রবিউল হুসাইনের বড় পরিচয় তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত কবি, চিত্র-সমালোচক ও বিশিষ্ট স্থপতি। অবশ্য তিনি হৃদয়ের গভীরে লালন করেছেন মুক্তিযুদ্ধের 888sport sign up bonus সংরক্ষণে নিরন্তর আগ্রহ এবং যে-ভাবাদর্শের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাধীন 888sport appsের জন্ম হয়েছে তার প্রতি গভীরতর আকুতি। এটি রবিউলের কোনো পৃথক সত্তা নয়। তাঁর অধিকাংশ 888sport app download apkয় মানব-মানবীর আন্তঃসম্পর্ক ও প্রত্যেকের অন্তরের নানা বিচিত্র অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে। তবে সমকালীন ঘটন-অঘটন এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত সকল 888sport app download apkয় মুক্তিযুদ্ধের বেদনা ও গৌরবের সন্ধান পাওয়া যায়। তাঁর নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় নির্মিত এ-সংক্রান্ত স্থাপনায় প্রকাশ পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলির শৈল্পিক প্রতিফলন। এ-ধরনের স্থাপনায় তিনি সচেতনভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন বাংলার মাটি ও জল থেকে উৎপাদিত উপকরণ। তাঁর 888sport app download apkয় যেমন প্রায়ই বিষন্নতার ছাপ লক্ষ করা যায়, তেমনি এ-ধরনের স্থাপনায় মুক্তিযুদ্ধের বেদনার প্রতিচ্ছবিও লক্ষ করা যায়।
মুক্তিযুদ্ধের 888sport sign up bonus সংরক্ষণে রবিউলের প্রথম পদক্ষেপ ‘একাত্তরের যাত্রী’ নামে সংগঠনের মাধ্যমে। নব্বইয়ের দশকের প্রথমদিকে তিনি কয়েকজন সহকর্মীসহ মুক্তিযুদ্ধের পরিচিত ও দুর্লভ কিছু আলোকচিত্র সংবলিত অ্যালবাম প্রকাশ এবং 888sport apps যুব ইউনিয়নের মাধ্যমে তা প্রচারের ব্যবস্থা করেন। এ-সূত্র ধরেই আমরা অন্য সাতজন ১৯৯৪ সালের মধ্যভাগ থেকে প্রায় প্রতিরাতে মুক্তিযুদ্ধের 888sport sign up bonus সংরক্ষণে প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়াস পাওয়ার জন্য বৈঠকে মিলিত হই, আর তার ফল ১৯৯৬ সালে মুক্তিযুদ্ধ 888sport sign up bonus ট্রাস্ট গঠন ও নিবন্ধন। এর পরের বছরই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আত্মপ্রকাশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবনির্মিত স্থায়ী মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন অনুষ্ঠানের বক্তব্যে জানিয়েছেন, তিনি ও রবিউল হুসাইন ইতিপূর্বে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বিবেচনা করেছিলেন। সুতরাং ধারণা করা যায় যে, এ-চিন্তাটি রবিউলের মাথায় বহুদিন ধরেই ঘুরপাক খাচ্ছিল।
১৯৯৫ সালে ট্রাস্ট নিবন্ধনের পর আমরা জাদুঘরের জন্য উপযুক্ত ভবনের সন্ধানে নেমেছিলাম। দু-একটি বাসাবাড়ি পছন্দ হয়; কিন্তু জাদুঘরের জন্য তারা ভাড়া দিতে অপারগ। অবশেষে সেগুনবাগিচায় অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধারের শর্তে একটি বাসা ভাড়া পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টিদের সরেজমিন পরিদর্শনের ঘটনাটি বেশ মনে পড়ে।
দোতলা বাসায় প্রায় প্রতিটি ঘর সাবলেট দেওয়া, বহু পরিবারের সেখানে বাস; সিঁড়িতে কয়েকটি ছাগল বেঁধে রাখা হয়েছে, বাড়ির পাশের খোলা জায়গায় দৈনিক দেশের কিছু নিষ্ক্রিয় মুদ্রণযন্ত্র পড়ে আছে। আমার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, এ-বাসায় জাদুঘর করা যাবে না। কিন্তু রবিউল মুগ্ধ নয়নে ব্রিটিশ আমলের নকশায় নির্মিত অতীতে কোনো হিন্দু ধর্মাবলম্বীর বসতবাটিটি দেখে ও চারপাশ পর্যবেক্ষণের পর স্থির সিদ্ধান্ত জানান, এ-বাসাতেই জাদুঘর করা সম্ভব। বহু কষ্টে বাড়িটি দখলদারমুক্ত করার পর রবিউল কাজে নামলেন। ঐতিহ্য সংরক্ষণে সচেতন ও অনুগত রবিউল বাড়িটির মূল কাঠামো ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গসজ্জা বদলানো যাবে না Ñ এ-শর্তে তাঁর তৎকালীন প্রতিষ্ঠান শহীদুল্লাহ অ্যাসোসিয়েটসকে দিয়ে পুনর্বিন্যাসের কাজে হাত দেন। তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রেসের স্থানে মিলনকক্ষ তৈরি হয়, যেখানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নিয়মিত সভা ও live chat 888sport প্রদর্শিত হয়। পেছনে স্থাপিত হয় মুক্তমঞ্চ, যা কর্মসূচিভিত্তিক জাদুঘরের জন্য একান্ত প্রয়োজন ছিল। তিনতলার চিলেকোঠায়, যেখানে আমরা প্রতিদিন আলোচনা করে জাদুঘরের প্রস্তুতিকর্ম সমাধা করেছি, সেখানে পরে আধুনিক 888sport apkসম্মত আর্কাইভ স্থাপন করা হয়। রবিউল হুসাইনের পরিকল্পনায় দেশে বহু উল্লেখযোগ্য স্থাপনা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তবে স্থাপত্যজ্ঞান ও মুক্তিযুদ্ধের 888sport sign up bonus সংরক্ষণে নিবেদিতপ্রাণ রবিউলের চিন্তা এবং দক্ষতার অসাধারণ সংমিশ্রণ ঘটেছে এই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে। আমার বিবেচনায় তাঁর সেরা কাজের অন্যতম নিদর্শন এটি। দুই দশক ধরে এই জাদুঘর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার, নতুন প্রজন্মের সন্তান ও মুক্তিযুদ্ধের ভাবাদর্শে বিশ্বাসী সর্বজনের মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বর্তমানে আগারগাঁওয়ে প্রায় এক একর জমিতে ছয়তলা ভবনে স্থানান্তরিত হয়েছে। তবে সেগুনবাগিচায় তাঁর তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠা আদি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের একটি রেপ্লিকা ভাস্কর্য চত্বরে রাখার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় এবং রবিউল সে-দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর আকস্মিক প্রয়াণ সত্ত্বেও এ-কাজ আমাদের সম্পন্ন করতে হবে।
১৯৭১ সালে বরিশাল শহরে ওয়াপদা কলোনিতে একটি নির্যাতনকেন্দ্র ছিল। সেখান থেকে বন্দিদের নিকটবর্তী ভগ্নপ্রায় সেতুতে নিয়ে হত্যা করে শাখানদীতে ফেলে দেওয়া হতো। বরিশালের মেয়রের নির্দেশনা ও আর্থিক অনুদানে নির্যাতন ও বধ্যভূমি কমপ্লেক্সের প্রাথমিক নকশা রবিউল তৈরি করেছিলেন। দেশের বিশিষ্ট স্থপতিরা এ-সূত্র ধরে restoration-
এর কাজটি করছেন। ৮ ডিসেম্বর ‘বরিশাল মুক্ত দিবসে’ এ-কমপ্লেক্সের অনানুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। রবিউলের যাওয়ার কথা ছিল, এ-আক্ষেপও রয়ে গেল।
রবিউল হুসাইন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অভিজ্ঞতার সূত্রে বঙ্গবন্ধু 888sport sign up bonus জাদুঘর ও জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। আগারগাঁও ও স্থায়ী মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণের জন্য তাঁরই সুবাদে Institute of Architects
মিলিতভাবে একটি আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ড গঠন করে। আমাদের পক্ষ থেকে রবিউল ও মফিদুল এ জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। সত্তরটি নকশার মধ্য থেকে তাঁরা সেরা নকশাটি স্থির করেন এবং সেই নকশায় বিশাল জাদুঘর নির্মিত হয়।
রবিউল হুসাইন বিশ্বাস করতেন যে, মুক্তিযুদ্ধের ভাবাদর্শ থেকে দেশ বিচ্যুত হলে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের 888sport apps প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। সেজন্য তিনি সর্বদা ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে আমৃত্যু অবিচল ছিলেন। সেজন্য তিনি ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটিতে যুক্ত হন। তাঁর লক্ষ্য ছিল, সকল ধর্মের সম-অধিকারভিত্তিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।
১৯৯৪ সাল থেকে পঁচিশ বছর রবিউলের সঙ্গে মূলত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নানা কর্মকা-ে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। দেশে নীতির প্রতি অবিচল সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য মানুষ পাওয়া ভার। অমায়িক সাদামনের মানুষ রবিউল সেই বিরল ব্যক্তিদের একজন।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.