‘রঙের মিথস্ক্রিয়ায় হৃদয়ের ঐক্য’

নূরুজ্জামান কায়সার
সম্প্রতি শেষ হলো 888sport apps ও মিয়ানমারের 888sport live chatীদের নিয়ে দুসপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনী ও কর্মশালা – ‘রঙের মিথস্ক্রিয়ায় হৃদয়ের ঐক্য’। 888sport apps দূতাবাস, মিয়ানমারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব আর্টস অ্যান্ড কালচারের যৌথ উদ্যোগে দুই ধাপে ছিল এই কর্মশালা ও প্রদর্শনী। দুদেশের উলেস্নখযোগ্য 888sport live chatীরা তাঁদের 888sport live chatকর্ম নিয়ে এ-আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন। 888sport apps থেকে ছিলেন 888sport live chatী হাশেম খান, মাহমুদুল হক, ফরিদা জামান, মোহাম্মদ ইউনুস, নাসরিন বেগম, রোকেয়া সুলতানা, বিপাশা হায়াত ও বিশ্বজিৎ গোস্বামী। মিয়ানমার থেকে ছিলেন ইউ মায়েত তুং অং, ডাও নিও নি উইন, ইউ অং থিনো, ইউ তাবো সিও মাইনত, ইউ টিন সোয়ে ও ইউ মিনতো। প্রদর্শনীর মূল বিষয় ছিল, দুদেশের 888sport live chat-ভাবনার পারস্পরিক পরিচয় ও আদান-প্রদান কীভাবে আরো উন্নত করা যায়। দুদেশের মধ্যে উদার সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন তৈরিই ছিল এ-প্রদর্শনীর মূল লক্ষ্য।
সাংস্কৃতিক ও মূল্যবোধগত দিক দিয়ে মিয়ানমার ও 888sport appsের যোগ শতাব্দী-পুরনো। যদিও সাংস্কৃতিক সংলগ্নতার বিষয়টি নিয়ে ইতিপূর্বে দুদেশে তেমন কোনো আলোকপাত করা হয়নি। সম্প্রতি সরকারিভাবে দুদেশের ভেতর নানামুখী যোগাযোগ স্থাপনের মধ্য দিয়ে 888sport apps-মিয়ানমার সম্পর্ককে গতিশীল করার উদ্দেশ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই ইয়াংগুনে অবস্থিত 888sport apps দূতাবাস জনকূটনীতির মাধ্যমে দুদেশের মানুষ ও সংস্কৃতিকে পারস্পরিকভাবে জানার ও কাছে আসার উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এ-প্রদর্শনী মিয়ানমারের দর্শকদের কাছে 888sport appsের সাংস্কৃতিক মহিমা ও ঐশ্বর্যের পরিচয় তুলে ধরতে সর্বতোভাবে সফল হয়েছে নিঃসন্দেহে। 888sport appsের 888sport live chatকলা এদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, রীতিনীতি ও ঐতিহ্যের ধারক। অতীতের বহুবর্ণিল ঐতিহ্য এ-রসদের উৎপত্তি। 888sport appsের 888sport live chatী ও পৃষ্ঠপোষকরা সামূহিক এবং অসাম্প্রদায়িক আবহ ও নিজস্ব বৈশিষ্ট্যাবলি রূপায়ণে সহায়তা করে বহুত্ববাদী সংস্কৃতিকে ওপরে তুলে ধরতেই এ-পদক্ষেপ নেন। মিয়ানমারের দর্শকরা আমাদের সাংস্কৃতিক উদারতা, বহুত্ববাদী সংস্কৃতির প্রতি 888sport appsের মানুষের 888sport apk download apk latest versionবোধের দিকটি এ-প্রদর্শনীর মাধ্যমে পর্যবেক্ষণে সমর্থ হয়েছেন।

দুই
প্রথম পর্যায়ে সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনী শুরু হয় ‘গ্যালারি ইয়াংগুনে’। প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন মিয়ানমারে 888sport appsের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান এবং মিয়ানমারের মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষ অতিথি ছিলেন মিয়ানমারের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব আর্টস অ্যান্ড কালচারের প্রধান। প্রতিটি 888sport live chatীর মোট চারটি করে 888sport live chatকর্ম প্রদর্শনীতে স্থান পায়। উদ্বোধনের পরদিন থেকে শুরু হয় কর্মশালা চিং চুং আর্টস সেন্টারে, শতবছরের পুরনো ঘনসবুজে ঘেরা রাজবাড়িতে রোদ-বৃষ্টির মায়াময় এক দারুণ পরিবেশে। এতদিন দুদেশের ভেতর নানা বাধানিষেধ, মান-অভিমান ছিল, যা ভেতর থেকে সম্পর্কের বাঁধনকে দুর্বল করে দিয়েছিল, তারই যেন অবসান হয়েছে এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে। সবকিছুকে পেছনে ফেলে দুদেশের 888sport live chatীরা উন্মোচন করেছেন এক নতুন দিগমত্ম।
টানা দুদিনের কর্মশালার মধ্য দিয়ে দুদেশের 888sport live chatীদের হাত দিয়ে বেরিয়ে আসে অনেক 888sport live chatকর্ম। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি, কখনো-বা রোদ আর মেঘের খেলা, পাখির কলকাকলি – সব মিলে তৈরি করেছিল এক অপরূপ আবহ, যা 888sport live chatীদের জন্য ছিল বাড়তি পাওয়া। প্রতিদিনই কর্মশালা দেখতে আসেন অনেক 888sport live chatানুরাগী ও দর্শক।
হাশেম খান দুদিনে এঁকেছিলেন তিনটি চিত্র। তাঁর মূল বিষয় ছিল, বাংলার চিরায়ত রূপ, গ্রামবাংলার 888sport promo code-বাউল আর প্রাকৃতিক নিসর্গ। নিজস্ব ঢঙে অল্প রঙের বিস্তারে বিষয়কে তুলে আনেন তিনি সাবলীলভাবে। তাঁর প্রতিটি চিত্রে মুন্শিয়ানার ছাপ স্পষ্ট। মাহমুদুল হক চিত্র-রচনায় বিমূর্ততাকে প্রাধান্য দিয়েছেন – ঘন নীল বা ধূসর, সেইসঙ্গে কালো বা কমলার নিরমত্মন খেলা তিনি খেলেছেন। সঙ্গে ছিল তাঁর স্বরূপচেনা আলো-আঁধারির মায়াবী খেলা। ফরিদা জামান নাগরিক-জীবনে গ্রামীণ পটভূমি তুলে এনেছেন। গ্রামের মেয়ে সুফিয়া। শহরে সে নিজ ভাবনায় আনমনা, তার সাথি সাদা বক। বিমূর্ততাকে উপজীব্য করে মোহাম্মদ ইউনুস চিরপরিচিত রং ভেঙে বিচিত্র রঙের ছটা ছড়িয়ে প্রাণময় করে তুলেছেন ক্যানভাস। এক্সপ্রেশনিস্ট 888sport live chatের সঙ্গে তাঁর 888sport live chatের একটা দূর-আত্মীয়তা অনুভব করা গেছে। রোকেয়া সুলতানা এঁকেছেন গভীর সবুজ ঘন পাহাড়ি উপত্যকায় ধ্যানরত বুদ্ধ। পাহাড়ি মন্দির, অপরিশীলিত পাথুরে ঝরনাধারার অববাহিকা, তারই কোল ঘেঁষে প্রকৃতির কোলে আনন্দময় এক রূপ, ব্রিটিশ নিসর্গচিত্রী জোসেফ উইলিয়াম টার্নারের মতো। বিপাশা হায়াত এঁকেছেন বেশকটি ছবি। জীবনের সব অশামত্ম অভিজ্ঞতাকে পেছনে ফেলে রঙের মধ্য দিয়ে 888sport sign up bonusর এক নতুন ভুবন তিনি খুঁজে ফিরেছেন বারবার। ছোট-ছোট ঘোপে হরেকরকম গাঢ় রং নিয়ে মায়াবী এক স্বপ্নজাল বুনেছেন তিনি, যেন জীবন-সংগ্রাম এবং ভালোবাসার মধুময় পারস্পরিক সহাবস্থান। বিশ্বজিৎ গোস্বামী এঁকেছেন বুদ্ধের তিন রূপ – প্রাণভরে, সহজ টানে। শুধু সাদাকালো আর সোনালি রঙের মধ্যে তাঁর সহজ-সরল ব্যাখ্যা মুগ্ধতায় ভরিয়ে রাখে মন। দেখে মনে হয়, বুদ্ধের আনন্দময় রূপটির নিখুঁত বর্ণনার এক কাব্য।
মিয়ানমারের 888sport live chatীদের কাজও ছিল মনোমুগ্ধকর। সব 888sport live chatীই এঁকেছেন নিজস্ব ধারায়। তাঁদের আশপাশ আর প্রতিদিনের জীবনই ছিল ছবির মূল বিষয়। ইউ মায়েত তুং অং এঁকেছেন মানুষের প্রকৃতি। যন্ত্রণা আর বিলাসের এক গদ্য যেন তাঁর ছবি। তাঁর ডিটেলের বিন্যাস ছিল গভীর। ইউ অং থিনো রচনা করেছেন পাহাড়ি গুহাচিত্রের আধুনিক রূপ। বেগুনি রঙের আধিক্য দিয়ে গড়েছেন ঐতিহাসিক পটভূমির সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধন। মি উন এঁকেছেন হারিয়ে যাওয়া পুরনো গরুগাড়ি – আনমনে চলছে ধুলো উড়িয়ে মেঠোপথে। দারুণ এক নস্টালজিক মমতা তাঁর ছবিতে বিদ্যমান। লতাপাতা, ফুল-পাখি নিয়ে মেতেছিলেন ইউ তাবো সিও মাইনত। অল্প-পরিসরে শুধু তুলির ছোঁয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর কল্পনাকে, লতাপাতা আর ফুল-পাখির মধ্যে। ইউ টিন সোয়ে এঁকেছেন মানুষের মুখাবয়ব। মুখের অভিব্যক্তি যেন বলে যায় না-বলা এক গল্প। গাঢ় রং আর ব্রাশের ঘন ছাপ কী সুন্দরভাবে তৈরি করেছে এক রঙিন স্বপ্ন। ইউ মিনতো হোর বিষয় ছিল একটু ভিন্ন। হালকা থেকে গাঢ় রং প্রয়োগ করে তিনি তাঁর বিষয়কে পরিস্ফুট করেছেন। বেঁচে থাকার সঙ্গে বেড়ে-ওঠার যে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তার সঙ্গে জীবন্মৃত প্রিয় মানুষের জন্য প্রার্থনা – সেই আকুতি ছিল তাঁর বিষয়।
মানুষ একা বাঁচে না, বাঁচে সমাজ, পরিবেশ আর পারিপার্শ্বিকতা নিয়ে। সেই সামাজিকতার দায়ই যেন এই কর্মশালার মূলমন্ত্র ছিল। দুটি দেশের ভিন্ন-ভিন্ন সংস্কৃতি, আচার আর 888sport live chatীর দায়বদ্ধতাকে একসূত্রে গাঁথার এক গান যেন এ-কর্মশালা।

তিন
দুদেশের 888sport live chatীদের কর্মশালার কাজ এবং সংগ্রহের 888sport live chatকর্ম নিয়ে দ্বিতীয় ধাপে মিয়ানমার জাতীয় জাদুঘরে শুরু হয় সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনী। শুরুর দিন থেকে দর্শক ও 888sport live chatরসিকরা দুদেশের 888sport live chatীদের ভিন্নধারার কাজ একসঙ্গে দেখতে পেয়ে আবেগে আপস্নুত হয়ে ওঠেন। দুদেশের জনগণের দৈনন্দিন জীবনযাপন, ইতিহাস, সংস্কৃতি, অর্থনীতি আর আত্মার বন্ধনের এক নবযাত্রা যেন ছিল এ-প্রদর্শনী।
888sport live chat ও সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে দুদেশের মানুষের মধ্যে দৃঢ় ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরির এমন আপ্রাণ প্রচেষ্টা সত্যি বিরল।