মুখোমুখি হাসান আজিজুল হক

চন্দন আনোয়ার

রাজশাহী মহানগরের পূর্বদিকের প্রায় শেষ সীমান্তে অর্থাৎ 888sport app রোডে শহরের প্রবেশমুখে ফল গবেষণা কেন্দ্রের সম্মুখে বিশ্ববিদ্যালয় হাউজিং সোসাইটি সংক্ষেপে বিহাসের প্রবেশ গেট দিয়ে ঢুকেই হাতের বাঁয়ে একটি বাড়ি ও একটি নির্মাণাধীন বাড়ির পরের বাড়িটিই বাংলা ছোটগল্পের বরপুত্র, বর্ষীয়ান কথা888sport live footballিক হাসান আজিজুল হকের বাড়ি, নাম ‘উজান’। দোতলা বাড়িটির নিচতলার পূর্ব-দক্ষিণ কোণের রুমটিই তাঁর লেখার ঘর। রুমের খোলা জানালা দিয়ে যদ্দূর চোখ যায় বিসত্মীর্ণ মাঠ, ফসলাদি, কৃষক, গরু-ছাগলের বিচরণ দেখা যায়। বৈশাখের দুপুর, টানা তাপদাহ চলছে, এরই মধ্যে হাজির হই হাসান আজিজুল হকের বাসায়। কালি ও কলমের সম্পাদক মহোদয়ের আহবানে আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকার গ্রহণের উদ্দেশ্যে (২২ এপ্রিল ২০১৬) আসার পরে পেয়ে যাই লেখকের বর্তমান নিত্যসঙ্গী, দীর্ঘকালের সহকর্মী প্রফেসর মহেন্দ্রনাথ অধিকারীকে। দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত সাক্ষাৎকার গ্রহণের পূর্ণ সময় তিনি উপস্থিত থেকে
আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। তাঁর কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।
888sport appsের ছোটগল্পের অন্যতম প্রাণপুরুষ হাসান আজিজুল হক (১৯৩৯-) বাংলা ছোটগল্পের পালাবদলের নায়কদের একজন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অসহ্য উত্তাপ থেকে শুরু করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, মন্বন্তর, সাতচলিস্নশের দেশভাগ, পাকিস্তানি দুঃশাসন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধোত্তর সামরিক শাসন ও রাজনৈতিক উত্থান-পতনের সব ইতিহাস তাঁর লেখায় উঠে এসেছে। তাঁর গল্পগ্রন্থের 888sport free bet মোট ৯টি : সমুদ্রের স্বপ্ন : শীতের অরণ্য, আত্মজা ও একটি করবী গাছ, জীবন ঘষে আগুন, নামহীন গোত্রহীন, পাতালে হাসপাতালে, আমরা অপেক্ষা করছি, রোদে যাবো, মা-মেয়ের সংসার, বিধবাদের কথা ও 888sport app গল্প। সম্প্রতি আগুনপাখি ও সাবিত্রী উপাখ্যান 888sport alternative link লিখে ঔপন্যাসিক হিসেবেও খ্যাতি পেয়েছেন। গল্প-888sport alternative linkের বাইরে 888sport live football, সংস্কৃতি, শিক্ষা, রাজনীতি, দর্শন ইত্যাদি বিচিত্র বিষয়ে বিপুল পরিমাণ মননশীল 888sport live ও তিন খ– 888sport sign up bonusকথা লিখেছেন। তাঁর কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমী 888sport live football 888sport app download bd, 888sport cricket BPL rateে পদক, আনন্দ 888sport app download bdসহ 888sport apps ও পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব উলেস্নখযোগ্য 888sport live football 888sport app download bdে সম্মানিত হয়েছেন।
চন্দন আনোয়ার : স্যার, বাংলা গল্পের জন্ম এত বিলম্বে কেন?
হাসান আজিজুল হক : খুব দেরি আর কই। বাংলা গদ্যই তো অনেক পরের কথা। বাংলা ভাষায় 888sport live footballচর্চার প্রমাণ পাই নবম-দশম শতাব্দীতে। তারপর আর দুশো বছর কোনো খবর নেই। আবার চতুর্দশ-পঞ্চদশ শতাব্দীতে এসে আমরা বাংলা ভাষার সৃষ্টি শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, মঙ্গল কাব্য, বৈষ্ণব পদাবলী ইত্যাদি পেয়েছি। সে অর্থে বাংলা ভাষার ইতিহাসটা এক হাজার বছরের পুরনো বললেও সেটা নিরবচ্ছিন্ন নয়। ক্রমাগত চর্চা হচ্ছে, বদলাচ্ছে, পরিবর্তিত হচ্ছে, আসেত্ম আসেত্ম উন্নতও হচ্ছে। শ্রীচৈতন্যের আমলেই বাংলা ভাষাটা বলা যায় অনুপ্রেরণা পেয়েছে।
তারপর ব্রিটিশরা এসেছে। তখন তো যাচ্ছেতাই খারাপ অবস্থা। নবাবি আমলের পতন হয়েছে। ব্রিটিশরা তখনই ক্ষমতা নেয়নি। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ অংশে তারা কেবলমাত্র বসবে-বসবে করছে। ভারতবর্ষের ভাষা-888sport live football-সংস্কৃতি নিয়ে চিন্তা করার সময় পায়নি। বরং এখানকার যে ভাষা-সংস্কৃতি আছে সেগুলো মেনে নেওয়াই
চ. আ : ব্যক্তির মুক্তির কথা বলছেন, কিন্তু আপনার গল্পে প্রধানভাবে সমষ্টির লড়াই দেখি; ‘জীবন ঘষে আগুন’ এবং আরও বেশ কিছু গল্পে, এমনকি আপনার প্রথম গল্প ‘শকুন’-এ সমষ্টির দ্রোহ। সমষ্টির দ্রোহের প্রতি আপনার এত গুরুত্ব কেন? মার্কসবাদী চিন্তা কোনোভাবে সক্রিয় ছিল?
হা. আ. হ : ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়েই না সমষ্টির দ্রোহ সম্ভব। মার্কসবাদ সাদামাটা বললে একেবারেই ঠিক নয়। আমাকে তো খেয়াল করতে হয়েছে, কিছু একটা পালটাতে সমষ্টি লাগবে। আর ব্যক্তি নিজেকে প্রকাশ করবে, তার জন্যে সমাজে একটি বিশেষ জায়গা আছে। পুঁজিবাদী সমাজে ব্যক্তিই সর্বেসর্বা, সমাজের ধনসম্পদ কুক্ষেগত হয়ে যায় ব্যক্তির কাছে। সমষ্টি বলতে আমি সমাজটাকে, রাষ্ট্রটাকে, মানবপ্রজাতিকে বোঝাতে চাই। একবারে মাইনরিটি যারা, তাদের নিয়ে লিখব না। ৫% ধনী সম্পদের সিংহভাগ দখল করে আছে কিন্তু ওরা সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না। আমি বলি, পাঁচ বছর পরপর নির্বাচন হয় আর পাঁচ বছর করে গণতন্ত্র কুক্ষেগত হয়। আমার 888sport sign up bonusর কোথাও নেই জনগণ। কারণ একটি এলাকায় তিন লক্ষ ভোট আছে, আমি সেটা জানি না কে দিয়েছে, আমি পার্লামেন্টে গিয়ে দাবি করব আমি ওই এলাকার প্রতিনিধি, এটা মানতে হবে। তাহলে যেটা প্রতিনিধিত্বশীল, তা ব্যক্তিস্বার্থের ওপরে নির্ভর করে। গণতন্ত্র সেটা ইনসিওর করতে পারে না। যেসব গণতন্ত্র চলছে, এসব দিয়ে কখনই মানুষের মুক্তি সম্ভব নয়। আমরা বড়জোর বলতে পারি যে, যতটা সম্ভব মানুষের মুক্তির কাছাকাছি যাওয়া যায়। ব্যক্তিমানুষ কোনো প্রতিনিধিত্ব করে না, ব্যক্তিগুলির শক্তি যে জমাট বেঁধেছে, এইটুকু বোঝানো যেতে পারে সমষ্টির দ্রোহ দিয়ে। একটা মানুষ প্রতিবাদ করলে কিছু হবে না। তাই সমষ্টিকে গুরুত্ব দেই বেশি।
চ. আ : আপনার ‘জীবন ঘষে আগুন’ বা ‘বিধবাদের কথা’ এগুলোকে ছোটগল্পের সংজ্ঞায় ফেলতে গেলে ভীষণ মুশকিল হয়। 888sport alternative link ভাবলেই বরং স্বসিত্মদায়ক হয়।
হা. আ. হ : আমি তো কোনো সংজ্ঞা মানি না। আমার কোনো দীক্ষা নেই। বিখ্যাত বিখ্যাত গল্পগুলো আমি অনেক পরে পড়েছি। একমাত্র রবীন্দ্রনাথের গল্পগুলো ছাড়া মানিক, বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর, সতীনাথ এঁদের গল্প আমি অনেক পরে পড়েছি। কাজেই এঁদের কাছ থেকে দীক্ষা নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমার ইঞ্জিনে কেউ কয়লা দেবে না, বুঝলে? আমার ইঞ্জিনে যতটুকু গ্যাস আছে সেই গ্যাসেই আমার চলতে হবে। এজন্যেই বলি, আমার গল্পে কারো দীক্ষা নেওয়ার ব্যাপার তেমন কখনই ঘটেনি।
চ. আ : গল্পই আপনার 888sport alternative linkের চাহিদা মিটিয়েছে, টানা পঞ্চাশ বছর ধরে শুধু গল্পই লিখেছেন, জীবনের প্রৌঢ়তায় পৌঁছে 888sport alternative link লেখায় মন দিয়েছেন। তাহলে কি গল্প আর আপনার 888sport alternative linkের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না?
হা. আ. হ : তা নয়। মূল্যটা দুটোরই আলাদা-আলাদা। আপাত মনে হচ্ছে, ছোটগল্প লেখার মধ্যে আমি আর নেই। ঢুকতে পারি কি পারি না, সেটা পরে দেখব। গল্প থেকে সরে এসেছি তা নয়, ওই কারণে যে লিখছি না তা নয়। 888sport alternative link 888sport alternative linkের জায়গায় আছে, ছোটগল্প ছোটগল্পের জায়গায়। আমি গল্প লেখার ইচ্ছা বা চাহিদাকে অস্বীকার করছি না।
চ. আ : আপনার প্রথম গল্প ‘শকুন’-এ তরুণ গল্পকারের শৈল্পিক নিরাসক্তি, ব্যক্তিত্বের ওপরে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলো পড়েছে, ঠিক বলেছি কি?
হা. আ. হ : ১৯৬০ সালে ‘শকুন’ লেখার সময় তো আমি মানিকের গল্প পড়িইনি।
চ. আ : কিন্তু প্রতিবাদ রচনার স্টাইল, মহাজন-জোতদারের প্রতীক চরিত্র শকুনটাকে নিয়ে বালকবাহিনীর যে ভয়ানক নিষ্ঠুরতা, নৃশংসতা এবং এর মধ্যে যে-প্রতিবাদ রচনা করে, এ-প্রতিবাদের ভাষা, সর্বোপরি সমাজের শোষকশ্রেণির বিরুদ্ধে তরুণ লেখকের যে ক্ষমাহীন নিষ্ঠুর আক্রমণ, সেখানে ভাবলে রবীন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্র-বিভূতিভূষণ-তারাশঙ্কর-সতীনাথ-কমলকুমার তেমনভাবে কেউ-ই আসেন না, একমাত্র মানিকই সামনে এসে দাঁড়ান এবং অত্যন্ত জোরালোভাবে দাঁড়ান।
হা. আ. হ : ওটা হচ্ছে না। তোমার এই মূল্যায়নের সঙ্গে আমি একমত হতে পারছি না। মানিকের গল্পের মধ্যে একটা বৈনাশিক চেতনা আছে, নির্মাণের চেয়ে বৈনাশিক চেতনাই বেশি। যেমন, ‘প্রাগৈতিহাসিক’, ‘সরীসৃপ’ গল্পে সমাজের যে জঘন্য বিধ্বংসী চেহারা আছে, সেখানে মাফ-মার্জনা কোনো কিছুই নেই। আমার গল্পে সেই রকম নেই। আমার গল্পে ছেলেরা ধূলিধূসরিত বাস্তব, উপোষী, ক্ষুধার্ত, যেটা সমাজের বাস্তব চেহারা।
চ. আ : মুসলমান গল্পকার চলিস্নশের আগে এলো না কেন?
হা. আ. হ : এর তো 888sport live footballিক ব্যাখ্যা নেই। এর ব্যাখ্যা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক। সমাজের দু-ভাগের এক ভাগ যদি সামগ্রিকভাবে পিছিয়ে থাকে, কি আর্থিক কি রাজনৈতিক, তাহলে হবে কী করে?
চ. আ : হঠাৎ করে চলিস্নশের দশকে এসে একদল মেধাবী মুসলমান গল্পকার পেয়ে গেলাম, এর মধ্যে সৈয়দ ওয়ালীউলস্নাহ্র মতো পাইনিওর পেলাম, যিনি সমগ্র বাংলা কথা888sport live footballের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; তারপর পঞ্চাশ-ষাটের দশকে পেলাম আর একদল মেধাবী গল্পকার; যাঁদের হাতে 888sport appsের ছোটগল্পের সূচনা, বিকাশ ও সমৃদ্ধি; এ-সময়েই মুসলমানদের স্বতন্ত্র জাতিসত্তা বা রাষ্ট্রের দাবি উঠেছে, যার প্রেক্ষিতে দেশভাগ হয়েছে; আমার প্রশ্ন হলো, এত অধিক সংখ্যক মুসলমান গল্পকারের প্রায় হঠাৎ আবির্ভাবের ক্ষেত্র কি তৈরি করে দিয়েছে দেশভাগ?
হা. আ. হ : না, ঠিক বলছ না। যে রাষ্ট্রটা হয়েছে, সে রাষ্ট্রটা কে চেয়েছেন? কোন গল্পকার চেয়েছেন, তাঁর নাম বলো আমাকে? তাঁরা তো কেউই পাকিস্তান চাননি, তাহলে তাদের মধ্যে কিসের উদ্দীপনা তৈরি হবে?
এই সময়টায় তো পৃথিবী বদলে যাচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে পৃথিবী আলাদা হয়ে গেছে। ব্রিটিশরা যখন ক্ষমতায় এসেছিল তখন মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষার হার কেমন ছিল, ওরা যখন যায় তখন শিক্ষার হার কী রকম ছিল? শিক্ষিত মুসলমানদের মধ্যে আত্মসচেতনতা বেড়েছে। পাকিস্তানবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলন, বিশেষ করে ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ক্রমাগত শিক্ষিত মধ্যবিত্তের বিকাশ – এসব হচ্ছে তো।
চ. আ : কাহিনিনির্ভর বক্তব্যপ্রধান গল্পের যে ধারা চার-পাঁচের দশকে বিকাশ লাভ করে, ষাটের দশকের গল্পকাররা সেই ধারা থেকে বেরিয়ে এসে গল্পবর্জনের ধারা প্রচলনের চেষ্টা করলেন; কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে দেখা গেল, আপনি এই দুই ধারার মধ্যবর্তী একটি অবস্থান গ্রহণ করলেন। সচেতনভাবেই করেছেন নিশ্চয়?
হা. আ. হ : সচেতনভাবে করিনি। আমি এসব কিছুই ভাবিনি। প্রথম কথা, তোমাকে মনে রাখতে হবে যে, আমি কখনই কলকাতা বা 888sport appয় বসবাস করিনি। ষাটের দশকে যা কিছু আন্দোলন-টান্দোলন হচ্ছে সেগুলো সবই 888sport app-কলকাতাকেন্দ্রিক। আমি তখন রাজশাহীতে পড়ে আছি। আবদুল মান্নান সৈয়দ বা অন্যরা কী সব ইজম বা থিওরি আমদানি করার চেষ্টা করছেন, ওসবের ধার আমি ধারি না। আমি গভীরভাবে ফিলোসফি পড়েছি। ফিলোসফিতে মাস্টারি করার চেষ্টা করেছি, আর লেখক হওয়ার চেষ্টা করেছি। কোথাও ধার করে আমি ফিলোসফি আনার চেষ্টা করিনি। ওই
ভালো ভেবেছে। সেজন্যে অনেকদিন পর্যন্ত ব্রিটিশ ওরিয়েন্টালিজমই প্রধান চর্চার বিষয় ছিল। ডেভিড কফ বই লিখেছেন। তারপরে বাংলা গদ্যের আবির্ভাব উনিশ শতকের গোড়াতে। বিদ্যাসাগরমশাই বাংলা গদ্যকে রূপ দিয়েছিলেন মাত্র। আমাদের সৌভাগ্য, প্রথম গুরুই আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ গদ্যলেখক। অর্থাৎ বাংলা গদ্য লেখা শিখিয়ে দিয়েছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তিনিই প্রথম বিশুদ্ধ বাংলা গদ্য লেখার চেষ্টা করেছেন। যদিও তৎসম শব্দবহুল, কিন্তু কেউ খেয়াল করে না যে, তার মধ্যে প্রচুর দেশি বাংলা শব্দও ব্যবহার হয়েছে। এটা তাঁর আত্মজীবনীতে দেখা যায়।
চ. আ : বাংলা গদ্যের তিনি নব-নির্মিতি দিয়েছেন; আধুনিক ইংরেজি শিক্ষা-888sport live footballে তাঁর দখল ছিল; গভীর জীবনবোধ, জাতীয়তাবোধ, বাস্তবতাবোধ, আখ্যান-চরিত্র নির্মাণের দক্ষতা ইত্যাদি যা-ই বলি না কেন, আধুনিক যে-কোনো কথা888sport live chatীর চেয়ে কোনো অংশেই কম প্রতিভার অধিকারী ছিলেন না, তিনি গল্প-888sport alternative link লেখার কথা ভাবলেন না কেন? সমাজ সংস্কারের দায় পালন করতে গিয়েই… (বাক্যটি সম্পূর্ণ হয়নি)
হা. আ. হ : না, না, একথা মোটেই ঠিক না। সমাজ সংস্কারের দায় পালন করতে গিয়ে বিদ্যাসাগর গল্প-888sport alternative linkের কথা ভাবেননি একথা মানতে পারছি না। কথা888sport live footballের আবির্ভাব ওঁর হাতে হয়নি। গ্রিকদের কথা888sport live football হলোই না। হলো অনেক পরে। অথচ তাদের গ্রিক ভাষা থেকে মহাকাব্য হলো, গদ্য হলো, কিন্তু তার গল্প বা কথা888sport live football হলো না। হেরোডেটাস, থুকিডাইডিস ওঁরা ঐতিহাসিক, গদ্য লিখেছেন, কিন্তু গল্প লেখেননি। 888sport app download apkয় দু-একজনের নাম পাওয়া যায় কোনোরকম।
চ. আ : বঙ্কিমচন্দ্র শুধু 888sport alternative linkই লিখলেন, ইচ্ছে করলে গল্পের ফর্মটাও তিনি তৈরি করতে পারতেন, আমার বিশ্বাস, আপনার কী মত?
হা. আ. হ : কার হাতে কী হবে বলা যায় না। হয়তো তিনি এদিকে মনোযোগ দেননি। তিনি বিশ্ব888sport live footballের গল্প সম্পর্কে জানতেন না, তা তো নয়। বঙ্কিমচন্দ্র লেখেননি একথা ঠিক, কিন্তু বঙ্কিমচন্দ্রের যেটা আখ্যান, সেটা ছোটগল্পের পত্তনই বটে। যেমন : রাধারানী। এরকম আরো দু-একটি আছে। ওর চাইতে সাইজে অনেক বড় গল্প তো লেখা হয়েছে। তবে একথা ঠিক, তাঁর আখ্যানগুলো প্রকৃত ছোটগল্প হয়ে ওঠেনি।
চ. আ : অবশেষে বাংলা ছোটগল্পের সার্থক প্রবর্তন ও বিকাশ ঘটে রোমান্টিক কবি রবীন্দ্রনাথের হাতে, ছোটগল্পের সঙ্গে 888sport app download apkর সম্পর্ক নিবিড় বলেই কি?
হা. আ. হ : রবীন্দ্রনাথের কথা উঠলেই তোমরা ‘রোমান্টিক’ শব্দটি বলো কেন? রবীন্দ্রনাথ নিজে বলেছেন বলে যে, আমি জন্ম রোমান্টিক। রবীন্দ্রনাথের মতো এমন বাস্তববাদী লেখক তুমি কয়জন দেখেছ? গদ্য লেখাগুলো দেখো, এমনকি কঠিন যে বাস্তবমুখী গল্পগুলি দেখো; ভাইকে বাড়ি রাখতে হবে বলে স্বামী তাকে খুব অপছন্দ করছে, মাঝখানে একটা বউ মারা যাচ্ছে, দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে ছোট বউয়ের ওপরে, দোষ কাঁধে নিয়ে ফাঁসি হচ্ছে – বাস্তববাদী না হলে কি লেখা সম্ভব? শুধুমাত্র রোমান্টিক বলছ কেন? রবীন্দ্রনাথকে এমন এক কথায় একটা জায়গায় আটকে দিচ্ছ কেন? এভাবে লেবেল লাগিয়ে যদি বলো, তাহলে রবীন্দ্রনাথ তোমাকে একশবার বলে দিতে পারেন, আমি রোমান্টিক নই। বরং উলটো। তা না হলে তিনি ‘পোস্টমাস্টার’ লিখতে পারতেন না, তা না হলে তিনি ‘কঙ্কাল’ গল্প লিখতে পারতেন না, ‘সম্পত্তি সমর্পণ’, ‘রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা’ এ সমস্ত গল্প তিনি লিখতে পারতেন না। লিখেছেন কেন? বাস্তব সমাজজীবনটা দেখতে পেয়েছেন, সেজন্যে।
চ. আ : বঙ্কিমচন্দ্র যখন 888sport alternative link লিখতে এসেছেন, ততদিনে মধ্যযুগের কাহিনিকাব্যের ধারাবাহিকতায় আধুনিক বাংলা কাহিনি গদ্যের ধারা শুরু হয়েছে এবং লেখা হয়েছে আলালের ঘরের দুলাল ও হুতোম প্যাঁচার নকশা 888sport alternative link। কিন্তু দেখা গেল, বাংলা কাহিনিগদ্যের বিকাশকে প্রত্যাখ্যান করে বা অগ্রাহ্য করে সরাসরি ইউরোপীয় 888sport alternative linkে প্রতিষ্ঠিত মডেলকেই বাংলা 888sport alternative linkের মডেল হিসেবে গ্রহণ করলেন বঙ্কিমচন্দ্র এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইউরোপীয় মডেলই বাংলা 888sport alternative linkের মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেল; ফলে বাংলা ভাষায় নিজস্ব ঐতিহ্যে ও নিজস্ব ফর্মে কোনো 888sport alternative link লেখা হয়নি। আমার প্রশ্ন হলো, বঙ্কিমচন্দ্র নিজস্ব ঐতিহ্য ও ফর্মের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় গেলেন না কেন?
হা. আ. হ : বঙ্কিমচন্দ্র উনিশ শতকীয় ইউরোপীয় শিক্ষার সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। তাঁর সমস্ত মানসকাঠামো ওই শিক্ষাতেই গড়ে উঠেছে। ইংরেজরা আসার পরে দেশের পুরনো শিক্ষার ধারা ধীরে ধীরে বাতিল হয়ে যাচ্ছে। নতুন শিক্ষাধারার উনি হলেন একজনকৃতবিদ্য পুরুষ। বঙ্কিমচন্দ্র মূলত নতুন ধারার শিক্ষিত মানুষের জন্যেই লিখেছেন। তাই তিনি 888sport alternative linkের ইউরোপীয় মডেলটাকেই গ্রহণ করলেন।
চ. আ : তাই বলে, একজন মনীষী লেখক তাঁর স্বজাতির ঐতিহ্যের দিকে তাকাবেন না? আধুনিক কাহিনিগদ্যের যে-ধারার সূচনা হয়েছিল, সেই ধারার কোনো প্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই ইউরোপীয় মডেল গ্রহণ করলেন। গোড়ায় গলদ ঘটে গেল কিনা?
হা. আ. হ : শোনো, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রখর বাস্তববাদী ছিলেন। বিভূতিভূষণ স্বপ্নের জগতের লোক ছিলেন। এগুলো তুমি জোর করে বলতে পারবে? কেন কোনো বিশেষ 888sport live football সৃষ্টি করেননি, একজন লেখককে একথা জিজ্ঞেস করা যায় না।
চ. আ : বাংলা 888sport alternative linkের নিজস্ব ফর্ম ও ঐতিহ্য গড়ে না ওঠায় দেবেশ রায় দায়ী করেন বঙ্কিমচন্দ্রকেই, কারণ ‘তাঁর কাছে ইউরোপীয় 888sport alternative linkের মডেলটিই ছিল একমাত্র মডেল। সে-রকমভাবে 888sport alternative link লিখলেই বাংলা 888sport alternative link হবে, নইলে হবে না – বঙ্কিমচন্দ্র 888sport alternative linkের ফর্ম সম্পর্কে ছিলেন এমনি স্থিরজ্ঞান এবং স্থির সিদ্ধান্ত’। (দেবেশ রায়, ‘888sport alternative link নিয়ে’)
হা. আ. হ : দেবেশ রায় দায়ী করতে পারেন। আমি কিন্তু অত প্রেম দেখাতে যাব না। ঐতিহ্য বলেই মানতে হবে, আমি এতটা রক্ষণশীল নই।
চ. আ : আমি যদি বলি, আপনি মনোজগতে এখনো রাঢ়ের অধিবাসী। আপনার দুটি 888sport alternative link, চার খ- 888sport sign up bonusকথা, বেশ কিছু কালজয়ী গল্প রাঢ়ের ভাষা ও পটভূমিতে লেখা; এমনকি খুলনা বা রাজশাহী অঞ্চলের পটভূমিতে লেখা গল্পেও রাঢ়ের পরিবেশ ও রাঢ়ের মানুষের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য প্রচ্ছন্ন থাকে।
হা. আ. হ : না, মোটেই না। আমি তোমার কথা মানতে পারছি না। আমার লেখায় কি খুলনা পাওনি? আমার গল্পে রাজশাহী পাওনি? সাধারণত হয় কি, যে জায়গার সঙ্গে অভিজ্ঞতার খুব একটা সম্পর্ক থেকে যায়, কিছু লেখার কথা মনে হলেই ওখানে চলে যায় 888sport sign up bonus। সেজন্যে রাঢ় আমার মনোজগৎ অধিকার করে বসে আছে, সেটা ঠিক নয়।
আমি যে-সমাজে বসবাস করি, যে-দেশে বসবাস করি, তার সমস্ত কিছুর সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছি। কাজেই মানুষ যেখানে বসবাস করে, সেটার যে চতুর্পাশ, যেমন হয়ে মনের মধ্যে আঁকা হয়ে যায়, সেটাকে কোনোভাবেই সরানো যায় না, সেটা সর্বক্ষেত্রেই হয়েছে। উইলিয়াম ফকনার দক্ষিণ আমেরিকার মিসিসিপির অধিবাসী ছিলেন, মার্ক টোয়েনকে বলা হয় মিসিসিপির পাড়ের লেখক; হেমিংওয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিলেও তাঁর বেশির ভাগ গল্প-888sport alternative linkের পটভূমি ইউরোপ বা কিউবা।
চ. আ : হোর্হে লুইস বোর্হেস এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, একটি গল্প লেখার আগে চমকপ্রদ সূচনাবিন্দু ও গন্তব্য ঠিক করে ফেলেন, কিন্তু গল্পের মধ্যে কী হবে জানেন না, সেটা আবিষ্কার করেন। একটি গল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপনি কোন প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যান?
হা. আ. হ : প্রথমেই আমার আপত্তি, তুমি বোর্হেসের কথা তুললে কেন? বোর্হেস কীভাবে গল্প লিখতেন তাতে আমার কী আসে যায়। সাধারণত কোনো একটা ঘটনা, কোনো একটা মনে রাখার মতো অভিজ্ঞতা, অথবা যে-ঘটনাটি ঘটেনি সমাজে কিন্তু এমন হয়ে আছে যে, যে-কোনো মুহূর্তে সে ঘটনা ঘটতে পারে, বা অন্যভাবে ঘটছে, এরকমভাবে একটা জিনিস অবলম্বন করে আমি গল্প লিখি। অর্থাৎ আকাশে তাকিয়ে গল্প একটা করে নাজিল হবে, তারপর আমি গল্পটা লিখব, এটা আমার ক্ষেত্রে কোনোদিনই হয়নি। গল্প লেখা আমার কাছে বেশ কষ্টকর কাজ। কষ্টকর এইজন্যে, যখন মোটামুটি ঠিক হয়ে গেল, আমি এ-বিষয়টা বা ঘটনাটা নিয়ে গল্প লিখতে চাই, তখন রূপ দেওয়ার ব্যাপারটা কী করে হয় আমি বলতে পারব না। আমি চেষ্টা করি যাতে খুব যথাযথ করা যায়, আমি চেষ্টা করি যেন একটুও বাড়াবাড়ি না হয়, এক শব্দও যেন বেশি না হয়, বরং এক শব্দ কম হয় যেন, টাইট হয় যেন জিনিসটা, বাক্য যেন ব্যঞ্জনাপূর্ণ, ইঙ্গিতপূর্ণ হয়। ভাষাটা যেন একেবার ডাল না হয়। দৈনন্দিন যে-ভাষাটা, ঠিক সেরকমই ভাষা যদি হয়, দৈনন্দিন ঘটনা যদি ঠিক সেরকমই হয়, তাহলে আমি কেন লিখব? দেখো, পৃথিবীতে যত মানুষই হয়, প্রত্যেকেই কিন্তু আলাদা-আলাদা হয়, কথা বলে আলাদাভাবে। কারো কথা মনের মধ্যে দাগ কেটে যায়, কারো কথা মনের মধ্যে ঢোকেই না, উড়ে চলে যায়। আমার ছোটগল্প লেখার ব্যাপারটাও কিন্তু তাই। যখন কোনো একটা অভিজ্ঞতার কথা ভাবি তখন আমি ভাবি এ-জায়গাটাতে একশভাগ সৎ থেকে এটা লিখতে চাই। সবসময় যে লিখতে পেরেছি তা নয় কিন্তু। মানুষকে নিজের জায়গা থেকে সরতে হয়, অনেক সময় পারা যায় না।
চ. আ : সমকাল ধরতে না পারলে গল্প-888sport alternative link বাঁচে না, আর সমকালকে ধরেও গল্প-888sport alternative link বাঁচে না, আপনার গল্পবিশ্বের গুটিকয় গল্প ছাড়া প্রায় সবই সমসাময়িক কোনো ঘটনা নিয়ে লেখা। প্রধানভাবে রাজনৈতিক ঘটনা এসেছে। আপনার গল্পের এদিকটা নিয়ে কথা বলুন।
হা. আ. হ : খুব ঠিক কথা। আমি সমকালকে নিয়ে বহু গল্প লিখেছি। সমকালকে সর্বকালের করার দায়িত্ব লেখকেরই। ছোটগল্প তো সেটাই করবে। এটা বিশেষ কিছু ব্যক্তির অভিজ্ঞতা, কিন্তু আসলে এটা মানবিক অভিজ্ঞতা। এ-অভিজ্ঞতার লেবেলটা তুলে দাও, সর্বমানবীয় হয়ে উঠবে। এই যে বিশেষকে নির্বিশেষ করে তোলা, চিরন্তন করে তোলা, এটাই লেখার কাজ। তা না হলে তো প্রত্যেকদিন যে যা দেখছি, আমার আর লেখার দরকার কী? তুমি বলবে যে, আমি ওই গ্রাম দেখেছি, আপনি সেই গ্রাম দেখেই লিখেছেন, তাহলে আমি আপনার গল্প পড়ব কেন? মানুষ হিসেবে যেমন আলাদা, নিশ্চিতভাবে আমার দেখা তোমার দেখার চেয়ে আলাদা হবেই। আমি আমার গল্পের মধ্যে, লেখার মধ্যে আমার দেখাটাকে ঢুকিয়ে দিয়েছি। তুমি সেখানে আকৃষ্ট হবে। তুমি হাজারবার সেই গ্রাম দেখলেও আমার গল্পের দেখা গ্রাম ভিন্ন হবে। তুমি যতবার আমার গল্প পড়বে, ততবারই নতুন করে দেখবে। এটা একদিক থেকে লেখকের দুর্ভাগ্য বটে, একদিক থেকে সৌভাগ্যও বটে। দুর্ভাগ্য কেন, লেখক যা মনে করেছিলেন তা না ভেবে অন্য কিছু ভেবে নিয়েছে পাঠক, লেখকের ভাবনার দিকে গেলই না পাঠক, টেক্সট কিন্তু যেমন-তেমনই পড়ে রইল। আর লেখকের তখন কিছু করারও নেই। তুমি যখন আমার গল্প পড়ছ, তখন তো আর আমি পাশে বসে বলতে পারি না, এভাবে নয়, এরকম। তোমার পাঠ-অভিজ্ঞতা লেখকের কাছাকাছি হতে পারে, দূরে হতে, বহু দূরে হতে পারে।
চ. আ : গল্পের ওপর অধিকার কার বেশি? পাঠকের, না লেখকের?
হা. আ. হ : অবশ্যই পাঠকের। লেখকের কাজ হচ্ছে লিখে ফেলা, তার পরে আর কোনো কাজ নেই। সাধারণত, লেখক আর তাঁর নিজের লেখা পড়েন না। কখনো কখনো ভুলেও যান। নতুন লেখায় মগ্ন হয়ে পড়েন। আমি যেমন কখনই আমার লেখা পড়ি না।
চ. আ : আপনার গল্পের চরিত্ররা পরিস্থিতির ফাঁদে পড়ে যায়। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত। এই লড়াইটাকে আপনি কীভাবে নির্মাণ করেন?
হা. আ. হ : যতক্ষণ পর্যন্ত না একজন মানুষকে খুব শক্ত কোনো একটি জায়গায় ফেলতে না পারবে ততক্ষণ পর্যন্ত লেখাটা দাঁড়াবে না। সেজন্যে যে-গল্পই লিখি না কেন, প্রধান চরিত্র বা অন্য চরিত্র কোনো না কোনো একটা জায়গায় আটকে আছে, সেখান থেকে বের করে আনার জন্যে লড়াইয়ের ক্ষেত্র প্রস্ত্তত করি। অসিত্মত্বের ফাঁদে না পড়লে একটা মানুষকে তো বোঝাও যাবে না, চেনাও যাবে না। সেই কারণে মানুষকে চিনতে হলে, বুঝতে হলে তাকে ফাঁদে ফেলতে হবে। আর তোমার একটা উদ্দেশ্য থাকতে হবে, সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হওয়া মানুষের জন্যে সবচেয়ে স্বাভাবিক এবং কাম্য। কিন্তু তা নয় সে, সর্বত্রই ফাঁদে পড়ে আছে। কিছু কিছু জিনিস আছে বাধ্যতামূলক। তার আর কিছুই করার নেই। হয়ে যাবেই। ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’ গল্পের বৃদ্ধের বা তার কিশোরী কন্যার আর কিছুই করার ছিল না।

সময়টায় বুদ্ধদেব বসু একটা ভয়ানক খারাপ কাজ করেছিলেন। বেশ তো, মেঘদূত 888sport app download apk latest version করেছ, ভালো কথা, বোদলেয়ার 888sport app download apk latest version করতে গেল কেন? বোদলেয়ার 888sport app download apk latest version করেই সে কিন্তু মাথাগুলো খেয়ে গেল আর কি। 888sport app download apk খুব উলটাপালটা জায়গায় চলে গেল। তুমি খেয়াল করেছ, এরপরে আর কেউ তিরিশের দশকের 888sport app download apkকে অতিক্রম করে যেতে পারেননি।
চ. আ : গল্পের মায়ায় বন্দি হয়েছেন কখনো?
হা. আ. হ : আমি কিছুই আবিষ্কার করতে পারি না, তৈরি করতে পারি না, নির্মাণ করতে পারি না। আমি বড় অদ্ভুতভাবে মাটিলগ্ন এবং বলা যায়, অভিজ্ঞতা দিয়ে একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। সেখানে আমি মনে করি, অনেকে আমার লেখা পড়ে বিরক্ত হতে পারে, তেমন গল্প নেই, নতুন চিন্তা নেই, নতুন কায়দা নেই, এ আবার কেমন কথা, সেটা আমার জন্যে বড় আশঙ্কারই কথা।
চ. আ : হঠাৎ আকর্ষণ, গুপ্ত রহস্য এসব গল্পে সাধারণত থাকে, কিন্তু আপনার গল্পে এসব নেই।
হা. আ. হ : আমি এসবের ধারেকাছে নেই।
চ. আ : আপনার গল্পের চরিত্র নির্মাণের কৌশল কেমন?
হা. আ. হ : আমি দেখেছি, অভিজ্ঞতার যাতে খাপ খায়। স্থান-কাল-বিষয়কে তো মাথায় রাখতেই হয় একটি চরিত্র নির্মাণ করতে গিয়ে। বেশির ভাগই দেখা, আবছা একটা ধারণা – ওই যে লোকটা বিছানায় শুয়ে আছে, স্কুল কমিটির ভোটে দাঁড়িয়েছি, তাঁর কাছে ভোট চাইতে গেছি, সে বলছে, আমি যাব ভোট দিতে; ওই যে ডাক্তারটা, সে নাকি বিয়ে করেনি, ধবধবে সাদা চুল; উনুনে ফুঁ দিচ্ছে কয়েকটা মেয়ে, দপ করে আগুন জ্বলে উঠল, সবকটি মুখ একসঙ্গে দেখা গেল, ঝিলিকের মতো একটা ছবি আসে। বিশেষ কোনো মুহূর্তের এরকম কিছু একটা যদি বিশেষভাবে আকর্ষণ করে চরিত্রের মধ্যে ব্যবহার করি।
চ. আ : আদিবাসীদের নিয়ে আপনার একটি গল্প আছে, সেখানে দেখা যায়, শহরের অভিজাত মানুষদের অতিথি হিসেবে নিমন্ত্রণ করে এনে অতিথিসেবার নামে নিষ্ঠুর আক্রমণ করে আদিবাসী যুবক।
হা. আ. হ : ‘দূরবীনের নিকট-দূর’ গল্পটির কথা বলছ। আক্রমণ করাটাই কিন্তু মূল উদ্দেশ্য। দুরবিন নামে আদিবাসী ছেলেটি আগাগোড়া আক্রমণ করে যায়, বলা যায় যে গালিগালাজই করে সম্মানের সঙ্গে। ইচ্ছেকৃতভাবেই আমি এসব করেছি।
চ. আ : একজন কথা888sport live chatীকে নিজস্ব একটি গদ্যশৈলী নির্মাণের নিরন্তর লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, আর তার নির্মিত শৈলী ভেঙে আবার নতুন শৈলী তৈরি করে নিতে হয়। এভাবে ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে আপনিও নিশ্চয় গিয়েছেন?
হা. আ. হ : তা বলতে পারব না। প্রথম লাইন আসার পরে ভাষা এমনিতেই চলে আসে। তার বড় উদাহরণ হলো, ‘আত্মজা ও একটি করবী’ গাছ গল্পটি। গল্প অনেকটা অংশ লেখার পরে দেখি, আরে, এ তো সমরেশ বসুর গল্প হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে ফেলে দিলাম। অনেক দিন পরে কোনো এক শরৎকালে একদিন গল্পটা লিখতে বসি। আমাদের গ্রামের বাড়ির ছাদের সিঁড়িঘরের পাশে একটা আমগাছ আছে, আম ধরে আছে আমার নাকের সামনে; ছোট্ট গোল একটা বেতের চেয়ার ছিল আমার, আর একটা টেবিল ছিল; টেবিলের ওপরে মাথা রেখে আমি হঠাৎ লিখলাম যে, এখন নির্দয় শীতকাল। এটার পরেই ঘামটা মুছে নিলাম। তারপরে কী করে লিখেছি জানি না, ‘অল্প বাতাসে একটা বড় কলার পাতা একবার বুক দেখায় একবার পিঠ দেখায়।’ স্রোত শুরু হয়ে গেল। বাক্যগুলো একেবারে যেন মিছিল করে আসছে। একটার পর একটা।
চ. আ : কথা888sport live footballে ব্যবহৃত আঞ্চলিক ভাষা অনেকটাই লেখকের নির্মাণ; যেমন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝি 888sport alternative linkের আঞ্চলিক ভাষা মানিকের হাতেই প্রায় সৃষ্টি।
হা. আ. হ : একথাটি তোমাকে কে শেখাল যে মানিকের পদ্মা নদীর মাঝির ভাষা কোথাও নেই।
চ. আ : কিন্তু ওরকম ভাষা হুবহু কোথাও আছে? পদ্মার তীরবর্তী মানুষরা কি এই ভাষায় কথা বলে?
হা. আ. হ : বাস্তবের সঙ্গে এগুলোর যোগ আছে।
চ. আ : আপনার আগুনপাখি 888sport alternative linkে ব্যবহৃত রাঢ়ের আঞ্চলিক ভাষাকে সম্পূর্ণই রাঢ়ের ভাষা বলে দাবি করছেন?
হা. আ. হ : একদম। একদম পরিষ্কার, ওখানে কোনো ফাঁকি নেই। রাঢ়ের শুধু নয়, হিন্দুদের শুধু নয়, মুসলমানদের শুধু নয়, একটু সম্ভ্রান্ত মুসলমান, যে-বাড়ির মেয়েরা দিনের বেলা রাস্তায় বের হয় না, ওই রকম বাড়ির মেয়েদের, বর্ধমানের আমাদের গ্রামের ভাষা। আবার মুরাদিপুরে যদি যাই, আমাদের খালাদের বাড়িতে, তাদের আবার আর একটু ভিন্ন ভাষা।
চ. আ : গল্প লেখার সময় চরিত্রের কষ্ট কি আপনাকে আবেগাপস্নুত করে, কষ্টের দৃশ্য লেখার সময় চোখের পাতা ভিজে আসে?
হা. আ. হ : নির্মাণের সময় কিছু বোঝা যায় না। সমস্ত মনোযোগ চলে যায় জিনিসটা ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, চরিত্র, ভাষা এসব দাঁড়াচ্ছে কিনা। লেখার সময় খুব কষ্ট হয়, সেটা পরে বুঝতে পারি।
চ. আ : বহুকাল আগে হায়াৎ মামুদ আপনার গল্প মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেছিলেন ‘নিষ্ঠুরতান্ত্রিক তিনি’, আপনি কী বলবেন?
হা. আ. হ : খুব কঠিন দুঃখ, কঠিন কষ্ট লেখবার সময় আমার কলম কাঁপে না। সেটা ভিজিয়ে আমি রোমান্টিক করে ফেলি না। একদম কঠোর জিনিসটাকে কঠোর জায়গাতেই রেখে দিয়ে দেখাই। তখন মনে হতে পারে লোকটি তান্ত্রিক নাকি, লোকটা কাপালিক? (হাসি দিয়ে) তোমরা যারা আমাকে দেখছ, সবসময় পাশে থাকো, কী মনে হয় তোমাদের, আমি খুব শক্ত হৃদয়ের মানুষ?
চ. আ : দীর্ঘকাল ধরে লিখছেন, কিন্তু গল্প মাত্র ৬৭টি। আপনি যে আড্ডা-সভা-সেমিনারে এত সময় ব্যয় করেন বা করেছেন, জীবনের এ বেলা এসে কি মনে হয়, আরো দেবার সামর্থ্য ছিল, ঘাটতি রয়ে গেছে কিছু?
হা. আ. হ : কোনো কোনো মূহর্তে মনে হয়, লেখার পরিমাণ খুবই কম হয়ে গেল। তাৎক্ষণিকভাবে মনে হয়। পরক্ষণেই আমি ভুলে যাই। আজকের দিনটা কিছুই লেখা হলো না। আজ প্রায় এক মাস পরে আছে একটা লেখা, পরের লাইনটা লেখা হলো না। প্রত্যেকদিন মনে হচ্ছে আজকেও লেখা হলো না। আর এখন একটু বেশি হচ্ছে। বয়স হয়েছে, অঢেল সময় আর পাওয়া যাবে না। বহুকাল বহু লোক আমাকে বুঝিয়েছে, বলেছে, হাসান ভাই, সময় নষ্ট করবেন না। একসময় হঠাৎ দেখবেন যে সময়ের টানাটানি পরে গেছে। স্বভাব তো যাবে না। আমার জ্ঞানোদয়ও হবে না। তবে আমার ইচ্ছেটা এই যে, লেখাটা অনেক বাড়িয়ে দেই।
চ. আ : আপনার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গল্পগুলোতে দেখা যায়, চরিত্ররা তাদের নিজের শ্রমে-রক্তে-ত্যাগে অর্জিত স্বাধীন 888sport appsকে গ্রহণ করতে পারেনি। ‘ঘরগেরস্থি’ গল্পের রামশরণ দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেই দেশ হারায় অর্থাৎ নতুন স্বাধীন দেশে তাঁর ঠাঁই হয় না; ‘কেউ আসেনি’ গল্পে আসফ আলী দেশ স্বাধীনের দিনেই তার কেটে ফেলা ঠ্যাং ফিরে চেয়েছে, আর এক মুক্তিযোদ্ধা গফুরের শরীরে স্বাধীন দেশের রোদ কাঁটা দিয়ে ওঠে; ‘ফেরা’ গল্পের আলেফ অস্ত্র ফেরত না দিয়ে ডোবায় লুকিয়ে ফেলে নতুন যুদ্ধের আশায় – আপনি যেসব আশঙ্কা করেছিলেন এবং যেসব অভিযোগ তুলেছিলেন স্বাধীনতার পরেই, চার দশক পরে কি তার উত্তরণ ঘটেছে?
হা. আ. হ : আমি যেসব আশঙ্কা করেছিলাম অথবা যে সমস্ত অভিযোগ তুলেছিলাম, আজকের 888sport appsে তার কোনো মৌলিক
পরিবর্তন হয়নি।
চ. আ : আপনার প্রথম দুটি গল্পগ্রন্থে জীবনানন্দ দাশের 888sport app download apk থেকে উপমা-চিত্রকল্প ব্যবহার করেছেন, কখনো সরাসরিই ব্যবহার করেছেন। ‘সন্ধ্যার ধূসর অন্ধকার তখন নেমে এসেছে, হেমমেত্মর আরম্ভে শীত শীত করছে বাতাস’, ‘নিঃশব্দ শিশিরের হিমে স্নান করে বিবর্ণ পাতাগুলো ভিজে’, ‘বৃষ্টির ফোঁটার মতো শিশিরের শব্দ শুনছে’ – এরকম হরহামেশাই দেখি।
হা. আ. হ : জেনেশুনে করেছি এটা আমি বলতে পারব না। জীবনানন্দ দাশ ভালো করে পড়া অনেক পরে। তখনো জীবনানন্দ অল্পই পড়েছিলাম। তবে গল্পে জীবনানন্দ দাশের মতো উপমা-চিত্রকল্প ব্যবহার করাতে আমার কিন্তু কোনো কষ্ট হয়নি। যেখানে আমারও বাল্যকাল মিলে গেছে, সেখানে দু-একটি উপমা-চিত্রকল্প সরাসরিই মিলে গেছে। আমি কিছুই বাদ দেইনি।
চ. আ : আপনার গল্প 888sport apps ও পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য, পিএইচডি গবেষণা হয়েছে এবং আরো হচ্ছে, আপনার অনুভূতি কী?
হা. আ. হ : ভালো লাগে। তবে এতকাল যে ধারণা ছিল একমাত্র মরা লেখকেরই লেখা পাঠ্য হয়, জীবিত লেখকের পাঠ্য হয় না; আমার লেখা তো অনেকদিন থেকেই নানান জায়গায় পাঠ্য। শরৎচন্দ্র বলেছিলেন, ইফ ইউ ওয়ান্ট টু কিল এন অথর, তাকে পাঠ্য করো। যদি তুমি মনে করো কোনো লেখককে মেরে ফেলবে তাহলে তার শ্রেষ্ঠ লেখাটা পাঠ্য করে দাও।
চ. আ : আপনার কাজের স্বীকৃতিতে আপনি সন্তুষ্ট?
হা. আ. হ : আমার কাজ আর আমার কাজের স্বীকৃতি ও প্রাপ্তি দুটোর মধ্যে আনুপাতিক কোনো মিল নেই। আমি দিয়েছি এক পেয়েছি একশ। সেজন্যে কেউ যদি বলে, লেখক হিসেবে বড্ড বেশি পেয়ে গেছে এই লোকটা, আমি অন্তত আপত্তি করতে যাব না। যথেষ্ট পেয়েছি।
চ. আ : আশির দশকের 888sport appsের ছোটগল্পের সবচেয়ে প্রতিভাধর গল্পকার মামুন হুসাইন আমাদের রাজশাহী শহরেই আছেন, নিভৃতে গল্পচর্চা করে যাচ্ছেন, নিজস্ব একটি গল্পশৈলী ও ভাষাতে লিখছেন, যা সত্তরের দশকের পরে আজ পর্যন্ত শহীদুল জহির ছাড়া আর কারো নাম উচ্চারণ করা যায় না। তাঁর গল্প নিয়ে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই।
হা. আ. হ : এখন যারা লিখছে, যাদের বয়স আমার চেয়ে অনেক কম, তাদের সম্বন্ধে সরাসরি মন্তব্য করাটা একদিক থেকে ভালো কাজ হয় না। সেটা আমি করি না। যদি লিখতে হয় লিখি। শহীদুল জহির সম্বন্ধে লিখেছি। যদ্দিন সে জীবিত ছিল, তার সম্বন্ধে লিখিনি। তার মৃত্যুর পরেই আমি তার গল্প-888sport alternative link সম্বন্ধে লিখেছি। যাঁরা এই মুহূর্তে লিখছেন তাঁদের প্রশংসা বা ঘাটতি কোনো কিছুতেই আমার সেভাবে কিছু বলার নেই। মামুন হুসাইনের কথা বললে, সে কিন্তু আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ লেখক। অথচ তার প্রতি তেমন করে কেউ মনোযোগী হয়নি। মনোযোগী যে হয়নি এটার জন্যে তাকে দোষ দেওয়ার চাইতে বেশি দোষ দিতে হবে পাঠকদের, সাধারণ মান নিয়ে ঠিক এই লেখককে ধরা কঠিন। যাদের প্রতি মনোযোগী হয়েছে তাদের সকলের ওপরে রাখব মামুন হুসাইনকে। বিচিত্রমুখী বিপুল পড়াশোনা রয়েছে তার। মামুন হুসাইনের গল্পের মূল্য আমি অবশ্যই দেই। আমি বলব, তার গল্পে সমস্ত প্রান্তর জুড়ে বহু রত্ন জমে আছে, বহু হিরের টুকরো জমে আছে, চোখ মেলতেই পারছি না এত জ্বলজ্বল করছে আলোতে, কিন্তু সব মিলিয়ে কোথাও যাওয়ার ব্যাপারটায় এখনো পাইনি বলে আমি মুশকিলে পড়ে যাই। আমি কোনো অভিযোগ করছি না কিন্তু।
চ. আ : সাম্প্রতিক বাংলা ছোটগল্পের ধারা সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন?
হা. আ. হ : দু-একজন লেখকের নাম আলাদা আলাদা উচ্চারণ করতে পারছি, তুমি যেমন একজন গল্পকারের নাম বললে, কিন্তু ধারার কথা যদি বলো, আমি খুবই হতাশ হচ্ছি। কারণ পৃথিবীর কোনো লেখার সঙ্গে, গল্পের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের বড় দুর্বলতা হচ্ছে, সমগ্র পৃথিবীতে কী হচ্ছে তার খবর আর নিচ্ছি না। মানিক, বিভূতি, রবীন্দ্রনাথ 888sport apk পড়েছেন। পড়াশোনা করতে হবে না? বাংলা গল্প সম্বন্ধে অচেতনতা মারাত্মক। গল্প পড়ে মনে হয় যে, ভালো করে মানিক পড়া থাকলে এই গল্পটা সে লিখত না, কিছুতেই লিখত না। তারাশঙ্কর পড়া থাকলে লিখতে পারত না। বললে পরে যুবক লেখকদের মনে লাগবে, এখন কেন এই গল্প লেখা হবে? এতদিন পরে কেন এই গল্প লেখা হবে? আমিও তো লিখে গেলাম। আমার পেছন থেকেও হাঁটতে পারে না কেউ, সামনে থেকে হাঁটা ধরছে। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গেও একই অবস্থা। অপরিচয়ের ফলে দম্ভ এবং আত্মতৃপ্তি বেড়ে যায়। না জানলেই তখন নিজেকে বড় মনে হয়। প্রতিনিয়ত শেষ অবস্থান জানা থাকতে হবে। আমি সেইজন্যে সবসময় চেষ্টা করি, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জানতে।
চ. আ : আমাদের বড় লেখক আসার সম্ভাবনা ক্রমশ কমে যাচ্ছে।
হা. আ. হ : নিজের ভেতরে যা আছে তাই নিয়ে লিখব, কিন্তু ভা-ারটা তো পরিপূর্ণ করে নিতে হবে আগে। ভা-ার শূন্য থাকলে বের হবে না কিছু। নিজের ভিতরেই ডবডব করে আওয়াজ ওঠে। সেজন্যে হতাশা প্রকাশ করতেই হচ্ছে। হতাশার একটা কথাই হচ্ছে দীর্ঘকাল হতাশাও থাকে না, আশাও থাকে না। আশা-নিরাশার দ্বন্দ্ব চলে চিরকাল। হতাশা হয়তো স্থায়ী হবে না। তবে এখন খুব বিদিশা অবস্থা। 