মুর্তজা বশীর এই অঞ্চলের প্রথম প্রজন্মের শীর্ষ 888sport live chatীদের মধ্যে অন্যতম। এই সেদিন (১৫ আগস্ট ২০২০) তাঁর প্রয়াণ হলো। দীর্ঘদিন থেকে তিনি চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করেছেন। আট বছর আগে একবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ফিরে এসেছিলেন ফার্মগেট-সংলগ্ন মনিপুরিপাড়ায় নিজ গৃহে ও স্টুডিওতে। শরীরে অক্সিজেন পরীক্ষার যন্ত্র বসানো হয়েছিল। সর্বক্ষণ পরীক্ষা করা হতো শরীরে অক্সিজেনের ওঠানামা। যে-মানুষটি ছিলেন প্রাণবন্ত, উচ্ছল, চিত্রের উদ্যানে সদা জিজ্ঞাসামুখর, তাঁর যাপনে এসে পড়েছিল সীমাবদ্ধতা। একনাগাড়ে অনেকক্ষণ কাজ করা চিকিৎসকের বারণ ছিল। তবু এই সময়ের পরও তাঁর সৃজন হয়ে উঠেছিল বিচিত্রমুখী। শরীর বিরূপ হলেও ভাবনায় তাঁর কোনো বিরাম ছিল না। ড্রইং ও তেলরঙে কাজ করেছেন। আত্মপ্রতিকৃতিও করেছেন অজস্র। গ্যালারি কায়ায় এক ড্রইং-প্রদর্শনীও হয়েছে।
তাঁর প্রয়াণে 888sport apps হারালো একজন বর্ণময় জীবনের অধিকারী সৃজনশীল চিত্রকরকে। 888sport live chat-888sport live footballের বহু শাখায় তাঁর অনায়াস দক্ষতা ছিল। লিখেছেন 888sport alternative link, ছোটগল্প ও 888sport app download apk। একসময় live chat 888sport নির্মাণেও আগ্রহী হয়েছিলেন। যুক্ত হয়েছিলেন জহির রায়হানের সঙ্গে। এছাড়া তাঁর শখ ছিল মুদ্রা সংগ্রহের। এক্ষেত্রে তাঁর পঠন-পাঠনের ব্যাপ্তি ছিল। প্রাচীনকালের বহু মুদ্রা তিনি সংগ্রহ করেছিলেন। মন্দির ও মসজিদ স্থাপত্য নিয়েও তাঁর গবেষকের মতো অনুরাগ ছিল। এ নিয়ে গবেষণার জন্য জীবনের এক পর্যায়ে তিনি পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়িয়েছেন। আজ আমাদের এ-কথা অবিদিত নেই যে, পঞ্চাশের দশকে সৃজনশীল লেখকদের সঙ্গে চিত্রকরদের সখ্য ও ভাববিনিময় পরস্পরের সঙ্গে সৌহার্দ্যরে সম্পর্ক এদেশে আধুনিকতার বীজ বপন করেছিল। 888sport live chat-888sport live footballের জীবন-অনুষঙ্গী এই যে আধুনিকতা এ পঞ্চাশের দশকের কয়েকজন জিজ্ঞাসা-উন্মুখ যুবকের অভিজ্ঞতাসঞ্জাত ফসল। ভাষা-আন্দোলন, স্বরূপ অনুসন্ধান ও বাঙালিত্বের চেতনা এঁদের সকলকে ঐতিহ্যমুখী এবং আধুনিকতায় নিমজ্জন সম্ভব করে তুলেছিল।
পঞ্চাশের দশকে এদেশে চিত্রচর্চার পথ সৃষ্টি করা খুব একটা সহজ কাজ ছিল না। 888sport live chatাচার্য জয়নুল আবেদিন, শিক্ষক সফিউদ্দীন আহমেদ ও মোহাম্মদ কিবরিয়া এবং তাঁদের 888sport app সতীর্থ ও 888sport live chatানুরাগী বান্ধবদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় 888sport live chatশিক্ষার অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলেছিলেন। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জনসন রোডে আর্ট স্কুল। 888sport live chatী আমিনুল ইসলাম তাঁর 888sport sign up bonusকথায় এই আর্ট স্কুল প্রতিষ্ঠা ও পরবর্তীকালে এই বিদ্যালয়কে ঘিরে আধুনিক চিত্রকলার চর্চা আকাঙ্ক্ষিত যে-পথ নির্মাণ করেছে, তা সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন। প্রথম প্রজন্মের 888sport live chatীরা এই পরিবেশেই তাঁদের মানসভুবনকে সমৃদ্ধ করেছেন। আলোড়িত হয়েছেন আধুনিক 888sport live chatচৈতন্যে। সীমাবদ্ধ অ্যাকাডেমিক 888sport live chatের বৃত্ত ভেঙে 888sport live chatের ভুবনে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন নানা শৈলী ও প্রকরণ। নিত্যনব উদ্ভাবন ও পাশ্চাত্যের বিলোড়ন সৃষ্টিকারী নানা প্রবণতা সম্পর্কে তাঁরা অনেকেই আলোড়িত হয়েছিলেন।
888sport live chatী মুর্তজা বশীর ছিলেন কর্মময় জীবনের অধিকারী, প্রাণচঞ্চল মানুষ। ভর্তি হয়েছিলেন সদ্য প্রতিষ্ঠিত আর্ট স্কুলে ১৯৪৯ সালে, পাঠ নিয়েছিলেন চিত্রকলার। যখন তিনি শিক্ষার্থী তখন এই চিত্রবিদ্যা সম্পর্কে প্রবল আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও অ্যাকাডেমিক চিত্রচর্চার প্রাথমিক বিষয়গুলো সম্পর্কে সফল জ্ঞান অর্জন করতে পারেননি। এ-কথা তিনি বলেছিলেন এক সাক্ষাৎকারে। সে-সময় তিনি আর্ট কলেজে অধ্যয়ন ও চিত্রচর্চা ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। জয়নুল আবেদিন যখন এক ক্লাস উঁচুতে অধ্যয়নরত মেধাবী আমিনুল ইসলামকে ডেকে বললেন, ‘ওকে কিছু দেখাও’, তখন থেকে আমিনুল হয়ে ওঠেন বন্ধু ও শিক্ষক।
অবশ্য মুর্তজা বশীরের পিতা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ চাননি ছেলে আর্ট স্কুলে ভর্তি হোক। বশীর বলছেন, ‘… এ-কথা ঠিক আমি আর্ট স্কুলে ভর্তি হই তিনি চাননি। তিনি প্রথম চেয়েছিলেন আমাকে আলিগড়ে পড়াতে, কিন্তু যখন আমাকে আমার ইচ্ছা থেকে টলাতে অপারগ হলেন তখন চাইলেন আমি যাতে শান্তিনিকেতনে শিক্ষা গ্রহণ করি। শুরুতেই বলেছি, 888sport live chatশিক্ষায় আমার তেমন ইচ্ছে ছিল না। তাই 888sport appতেই থাকার কথা জানালাম। 888sport live chatীজীবন বেছে নেব – এ-কথা তিনি ভাবতেই পারেননি। তিনি বললেন, দেখো, আমি প্যারিসে ছিলাম। 888sport live chatীদের জীবন অত্যন্ত কষ্টের। তুমি আমার সন্তান। আমি চাই না অভাব-অনাহারে তুমি জর্জরিত হয়ে যাও। তিনি তিনদিন আমার সঙ্গে কথা বলেননি, পরে ভর্তি হওয়ার জন্য আমার হাতে টাকা তুলে দিয়েছিলেন। আর্ট স্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন জয়নুল আবেদিন। আমার বড় ভাই সফিয়্যূল্লাহর কলকাতার বন্ধু। আমার ভাই একটি সুপারিশপত্র দিলেন। আমি ১৯৪৯ সালে দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্র হিসেবে ভর্তি হলাম। আমার সহপাঠীদের মাঝে আবদুর রাজ্জাক, রশিদ চৌধুরী, কাইয়ুম চৌধুরী, একরামুল হক, আনোয়ার, জগলুল, আলী রেজা, আকতারুজ্জামান, আমিনুর রহমান, হুমায়ুন কাদির – এরা ছিল সুকুমার 888sport live chatের ছাত্র এবং ইমদাদ হোসেন ও জুনাবুল ইসলাম পড়ত কমার্শিয়াল আর্টে। আমার বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল প্রথম তিনজনের সঙ্গে, তবে সবচেয়ে বেশি ছিল কাইয়ুম চৌধুরীর সঙ্গে। কিন্তু যখন পরবর্তীকালে আউটডোরে কাজ করতে বেরোতাম তখন রশিদ ও রাজ্জাক ছিল আমার সঙ্গী।’ (‘888sport live chat পাঠের প্রথম পর্ব’, আমার জীবন ও 888sport app, পৃ ২৭)
দ্বিতীয় বর্ষ থেকে মুর্তজা বশীরের পরিগ্রহণ বোধ তীব্র ও প্রবল হয়ে উঠেছিল এবং প্রতিভার অন্তর্নিহিত শক্তি ও সৃজন তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। তাঁর অনমনীয় জেদ, অব্যাহত ধারার সৃজনী-উৎকর্ষ সম্পর্কে আলোড়িত ভাবনা, 888sport live chatী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা তাঁকে এদেশের অন্যতম শীর্ষ 888sport live chatী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। আমিনুলের সান্নিধ্য এই দুই বন্ধুর 888sport live chat-জিজ্ঞাসা ও অন্বেষণ পরবর্তীকালে বশীরকে চিত্রসাধনায় বহু ভাবনায় আলোড়িত ও সৃজনে উদ্বুদ্ধ করেছিল। তিনি 888sport sign up bonusকথায় বলেছেন, ‘আমিনুলের সান্নিধ্য পাব এ ছিল কল্পনার বাইরে। এ যেন অনেকটা ছিল হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো। আমিনুল ইসলাম আমাকে হাতে ধরে শিখিয়েছেন।’ এছাড়া বায়ান্নোর ভাষা-আন্দোলন ও সমাজ-অঙ্গীকার চেতনা, মানুষের মর্মবেদনার উপলব্ধি সর্বদা তাঁকে বহুভাবে প্রণোদিত করেছিল 888sport live chatচর্চা ও রচনায়। ১৯৫৪ সালে চিত্রবিদ্যার পাঠ সম্পন্ন করে তিনি 888sport appর নবাবপুর স্কুলে ড্রইং শিক্ষক হিসেবে চাকরি নেন। সে-সময়ে আমরা তাঁকে এই স্কুলে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম। ছাত্রদের তিনি খুব স্নেহ ও ভালোবাসতেন। তখন থেকে তাঁর স্নেহ পেয়েছি। সংবাদে 888sport live football সম্পাদক হিসেবে কাজ করার সময় লেখার জন্য যখন অনুরোধ করে চিঠি পাঠিয়েছি চট্টগ্রামে, তিনি বিমুখ করেননি। ড্রইং করেছেন কখনো বিশেষ 888sport free bet ও ‘সংবাদ সাময়িকী’র জন্য। এছাড়া 888sport live football নিয়ে লিখতে অনুপ্রাণিত করেছেন আমাকে।
স্কুলের চাকরি তিনি বেশিদিন করেননি। ক্লাসে তাঁর কাছে গল্প শুনেছিলাম বায়ান্নোর 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারির। তিনি শহিদ বরকতের রক্তরঞ্জিত শরীর নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন – স্কুলে সে-কথা সরাসরি না বললেও সেদিনের ঘটনাপ্রবাহ সে-গল্পে ছুঁয়ে গিয়েছিল। বহু বছর পরে এ নিয়ে একটি 888sport sign up bonusমথিত 888sport live লিখেছিলেন বশীর। এ-লেখাটিতে সেদিনের ঘটনাপ্রবাহ খুবই উজ্জ্বল, লেখাটির নাম ‘কালো টিনের বাক্সে একটি রুমাল’। লেখাটিতে সেদিনটির সঙ্গে 888sport live chatী বশীরের ও চিত্রকরদের অঙ্গীকারও ধরা আছে। 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি, তাঁর বর্ণনায় হৃদয়গ্রাহী হয়ে উঠেছে সেদিনের ঘটনাপ্রবাহ। বর্ণনা ছোটগল্পের মতো ও শক্তিশালী এক কথা888sport live footballিক যেন বলছেন শহিদ বরকতের চলে যাওয়ার দৃশ্য।
তখন দুপুর গড়িয়েছে। বিরামহীন কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ার পালা শেষ। তবু থমকে সব। এদিক-ওদিক ঘাসের ওপর খালি শেল, আর সেটিকে ঘিরে পানির ভেজা দাগে এই খররৌদ্রে হঠাৎ করে শিশিরস্নাত দু-একটি শুকনো ঘাস। যদিও আমরা তখন মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রাবাসের সারি সারি ব্যারাকের সম্মুখের ঘাসে বসে, আকাশের দিকে তাকিয়ে আধশোয়া কেউ, দু-একজন মাঝে মাঝে কাশছিল। কয়েক রাত বিনিদ্র থাকার মতো চোখে জ্বালা। কাঁদুনে গ্যাসের ঝাঁজ বাতাসে তখনো রয়েছে। কেমন এক গতিহীন সময়। হঠাৎ করে একটা উৎকণ্ঠা মাঝে মাঝে উঁকি দিচ্ছিল – মৃত্যুর আশঙ্কা, জীবনের জন্য ব্যাকুলতা। দ্বৈরথ যুদ্ধে এরপর কী হবে তা জানিনে, তবে কিছু যে একটা হবে বা হতে যাবে তাই উৎসুক চোখজোড়া। আমি এবং হাসান হাফিজুর রহমান দুজন বসে ছিলাম চার-পাঁচটা ব্যারাক পেরিয়ে, লাল খোয়া রাস্তার একধারে। হাসান উত্তেজিত কণ্ঠে অনেক কথা বলছিল। কিছু কানে যাচ্ছিল আর কিছু যাচ্ছিল না, কিন্তু কী যে বলছিল তা শুনতে পাচ্ছিলাম না মোটেই। ফাল্গুনের মরা ঘাসে দল বেঁধে পিঁপড়ের সারি চিনেবাদামের খোসা ঘিরে হাঁটছিল, তাই দেখছিলাম।
একটা চাপা গুঞ্জন শুনে রাস্তার দিকে তাকালাম। কাঁটাতারঘেরা সীমানা পেরিয়ে, কালো পিচঢালা পথে সবুজ হেলমেট মাথায় অসংখ্য সশস্ত্র পুলিশ। সূর্যের বেশুমার প্রতিফলনে একটা ক্ষিপ্ত অজগরের কালো কালো চক্রের আঁশ জ্বলজ্বল করছে। একজন অফিসার হাত নেড়ে ইশারা করে ডাকছে ছাত্রদের। কিছু ছাত্র এগিয়ে গেল, গেট পর্যন্তও তখনো কেউ যায়নি, গুলির শব্দ হলো আচমকা। ঝাঁকে ঝাঁকে ভয়ার্ত পাখির মতো ছড়িয়ে গেল ছাত্ররা। দৌড়াদৌড়ি, কিছু আতঙ্কিত নাম, তারপর সব চুপ। আমরা যে কয়েকজন দূরে ছিলাম আত্মরক্ষার জন্য সবাই ব্যস্ত হয়ে গেলাম। এই আত্যয়িক মুহূর্ত কেটে যাওয়ার পর আবার যে যার জায়গায় এসে বসেছি। প্রত্যেকেই নিজ মনোভাবে কিছু কিছু লজ্জিত, তাই আপনভোলা ভাব। আমরা যারা এখানে জড়ো হয়েছি তারা সবাই তো আত্মোৎসর্গিত প্রাণ, তবু এই কিছুক্ষণ আগে আপনি ও পর এই চিন্তা, তাই স্বজনের সঙ্গে এক পথে দাঁড়িয়েও নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এক প্রয়াস। এবং পরমুহূর্তে এটা যখন প্রকাশ হয়ে যায় হঠাৎ তখন হাসি। এই মুহূর্তে হাসির কোনো এমন ঘটনা ঘটেনি যে হাসতে হবে, তবু হাসি। এই মুখোশের আড়ালে নিজের কাপুরুষতা, স্বার্থপর মনকে আড়াল করে বলি, ধুৎ, ভয় দেখাচ্ছে। আবার গল্প করছি। কেউ তার বান্ধবীর সঙ্গে গত সন্ধ্যা কথোপকথন, কেউ তার পিতার সঙ্গে গত রাতের কথান্তর, হাসান বলছিল নতুন 888sport app download apkর কথা আর আমি ভাবছিলাম আজকের জাদুঘরে আমার চিত্রপ্রদর্শনীর কথা। আমার তৈলচিত্রগুলোর কথা। হঠাৎ দেখলাম, ব্যারাকগুলোর দক্ষিণ পাশ দিয়ে একটি চলন্ত জটলা। দৌড়ে গেলাম। বেশ লম্বা, শ্যামবর্ণ, মুখমণ্ডল পরিষ্কারভাবে কামানো, সারা চেহারায় বিষ্টির বড় বড় ফোঁটায় ভরে যাওয়া ঘাম আর পরনের প্যান্টের পেটের নিচ থেকে কল খুলে দেওয়ার মতো অঝোরে রক্তের ঢল। সবার সঙ্গে আমিও তাকে ধরেছি, আমার সাদা পায়জামায় কে যেন আবিরের রং পিচকারি দিয়ে ছড়িয়ে রাঙিয়ে দিলো। আমি তাকে ধরেছি বুকের কাছে, আমার মাথা তার মুখের নিকট। একসময় সে চোখ তুলে তাকাল। একটা ছোট শিশুর মতো গড়গড় করে নামতা পড়ল, আমার বাড়িতে খবর দেবেন … আমার নাম আবুল বরকত … পল্টন লাইন …
পরমুহূর্তে জবাই করা মুরগির মতো হাঁ করে জিভ কাঁপিয়ে ফিস ফিস করে বলল, পানি। পানি।
বাঁ হাত দিয়ে মৃদু করে ধরেছি তার পিঠ, ডান হাতখানা তার বুকের ওপর। সে-হাতে রুমালখানা রেখেছি ধরে। কাঁদুনে গ্যাস থেকে বাঁচার জন্য, ভেজানো মুখের ঘাম মোছার জন্য নোংরা। ভাবলাম, কী করব। জিভ কাঁপছে অনবরত খোলা মুখের ভেতর। একটু ইতস্তত করলাম। মনে দ্বিধা, একধরনের অপরাধবোধ। কিন্তু তা ক্ষণিকের জন্য। জিভটা বারবার নড়ছে। পরমুহূর্তেই নিংড়িয়ে দিলাম হাতের রুমাল।
হাসপাতালের ভেতর যখন তাকে নিয়ে এলাম তখন সবাই চমকে উঠল। যেসব ছাত্র গ্যাস বা লাঠির আঘাতে আহত তারা ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেল। বলল, ওকে দেখুন আগে। ওকে দেখুন।
ডাক্তার আর নার্স ছুটে এলো। তারা এই প্রথম গুলিতে আহত দেখছে, তাই কে আগে কীভাবে তার সাধ্যমতো সব সেবা ঢেলে তাকে বাঁচাতে পারে তারই চেষ্টায় নিজেদের করল ব্যস্ত। চেনামুখের একজনকে আবুল বরকতের নাম জানিয়ে বেরোবার জন্য ঘুরে দাঁড়িয়েছি, চোখে পড়ল ক্যানভাসের স্ট্রেচারে একজনকে, মাথার খুলির ওপরটা একেবারেই নেই। একপাশে শুকনো ঘাস-জড়ানো মগজ মৃদু হাতে রাখা। পাশ থেকে কে যেন ডুকরে কেঁদে উঠল। অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিলো সরকারকে। ঘাড় ফিরিয়ে দেখি 888sport live chatী ইমদাদ হোসেন। ওকে ধরে জোর করে নিয়ে আসছি, আরেকটা স্ট্রেচারে এলো আরেকজন, পায়ের গোড়ালি ফাটা বাঁশের মতো অসংখ্য তীক্ষ্ণ মাথা তুলে। আমরা দুজনে তাড়াতাড়ি জাদুঘরের দিকে এগোলাম। পথে যেন এই অসময়ে আশুরার মিছিল বেরিয়েছে। সবাই চলেছে কারবালার ময়দানে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
আজ 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি।
(‘কালো টিনের বাক্সে একটি রুমাল’, আমার জীবন ও 888sport app, পৃ ৮০-৮২)
ভাবতে ভালো লাগে যে, এদেশের প্রথম প্রজন্মের অধিকাংশ 888sport live chatীই অ্যাকাডেমিক শিক্ষা সমাপ্ত করার পর আধুনিক 888sport live chatচৈতন্য ও পথনির্মাণের নানা উদ্দীপন-বিভাবে আন্দোলিত হয়েছিলেন। অনেকে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। ইউরোপের 888sport live chatচৈতন্য ও চিত্রের প্রতি অনুরাগ এবং সেই সময়ের চিত্রকরদের জীবন যাপন তাঁর মানস গঠনে প্রবলভাবে ছাপ ফেলেছিল। বিশেষত প্যারিস, রোম ও লন্ডনের নানা প্রবণতা সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের জন্য তাঁরা উন্মুখ হয়ে ছিলেন। পাশ্চাত্যের 888sport live chatপ্রবণতাকে তাঁরা পর্যবেক্ষণ করেছেন নানা দৃষ্টিকোণ থেকে। তবে কেউ ঐতিহ্যচ্যুত হননি। শেকড় ছিল 888sport appsের জল-হাওয়ায়। কেউ অবগাহন করেছেন বিমূর্ততায়। কেউ বাস্তবরীতিতেই মগ্ন থেকেছেন। কেউ দেশীয় ঐতিহ্যিক প্রবাহকে নবীন ও আধুনিকতার আলোকে সমন্বয় ঘটিয়ে নতুন এক চিত্রভাষা রচনা করেছেন। চিত্রকরদের এই জিজ্ঞাসা 888sport live chat-888sport live footballে যে-অভিঘাত সৃষ্টি করেছিল এও কম গুরুত্ববহ ছিল না। সেই আলোকে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে মুর্তজা বশীরের সৃজন-ভুবনকে পর্যবেক্ষণ করলে আমরা প্রত্যক্ষ করি তাঁর সৃষ্টি কতভাবে গভীরতা-সন্ধানী হয়ে উঠেছিল। এই সময়ের কাজে মুর্তজা বশীরের সমাজ অঙ্গীকার প্রবলভাবে বলীয়ান ছিল। 888sport live chatশিক্ষা গ্রহণে বিদেশযাত্রা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৯৫৬ সালে বাবা আমাকে ইতালির ফ্লোরেন্সে পাঠালেন। ফ্লোরেন্সের প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলি আমাকে মুগ্ধ করেছিল কিন্তু মোহিত করতে পারেনি। সেখানে গিয়েও আমি বেশ কিছু ছবি আঁকি। বিষয়বস্তু ছিল যথারীতি সাধারণ মানুষ। যেমন একজন লোক রাস্তায় বসে অ্যাকোর্ডিয়ান বাজিয়ে ভিক্ষা করছে কিংবা একজন সাধারণ রমণী তার মেয়েকে নিয়ে বাজার করে ফিরছেন এমন। প্রকৃতির ছবিও এঁকেছি কিছু, তবে তা হাতেগোনা। ফ্লোরেন্সের উফিজি আর্ট গ্যালারি অনেক বিখ্যাত। বিখ্যাত সব 888sport live chatীর ছবি শোভা পাচ্ছে। মাইকেল এঞ্জেলো, টিসিয়ান, রুবেন্স, রাফায়েলসহ অনেকের কাজ দেখলাম। কিন্তু তাঁদের কাজ দেখে আমি কোনোভাবেই অনুপ্রাণিত হইনি। কারণ আমার বক্তব্য ও প্রকাশভঙ্গি তাঁদের কারো সঙ্গেই মেলে না। আমি প্রাক-রেনেসাঁর 888sport live chatী দুচ্চো, সিমাব্যু, সিমন মার্টিনি, ফ্রা অ্যাঞ্জেলিকো, জত্তো প্রমুখের কাজ দ্বারা অনুপ্রাণিত হলাম। তাঁদের কাজের মাঝে আমার চিন্তার সামঞ্জস্য খুঁজে পেলাম। সিম্পলিফিকেশন অব ড্রইং, সীমিত রঙের ব্যবহার, চরিত্রগুলো ঋজু অথবা মুভমেন্ট কম। তাঁদের ছবির এসব বৈশিষ্ট্যের দ্বারা আমি অনুপ্রাণিত হলাম, তবে অনুকরণ করলাম না।’ (‘জীবন ও চিত্র’, আমার জীবন ও 888sport app, পৃ ৪১)
সেজন্যই বোধকরি ২০০৪ সালে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে যখন রোমে আর্ট ক্যাম্প হয়েছিল বশীর স্বভাবতই খুব উৎফুল্ল ছিলেন। আমিনুল ইসলাম ও কাইয়ুম চৌধুরীর কাছে শুনেছি, রোমে পদার্পণের পরই তিনি টেলিফোন ডাইরেক্টরি খুঁজে পুরনো বন্ধু ও সতীর্থদের খোঁজ করছিলেন। তিনি সে-সময় ফিরে গিয়েছিলেন যৌবনের সোনালি দিনগুলোতে।
মুর্তজা বশীর তাঁর সৃষ্টিতে নবীন মাত্রা যোগ করেছেন বহুকৌণিক কর্ম, নিরীক্ষা, রঙের সুমিত ব্যবহার ও সমাজচেতনার উজ্জীবিত বিভাব চিত্রপটে প্রতিবিম্বিত করার মধ্য দিয়ে। আমরা অনেক সময় দেখি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মানুষেরা 888sport live chat-888sport live footballে যে উদ্দীপনা সৃষ্টি করেন তা সমাজ অগ্রগতিতে সহায়ক হয়ে ওঠে। বশীরের প্রধানতম পরিচয় চিত্র888sport live chatী হলেও গল্প, 888sport app download apk, 888sport alternative link ও 888sport sign up bonusকথা রচনায় সিদ্ধহস্ত হয়ে ওঠেন। একসময় আত্মনিয়োগ করেছিলেন live chat 888sport নির্মাণে, চিত্রনাট্য রচনা করেছেন। 888sport live football-888sport live chatের নানা প্রবণতা পর্যবেক্ষণে তাঁর বিরতি ছিল না। এভাবেই তিনি হয়ে ওঠেন এদেশের 888sport live chat-888sport live football ও সংস্কৃতি জগতের এক অগ্রণী ব্যক্তিত্ব।
888sport appsের আধুনিক চিত্র888sport live chatে মুর্তজা বশীরের বিশিষ্টতা চোখে পড়ার মতো। এক পর্ব থেকে আরেক পর্বে তাঁর উত্তরণ এবং আশ্চর্য সিদ্ধি এই মানুষটিকে অন্যতম আধুনিক চিত্রকরের মর্যাদা দান করেছে। দক্ষ তিনি তেলরঙে। এচিং এবং লিথোগ্রাফেও সিদ্ধহস্ত হয়ে উঠেছিলেন। বারংবার তিনি বিষয়কে বদল করেছেন। এক বিষয় থেকে বিষয়ান্তে যাত্রাও তাঁকে বিশিষ্ট ও স্বাতন্ত্র্যে উজ্জ্বল করেছে। 888sport live chatের অন্বিষ্ট ভুবন এভাবেই তাঁর সৃষ্টিকর্মে তাৎপর্যময় ও উদ্দীপন-বিভাব সৃষ্টি করেছে।
তাঁর ড্রইংও বেশ শক্তিশালী। তবে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন তেলরঙের কাজে। নিরন্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন তিনি তাঁর সৃষ্টির বিভাময় উদ্যানে। একই বৃত্তে কোনোদিন থেমে থাকেননি। মূর্ত ও বিমূর্ত – এ দুই ধারার কাজেই দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি অনেকগুলো সিরিজেরও 888sport live chatী। দেয়াল, শহীদ শিরোনাম, পাখা, রমণী, কলেমা-তৈয়বা – প্রতিটি সিরিজই বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল।
সমাজচেতনায় উদ্দীপিত দৃষ্টিভঙ্গি মুর্তজা বশীরকে দিয়েছে স্বাতন্ত্র্য। জলরং, কালি-কলম, এচিং, অ্যাকুয়াটিন্ট ও লিথোগ্রাফ করেছেন অসংখ্য। মোজাইক ও ম্যুরাল মাধ্যমেও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে বেশকিছু কাজ। 888sport apps ব্যাংকে করা তাঁর বৃহৎ কাজেও প্রতিভার স্বাক্ষর স্পষ্ট। এছাড়া ১৯৭৪ সালে ইট দিয়ে মোজাইক-চিত্র নির্মাণ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়া ভাষা-আন্দোলনভিত্তিক তাঁর ড্রইং এবং লিনোকাটে মুর্তজা বশীরের শক্তিমত্তার পরিচয় মেলে। হাসান হাফিজুর রহমান-সম্পাদিত 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি গ্রন্থে এই লিনোকাটগুলি সেই সময়ের চেতনাকে ধরে রেখেছে। এই লিনোকাটগুলোতে মুর্তজা বশীরের শক্তিমত্তা ও ২১ ফেব্রুয়ারির প্রতিবাদী অনুষঙ্গ পরবর্তীকালে ছাত্র ও যুব আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছিল।
ছাত্রাবস্থায় বামপন্থায় আস্থাশীল ছিলেন বলে তাঁর সৃজনে অঙ্গীকারের ছায়া পড়েছিল। বামপন্থায় সংলগ্নতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশভাগের পরপর বগুড়ায় এসেছিলেন বিখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা ভবানী সেন। তিনি পার্টি অফিসে আমার আঁকা
প্রতিকৃতিগুলো দেখে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য আমাকে খবর পাঠান। আমি আগেই বলেছি, 888sport live chatী হওয়ার বাসনা আমার ছিল না। তবু এসব মহান নেতার প্রতিকৃতি আঁকার এক দুর্বার আকাঙ্ক্ষা মনে জন্মেছিল। আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম কীভাবে বড় সাইনবোর্ডে খোপ কেটে কেটে ছোট ছবি বিশালাকায় আঁকা হতো। বাসায় এসে আমি সেভাবে অনুশীলন করতাম। পরে যখন কিছুটা রপ্ত হয়, তখনি প্রতিকৃতিগুলো আঁকি। ভবানী সেন আমার অটোগ্রাফ খাতায় লিখেছিলেন : আর্টিস্টের কাজ হলো শোষিত জনগণের ভাব ও দুঃখ-দুর্দশাকে চিত্রের ভিতর দিয়ে এমনভাবে ফুটিয়ে তোলা যাতে সমাজে সে আর্ট নবজীবন সৃষ্টি করতে পারে। কথাগুলো আমার মনে গভীরভাবে ছুঁয়ে যায়। পরবর্তীকালে আমার 888sport live chatীজীবনে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা ও সাধারণ মানুষের প্রতি মমত্ববোধ থেকেই 888sport live chatকর্মগুলো সৃষ্টি হয়েছে।’ মুর্তজা বশীরের মানস উপলব্ধি ও সৃজন-উৎকর্ষের এই চালিকাশক্তি আমাদের সকল সৃজনকে উপলব্ধি করতে সহায়ক হয়ে ওঠে। বিশেষত ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৬ সালে তিনি যেসব মানব-মানবীর ছবি অঙ্কন করেছেন, সেখানে প্রাধান্য বিস্তার করেছিল সাধারণ মানুষের অবয়ব। এই চিত্রগুচ্ছে মানুষের মর্মযাতনা বেশ উজ্জ্বলভাবে ধরা আছে। এই সময়ে করা হাসপাতালে নির্যাতনে মৃত্যুপথযাত্রী কৃষক-নেত্রী ইলা মিত্রের প্রতিকৃতিটি অসাধারণ। তেভাগা আন্দোলন ও ইলা মিত্র এখন
কৃষক-আন্দোলনের ইতিহাসের অন্তর্গত। ইলা মিত্র তেভাগা আন্দোলনে নেতৃত্বের দায় বহন করায় পুলিশ তাঁর ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায়। নির্যাতনে নির্যাতনে বিপর্যস্ত ইলা মিত্র হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে কোনোভাবে বেঁচেছিলেন। ইলা মিত্রের জীবন সংগ্রাম, নাচোলে কৃষক আন্দোলন ও নেতৃত্বের দায় বহন, সমাজ অঙ্গীকারের চেতনা মুর্তজা বশীরকে উদ্বুদ্ধ করেছিল এই চিত্রটি অঙ্কনে। বশীরের এই চিত্রে তেভাগা মৃত্যুপথযাত্রী নেত্রী ইলা মিত্র বিষণ্ন হলেও চারিত্রিক দৃঢ়তায় উজ্জ্বল এবং ঐতিহাসিকতায় মূল্যবান হয়ে উঠেছে এই ছবি। ১৯৫৪ সালে কার্জন হলে অনুষ্ঠিত 888sport live football সম্মেলনে অনেকের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন সুভাষ মুখোপাধ্যায় ও দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা হাসপাতালে ইলা মিত্রকে দেখতে গিয়েছিলেন। কলকাতায় ফিরে গিয়ে প্রায় একই সময়ে 888sport appর হাসপাতালে মৃত্যুপথযাত্রী ইলা মিত্রকে নিয়ে এক অসামান্য 888sport app download apk লিখেছিলেন সুভাষ মুখোপাধ্যায় ও একটি রিপোটাজ রচনা করেছিলেন দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। আলাউদ্দিন আল আজাদ-রচিত একটি ছোটগল্পেও সেই সময়ে ইলা মিত্রের হাসপাতালে দিন যাপনের চিত্র ধরা আছে। এই ছবিটিতে ধরা পড়েছে বশীরের শক্তিমত্তা, কাজের শৈলীতে স্বাতন্ত্র্য।
মুর্তজা বশীর ভাষা-আন্দোলনেও অংশগ্রহণ করেছেন। ভাষা-আন্দোলনভিত্তিক তাঁর কয়েকটি সৃষ্টি আজ ইতিহাস ও গবেষণার অন্তর্গত। এছাড়া পাথরখোদাইয়ে করা তাঁর কয়েকটি কাজে চর্চিত বৈশিষ্ট্যও উজ্জ্বলভাবে ধরা আছে।
এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মুর্তজা বশীর বলেছেন বামপন্থায় তাঁর বিশ্বাস কেমন করে হয়েছিল। কেমন করে সংশ্লিষ্ট হলেন কমিউনিস্টদের সঙ্গে, জীবনে নানা টানাপড়েনের সমাজতন্ত্র ও সামাজিক সাম্যে তিনি আজো আস্থাশীল ছিলেন।
পরবর্তীকালে তাঁর ‘দেয়াল’ সিরিজের কাজেও সমাজচেতনতার অঙ্গীকার স্পষ্টতা পেয়েছে। মুর্তজা বশীর এই সামাজিক অঙ্গীকারের কারণেই হয়ে ওঠেন এক পর্যায়ে সত্যিকারের রাজনীতি-সচেতন 888sport live chatী।
‘দেয়াল’ ও ‘এপিটাফ’ সিরিজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার দুটি সিরিজের কথা বলতে চাই। একটি ‘দেয়াল’, অপরটি ‘এপিটাফ ফর দ্য মার্টায়ার্স’। দেয়াল সিরিজ আমি করেছিলাম ৯২টি। সময়কাল ছিল ১৯৭২-১৯৯৬। সূচনা হয়েছিল 888sport appয়, শেষ করেছিলাম প্যারিসে। মাঝে কিছু এঁকেছি পাকিস্তানের সারগোদা ও করাচিতে। এই দেয়াল সিরিজের ভেতর দিয়ে আমি তুলে ধরতে চেয়েছিলাম এই সমাজব্যবস্থার ফলে আমরা অদৃশ্য এক প্রাচীরের ভেতর বন্দি হয়ে আছি। তাতে কেউ কারো সঙ্গে কমিউনিকেশন করতে পারছে না। না বুঝতে পারছে পিতা তার পুত্রকে, স্ত্রী তার স্বামীকে এবং বন্ধু তার বন্ধুকে। কোথায় জানি একটি অদৃশ্য দেয়াল আছে। আমার মনে হয়েছিল যে, আমাদের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় মানুষ ক্রমেই ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে। ফলে অসুস্থ পিতাকে মনে হয় গলগ্রহ, বেকার ভাইকে মনে হয় অপদার্থ, অবিবাহিতা বোনকে মনে হয় বোঝা। এখানে দম বন্ধ হয়ে আসছে সবকিছুর। ‘এপিটাফ’ আমি শুরু করি প্যারিসে। ’৭১-এ। জীবনকে ভালোবাসি বলে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলাম। সবাই যে দেশ থেকে চলে গিয়েছিল যুদ্ধ করবে বলে এটা বিশ্বাস করি না। যেমন আমি যাইনি। ফলে মনের মধ্যে ছিল একটা পাপবোধ। প্যারিসে টেলিভিশনের পর্দায় কিংবা পত্রিকার পাতায় দেখলাম আত্মোৎসর্গিত যুবকদের ছবি। আমার কেন জানি মনে হতো, দেশের জন্য যারা এভাবে জীবনকে উৎসর্গ করলেন তাদের নামে কোনো দিন কোনো 888sport sign up bonusস্তম্ভ হবে না। সবাই চাইবে যার যার রাজনৈতিক কর্মীদের নাম তুলে ধরতে। কিন্তু এরা সবাই তো রাজনৈতিক দলের সভ্য ছিলেন না। তারা দেশকে ভালোবাসতেন এবং দেশের জন্য আত্মাহুতি দিয়েছেন। এই যে অজানা নামহীন শহীদবৃন্দ তাদের উদ্দেশে আমি পাথরের নানা রকম আকৃতির ভেতর দিয়ে 888sport sign up bonusস্তম্ভ করতে চেয়েছি। আদিমযুগে যখন কোনো বীর যোদ্ধা মৃত্যুবরণ করতেন তখন তাঁর কবরের মাথার কাছে একটি পাথর রাখা হতো। যে মুহূর্তে এই পাথরটি সেখানে রাখা হতো তখন সে পাথরটি একটি রূপকে আত্মার প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করা হতো। আমার এই ক্যানভাসগুলিতে ছিল আলোর ঝলকানি, বিষণ্নতা বা শোকের ছায়া ছিল না। আমি বলতে চেয়েছিলাম, এই শহীদদের আত্মদান নক্ষত্রের মতো ভাস্বর, সূর্যের মতো জ্বলজ্বলে।’ (আমার জীবন ও 888sport app, পৃ ৪২৬-৪২৭)
মুর্তজা বশীরকে ছাড়া দেশের আধুনিক চিত্রকলা-আন্দোলনের আলোচনা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে করা তাঁর ছবিতে যে প্রাণের আবেগ প্রত্যক্ষ করেছি আমরা, এ কম গুরুত্ববহ নয়। তাঁর দেয়াল সিরিজের চিত্রগুচ্ছ একসময় প্রচণ্ড নাড়া দিয়েছিল। এমনকি এপিটাফ চিত্রসমূহও ছিল এদেশের চিত্রকলায় নতুন সংযোজন। তিনি অবশ্য নিজেকে 888sport live chatের অনলে ও দহনজ্বালায় এতভাবে বদল করেন যে, এক পর্ব থেকে আরেক পর্বে তাঁকে চেনাই যায় না। নতুন পর্বে তাঁর অভাবনীয় শক্তি পর্যবেক্ষণ করলে বিস্মিত হতেই হয়। একজন বড় 888sport live chatীর গুণাবলি তাঁর সৃজনী অনলকে চালিত করেছিল সর্বদা। সেজন্যে এক পর্বের কাজে যখন বিরাট সম্ভাবনাকে প্রত্যক্ষ করি, আরেক পর্বে এসে তাঁকে কেমন যেন ম্রিয়মাণ মনে হয়। কিছুদিন ছেদ থাকে তাঁর কাজে। প্রত্যক্ষ করি তাঁর অনুভূতির তীব্রতা, জীবনকে পর্যবেক্ষণ করার আশ্চর্য দক্ষতা এবং নিজেকে পরিবর্তন করার প্রবল আকাঙ্ক্ষা। মুর্তজা বশীর এখানেই অনন্য 888sport live chatী।
ষাটের দশকে তিনি যখন ফ্লোরেন্স, প্যারিস বা করাচিতে কিছু তেলরঙের কাজ করেছিলেন, আমরা অবাক-বিস্ময়ে দেখেছিলাম তাঁর শক্তিমত্তা। তাঁর পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থানকাল, চিত্রচর্চা ও বন্ধু বিষয় নিয়ে মুর্তজা বশীর বলেন, ‘করাচির প্রদর্শনী শেষে 888sport appয় এলাম। ১৯৫৮ সালের শেষদিকে প্রেসক্লাবে প্রদর্শনী হলো। উর্দু কবি ফয়েজ আহমদ ফয়েজকে আমি লন্ডনে থাকার সময় থেকেই চিনতাম। তিনি 888sport appয় এসেছিলেন দূর হ্যায় সুখ কি গাও নামে এক সিনেমার কাজে। সিনেমাটির প্রযোজক পাট ব্যবসায়ী এম আর খানের সঙ্গে ছবিটির বিশ্ব পরিবেশনা-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে পরিচালক এ জে কারদার ছবিটি সম্পূর্ণ করতে পারেননি। ছবিটির নায়ক হয়েছিলেন সাদেক খান। ফয়েজ আহমদ জানালেন, লাহোরে তিনি আর্ট কাউন্সিলের সেক্রেটারি হয়েছেন। আমাকে প্রদর্শনী করার জন্য সেখানে আমন্ত্রণ জানাবেন।
লাহোরে গেলাম ১৯৫৯ সালের ডিসেম্বরের শেষে। প্রথমে থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল ন্যাশনাল আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ শাকের আলীর সামনাবাদের বাসায়। শাকের আলীর সঙ্গে আমার পরিচয় করাচিতে, সাঈদ আহমেদের বাসায়। চেকোস্লোভাকিয়ায় বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনার সময় তিনি এক চেক রমণীকে বিয়ে করেন। দেশে ফিরে 888sport app আর্ট ইনস্টিটিউটে চাকরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে করাচি যান। চাকরিহীন বেকার জীবন তাঁর স্ত্রী মেনে নিতে না পারায় ডিভোর্স হয়ে যায়। দুটো ঘর নিয়ে কোয়ার্টার। এক ঘরে শাকের আলীর ভাই থাকেন। অন্য ঘরে তাঁর সঙ্গে থাকার ব্যবস্থা হলো। শাকের ভাই একটু বিচিত্র ধরনের। নিজের মনেই থাকেন। ঘরে কথাবার্তা নেই। ডাকলেও তেমন সাড়া দেন না।
লাহোরে প্রদর্শনী শেষে ফয়েজ আহমদ ফয়েজ বললেন, ‘তুমি লাহোরে থেকে যাও, এখানে আর্ট কাউন্সিলের সান্ধ্যকালীন আর্ট ক্লাসে পেইন্টিংয়ের ক্লাস নাও।’’ (‘নদীর মতো বহমান’, আমার জীবন ও 888sport app, পৃ ৩৪১)
খ্যাতনামা প্রগতিশীল এই উর্দু কবির সঙ্গে তাঁর যে সখ্য হয়েছিল তা তিনি রক্ষা করেছিলেন। ফয়েজের মৃত্যুর পরেও তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। মুর্তজা বশীর এ-প্রসঙ্গে বলছেন, ‘ঠিক করলাম থাকব। একটা ঘর ভাড়া করলাম। যে ঘরে থাকি, সে ঘরের কোনো পলেস্তারা নেই। একদিকের দেয়ালজুড়ে তিনটি জানালা। তাতে কাচ নেই। আত্মীয়স্বজনহীন এক অদ্ভুত নিঃসঙ্গতার মধ্যে বসবাস। ভিন্ন পরিবেশ ও ভাষার মানুষ আমার চারপাশে। একদিন প্রচণ্ড গরমে ঘরের মেঝেতে শুয়ে আছি। ছাদে লক্ষ করলাম, বৃষ্টির পানি চুঁইয়ে ফাঙ্গাস পড়েছে সেখানে। পলেস্তারাহীন সেখানে মনে হলো এক ভয়ার্ত মানুষের চেহারা। সে-সময় আমি ঘনবসতিপূর্ণ লাহোরের রাস্তায় একা একা ঘুরতাম। মনে হলো, দেয়ালে দেয়ালে তেমন অসংখ্য মুখ যেন আমাকে কী বলছে।
লাহোরে আমার কোনো ইজেল ছিল না। ছবি আঁকতাম মাটিতে ক্যানভাস বিছিয়ে। এনামেল রং ক্যানভাসে ফেলে নিজের খুশিমতো। কখনো নখ ও পেরেক দিয়ে আঁচড় কাটছি, হাত দিয়ে রং মাখাচ্ছি। কখনো বা কাঁচা রঙের ওপর কাপড় চেপে ধরায় নিচের সাদা রং ভেসে আসত। কী করছি, আমি জানি না। আগে ছবি এঁকেছি পরিকল্পনামাফিক। কোথায় কী রং হবে, তা নির্ধারণ করা থাকত। তবে অনেক সময় প্যালেটে রং থেকে গেলে, সে-রং ফেলে দিতে কষ্ট হতো। ফলে পরিকল্পনায় যে- রং লাগাব বলে ভেবেছি, ব্যবহার করেছি তার বিপরীত রং। লাহোরে এই ছবিগুলো সৃষ্টি হতো তাৎক্ষণিকভাবে। আমার অবচেতন মনের রং-রেখা মিশিয়ে তৈরি হতো কোনো ভয়ার্ত মুখ কিংবা ফুলসহ ফজিলাইজড কোনো 888sport promo code। ১৯৬১ সালে লাহোরের প্রদর্শনীতে বিষয়বস্তুর মধ্যে ছিল পাখি হাতে রমণী, খাঁচায় পাখি বা রুগ্ণ শিশু ও খাঁচাবন্দি পাখি ইত্যাদি। এই ছবিগুলোর রং ছিটানো থেকে পরবর্তীকালে ‘দেয়াল’ সিরিজের সূত্রপাত।’ (‘নদীর মতো বহমান’, আমার জীবন ও 888sport app, পৃ ৩৪১-৩৪২) এই সময়ে তাঁর ড্রইং নতুন শক্তি নিয়ে উন্মোচিত হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, ‘১৯৬২ থেকে ’৬৩-এর মাঝামাঝি মেয়েরা এসেছে জ্যামিতিক বন্ধনে। সব মাপাজোকা। ক্যালকুলেটেড। তাই আমার কাছে মনে হয়েছিল জীবন। হতে পারে বিয়ে করার জন্য সেই সময় সবকিছু অর্গানাইজড মনে হয়েছিল। কিন্তু ’৬৩-এর শেষের দিকে আবার তারা দুর্বোধ্য হয়ে গেল। তাই বহু মুখ আমি এঁকেছি। একেকভাবে। আমার অনুভূতিতে মনে হয়েছে দুঃখে ঘেরা সেসব চেহারা কখনো নিঃসঙ্গ দুর্বোধ্য বা বীভৎস এবং বীভৎসতার প্রকাশ পেয়েছিল আমার শেষ ছবিটায় ‘মহিলা হাতে গিরগিটি’ নিয়ে। ’৬৪ থেকে ’৬৬-এর শেষ অবধি আঁকিনি। আঁকতে ইচ্ছে করল না। সিনেমা জগতে জড়িয়ে পড়লাম। ’৬৭ থেকে বিক্রি করা ছাড়া আমি মহিলার ছবি আর আঁকিনি।’ (আমার জীবন ও 888sport app, পৃ ৪২)
পরবর্তীকালে তিনি অবশ্য ছবি অঙ্কন করেছেন রমণী-মুখ নিয়ে। ছোট ক্যানভাসে বহু রমণীর বেদনা ও কষ্টকে তিনি 888sport live chatিত রূপ দিয়েছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই সিরিজের ছবিগুলোকে অসামান্য বলায় তিনি বলেছিলেন, ‘বাঙালি 888sport promo codeর যাতনা প্রবলভাবে আমার 888sport live chatচৈতন্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। আমি পথ খুঁজে পাচ্ছিলাম না, আমাকে হনন করছিল বাঙালি 888sport promo codeর মুখ : দুঃখ ও কষ্টসহ 888sport promo codeর অবয়ব। কীভাবে আঁকব? এ নিয়ে দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। অনেক ভেবে সেই পথটি আবিষ্কার করেছিলাম। আমার সর্বদা মনে হতো 888sport promo codeর অবয়ব অঙ্কনে সিদ্ধহস্ত একদিকে কামরুল হাসান অন্যদিকে যামিনী রায় আমার পথরোধ করে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁদের অবয়ব গঠনের শৃঙ্খলা আমার 888sport promo code-অবয়ব অঙ্কনের অন্তরায়।’ একজন সচেতন 888sport live chatী হিসেবেই বোধকরি মুর্তজা বশীরের এমন সগৌরবের সত্যভাষণ।
তাঁর 888sport sign up bonusকথা ও জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ের ঘটনাপ্রবাহ পাঠ করলে আমরা উপলব্ধি করি, 888sport live chatী হিসেবে আত্মপ্রতিষ্ঠার জন্য তিনি কত ধরনের সংগ্রাম করেছেন। করাচি ও লাহোরে তিনি যখন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন তা মোটেও সুখের ছিল না। তবুও একদিনের জন্য তিনি চিত্রভুবন থেকে সরে যাবেন – এ ভাবেননি।
মুর্তজা বশীরের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী-উপলক্ষে বেঙ্গল গ্যালারি তাঁর 888sport live chatসাধনার যে-প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল, নানা দিক থেকে আমাদের আধুনিক চিত্রকলার ইতিহাসে এ এক অনন্য ঘটনা। যদিও এ-প্রদর্শনীটি তাঁর সামগ্রিক চিত্রের কোনো প্রদর্শনী ছিল না, তবু এই প্রদর্শনীতে মুর্তজা বশীরের নিত্য-নিরীক্ষার ও পথপরিক্রমার পূর্বাপর স্বাক্ষর ছিল। কিছু পুরনো ড্রইং এবং পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে করা বেশকিছু কাজ ছিল। এসব চিত্রে আমরা উপলব্ধি করেছি তাঁর শক্তিমত্তা। তিনি কীভাবে বাঁক পরিবর্তন করেছেন নদীর মতো ও এক পর্ব থেকে অন্য পর্ব হয়ে উঠেছিল সিদ্ধির অনন্য সোপান তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। তাঁর যে-কোনো অনুরাগী বা মুর্তজা বশীর-গবেষকের জন্য এ-প্রদর্শনী নানা দিক উন্মোচন করেছে, এ-ব্যাপারে সন্দেহ নেই। এছাড়া 888sport live chatের নানা শাখায় বিচরণে দক্ষ আধুনিক এই মানুষটির উত্তরণ-ভাবনা মনন ও চারিত্রিক বিশিষ্টতা এবং নান্দনিকতার অনুভূতিকে সহজেই শনাক্ত করা গিয়েছিল। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে করা তাঁর ড্রইং, জলরং ও তেলরঙের কাজে তিনি সেই সময়েই অমিত সম্ভাবনা ও আধুনিক শৈলীকে যেভাবে আয়ত্ত করেছিলেন প্রদর্শনীতে তেলরঙে করা বাস্তবধর্মী কয়েকটি কাজে তারই স্বাক্ষর ছিল। বশীর বাস্তবধর্মী কাজের সৃজনী-উৎকর্ষে একসময় যে এদেশের আধুনিক চিত্রকলায় নবধারা-সৃষ্টিতে উন্মুখ ছিলেন সে-কথাই প্রমাণিত হয়েছিল।
এই প্রদর্শনী মুর্তজা বশীরের সৃজন-বৈভবের কয়েকটি পর্বে বিন্যস্ত ছিল এবং তিনি যে কত ধরনের কাজ করেছেন, তা উপলব্ধি করা গিয়েছিল। ড্রইং তাঁর বহুবিচিত্র, অন্যদিকে জলরঙে সিদ্ধির ছাপ স্পষ্ট। আর তেলরঙে তাঁর এ-অনায়াস দক্ষতা সহজ দৃষ্টিতেই উপলব্ধি করা গিয়েছিল।
এই প্রদর্শনীতে নানা পর্বের কাজ দেখে মনে হয়েছে, কী প্রবল ছিল মুর্তজা বশীরের অনুসন্ধিৎসা! অনুভব করতে চেয়েছেন ইন্দ্রিয় দিয়ে চলমান জীবনকে। এক পর্যায়ে বিষাদ ও কামনাও তাঁকে স্বস্তি দেয়নি। অঙ্কন করেছেন ভেতরের আবেগকে সংযত করে 888sport promo codeর বেদনা ও অফুরন্ত সৌন্দর্যকে। 888sport promo codeকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার এই যে দৃষ্টিভঙ্গি, এও কম তাৎপর্যবাহী নয়।
তাঁর একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে বেঙ্গল পাবলিকেশন্স থেকে। এই গ্রন্থে তাঁর 888sport live chatিত মানসগঠন, উত্তরকালের নানা জিজ্ঞাসা, পিতা বহুভাষাবিদ পণ্ডিত ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, 888sport cricket BPL rateের চেতনা, আচার্য জয়নুল আবেদিনের ব্যক্তিস্বরূপ, বন্ধুবৃত্ত ও হারিয়ে যাওয়া 888sport appর প্রসঙ্গ ঘুরেফিরে এসেছে। বন্ধুবৃত্তের মধ্যে আমিনুল ইসলাম ও শামসুর রাহমান উজ্জ্বল – তাঁদের কথা এসেছে বারবার। এই গ্রন্থটি পাঠ করে আমরা নানাভাবে সমৃদ্ধ হয়েছি।
888sport appর সরকারি চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৫৪ সালে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর উচ্চশিক্ষা ফ্লোরেন্সের একাদেমি দ্যেল্ বেল্লে আর্তিতে ১৯৫৬-৫৮ সালে এবং প্যারিসের ইকোল নাসিওনাল সুপিরিয়র দ্য বোঁজ আর্তে ১৯৭১-৭৩ সালে। দেশ-বিদেশে তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন এবং 888sport appsের রাষ্ট্রীয় সম্মান 888sport cricket BPL rateে পদকে ভূষিত হয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা বিভাগে দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করে অবসর জীবনযাপন করেছেন 888sport appয়। চট্টগ্রামে শিক্ষাদানকালে তিনি এবং তাঁর বন্ধু রশিদ চৌধুরী ও দেবদাস চক্রবর্তী শিক্ষার্থীদের যেভাবে সৃজনশীলতায় উদ্বুদ্ধ করেছেন তা ছিল আগ্রহোদ্দীপক। এই তিনজন 888sport live chat-শিক্ষক প্রতিভাবান কয়েকজন বিদ্যার্থীকে আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের আলোকে এমনভাবে দীক্ষিত করেছিলেন যা ছিল প্রথাবহির্ভূত, একান্ত ভিন্ন ও পৃথক এক 888sport live chatভুবন। এই ভুবনও পরবর্তীকালে ‘চট্টগ্রাম স্কুল’ বলে চিহ্নিত হয়েছিল। যদিও আজ চিত্র888sport live chatে অনুরাগ ও সৃজন-উৎকর্ষের সেই ধারা অন্তর্হিত হয়েছে নানা কারণে, তবুও মনে হয় চট্টগ্রাম চিত্র-আন্দোলনে যে সাড়া ফেলেছিল তার তাৎপর্য তো কম নয়। মুর্তজা বশীরের একাধিক কাব্যগ্রন্থ ও 888sport alternative link পাঠক-সমালোচকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। সম্প্রতি তাঁর বাংলার ইতিহাস নিয়ে গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। 888sport appsের চিত্র-প্রয়াসের ধারাবাহিক নথি ও যাবতীয় তথ্য তিনি সংরক্ষণ করেছেন। কাগজের কর্তিকাও বাদ যায়নি। যৌবনকালে বোহেমিয়ান হয়ে উঠলেও ভেতরে ভেতরে শৃঙ্খলার এক তাগিদ সর্বদা অনুভব করেছেন এবং পরবর্তীকালে হয়ে ওঠেন যাপনে সর্বার্থে শৃঙ্খলাপরায়ণ।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.