মৃণাল সেন : বাংলা সিনেমার দ্রোহী পরিচালক

live chat 888sport পরিচালক মৃণাল সেন (২৪.৫.১৯২৩-৩০.১২.২০১৮) প্রয়াত হলেন। বাংলা live chat 888sport পরিচালনার ত্রয়ী সত্যজিৎ-মৃণাল-ঋত্বিক। বয়সের বিবেচনায় সর্বকনিষ্ঠ ঋত্বিকের প্রয়াণ ঘটে এঁদের মধ্যে সবচেয়ে আগে, ১৯৭৬-এ, মাত্র ঊনপঞ্চাশ বছর বয়সে। সত্যজিৎ মারা যান ১৯৯৩-এ, তাঁর বয়স তখন একাত্তর। আর মৃণাল সেন বেঁচে ছিলেন ৯৫ বছর, ঈর্ষণীয় আয়ু বলতেই হবে। এবং প্রায় আশি বছর বয়সেও তিনি আমাদের ছবি উপহার দিয়ে গেছেন। বাংলা live chat 888sport নিঃসন্দেহে গর্বিত তাঁকে নিয়ে। বাংলা তথা ভারত তথা বিশ্ব live chat 888sportে চিরস্থায়ী এক নাম মৃণাল সেন।

অখ- ভারতবর্ষের ফরিদপুর জেলায় তাঁর জন্ম, এখন যা স্বাধীন সার্বভৌম 888sport appsের একটি জেলা। ঐতিহ্যিক এই জেলাতেই মধ্যযুগে যেমন জন্মেছেন মধুসূদন সরস্বতীর মতো প্রতিভা নিয়ে, তেমনি জসীমউদ্দীন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে বহু স্বনামধন্য মানুষের জন্ম এখানে। সদ্যপ্রয়াত কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীও ছিলেন এ-জেলারই ভূমিপুত্র।

বিদ্যালয় শিক্ষা পর্যন্ত তিনি ফরিদপুরেই কাটান। তারপর উচ্চতর শিক্ষার জন্য কলকাতায় আসেন। পদার্থবিদ্যায় এমএসসি করেন তিনি। স্বভাবতই মেধাবী ছিলেন। বিভিন্ন ধরনের পেশায় নিযুক্ত থেকে অবশেষে live chat 888sportজগতে আসেন।

live chat 888sportজগতে তাঁর আগমনটা

যে খুব মসৃণ ছিল তা কিন্তু নয়। বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী মৃণাল সেন

’৪৭-পরবর্তী নানা প্রগতিবাদী আন্দোলনে শরিক ছিলেন, ছিলেন ইপটা-র (ওচঞঅ) সঙ্গেও সংশিস্নষ্ট। সদ্য স্বাধীন দেশের সামনে ছিল সমস্যার পাহাড়, যার মধ্যে প্রধান ছিল শরণার্থী সমস্যা। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পূর্ববঙ্গ থেকে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতের বিভিন্ন স্থানে। আশ্রয় নেই, কর্মসংস্থান নেই, নেই কোনো ভবিষ্যৎ। এর আগে দেশ সামলে উঠেছে পঞ্চাশের মন্বন্তর আর ছেচলিস্নশের দাঙ্গার মতো অভিশাপময় প্রহর। তার সঙ্গে যুক্ত হলো দেশভাগের ক্ষত।

888sport live chat-888sport live football-সংস্কৃতিও তখন প্রহরান্তের পাশ ফিরছে। বিভক্ত হয়েছে ভারত, বিভক্ত হয়েছে বাংলা। কলকাতা আর 888sport appর মধ্যে রচিত হয়েছে দুঃখান্তিক দূরত্ব। তবু এরই মধ্য দিয়ে আগুনপাখির আগ্নেয় প্রভাব নিয়ে জেগে উঠছে 888sport app, জেগে উঠছে কলকাতা, 888sport live footballে পালাবদল ঘটছে, বৃহত্তর সংস্কৃতির অঙ্গনেও দেখা দিচ্ছে নবপ্রভাত।

কলকাতাকেন্দ্রিক বাংলা গল্প-888sport alternative link-নাটক-888sport app download apkয় যেমন পালাবদল লক্ষ করি, তেমনি 888sport appতেও। কলকাতায় গণনাট্যের আবির্ভাব, এবং তারই হাত ধরে ১৯৪৮-এ শম্ভু মিত্র, বিজন ভট্টাচার্য, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের হাত ধরে গ্রম্নপ থিয়েটার হিসেবে ‘বহুরূপী’র শুভ জয়যাত্রা; অচিরেই যে গ্রম্নপ থিয়েটারে উৎপল দত্ত (পিএলটি); বাদল সরকার (নক্ষত্র), অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় (নান্দীকার) যুক্ত হবেন। মঞ্চে শিশির ভাদুড়ী, নরেশ, অহীন্দ্র চৌধুরীদের ভূমিকা অস্তাচলের পথে। বুদ্ধদেব বসুর 888sport app download apk স্থান করে নিচ্ছে শতভিষা (১৯৫২, সম্পাদক আলোক সরকার) আর কৃত্তিবাসকে (১৯৫৩, সম্পাদক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, আনন্দবাগচী এবং দীপক চট্টোপাধ্যায়)।

live chat 888sportজগতের এক অর্থে যুগান্তর এলো বলা চলে ১৯৪৭-এই ‘ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক কুমার ঘটক, চিদানন্দ দাশগুপ্ত, রাধাপ্রসাদ গুপ্ত – এঁরা মিলে যে-live chat 888sport আন্দোলনটি শুরু করলেন, তার ফল হয়েছিল সুদূরপ্রসারী। এঁদের মুখপত্র হয়ে দেখা দিলো অনবদ্য একটি পত্রিকা – live chat 888sport। অনুষ্ঠিত হলো আন্তর্জাতিক live chat 888sport উৎসব, বিদেশি live chat 888sportে অবগাহনের সুযোগ পেলেন কলকাতার দর্শক। মৃণাল সেন এই আবহেই গড়ে উঠেছেন, live chat 888sport888sport live chatের নতুনতর চেতনায়। বাংলা ছবি এবং তাঁকে অনুসরণ করে সমগ্র ভারতীয় live chat 888sportজগৎ যে নবতরঙ্গ নিয়ে আসবে, তার পেছনে ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটির ভূমিকা অনন্য।

প্রাক্-’৪৭ ভারতীয় এবং বিশেষ করে বাংলা ছবির জগতে যে উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটেনি, তা কিন্তু নয়। যে ‘নিউ ওয়েভ’ আর সমাজবাস্তবতা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ইউরোপ এবং বিশেষ করে ফরাসি ও ইতালীয় live chat 888sportের প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করি, সেই সমাজবাস্তবতা খুব ক্ষীণ আকারে হলেও বাংলা ছবিতে দেখা গিয়েছিল উদয়ের পথে ছবির হাত ধরে। বিদেশে অভিনয় করে দেবিকা রানী প্রশংসিত হয়েছেন, নীতিন বসুর ছবি বিদেশি live chat 888sport-উৎসবে দেখানো হয়েছে, অহীন্দ্র চৌধুরী, প্রভা দেবীদের মতো বহু অভিনেতা-অভিনেত্রীর মধ্যে আমরা পেয়েছি আন্তর্জাতিক মানের অভিনয়। আলোকচিত্রের  চমৎকৃতি পেয়েছি প্রমথেশ বড়ুয়া, সতু সেন ও রামানন্দ সেনগুপ্তের হাতে। রামানন্দ সেনগুপ্ত, কাজ করেছেন রেনোয়ার ঞযব জরাবৎ ছবির আলোকচিত্রীরূপে; সে-ও তাঁর স্বতন্ত্র অর্জন। তবু সত্যজিৎ- চিদানন্দদের live chat 888sport-আন্দোলন অভিনন্দনীয় এবং তা গোটা ভারতীয় live chat 888sportজগৎকেই প্রভাবিত করতে পেরেছিল। সম্ভব হয়েছিল বাসু ভট্টাচার্য, হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় এবং পরবর্তীকালে শ্যাম বেনেগাল, আদুর গোপালকৃষ্ণন, সঙ্কু, গোবিন্দ নিহালনির আবির্ভাব।

সাতচলিস্নশের স্বাধীনতা, তারপর মৃণাল সেনের ১৯৫৫-তে

প্রথম ছবি রাতভোর। উল্লেখ্য, পথের পাঁচালীও মুক্তি পায় ওই ১৯৫৫- তে।

live chat 888sportের অর্থনীতিও এক্ষেত্রে বিবেচনাসাপেক্ষ। বিশ্বযুদ্ধের ফলে বম্বে (অধুনা মুম্বাই) live chat 888sportজগতে সম্পূর্ণ অন্য কারণে ছবির জোয়ার আসে। বেশকিছু মানুষ যুদ্ধের সময় রাতারাতি অর্থবান হয়ে ওঠেন। ফলে সেখানকার ছবিতে লগ্নি বেড়ে যায়। এ-সময় বাংলা থেকে অভিনেতা-অভিনেত্রী, আলোকচিত্রী, চিত্রনাট্যকার, গীতিকার, সুরকার, সংগীত888sport live chatীরা পাড়ি জমান সেখানে। অর্থনীতির দিক থেকে বিচার করলে বাংলা live chat 888sport888sport live chatে মঙ্গা দেখা দিয়েছিল সাময়িকভাবে। নিউ থিয়েটার্সের মতো দীর্ঘস্থায়ী প্রতিষ্ঠানকেও তাই গুটিয়ে যেতে দেখি তখন। এরকম অবস্থা সামলে নিতে বেশ কয়েক বছর সময় লেগে ছিল। তবু বাস্তবধর্মী ছবি তৈরির ক্ষেত্র সম্পূর্ণ প্রস্ত্তত হয়ে ওঠেনি তখন। আর যেটুকুও বাগড়ে উঠেছিল, তার পেছনে দর্শক-আনুকূল্য গড়ে উঠতে কিঞ্চিৎ সময় লেগেছিল। কেননা বাংলা ছবিতে স্টার প্রথা গড়ে উঠতে শুরু করেছে তখন, এবং মুম্বাইয়েও। দেবিকা রানী, কানন দেবী, সন্ধ্যা রানীরা প্রাক্-’৪৭-এ যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন নিঃসন্দেহে, নায়কদের মধ্যে যেমন প্রমথেশ বড়ুয়া, পাহাড়ী সান্ন্যাল, বীরাজ ভট্টাচার্য। কিন্তু পাঁচের দশকে বম্বের অশোক কুমার, মধুবালা, দিলীপকুমার, নার্গিস বা কলকাতার উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন যে-অর্থে স্টার, সে-অর্থে স্টার তাঁরা নন। অতএব নবনাট্য আন্দোলন সফল হলেও সত্যজিৎ-ঋত্বিকদের পক্ষে দুস্তর বাধা ছিল সামাজিক বাস্তবতাকে ছবিতে তুলে ধরায়, কেননা সেখানে তাঁদের প্রবল লড়াই স্টার সিস্টেমের বিরুদ্ধে।

হয়তো এজন্যই মৃণাল সেন প্রথম যে-ছবিটি করলেন, তাতে সদ্য তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়া নায়ক উত্তম কুমারই হলেন তাঁর প্রথম ছবির নায়ক। উত্তম কুমার সদ্য বসু পরিবার এবং শাপমোচন ছবিদুটির মাধ্যমে ম্যাটিনি আইডলে পরিণত হয়েছেন। কিন্তু মনেপ্রাণে একজন  বুনুয়েল ডি সিকার শিষ্য হয়ে মৃণাল সেনের প্রথম ছবি তাঁর চিন্তাচেতনা এবং স্টার সিস্টেমের কাছে তাঁর আত্মসমর্পণ সমন্বয়িত হতে পারল না। পরবর্তীকালে তিনি এই ছবিটিকে তাঁর নির্মাণ বলে স্বীকার করতে চাইতেন না। আমাদের বিবেচনায় তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবিটি তৈরি করার সিদ্ধান্তটি ছিল বাস্তবিকই হঠকারী। স্টার সিস্টেমকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, রাতভোর নির্মাণের এক দশক পরে ওই উত্তম কুমারকে নিয়েই নায়ক ছবি করিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন সত্যজিৎ রায়।

নিউ রিয়ালিজম, নয়া বাস্তববাদ যে তখনকার দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি, প্রাক্-পথের পাঁচালীর দুটি অনবদ্য live chat 888sport তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ। ছবিদুটির একটির নির্মাতা ঋত্বিক ঘটক। ছাবিবশ বছর বয়সে নির্মিত প্রথম ছবি নাগরিক (মুক্তির তারিখ ১৯৫৩), অথবা নিমাই ঘোষ-পরিচালিত ছিন্নমূল (১৯৫২) নিঃসন্দেহে পথের পাঁচালীর পূর্বেকার দুটি সমাজবাস্তবনির্ভর ছায়াছবি। ছিন্নমূল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের শতাধিক প্রেক্ষাগৃহে পরিবেশিত হয়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল, যদিও কলকাতায় ছবিটি দর্শকনন্দিত হতে না পারায় দুঃখে নিমাই ঘোষকে বাংলা ছবির জগৎকে বিদায় জানিয়ে সুদূর মাদ্রাজে (অধুনা চেন্নাই) পাড়ি দিতে হয়। একের পর এক বাণিজ্যিক দক্ষক্ষণী ছবি করতে হয় তাঁকে। তিনি নিজেই এজন্য আক্ষেপ করে বলেছেন, ছিন্নমূলই আমাকে ছিন্নমূল বানিয়েছে। ঋত্বিকও তাঁর প্রথম ছবির ব্যর্থতা মেনে নিয়ে বম্বে পাড়ি দেন, মধুমতীর চিত্রনাট্য লেখেন হিন্দিতে।

এসবই আমাদের বিবেচনাযোগ্য হয়ে উঠবে, মৃণাল সেন, যখন তাঁর প্রথম ছবির ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে ১৯৬০-এ নির্মাণ করলেন বাইশে শ্রাবণ। বাংলা ছবির দর্শক ইতোমধ্যে সত্যজিতের

অপু-ট্রিলজিতে পরিস্নাত হয়েছে, অন্যদিকে ঋত্বিকও একই বছরে মেঘে 888sport app তারা দিয়ে সুস্থ live chat 888sportের আবহ তৈরি করেছেন। মৃণাল এলেন তৃতীয় একটি ধারা নিয়ে। স্মর্তব্য, সে-সময়কার তপন সিংহও কিন্তু ব্যতিক্রমী চিন্তাধারার ছবি-করিয়ে হিসেবে দর্শকের সম্ভ্রম আদায় করেছিলেন। ক্ষুধিত পাষাণ ও ঝিন্দের বন্দী ছবির মাধ্যমে। পরবর্তীকালে কোনো অজ্ঞাত কারণে তিনি এই অধ্যায় থেকে সরে গিয়ে সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক ঘরানার কাছে আত্মসমর্পণ করলেন। তবু তাঁর পরিচালনায় জতুগৃহ, আপনজন বা এখনই ছবিগুলিকে সমান্তরাল ধারার live chat 888sport হিসেবে গণ্য করা যায়।

live chat 888sportকার হিসেবে দীর্ঘ প্রস্ত্ততির পর্যায় ছিল মৃণালের, যেমন ছিল ঋত্বিক-সত্যজিতের। পদার্থবিদ্যার ছাত্র ছিলেন মৃণাল, অথচ 888sport live footballিই যে তাঁর অধিকতর প্রিয় বিষয় ছিল, এর প্রমাণ পাওয়া যায় বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের বাইরে তাঁর তুমুল 888sport live footballপাঠের আগ্রহ ও সমুৎসুকতা দেখে। ছবি করার আগের দিনগুলিতে মৃণাল লিখছেন, ছাত্র বয়সে এবং তার কিছু পরে তাঁর পাঠ্যসূচিতে ছিল একদিকে ড্রাইডেন, পোপ, শেলি, হুইটম্যান, ডিফো, ডিকেন্স, থ্যাকারে, অন্যদিকে তুগেনেভ, সত্মাঁদাল, রবীন্দ্রনাথ, মানিক আর সতীনাথ। ১৯৪৬-এ তিনি কারেল চাপেকের শেষ রচনা দি চিট 888sport app download apk latest versionই করে ফেললেন।

এইসঙ্গে live chat 888sportবিষয়ক 888sport free bet loginের পাঠও নিচ্ছেন তিনি। যেমন ভস্নাদিমির নীলসেনের ঈরহবসধ ধং ধ এৎধঢ়যরপ অৎঃ। ক্লাস

সিক্স-সেভেনে পড়ার সময় জীবনে প্রথম সিনেমা দেখা তাঁর, কপালকু-লা। নির্বাক ছবির যুগ তখন। সম্ভবত ১৯৩৪-৩৫-এর ছবি। আর নিজের শহর ফরিদপুরে নাট্যাচার্য শিশির ভাদুরীকে দেখেছিলেন তিনি, দেখেছেন তাঁর অভিনীত সীতা, সধবার একাদশী। কলকাতায় যখন পাশটাশ করে বেকার, মাঝে মাঝে লেখালেখি করতেন পরিচয় ও 888sport app কাগজে, টিউশনি করতেন। 888sport sign up bonusচারণে পদার্থবিদ্যার অনুষঙ্গহীনতা আমাদের একটু অবাক না করে পারে না। এমনকি সিনেমা নিয়ে লেখা বেরোচ্ছে তাঁর এ-পর্বে, ইংরেজিতে, ‘ঈরহবসধ ধহফঃযব চবড়ঢ়ষব’। সিনেমা দেখেছেন খুব, এ-তথ্যও জানা যাচ্ছে লেখাটি পড়ে। পড়ছেন সদ্য বেরোনো বাংলা গল্প-888sport alternative link। এ-সমস্তকেই তাঁর সিনেমা তৈরির নেপথ্য নির্মাণ মনে করতে পারি।

রাজনীতিতে সরাসরি যুক্ত না থাকলেও তাঁর প্রগতিবাদী চিন্তা তাঁকে তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সজাগ রাখত এবং চ্যাপলিন-আইজেন-স্টাইন-পুদভ্কিন নিয়ে যেমন তাঁর ও তাঁর সমবয়সী হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়, ঋত্বিক ঘটক, তাপস সেন, বংশীচন্দ্র গুপ্তদের সঙ্গে কালীঘাটের ‘প্যারাডাইস ক্যাফে’ ঘিরে আড্ডা হতো, তেমনি তাঁদের আলোচনার পরিধিতে চলে আসত লেনিন, স্টালিন, গণসংগীত, ধর্মঘট, নবজীবনের গান ইত্যাদি প্রসঙ্গও। প্রসঙ্গত, এই প্যারাডাইস ক্যাফেতেই ঋত্বিক ঘটকের প্রথম ছবি নাগরিকের কিছু দৃশ্য চিত্রায়িত হয়।

এই পর্বেই রবীন্দ্রনাথের শেষযাত্রার দিন তাঁকে দেখা, গীতার সঙ্গে তাঁর প্রেম, যা পরবর্তীকালে পরিণয়ে পরিণতি পাবে। সম্পূর্ণ নিরপরাধ মৃণালকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় রাস্তায় গ-গোল ছিল বলে এবং সেই সূত্রে মুফতে তিনদিন চোর-গুণ্ডাদের সঙ্গে তাঁর থানায় লকআপে বাস, পকেটে কডওয়েলের ওষষঁংরড়হ ধহফ জবধষরঃু-র উদ্ধৃতিরাজি!

১৯৫৫ তখনো অপেক্ষায়। সবে ১৯৫০। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের চাকরি নিয়ে ছ-মাস কানপুর, ছ-মাস কলকাতা, পুনরপি বেকার। ‘এ সময় দিন কাটছে দারিদ্রে্যর মধ্যে, দারিদ্রে্যর ভয়াবহতার মধ্যে … এক একটা দিন যায়, আরো গরিব হয়ে যাই, এক একটা দিন যায়, সিনেমার জন্য আরো ছটফট করি। … ধার বাড়তে থাকে। … ১৯৫৩ সালে আমার দুরবস্থা যখন চরম অবস্থায় গিয়ে পৌঁছয়, তখন একদিন মার্চ মাসে গীতাকে বিয়ে করে ফেলি।’  এই হলো মৃণালের সিনেমার আগে ব্যক্তিগত সিনেমার গল্প।

তো ১৯৫৫-র ছবি রাতভোর নিয়ে এটুকুই বলা যায়, এর কাহিনি গড়ে উঠেছিল গ্রামের গরিব এক ছেলের শহরে এসে নানা বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়া নিয়ে। গঠনগত দিক দিয়ে এ-ছবিটির সঙ্গে রাজকাপুর-ছবি বিশ্বাসের একদিন রাত্রের কিছু মিল আছে। এ-ছবির ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে ১৯৫৯-এ তিনি নির্মাণ করলেন নীল আকাশের নীচে। এ-ছবিটি নিয়ে বিশদ আলোচনা-সমালোচনা কম হলেও দেখা যায় না। কিন্তু ছবিটি যথেষ্ট উল্লেখযোগ্যতার দাবি রাখে। নানান দিক দিয়েই রাখে। প্রথমত, এর কাহিনি নির্বাচন। বাংলা ছবি মৃণালের  হাত ধরেই প্রথম বাংলা 888sport live footballের বাইরে গিয়ে সর্বভারতীয় কাহিনির দিকে হাত বাড়াল। সর্বপ্রথম এই মৃণাল সেনের হাত ধরে। এ-ছবিটি গড়ে উঠেছে বরেণ্য হিন্দি লেখিকা মহাদেবী বর্মার একটি গল্পকে অবলম্বন করে। একজন লেখিকার কাহিনি নিয়ে ছবি করার সঙ্গে অন্বিত হলো মৃণালের নাম, এ হলো ছবিটির দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য দিক। তৃতীয়ত, এ-ছবির গান। ছবিটির সংগীত পরিচালনায় ছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখায় দুটি অনবদ্য গান পরিবেশিত হয়েছিল হেমন্তের কণ্ঠে এ-ছবিতে, যা সংগীত-রসিকরা আজো মুগ্ধতা নিয়ে শোনে। গানদুটির একটি হলো ‘ও নদীরে! একটি কথাই শুধাই শুধু তোমারে’, এবং অপরটি ‘নীল আকাশের নীচে এই পৃথিবী’। প্রথম গানটি পরে হলিউডের ছবিতেও ব্যবহৃত হয়েছিল। ছবিটির চতুর্থ উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এ-ছবিতে চীনা ফেরিওয়ালার চরিত্রে প্রখ্যাত অভিনেতা কালী বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনবদ্য অভিনয়। কালী বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা অভিনেতাদের তালিকায় নন্দিত একটি নাম। তপন সিনহা, সত্যজিৎ রায়ের একাধিক ছবিতে তাঁর অসামান্য অভিনয়ের স্বাক্ষর

রয়েছে। তবু এ-ছবিতে তাঁর অভিনয় বোধ করি তাঁর সমগ্র অভিনয়জীবনের সেরা।

আরো উল্লেখযোগ্য, সময়টা রাজনৈতিকভাবে ‘হিন্দি-চীনা’

ভাই-ভাইয়ের যুগ। ভারতবর্ষে এবং চীনের মধ্যে তখন গভীর বন্ধুত্ব। সেই  বন্ধুত্বের সমান্তরাল হয়ে দেখা দিয়েছিল সে-সময় এ-ছবি। দুঃখের কথা, ১৯৬২-তে চীন-ভারতের অভাবিত যুদ্ধে সে-বন্ধুত্ব ধাক্কা খেল বহু বছরের জন্য।

সর্বভারতীয় কাহিনি নিয়ে বারবারই ছবি করেছেন মৃণাল। কেবল তাই নয়, ভারতীয় 888sport app ভাষাতেও ছবি করেছেন। সেদিক থেকে তিনি সত্যজিৎ-ঋত্বিক থেকে এগিয়ে, সর্বভারতীয় পরিচালক হিসেবে। ঋত্বিক বাংলা ভাষায় ছবি করেছেন কেবল। সত্যজিৎ করেছেন বাংলা-হিন্দি-উর্দুতে (হলিউডে ছবি করার কথা ছিল তাঁর। করলে ইংরেজিতেও পেতাম তাঁর ছবি। বাংলা 888sport live footballের বাইরে পা বাড়িয়েছিলেন তিনিও, এমনকি বিশ্ব888sport live footballেও। ইবসেনের ঞযব ঊহবসু ড়ভঃযব চবড়ঢ়ষব-এর কাহিনি নিয়ে সত্যজিৎ তৈরি করেন গণশত্রম্ন। প্রেমচন্দের কাহিনি নিয়ে ছবি করেছিলেন দুটি। ই এম ফরস্টারের অ চধংংধমবঃড় ওহফরধ-ও করবেন ভেবেছিলেন, সেটিও বিশ্ব888sport live footballের দিকে তাঁর পদক্ষেপ হতো)। অন্যদিকে মৃণাল করেছেন মোট চারটি ভাষায়। বাংলা, হিন্দি, উড়িষ্যা এবং তেলেগু। আর তাঁর ছবির সর্বভারতীয় কাহিনিকাররা হলেন কালিন্দীচরণ পাণিগ্রাহী (মাটির মানুষ, ১৯৬৬), প্রেমচন্দ (ওকা উরি কথা, ১৯৭০), মহাদেবী বর্মা (নীল আকাশের নীচে, ১৯৫৯) প্রমুখ। তাঁর জেনেসিস ছবিটি হিন্দি, ইংরেজি ও ফরাসি, ত্রিভাষিক।

১৯৫৫ থেকে ২০০৩, এই প্রায় পাঁচ দশক ছিল তাঁর পরিচালিত ছবির ব্যাপ্তিকাল। পূর্ণাঙ্গ ছবি করেছেন চবিবশটি, অর্থাৎ গড়ে দু-বছরে একটি করে। তবে এমন করে বলা যাবে না, কারণ গত পনেরো বছর তো ছবি-ই করেননি। তাঁর থেকে বয়সে অনুজ জাঁ লুক গদার (১৯৩০) যেমন ২০১৬-তে তাঁর ৮৬ বছর বয়সেও ছবি করতে  সমর্থ, তিনি তাতে ছিলেন না। তাই আমরা তাঁর আরো কিছু অভিনব প্রয়াস দেখতে পেলাম না।

দেশে-বিদেশে তাঁর ছবির খ্যাতি পৌঁছেছিল, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বহু 888sport app download bdে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি, আন্তর্জাতিক live chat 888sport উৎসবে বহুবার জুরি হিসেবে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ভারতসহ বিশ্বের বহু দেশ তাঁকে সাম্মানিক ডি.লিট উপাধি দিয়েছে। ১৯৮১-তে তিনি ভারত সরকারের ‘পদ্মভূষণ’ পান। ফরাসি সরকার তাঁকে সে-দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘কমান্ডার অব দ্য অর্ডার অব আর্টস অ্যান্ড লেটার্স’ দ্বারা ভূষিত করে। ২০০৫-এ তিনি দাদা সাহেব ফাল্কে 888sport app download bd অর্জন করেন। এর আগে ২০০০ সালে তিনি রাশিয়ার ‘অর্ডার অব ফ্রেন্ডশিপ’-এ ভূষিত হন। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য ফিল্ম সোসাইটির প্রেসিডেন্টও নির্বাচিত হন তিনি। ছবি পরিচালনার বাইরে ইংরেজি-বাংলা মিলিয়ে দুটি গ্রন্থের প্রণেতা মৃণাল সেন। বইগুলোর মধ্যে তাঁর আত্মজীবনী তৃতীয় ভুবন। রয়েছে বিশ্ববরেণ্য চার্লি চ্যাপলিনের ওপরই লেখা একটি বই। তাছাড়া ‘live chat 888sportে আধুনিকতা’, ‘ঈরহবসধ ধহফ’ ইত্যাদি। তাঁর ছবির চিত্রনাট্য তাঁরই করা, তবে কয়েকটি চিত্রনাট্য রয়েছে মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের। ঋত্বিক ঘটকের মেঘে 888sport app তারা ছবির অন্যতম চিত্রনাট্যকার মৃণাল সেন। আন্তর্জাতিক 888sport app download bd পান বারোটি।

এবার মৃণাল সেনের ছবিগুলোর বিশেস্নষণে খানিক আসা যাক। প্রথমে তাঁর কলকাতা ট্রিলজি। ইন্টারভিউ ছবি দিয়ে যার যাত্রা শুরু। এরপর কলকাতা ৭১ এবং পদাতিক। ছবি তিনটি ১৯৭১, ’৭২ এবং ’৭৩-এ মুক্তি পায়। প্রথম ছবিটিতে তিনি চমকে দিয়েছিলেন কলকাতা শহরকে সামূহিক প্রেক্ষাপটে নিবিড় করে দাঁড় করিয়ে। সত্য বটে, ঋত্বিকের নাগরিক আর বাড়ি থেকে পালিয়ে এবং সত্যজিতের অপরাজিতা, অপুর সংসার থেকে মহানগর, কাপুরুষ কলকাতার হৃৎস্পন্দনকে অবধারিতভাবে তুলে ধরেছে, তবু মৃণালের এ-ছবির কলকাতা অন্য মাত্রা নিয়ে এসেছে। ছবির নায়ককে ঝুলে আমরা ট্রামে স্কুলে যেতে দেখি, কলকাতায় রাস্তায় রাস্তায় দেখি, লন্ড্রিতে দেখি, মিউজিয়ামে গিয়ে প্রেম করতে দেখি, (মৃণালের ছবিতে প্রেমিক-প্রেমিকার প্রেম করার দৃশ্য সুদুর্লভ। এই ছবিতে রঞ্জিত মলিস্নক আর বুলবুল মুখোপাধ্যায়ের প্রেমের দৃশ্যটি অ্যান্টিক হিসেবে বিবেচনার যোগ্য। বাংলা ছবির দুর্ভাগ্য, বুলবুলকে আর আমরা সিনেমায় অভিনয় করতে দেখলাম না!)। এবং প্রচ- ক্রোধে ম্যানিকিন ভেঙে ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধেই সোচ্চার হতে দেখি। এমন নয় যে, বাংলা ছবিতে এর আগে চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউ চিত্রায়িত হয়নি। হয়েছে, এবং যথেষ্টই হয়েছে। ঋত্বিকের প্রথম ছবি নাগরিক বা সত্যজিতের অপুর সংসারে আছে ইন্টারভিউর দৃশ্য। ইন্টারভিউ – সমসাময়িক সত্যজিতের প্রতিদ্বন্দ্বীতেও ইন্টারভিউ এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সত্যজিৎ যেখানে চাকরি পাওয়ার পেছনের এই অসার ও অভিসন্ধিমূলক ব্যবস্থাটিকে আঘাত করেন, মৃণাল তাঁর আঘাত ছড়িয়ে দেন ব্রিটিশ-প্রভাবিত এস্টাবিস্নশমেন্টের বিরুদ্ধে। নয়া উপনিবেশবাদের দুর্বার ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে মৃণালের দ্রোহ। দ্রোহ তাঁর বহু ছবির পরতে পরতে।

‘কলকাতা ৭১’-এও এই রাগি live chat 888sportকার দেখা দেন, যেখানে চার চারটি কাহিনির মধ্য দিয়ে (কাহিনিকাররা হলেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সমরেশ বসু, অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়) সমসাময়িক কলকাতাকে, তার সত্তরের দশকের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে ধরা হয়েছে যা সে-সময়ের আগ্নেয় পরিবেশ-পারিপার্শ্বিকতাকে খুব প্রতিনিধিত্বমূলকভাবে চিনিয়ে দেয় আমাদের। তাঁর ছবিতে যে সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি নিগূঢ় দায়বদ্ধতা রয়ে গেছে তাঁর, তা অনুমান হয় ছবিগুলো দেখলে। ট্রিলজির অন্তিম অধ্যায়টি, যা পদাতিকে লভ্য, (উল্লেখ্য, চারের দশকের অন্যতম প্রধান কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের পদাতিক কাব্যগ্রন্থটি এবং বিশেষ করে সে-বইয়ের ‘প্রিয়, ফুল লেখবার দিন নয় অদ্য/ ধ্বংসের মুখোমুখি আমরা/ চোখে আর স্বপ্নের নেই নীল মদ্য/ কাঠফাটা রোদে ফেটে চামড়া’ কী আমজনতা, আর কী সুশীল সমাজ, সকলের মুখে মুখে ফিরত)। সাতের দশকের নকশালবাড়ি আন্দোলনের মৃণাল সেন-কৃত মূল্যায়ন রয়েছে ছবিটিতে। উল্লেখ্য, প্রতিদ্বন্দ্বী ছবিতে সামান্যত সত্যজিৎ নকশালবাড়ি আন্দোলনকে ছুঁয়ে গেছেন। ঋত্বিক তাঁর যুক্তি তক্কো আর গপ্পোতে বিশদ করেই এনেছেন নকশালবাড়িকে, এবং এ-আন্দোলনের প্রতি সমর্থন-সমবেদনাও ব্যক্ত করেছেন নির্দ্বিধায়)।

দায়বদ্ধতা মৃণাল সেনের ছবির যেমন প্রগাঢ় এষণা বলে বিবেচিত হবে, তেমনি ছবির পর ছবিতে তাঁকে দেখি সতত নিরীক্ষাধর্মী হতে। ক্যামেরাকে প্রিয় বন্দুকের মতো ব্যবহার করেন তিনি, ছবির ফর্মকে নস্যাৎ করে দিয়ে নতুন নতুন বিভঙ্গ তৈরি করেন নেশাগ্রস্তের মতো। তাঁর হাতে জনতার দৃশ্য, ভিড়ের দৃশ্য অসম্ভব দক্ষতার সঙ্গে চিত্রায়িত হয়, পরবর্তীকালে যা গৌতম ঘোষের ছবিতে দেখা গিয়েছে। কখনো কখনো ক্যামেরার ফ্রেমে ঢুকে পড়েন নিজেই, এবং মুহূর্তে তাঁর দর্শক অবজেকটিভ থেকে তাঁর এই সাবজেকটিভে চলে যাওয়ায় বিভ্রান্ত হন।

তুমুল বিতর্কিত তিনি এসব কারণে। তাঁকে নিয়ে বিতর্ক দর্শক মহলে, সমালোচক মহলে। তাঁর ছবি আকাশকুসুম নিয়ে তো বেশ কিছুদিন যাবৎ মসীযুদ্ধই চলেছিল তাঁর সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের। দুজনের পত্রযুদ্ধ বেরোত কলকাতার ঞযব ঝঃধঃবংসধহ পত্রিকায়। কেউ কাউকে সূচ্যগ্র মেদিনী ছেড়ে দিতে নারাজ। সে এক সময় গেছে বাংলা live chat 888sportে!

মৃণাল সেনের যাবতীয় live chat 888sportের সামগ্রিক মূল্যায়ন এ-লেখার লক্ষ্য নয়। বাংলা live chat 888sportে তাঁর সম্ভ্রান্ত অবস্থানটিকে চিনিয়ে দেবার প্রয়াস নিয়েই সদ্য-প্রয়াত এই চিত্রপরিচালক সম্পর্কে খুব সামান্য আলোচনা করা হলো মাত্র। এ-প্রসঙ্গে তাঁর অন্যতম একটি ভূমিকার কথাও মনে রাখা দরকার। তিনি বহু অভিনেতা-অভিনেত্রীকে

প্রথমবারের মতো তাঁর ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী, মমতা শঙ্কর, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক সেন এবং রঞ্জিত মলিস্নকের মতো অভিনেতা-অভিনেত্রী, পরবর্তীকালে যাঁরা বাংলা ও মুম্বাই live chat 888sportে অভিনয় করে বিখ্যাত হয়ে আছেন। তাঁর স্ত্রী গীতা সেনকে দিয়ে তিনি অসাধারণ অভিনয় করান। গীতা অবশ্য গণনাট্য সংঘের আমল থেকেই অভিনয়ে সুনাম অর্জন করেছিলেন। মাধবী যথার্থ অর্থে মৃণাল সেনের আবিষ্কার বলা যাবে না, কেননা একেবারে শিশু বয়স থেকেই তাঁর অভিনয়জীবন শুরু। কিন্তু মৃণালের বাইশে শ্রাবণ ছবি দিয়েই মাধবীর প্রকৃত live chat 888sportজীবন শুরু বলা যেতে পারে, যে মাধবী পরবর্তীকালে ঋত্বিকের সুবর্ণ রেখা, সত্যজিতের চারুলতা, পুর্ণেন্দু পত্রীর স্ত্রীর পত্রতে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকচিত্তে স্থায়ী আসনে অধিষ্ঠিত। বাইশে শ্রাবণ পূর্ববর্তী মাধবীর নাম ছিল মাধুরী। মৃণাল সেন তাঁর নাম পরিবর্তন করে করেছিলেন ‘মাধবী’, যে-নামে আজ তিনি বিখ্যাত। ঠিক তেমনি উৎপল দত্তকে বাংলা থেকে সর্বভারতীয় অঙ্গনে নিয়ে এসেছিলেন মৃণাল, ভুবন সোম ছবিতে তাঁকে দিয়ে অভিনয় করিয়ে। এই হিন্দি ছবিটি উৎপল দত্তকে এতটাই জনপ্রিয়তা দেয় যে, এরপর শতাধিক হিন্দি ছবিতে তিনি অভিনয় করেন। এ-ছবিতে জীবনে প্রথমবারের মতো ভয়েজওভার দেন অমিতাভ বচ্চন। আজো সে-কথা মনে রেখে পুলকিত হন বচ্চন।

এসবও কিন্তু মৃণালের live chat 888sportজগতে অবদান হিসেবে স্বীকার্য ও বিবেচ্য।