রবিউল হুসাইন স্থপতি, কবি কিংবা একজন অনন্য মানুষ

জীবনে অনিন্দ্য কিছু সময় উপলব্ধি বা উপভোগ করতে হলে সে-ভালো লাগার সময়কাল খুব দীর্ঘ হয় না, বিধাতা হয়তো তা চান না। একটি পাহাড় চূড়াতে ওঠার পূর্বে যে উদ্দীপনা, আগ্রহ এবং একনিষ্ঠতা থাকে, পৌঁছানোর পরে তা ক্রমশ বিলীন হয়। তখন নিচে নামার জন্য সকল প্রচেষ্টা।

হয়তোবা ভালো লাগার সময়কাল দীর্ঘ হলে তার মাঝে একটা ফাটল তৈরি হতে পারে, খানিকটা হলেও দূরত্ব বাড়তে পারে। আমার সঙ্গে রবিদার সম্পর্কও ঠিক তেমনি। ভালো লাগার সুখময় সময়কালে তিনি চলে গেলেন, সম্পর্কের মাঝে কোনো দূরত্ব বা বৈরিতা তৈরির অবকাশ না রেখে। আজকের এ-888sport sign up bonusচারণ তার প্রতি একজন ভক্তের 888sport apk download apk latest versionঞ্জলি।

এক

স্থপতি রবিউল হুসাইন, প্রতিবাদী এক তরুণ, শহীদউল্লাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের স্থপতি হিসেবে কর্মরত; কিন্তু তাঁর বিচরণ 888sport live chatের 888sport app শাখাতেও। তখনো তিনি আমার কাছে রবিদা হয়ে ওঠেননি। তাঁর সঙ্গে প্রথমদিনের পরিচয় বা শুরুটা খুব আন্তরিক নয়, অতি সাধারণ এক পরিচয়পর্ব। আমি তখন সদ্য পাশ করা স্থপতি, স্থপতি ইন্স্টিটিউটের হয়ে নানান অফিসে যেতাম সদস্যদের বার্ষিক চাঁদা সংগ্রহের জন্য। তেমনি একদিন চাঁদা সংগ্রহের জন্য শহীদউল্লাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসে যাই।

এতোদিন তাঁকে দূর থেকে দেখেছি, কথা শুনেছি, ওইদিন ঠিক টেবিলের উল্টোপাশে। স্বাধীনতা-উত্তর 888sport appsে ১৯৭২ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত 888sport apps স্থপতি ইন্স্টিটিউটের (বাস্থই) প্রথম নির্বাহী পরিষদে স্থাপত্য আচার্য মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে দায়িত্ব পালনকারী একজন। ওইদিন কিন্তু তিনি চাঁদা পরিশোধ করলেন না, বললেন আরেকদিন আসতে। বাস্থই-এর প্রতি খানিকটা অভিমান আমি সেদিন তাঁর আচরণে প্রত্যক্ষ করেছিলাম। তাঁর ওই চাঁদা পরিশোধ না করাটাই হয়তো ভবিষ্যৎ সম্পর্ক তৈরির নিমিত্ত আমার জন্য নিয়তি ছিল। এরপরে বহুবার তাঁর অফিসে গিয়েছি, তিনি তখন কবি হিসেবে 888sport app download apkর জগৎকে নাড়া দিচ্ছেন, ফর্মভিত্তিক 888sport app download apk লিখছেন, অন্যমাত্রার পাঠক তৈরি করছেন। তাঁর কিছু 888sport app download apk মুদ্রণের পূর্বে কাটাকুটি অবস্থায় চাক্ষুষ করার সুযোগ হয়েছিল আমার।

রবিউল হুসাইন থেকে রবিদা – এরকম এক অন্তরঙ্গ সময়কালের শুরু ১৯৯০ সালে, বাস্থই-এর নবম নির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে কাজ করতে গিয়ে এবং তা গভীরতায় পৌঁছে ত্রয়োদশ নির্বাহী কমিটিতে তার সঙ্গে জয়েন্ট সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে। ওই সময়কালে অনুভব করেছি অনন্য এক মনের অধিকারী বিশাল মাপের একজন মানুষের সান্নিধ্য। 888sport live chat ও 888sport live football জগতের সঙ্গে স্থাপত্য ও স্থপতিদের যে সম্পর্কের ‍সূত্রপাত, তার অন্যতম অনুঘটক ছিলেন রবিউল হুসাইন।

দুই

মানুষ হিসেবে খুব বৈচিত্র্যময় এবং গতিশীল এক জীবন তিনি যাপন করেছেন। কষ্ট, দায়িত্ব এবং 888sport live chatসত্তা – এ তিনের সংমিশ্রণে ক্রমশ নিজেকে ভেঙেছেন তিনি, আবার নতুনভাবে গড়েছেন।

১৯৪৩ সালের ৩১শে জানুয়ারি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলায় তাঁর জন্ম। পিতা তোফাজ্জল হোসেন এবং মাতা বেগ লুৎফুন্নেছার সংসারে পাঁচ ভাই ও চার বোনের মধ্যে প্রথম সন্তান তিনি। সকলের বড় হিসেবে অতিপ্রিয় ‘মিয়াভাই’।

দুরন্ত কিশোরের বেড়ে ওঠা কুষ্টিয়া শহরে। মুসলিম হাই স্কুল থেকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ তাঁর ভালো লাগার সময়কাল। ১৯৬২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পূর্বে পিতার মৃত্যুতে জীবনের প্রথম বাস্তবতার মুখোমুখি – বড় সন্তান, সংসারের চাপ তাঁর ওপর বর্তাল। পিতা পুলিশ বিভাগে চাকরি করতেন, ওখানেই তাঁর জন্য একটা চাকরির প্রস্তাব এলো। তিনি অনমনীয় এবং বিধাতা তাঁর জন্য অন্য একটি জগৎ তৈরি করে রেখেছিলেন, তাই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য 888sport app চলে আসেন।

তিন

অনেক আগে থেকেই বই কিংবা পত্রিকা রবিউলভাইয়ের নিত্যসঙ্গী। বই পেলে পড়েন, খুঁজে এনে পড়েন, পড়ার জন্য উন্মুখ থাকেন। উচ্চমাধ্যমিক পড়ার সময় তিনি কুষ্টিয়া শহরের পাবলিক লাইব্রেরিতে স্থাপত্যের ওপর একটি ম্যাগাজিন এবং স্থপতির জীবনসংক্রান্ত একটি লেখা পড়েন এবং সেই লেখাটি তাঁর পরবর্তী জীবনে পথচলার স্বপ্নসূচনা হিসেবে ধরা দেয়। তখন 888sport apps প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ই.পি.ইউ.ই.টি. এবং স্থপতি রিচার্ড ই. ভ্রুম্যান স্থাপত্য বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে নিয়োজিত। বিভাগীয় প্রধান তখন ভর্তিচ্ছু সকল ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে নিজে কথা বলতেন এবং রবিউল হুসাইনের সঙ্গে আলোচনায় জানতে পারেন, মফস্বলের এই ছেলেটি স্থপতি ফ্রাঙ্ক লয়েড রাইটের ওপর একটি লেখা পড়েছেন এবং ওই লেখাটি এ-তরুণকে স্থাপত্য নিয়ে পড়াশোনায় আগ্রহ করে তুলেছে। ভ্রুম্যান মুগ্ধ হলেন, রবিউল হুসাইনের নতুন পথে যাত্রা শুরু হলো।

পিতা নেই, সংসারের বড় ছেলের দায়িত্ববোধ এবং ভর্তি-পরবর্তী পড়াশোনা তাঁর জীবনযুদ্ধের দ্বিতীয় অধ্যায়। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত স্কলারশিপ এবং খণ্ডকালীন চাকরি – এ-দুয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থের বেশিরভাগ তাঁর ভাইবোনদের পড়াশোনা এবং সংসার খরচের জন্য ব্যয় হতো, বাকিটুকু নিয়ে কষ্টের এক হোস্টেলজীবন। কষ্টের সঙ্গে প্রতিনিয়ত এই যে-যুদ্ধ সেটাই তাঁকে ক্রমান্বয়ে প্রতিবাদী করে তোলে এবং এ-কারণেই ছাত্রাবস্থায় রাজনৈতিক ও সামাজিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে সহপাঠীদের নিয়ে প্রকাশ করেন 888sport app download apk ম্যাগাজিন না। নিয়মকানুন আর শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী না ওই সময়কালে সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা এক আলোড়ন সৃষ্টিকারী 888sport app download apk পত্রিকা।

চার

স্থাপত্যে ১৯৬৮ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনশেষে রবিউল হুসাইন ওই সময়ের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ‘বাস্তুকলাবিদ’-এ যোগ দেন; অবশ্য ছাত্রজীবনে সেখানেই তিনি খণ্ডকালীন কাজ করতেন। স্থাপত্য আচার্য মাজহারুল ইসলাম তখন আরেকজন প্রতিবাদী ও দেশ-ভালোবাসা তরুণ। তাঁর সঙ্গেই শিক্ষার আরেক অধ্যায় শুরু হলো। স্থপতি মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে রবিউল হুসাইনের কাজের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প, প্রখ্যাত স্থপতি স্ট্যানলি টাইগারম্যানের সঙ্গে যৌথভাবে দেশের পাঁচটি পলিটেকনিক ইন্স্টিটিউট প্রকল্প উল্লেখযোগ্য।

১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অর্জন – স্থপতি মাজহারুল ইসলাম এ-প্রক্রিয়ার একজন নিবেদিত ব্যক্তিত্ব হলেও স্বাধীনতা-উত্তর 888sport appsে তিনি তাঁর প্রিয় প্রতিষ্ঠান ‘বাস্তুকলাবিদ’কে সম্মুখে এগিয়ে নেওয়া এবং দেশ গঠনে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নতুন কোনো বৃহৎ প্রকল্প ডিজাইনের সুযোগ পান না এবং অদৃশ্য কোনো কারণে তাঁর পুরনো প্রকল্পগুলোর কাজ চলমান রাখার জন্য নতুন দেশে নতুন করে কোনো চুক্তিও সম্পাদিত হয় না। ‘বাস্তুকলাবিদ’ নিয়ে তিনি তাঁর কার্যক্রম ক্রমশ গুটিয়ে নেন। ওই সময় স্থপতি মাজহারুল ইসলামের অংশীদার প্রকৌশলী শেখ মো. শহীদউল্লাহ স্যার প্রতিষ্ঠা করেন ‘শহীদুল্লাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’ এবং স্থপতি রবিউল হুসাইন একজন অংশীদার পরিচালক হিসেবে এখানে যোগ দেন। এর মধ্য দিয়ে জীবনের অন্য একটি অধ্যায়ে পদার্পণ করেন স্থপতি রবিউল হুসাইন।

পাঁচ

শহীদুল্লাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসে তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব, তাঁর সঙ্গী স্থপতিগণ, কর্ম ও আস্থার পরিবেশ, রবিউল হুসাইনের বিকশিত হওয়ার সয়কাল। অনেক মানসম্পন্ন স্থাপত্য সৃষ্টির সঙ্গে মনের আরেক চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে 888sport app download apk, 888sport live, 888sport alternative link, গল্প, শিশু888sport live football, স্থাপত্য সম্পর্কিত রচনা – এমন নানা ধরনের 888sport live footballকর্মে তাঁর মনোনিবেশ এবং আপন প্রতিভায় 888sport live chat ও 888sport live footballের অঙ্গনে তাঁর স্থান অর্জন। তাঁর রচিত বিভিন্ন গ্রন্থের মধ্যে একটি 888sport alternative link, দুটি 888sport app download apk latest version গ্রন্থ, দুটি 888sport live সংকলন, তিনটি ছোটগল্পের বই, আটটি 888sport app download apkর বই, দুটি কিশোর 888sport alternative link ও একটি কিশোর ছড়ার বই অন্যতম। বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, ব্যক্তিজীবনের আনন্দ ও বেদনার ছাপ তাঁর রচনায় এসেছে। তাঁর অধ্যয়ন, সমালোচনামূলক রচনা এবং জীবনের পরিক্রমাতে সৃষ্টির স্বীকৃতি হিসেবে স্থাপত্য ও 888sport live footballকর্মের জন্য নানাবিধ 888sport app download bdে সম্মানিত হয়েছেন তিনি। তার কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো : 888sport app download apk ও 888sport live footballে অবদানের জন্য ২০০৯ সালে বাংলা একাডেমি 888sport live football 888sport app download bd; বাংলা 888sport live footballে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১১ সালে 888sport app download apkলাপ 888sport live football 888sport app download bd; কবির স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে জাতীয় 888sport app download apk পরিষদ 888sport app download bd; স্থপতি হিসেবে স্থাপত্য ও সামাজিক কার্যক্রমের জন্য ২০১৩ সালে বার্জার  লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড; 888sport appsে স্থাপত্য পেশাকে প্রতিষ্ঠা করা এবং 888sport apps স্থপতি ইন্স্টিটিউটের জন্য তাঁর অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৬ সালে আই.এ.বি গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড; এবং ভাষা ও 888sport live footballে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে জাতীয় পর্যায়ের অন্যতম স্বীকৃতি 888sport cricket BPL rateে পদক লাভ।

888sport appsের স্থাপত্য, 888sport live chat, 888sport live football, নীতির প্রশ্নে প্রতিবাদ, সামগ্রিক বিষয়ে দেশ এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁর পরিচয়, উপস্থিতি ও প্রিয়তা অনস্বীকার্য এবং ঈর্ষণীয়। স্থপতি ও স্থাপত্যের আঙিনাতে তাঁর সম্পৃক্ততা ব্যাপক এবং অবদান এদেশের জন্য নিবেদিত। তাঁর এক জীবনের দায়িত্ব পালন ও অর্জনের বিশ্লেষণে গেলে সে-চিত্রটি অতি সুন্দরভাবে সবার কাছে প্রস্ফুটিত হয়। তাঁর সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রগুলো হলো : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য; একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী পরিষদ সদস্য; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান 888sport sign up bonus জাদুঘরের পরিচালনা বোর্ডের সদস্য; কেন্দ্রীয়

কচি-কাঁচার মেলার সহ-সভাপতি; 888sport app নগর জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং জাতীয় 888sport app download apk পরিষদের সভাপতি।

ছয়

রবিদার সঙ্গে অনেক 888sport slot game করেছি দেশে এবং দেশের বাইরে। দেশের বাইরেই আমি অনেক বেশি নিরবচ্ছিন্ন সময় কাটাতে পেরেছি তাঁর সঙ্গে। ওখানে যে রবিদার অন্য কোনো অংশীদার থাকত না, তাই আমরা গল্পে, আড্ডায় এবং কথামালার স্রোতে ভেসে যেতাম। কথা হতো লেখা নিয়ে, গল্প, 888sport app download apk, স্থাপত্য এবং মানুষ নিয়ে। সে এক আনন্দমুখর সময়কাল, কত দেশের কত 888sport sign up bonus, কত 888sport slot gameের কত না গল্প।

একবারের একটি 888sport slot gameঘটনা। আমরা বাইরে যাব। আমার টিকেট কাটতে ইউনাইটেড ট্রাভেলসের বাবু, আমাদের প্রিয় স্থপতি মারুফের ছোটভাই, সবসময় সহায়তা করে। সেবার রবিদার টিকেটও ওর মাধ্যমে নিলাম। খাবার নিয়ে আমার একটু বাছবিচার থাকে, তাই আমারটা হালাল ফুডের কথা বলল; কিন্তু কীভাবে যে এ-অনুরোধ ওলটপালট হলো তা আমিও জানি না, রবিদাও নয়। তিনি মোটামুটি সর্বভূক, তাই যাত্রার দিন যখন রবিদার আসনের পিঠে হালাল স্টিকার পড়ল তখন আমি একটু অবাক হলাম। পানীয় সরবরাহ করার সময়ে রবিদাকে মেঘবালিকা আর পানীয় দিচ্ছে না, বলছে, তুমি হালাল ফুডের নির্দেশ দিয়েছ। জটিল এক পরিস্থিতি দেখে আমি বললাম, আমারটা দিন। আমাকে দেওয়ার পরে আমি রবিদাকে দিলাম আর রবিদাকে বললাম, আপনি কোলা নিয়ে আমাকে দিন। খাবারও ওইভাবে সার্ভ হলো। আমরা নিজেরা ওলটপালট করে নিলাম। মোটামুটি ঘণ্টা পাঁচেকের ফ্লাইটে বেশ কয়েকবার কোকা-কোলার সঙ্গে হুইস্কি পরিবর্তন হলো। মেঘবালিকা অবাক বিস্ময়ে আমাদের কার্যকলাপ দেখে হাসছিল।

রবিদার সঙ্গে আমার শেষ বিদেশ888sport slot game নেপালে, এশিয়ার 888sport cricket BPL rate দেশের স্থপতিদের যে-সংগঠন আর্কএশিয়া, সেই আর্কএশিয়া সম্মেলনে তিনি সাথি হয়েছিলেন আমাদের। একদিন সম্মেলনের অবসরে আমি আর দিলুভাই নেপালের হেরিটেজ স্থাপত্য দেখতে বের হলাম। রবিদাকে অনুরোধ করলাম সাথি হওয়ার জন্য। আমাদের সাথি ও গাইড নেপালি বন্ধু স্থপতি নির্জনা। রবিদা একবাক্যে রাজি হলেন এবং একটি পূর্ণদিন আমরা নেপালের পথে পথে রবিদার সঙ্গী হয়ে সময় কাটালাম। সেটা আমাদের চারজনের জন্য জীবনের সুবর্ণতম একটি দিন, ভালোবাসার এক সুবর্ণ সময়কাল।

আরেকটি 888sport sign up bonus খুব মনে ভাসছে। আর্কএশিয়া সম্মেলনের শেষদিনে সব দেশের স্থপতিরা মিলে একটি অনিন্দ্যসুন্দর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেখানে সবাই নিজ নিজ দেশের পক্ষে নানা বিষয় উপস্থাপন করেন। এমন এক সম্মেলনে আমাদের সঙ্গে একবার যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন তাঁরা সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে খুব পারদর্শী না হওয়াতে কী করব ভাবতে ভাবতে আমি একটি ছড়া লিখলাম, আর্কএশিয়ার থিমে, ‘বেঁচে থাকুক আর্কএশিয়া’। রবিদাকে দেখালাম, তিনি পুরো লেখাটি পড়লেন, লেখাটি ইংরেজিতে ট্রান্সলেট করে নিজেই উপস্থাপন করলেন ওইদিনের আয়োজনে। উপস্থাপনের পূর্বে অদ্ভুত এক কাজ করলেন তিনি, হলের আর্কএশিয়ার বন্ধুদের জানালেন লেখাটি আমার, তিনি শুধু 888sport app download apk latest version করেছেন। একজন ক্ষুদ্র ও নবীন লেখকের প্রতি আরেকজন বড় মনের লেখকের স্নেহের পরশ সেদিন অনুভব করেছিলাম।

আর্কএশিয়ার একটি অঞ্চলের

সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন সুচারুভাবে করেছেন তিনি। আর্কএশিয়ার ফেলোশিপ কমিটির কনভেনরের দায়িত্বও তিনি সুচারুরূপে সম্পাদন করেছেন। তাঁর নেতৃত্বেই আর্কএশিয়ার প্রথম ফেলোশিপ ডিরেক্টরি প্রকাশিত হয়েছিল এবং ওই ডিরেক্টরি প্রকাশে আমি সম্পৃক্ত ছিলাম। রবিদার আরেক ভক্ত স্থপতি সাব্বির আরেফীন রাসু ডিরেক্টরির গ্রাফিকস কার্যক্রমের গুরুদায়িত্ব পালন করেছিলেন।

২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে স্থপতি ইন্স্টিটিউটের আয়োজনে এশিয়ার 888sport cricket BPL rateটি দেশের স্থাপত্য ইন্স্টিটিউটের স্থপতিদের সম্মেলন হলো 888sport appsে। সম্মেলনের পূর্বে আমরা অনেকে মিলে কক্সবাজার গিয়েছিলাম, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতকে ব্র্যান্ডিং করা যাবে কি না সে-চিন্তা নিয়ে। পরবর্তীকালে অবশ্য অনেকে সেখানে এতো বড় আয়োজনের সাহস করেননি এবং সম্মেলন 888sport appতেই হয়েছিল। সে-যাত্রায় রবিদাও আমাদের সঙ্গী ছিলেন। রাতে তিনি আর দিলুভাই এক কক্ষে, আমি অন্য কক্ষে। মাঝরাতে, প্রায় তিনটার দিকে, আমার দরজায় টোকা, দিলুভাই ডাকছেন, রবিদার শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না তাঁর কাছে। দৌড়ে গেলাম পাশের কক্ষে, দেখলাম সেই অতিপরিচিত নাসিকা গর্জন অনুপস্থিত, অতি ধীরলয়ে শ্বাস নিচ্ছেন তিনি। মাথায় হাত রাখতে একটু পরে চোখ মেললেন, আমাকে দেখে উঠে বসলেন, বললেন, ‘ভয় পেয়েছেন? ভয় নেই, এতো সহজে মরব না আমি।’ কিন্তু পরবর্তীকালে সে-কথা তিনি রাখেননি, কেমন জানি ফাঁকি দিয়ে চলে গেলেন আমাদের। রবিদার সঙ্গে দেশের মধ্যে এটাই আমার শেষ 888sport slot game।

সাত

রবিদার অসুস্থতার কথা যখন শুনি তখন তিনি বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি। বিশেষ অনুমতি নিয়ে স্থপতি দিলুভাই আর আমি গিয়েছিলাম তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। তাঁর কক্ষে ঢুকতেই তিনি বললেন, ‘একটু দূরে সরে বসুন, আমি এখন জার্মের ডিপো।’ প্রায় ত্রিশ মিনিট রবিদার সঙ্গে কথা বলার পর ডাক্তার আমাদের আর বেশি কথা বলতে নিষেধ করলেন। আমরা দুজন তখন বাকিটা সময় নির্বাক হয়ে শুধু তাঁকে দেখছি আর পুরনো কথা ভাবছি।

আরো একবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে তিনি শমরিতা হাসপাতালে ছিলেন। সেখান থেকে কোনো এক গভীর রাতে তাঁকে যখন স্থপতি বদরুলভাই আর কবি তারিক সুজাত তৎকালীন এ্যাপোলো হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন, স্থপতি সাজ্জাদুর রশীদ তখন আমাকে ফোন দিয়ে জানালেন। দৌড়ে গেলাম এ্যাপোলো হাসপাতালে, তিনি পৌঁছানোর পর বহু অনুরাগী ও গুণগ্রাহী সেখানে উপস্থিত। ভর্তি করা হলো রবিদাকে, ডাক্তারদের চেষ্টা চললো সর্বান্তকরণে। সেখানে যতদিন ছিলেন, আমি আর স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, আমাদের প্রিয় মোবাশ্বেরভাই, দুই-তিনদিন পরপর যেতাম রবিদার খোঁজ নিতে, একনজর দেখতে। যেতাম আইসিইউতে বিশেষ অনুমতিতে দূর থেকে একনজর

 দেখার জন্য। কত প্রাণান্তকর চেষ্টা ছিল আমাদের। সে-লড়াইতে তিনি কিন্তু জিতে গিয়েছিলেন।

এ্যাপোলো হাসপাতালে সারাশরীরে যন্ত্র লাগানো রবিদা সম্পর্কে ডাক্তারদের বক্তব্য ছিল – সেরে ওঠা কঠিন, যদি ওঠেন তবুও স্বাভাবিক জীবনযাপন আর হবে না তাঁর। কিন্তু কোনো এক বিকেলে গিয়ে দেখি আইসিইউ থেকে এক ধাপ নিচে তাঁকে আনা হয়েছে, তিনি বিছানায় হেলান দিয়ে বসে আছেন এবং একজন তাঁর দাড়ি কেটে দিচ্ছেন। আমাকে দেখে একটি হাসি দিলেন, ওই একটি পরিচিত হাসি বুঝিয়ে দিলো, রবিদা আবার আমাদের মাঝে ফিরবেন এবং তার পরের অধ্যায় আমরা জানি। তিনি শুধু ফেরেননি, বরং স্থাপত্য এবং 888sport live football অঙ্গন দাপিয়ে বেরিয়েছেন। সে-কারণে বিএসএমএমইউর কেবিনে সেদিন মনে হয়েছিল, তিনি ফিরবেন। তাঁর চিন্তাশক্তি তখনো প্রখর। ওই ত্রিশ মিনিটে তিনি স্থপতিদের কথা বললেন, ইন্স্টিটিউটের কথা বললেন, আর্কএশিয়ার কথা বললেন; কিন্তু তখনো জানি না তাঁর শরীরে এক ফিরে-না-আসা রোগের আক্রমণ, সেখান থেকে ফিরে আসা কষ্টের এবং আমাদের রেখে কোনো এক অজানা পথে যাত্রার প্রস্তুতি চলছে।

২৫শে নভেম্বর সন্ধ্যায় চিন্তা ছিল পরদিন আবার তাঁর অবস্থা দেখতে যাব; কিন্তু ২৬শে নভেম্বর সকালে ফোন এলো সতীর্থ ও বন্ধু স্থপতি ড. আবু সাঈদের কাছ থেকে। এতো সকালের ফোন খুশির চেয়ে যে বিপদ ডাকে তা খুব সত্যি। ভয়ে ভয়ে ফোন ধরতে সাইদ জানাল, রবিদা আর নেই। দিলুভাই আর মোবাশ্বেরভাইকে নিয়ে সোজা দৌড় দিলাম বিএসএমএমইউর দিকে। আমরা পৌঁছানোর একটু পরে সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর এলেন, এলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। তারপরে ক্রমান্বয়ে ট্রাস্টি, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও ভক্তদের ভিড় বাড়ল। তাঁরা রবিদার প্রয়াণবিষয়ক কার্যক্রমের প্রোগ্রাম করছেন, কারণ রবিদার স্থপতি পরিচয়ের চেয়ে অন্য পরিচয়ে যে তিনি সকলের একান্ত আপন। আমরা জানালাম, আমাদের প্রাঙ্গণে, বাস্থই প্রাঙ্গণে, তাঁকে আনব। সিদ্ধান্ত হলো, চিরশয়ানের পূর্বে তাঁকে তাঁর প্রিয় বাস্থই প্রাঙ্গণে আনা হবে। সেখান থেকে বাসায় নিয়ে এলাম রবিদাকে। বহুজন শেষ দেখা দেখতে এলেন। দুপুরে তাঁর বাসায় প্রধানমন্ত্রী এলেন, তাঁর আগমনী বার্তা শুনে আরো বহুজন এলেন, কে কী করেছেন তা জানালেন সেখানে; কিন্তু তাঁর ভাইয়ের বক্তব্যে আমরা জানি, রবিদার শেষ সময়কালটা যথাযথভাবে সেবা না পাওয়ার সময়কাল, খানিকটা অবহেলার সময়কাল। প্রথম জীবনের সেই কষ্ট, যুদ্ধ এবং না তার শেষবেলাটাকেও কীভাবে জানি আবৃত করে রেখেছিল।

আট

শেষ প্রহরে রবিদার দাফন হলো মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। আমি, মোবাশ্বেরভাই আর দিলুভাই ওখানে, সঙ্গে আরো বহু ক্ষেত্রের বহুজন। রবিদার শেষ শয়নকক্ষে এক মুঠো মাটি দিয়ে প্রার্থনাশেষে দাঁড়িয়ে দেখি একটু দূরে দুই বিষণ্ন মুখ, তাঁর পথচলার সহযাত্রী স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন আর স্থপতি কাজী নুরুল করিম দিলু। হয়তোবা একসঙ্গে পথচলা ও এক কক্ষে সময় কাটানো দীর্ঘ সময়ের 888sport sign up bonusগুলো চারণ করছিলেন তাঁরা তখন। মানুষের এক জীবনের 888sport sign up bonus তো কম নয়, চারণ করতে করতেও তো জীবন অন্য জীবনে প্রবাহিত হয়। একসময় সন্ধ্যা হয়, আমরা জাগতিক হওয়ার চেষ্টায় রত হই। প্রিয়জনকে সাড়ে তিন হাত নতুন এক শয়নকক্ষে রেখে সন্ধ্যার শুরুতে আমরা নিজেদের ডেরায় ফেরার পথ ধরি। একজন বন্ধু, বড়ভাই, শিক্ষক, ভালোবাসার জন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সকল সময়ে প্রতিবাদী ‘না’ চরিত্রটি আমাদের জাগতিক অধ্যায় থেকে হারিয়ে যায়।

একজন 888sport apk download apk latest versionর মিয়াভাই, প্রতিবাদী রবিউল, ভালোবাসার রবিদা তাঁর কষ্টের ও সংগ্রামের জীবনকে 888sport app download apk, গল্পে ও স্থাপত্যে প্রতিফলিত করে আপন সৃষ্টিতে উদ্ভাসিত হয়ে ২০১৯ সালের ২৬শে নভেম্বর প্রত্যুষে অধরা হয়ে গেলেন আমাদের সবার থেকে। দিনের শেষ প্রহরে নতুন

এক পথচলার অধ্যায় শুরু হলো রবিদার জীবনে। মাটি থেকে তৈরি একজন মানুষকে মাটির ঘরে অন্তিম শয়ানে রেখে চলে এলাম। হারিয়ে ফেললাম একজন স্থপতি, কবি ও অনন্য মানুষ রবিউল হুসাইনকে।