মুর্তজা বশীর : 888sport live chatভুবনের ব্যতিক্রমী নক্ষত্র

888sport live chatী মুর্তজা বশীর 888sport appsের আধুনিক 888sport live chatচর্চার অন্যতম পুরোধা। পঞ্চাশের দশক থেকে তাঁর চিত্রকর্ম এদেশের আধুনিক 888sport live chatকলায় নতুন মাত্রা সংযোজন করে এসেছে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তাঁর কর্মস্পৃহা স্তিমিত হয়ে যায়নি। বার্ধক্য তাঁর তরুণ মনকে অবদমিত করতে পারেনি। এক ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই 888sport live chatী তাঁর মেধা ও মননকে সঙ্গী করে 888sport live chatাঙ্গনের চড়াই-উতরাই সাবলীলতায় পাড়ি দিয়েছেন। তাঁর সাফল্য আমাদের 888sport live chatভুবনকে গৌরবান্বিত ও সমৃদ্ধ করেছে।
তাঁর কর্মপরিধি কেবল 888sport live chatচর্চায় আবদ্ধ থাকেনি, এর বিস্তার ঘটেছে নানা ক্ষেত্রে। মুর্তজা বশীরের সৃষ্টিশীল কর্মের ক্ষেত্রে যুক্ত হয়েছে 888sport live football, live chat 888sport, গবেষণা ও 888sport app বিষয়। 888sport live chatী তাঁর অনুসন্ধিৎসু মনের পিপাসা নিবারণ করেছেন অন্বেষণের পরিধির বিস্তার ঘটিয়ে। প্রতিনিয়ত তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছেন নতুন নতুন কর্মযজ্ঞে। অজানাকে জানার, পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করার যে-আকাঙ্ক্ষা তা তাঁর জ্ঞানের ভাণ্ডারকে ঋদ্ধ করেছে আর সেই সঙ্গে তাঁর বহুমাত্রিক প্রতিভা আমাদের 888sport live chatজগৎকে করেছে সমৃদ্ধ।
888sport appsের প্রথম সারির অন্যতম 888sport live chatী মুর্তজা বশীর। একজন সৃষ্টিশীল ব্যক্তিত্ব হিসেবে অনন্য এই 888sport live chatীর তুলনা তিনি নিজেই। সৌভাগ্যক্রমে এই মহান ব্যক্তিত্বকে খুব কাছ থেকে জানার ও তাঁর নিরলস কর্মযজ্ঞের অন্তর্নিহিত রূপটি অনুধাবন করার সুযোগ হয়েছিল আমার।
888sport live chatকলা একাডেমিতে ১৯৭৬ সালে 888sport live chatী মুর্তজা বশীরের ‘এপিটাফ ফর দ্য মার্টায়ার্স’ শিরোনামে একক চিত্রপ্রদর্শনী শুরু হলো। সেই প্রথম এই অনন্য 888sport live chatীর চিত্রকর্ম দেখার সুযোগ পেলাম। এর আগে তাঁর চিত্রকর্মের সঙ্গে পরিচয় কেবল খবরের কাগজ ও সাপ্তাহিকীর মাধ্যমে। আমি তখন সবে আর্ট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। প্রদর্শনীতে পরিচিত হলাম খ্যাতিমান 888sport live chatী মুর্তজা বশীরের সঙ্গে। মুগ্ধ ও বিস্মিত হলাম স্বয়ং 888sport live chatীর মুখে তাঁর চিত্রকর্মের ব্যাখ্যা শুনে আর অনুধাবন করলাম দৃশ্যমান একটি চিত্রকর্ম সৃষ্টির নেপথ্যে একজন 888sport live chatীর ভাবনা কত গভীরে প্রোথিত থাকতে পারে। তাঁর কথায় আরো জানতে পারলাম, প্রদর্শিত প্রতিটি চিত্রকর্ম ক্যানভাসে আঁকার আগে তিনি নিখুঁতভাবে লে-আউট তৈরি করে নিয়েছিলেন।
এরপর অনেক সময় গত হয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে 888sport live chatী মুর্তজা বশীর ও তাঁর সৃষ্টিশীল জগৎ সম্পর্কে আরো বিশদভাবে পরিচিত হয়েছি। বুঝতে পেরেছি তাঁর সৃষ্টির ভুবন কেবল চিত্রকর্মে সীমাবদ্ধ থাকেনি। তাঁর সহজাত অনুসন্ধিৎসু মন তাঁকে আগ্রহী করেছে চিত্রচর্চার বাইরের 888sport app সৃষ্টিশীল কর্মে। 888sport live chatী মুর্তজা বশীরের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তাঁর আগ্রহের বিষয়বস্তুকে তিনি সামান্য জেনেই ক্ষান্ত হননি, বরং সেই বিষয়বস্তুর শেকড়-অবধি অনুসন্ধান করেছেন। 888sport live chatীর সৃষ্টিশীল কর্মের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁর এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যটি বিরাট ভূমিকা রেখেছে।
ছাত্রাবস্থা থেকেই রেখাচিত্রে তিনি অত্যন্ত দক্ষতা দেখিয়েছেন। 888sport live chatাচার্য জয়নুল আবেদিনের মতো ব্যক্তিত্বকে তিনি শিক্ষাগুরু হিসেবে পেয়েছিলেন। অতএব স্বাভাবিকভাবেই মানব-অবয়ব ও রেখাচিত্র অঙ্কনের দক্ষতা তাঁর তৈরি হয়েছিল সেই সময়েই। তাঁর মতে, একটি চিত্রকর্মে, বিশেষত ফিগারেটিভ চিত্রকর্মে, রেখাই চিত্রের মূল কাঠামোকে সুদৃঢ় করে তোলে। ফ্লোরেন্সে 888sport live chatশিক্ষা গ্রহণের সময় উচ্চ (ঐরময) রেনেসাঁসের বিখ্যাত 888sport live chatীদের 888sport live chatকর্ম তাঁকে অনুপ্রাণিত করতে পারেনি, বরং রেখাপ্রধান প্রাক-রেনেসাঁসের চিত্রশৈলী তাঁকে আকৃষ্ট ও প্রভাবিত করেছিল।
প্রাতিষ্ঠানিক 888sport live chatশিক্ষাকালে সংগত কারণেই তাঁর চিত্রকর্ম মানব-অবয়বনির্ভর ছিল। পরবর্তীকালে ইউরোপে কয়েক বছর অবস্থানকালে সেখানকার 888sport live chatচর্চা ও 888sport live chatসংগ্রহের সঙ্গে পরিচিতি তাঁর চিত্রকর্মকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করে।
পঞ্চাশের দশকের শেষ প্রান্তে মুর্তজা বশীরের চিত্রশৈলীতে নতুন এক মাত্রা যুক্ত হয়। অবয়বে স্বচ্ছ রং ব্যবহার করতে শুরু করেন, ফলে ফর্ম ভেদ করে পেছনের ফর্মও এতে দৃষ্টিগোচর হয়। 888sport live chatী এই 888sport live chatশৈলীকে ‘ট্রান্সপারিজম’ নামে আখ্যায়িত করেন। এ-সময়ের রেখাপ্রধান ভারি গড়নের ফিগারের উপস্থাপনাকে অনেকেই পিকাসোর চিত্রকর্মের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। বস্তুত মুর্তজা বশীরের সঙ্গে আলাপচারিতায় এটুকু স্পষ্ট হয়েছিল যে, পাবলো পিকাসোর বহুমুখী প্রতিভা ও ব্যক্তিত্ব 888sport live chatীকে মুগ্ধ এবং অনুপ্রাণিত করেছে, তবে পিকাসোর 888sport live chatকর্ম তাঁর চিত্রকর্মে কোনো প্রভাব রাখতে পারেনি।
তাঁর ‘দেয়াল’ সিরিজকে তিনি ‘অ্যাবস্ট্রাক্ট রিয়েলিজম’ বলে আখ্যায়িত করেন। যদি কোনো বিষয়বস্তু অথবা ক্ষুদ্র ফর্মকে অতিমাত্রায় বর্ধিত করে উপস্থাপন করা যায় তাহলে সেই অতিপরিচিত বস্তু অথবা ফর্মটি উপস্থাপনার কারণে আমাদের দৃষ্টিতে অপরিচিত রূপ ধারণ করে। একইভাবে ‘এপিটাফ’, ‘পাখা’, ‘কান্ডোস’ পর্বের চিত্রকর্মগুলোও শৈলীর দিক থেকে এক অর্থে অ্যাবস্ট্রাক্ট রিয়েলিজম বলা যায়।
২০০২-এ তিনি ক্যালিগ্রাফি ব্যবহার করে চিত্রকর্ম নির্মাণ করেন যা ‘কলেমা তৈয়বা’ শিরোনামে 888sport appয় প্রদর্শিত হয়। চিত্রকর্মগুলোতে ক্যালিগ্রাফির অক্ষরকে ছাপিয়ে উজ্জ্বল রঙের অবস্থান মুখ্য রূপে প্রকাশিত হয়েছে।
২০০৩-এ তিনি পুনরায় মানব-অবয়বনির্ভর চিত্র সৃষ্টিতে ফিরে আসেন। অবয়বে রেখার প্রাধান্য, বিস্তৃত স্পেসে সমতল ও মসৃণ রং ব্যবহার করেছেন। রং-ব্যবহারের শৈলী তাঁর ষাটের দশকে চিত্রিত মানব-অবয়ব থেকে একেবারেই ভিন্ন। তাঁর রঙের প্যালেটে এ-সময়ে ছিল উজ্জ্বল রঙের প্রাধান্য।
চিত্রকলার প্রায় সব মাধ্যমেই তিনি 888sport live chat সৃষ্টি করেছেন। তাঁর মোজাইক চিত্র, বিশেষত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অক্ষয় বট’ এবং 888sport apps ব্যাংকের ‘টাকার বিবর্তন’ দুটিতে উপকরণগত পার্থক্য বিদ্যমান। এদেশের তৎকালীন 888sport live chatচর্চার ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে এ-দুটো নতুন সংযোজন হিসেবে চিহ্নিত।
রেখাচিত্র ছিল 888sport live chatী মুর্তজা বশীরের একটি অত্যন্ত প্রিয় মাধ্যম। ছাত্রাবস্থা থেকেই তিনি এই মাধ্যমে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ফিগারেটিভ চিত্রকর্মে তাঁর শক্তিশালী রেখা ব্যবহারের প্রাধান্য লক্ষণীয়। এছাড়া ছাপচিত্র মাধ্যমেও তিনি তাঁর দক্ষতা প্রকাশ করেছেন অবলীলায়।
১৯৬৩ থেকে ’৬৬ পর্যন্ত তিনি live chat 888sportের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যেন স্থির পটভূমির চিত্রচর্চাকে সরিয়ে দিয়ে চলমান পটভূমির সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করলেন। live chat 888sportে তিনি চিত্রনাট্য, সংলাপ ও 888sport live chat-নির্দেশনা ছাড়াও সহকারী পরিচালক হিসেবে তাঁর দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। বিখ্যাত বাংলা live chat 888sport নদী ও 888sport promo code এর অন্যতম উদাহরণ।
মুর্তজা বশীরের অনুসন্ধিৎসু মন তাঁকে কখনো স্থির হতে দেয়নি। নিজের ভাবনাকে প্রকাশের জন্য তিনি ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমকে অবলম্বন করেছেন এবং তাঁর পিপাসু মনের তৃষ্ণা মেটাতে এমনসব বিষয়ে তিনি আগ্রহ দেখিয়েছেন এবং গবেষণা করেছেন যা সাধারণত কোনো চিত্র888sport live chatী করেন না, বিশেষত আমাদের দেশে তা চোখে পড়ে না।
তিনি সুলতানি আমলের মুদ্রা ও শিলালিপি সম্পর্কে গবেষণা করেছেন। গবেষণাপ্রসূত গ্রন্থ প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে – মুদ্রা ও শিলালিপির আলোকে বাংলার হাবসী সুলতান ও তৎকালীন সমাজ।
১৯৯৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের মন্দির ও মন্দির-টেরাকোটা বিষয়ে গবেষণা করেন।
মুর্তজা বশীর যখন আর্ট ইনস্টিটিউটের ছাত্র 888sport live chatের পাঠদান তখন ব্যবহারিক কলাকৌশল শিক্ষার ভেতরেই সীমাবদ্ধ ছিল। তত্ত্বীয় বিষয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা তখনো শুরু হয়নি। ফলে 888sport live chat সম্পর্কে আরো জানার আগ্রহ নিয়ে তিনি বই পড়ার দিকে ঝুঁকলেন। যদিও পারিবারিক পরিবেশের কারণে আগে থেকেই তাঁর বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠেছিল। বইপড়া ও কেনা দুই-ই তাঁর সারাজীবনের সঙ্গী হয়ে রইল। তাঁর ব্যক্তিগত বইয়ের সংগ্রহ বিরাট আর তার মাঝে রয়েছে অনেক দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থও।
ডাকটিকেট সংগ্রহ ছিল তাঁর অন্যতম প্রধান একটি শখ। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও বিশেষ যত্নে সেই শখ তিনি লালন করেছেন।
১৯৭৩ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করেন। ২০০৩ সালে অবসর গ্রহণ করে 888sport appর মনিপুরিপাড়ার ফ্ল্যাটে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। এই বাসায় বহুবার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। তখন তাঁর সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে নানা বিষয়ে – 888sport live chatকর্মের কথা, তাঁর নিজের কথা ইত্যাদি। যে-কোনো বিষয়ে তাঁর মতামত থাকত সুস্পষ্ট। একটু দ্রুত লয়ে সুন্দর বাচনভঙ্গিতে তিনি নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতেন, কখনো কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমার দ্বিমত থাকলে তিনি ধৈর্য্য ধরে গুরুত্বের সঙ্গে শুনতেন। 888sport live chatী মুর্তজা বশীরের ক্লাস করার সুযোগ আমার কখনো হয়নি। কিন্তু 888sport live chat সম্পর্কে তাঁর মতো একজন প্রতিভাবান 888sport live chatীর আলোচনা শুনে নিজেকে ধন্য মনে করেছি।
যে-কোনো কাজে হাত দেওয়ার আগে তিনি পরিকল্পনা করে নিতেন – 888sport live chatকর্মের ক্ষেত্রে যথাসাধ্য ডিটেইল লে-আউট, গবেষণার ক্ষেত্রে তা হতো আরো বিস্তারিত। তাঁর সমস্ত কার্যকলাপে প্রস্তুতির ভূমিকা ছিল ব্যাপক। তিনি খুঁটিনাটি বিষয় মনে রাখার চেষ্টা করতেন, অথবা নোট রাখতেন। একদিন তাঁর বাসায় গেলাম। খানিক পরেই তিনি বাজার সেরে ফিরলেন। তারপর একটা নোটবই নিয়ে এসে আমাকে দেখতে দিলেন। পাতার পর পাতা বাজারের হিসাব লেখা। বললেন, ‘জানো এগুলো কেন লিখে রাখি? ধরো, একশ বছর পরে কেউ যদি এখনকার জীবন যাপন সম্পর্কে গবেষণা করে তাহলে এটা তার কাজে আসবে।’ তাঁর নিজের সম্পর্কিত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সংবাদের পেপার কাটিং, তাঁর পিতার হস্তাক্ষরে জন্মের দিন-ক্ষণ লেখা কাগজ ইত্যাদি বহু ছোট-বড় কাগজ তিনি সযত্নে স্ক্র্যাপবুকে সংগ্রহ করে রাখতেন, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাঁর সম্পর্কে সঠিক তথ্যটি পেতে পারে।
এ-বছর জুলাইয়ের মাঝামাঝি একদিন তাঁর কুশল জানার জন্য যোগাযোগ করলাম। মিনিট-সাতেক কথা হলো।
ওষুধ খাবার সময় হলো বলে ফোন রাখলেন। ১৭ আগস্ট 888sport live chatী মুর্তজা বশীরের জন্মদিন। ভাবলাম, সেদিন তাঁকে জন্মদিনের
শুভেচ্ছা জানাবো এবং কথাও হবে। তার দুদিন আগেই তিনি চলে গেলেন। জন্মদিনের শুভেচ্ছা আর জানানো হলো না!