যমের সঙ্গে সংলাপ

বুলবন ওসমান

সন্ধ্যা হয় হয়। ইফতারের হুটিং বেজে গেছে। রাস্তা একেবারে ফাঁকা। এই সময় 888sport live chat-সমালোচক রহমান ধানমণ্ডিতে অবস্থিত গ্যালারিতে প্রবেশ করে। যা ভেবেছিল তাই। গ্যালারি দর্শকশূন্য। একা 888sport live chatী দীপা নিজের ছবির দর্শক। পরিচয় হলো। দীপা এসেছে কলকাতা থেকে। আলাপে রহমান জানতে পারে ওদের পৈতৃক ভিটে যশোরে…। ঝিনাইদহের শৈলকূপায়। ওর ঠাকুরদা কলকাতায় চাকরি করত। বাড়ি-ঘরদোর এখনো আছে, তবে অন্যের দখলে। 888sport appsে ১৯৪৭-এর পর এটা একটা সাধারণ চিত্র। এর ওপর 888sport live chatী ও 888sport live footballিকরা তেমন একটা কাজ করেননি। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হলে রবীন্দ্রনাথ অমূল্য সব দেশাত্মবোধক সংগীত রচনা করে গেছেন। কিন্তু ’৪৭-এ রবীন্দ্রনাথ নেই। আর             কে-ই বা জাতিকে দিগনির্দেশ দেবে? 888sport live chatী অমর পালের কণ্ঠে গাওয়া ‘শিয়ালদহ, গোয়ালন্দ আজো আছে ভাই, আমি যাবো আমার দেশে সোজা রাস্তা নাই’… গানটি একটি ভালো আর্তিমূলক সংগীত। হৃদয়ে কান্না জাগায়। যেমন, ‘একবার বিদায় দে না, ঘুরে আসি’… ক্ষুদিরামের ফাঁসির ওপর গান, যা বাঙালির হৃদয়-নিংড়ানো সুর। বাউল অংশের গানগুরো বাঙালির অন্তরের কথা। তারপরও হিন্দু-মুসলমানের যন্ত্রণা আর গেল না। আর বাঙালি মুসলমানের মধ্যে আজ আফগানিস্তানের তালেবানের ভূতও ঢুকে পড়েছে। রবীন্দ্রনাথের সেই কাবুলিওয়ালাকে এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেই রহমত এখন আর এদেশে আসে না আখরোট আর হিং বিক্রি করতে। তারা আসে জিহাদ করার জন্যে। আসে বন্দুক আর গ্রেনেড নিয়ে। তাদের হাতে ক্ষমতা না আসা পর্যন্ত মানুষ মেরে সাফ করে যেতে হবে নির্বিচারে। প্রগতিশীল ও সাধারণ মানুষ সবাইকে। তাদের সহযোগী না হলে।
রহমান প্রদর্শনী ঘুরে ঘুরে দেখল। 888sport live chatবোদ্ধা লোক পেয়ে দীপা পাশাপাশি হাঁটতে থাকে। দু-একটা মন্তব্য মাঝে মাঝে উচ্চারিত হয়। খালি ঘরে তাই বেশ জোর মনে হয়। একটা পাতার ছবি দেখিয়ে রহমান বলে, 888sport live chatীর চিন্তা কত সহজ। একটা পাতায় আনন্দ খুঁজে পাওয়া। জটিল যন্ত্রণার চেয়ে এগুলো আমার অনেক ভালো লাগে।
অল্প সময় পার হতেই আটটা বেজে গেল। গ্যালারির বাতি নেভাতে হবে। রহমান বিদায় নেবার আয়োজন করে। দুই প্রজন্মের মানুষ তারা। দীপার জন্যে রহমানের মনে একটা øেহের বোধ কাজ করে চলে। সে কিছু বলার আগে দীপা বলল, আর একদিন মাত্র প্রদর্শনী চলবে। তারপর একদিন থেকেই কলকাতা চলে যাব। এখানে অন্য কোনো গ্যালারি দেখা হলো না।
ঠিক আছে, আমি চেষ্টা করব, পরশু তোমাকে সময় দেওয়া যায় কিনা।
খুব ভালো হয়…
চলি…
নমস্কার।
নমস্কার।
একদিন পর রহমান তার গাড়ি নিয়ে দীপাকে হোটেল থেকে তুলে নিল। ধানমণ্ডিতে বেশ কয়েকটি ভালো গ্যালারি আছে। সেগুলো দেখতে দেখতে দুপুর গড়িয়ে যায়। রোজার দিন হলেও একটা গ্যালারির মধ্যে রেস্টুরেন্ট থাকায় তারা দুপুরের লাঞ্চ সারে, ভেজিটেবল রোল আর স্যুপ দিয়ে।
তিনটে বাজে।
আপনাদের জাতীয় জাদুঘর দেখার খুব ইচ্ছা, বলে দীপা।
আজ শুক্রবার। তিনটে থেকে খোলা। ভালো সময়। চলো, যাওয়া যাক।
শুক্রবার তবু সায়েন্স ল্যাবরেটরির মোড় পার হয়ে গাড়ি পড়ে জ্যামে।
হঠাৎ রহমান বলে, দীপা, আমার কেমন খারাপ লাগছে…
কী ধরনের অসুবিধা?
বুকের বাঁ-দিকটা কেমন জানি চেপে আসছে…
দীপা কিছু বলার আগেই রহমান বলে ওঠে। আপনি যে গাড়িতে উঠে বসলেন?
কে গাড়িতে উঠল, জানতে চায় দীপা।
আরে বলা নেই, কওয়া নেই, সামনের সিটে একটা লোক এসে বসে পড়ল।
সামনের সিটে! কই সামনের সিট তো খালি! দীপা বিস্ময় প্রকাশ করে।
তুমি দেখতে পাচ্ছ না?
না!
একজন ছাড়া কেউ আমাকে দেখতে পায় না। সামনের সিটে বসা আগন্তুক বলে।
কে আপনি? রহমান প্রশ্ন ছোড়ে।
তোমাকে এখন যেতে হবে।
কোথায় যাব?
যেখানে সবাই যায়।
সবাই কোথায় যায়?
সত্তর বছর বয়স হলো তা-ও জানো না? না না-জানার ভান করছ?
কিন্তু এখন তো আমাকে জাদুঘর যেতে হবে। দীপাকে জাদুঘর দেখানোর জন্যে বেরুলাম।…
দীপা তোমাকে ছাড়াই জাদুঘর দেখবে।
তা কী করে হয়! এক যাত্রায় পৃথক ফল…
এরকমই হয়।
আমি কিন্তু এখনো আপনার পরিচয় পাইনি?
আমি যম।
যম! যুগপৎ রহমান ও দীপা চমকে ওঠে। দীপা যমকে দেখতে না পেলেও কথাটা শুনতে পেয়েছে।
যমবাবু, আপনি পরে আসুন, বলে দীপা। আমি রহমানজির সঙ্গে 888sport app জাদুঘর দেখবো বলে বেরোলাম, আর এই সময় আপনি তাঁকে নিতে এসেছেন। আপনি পরে আসুন।
আমি কি ভিখিরি! যমের গলার স্বর চড়া।
না না, তা হবেন কেন! আপনি তো যম, রাজা মানুষ…
রাজা নই, মহারাজা। আর মানুষ নই, দেবতা।
দুঃখিত। আপনি আসলে সম্রাট… দীপা কথোপকথন চালিয়ে যায়।
না, সম্রাট নই। সম্রাট হলো একজন। তিনি ভগবান। আমি তার হুকুম পালন করি মাত্র।
আপনি ভগবানকে বলতে পারেন না, যখন তখন বলা নেই কওয়া নেই, একজন জলজ্যান্ত মানুষের সামনে এসে দাঁড়ালেন, আর বললেন চলো। সবকিছুর জন্যে মানুষের একটা প্রস্তুতি লাগে তো! দীপা তার কথা দীর্ঘায়িত করে চলে।
ভগবানকে বলে লাভ! ভগবান তো হুকুম দিয়েই খালাস। তিনি তো পাথর! তাকে তো গলান যায় না! শুধু আমাকে অপ্রস্তুত হতে হয় লোকের সামনে গিয়ে।
আপনারও দোষ আছে। বলতে পারেন না, আমি চাকরি ছেড়ে দেব। দীপার যুক্তি বামফ্রন্টের সদস্যের মতো।
ভগবান তখন আমাকে আস্ত রাখবেন? সোজা পাঠাবেন রৌরব নরকে।
যাবেন নরকে। সবাইকে সেখানে ঠেলে দেবার সময় আপনার তো কোনা হুঁশ থাকে না। দীপা রীতিমতো যমরাজকে ধমকে ওঠে।
এই মেয়ে, মুখ সামলে কথা বলো। এটা কলকাতা নয়। তুমি বিদেশি, বিদেশির মতো ভদ্র-নম্রভাবে কথা বলো।
আমি মোটেই বিদেশি নই। আমি 888sport appsি। আমার চৌদ্দপুরুষ 888sport appsি। আমাদের বাড়ি যশোর…। ঝিনাইদহ… শৈলকূপা… প্রদর্শনী উদ্বোধন করে বাড়ি থেকে ঘুরেও এসেছি। আমি অবশ্য জন্মেছি আসানসোলে।
ও তুমি 888sport appsি। যমবাবুকে একটু যেন নরম মনে হলো।
হ্যাঁ, আমি 888sport appsি। বরং জন্মসূত্রে রহমানজি বিদেশি। তিনি হাওড়ার মামাবাড়ি ঝামটিয়া গ্রামে জন্মেছেন। তার প্রতি আপনার ভালো আচরণ করা উচিত। আপনি এখন যান। আমাদের কাজে বাধা দেবেন না। দেশি-বিদেশি, বাঙালি-ব্রিটিশ।
কথাটা ঠিক বলোনি দীপা। আমি জন্মেছি ব্রিটিশ ইন্ডিয়ায়। সুতরাং ইন্ডিয়া, 888sport apps, পাকিস্তান কোনো জায়গাতেই আমি বিদেশি নই। বরং ব্রিটেনে যেতে নীতিগতভাবে আমার পাসপোর্ট লাগা উচিত নয়।
শোন, আমার কাছে সবাই সমান। সাদা-কালো, ধনী-গরিব, ছেলেমেয়ে, চাকুরে-বেকার, সতী-অসতী, চোর-সাধু, হিন্দুস্তানি-পাকিস্তানি Ñ কারো কোনো পার্থক্য নেই।
অপরাধ নিবেন না যম মহারাজ, আমি একটা কথা বলতে চাই… দেখুন, জাদুঘর যাওয়া ছাড়াও আমার অনেক কাজ বাকি রয়েছে… বলে রহমান।
ওটা সবারই থাকে… আমার কিছু করার নেই।
দেখুন, আত্মজীবনীটা মাত্র শুরু করেছি… এখনো শৈশবকাল পর্যন্ত শেষ হয়নি… তারপর ভারতীয় দর্শন কেন্দ্র করে একটা              রস-রচনা অর্ধেক হয়ে পড়ে আছে… বাবা নামী 888sport live footballিক… তাঁর নামে একটা অ্যাকাডেমি করব… জায়গা মাত্র দেখা হয়েছে… সব কাজ বাকি…।
ওসব বাকি ইতিহাস শুনে আমার কোনো লাভ নেই…
প্লিজ, আপনি একটু বোঝার চেষ্টা করুন, এই যে মেয়েটাকে নিয়ে বেরিয়েছি, জাদুঘর দেখব বলে… ও জন্মেছে পশ্চিমবঙ্গে, চৌদ্দপুরুষের 888sport appsকে জানার ওর কত আগ্রহ, এখন মাঝপথে আমি ওকে ফেলে গেলে বেচারার মিশনটাই ভেস্তে যাবে…
আবার বলছি, আমার কিছু করার নেই।
আপনি দেখছি মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ বুশের মতো কথা বলছেন : হয় আপনি আমাদের বন্ধু অথবা শত্র“। ব্যাপারটা তো এমন হতে পারে যে, আপনি বন্ধুও নন, শত্র“ও নন। যমরাজ আপনি ইচ্ছা করলেই অনেক কিছু করতে পারেন, আপনি ভগবানকে গিয়ে বলুন যে, ভগবান লোকটার তো অনেক কাজ বাকি, ও এখন থাক, এই সময় অকম্মা কিছুকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। আপনি ইচ্ছা করলেই কালক্ষেপণ করতে পারেন। ততোদিনে আমিও আপনার কাছে যাবার জন্যে তৈরি হয়ে যাব।
আমাকে কথা দিয়ে ভুলিয়ে তো লাভ নেই, কারণ এই পর্যন্ত কেউ আমাকে ভোলাতে পারেনি।
তা ঠিক আছে, কেউ পারেনি, কিন্তু তারপরও একটা সম্ভাবনা থেকে যায়…
কী রকম?
এখন পারা গেল।
ছেলের হাতের মোয়া…
না, তা হবে কেন, সম্ভাবনার কথা বলছি। তাছাড়া আরেকটা কথা আছে। আপনার সঙ্গে যাবার আমার ঘোর আপত্তি?
কেন?
আমার জন্যে তো আসবে আজরাইল, আপনি এসেছেন কেন?
আমি আসায় কোনো ব্যত্যয় হয়নি। কারণ আমি জানি তুমি ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করো।
হ্যাঁ, তা করি। সেটা কি কোনো অপরাধ?
না, অপরাধ হবে কেন। তুমি ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ায় আজরাইলের জায়গায় যম আসলে তোমার কোনো আপত্তি থাকবে কেন?
আপনার নামাবলি পোশাক, কপালে তিলক-সিঁদুর, এটা তো আমি যে ধর্মীয় গ্র“প থেকে এসেছি তারা পছন্দ করে না।
তারা পছন্দ না করুক, তুমি তো অপছন্দ করো না!
না, তা করি না। কিন্তু… আজরাইলের পোশাকটা কেমন সে অভিজ্ঞতাটা থেকে তো আমি বঞ্চিত হবো।
রহমানজি, আপনি ঠিক বলেছেন, দীপা মাঝখান থেকে বলে ওঠে। যমরাজ, আপনি রহমানজিকে নিয়ে যতে পারেন না। আপনি এখন যান… পরে আজরাইলকে পাঠিয়ে দেবেন… আমরা ততোক্ষণ জাদুঘরটা দেখতে যাই। আমরা ওখানেই থাকব…
অন্তত ঘণ্টা তিন-চার তো লাগবেই। আপনার হাত থেকে পালাবার তো পথ নেই। আপনি এখন যান, বেশ বিরক্তির সঙ্গে দীপা বলে।
তোমাদের ফন্দিতে কোনো কাজ হবে না।
কেন, কেন?
দু’জন একসঙ্গে বলে ওঠে।
রহমান দেখে সামনের সিটে বসা সেই নামাবলি পরা যমরাজ কখন আজরাইল সেজে গেছে! তার গায়ে একটা কালো আলখাল্লা, আর মাথায় ফেজ টুপি।
দীপা দেখতে পাচ্ছে না। রহমান বলে, দীপা, মনে হয় আমার মানব জীবনের অন্তিম সময় ঘনিয়ে এলো।
কেন? উদ্বেগ দীপার কণ্ঠে।
যমরাজ তো পোশাক পালটে আজরাইল বেশ ধরে বসে আছেন।
তাহলে এখন কী করি… বিড়বিড় করতে থাকে দীপা। সে অনুনয়ের সুরে বলে, আজরাইলজি, আপনি রহমানজিকে সামান্য সময় দিন, ততোক্ষণে আপনি অন্য দায়িত্বে যান।
শোন, 888sport appsে আমি তো একটার দায়িত্বেই আসি। কিন্তু হাত বাড়ালেই পাঁচটা উঠে যায়।
মানে! দীপা অবাক।
এতো লোক… যে হাত দিলেই একসঙ্গে পাঁচটা… দশটা… চল্লিশটা… শ’খানেক… অনেক সময় আরো বেশি উঠে যায়। তাতে অবশ্য আমার কাজ কমে। একটা একটা করে বাছতে অনেক সময় লাগে।
আচ্ছা আজরাইলজি এখন তো আপনার মধ্যপ্রাচ্যে ডিউটি পড়ার কথা। লিবিয়া, মিশর, সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, তিউনিশিয়া… আপনি এখন ওখানে যান না। পরে আমাদের এখানে আসবেন বলে দীপা।
আমি একই সঙ্গে সব জায়গায় কাজ করতে পারি। সুতরাং আমার কোনো ছুটি নেই।
তবু মানুষদের পক্ষ থেকে একবার ভগবানকে বলুন না যে,              যে-মানুষ কাজ করতে চায় তাকে কিছুদিন এক্সটেনশান দেওয়া যায় কিনা? বলে দীপা।
ভগবানের কিছু করার নেই। ভগবান সব সময় এই ট্রাবলে আছেন। তোমাকে একটা ছোট উদাহরণ দিই : এক ধানক্ষেতের পাশে তৈরি হয়েছে এক ইটের ভাটা। এখন চাষী ধান লাগিয়েছে, কিন্তু শুরু হয়েছে খরা… এদিকে ইটভাটায় কাঁচা ইটে লাগান হয়েছে আগুন… এখন চাষি গাইছে : আল্লা মেঘ দে, পানি দে ছায়া দেরে তুই… এদিকে ইটভাটার মালিক বলছে : হে ভগবান, এই কটা দিন বৃষ্টি দিও না ভগবান… আমার ইটটা যেন ভালো করে পুড়তে পারে… এখন বলো, আল্লা বা ভগবান কার প্রতি সদয় হবে?
যম মহারাজ, এই সমস্যার সমাধান যখন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার কাছেই নেই, তখন আমি আর কী বলব। বুঝতে পারছি… আমার কপালে 888sport app জাদুঘর দর্শন নেই… আর রহমানজির সঙ্গে মাত্র দুদিনের আলাপ… ওর মতো একজন 888sport live chatবোদ্ধা ব্যক্তির সঙ্গ আমাকে হারাতে হবে… এবং সেটা চিরদিনের জন্যে… আমার খুব কান্না পাচ্ছে… আপনাকে আমি আর কোনো অনুরোধ করব না… বলে দীপা কান্নায় ভেঙে পড়ে।
এই সময় যুবক ড্রাইভার জামাল বলে, স্যার… জ্যাম কেটে গেছে…
গাড়ি চলতে শুরু করে।
গরমে দরদর করে ঘামছিল দীপা… সে বলে, রহমানজি, এসিটা ফুলদমে ছেড়ে দিতে বলুন না!
জামাল, এসিটা ফুলদমে ছেড়ে দাও, বলে রহমান।
সোঁ-সোঁ রবে এসির ঠান্ডা বাড়তে লাগল পুরো গাড়িতে।
রহমান বলে, দীপা বুকের ব্যথাটা ক্রমশ কমে আসছে।
আপনি একটা ভুল করেছেন রহমানজি।
মাসখানেক হলো ল্যাপ্রস্কোপি করেছেন… পিত্তথলি অপসারণ করেছেন…
আপনার ওই অত তেল জ্যাবজ্যাবে ভেজিটেবল রোলটা খাওয়া উচিত হয়নি।
যথার্থ বলেছ।
গাড়ি বেশ জোরে চলছে।
পুরো গাড়ি চমৎকার শীতল।
দীপা বলে, যাক, জ্যামটা গেছে।
রহমান বলে, দীপা, একটা সুখবর আছে?
কী?
সামনের সিটটা খালি।
মানে?
জ্যামও গেছে… সঙ্গে গেছে যমও।