বিশ শতকের সূচনালগ্নে রবীন্দ্রনাথ সম্পাদনভার নিয়েছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র-প্রতিষ্ঠিত (নবপর্যায়ে) বঙ্গদর্শনের (১৯০১-০৪)। চট্টগ্রামের কেদারনাথ দাশগুপ্তের (১৮৭৮-১৯৪২) উদ্যোগে প্রকাশিত মাসিক ভাণ্ডার পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব কবির ওপর পড়ে ১৯০৫-এ।
ভাণ্ডারের প্রথম 888sport free bet রবীন্দ্রনাথের সম্পাদনায় ১৯০৫-এর এপ্রিলে (বৈশাখ ১৩১২) প্রকাশ পায়। পত্রিকায় চারটি বিভাগ ছিল : 888sport live, প্রস্তাব, প্রশ্নোত্তর ও সঞ্চয়। প্রশ্নোত্তর বিভাগের প্রশ্ন তৈরি করতেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, সম্পাদক নিজে। তবে রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী প্রমুখকেও রবীন্দ্রনাথ ভাণ্ডারের জন্য প্রস্তাব, 888sport live ও প্রশ্ন তৈরির অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কবি ভাণ্ডারকে একটি ‘কেজো কাগজ’ করতে চান বলে ত্রিবেদীকে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেন।
পত্রিকার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রকাশক কেদারনাথ দাশগুপ্ত লেখেন : ‘দেশে মাঝে মাঝে যে সকল কথা উঠিয়া পড়ে সে-সম্বন্ধে নানা বিচক্ষণ লোকের সংক্ষিপ্ত মত সংগ্রহ করিয়া ভাণ্ডারে একত্র রক্ষা করা হইবে।’
পত্রিকার প্রথম 888sport free betয় কবির সম্পাদকীয় বক্তব্য লক্ষযোগ্য : ‘দেশের যে-সকল লোক নানাবিষয়ে নানারকম ভাবনাচিন্তা করিয়া থাকেন, তাঁহারা কী ভাবিতেছেন জানিবার যদি সুযোগ পাওয়া যায়, তবে মনে ঔৎসুক্য না জন্মিয়া থাকিতে পারে না।… প্রকাশকের মুখে যখন জানিতে পারিলাম, আমাদের এই কাগজটাতে একটা মানসিক সামাজিকতা স্থাপনের চেষ্টা হইতেছে, দেশের পাঁচজন ভাবুককে একটা বৈঠকে আমন্ত্রণের উদ্যোগ হইতেছে, তখন কৌতূহলে আমার মন আকৃষ্ট হইল।’
১৯০৫ সালে রবীন্দ্রনাথ যখন খান বাহাদুর সিরাজুল ইসলামকে ভাণ্ডারে প্রকাশের জন্য – হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে কী উপায়ে সদ্ভাব বৃদ্ধি হইতে পারে – এই প্রশ্নের উত্তর দিতে অনুরোধ করেন, সে-সময়ে তিনি নিজে বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাব উপলক্ষে কলকাতায় টাউন হলে এক সভায় ‘অবস্থা ও ব্যবস্থা’ 888sport live পাঠ করেন; আর ভাণ্ডারে প্রকাশ করেন ‘বিলাসের ফাঁস’ (মাঘ ১৩১২)। এই 888sport liveে কবি মুসলমান আমলে হিন্দু সমাজের কোনো ক্ষতি না হওয়ার কারণ শনাক্ত করেন : ‘সে-আমলে ভারতবর্ষে আর্থিক পরিবর্তন হয় নাই। ভারতবর্ষের টাকা ভারতবর্ষেই থাকিত, বাহিরের দিকে তাহার টান না পড়াতে আমাদের অন্নের সচ্ছলতা ছিল।’ টাউন হলে পঠিত ‘অবস্থা ও ব্যবস্থা’য় রবীন্দ্রনাথ বলেন : ‘… আমরা হিন্দু-মুসলমান, ধনী-দরিদ্র, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, স্ত্রীলোক ও পুরুষ সকলেই বাঙালি বলিয়া যে এক বাংলার বেদনা অনুভব করিতে পারিয়াছি।… এখন হইতে আমরা হিন্দু ও মুসলমান, শহরবাসী ও পল্লীবাসী, পূর্ব ও পশ্চিম, পরস্পরের দৃঢ়বদ্ধ করতলের বন্ধন প্রতিক্ষণে অনুভব করিতে থাকিব।’ (বঙ্গদর্শন, আশ্বিন ১৩১২)। ওই 888sport liveে কবির অভিমত : ‘মিলন কী করিয়া ঘটিতে পারে? একত্রে মিলিয়া কাজ করিলেই মিলন ঘটে, তাহা ছাড়া যথার্থ মিলনের আর কোনো উপায় নাই।’
বঙ্গভঙ্গ, স্বদেশী আন্দোলন, সমকালীন হিন্দু-মুসলমান সমস্যা এবং উভয় সম্প্রদায়ের সম্প্রীতি ও মিলনের উপায় সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ উনিশ শতকের শেষ দশক থেকেই কলম ধরেছিলেন। ১২৯৮ থেকে ১৩১৮ পর্যন্ত দুই দশকে রবীন্দ্রনাথের লেখা কুড়িটি 888sport liveে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্কে তাঁর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার পরিচয় আছে। এ-বিষয়ে তাঁর নিজের চিন্তাভাবনার প্রকাশ ছাড়াও কবি সেকালের কয়েকজন মুসলমান ব্যক্তিত্ব ও লেখককে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক বিষয়ে লিখতে ও মতামত প্রকাশে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করেন। কবির অনুরোধে উপযুক্ত সাড়া দিয়ে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য ও কলকাতা মিউনিসিপ্যালিটির কমিশনার, কলকাতা হাইকোর্টের উকিল খান বাহাদুর সিরাজুল ইসলাম রবীন্দ্র-উত্থাপিত প্রশ্নের যে নাতিদীর্ঘ লিখিত জবাব দিয়েছিলেন, তার পুরো বয়ান এখানে সংকলিত হলো।
এই প্রশ্নোত্তর ছাড়াও ভাণ্ডারে হিন্দু-মুসলমানের জটিল ও বিবদমান সম্পর্ক, ওই পরিস্থিতিতে প্রাদেশিক (কংগ্রেস) সমিতির কর্তব্য ও কার্যাবলি প্রভৃতি সমকালের নানা সমস্যা-বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে লিখিত প্রশ্ন পাঠিয়ে প্রাপ্ত উত্তর প্রকাশ করেন। ভাণ্ডারের এমন একটি প্রশ্ন ছিল : ‘বঙ্গীয় প্রাদেশিক সমিতির বক্তব্য ও কার্যাবলি সম্বন্ধে কোনো সংস্কারের প্রয়োজন হইয়াছে কি না?’ এই প্রশ্নের জবাবে শ্রীযুক্ত মৌলবী মহম্মদ ইমদাদুদ্দিন সাহেব বি.এল. (এঁর পরিচয় উদ্ধার করতে পারিনি) সংক্ষিপ্ত মত প্রকাশ করেন : ‘মুসলমান সম্প্রদায় শিক্ষা-বিষয়ে হিন্দুগণের অপেক্ষা অনেক পশ্চাতে রহিয়াছে। তাহাদের অবস্থা অতি হীন। এ বিষয় প্রাদেশিক সমিতি উপায় নির্ধারণ করিতে যত্নবান হন, এই আমার মত।’ (ভাণ্ডার, বর্ষ ২ 888sport free bet ১, বৈশাখ ১৩১৩)।
একশ বছর পরেও, আমাদের দেশে ও সমাজে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে খান বাহাদুর সিরাজুল ইসলামের অভিমত প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি। 888sport app কলেজের প্রথম মুসলমান স্নাতক (১৮৬৭) খান বাহাদুর সাহেবের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরে তাঁর ওই লুপ্ত রচনাটি পুনরুদ্ধার করছি।
তিনি কুমিল্লার (তৎকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার) পেরাকান্দি গ্রামে ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কাজী মোহাম্মদ কাজেম। কাজী সাহেব ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা – আবগারি দারোগা।
সিরাজুল ইসলাম ১৮৭৩-এ 888sport app কলেজ থেকে বি. এল. পাশ করে কলকাতা হাইকোর্টে আইনব্যবসা শুরু করেন। মুসলমান সমাজে শিক্ষা-বিস্তারের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল। ১৮৯৩ ও ১৯০২-এ তিনি দুবার বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৮৯৫-এ কলকাতায় পৌরকমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি সেন্ট্রাল মহামেডান অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী সম্পাদক ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলমান শিক্ষা সমিতির সদস্য ছিলেন; ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া হিতসাধিনী সভা’র সভাপতির পদ অলংকৃত করেন। বর্ধমানের আবুল কাসেম ও মৌলবী মুজিবর রহমানের দি মুসলমান পত্রিকা-প্রকাশেও তিনি সহায় ছিলেন।
ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক গঠিত বিভিন্ন কমিটির এবং নানা বেসরকারি সংগঠনের সঙ্গেও খান বাহাদুর সাহেব জড়িত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম বিভাগকে বাংলা প্রদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে আসামের অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে জোরালো ভূমিকা পালন করেন।
(খান বাহাদুর সিরাজুল ইসলামের পরিচিতির তথ্য সংকলিত হয়েছে ডক্টর ওয়াকিল আহমদের উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমানের চিন্তা-চেতনা [প্রথম খণ্ড, 888sport app, ১৯৮৩] থেকে ।
নিচে ভাণ্ডার থেকে তাঁর ‘প্রশ্নোত্তর’ সংকলিত হলো :
প্রশ্নোত্তর।
প্রশ্ন
হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে কী উপায়ে সদ্ভাব বৃদ্ধি হইতে পারে?
উত্তর
শ্রীযুক্ত মৌলবী সিরাজুল ইসলাম খাঁ বাহাদুর : ভারত আমাদের জন্মভূমি। যাহাতে জননী জন্মভূমির হিত সাধিত হয়, তাহা করা ভারত-সন্তানগণের পক্ষে সর্ব্বতোভাবে কর্ত্তব্য। ভারতবর্ষে যত প্রকার ধর্ম্মসম্প্রদায় বিদ্যমান আছে, তন্মধ্যে হিন্দু ও মুসলমান এই দুই সম্প্রদায়ই শ্রেষ্ঠ। এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে আন্তরিক একতা ও সহানুভূতি হইলেই এই হতভাগিনী ভারতজননীর হিত সাধিত হইবে এবং তাহার সন্তানগণের সর্ব্ব প্রকার মঙ্গল উন্নতি হইবে, ইহাতে কোন সন্দেহ নাই।
পূর্ব্বকালে হিন্দু-মুসলমানগণের মধ্যে পরস্পর যেরূপ ঘনিষ্ঠতা ও সমতা ছিল, এখন সর্ব্বত্রই তাহার অভাব পরিলক্ষিত হইতেছে। সম্রাট আকবরের রাজত্বকালের ইতিহাস পাঠ করিলে জানা যায়, তিনি কী হিন্দু, কী মুসলমান সকলকেই পুত্রের ন্যায় সমভাবে পালন করিতেন। যাহাতে হিন্দু-মুসলমানের বৈষম্য দূরীকৃত হয়, এবং তাহারা পরস্পর একতাশৃঙ্খলে আকৃষ্ট হয়, তাহারই তিনি সূত্রপাত করিয়াছিলেন। তিনি হিন্দু ও মুসলমানদিগের মধ্যে ধর্ম্মসম্বন্ধে বিভিন্নতা অনেক পরিমাণে লাঘব করিতে কৃতকার্য্য হইয়াছিলেন। তাঁহার সময়ে ভারতের উন্নতির জন্য হিন্দু-মুসলমানগণ একত্রে চেষ্টা করিতে কুণ্ঠিত হন নাই। কিন্তু আক্ষেপের বিষয় এই যে, এখন সর্ব্বত্রই তাহার বিপরীত ভাব দৃষ্ট হইতেছে। এখন হিন্দু ও মুসলমানদিগের মধ্যে ঘোর বিবাদ-বিসম্বাদ ও মনের মালিন্য পরিলক্ষিত হইতেছে। ভারতের উন্নতি-অবনতি এই দুই সম্প্রদায়ের উপর নির্ভর করিতেছে। যদি তাঁহাদের মধ্যে পূর্ব্বের ন্যায় একতা ও সহানুভূতি হয়, তবেই ভারতমাতার উন্নতির আশা করা যায়, নচেৎ অবনতি অবশ্যম্ভাবী।
পূর্ব্বকালে হিন্দু-মুসলমানগণের মধ্যে সদ্ভাব ছিল, এখন তাহার অভাব কীজন্য লক্ষিত হইতেছে, আদৌ ইহার কারণ নির্দ্দেশ করা আমাদের পক্ষে কর্ত্তব্য। যদিচ, মুসলমান রাজত্বকালে সময় সময় স্থানবিশেষে কোন অনিবার্য্য অত্যাচার হইত, কিন্তু তথাপি সাধারণতঃ মুসলমান সম্রাটের উপর হিন্দু জাতির এত ভক্তি ছিল যে, দিল্লীর সম্রাটকে ‘দিল্লীশ্বরো বা জগদীশ্বরো’ বলিয়া ব্যাখ্যা করিতেন। সকল ভদ্র বংশীয় হিন্দুগণের মধ্যে পার্শী ভাষা শিক্ষা প্রচলিত ছিল, মুসলমানদের 888sport live football ও তাহাদের পূর্বতন ইতিহাস ও তাহাদের মহাপুরুষদের জীবনচরিত পাঠ করিয়া মুসলমানদের প্রতি হিন্দুদিগের 888sport apk download apk latest version ও আন্তরিক আকর্ষণ হইত। এমনকি, মুসলমানদের পরিচ্ছদ ও আচার-ব্যবহারের নিয়মাদিও হিন্দুগণ অধিকাংশ অনুকরণ করিতেন।
মুসলমানগণও হিন্দুদিগকে পরাজিত জাতি বলিয়া ঘৃণার চক্ষে দৃষ্টি করিতেন না। একের সুখে, দুঃখে ও উৎসবে অন্যে যোগদান করিতেন। এখনও পাড়াগাঁয়ে তাহার লক্ষণ কিছু কিছু লক্ষিত হয়। হিন্দুগণের পূজা ও বিবাহেতে মুসলমানগণ ও মুসলমানগণের ঐসকল উৎসবে হিন্দুগণ আত্মীয়ভাবে যোগদান করিয়া থাকেন।
কোন্ সময় হইতে এবং কি কি কারণবশতঃ এই সম্ভাবের পরিবর্ত্তন আরম্ভ হইয়াছে, কিঞ্চিৎ চিন্তা করিলেই হিন্দু ভ্রাতৃগণ তাহার মূলকারণ নির্দ্দিষ্ট করিতে সক্ষম হইবেন। কোন রোগের চিকিৎসা করিতে হইলে, কি কারণবশত ঐ রোগের উদ্ভব হইয়াছে, আদৌ তাহার নিরাকরণ আবশ্যক। অধিকাংশ ইংরেজি ইতিহাসে মুসলমান রাজত্বের অত্যাচার ও মিশ888sport promo codeদের লিখিত ধর্ম্মপুস্তকসমূহে মুসলমান চরিত্রের যে বিকৃতি বর্ণনা করা হইয়াছে, ঐ সমস্ত পাঠে হিন্দু যুবকদের মনে মুসলমান জাতির বিরুদ্ধে প্রথমত বিকার উপস্থিত হয়, তৎপরে কোন কোন বাংলা পুস্তকেও মুসলমান চরিত্রকে যতদূর হইতে পারে বিকৃত করা হইয়াছে। এমনকি, এখন হিন্দুজাতির নিকট মুসলমান সম্প্রদায় হেয় ও ঘৃণাস্পদ হইয়া দাঁড়াইয়াছে। মুসলমানদের ভাষা, মুসলমানদের 888sport live football, তাহাদের আচার-ব্যবহার ও পরিচ্ছদ ইত্যাদি একেবারেই ত্যাগ করা হইয়াছে। তাহাদের সহিত সংসর্গ রাখাও কোন কোন হিন্দু দূষণীয় বলিয়া মনে করেন। এমন কি, কোন কোন হিন্দুদের মধ্যে ‘ভদ্রলোক’ শব্দে মুসলমান পরিগণিত হয় না।
এদিকে সকল অবস্থা দেখিয়া মুসলমানগণ হিন্দু সম্প্রদায়ের নিকট অগ্রসর হইতে সাহসী হন না। চতুর্দ্দিকেই মুসলমানদের অবনতি, তাহারা অর্থহীন ও বিদ্যাহীন। পূর্ব্বকালে যেসব ধনাঢ্য ও সম্পত্তিশালী বংশ ছিল তাহারাও ক্রমে হ্রাস ও বিলুপ্ত হইয়াছে। সুতরাং তাহারা হিন্দুভ্রাতৃগণের সহিত সমভাবে চলিতে পারে, কি কোন কার্য্যে সমভাবে যোগদান করে, ইহা অসম্ভব। হিন্দুদের সহানুভূতি ও মমতাভিন্ন মুসলমানদের একা কিছু করা সম্ভবপর নহে। যদি হিন্দুগণ মুসলমানদিগকে আপন কনিষ্ঠ ভ্রাতাজ্ঞানে তাহাদের প্রতি সাহায্যের ও সহানুভূতির হস্ত প্রসার করেন, তাহা হইলেই মুসলমানদের একমাত্র উদ্ধারের উপায় এবং উভয় সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্য সাধিত হইতে পারে।
আমার বিবেচনায় কয়েকটি বিষয়ের প্রতি উভয় সম্প্রদায়ের বিশেষ লক্ষ্য রাখিতে হইবে।
১. হিন্দু ও মুসলমান একজাতি (Nation)।
২. হিন্দু ও মুসলমান স্বার্থ (Interest) এক (Idenical)।
৩. উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে পার্থক্য ও মনোমালিন্য যাহাতে দূরীকৃত হয়।
৪. উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে যাতে সহানুভূতি থাকে।
আমার বিবেচনায় উভয় সম্প্রদায়ের নেতাগণ কয়েকটি বিষয় চেষ্টা করিলে আমাদের উদ্দেশ্যসাধনের পথ পরিষ্কার হইতে পারে।
১. সময় সময় (Party) পার্টি দেওয়া, এবং তাহাতে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে যাহারা চিন্তাশীল ও স্বদেশ-হিতৈষী, তাহারা একত্রিত হইয়া যাহাতে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে একতা ও সহানুভূতি হইতে পারে, তদ্বিষয়ে আলোচনা, চিন্তা ও উপায় উদ্ভাবন করা।
২. ভাষা শিক্ষা, অর্থাৎ হিন্দু যুবকদিগকে মুসলমানদের 888sport live football ও ইতিহাস ও তাহাদের মহাপুরুষদের জীবনচরিত শিক্ষা দেওয়া এবং মুসলমান যুবকদিগকেও বাংলাভাষা শিক্ষা করা এবং হিন্দুদিগের মহাপুরুষদের জীবনী পাঠ করা।
৩. হিন্দুদের জাতীয় উৎসবে মুসলমানদের যোগদান ও মুসলমানদের জাতীয় উৎসবে হিন্দুদের যোগদান। দুর্ব্বলদের (Minority-i) স্বার্থের (Interest -এর) প্রতি সবলের (Majorityi) দৃষ্টি রাখা।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.