালা শৈশব যৌবন,

আমাদের কাল দুর্বহ অনুক্ষণ।

পশ্চিমঙ্গের আকাশে ঘনিয়ে আসা দুর্যোগের দিনেই যে মুক্তিযুদ্ধ ঘনিয়েছিল, এ-পঙ্‌ক্তি তাকে মনে রেখেছে। মনে রেখেছে আত্মীয়তার দায় ও দায়িত্ব। যে সায়ংকাল পশ্চিমবঙ্গের বুকে নেমে এসেছে, তা যে 888sport appsের ঊষালগ্নের চেয়ে অনেক সংকটসংকুল, এ-কথাও বেবাক সাফ। প্রখর ইতিহাসবোধ যে বিষ্ণু দে-র 888sport app download apkর কবচকুণ্ডল তা আমরা জানি। 888sport appsের জন্মকে উদ্‌যাপন করে লেখা এ-888sport app download apkর শেষের স্তবকটি দুই বাংলার যে-কোনো অনুভবী পাঠকের মনে আজো অনুরণন তুলবে –

জ্যেষ্ঠ! তোমরা গড়ে দিলে প্রতিভাস,

তাই আমাদের গঙ্গার চরে চরে,

মেঘনার স্রোতে গড়ে তুলি ইতিহাস

উজ্জীবনের দগ্ধ  তেপান্তরে।

দস্থ দগ্ধ হোক্‌ না বর্তমান,

এক নীলাকাশ দুই দেশে করে গান।

মৈত্রীতে বাঁধো আমাদেরও যৌবন।।

‘জ্যেষ্ঠ’ – এই সম্বোধনের মধ্যে 888sport appsের সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে যে-মর্যাদা দেওয়া হয়েছে তা পূর্ব-পশ্চিমের দোরোখা চেহারা নির্মাণের সাবেক ঘরানার পাশে বেমানান। তাই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কর্ষণভিত্তিক পূর্ববঙ্গের যে-ছবি উনিশ শতক ও বিশ শতকের অনেকখানি সময় জুড়ে আঁকা হয়েছে, তাতে ঔপনিবেশিকতার প্রভাবে আপাতপুষ্ট পশ্চিমবঙ্গের উন্নাসিকতা প্রকট। এই বয়ানকে কেটে বেরোনোয় বারে বারে সক্রিয়তা দেখিয়েছেন বিষ্ণু দে। এই 888sport app download apkয় তাঁর মনোভাব এক আভূমিপ্রণত কনিষ্ঠের। এই কনিষ্ঠের স্বর একবচনে বাজছে না, তা ‘আমরা’খচিত। তাঁর মাপের কবিকে কেন ভূয়োদর্শী বলা হয়, গত পাঁচ দশকের অভিজ্ঞতা আমাদের শেখাচ্ছে।

আল মাহমুদের ‘স্বপ্নের সানুদেশে’র কথা আগেই লিখেছি। তার প্রথম স্তবকে থরথর করে কাঁপছে স্বাধীনতার সুখ।

একদা এক অস্পষ্ট কুয়াশার মধ্যে আমাদের যাত্রা

তারপর দিগন্তে আলোর ঝলসানিতে আমাদের পথ

উদ্ভাসিত হয়ে উঠল। বাতাসে ধানের গন্ধ,

                  পাখির কাকলিতে মুখরিত অরণ্যানি।

আমাদের সবার হৃদয় নিসর্গের এক অপরূপ ছবি হয়ে

                                            ভাসতে লাগল।

সেই কবে সমর সেন লিখেছিলেন ‘আমাদের স্বপ্ন হোক ফসলের সুষম বণ্টন’। তার অনুসরণে সোনালি কাবিনের পাতায় আল মাহমুদ যখন লিখেছিলেন ‘আমাদের ধর্ম হোক ফসলের সুষম বণ্টন’, তখন খোয়াবনামার বুনোট ছিল কবির উচ্চারণে। ‘স্বপ্নের সানুদেশে’তে এসে তা বাস্তব চেহারা নিয়েছে।

নয়া বাংলার খোয়াবে বুঁদ আরো 888sport app download apk বেরিয়েছিল এই 888sport free betয়। মহবুব আনোয়ারের ‘বাঙলার চাষী – ১৯৭১’, সুমিত চক্রবর্তীর ‘প্রতিরোধ আজ’, সাধনা মুখোপাধ্যায়ের ‘আর নয় দূর মেহমান’।

কিন্তু 888sport apps নয়, পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে চলমান রাজনৈতিক সংঘর্ষ এই 888sport free betর 888sport app download apkয় দাগ কেটেছিল বেশি। বুদ্ধিজীবীদের নিস্পৃহতা নিয়ে যে-অভিযোগ উঠে এসেছিল অন্নদাশঙ্করের লেখায়, যেন তারই প্রতিক্রিয়ায় কবিকুল লিখেছিলেন একের পর এক তরুণ প্রাণের এপিটাফ পরিচয়ের এই 888sport free betয়। এইসব 888sport app download apkর মধ্যে মণিভূষণ ভট্টাচার্যের (১৯৩৮-২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ) ‘গান্ধীনগরে একরাত্রি’ এতোদিনে প্রবাদপ্রতিম, নকশাল রাজনীতির প্রতি সহানুভূতিশীল যে-কোনো মানুষের আত্মস্থ উচ্চারণ। 888sport app download apkটি উদ্ধার করছি, একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে।

গান্ধীনগরে একরাত্রি

গোকুলকে সবাই চেনে, চিনে রাখল ডি-আই-বি-র লোক

স্টেট্‌সম্যান পড়ার ফাঁকে আড়চোখে, গোকুলের মা

অন্ধকার ঘন হলে বলেছিল, ‘আর নয়, এবার ফিরে যা,’

ফেরার আগেই খাকি রঙের বিদ্যুৎ দরজায় –

রিভলবার গর্জে ওঠে, গরজায় গোকুল,

রাষ্ট্রীয় ডালকুত্তা ঝুঁকে ছিঁড়ে নিল এক খাবলা চুল,

রাতকানা মায়ের চোখে কুরুক্ষেত্রে বেল্ট-এর পিতল, বুট,

জলস্রোতে নামে অন্ধকার;

শবচক্র মহাবেলা প্রশস্ত প্রাঙ্গণ

পাথরে পাথরে গর্জে কলোনির সুভদ্রার শোক।

অধ্যাপক বলেছিল, ‘দ্যাটস্‌ র-ঙ্‌, আইন কেন তুলে নেবে

                                                      হাতে,’

মাস্টারের কাশি ওঠে, ‘কোথায় বিপ্লব? শুধু মরে গেল

                                          অসংখ্য হাভাতে,’

উকিল সতর্ক হয়, ‘বিস্কুট নিইনি, শুধু চায়ের দামটা

                                               রাখো লিখে’

চটকলের ছকুমিঞা, ‘এবার প্যাঁদাব, শালা, হারামি,

                                                ও সি-কে।’

উনুন জ্বলেনি আর, বেড়ার ধারেই সেই ডানপিটের তেজী

                                                    রক্তধারা,

গোধূলি গগনে মেঘে ঢেকেছিল তারা।

‘গান্ধীনগর’ নামে ভারতের গুজরাত রাজ্যে এক আধুনিক নগর হয়েছে। মণিভূষণের ‘গান্ধীনগর’ আসলে সহিংস রাজনীতির পথকে তুলাধোনা করা নাগরিক সমাজ। অন্যভাবে বলতে গেলে, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের কলকাতার প্রভাবশালী মুখ। আবার এই কলকাতারই দক্ষিণে আছে ১৯৫০-৬০-এর দশক জুড়ে পূর্ব পাকিস্তান থেকে কাতারে কাতারে আসা মানুষের আস্তানা টালিগঞ্জের একটি মহল্লা, যার নাম গান্ধি কলোনি। গান্ধি কলোনির মতো মহল্লা, টালিগঞ্জের মতো এলাকা সে আমলে নকশাল রাজনীতির বড়ো ঘাঁটি ছিল। ছিটেবেড়ার সংসারেই ফুটে উঠেছিল গণবিদ্রোহের গোলাপ। যে ডানপিটের রক্তধারা ভিজিয়েছিল সেই কলকাতার বুক, তার মা সুভদ্রা এসেছিলেন সব হারিয়ে ওপার বাংলা থেকে। তার বাবাও। বস্তুত উত্তর-ঔপনিবেশিক কলকাতায় নাগরিক আন্দোলনের মুখ হিসেবে যাঁরা উঠে এসেছেন তাঁদের বেশির ভাগই আদতে পূর্ববঙ্গের সন্তানসন্ততি।

আসলে আমরা ভুলে যাই, কলকাতা সেদিন দুটো লড়াই করছিল। এক কলকাতা সব রকমভাবে সংহতি জানিয়েছিল 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি। যেভাবে পেরেছিল পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাতে পূর্ব-পশ্চিমের ভেদাভেদ থাকলেও প্রবল হয়নি। আরেক কলকাতা লড়েছিল ভারতের শাসনযন্ত্রের বিরুদ্ধে, নকশালবাড়ির বারুদকে বুকে নিয়ে। ‘শ্রেণিহীন সমাজের চিরবাসনা’ নিয়ে, চেতনায় দিনবদলের খিদে নিয়ে। তাতে কলকাতা ও তার উপকণ্ঠের ‘কলোনি’ মহল্লার প্রবল অংশগ্রহণ ছিল।

ছাপার অক্ষরে সাধারণত এই দ্বিধাবিভক্ত কলকাতার যুদ্ধপরিস্থিতি ফুটে বেরোয় না। আমাদের বাড়ির এক হারানো কোটরে এতোদিন ধরে আত্মগোপন করে থাকা পরিচয়ের শারদীয় ১৩৭৮ 888sport free bet সহসা জানান দিলো যে, বিধি ও ব্যতিক্রম হাত ধরাধরি করেই চলে।

চার

এই পত্রিকায় যেসব বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছিল তাদের মধ্যে দুটির উল্লেখ করে এই আলোচনায় ইতি টানব।

একটি জয় বাংলা নামে একটি ছায়াছবির। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৪শে সেপ্টেম্বর ‘বাংলা দেশের রক্তাক্ত মুক্তিসংগ্রামের অমর চিত্ররূপ’ হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি নিয়ে এটি উত্তর কলকাতার মিত্রা, মধ্য কলকাতার নিউ এম্পায়ার ও দক্ষিণ কলকাতার প্রিয়া সিনেমায় মুক্তি পায়। মিহির সেনের কাহিনি ও চিত্রনাট্যনির্ভর করে ধীরেন দাশগুপ্ত-প্রযোজিত, উমাপ্রসাদ মিত্র-পরিচালিত এই ছায়াছবির জন্য সুভাষ মুখোপাধ্যায়, সিকান্দার আবু জাফর গান লিখেছিলেন। সুধীন দাশগুপ্তের সুরে গান গেয়েছিলেন সুচিত্রা মিত্র প্রমুখ। চরিত্র-চিত্রণে ছিলেন ‘এপার বাংলা ওপার বাংলার 888sport live chatী ও হাজার মুক্তিযোদ্ধা এবং ঐতিহাসিক ই পি আর লঞ্চ লায়লা’। কোথায় গেল এই ছায়াছবি? খুঁজে পাওয়া গেলে ‘মুক্তির গানে’র ভিত আরো মজবুত হবে সন্দেহ নেই।

আরেকটি বিজ্ঞাপন মুক্তধারার। একাত্তরের কলকাতায় আশ্রয় নেওয়া 888sport appsি বুদ্ধিজীবীদের একটি সংঘ ছিল স্বাধীন বাংলা 888sport live football পরিষদ। তাদের দুটি ডেরার একটি ছিল শেয়ালদা স্টেশনের কাছে বৈঠকখানা মহল্লায় ৯নং অ্যান্টনি বাগান লেনে, আরেকটি খাস কলেজ পাড়ায় ২নং বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিটে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সেখান থেকে 888sport appর খানদানি প্রকাশক মুক্তধারার বই পাওয়া যেত। তাতে সমকালের বহু ভারী নাম উপস্থিত। এইসব বই, পরিচয়ের মতো পত্রপত্রিকা পেরেছিল আগেকার অপরিচয়ের আড়াল মুছে দিতে, দুই বাংলার সংস্কৃতির ভাঙা সেতু মেরামত করতে। কালি ও কলমের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আবুল হাসনাত এই পরম্পরাকে আরো প্রায় পাঁচ দশক ধরে এগিয়ে নিয়ে চলেছিলেন।

আগামীদিনে আরো অনেকে এই জোটে এসে শামিল হলে চেনাজানার চৌহদ্দি আরো রঙিন হয়, মনের কথার লেনদেন আরো অবাধ হয়। কলকাতা আর 888sport appর মতো জনপদ, বা ব্যাপকার্থে দুই বাংলা, আরো অনায়াসে একে-অপরের মনের কাছাকাছি থাকতে পারে। পরিচয়ের এই 888sport free bet সাক্ষী যে, অপরিচয়ের আঁধার দূরীকরণে আজো অক্ষরের কোনো

মার নেই! ছবি : নিবন্ধকার