যতীন সরকারের (১৯৩৬-২০২৫) পরিচয় বহুবিধ। তিনি শিক্ষাবিদ, সমাজচিন্তক, 888sport live footballিক হিসেবে খ্যাতিমান। রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন কিছুকাল। উদীচী 888sport live chatী গোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। সব মিলিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন গণমানুষের প্রতি নিবেদিত কণ্ঠস্বর।
যতীন সরকার বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী ছিলেন। তাঁর কাজের জগৎ ব্যাপৃত। বিশেষ করে সংস্কৃতি নিয়ে তিনি আমৃত্যু কাজ করেছেন। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল, সংস্কৃতির প্রভাব, বিস্তার, প্রতিবন্ধকতা, অংশীজনসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাঁর কলম ক্লান্তিহীন চলেছে।
সংস্কৃতিচর্চার অনেক অনালোকিত বিষয়কে তিনি সুধীমহলের দৃষ্টিগোচরে এনেছেন। সংস্কৃতি নিয়ে ব্যাখ্যা করেই তিনি ক্ষান্ত হননি, মাঠপর্যায়ে সংগঠক হিসেবেও কাজ করেছেন। সংস্কৃতির প্রতি তাঁর এ-নিবেদনের সময়কাল অন্তত সত্তর বছর।
সংস্কৃতির প্রতি যতীন সরকার কীভাবে আকৃষ্ট হলেন – এ-প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় তাঁর পাকিস্তানের
জন্মমৃত্যু-দর্শন (২০০৫) গ্রন্থে। ১৯৫৫ সালে ময়মনসিংহে ‘পূর্ববাংলার সংস্কৃতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় গিরিজাপ্রসন্ন মজুমদার ও আতিউল হকের সঙ্গে যতীন সরকারও বক্তব্য প্রদান করেন। তাঁর বক্তব্য নিজের কাছে গোছানো মনে হয়নি। তবু অনেকে তাঁর বক্তৃতার প্রশংসা করেন। যতীন সরকার লিখেছেন, ‘সেই প্রশংসাতেই বোধহয় সংস্কৃতি বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা ও পড়াশোনার দিকে আমার আগ্রহ ও উৎসাহ জন্মে।’
১৯৫৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে যতীন সরকারের ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা চলছিল। তাই সংস্কৃতি নিয়ে প্রবল আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও তিনি ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনে যেতে পারেননি। কিন্তু সম্মেলনে কী হচ্ছে – পত্রপত্রিকার মাধ্যমে নিয়মিত খোঁজ রাখতেন। সম্মেলন নিয়ে রাজনৈতিক কুৎসা-রচনা দেখে কষ্টও পেয়েছেন। ছাত্রাবস্থাতেই তিনি জানতেন, এ-সম্মেলনের ফল হবে সুদূরপ্রসারী। তিনি 888sport sign up bonusকথায় লিখেছেন, ‘এ-অঞ্চলে পাকিস্তানের মৃত্যুবীজকে লালন করার ক্ষেত্রে কয়েকটি 888sport live football-সংস্কৃতি সম্মেলন’ বিশেষ অবদান রেখেছে।
১৯৫৭ সালে যতীন সরকারের বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর। তিনি ওই বয়স থেকেই সচেতনভাবে প্রগতিশীল চিন্তাধারা লালন করতেন। প্রতিক্রিয়াশীলতা যে-কোনো জাতির জন্যই ক্ষতিকর। প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীকে প্রতিরোধ করার প্রধান শক্তি হলো সংস্কৃতি। যতীন সরকার জানতেন, ‘প্রতিক্রিয়াশীলদের ভয় রাজনীতিকে নয়, সংস্কৃতিকে।’ তাই তিনি সকল অচলায়তন, দুর্নীতি, কুসংস্কার, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিনাশের বিরুদ্ধে সংস্কৃতিকে উচ্চকিত করেছেন। এটি তাঁর সংস্কৃতি বিষয়ে গভীর পঠন-পাঠন ও ভাবনার অন্যতম কারণ।
সংস্কৃতির সঙ্গে প্রকৃতির সম্পর্ক নিয়ে বাংলাভাষায় খুব বেশি লেখা হয়নি। এ-বিষয় নিয়ে যতীন সরকার যুক্তি ও দর্শনের নিরিখে বারবার লিখেছেন। তাঁর বিশ্লেষণ-ক্ষমতা ছিল প্রখর। তিনি মনে করতেন, প্রকৃতি হলো সংস্কৃতির উৎসমূল। তাঁর কাছে প্রকৃতির অর্থ ‘888sport promo code’ ও ‘বস্তু’। প্রাকৃতজনরা ছিলেন এ-চিন্তার ধারক। বাংলার লৌকিক ধর্মও 888sport promo code ও বস্তু-ধারণার বিষয়গুলোকে ধারণ করেছে। যতীন সরকার লিখেছেন, ‘888sport promo codeর রজঃ আর পুরুষের বীর্য তো বস্তু ছাড়া আর কিছুই না। এই দুই বস্তুর সংযোগের মধ্যে যারা মানবসৃষ্টিকে অবলোকন করেন, তাদেরকে বস্তুবাদী ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে?’ তাঁর মতে, মানুষের মাধ্যমে প্রকৃতির সংস্কার ঘটে এবং সংস্কৃতিতে রূপ নেয়। উদাহরণ হিসেবে বলেছেন, গাছের বন প্রকৃতি এবং মানুষের তৈরি বাগান হলো সংস্কৃতি। আবার গাছ দিয়ে তৈরিকৃত আসবাবপত্র, ঘরবাড়িও সংস্কৃতি। দৃশ্যমান প্রকৃতিকে সংস্কৃত করে তৈরি হয়েছে বলে এগুলো বস্তুগত সংস্কৃতি। অনেকে চিত্তগত সংস্কৃতিকে ‘একমাত্র সংস্কৃতি’ হিসেবে ভেবে থাকেন। তাঁরা বস্তুগত সংস্কৃতিকে সংস্কৃতি মনে করেন না। যতীন সরকার এর বিরোধিতা করেন। তাঁর মতে, যাঁরা এমনটি ভাবেন, তাঁরা ভাববাদের খপ্পরে পড়েছেন। ভাববাদ থেকে কলাকৈবল্যবাদী ভাবনার সূচনা হলে মানুষ আন্তঃপ্রকৃতি ও বহিঃপ্রকৃতিকে আলাদা করে ফেলে। ফলে প্রকৃতির মূল ধারণা বিকৃত এবং বস্তুগত সংস্কৃতির ক্ষতিসাধন হয়।
বস্তুগত সংস্কৃতির এই ক্ষতিসাধনের ফলে দেখেছেন পরিবেশ-প্রকৃতি বিষয়ক আন্দোলনকে কেউ সাংস্কৃতিক আন্দোলন মনে করে না। এর কারণ, প্রকৃতিই যে সংস্কৃতির জননী তা মানুষ ভুলে যায়। অথচ পাহাড়, নদীনালা, সাগর, বৃক্ষরাজিসহ সবকিছুকেই মানুষ সংস্কৃতির অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করেছে। তাই পরিবেশ আন্দোলনকে মানুষ যত দ্রুত সাংস্কৃতিক আন্দোলনরূপে অনুধাবন করতে পারবে, তত মানবজাতির জন্য মঙ্গল। আর এজন্য ‘চিত্তের সংস্কার ঘটানো’ প্রয়োজন। ধর্মান্ধতা ও পশ্চাৎপদতা দূরে ঠেলে মানুষকে সংস্কৃতবান হতে হয়। যতীন সরকার বলেন, ‘সংস্কারমুক্ত ও সংস্কৃতিচিত্ত মানুষই প্রকৃতিস্থ মানুষ। আর এরকম প্রকৃতিস্থ মানুষের হাতেই সুস্থ সংস্কৃতির সৃষ্টি হয়।’ অন্যদিকে অসংস্কৃতিচিত্ত মানুষের হাতে তৈরি হয় অপসংস্কৃতি, অপশাসন ও প্রতিক্রিয়াশীলতা। তাই প্রকৃত সংস্কৃতিকে অগ্রসরতার পথে ধাবিত করা হবে আদর্শ সমাজব্যবস্থার ব্রত।
সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ লোকসংস্কৃতি। সাধারণ মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত রীতিনীতি, চিন্তা, সামাজিক বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও কৃষ্টি মিলে গড়ে ওঠে লোকসংস্কৃতির জগৎ। লোক888sport live football এ-জগতের গুরুত্বপূর্ণ শাখা। যতীন সরকার 888sport appsের লোক888sport live football নিয়ে গবেষণার জন্য কৃষকের মনস্তত্ত্বকে গুরুত্ব দিতেন। তিনি বলতেন, কৃষকের মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণ ছাড়া প্রকৃত গবেষণা হবে না। পাশ্চাত্যের পদ্ধতি মেনে সঠিকভাবে লোক888sport live football বিশ্লেষণ করা সবসময় সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তিনি ময়মনসিংহের সিরাজুদ্দিন কাসিমপুরীর (১৯০১-৭৯) কাজকে আদর্শ হিসেবে দেখেছেন। তাঁর মতে, কাসিমপুরী লোক888sport live football ও সংস্কৃতিকে ভেতর থেকে দেখে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। সকল লৌকিককে নিয়েই বাঙালি জাতিসত্তা গঠিত। প্রাকৃতজনের অংশগ্রহণে আমাদের সংস্কৃতি সমৃদ্ধ ও বর্ণিল। যতীন সরকার এ-কথা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন। তিনি লিখেছেন, ‘তথাকথিত মধ্যযুগের বাংলায় সামাজিক বৈষম্য যতই প্রকট থাকুক, মোল্লা-পুরুতের দাপট যতই অকরুণ হোক, সময়ে-অসময়ে সমাজের নিম্নবর্গের মানুষের ওপর সমাজপতিদের উৎপীড়ন যতভাবেই নেমে আসুক – সে-যুগের বাংলার 888sport live football-সংস্কৃতিতে প্রাকৃতজনেরই ছিল আধিপত্য।’ অথচ দীর্ঘকাল তথাকথিত শিক্ষিত সমাজ নিয়মের নামে বিবিধ শৃঙ্খল তৈরি করেছে। যতীন সরকার এ-সংস্কারের নাম দিয়েছেন ‘আধুনিকতার কুসংস্কার’। তারা এ-ধরনের কুসংস্কার মানবমনে ঢুকিয়ে দিয়ে
888sport live football-সংস্কৃতির ইতিহাসকে খণ্ডিত করেছে। পরে খণ্ডিত অংশকে পূর্ণাঙ্গ ইতিহাসের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করা হয়েছে। ফলে বাইরে রয়ে গেছেন মাটিলগ্ন কবি, লেখক ও সংস্কৃতি সাধকরা। যতীন সরকার লিখেছেন, শিক্ষিত সমাজের বাইরে ‘বিশাল বাংলায় গ্রামীণ কৃষিজীবী বা অন্য বৃত্তিজীবীদের মধ্য থেকে উঠে এসেছেন যেসব কবি, শতকরা নব্বইজন মানুষ যাঁদের 888sport app download apk বা গান তথা 888sport live footballের উপভোক্তা – তাঁদের তো আমরা গণনীয়ই বিবেচনা করিনি। অথচ এঁরাই আবহমান বাংলার গণ888sport app download apkর ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন।’ এই উপেক্ষা ও খণ্ডিত ইতিহাসের কারণে বাংলা 888sport live footballের ইতিহাসগ্রন্থে কবি জালাল উদ্দীন খাঁর মতো সাধকদের নাম কখনো ছিল না। যতীন সরকার জীবনভর চেয়েছেন সংস্কৃতির মাটিলগ্ন মানুষদের নিয়ে যথার্থ গবেষণা হোক। তিনি নিজেও
এ-ধরনের কাজ করেছেন। জালাল উদ্দিন খাঁ’র (১৮৯৪-১৯৭২) গান নিয়ে সম্পাদনা করেছেন জালালগীতিকা সমগ্র (২০০৫)। এছাড়া লিখেছেন 888sport appsের কবিগান (১৯৮৫), সিরাজুদ্দিন কাসিমপুরীর (২০০৮) মতো গ্রন্থ।
যতীন সরকার প্রচলিত সমাজব্যবস্থার ঘটনাবলির দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ত্রুটি-বিচ্যুতি তাঁর চোখ এড়াত না। যেমন, অনেক অনুষ্ঠানে বলা হয় : আলোচনা সভার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে। এতে যতীন সরকার অস্বস্তি বোধ করতেন। তিনি প্রশ্ন করেছেন, আলোচনা সভায় যে বুদ্ধিবৃত্তিক ও মননসংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা হয় সেগুলোর কি সাংস্কৃতিক মূল্য নেই? এগুলোও সংস্কৃতির অংশ। অথচ মানুষ শুধু বিনোদনকেই সংস্কৃতির অংশ মনে করে। অর্থাৎ বহু মানুষের কাছে ভাবগত সংস্কৃতিই সংস্কৃতি, বস্তুগত সংস্কৃতিকে তারা সংস্কৃতি মনে করে না। এভাবেই সংস্কৃতির বৃহৎ পরিসর খণ্ডিতরূপে উপস্থাপন হয়। এজন্য প্রধানত দায়ী সমাজের কর্তৃত্ববাদী শ্রেণি। যতীন সরকার দেখেছেন, সমাজের মানুষের মতো সংস্কৃতিও শ্রেণিবিভক্ত হয়েছে। ‘সংস্কৃতি ও বিনোদন’ 888sport liveে তিনি লিখেছেন, শ্রেণীবিভক্ত সমাজে একশ্রেণীর মানুষ হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে সম্পদ উৎপন্ন করে, আর অন্যশ্রেণীর মানুষ কোনো শ্রম না করেও তা ভোগ করে। এ সমাজে পরশ্রমভোগীরাই অবসরভোগী এবং সমগ্র সমাজের নেতা ও কর্তাও তারাই। … সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও সেখানে একই ঘটনা ঘটে।
সংস্কৃতির স্রষ্টা আর ভোক্তা সেখানে প্রায়ই ভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষ হয়ে থাকে। ভোক্তারা অবসরভোগী শ্রেণীর মানুষ বলেই সংস্কৃতির কাছে তারা বেশি বেশি করে অবসর-বিনোদনের উপকরণ দাবি করে বসে। আর তাদের চাহিদা মতন সংস্কৃতিও সর্বজনীন মানবীয়তা পরিহার করে একটি ক্ষুদ্র অথচ প্রভাবশালী গোষ্ঠীর বিনোদনের উপকরণে পর্যবসিত হয়ে যায়। অর্থাৎ সংস্কৃতি আর বিনোদন এক হয়ে যায়।
অন্যদিকে সংস্কৃতির প্রকৃত ধার করা সমাজ ও রাষ্ট্রে নানাভাবে বঞ্চিত হন। সাংস্কৃতিক উৎসবে তাদের অংশগ্রহণ থাকে না। অর্থাৎ একজনের উৎসব অন্যজনের হস্তগত হয়ে যায়। যতীন সরকার এর উদাহরণ হিসেবে নববর্ষকে দেখিয়েছেন। নববর্ষের প্রধান কারিগর হলেন উৎপাদন সংশ্লিষ্ট কৃষক ও শ্রমিক। অথচ নববর্ষ পালন হয় নগরে, মফস্বলে। নববর্ষের আয়োজন করে 888sport live chatকলা, সাংস্কৃতিক সংগঠন, এমনকি করপোরেট হাউসও। সেখানে উৎপাদনসংশ্লিষ্ট কৃষকদের উপস্থিতি থাকে না। এমন আয়োজন নিঃসন্দেহে কৃত্রিম। যে-কারণে যতীন সরকার বলেছেন, জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতি আমাদের নিরঙ্কুশ অধিকার হয়নি। তাঁর মতে, নববর্ষ উদ্যাপনের নামে ‘উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কহীন অনিকেত মধ্যবিত্তের ঐতিহ্য-প্রীতি আসলে ঐতিহ্য-বিলাস মাত্র।’
সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের খণ্ডিত উপস্থাপন দিনশেষে জাতিকে বিভ্রান্ত করে। শেকড় থেকে মানুষের দূরত্ব বাড়ায়। সাধারণ মানুষ সংস্কৃতির গভীরতা সম্পর্কে অবগত নয়। তাদের অবগত করার কাজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের ওপর অনেকাংশে বর্তায়।
সাংস্কৃতিক মোড়লদের কার্যক্রম নিয়ে যতীন সরকার সন্তুষ্ট ছিলেন না। যথার্থ সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাঁর নিজের সংগঠন ‘উদীচী’র ভূমিকা নিয়েও তাঁর প্রশ্ন ছিল। অকপটে বলেছেনও সে-কথা। এছাড়া সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ডে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি গ্রহণের অভাব তিনি লক্ষ করেছেন। তিনি বলেছেন, জোরালো সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হলে বৈজ্ঞানিকভাবে সংস্কৃতিকে অনুধাবন করতে হবে। 888sport apkসম্মত উপায়ে প্রশিক্ষিত না হলে অপসংস্কৃতি ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প দূর করা যাবে না। এক্ষেত্রে 888sport appsের বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা নিয়েও যতীন সরকার উষ্মা প্রকাশ করতেন। তাঁর মতে, তাঁদের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি না থাকায় যথার্থ সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।
বাঙালির যত প্রাপ্তি ও গৌরবগাথা রয়েছে, তার সঙ্গে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মুখ্য সম্পৃক্ততা রয়েছে।
ভাষা-আন্দোলন প্রথমে সাংস্কৃতিক ও পরে রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধেও সংস্কৃতিজনদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে আমরা যে ক্ষয়ে-যাওয়া সমাজে বাস করছি, তার পেছনে রয়েছে সংস্কৃতিহীনতা। যতীন সরকার স্পষ্ট করে বলেছেন, স্বাধীনতার পর সাংস্কৃতিক আন্দোলনটি গড়ে তোলা গেলে 888sport appsের দুর্দিন আসত না। তাই সমাজের রাহুদশা থেকে মুক্তি পেতে তিনি বুদ্ধিজীবী সমাজকে একটি সত্যিকার সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলতেন। এ-প্রসঙ্গে তাঁর সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রত্যাশা (২০২৪) গ্রন্থের নাম888sport liveটি আলোচনার দাবি রাখে। আলোচ্য 888sport liveে লেখক কয়েকটি মৌলিক বিষয়ের দিকে আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন। এগুলো হলো : এক. সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের ‘জাতীয় চৈতন্যের উদ্বোধন’ ঘটে। দুই. স্বাধীনতাসহ জাতীয় জীবনের অনেক গৌরবময় অর্জনে অগ্রগণ্য ভূমিকা থাকলেও একসময় আমরা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কথাই ভুলে যাই। তিন. সাংস্কৃতিক আন্দোলন কেবল বিদগ্ধজনের মধ্যে সীমাবন্ধ থাকবে না, গ্রামবাংলার প্রাকৃতজনের মাধ্যমেও বিস্তার লাভ করবে। চার. সংস্কৃতির বৈষয়িক ও আত্মিক রূপ সমন্বিত করে জনসংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করলে সকল ধরনের রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন প্রকৃতির নিয়মে দূরীভূত হবে। তাঁর মতে, সর্বজনীনতা রক্ষা এবং জনসংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা ছাড়া সমাজের যাবতীয় ক্লেদ-বৈষম্য দূর করা সম্ভব হবে না। তাঁর সংস্কৃতি ও বুদ্ধিজীবী সমাচার (২০১৫), বাংলার লোকসংস্কৃতি বিষয়ক 888sport live (২০১৬), বাংলার লোকসংস্কৃতি (২০১৭), সংস্কৃতি ভাবনা (২০১৯) ইত্যাদি গ্রন্থেও বারবার এমন চিন্তার প্রতিফলন হয়েছে।
যতীন সরকার তাঁর সংস্কৃতি-ভাবনাকে ঐতিহাসিক বস্তুবাদের দৃষ্টিকোণ থেকে অবলোকন করেছেন। তিনি যেভাবে প্রকৃতি ও গণমানুষের জন্য সঙ্গে সংস্কৃতির সম্পর্ক বিশ্লেষণ করেছেন, তা বিরল। তাঁর মতো নিবেদিত সংস্কৃতিপ্রাণ মানুষ পাওয়া আমাদের জন্য গৌরবের। তাঁর মৃত্যুতে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হলো।
তথ্যসূত্র
১. যতীন সরকার, পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু-দর্শন, 888sport app : জাতীয় 888sport live football প্রকাশ, ২০০৫।
২. যতীন সরকার (সম্পা.), জালালগীতিকা সমগ্র, 888sport app : নন্দিত, ২০০৫।
৩. যতীন সরকার, সংস্কৃতি ও বুদ্ধিজীবী সমাচার, 888sport app : বিজয় প্রকাশ, ২০১৫।
৪. যতীন সরকার, সংস্কৃতি ভাবনা, 888sport app : ভাষাপ্রকাশ, ২০১৯।
৫. যতীন সরকার, সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রত্যাশা, 888sport app :
কথাপ্রকাশ, ২০২৪।
৬. মাইনুল ইসলাম মানিক (সম্পা.), হিরন্ময় বানপ্রস্থ (যতীন সরকারের স্বনির্বাচিত 888sport live, 888sport sign up bonusগদ্য, আলোচনা ও দীর্ঘ সাক্ষাৎকার), 888sport app : পাঞ্জেরী পাবলিকেশন, অক্টোবর ২০২১।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.