সুবিখ্যাত ছাপ
888sport live chat কোথায় থাকে? পাহাড়-চূড়ায়। কোন পাহাড়-চূড়ায়? মোমার্তে। উনিশ শতকের শেষে 888sport live chatীরা এই পাহাড়ের চূড়ায়, ঢালুতে, পাদদেশে জমায়েত হয়। এই পাহাড় প্যারিসে। প্যারিস শহর দুভাগ করে দিয়েছে স্যেন নদী। স্যেনের উত্তরে মোমার্ত। আর সংস্কৃতিচর্চা, মানুষের হাব-ভাব, চাল-চলনেও পার্থক্য অনেক দুই তীরের মানুষের মধ্যে। আগে ছিল সেই ফারাক; এখনো আছে। ফরাসিরা বলে ডানতীর আর বামতীর। বামতীরে মোমার্ত।
888sport live chatগুরুদের পদধূলি নেবেন? মোমার্তই মোক্ষম তীর্থ। এত 888sport live chatীর চরণচিহ্ন পৃথিবীর আর কোথাও পড়েনি। ইম্প্রেশনিস্ট 888sport live chatী মানে, মনে, দেগা, পিসারো, সিঞনাক, রেনোয়া হয়ে পোস্ট-ইম্প্রেশনিস্ট সেজান-গগ্যাঁ-ভ্যানগঁগ হয়ে আরো কত জন। আরো এসেছিলেন তুলুজ লোত্রেক। শুধু 888sport live chatী কেন? কবিরাও। বোদল্যার-মালার্মে-ভেরলেন-র্যাঁবো এবং কিছুকাল পর রভের্দি-অ্যাপোলিন্যার-এলুয়ার-আরাগঁ আরো কত কবির পঙ্ক্তিতে সুবাসিত হয়েছে এই পাহাড়ের হাওয়া। কিন্তু 888sport live chatী আর কবিই কি শুধু সময়ের আগুনে পোড়ে? তারচেয়ে বেশি পোড়ে গণিকার মন। গণিকা কি শুধু গণিকা? না, সে গান গায়। সে নাচে। সে কি শুধুই নর্তকী? না, সে 888sport live chatী। ওই নক্ষত্রমণ্ডলেরই অংশ। এমনকি সার্কাসের সঙ, তারই-বা মূল্য কম হবে কেন? সে কি, 888sport live chatীর মতো, কবির মতোই জীবন-মৃত্যুর দড়ির ওপর প্রাণবাজি রেখে হাঁটছে না? ওর হৃদয়ে মৃত্যুর কম্পন আর নিচে দর্শক তালি দিচ্ছে। এরই নাম তো মানুষের জন্য 888sport live chatের আনন্দ সৃষ্টি করা।
আসলে ওদের দূরে ঠেলে দিয়েছিল ফ্রান্স। সরকারি মন ভেবেছিল, ওইসব পাগলেরা এক প্রান্তে পড়ে থাকুক। ওই অদূর পাহাড়ে। মোমার্ত তখনো প্যারিসের কেন্দ্র নয়। গভীরতর সত্য অন্য জায়গায়। ফ্রান্সে তখন উপনিবেশিত দেশের কাঁচামালের যোগানে মিল-কারখানার চাকা ঘুরছে অবিশ্বাস্য স্ফূর্তিতে। নাচছে সুখের অর্থনীতি। প্যারিসের তখন নতুন রূপ। দেহে তার অনেক দেশ থেকে ছিনিয়ে-আনা সুখ। উচ্চবিত্ত-মধ্যবিত্ত দিনরাত রগড় করে পাবে, ক্যাফে আর রেস্তোরাঁয়। মোমার্তে তখন ঢোকা যায় চারদিক দিয়ে। চারদিকে চারটি বড় বড় রেস্তোরাঁ। রেস্তোরাঁর মাথায় উইিন্ডমিল ঘুরছে।
উইন্ডমিলকে ফরাসি ভাষায় বলে মুল্যাঁ। বাংলা করলে বলা যাবে বাতাস-কল। একটি রেস্তোরাঁর বাতাস-কল লাল রঙের। তার নাম তাই ‘মুল্যাঁ রুজ’। এই ক্যাফের কিংবদন্তি নিয়ে এখনো গান বাঁধা হচ্ছে, গল্প-888sport alternative link লেখা হচ্ছে, live chat 888sport বানানো হচ্ছে। এই ক্যাফের রূপসীদের রূপ দেখে, ভাঁড়ের মশকরায় আজব পুলক পাওয়ায় লোভে, আর সংগীত888sport live chatীর বাজনায় প্যারিসের সুখ-দুঃখের দোলায় নেচে উঠেছে প্রতিবন্ধী 888sport live chatী তুলুজ লোত্রেকের মন। তুলি তার কোনো প্রতিবন্ধকতাই মেনে নেয়নি। বরং আবিষ্কার করেছে সে 888sport live chatের নতুন ডাঙ্গা, 888sport live chatের নতুন দিগন্ত। পৃথিবীর প্রথম আধুনিক পোস্টার-888sport live chatী লোত্রেক। মুল্যাঁ রুজের বাজনাবাদক ও নর্তকীরা তার ছবির মানুষ। ছাপাই ছবির কল্যাণে তা পোস্টার হয়ে আজ অনেক জাদুঘর ও সংগ্রাহকের দেয়ালে ঝুলছে। 888sport free betয় অনেক হলেও তা আজ দুর্লভ, দুর্মূল্য। মোমার্তের 888sport live chatচর্চা যুগলবন্দি সৃষ্টির এক
অন্তহীন ইতিহাস। এখানে অপেরা 888sport live chatীর সঙ্গে মিলেছে গীতিকার, চিত্র888sport live chatীর সঙ্গে কবি, সার্কাসের সঙের সঙ্গে নর্তকী, রূপোপজিবিনী সঙ্গে রেস্তোরাঁর সেফ।
প্রকৃত রসিক এক রসে তৃপ্ত নন। তিনি অনেক রস পান করতে চান। মোমার্তের মিলনমেলায় 888sport live chatী পান করছেন কাব্যরস আর কবি 888sport live chatের নির্যাস। দুই সারাৎসার মিলিয়ে পান করলে কেমন হয়! এমন ভাবনার কাছে ধীরে চলে আসে মন। মেলানোর কৌশল জানা থাকলে তবেই মেলানো যায়। কখনো সেই সমঝদারের অভাব হয়নি মোমার্তে। 888sport live chatীর চিত্র আলিঙ্গন করতে পারে এই ভাবনায় 888sport app download apkর চরণ লিখলেন কবি। কবির পঙ্ক্তি রঙিন ছবিতে আঁকলেন 888sport live chatী। তবে ছবির মধ্যে অক্ষর, শব্দ, কথা, আর সব মিলিয়ে গ্রাফিক্সের ভাবনাটার জন্ম হয়েছে তুলুজ লোত্রেকের তুলিতে।
ছবি ও 888sport app download apk যুগলকণ্ঠে ইতিহাসের অনেক লগ্নেই সুর তুলেছে। তবু তা কখনোই মোমার্তের মতো জোরালো হয়নি। বিশ শতকের সূচনা থেকেই কবি ও 888sport live chatী বন্ধুত্বে অভিন্ন হতে গিয়ে সবচেয়ে নিবিড়ভাবে হৃদয় বিনিময় করেছে। এই সুযোগে ছাপাখানার পাশে ছাপাই ছবির কারখানা হলো। 888sport live chatীর স্টুডিও হলো। প্রিন্টিং প্রেসের অক্ষর আর ছাপচিত্রীর প্রিন্ট একই গ্রন্থে গ্রথিত হলো। মোমার্ত ছাপাই ছবির অনেক নামি-দামি স্টুডিও বা ‘আতলিয়ে’র জন্য বিখ্যাত। এই এপ্রিলে সেখানকার সুখ্যাত দুই আতলিয়ে ‘লাকুরিয়ের’ ও ‘ফ্রেলো’ যৌথভাবে 888sport appর আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে প্রিন্ট বা ছাপচিত্র 888sport live chatের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। এই প্রদর্শনীতে উপস্থাপিত হয়েছে বিখ্যাত কবির বইয়ের জন্যে আঁকা গ্রন্থচিত্রণ এবং আলাদাভাবে ছাপচিত্রও আছে। 888sport live chatীদের তালিকাটা দীর্ঘ সময়ের সাক্ষী দিচ্ছে। বিশ শতকের অগ্রপথিক বা আভোঁ গার্দ পিকাসো-মাতিস থেকে শুরু করে এই দুই হাজার তিনেরও অনতিপ্রবীণ 888sport live chatীর। কাজ আছে। ওই আতলিয়ে দুটির খ্যাতি ভুবনজোড়া। তারা বংশপরম্পরায় ছাপচিত্রের সৌকর্য বিকশিত করে তুলেছেন। তাদের নিজেদের ইতিহাসটাও স্বভাবতই খুব জমকালো। সব ডাকাবুকো কবি-888sport live chatী-888sport live footballিক এসেছেন তাদের স্টুডিওতে, অনেক ছবি ও 888sport app download apkর জন্ম হয়েছে তাদের প্রতিষ্ঠানে, অনেক সুখ্যাত আড্ডার সুখ888sport sign up bonus আছে তাদের, অমূল্য ধন আছে ছাপাই ছবির।
প্রদর্শনীর কাজে পূর্ব-পশ্চিমের যুগলপ্রকাশ বিশ্লেষণী চোখে আবিষ্কার করা যায়। বয়সের দিক দিয়ে সবচেয়ে বয়সী মাতিস। চোখ বুঁজে মাতিসকে মনে করলে মধুরেখা আর বাহারি রঙের অপূর্ব স্বপ্নালোকিত চিত্রল পৃথিবী ভেসে ওঠে। ওই রেখার নিদর্শন এ-প্রদর্শনীতে অবলোকন করা যাবে। তবে 888sport live chatীর রঙিলা কোনো উদাহরণ তারা আনেননি। ১৯৩২-এ কবি মালার্মের 888sport app download apkর বইয়ের জন্য মাতিস ৩২টি এচিং করেছিলেন। তারই দুই পাতা নিয়ে এসেছেন ওই আতলিয়েদ্বয়। মাতিসের রেখার দিকে তাকালে একবার মনে হয় তা গ্রিক ভেনাসের শরীর ছুঁয়ে এসেছে, আরেকবার মনে লতিয়ে ওঠে প্রাচ্যের ক্যালিগ্রাফি। পূর্বদেশের রং-রেখা যে কী বিপুল জোয়ার এনেছিল 888sport live chatীর মনে তা তাঁর ছবিতেই দৃশ্যমান। কিন্তু ইউরোপের পূর্বদেশের 888sport live chatরসে মাতাল হওয়ার ইতিহাস সুদীর্ঘ এবং তাৎপর্যময়। তা না জানলে মাতিস কেন, ইউরোপের গত দেড়শো-পৌনে দুশো বছরের 888sport live chatের পালাবদলটাই অনুভব করা যাবে না। দোলাক্রোয়ার চোখ পড়েছিল আলজেরিয়া ও মরক্কোর দেশজ 888sport live chatে। আফ্রিকা-ফেরত দোলাক্রোয়া ইউরোপীয় প্রাসাদে বসে আঁকা ছবির রীতিটা তাই বদলে দিতে পেরেছিলেন। আর দোলাক্রোয়াই তো ইউরোপের প্রথম আধুনিক 888sport live chatী। তিনি মাতিসেরও প্রিয়। মাতিস-প্রসঙ্গ টানার আগে পশ্চিমের 888sport live chatে পূর্বদেশের অনুদানের ইতিবৃত্তটা আরেকটু খুলে বলা দরকার। ভিক্তোর উগো তাঁর লেজওরিয়ঁন্তাল বইতে সেই ১৮২৯-এ বলেছেন, ‘তাবৎ ইউরোপ প্রাচ্যের দিকে চেয়ে আছে। ইম্প্রেশনিস্টরা একদিকে দোলাক্রোয়াকে তো গুরু মানলেনই তাঁর উতল রঙের নির্মিতির জন্য, অন্যদিকে তারাও মায়ায় জড়ালেন দূরপ্রাচ্য জাপানের উডকাট প্রিন্টে। পোস্ট ইম্প্রেশনিস্ট ভ্যানগঁগের মধ্যে যে জাপান কী ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে ভ্যানগঁগপ্রেমীদের তা অজানা নয়। গঁগের ভয়ংকর বন্ধু, গগ্যাঁও ইন্দোনেশিয়ার জাভার কাঠের কাজের প্রেমে পড়েছিলেন। আর গগ্যাঁ তো সিকি ভাগও ইউরোপীয় নন। দেশজ ধারাবাহী তাঁর চৈতন্য অনেকখানি এশিয়ার, আরো বেশি তাহিতির। বিশ শতকের সবচেয়ে বুদ্ধিবাদী 888sport live chat কিউবিজমের সূত্রসার পশ্চিমের নয়, আফ্রিকার। বিশ শতকের প্রথম 888sport live chat-আন্দোলন ফাভিজমেরও উৎস আফ্রিকা। মাতিস এ-আন্দোলনের পিতৃপুরুষ। এই যে ইম্প্রেশনিস্টদের পর তিনি আর একবার উজ্জ্বল বর্ণের সংঘর্ষে আবেগ উপচে দিলেন তার কারণ কী? তার কারণ 888sport live chatীর মরক্কো ও আলজিরিয়া 888sport slot gameের অভিজ্ঞতা। তবে তার রুশীয় সংগ্রাহক সুখীন মস্কোতে তাকে আমন্ত্রণ না-জানালে মাতিস বোধহয় প্রাচ্যের দেশজ 888sport live chat ও পারসি ক্যালিগ্রাফির রূপ এভাবে আচমন করতে পারতেন না। সুখীনালয়ের প্রাচ্যসংগ্রহ আকুল তৃষ্ণায় পান করেছেন মাতিস। এই প্রদর্শনীর ছবির দিকে তাকালে পারসি ক্যালিগ্রাফি আর গ্রিক মূর্তিছোঁয়া রেখার মেলবন্ধন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মাতিস ব্যাপ্তার্থে প্রাচ্যকলানির্ভর 888sport live chatী। শুধু আফ্রিকা নয়, জাপান নয়, ‘ইন্দুপোজ’ বলে তার ভারতীয় 888sport promo codeরও যোগাসনের চিত্রমালা আছে। ‘মাতিস ও ওরিয়েন্টালিজম’, ‘মাতিস ও ড্রাফটসম্যানশিপ’- এসব অভিসন্দর্ভ ভেবে না নিলে 888sport live chatীর রং-রেখার সারকথা বোঝা যাবে না। একজন ক্যালিগ্রাফির 888sport live chatী যে কত ললিত কাব্যময় এক ড্রাফটসম্যান তার মোহন দৃষ্টান্ত রেখাধর্মিতার মাতিস। ১৯৫৯ সালে লা কমেতা পাবলিশার হোসে দেলগাদোর বিখ্যাত বই লা তোরমাকিয়া ও আরতে দে তোরেয়ার (ষাঁড়ের লড়াই অথবা লড়াইয়ের 888sport live chat) প্রকাশ করে। এ-বইয়ের জন্য পিকাসো আঁকেন ২৬টি ছাপচিত্র। বইয়ের প্রচ্ছদের জন্য একটি এচিং আর বাকিগুলো আকুয়াটিন্ট। এ-বইয়ের দুটি ছবি আছে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের এ-আয়োজনে। পিকাসো শৈশব থেকে ষাঁড়ের সঙ্গী। ছোটবেলায় বাবা তাঁকে নিয়ে যেতেন মালাগার বিখ্যাত ষাঁড়ের লড়াইয়ে। সেই থেকে শিহরণ ষাঁড়ের জন্য, সেই থেকে ভয় ও কষ্ট ষাঁড় ও মাটাডোরের জন্য। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই 888sport live chatী প্রথম ষাঁড়ের লড়াইয়ের ছবি এঁকেছেন। তারপর কত মাধ্যমে কতবার যে এর বিষয় এঁকেছেন তা শুধু জানে পিকাসো-গবেষক।
পিকাসোতে নেই এমন বিষয় জগতে নেই; – এ অত্যুক্তি কাউকে দ্বিধান্বিত করবে না। তবু পিকাসো মানে কী? পায়রা-কবুতর, ঘোড়া, ষাঁড়, 888sport promo code, শিশু, ভিখিরি? আরো অনেক কিছু লিখে প্রশ্নবোধক দেওয়া যেত। কিন্তু একথা কি সত্য নয় যে শান্তি ও সংঘর্ষ পরস্পরিত হয়ে আছে পিকাসোর 888sport live chatে? তবু তাঁর বিশেষ মনোযোগ ছিল ষাঁড় ও ঘোড়ার জন্য। ষাঁড়ের গোঁয়ারভাব ও ঘোড়ার দর্প তার যতই প্রিয় হোক তবু এই দুই প্রাণীর আহতবিক্ষত রূপ এঁকে তিনি বিশ শতকের মহাযুদ্ধের ও নিজের দেশের গৃহযুদ্ধের ভয়াবহতা তুলে ধরেছেন। 888sport live chatী গয়া তার প্রিয় 888sport live chatী, কারণ এ-888sport live chatী মৃত্যুকে দেখতে পেতেন এবং তা চিত্রিত করতে পেরেছেন। গয়ারও প্রিয় ছিল ষাঁড়ের লড়াই। লড়াইয়ের ঘেরটার মধ্যে পিকাসো মৃত্যুর খেলা দেখেছেন। কালো কালি গড়াতে গড়াতে হয়েছে যোদ্ধা, যোদ্ধার হাতের কাপড়, রিং ইত্যাদি। তিনি কালো কালিতে এক রোমশ রোষ চিত্রিত করেছেন যেন, দূর থেকে ছবি দুটি দেখলে এমনই মনে হয়। ষাঁড়ের লড়াইয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকেই পিকাসোর বন্ধু ছিলেন। তাদের সঙ্গে তিনি বেশিরভাগ সময় মৃত্যু ও লড়াইয়ের লোমহর্ষক মুহূর্তের কথা শুনতে চাইতেন। পিকাসোর একনিষ্ঠ দর্শকরা জানেন পিকাসো জীবনের 888sport live chatী, জাগর জীবনবোধের 888sport live chatী এবং মৃত্যু ও মুত্যৃযন্ত্রণারও 888sport live chatী। স্প্যনীয়দের বিখ্যাত মৃত্যুতত্ত্ব ‘দুয়েন্দে’কে বুঝতে হলে পিকাসোই হবে সবচেয়ে বড় সচিত্র পাঠ। পিকাসো একান্তভাবে স্পষ্ট। তার কাজে গঠন ও সংগঠন স্পষ্ট। তারপরও এ-888sport live chatী ঘোর-লাগা চৈতন্যের চিত্রকর। এ-ঘোর সৃষ্টির, জীবনের, মৃত্যুর। ওভিদের মেটামরফসিসও 888sport live chatী চিত্রিত করেছিলেন।
‘আমার ছবি রঙের রসায়ন’- এ-কথা বলেছিলেন মার্ক শাগাল। রঙের বিকিরণ ও বিক্রিয়ায় ইমেজ ফোটে তাঁর ছবিতে। কিন্তু শেষমেশ, 888sport app download apk, না ছবি, কোনটি সত্য তার অন্তরে। তিনি প্রকৃতি থেকে রং সংগ্রহ করেন, রং আসে তাঁর আরাধনাময় আত্মা থেকে। রং নেই তো শাগালও নেই। সার্কাসের জবরজং সঙ থেকে শুরু করে বাইবেলের দৃশ্য এঁকেছেন। বাইবেল আঁকতে আঁকতে জেরুজালেম গিয়েছেন। সেখানে গিয়ে যখন দাঁড়িয়েছেন গির্জায়, অবাক বিস্ময়ে শুনেছেন রঙিন কাঁচের শার্সি ও জানালার বিচ্ছুরিত আলোয় ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে কথা বলছেন। শাগালের তুলি মরমি আত্মার তুলি। তবু তিনি বিবরণে, বর্ণনায় আকণ্ঠ আকুল। আরব্য রজনী থেকে শুরু করে তাঁর সমকালের কবিবন্ধুর কত বই-ই না চিত্রিত করেছেন। তবে ভালোবাসতেন লোকগাথা রঙিন তুলিতে আঁকতে। আসলে তিনি তো নিয়মের দাস ইউরোপীয় মেধা নন। তিনি তাঁর জন্মভূমি বেলেরুশিয়ার সবটুকু রং আত্মার কন্দরে কন্দরে সঞ্চিত করে এসেছিলেন প্যারিসে। তাঁর ছবিতে পরিপ্রেক্ষিত নেই। সবকিছু যেন শূন্যে ভাসছে। স্বপ্ন দোলায় উড়ছে। কোথাও তেমন দুঃস্বপ্নের ভয় নেই। প্রেমিক উড়ে এসে প্রেমিকার গালে চুমু দিচ্ছে। বড় বেশি 888sport app download apkপ্রবণ শাগালের তুলি। আপোলিন্যার, এলুয়ার, সন্দ্রা এইসব বিশ শতকের অমর কবি তাঁর ছবি দেখে 888sport app download apk রচনা করেছেন। নিজেও কথা বলতেন 888sport app download apkর মতো করে। তাঁর ভেতরের ঈশ্বর, বাইবেলবচন আর জন্মশহর ভিটেব্স্ক তার চেতনায় বারবার আন্দোলন এনেছে। কেন এত আলো আর রং আপনার ছবিতে, এ-প্রশ্ন শুনলেই বলতেন – আমি শুধু জানালাটা খুলে দেই আর নীল বাতাস, ভালোবাসা আর ফুলেরা এসে ঢুকে যায় আমার ঘরে। ফুল ছিল তাঁর কাছে ভালোবাসার দূত। এ-প্রদর্শনীতে যে-ছবিগুলো আছে তা শাগালের নিজের লেখা 888sport app download apkর বইয়েরই ছবি। ১৯৬৮-তে পোয়েম নামের বইটি প্রকাশিত হয়। এতে কাঠখোদাই প্রিন্ট ছিল ২৪টি। ঈশ্বরের ধ্যানে ও নিজের দেশের 888sport sign up bonusর ঘোরে তুলি চলে বলেই বোধহয় শাগালের ছবির মানুষ, বৃক্ষ, দেবালয়, দালানকোঠা, মিনার, আইফেল টাওয়ার সব এলোপাথাড়ি উড়তে থাকে আকাশে। এ-সবই দেখতে পেলাম 888sport live chatীর 888sport app download apkর বইয়ের চারটি পাতায়। এই বইয়ের একটি 888sport app download apkর মরমি পঙ্ক্তিগুলো শোনা যেতে পারে। 888sport app download apkর নাম ‘এক গেঁয়ো মানুষের মত’ :
গায়ে গায়ে লাগা ঘরবাড়ি সারি সারি
সেখান থেকে বেরিয়ে পড়েছে পথ গোরস্থানের দিকে
সেখানে ব্যাপ্ত এক নদী বয়ে যায়
আমি স্বপ্ন দেখি আমার জীবনের
রাত্তিরে এক দেবদূত উড়ে যায় আকাশে
আমার ঘরের ছাদে এক ঝলক সাদা আলো
আমাকে আগাম দেখিয়ে দেয় দীর্ঘ দীর্ঘ পথ
বাড়ি ছাড়িয়ে আরও দূরে ছড়িয়ে দেয় আমার নাম
ও আমার প্রিয় মানুষেরা, তোমাদের জন্যই আমি গান গেয়েছি
কে জানে এ গান তোমাদের আনন্দ দেবে কিনা
বিবিধ দুঃখ ও ক্লান্তিতে
এ স্বর বেরিয়েছে আমার ফুসফুস ফুঁড়ে
তোমাদেরই নামে আমি এঁকে যাই
ফুল, বনভূমি, মানুষ ও ঘর-বাড়ি
এক গেঁয়ো মানুষের মতো রং দিয়ে রচি তোমাদের অবয়ব
দিন-রাত তোমাদের আশীর্বাদ করি।
মিরোও স্বপ্নভূক। তবে শাগালের মতো নন। এ-888sport live chatী ঘোরেন গ্রহান্তরে জ্যোতির্বিদের মতো দিব্যজ্ঞানে। তিনি লোক888sport live chatের রং মাখাননি তাঁর তুলিতে। আর প্রবাদের মতো বলা হয় যে, বিশ শতকের প্রথম অর্ধেকে ফরাসি 888sport live chat স্পেনীয় 888sport live chatীরা রচনা করেছেন। তাহলে পিকাসোর সাথে উচ্চারিত হবে দুটি নাম : হোয়ান মিরো ও সালভাদর দালি। মিরো স্বপ্নময়, তবে দালির মতো দুঃস্বপ্ন-আক্রান্ত নন। মিরোর প্রিয় কবি মালার্মে, বন্ধুদের মধ্যে প্রিয় এলুয়ার ও মাক্স জ্যাকব। 888sport live chatী এলুয়ারের আ তুত অ্যাপ্রুভ (যেভাবে পারে রুখবেই) 888sport app download apkর বইয়ের জন্য ২৪টি রঙিন উডকাট করেছিলেন ১৯৫৮ সালে। মিরোর ছবির মানুষেরা নক্ষত্রজীব অথবা সাগর-অতলের ভাসমান প্রাণী। যেন তাদের চেনা যায় না ঠিক ঠিক পরিচয়ে, না প্রাণী, না উদ্ভিদ, না নক্ষত্র, না পাথর। মিরো বলতেন, ‘ওখানে কী আছে তা আবিষ্কার করা মানুষের কাজ নয়, কোনো কিছু জন্ম দেওয়া অথবা যোগসূত্র তৈরি করা, এমনকি উদ্ভাবনও তার কাজ নয়। যে শুধু ক্ষমতা দেখাবে ‘না-হওয়া’র ভুবন থেকে নিজের সত্তাকে প্রকাশ করার। মিরোর স্পেসে মানুষ ভাসে। সেসব প্রতীক-মানুষ। তবে হাত-পা, নাক-মুখ খুঁজে নিতে হয় তাদের। স্পেসে ভাসে বলেই তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নতুন নতুন বিন্যাসে ছড়ানো। সেখানে সময় ও সময়ের অতীত পরিধি আছে কোনো। আলোর দেহ নিয়ে ভাসে সব মহাশূন্যে। যদিও এর মধ্যে 888sport promo code-পুরুষ আছে, আছে মিলনের আকাক্সক্ষা। এটাই কি গ্রহের বন্ধন! জীবনানন্দের নক্ষত্রের দোষ। দেহের গ্রন্থি ও প্রত্যঙ্গের ভঙ্গিল রূপ দেখলে চোখ জুড়ায় আনন্দময় নৃত্যপর দৃশ্যের আন্তর-বিন্যাস আবিষ্কারে।
সত্তা নিজের নিয়মে চলবে। স্বয়ংক্রিয় চাল সুররিয়ালিজমের সারকথা। স্বপ্নে, দুঃস্বপ্নে, যৌনতায় সেই স্বয়ংক্রিয়তা বা অটোমেশন সবচেয়ে সচল। সালভাদর দালি দুঃস্বপ্নের ভয়ংকর পরিধির মধ্যে যুদ্ধের আতঙ্ক ও যৌন-বাসনা পরস্পরিত করে বুনেছেন। কে কাকে পিষ্ট করছে, কোথায় গলে যাচ্ছে সময়ের দাহে মানুষ ও মানুষীর শরীর, কে একজন চোখ মেলেছে ভয়ংকর অভিব্যক্তিতে, কার দেহ প্রাণীর, কারটা মানুষ – তারা একে অপরের মধ্যে প্রবিষ্ট – এ-সবই আমরা দেখতে পাই লোত্রেয়ামোঁর লে শঁ দো মালদোরর-এর জন্য করা বইয়ের ইলাসট্রেশনে। আকুয়াটিন্ট ও এচিংয়ে করা এসব কাজ এখনো কিছু কিছু মেলে চড়ামূল্যে ইউরোপ-আমেরিকার গ্যালারিঅলাদের কাছে।
বইয়ের ইলাসট্রেশনের প্রতি অনুগত ছিলেন বলেই বোধহয় মাদাগাস্কারের 888sport app download apkর বইয়ের ছবিতে ওই স্বয়ংক্রিয় চালের অঁদ্রে মাসোঁকে আমরা দেখতে পেলাম না। যদিও অটোমেশনের রেখাধর্মিতা ও টেক্সচারময়তা বোঝার এক বিরল নিদর্শন মাসোঁর কাজ। অঁদ্রে দের্যাঁ, জাকোমিতি ও ব্রাকেরও কাজও মহার্ঘ নয়। তবে হেনরি মুরের ড্রইংয়ে মনুমেন্টালিটি বা ওজনগুণ খুঁটিয়ে দেখার মতো। হাতির বিপুল করোটিতে গড়নের ভেতর গড়ন কীভাবে সংহতি তৈরি করেছে তা ভাস্কর মুর জ্যামিতিক হিসাব মিলিয়ে প্রদর্শন করেছেন।
৩৭ জন 888sport live chatীর কাজ টাঙানো হয়েছে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের দেয়ালে। পিকাসো-মাতিসদের প্রজন্মের দশজন, যুদ্ধোত্তর প্রজন্মের ১১ জন আর বাকিরা এই সময়ের। মানুষের সভ্যতা ও সৃজনের পথ সমান্তরাল। এক পথ শাশ্বতের নিয়ম থেকে বিচ্যুত হয় না, প্রকৃতিকে পরম ঔষধি জেনে বেঁচে থাকে। অন্য পথে কেবলি মুখ থুবড়ে পড়া, হতাশা, মৃত্যু, নেতির ছায়া। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আভাস পাওয়ামাত্র 888sport live chatী-চেতনায় ভয়ের মেঘ দানা বেঁধেছে। আশালতা শুকিয়ে গেছে 888sport live chatের বাগানে। পিকাসোর ‘গের্নিকা’ দিয়ে শুরু হয়ে আইরিশ বেকন হয়ে ফরাসি ফতরিয়ে, দুবুফেতে মর্মরিত হয়ে কোবরা গ্রুপের আসগর জরন, কারেল আপেলে আরো বিধ্বস্ত হয়ে একেবারে বিমানবিকৃত রূপে চিৎকৃত মানুষ মার্কিন ডিকুনিংয়ের ক্যানভাসে ভেসে উঠল। এ-প্রদর্শনীতে স্বকালের দাহলাগা সবচেয়ে মর্মস্পর্শী কাজ দাদোর। দাদো তখনকার যুগোস্লাভ-888sport live chatী। এখন ফ্রান্সে থাকেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরপরই ফ্রান্সে চলে এসেছেন। অর্ধেকেরও বেশি জীবন কেটেছে এখানে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ক্ষত-বিক্ষত চৈতন্য শেষমেশ কোথায় গিয়ে যে ঠেকল এবং আরো পরে ঘটে-যাওয়া স্বদেশের গৃহযুদ্ধে মানুষ যে কী বীভৎস হলো তা তিনি বলে বোঝাতে না পারলেও, এঁকে জানান দিতে পেরেছেন। তার এখন মনে হয়, স্বদেশের ক্রোয়াটরা জার্মানদের চেয়ে আরো ভয়ংকর নাৎসী। টিটোর যুগোস্লাভিয়াও তার ভালো লাগেনি। দাদো খামারবাড়িতে বড় হয়েছেন। কালি-ঝুলি মাখা পশু-পাখি-মানুষের ধস্তাধস্তি তাঁর প্রতিদিনের অভিজ্ঞতার অংশ। তা অবশ্য আরো অনেক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় ভিন্ন রূপ পেয়েছে। তিনি যে-মানুষী মুখ আঁকেন তা সময়ের প্রতিনিধি হয়ে ভয়ংকর চিৎকার দেয়। আত্মীয় তিনি জার্মান এক্সপ্রেশনিস্টদের। বাঁচেন তিনি ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপে ইতিহাসকে প্রশ্ন করে। তাঁর মেজাজ মেলে গ্রস, কিরশনার ও অটো ডিক্সের সঙ্গে। তবে দাদোর ছবিতে সময় আরো বিভীষিকাময়। সেখানে মানুষের মুখ ক্ষিপ্ত অভিব্যক্তি। পশুর মুখের চেয়েও দুর্বিষহ, ভয়ংকর। সেই মুখ শিকার, নাকি শিকারির তা নির্ণয় করা যায় না। যে-হন্তারক ইমেজ দাদো এঁকেছেন তা অবশ্য বেকনেও নেই। এ-প্রদর্শনীতে ড্রাই পয়েন্টের তিনটি দাদো আছে। একটি প্রাণীর তিনটি অবস্থানের সংকেত দিয়ে সিরিজ তৈরি করা হয়েছে। পশুর ক্ষিপ্র দেহের দাগ প্লেটে এলোপাতাড়ি রেখায় আঁকায় যে-বিক্ষিপ্ত গতিশীলতার ব্যঞ্জনা তৈরি হয়েছে তা দর্শকদের বহুকাল মনে থাকবে।
ম্যাটার-রিয়ালিটি বলে একটা তথ্য এসেছিল পঞ্চাশের দশকে। বস্তুর সারকে অভিব্যক্তিময় করে মনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত ছিল এ-ধারার লক্ষ্য। ইতালীয় বুররি, স্পেনীয় তাপিয়েজ এ-ধারার অনুগামী। বুররি চট-ছালায় রং দিয়ে রক্তের দাগ আর তাপিয়েজের কাতালানের মাটির সরাসরি প্রয়োগ ওই ম্যাটার-রিয়ালিটি বা বস্তু-বাস্তবতার অন্যতম দৃষ্টান্ত। ফরাসি সুলাজের কাজেও মাটির গুণ, খনিজ পদার্থের শরীর দেখা গেল। যদিও সুলাজ স্থাপত্যিক বিন্যাসে আলো-অন্ধকার বিতরণ করে জ্যামিতিপ্রধান ছবির জন্যই আমাদের কাছে পরিচিত।
সুলাজ ছাড়া সুখ্যাত 888sport live chatীদের মধ্যে আছেন হান্স হার্তুং, অলিভিয়ে দেবরে, জা উ কি, মিউজিক, টেরি হাস। বলা যায়, তিনজনই নিসর্গের ছন্দ তুলে ধরতে চেয়েছেন। কেউ মাটিতে, কেউ বৃক্ষে, কেউ বা বাতাস মেপেছেন শূন্যে কালো রেখার সন্নিবেশে। সুলাজ থেকে শুরু করে এসব 888sport live chatীর কাজেই রং-রেখা টেক্সচারের পরিমিতি জাপান-চীনের 888sport live chatের কথা মনে করিয়ে দেয়। বিশেষ করে অনেকের কাজেই জেন আর্টের প্রভাব আছে। এ-প্রদর্শনী ব্যাপকভাবে পূর্বদেশের দিকে মুখ ফেরানো। আর জা উ কি তো চীনেরই 888sport live chatী। চীনের সঙ্গে পশ্চিম মিশে গেলেও জা উ কি আশি ভাগ চৈনিক। টেরি হাসের ‘যোগ-মুদ্রায়’ তো ভারতের আরাধনাই বিমূর্ত ভাষায় উত্থিত হয়েছে কালোরেখায়।
নবীন প্রজন্মের ছাপাই ছবির 888sport live chatীরা করণকৌশলে খুব বেশি যত্নশীল। বেশি ধোপদুরস্ত হলে প্রাণ খুঁজে পাওয়া যায় না। বর্তমানে জাপানের ছাপচিত্রেও এ-রকম দৃষ্টিভঙ্গির ছায়াপাত ঘটেছে। তবে বুদ্ধির একটা তুমুল চর্চা তো চলছেই। ক্রমেই তা বেগবান হচ্ছে। বুদ্ধিরও যে একটা হৃদয় আছে তা বোঝা গেল সবচেয়ে প্রবলভাবে মুলার রাইনহাটের কাজে। এ-888sport live chatীর ছবির নাম ‘নীলের তারতম্য’। বর্গক্ষেত্রের ওপর বর্গক্ষেত্র আড়াআড়িভাবে বসিয়ে তিনি স্পেসটা মেপেছেন। এতে যেসব ত্রিকোণা-অঞ্চল তৈরি হয়েছে তাতে তিনি পুরে দিয়েছেন বিবিধ নীলিমা। যদিও জ্যামিতি-বিভাজিত স্পেস। তবু নীলিমার হালকা ঘন রেণু-রেণু প্রকাশ চোখকে শান্তি দেয়, হয়ত তা আত্মায়ও পৌঁছে। আলফ্রেড কেনেথের ‘অপ্রকাশিত পত্রাবলি’ শীর্ষক আকুয়াটিন্ট সিরিজে রেখার চক্রাবক্রায় যে স্বোপার্জিত বর্ণমালা তৈরি হয়েছে তার মানে মগজে না থাকলেও তা চোখের ক্ষুধা মেটায়। এ-প্রদর্শনীতে আরো উল্লেখযোগ্য কাজ তৃষ্ণার্ত 888sport live chatানুরাগী প্রত্যাশা করতে পারেন। তবু বিশ শতকের প্রিন্টের একটা ছেড়া-খোঁড়া মনোলোভা শৈল্পিক মানচিত্র তো পাঠ করা গেল।
দ্ইু
জঁ দমিতির নির্জন স্বাক্ষর
সব 888sport live chatই 888sport live chatীর মনের অবস্থা। সৃজনস্পৃহার ভাষ্য। এসব কথা নতুন আবিষ্কার নয়। অনেক আগের উদ্ভাবিত স্বতঃসিদ্ধই নতুন করে অনুভব করা হচ্ছে। কেউ আসলে অন্য কারো কথা বলতে পারে না। এমন কি ইতিহাসবেত্তাও যা লেখেন তা আসলে কোনো রাজার বা জাতির পালাবদলের ইতিহাস নয়। তা একান্তভাবে ওই ইতিহাস রচয়িতার মনোভঙ্গি, অনুভব ও উপলব্ধি। এসব কথা বলে বোঝানো হচ্ছে যে 888sport live chat আসলে খুবই ব্যক্তিগত ব্যাপার, তা নির্জন স্বাক্ষর সৃজনশীল হৃদয়ের। একথা দ্য ভিঞ্চির মোনালিসার জন্যও সত্য, মাতিসের রাজহংসীর জন্যও সত্য। সবই তাদের সংগুপ্ত বাসনার প্রকাশ।
এই এপ্রিলে বেঙ্গল গ্যালারির প্রশস্ত দেয়ালগুলোতে ঝুলছে একজন পঞ্চাশ বছর বয়সী ফরাসি 888sport live chatীর অনেকগুলো বর্গাকার ছবি। সেই ছবিগুলো অ্যাক্রিলিকে আঁকা। ডিজিটাল প্রিন্টও নেওয়া হয়েছে। বলা যায় মিশ্র মাধ্যমের কাজ। 888sport live chatীর নাম জঁ দমিতি। তিনি প্যারিসেই বড় হয়েছেন, 888sport live chatের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও নিয়েছেন এ-শহরে। দেশ ঘুরেছেন অনেক। এবার 888sport appsও দেখলেন। এর আগে তার এ-ধরনের নাতিশীতোষ্ণ এশীয় অঞ্চল দেখা হয়নি। এপ্রিল অবশ্য নাতিশীতোষ্ণ নয়, উষ্ণতার। দমিতি নিজের ছবি-বিষয়ে বিস্তারিত বলতে চান না। পৃথিবীর বেশির ভাগ 888sport live chatীই নিজের 888sport live chatকর্মে সম্বন্ধে নির্বাক কিংবা স্বল্পবাক। দমিতিও মিতবাক। তবে দমিতির ছবি অনুজ্জ্বল নয়, তপ্ত ও দীপ্তিময় অনুষঙ্গই বেশি তাঁর ছবিতে। বেশির ভাগ ছবিতেই অনেক অঞ্চল ফাঁকা পড়ে আছে; মাঝে বা কৌণিক অবস্থানে অনুষঙ্গের ঘেরটা তৈরি হয়েছে। ওই ঘের কতগুলো চিহ্ন ও প্রতীক। চিহ্নগুলো টুকরো-টুকরো মৃৎপাত্রের গায়ের ছবির মতো, প্রতীক বৃক্ষপত্রের, বৃক্ষডালের। কোথাও মানুষ নেই, সত্যিকার অর্থে উদ্ভিদও নেই। খনিজ বস্তুসারে যেন ডুব সাঁতার দিয়ে চলছে 888sport live chatীর সৃজনসত্তা। দমিতির মধ্যে পেইন্টারলি কোয়ালিটি বা বর্ণগুণ প্রবল। তিনি নিরন্তর প্রলেপ দিয়ে চলতে চান। তাঁর ছবির ফ্রেম নেই। তা প্লাবিত করেছে রং। এই মনোভঙ্গিও স্বতঃচালনার ইঙ্গিত। ওই চারকোণা দ্বিমাত্রিক পটটা বুকে জাপটে ধরে ত্রিমাত্রিকতা বা বস্তু-অনুভবের চেষ্টা তীব্রভাবে প্রকাশিত হয়েছে এই শৈল্পিক পরিচর্যায়। গতিশীলতায় লেপটে থাকতে চায় 888sport live chatীর চেতনা। কিন্তু তাঁর ছবির প্রশস্ত মুক্ত অঞ্চল কেন? ওই অঞ্চলের মাঝে অনুষঙ্গময় এলাকাটুকুর কী মানে? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজে চোখ। এটা যদি 888sport live chatীমনের বিশেষ বিশেষ দশা হয়; হয় বিভিন্ন মানসিক পরিস্থিতির স্মারক, তবে স্মারকের বিনির্মাণ হলো কোন অভিজ্ঞতায়, তা বুঝতে চাওয়ার আকুলতা স্বাভাবিক। এসব কি দমিতির বিভিন্ন দেশ-দেখার অভিজ্ঞতা? প্রাকৃতিক কোনো বিষয়কে অবলম্বন করে 888sport sign up bonus জাগরিত করা? এ-কাজগুলোর একটা প্রথাগত নাম হতে পারে হৃদয়ঘনিষ্ঠ জার্নাল। দমিতি আলাপ করেন ভেতরের দমিতির সঙ্গে। এই আলাপের বর্ণমালা অনেক অভিজ্ঞতার মিথস্ক্রিয়ায় তৈরি হয়েছে। সেই ভাষা উদ্ধারের আগে দমিতির বর্ণচালনার ভঙ্গিটা বিশ্লেষণ করতে চাই। মানুষের হৃদয় সব ঘটনায় একইভাবে আন্দোলিত হয় না। তার শ্বাস-প্রশ্বাসেরও পরিবর্তন ঘটে ঘটনা অনুসারে। সেই অনুযায়ী হাতে ধরা তুলি কলমে বেগ আসে। পড়ে অনুভূতির ওঠা-নামার ছাপ। অনেকক্ষণ নিস্তরঙ্গ চলার পর ক্রমে তরঙ্গ-ভঙ্গ শুরু হয়, একটা অঞ্চলে ঘূর্ণি শুরু হয়, পাক খায় 888sport sign up bonusসাগরের জল। পাক খাওয়া জলে ডুবতে ডুবতেও ডুবে না কোনো বৃক্ষশাখার অংশ কিংবা অন্য কোনো বস্তু। আবার অনেকক্ষণ খাবি খাওয়ার পর ভাঙাচোড়া অংশের উদ্ভাসনে
অস্তিত্বের লণ্ডভণ্ড অবস্থাটা প্রকটিত হয়ে পড়ে।
দমিতি আশাবাদী। তাঁর ছবিতে গীতলতা আছে। নয়নজুড়ানো গড়ন আছে। গড়নগুলো প্রাণিজ, না উদ্ভিজ্জ – তা ঠিক শনাক্ত করা যায় না। তবে তা স্পেসে কথা বলে। কিছুটা বিস্ময়ের শিহরণ আনে। কোনো শ্যাওলা জাতীয় সচল উদ্ভিদের মতো অনুষঙ্গ আঁকার বিশেষ প্রবণতা আছে এ-888sport live chatীর। এ-প্রবণতারও বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে। ওই বস্তুপ্রায় গড়নটা কেন অজ্ঞাতকূলশীল? কারণ, তা 888sport live chatমনে এখনো জায়মান। এর হয়ে-ওঠা এখনো সম্পন্ন হয়নি। কিংবা হয়ে-ওঠাগুলোই 888sport live chatীর প্রার্থিত, সৃজন-প্রক্রিয়াটাই তিনি দেখাতে চান। কিংবা বোধ-ধরে-রাখা গড়নটা অবচেতন-সাগর থেকে কখনোই স্পষ্ট পরিচয়ে উঠে আসবে না, স্বপ্নের ঘূর্ণির মধ্যে তা অনির্ণেয় থেকে যাবে।
সাদৃশ্য উদ্ধার করার আগ পর্যন্ত পর্যবেক্ষক মন শান্তি পায় না, স্থির হয় না। দমিতির ছবিতে সবচেয়ে বেশি আছে খোলামকুচির মতো গড়ন। ভাঙা পাত্রের টুকরো টুকরো অংশ। হতে পারে এগুলোই তার 888sport sign up bonus-সঞ্চয়। মনের আর্কেওলজি। বহুকালের বহু স্তরবিন্যাস থেকে একেকটি উৎখনন করে তিনি দেখতে চান। কোথাও একটু রং লেগে আছে, তা বলছে নির্দিষ্ট বৃত্তান্তের কথা, কোথাও-বা নকশাদার একটু ছাপ, তা বলছে কোনো এক সময়ের কথা। ভাঙা খোলামকুচির ওপর হালকা রেখায় আরো কিছু জ্যামিতিক দেহ এঁকেছেন দমিতি। দূরের 888sport sign up bonusস্তরের ওপর এই বর্তমানের স্বাক্ষর দিলেন যেন তিনি এইসব উপরিতলের হালকা রেখার পরিচর্যায়। আবার অনেক জ্যামিতিকে তিনি আংশিক দেখিয়েছেন। বেশির ভাগ অংশ তার লুপ্ত। হঠাৎ আবার জলরঙের ওয়াশের মতো জলবিধৌত হওয়ার প্রতিক্রিয়াও আছে। নানাভাবেই স্পেস চঞ্চল ও গভীর করে রেখেছেন। অনেক উপাদানের, রেখার নকশার
বিস্তৃতি থাকলেও স্পেসটায় অলঙ্কারিক ভার নেই। শব্দের চেয়ে নৈঃশব্দই বেশি। স্বরের চেয়ে অনুস্বরই বেশি বুদ্বুদ তুলেছে। বস্তুত কোনো গড়নই রূঢ় নয়, প্রকটিত নয়। দমিতি পরিমিতি নিয়ে ভাবিত। সাদার উদ্গীরণে অনেক কথা চাপা দিয়ে দেন অর্থাৎ অনেক নকশা 888sport app পড়ে যায় শুভ্র উদ্ভাসনে। এইখানেই স্পেসের অলঙ্কার-বন্ধন থেকে মুক্তি ঘটে।
এক ভূমিতে বসবাসের অভিজ্ঞতা নয়, সময় ও ঘটনাস্রোত ক্রমান্বয়ে আসেনি। ঘটনার পারস্পর্য নেই। সিকোয়েন্স ধরে মেলানো যায় না জীবনের ঘটনা। এসব কথা মনে রাখলে দমিতির ছবি পাঠ করতে বেগ পেতে হয় না। তার এই দৃশ্যময় পৃথিবী দেখার উপলব্ধিতে অনেক গড়ন স্থির মূল্য পেয়েছে। তবু তা পৃথিবীর উপরিতলে দেখা বিষয়ের মতো নয়। মনের মধ্যে বহুকাল অবস্থানের পর তা শোধিত হয়ে বিশেষ রূপ পেয়েছে। এই পরিশ্রুত রূপেরই মেলা এই 888sport live chatীর ছবি। বিশোধিত রূপ, রূপাংশ, গড়ন পরস্পরিত হয়ে নতুন সংগমে মজেছে, নতুন শরীর সৃষ্টি করেছে। যাপিত জীবনের অভিজ্ঞতায় অন্তরের অন্তস্তলে সঞ্চিত প্রতীক রাশির পুনর্বিন্যাস দমিতির ছবির মৌলিক কথা। তিনি যেন অনেক প্রতীক-বীজ বুনেছিলেন একদিন। তা আজ তাঁর মনোভূমিতে অঙ্কুরিত হচ্ছে, বীজপত্র ফাটছে, কিশলয়ের কিঞ্চিত আভাস লক্ষ করা যায়। এ এক অন্তর্গত নৈসর্গিক প্রক্রিয়া। বর্ণের জমিনে ফলবতী হবে বর্ণসন্তান – নানা গড়ন, মুকুলিত হওয়ার মতো অনেক কিছু – এ-সবই জানাতে চেয়েছেন কি দমিতি? কোথাও কি তিনি দেখাতে চেয়েছেন এসব বেদনার আকুতি ওই বর্ণিল জমিনে? বর্ণতলটা আসলে তল নয়, গর্ভ। সেই গর্ভে বেড়ে ওঠে কোনো রঙিন রক্তিম-সত্তা। বড় বেশি উষ্ণ-উর্বরতার গন্ধ আছে এ-888sport live chatীর কাজে। নানারকম বেগ আছে, বেগের কাটাকুটি আছে, অবয়ব ও অবয়বহীনতার দ্বান্দ্বিক প্রকাশ আছে।
ইউরোপে আরো অনেক 888sport live chatীই এখন চিহ্ন ও সংকেতে কথা বলেন। পুরোপুরি অবয়বী ধারার ছবির 888sport free bet কম, নিরাবয়ব, নির্বস্তুক বা বিমূর্ত শৈলীর 888sport live chatীর 888sport free bet এখন সবচেয়ে কম। সবাই নতুন ভাষা খুঁজছেন। ইউরোপ নতুন ভাষা খুঁজছে আবার। তারা নিজেদের দেশ ছাড়ছে। নিজেদের মহাদেশও ছাড়ছে নতুনের সন্ধানে।
দমিতি এই চিহ্নরাশির স্বতঃচালনার ছবি অনেকটাই বিমূর্ত ধারার। অনেকাংশে মিল পাওয়া যায় রবার্ট ও সোনিয়া দেলুনির বর্ণসংগীতের সঙ্গে। তবু দেলুনিদের মতো সংগীতের 888sport app download apk latest version নন দমিতি। কান্দিনিস্কির মতোও নন। রেখা ও বর্ণের সারসংক্ষেপে প্রচলিত বিমূর্তধারার 888sport live chatী হতে চাননি তিনি। তাঁর মধ্যে ছন্দপতনের সংকেত আছে। বিক্ষুব্ধ পৃথিবী নাড়া দিয়েছে তাঁর বর্ণতল। কান্দিনিস্কি ও দেলুনিদের তা দেয়নি। তাঁরা অনেক বেশি সারবাহী। নিরঙ্কুশভাবে রং-রেখার কারবারি। দমিতির মাধ্যমের মিশ্রতাও জানিয়ে দেয় বিশুদ্ধ বিমূর্তবাদী তাঁর পক্ষে হওয়া সম্ভব নয়। আপাতদৃষ্টে মনে হয় দমিতির মধ্যে সময় নেই, ছবির মূল প্রতিমা আড়াআড়ি স্থাপনের মধ্যে এবং মূল সংগঠন দুমড়ে দেওয়ার মনোভঙ্গির মধ্যে বিক্ষুব্ধ মনের আর্তি আছে, একটা ঝড়ের মতো বেগে তিনি ভাসিয়ে দেন মৃদুচেনা অনুষঙ্গগুলো। হলুদ, লাল, নীল, সবুজ ও মাটির রং ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াময় মনটার কথা বলে। এই মনটা সময়ের সঙ্গে আছে। বর্তমানের ঘটনার মধ্যে বিরাজ করে। মনের কোনো গহন-কন্দরে অতিশোধিত আত্মার স্বর শোনাতে চাননি তিনি।
মরুভূমির যে-উদ্যানে কোনোদিন কোনো মানুষের পদচিহ্ন পড়েনি তা-ও মরুঝড়ে তছনছ হয়, তার বালুরাশিতে বার্ষিকগতি ছাপ রেখে যায়। যতই অন্তঃশীল হোন না কেন দমিতি, তবু তিনি সময়ের দোসর। তাঁর ছবির পরিচর্যাই সেই সত্যের ঘোষণা দিচ্ছে। কোনো বর্ণ-এলাকাই তার অনাবিল নয়। সময় সেখানে পাক খায়। দমিতি এক ভূয়োদর্শী পর্যটক। অনেক সমুদ্র, ডাঙ্গা, বনভূমি, আকাশ তিনি নিজের গোপন ডায়রিতে টুকে রেখেছেন। এখন সেসব তথ্য বর্ণজমিনে হাওয়ায় ওড়ে অথবা জলে ভাসে।
তিন
ত্যাংগোর ধ্যান-বলয়
তিনি অনেক গোলক তৈরি করেছেন ছবিতে। মানুষের শোক, শক্তি ও ধ্যানের প্রতিমা স্থাপিত করেছেন সেই গোলকের ভেতরে, এক বলয়ের ভেতর আরেক বলয় এবং প্রতিটির মধ্যে মুদ্রা আছে মানুষের, দেবতার। আসলে শক্তির মালা তৈরি করেছেন 888sport live chatী। এর ভেতর দিয়ে তিনি নিজেকে দেখেছেন। তার চেয়েও বড় কথা জপমালা হাতে একজন ধ্যানী যেমন মুহুর্মুহু জপে যান ঈশ্বরের নাম তেমন ইমেজ দিয়ে পুনরপি নিজের আত্মাকে অনুভব করতে চেয়েছেন 888sport live chatী জঁ পিয়ের ত্যাংগো। এই ফরাসি 888sport live chatীর প্রদর্শনী চলছে ধানমন্ডির ‘888sport live chatাঙ্গন’ গ্যালারিতে। আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ, বেঙ্গল গ্যালারি ও 888sport live chatাঙ্গন – ধানমন্ডির এই তিন প্রধান গ্যালারিতে ফরাসি 888sport live chatের তাৎপর্যবহ তিনটি প্রদর্শনী চলছে।
ত্যাংগোর মতো খুব কম 888sport live chatীই এমন রহস্যের গোলক তৈরি করেন 888sport live chatে। ইউরোপ তো ওই ধ্যানবলয় থেকে কবেই বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এশিয়া ও আফ্রিকাতেও আধুনিক 888sport live chatীরা এ-বিষয় অবলম্বন করে খুব একটা চর্চা করেন না। কিন্তু এই ফরাসি 888sport live chatী তা ব্যাপকভাবে করে যাচ্ছেন।
888sport live chat রচনা করা মানে পরমপ্রভুর কাছে আনত হওয়া, তার
স্তবগাথা রচনা করা – এই স্বতঃসিদ্ধতায় অনেক দিন স্থিরবিশ্বাস ছিল পৃথিবীর। পুবে ও পশ্চিমে তাই কত-না ধ্যানবলয়। আর মূর্তির কাছে হাঁটু মুড়ে বসা, ধ্যানস্থ হয়ে মন্ত্র উচ্চারণ করে তার সঙ্গে একাত্ম হয়ে তো নিজের অস্তিত্বকেই সংহত করা। নিজের সত্তার অমিত তেজ অনুভব করা। ধ্যান করতে করতে নিজের অস্তিত্বের যে-স্তরবিন্যাস আছে তা অনুভব করে মানুষ। ত্যাংগোর ছবিতে ধ্যানী বৌদ্ধ, ধ্যানী শিব এবং যিশুও আছেন। গির্জার প্রধান প্রতিমা যিশুর বিভিন্ন রূপ এবং ভারতীয় সভ্যতার মণ্ডলা আছে। বৃত্ত ও চৌকোণ, একের ওপর অন্যটি চাপানো হয়েছে। নানা জ্যামিতিক পরিসর তৈরি করে তাতে বিবিধ ইমেজ স্থাপিত করেছেন 888sport live chatী।
ত্যাংগো ধ্যানের ছক খুঁজেছেন। আবার তুমুল আবেগে সেই ছক গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। যিশুর রূপকগুলোর কথা ভাবা যাক। একটা আয়তাকার গড়ন লম্বালম্বিভাবে আঁকা হয়েছে। এর ওপরের দিকে ডানে-বাঁয়ে প্রসারিত, একদম ওপরে বৃত্তচাপের মতো গড়ন। অর্থাৎ ত্রুশবিদ্ধ যিশু ও যিশুর ওপর জ্যোতির্বলয়। এসব অনেক সময়েই সুনির্দিষ্টভাবে আঁকেননি 888sport live chatী। শুধু উত্তুঙ্গ আবেগ ছড়িয়েছেন। প্যাশান প্রদর্শন করেছেন বর্ণ ও গড়নের সম্মিলনে। এক দাউ দাউ আবেগ ভক্তের। ভক্তিটাই এঁকেছেন তিনি। মনে হয় live chat 888sportকার প্যাসোলিনির ছবির আবেগ ভাষা পেয়েছে। ছাপাই ছবি বলে ধাতবপাত ক্ষতবিক্ষত করে কুরি কুরি রেখা ও বিন্দুর টেক্সচারে ভক্ত-হৃদয়ের উপচেপড়া আবেগ নির্দেশ করা হয়েছে। যিশু নেই সশরীরে, অথচ তার জন্য আবেগের মন্থন চলছে। লম্বালম্বি অবস্থিত আয়তকার আমাদের গির্জার ছবির কথা মনে করিয়ে দেয়। এসব চিত্রে এক ধরনের ন্যারেটিফ তৈরি করা হয়। বিভিন্ন ফ্রেমে ভিন্ন ভিন্ন ইমেজ এঁকে বাইবেলের ঘটনা বিবৃত হয় তাতে। দুটি ফ্রেমবন্দি ছবি এঁকে কোনো ঘটনা বলা হলে তাকে বলা হয় ডিপটিশ। তিনটির বিবরণকে বলা হয় ট্রিপটিশ, তার চেয়ে বেশি হলে পলিপটিশ। ত্যাংগো এই ন্যারেশানের নিয়ম ভালোবেসেছেন। তিনি অনেক ইমেজের পলিপটিশ রচনা করেছেন। তাঁর অভিজ্ঞতায় যিশুর উপস্থিতি গুরুত্ববহ। স্পষ্ট ইমেজে যিশু না এঁকে শুধু টেক্সচার ও কালির উদ্ভাসনে যখন তিনি আবেগের বিভিন্ন রূপ চিহ্নিত করেন তখন বোঝা যায় কতটা নিবিড় ত্যাংগো ইউরোপের ধ্যানের সঙ্গে।
বাইরে যতই আধুনিকতা থাকুক, ভেতরে ভেতরে প্রায় সবার মধ্যেই বিশ্বাস, এমনই কি সংস্কারও। পোশাকের নিচে তাবিজ, কবচ, গায়ে উল্কি, গলায় মালা। এগুলো যত-না দেহে লেগে আছে তার চেয়ে বেশি তা গভীরভাবে মুদ্রিত অন্তরে। এই
অন্তরের মুদ্রাগুলো চিত্রিত করতে চেয়েছেন ত্যাংগো। অনেক ছক কেটে বিশ্বাসের ব্যবচ্ছেদ করেছেন। তাঁর যিশু বিষয়ক ছবির মধ্যে বিমূর্ত উচ্ছ্বাসের যে-প্রকাশ অন্য ছবিতে তা নেই। তিনি ভারতীয় ‘মণ্ডলা’ রূপ এঁকেছেন। তাতে যে-বিবিধ ঈশ্বরপ্রতিম মুদ্রার স্থির মানুষ চিত্রিত করেছেন তা অনেকাংশেই করণকৌশল নির্ভরতার কথা বলে, যেন তিনি প্রমাণ করছেন বিন্যাসে ও
ছাপাই ছবির ছাপ দিতে তিনি কতটা দক্ষ। তবু কৌশল ও দৃঢ়কব্জি-প্রিন্ট দেখার মধ্যে আনন্দ আছে। শূচিতাই যেন ত্যাংগোর প্রিন্টের বিষয়।
ত্যাংগোর ছবির দিকে তাকালে একটি বিশেষ বিষয় দেখা যাবে; তিনি স্পষ্ট ইমেজ ও কালির উদ্গীরণ – এই দুই চিত্রগত উপাদানে মালা গেঁথেছেন। উদ্গীরণ তাঁর আত্মার ধ্বনি, বিশ্বাসের স্বর। ইমেজগুলো আশ্বাস। নৃত্যপর ও ধ্যানস্থ মুদ্রার অনেক ভারতীয় ধর্মনির্ভর ধ্রুপদী মূর্তির রূপ এঁকেছেন এই ফরাসি 888sport live chatী। পৌনঃপুনিকতায় তার আকর্ষণ। তাকে সুখ দেয় সারিবদ্ধ ভক্তদের তীর্থের দিকে ধাবিত হওয়ার দৃশ্য। অনেক সময় মানুষের মিছিল দেখে বোঝা যায় না তারা কারা, কোনদিকে যাচ্ছে। জেরুজালেমে, নাকি ভারতের কোনো মন্দিরময় তীর্থে। এই অস্পষ্টতার মধ্যে বুদ্ধি শৈল্পিক স্পর্শ পেয়েছে। একটা ধ্যানের টান তিনি আঁকতে চেয়েছেন। এখানে আবেশ ও আবহই বড় কথা। ধাতব প্লেটে অম্লীয় দ্রবণ নিয়ন্ত্রণ করে টেক্সচার মাহাত্ম্যে দ্রবীভূত ভক্তহৃদয়ের উষ্ণতা বিশ্লেষণ করেছেন 888sport live chatী। প্রত্যেকের হৃদয়ই কি মহাকাব্য? তার সারা জীবনের সুখ-দুঃখ সবিস্তারে তুলে আনলে একথা কি স্পষ্ট হয়ে উঠবে না যে কতবার সে গভীর দুঃখে নিমজ্জিত হয়েছে, কতবার বীর সেজেছে, জয়ী হয়েছে, পরাজিত হয়েছে, জীবন-মৃত্যুর মাঝপথ ধরে হেঁটেছে – এইসব শিহরণও ত্যাংগোর বিষয়। মানুষের ক্ষমতা ও শক্তির পরাকাষ্ঠাও তাঁর আরাধ্য। অনেক সময় 888sport live chatী শাক্তের ধ্যানে ভারতীয় সভ্যতা হৃদয়ঙ্গম করতে নিবিষ্ট হয়েছেন। তাঁর ছবিতে অজস্র ইমেজ। আক্ষরিক অর্থে মূর্তি-পরিধির মধ্যে তিনি মূর্ত হয়ে ওঠেন। এত অনুপুঙ্খতার অবয়বপ্রধান ছাপাই ছবি খুব একটা দেখা যায় না। এ-888sport live chatীর কাজ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলে কেবলই ধ্যানের মুদ্রা কুড়িয়ে পাওয়া যায়।
মহাকাব্যের চরিত্র দেবতারা। তবু তা পৌরাণিক মহাকাব্য নয়। নানা মিথুনমূর্তি আছে সেখানে। এই পরিচিত পৃথিবীরই নর-888sport promo code তারা। উর্বরতার প্রতীক হয়ে ফুটে উঠেছে। জন্ম দেবার শক্তিটা প্রদর্শন করতে চেয়েছেন 888sport live chatী এ-চিত্রায়নে।
কিন্তু সত্যিকার ও শুচিস্নিগ্ধ নাটক আছে ত্যাংগোর যিশুর সাঙ্গ-সম্পর্কিত চিত্রে। যিশুকে ক্রুশে চাপানো হচ্ছে আর দাউ দাউ শোকে পুড়ছে ভক্তের হৃদয় – এই উত্তাল নাটক 888sport live chatী ধূসর-কালো উদ্ভাসনে তুলে ধরেছেন। আবার ক্রুশ থেকে যিশুকে যখন নামানো হচ্ছে তখন দুঃখের মধ্যে লোমহর্ষ – এ-ঘটনারও ব্যঞ্জনাময় প্রকাশ আছে। তাছাড়া ঐশী আলো, অলৌকিকতা, এসব তো আছেই। ল্যাজারাস ও পুনরুত্থানের কথা ইঙ্গিতে বিম্বিত হয়েছে।
ত্যাংগোর ছবি মূলত এই ব্রহ্মাণ্ডের সঙ্গে মানুষী-সত্তার সম্পর্ক নির্ণয়। তিনি চক্রজাল তৈরি করেন। তাঁর ছবি পৃথিবীর বিভিন্ন যুগের বিভিন্ন ধর্মের ইমেজে পূর্ণ এক মহাগ্রন্থ। তাতে একটি মাত্র গ্রন্থ নেই, সুনির্দিষ্ট কোনো সুবচন নেই। শুধু রহস্যজাল আছে। এমনকি গ্রন্থ, মন্ত্র কোনোটাই নির্ভর না করে একটি গাছের মধ্যে তিনি ঈশ্বরকে অবলোকন করেছেন। অবশ্য মরমি-ভাবনার এটাই সারকথা। মানুষের চিন্তার, কল্পনার, ধ্যানের চক্রজাল রচনায় ত্যাংগো বিশেষভাবে পারঙ্গম। তাকে ওই ধ্যানচক্রের চক্রবর্তী বললে অসংগত মনে হয় না।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.