অনেকটা দূরত্ব পেরিয়ে ক্লান্ত তিতলি, ছয়তলার নিচে ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে যিশু। বিষণ্ন! যিশুকে দেখলে তিতলির বুকের ভেতর ব্যথা হয়, টনটন করে কোথাও। একবার মনে হয় ফিরে গেলেই হয়, কী হবে কাছে গিয়ে; এরচেয়ে এ-ই ভালো – থাকুক কেউ তার অপেক্ষায়! হয় না আর। যিশুর সুতোর টান অনিবার্য। তিতলি সিঁড়িতে এগোয়, হাত বাড়িয়ে কাঁধের ব্যাগটা নেয় যিশু, একবার চোখ তুলে দেখে, কিছু বলতে চায়, কথা সরে না, তিতলিকে দেখামাত্র জড়িয়ে ধরার কথা মনে হয়েছে কতবার, ভেবে ভেবে কেটেছে সমস্ত রাত, তবু তিতলি এলেই বাধে। তিতলির মুখ শুকনো, চোখের নিচে কালি – কী হয়েছে ওর? কত রাত ঘুমায় না সে?
ঘরে ঢুকেই লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ে তিতলি। যিশুর বিছানায় কেমন একটা গন্ধ, মায়া। ওর অসুখ হয় মাঝে মাঝে, একলা থাকার অসুখ। ডাকে তখন! তিতলি এসে আয়োজন করে যিশুর অসুখ দেখে। নিঃসঙ্গ পুরুষের কাতর অসুখ সারিয়ে তোলার দাওয়াই জানে না, তবু আসে। এ-বাড়িটায় যিশু উঠেছে বেশ ক-বছর হলো। পারিজাতের জন্মের পর। পারিজাত – মেয়েটার চোখ একদম যিশুর মতো!
শুয়ে শুয়ে তিতলি অসুখঘরের বিছানা মাপে।
বালিশ-তোশক সব উল্টে দেখে, কোথায় অসুখ, কোথায়!
মগ, কাপ, চামচ নেড়ে কাজ করছে সে। গরম আয়েশি ধোঁয়া ঘরময় ছড়ানো।
– কফি খাবে, ব্রাজেলিয়ান?
– উঁহু খাব না, ঘুম পাচ্ছে।
– গোসল করো, তোয়ালে দিই?
– নাহ, রেশ কেটে যাবে।
– কিসের?
– ক্লান্তির।
– ক্লান্তিরও রেশ হয়?
– হয় তো। আজকের জার্নিটা গায়ে লেগেছে, কমলাপুরে এসে সিএনজি পাইনি।
– তিতলি? আলমিরায় একটা শাড়ি আছে, নীল শাড়ি, হলুদ পাড়, দেব?
– নাহ আজ না, আরেকদিন।
প্রত্যাখ্যানে যিশু সরে যায় দূরে, বিষণ্ন বিকেলের রং গাঢ় হয় আরো। তিতলির চোখ বুজে আসে ঘুমে। পায়ের কাছে পড়ে আছে পাতলা কাঁথা। গায়ে জড়ায়। থাকুক লেগে শরীরে এক ঋষি পুরুষের গন্ধ।
বেশ খানিকটা সময় তিতলি চোখ বন্ধ করে রাখে। সারা শরীরে বিদ্রোহ তার। মাথায় কত কী গুছিয়ে এনেছিল, কত গল্প, কত সুর, সব অসার এখন। মন কেমন করে। মানতে চায় না অনেক কিছু। সে যদি পারত আবার সেই সে-রাতের মতো যিশুর সব ওলট-পালট করে দিতে! পারে না কেন? তিতলির আবেশী চোখ পড়ে জানালায়। যিশু দাঁড়িয়ে। দূর থেকে এই মানুষটা নিঃসঙ্গ দেখতে, কাছ থেকে আরো। তিতলির বুকের ভেতরটা হাহাকার করে, কী যেন বলে মন অতৃপ্তির চিৎকারে। তিতলি ফিসফিস করে নিজের সঙ্গে। বাতাসে ওড়ে যিশুর চুল। পুরুষ তুমি এমন কেন? কেন তুমি 888sport app download apk রেখে আমার গল্প হও না? আমার কৃষ্ণা নদীর গল্প, তৃষ্ণা নদীর গল্প। তোমার দেয়ালে টানানো যে-নদীটা আছে, সে-নদী পেরিয়ে তুমি কার ঘরে যাও রোজ। সে কি তোমার অরুন্ধতি। কী জানি! কামরাঙা রঙ্গে রঙিন হয়ে আমিই তো এসেছিলাম তোমার প্রথম নদী, নৌকো ভালোবেসে। সমুদ্রসঙ্গম শেষে সেই জিভ কাটা চড়ুইয়ের গল্প শুনিয়েছি আমি। মনে আছে সূর্যদেব আর শে^তহংসের গল্পটা? শীলব্রতের চর্চায় বোধিসত্ত্ব রঙে গল্পবাসর ছিল আমাদের। তুমি ঋষি, আমি সিদ্ধি। আহা সেই সাত বাহন সপ্তডিঙ্গার দিন কোথায় গেল! আমি রাজকন্যা সুদর্শনা, চম্পকবনে নুশিবান বরজু অথবা শেহেরজাদি হয়ে জেগে আছি এক হাজার এক রজনীর অপ্রাপ্তির গল্প নিয়ে। শুনবে না তুমি? 888sport app download apkঘরের দরজা খুলে দাঁড়াও পুরুষ সামনে, চেয়ে দেখো তোমার তিতলি তোমার কত কাছে, মাথায় চলছে তার অদ্ভুত ঝড়, শূন্য শূন্য নিঃসঙ্গ বাতাস!
যিশু কখন এসে আলগোছে হাত রেখেছে তিতলির সিঁথিতে কে জানে। তিতলির ঘোর ভাঙে।
– তিতলি ভাত খাবে?
– এখন? এ ভর সন্ধ্যায়?
– হু, খাও না একটু, আমি রেঁধেছি।
কতদিন পর যিশু যত্ন করে কপালের তাপ দেখল আজ, তবু আলস্য নিয়েই উঠতে হয়, আয়োজন ভালো। বেগুন ভাজি, দুটো মাছের ঝোল। সাদা ভাত।
– রেঁধেছ কেন?
– তুমি আসবে, আমার অস্থির লাগছিল। সময় কাটছিল না, রাঁধলাম।
তিতলি মাছ পছন্দ করে না। তবু পরপর তিনটে খায়। ভুলে যায় ট্রেনের কামরায় একবার তার বমি হয়েছিল। এত মমতার আয়োজন। ঘরে কী একটা সুর বাজছে হালকা। পাহাড়ি ধুন বা ইমন হতে পারে। আবার এও মনে হয়, এটা তাদের সেপারেশনের বিষাদ সিম্ফনি, বেহাগ। তিতলি ভাত নেড়ে রেখে দেয় প্লেটেই। শেষ হতে হতে রয়ে যাওয়া ঘরকন্নার চড়ুইভাতির সুর তেতো লাগে। তিতলি জানে, দূরে কোথাও রোদের রং ধূসর ছিল বহুকাল আগেই। মন ভার হয়। যিশু যদি একবার বলত, তিতলি চলো আমরা দূরত্ব ভাঙি! পারিজাত, আমাদের স্বর্গের ফুলটাকে নিয়ে আসি এখানে, তুমি, আমি আর আমাদের ছোট্ট কন্যা পারিজাত। একটা সংসার, আবার নতুন হোক সব। যদি বলত!
তিতলির মুখের ভাত দলা হয়ে আটকে যায় গলায়, যিশু পানি এগিয়ে দেয়, বেহায়া মন এমন কেন? অঙ্গার করে দেওয়া যিশুকেই কেন চায়? মনের ওপর বিরক্তি, ধুত্তরি ছাই।
যিশুর ঘরময় ছড়ানো থাকে 888sport app download apkর বই। আজো একটা ডাই হয়ে ছিল বালিশের নিচে। বইটার একটা পাতা উল্টে গিয়ে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিল কিছু পঙ্ক্তি
যদি প্রশ্ন করো
কতদূর হতে এসেছি ফিরে
কেন এ অযাচিত নির্বাসন!
বলি আমি
বাসনার জাল ছিঁড়ে, আত্মসুখ প্রেমে, তুলেছি সুর!
হার্মিস।
নেই পাশে ইউরি, মিরান্দাদের কেউ
আমার জুলিয়েট আধা প্রেম!
শব্দহীন কোলাহল নদী পশ্চাতে ফেলে
অতীত মিছিলে নির্মেদ মেঘের কান্না শুনে শুনে!
থেমেছে যখন
কথা-বলা পুতুল আর আসে না আঁধারে!
বলে না কিছু ফিসফাস!
এহ্হে! কীসব লিখেছে যিশু, মাথামুণ্ডু নেই।
তিতলির হাসি পায়, এই তার কবি হওয়ার এত অহংকার! আচ্ছা কে যিশুর কথা-বলা পুতুল? তিতলি? তিতলি কি অনেক কথা বলে!
ভাবনা এগোয় না, ওর সামনে থেকে মাছগুলো সরিয়ে নেয় সে।
– ও কী! সরিয়ে নিলে কেন?
– আমি জানি, ভালো হয়নি। তবু তুমি তিনটে খেলে!
– তো?
– আমার খারাপ লাগছে, কাউকে কষ্ট দিতে আর ভালো লাগে না।
– হাহ্, কষ্ট!
কষ্টের কথায় যিশু তিতলি দুজনের মুখ থমথম করে।
– এবারের 888sport app download apkর বইটা রেখে যেয়ো, আমি জানি, তুমি 888sport app download apk ভালোবাসো না, আর হয়ও না আমার তেমন, তবু তোমার বইয়ের তাক ভরিয়ে রাখো আমার লেখা 888sport app download apkর বইয়ে। অদ্ভুত!
– হু, অদ্ভুত!
বইটা হাতে নিয়েই তিতলি উঠে দাঁড়ায়! ব্যাগ গোছায়। মায়ের বাড়ি ফিরতে হবে। কত পথ আবার! যিশু রিকশা ডাকে, তিতলি কমলাপুর যাবে। বাইরে জোর বৃষ্টির আয়োজন। অপেক্ষারত রিকশা ঘণ্টা বাজিয়ে যাচ্ছে, ইশারায় বোঝা যায় চালক বিরক্ত। তিতলি উঠে পড়ে, পেছনে দাঁড়ায় যিশু। নিশ্চুপ। অযথা চোখ জ্বালা করে তিতলির, কেন আসে সে এখানে? ঠোঁট চেপে কান্না থামায়, থামে না ছাই! যিশু আজ একবারও জিজ্ঞেস করেনি, পারিজাত কেমন আছে? ভালো আছে তো মেয়েটা?
পথ চলছে, বাতাসের গর্জন হলেই তিতলির কাছে কিছু 888sport sign up bonus, কিছু বিভ্রম বাস্তব হয়ে যায়। সেই কতকাল আগের কোনো এক রাত। এমনি করেই তো ডেকেছিল যিশু, সেই কোন কালের সেই বিস্মৃত সঙ্গমরাত সত্যিই কি সত্যি ছিল!
– তিতলি?
– হু।
– নাহ, কিছু না।
– আমি জানি, কিছু না, হয়তো কিছু নেইও! তবু কেন ডাকো বারবার আমায়?
– ঝড় হয় যে কোথাও, ঝড় এলে ভয় হয়, মনে হয় এমন কোনো প্রলয়েই আমি অদৃশ্য হয়ে যাব। তোমার মুখ মনে পড়ে। মনে হয় তুমি থাকলে সব হয়, প্রেম হয়, অভিমান হয়, প্রাপ্তি অথবা প্রত্যাখ্যানও হয়। দেখো, আমার চারপাশটা কেমন শূন্য! মনে হয় তুমি আসো, একটু দেখি তোমায়।
– ব্যস, এটুকুই?
– হু।
– আর কিছুই কী নেই?
– আছে হয়তো।
– হু। আমি জানি তুমি তোমার ঘোরের জগৎ থেকে বেরিয়ে আসতে চাও কখনো কখনো, আশৈশব অবচেতনে যে অন্ধকারে তুমি সেঁধে আছো একলা মনঘরে, সে-অন্ধকারে তুমি হাঁপিয়ে উঠছো আজকাল। ভয় পাও এখন। তুমি চাও, সে-অন্ধকারে আস্তে আস্তে ছায়ামানুষ হয়ে ঢুকে যাক কেউ, থাকুক সেখানে একটা 888sport promo codeশরীর, একটা পুরুষশরীর। রতির কালে তোমার 888sport app download apk হোক তারা। সঙ্গমের 888sport app download apk, কামজ 888sport app download apk।
– জানি না তিতলি।
– তুমি স্বার্থপর। তোমার 888sport app download apkর জগতের অন্ধকার এখন দৃশ্যমান। তোমার ভয়, একদিন সেই জগতের প্রলয়ঙ্করী আঘাতে তোমার বাস্তব অদৃশ্য হয়ে যাবে। তুমি হয়ে যাবে শূন্য মানুষ, তুমি ভীতু, তুমি কাপুরুষ, তুমি অন্ধ!
– তিতলি, সব সত্য তোমার জানার প্রয়োজন নেই। শুধু এটা জেনে রাখো, আমার 888sport app download apkর মানুষগুলো দিনকে দিন তোমার মতো হয়ে যাচ্ছে, তবে সেটা পুরোপুরি তুমি নও। তারা কখনো কখনো তোমার মতোই হাসে, তোমার মতোই কাঁদে, তোমার মতোই ভাবে, কিন্তু তারা কেউ আবার তুমি হতে পারে না। ও আচ্ছা, আমি তোমাকে রক্তে চাই তিতলি, একবার দেখতে চাই সেই তিতলি তুমি তিতলি, নাকি বিভ্রম 888sport promo code তোমার কাছে বুদ্বুদের মতো যিশু, কেউ স্থায়ী নয়। তুমি বিরহকামী। পূর্ণতায় তোমার সুখ নেই, বিচ্ছিন্নতায়ও নেই। তোমার অসুখ। 888sport app download apkর অসুখে তুমি বেঁধে আছো বিরহে। তবু হাত পেতে চেয়েছো, মন পেতে দেব। তুমি তো জানো, তোমাতে আমি কত অসংকোচী, লোভী। এসো, আমি ভেঙে ভেঙে হাজার হয়ে তোমার ভেতর ঢুকে যাই। গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে ছড়িয়ে পড়ি তোমার বুকে-পিঠে-জঙ্ঘায়।
যিশু চুপ। নমিত থুঁতনি লেগে ছিল বুকে। সংকোচ দানব দু-হাত বাড়িয়ে টুঁটি চেপে ধরে তার। ঘাম শুকিয়ে ঝড় নামে না দুজনের শরীরে। একটা শক্ত বড় বরফের খণ্ড জানালা গলে পায়ের কাছে পড়ে ছিল তাদের।
– তিতলি।
– বলো।
– আর ডাকব না তোমায়, ডাকলেও এসো না। আমি হয়তো জানি না, 888sport promo codeকে কেমন করে ধারণ করতে হয়। আমি অক্ষম, আমি ব্যর্থ!
– থাক বাদ দাও, ভালো লাগছে না। তোমার ভেতরে ডুবে দেখতে চেয়েছিলাম, দেখেছি। আমি অখণ্ড নই, হতে পারিনি। সেই তোমার এক সিজোফ্রেনিক ম্যানিয়া। অথচ আজ আমি অসুখী হতে আসিনি এখানে।
– পাশে এসো।
– না। তোমার শহর ছেড়ে চলে যাব।
– পালাবে?
– হু।
– পালাও আমি অসুস্থ, তোমাকে পতিত করার অপরাধে পাপী করবে আমায়?
– পাপ? এ কেমন করে হয়, আশৈশব আমি স্পর্শকাতরতায় পুড়েছি খুব। কই তুমি তো কখনো আমার শরীর ঘেঁষে বসোনি, কত সন্ধ্যায় গান শুনিয়েছি একা : প্রেমের গান, কই অবচেতনেও তো একবার ছুঁয়ে দাওনি পিঠ, তোমার চোখ নির্লিপ্ত, সংযত। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কখনো অবাধ্য হয়নি তোমার ঠোঁট। অথচ সেসব আমি রোজ চেয়েছি। তোমার আবার পাপ কিসে! যদি মনের ভুলে ছোঁয়াছুঁয়ি হয়েই থাকে কিছু, সেই পাপ আমার। তাই বলে পতিত? এ-অহংকার আমার সইবে কেন! 888sport app download apkয় বিশেষণ প্রয়োগে তুমি বড্ড কাঁচা!
– তিতলি প্লিজ!
– নো প্লিজ! যিশু শোনো, তোমার মগজে হাজারো আধাভৌতিক 888sport promo code, তারা কেউ সত্য নয়, তারা শুধু 888sport app download apkর উপমাবিশেষ, তারা তোমায় টুকরো টুকরো করে আমার গুঁড়ো হয়ে তোমার ভেতর ঢুকে যাওয়ার পথ কেটে দেয়, তুমি রক্তাক্ত হও, তবু ধূপ জ্বেলে লিখে যাও 888sport app download apk, প্রতিবাদহীন, কামগন্ধহীন। তোমার বিদ্যাপাঠে প্রেমপূজ্য, যৌবন বিষাক্ত, তাও তুমি বিশ^াস করো 888sport app download apk হয় তোমার! জেনে রাখো, হয় না ওসব, ছাইভস্ম ভাবমাত্র। যে সিলেবাসে প্রেম থাকে, অসুখ হয়ে সেখানে আমি থাকি কেমন করে বলো। তুমি শরীরে নয় মগজেই নপুংসক। তুমি জানো না তোমার অতৃপ্ত আকাক্সক্ষায় তুমি আর প্রেমিক নেই, তুমি সাদা তুলো। মৃত, নির্জীব। তোমার পুজোয় ভক্তিতে মেঘ তুষ্ট, বৃষ্টি তুষ্ট, তুষ্ট সমুদ্রও। কিন্তু আমি 888sport promo code? আমি লোভী।
– মিথ্যা, তুমি লোভী নও, আমিও। একমাত্র তোমাকে দেখলেই আমার লোভ হয়, মনে হয় পরিশুদ্ধ আবেগ ফেলে এবার মাংসাশী হই, উপোস শরীরে বিদ্রোহ করি। দস্যি হই বা কাঙাল হই; হই না তোমার কাছে একটা কিছু।
– হাহ্, এরপর? আবার নির্লিপ্ত উপেক্ষায় সেই সংযমী ব্রত। তোমাকে দিয়ে এসব হয় না। তুমি স্যাডিস্ট, তোমার বইয়ের ফাঁকে কান্না, তুমি কাঁদো কলমে, কাঁদো কালিতে, তোমার 888sport app download apkর প্রতিটি পৃষ্ঠায় জড়িয়ে যায় সেই বিষাদ। আমি শুনতে পাই। নিষ্কাম প্রণয়ের শুদ্ধ আবেগের মোহ তোমার, তুমি মহৎ কবি, অস্থির, অসুখী। তুমি শুধু তোমার জন্য কাঁদো অথবা তাদের জন্য কাঁদো, যারা তোমার স্পর্শ সীমার বাইরে।
– 888sport app download apk আমার সর্বনাশ করেছে তিতলি। আমি জানি না কী আমাকে সুখী করে, মাঝে মাঝে মনে হয় কাম, মাঝে মাঝে মনে হয় ক্রোধ, মাঝে মাঝে মনে হয় অতৃপ্তি। আমি কী চাই, কাকে চাই জানি না। তবে মগজে আছে সব বোধ, এমনসব মানুষ; যাদের আমি দেখি অথবা দেখি না।
– বিশ্বাস করো যিশু, তোমার মাথার ভেতরের সেসব অদৃশ্য ইন্দ্রিয় অথবা অজৈবিক প্রণয়ীর বাস তাদের সঙ্গে সুখে-অসুখে যুদ্ধ করে করে ক্লান্ত আমি। আর পারি না। তবু কেন যে আসি বারবার। কেন আমি বেহায়া হই। আজ তবে শেষ হলো মাপজোক, শক্তির নিরীক্ষা।
– আসো তো বেশ, কে আর আসে? মাঝে মাঝে এমন হয়, ইচ্ছে করে সব সমর্পণ করি তোমার পায়ে। ভাঙি নিজেকে, পারি না। তিতলি শেষবারের মতো আর একবার সুযোগ দেবে। এবার তুমি আমায় ভেঙেই দেখো না, আমার 888sport app download apk ফুরোয় কি না। আমার ভেতরের অপুষ্ট মানুষটাকে তুমি পায়ে দলিত করো এবার, রক্তাক্ত করো, দয়া করো।
– দয়া? আচ্ছা বেশ।
তিতলি হেসেছিল, নির্বোধ বালকের সঙ্গে কুটকৌশল খেলায় মত্ত হওয়ার চাল বিছিয়ে ভেবেছিল, সে দয়া করেছিল। তারপর কী হলো, সেদিনের সেই সমুদ্রমন্থন কালের বিষে এখনো জর্জর তার শরীর। তিতলির চোখ ভিজে যায়। আহা সেই প্রথম যিশুকে চেনা হয়েছিল তার, একটা মানুষ এত শূন্য হয়? যিশুর প্রণয় বিষে নীল হয়েছিল তিতলির শরীর। শুধু এক রাতের জন্য! তারপর আর কিছুই পাল্টে যায়নি, সেই অবোধ বালকের সঙ্গে জৈবিকচালে হেরেছিল তিতলি। এখন তার প্রায়ই মনে হয় যিশুর নয়, হয়তো তার জগৎটাই বিভ্রমের, ঘোরের। না হয় কেমন করে তিতলি ঢুকে গেল যিশুর এক টুকরো মাৎসায়ন জগতে, আর কেমন করে সত্যি হলো পারিজাত! অথচ যিশুর জীবনে তারা দুজন কতটা মিথ্যা সে নিজেই জানে না।
তিতলি চমকে ওঠে বৃষ্টির ফোঁটায়, কার কাছে সে উত্তর খোঁজে? যিশু কি সত্যি ঋষিপুরুষ, নাকি সে একাই রক্ত-মাংসের উপোসী 888sport promo code ছিল, অথবা আছে কিন্তু অন্য কোনো পুরুষের স্পর্শ তাকে কখনো কাঁপায়নি কেন এতটুকুও। প্রেম কি তবে 888sport app download apk না, বাস্তব!
বৃষ্টির ছাঁটে ভিজে যায় সব, পুবের বাতাসের জোর ঝাপটায় উল্টে যেতে চাইছে রিকশা, তিতলি সামলায়। হাতল ধরে রাখে শক্ত করে। তিতলি জানে, সামনে তার অনেক পথ, অন্ধকার, ঝড়! সে-রাতে সে ফিরেছিল পূর্ণতা নিয়ে। আর আজ! তিতলির হাতে যিশুর নতুন 888sport app download apkর বই ‘বিষাদঘর’। ঘোরের মাঝে সে একটা একটা করে পাতা খুলে ছিঁড়ে ফেলে উড়িয়ে দেয় বাতাসে। হাসি পায়। পাতায় পাতায় কত কী! তিতলি, পারিজাত, প্রণয়, সংযম, উপেক্ষা, বিভ্রম, বিচ্ছেদ! কয়েকটা নাম ঘুরেফিরে বারবার সন্ধিসূত্র, প্রাচ্যপুঁথি, মহুয়াসেতু। কে এই মানুষগুলো? বাস্তব, নাকি অন্ধকার অসত্য!
তিতলি হিংসে করে না তাদের অথবা করতে চায়ও না। বিড়বিড় করে উচ্ছৃঙ্খল ছেঁড়া কাগজকে শোনায় – তোমরা যারা ছিলে কোথাও যিশুর 888sport app download apkয়, প্লিজ তোমরা সত্যি হও। বাস্তব হও, হাত বাড়াও, মন বাড়াও, আকাশ হও। বিশ^াস করো, এত এত বছরেও যিশু কাউকে ভালোবাসেনি। সন্তানের নতুন মুখ দেখেও বিশ^াস করেনি সুখ। কেউ নেই কোথাও তার! আমরা সবাই মিথ্যা, ফানুস, মুখোশ। আমরা কেউ সত্যি নই তার, ওকে মৃত্যু দাও, অথবা মিথ্যা 888sport app download apkর ঘোর থেকে মুক্তি দাও তোমরা, মুক্তি দাও।
বৃষ্টির পথ কেটে কেটে ফিরতি পথে এগোয় তিতলি। ছয়তলার বারান্দায় যিশু তিতলির চলে যাওয়া দেখে, সে জানে না তিতলি আর ফিরবে কি না। প্রতিবারই মনে হয়, এই বুঝি তার শেষ যাওয়া! ভয় হয় খুব! ইচ্ছে হয় হাত বাড়িয়ে থামিয়ে দেয় পথ, অথচ তার ভেতরে গুটিয়ে থাকা হাজারও 888sport promo codeর ঈর্ষা, প্রেম, দীর্ঘশ্বাস তাকে জাপটে ধরে, থামায় তাকে। কখনো কখনো এ-ও হয়, তার নিজের ভেতরের পুরুষতান্ত্রিক বিচ্ছিন্ন আকাক্সক্ষার অশুভ ইচ্ছেরা ভয়ংকর শক্তি নিয়ে গোঁ গোঁ করে প্রলয়ে মুচড়ে দিতে চায় তার সামর্থ্যরে জগৎ। যিশু তাদের আটকাতে পারে না, কিছুতেই পারে না।
ঘরের আলোটা নিভে যায়। মেঘমল্লারের শেষটা শোনা হলো না! মোমের আলোয় হাতড়ে হাতড়ে পুরনো একটা 888sport app download apkর বই খোলে সে, মাঝপাতা বরাবর সেঁটে আছে একটা চিঠি। ছুড়ে মারে দূরে, জানে এক্ষুনি চিঠি ফুঁড়ে, 888sport app download apk ফুঁড়ে মগজ বেয়ে একঝাঁক বন্ধন চিৎকার করতে করতে বেরিয়ে আসবে। 888sport promo code বা প্রণয় নিঃসঙ্গ পুরুষের জীবনে এক অন্ধ প্রলয়ের নাম। একে অতিক্রম করাই এক প্রকৃত কবির ধর্ম। যিশু কলম খোঁজে। একটা নতুন 888sport app download apk লিখবে আজ। যিশু জানে, বিচ্ছেদেই জন্ম নেয় সকল মহৎ 888sport app download apk। তবে বিচ্ছেদই সত্যি হোক।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.