রহমান, ফাদার অব বেঙ্গল : ইতিহাসের এক উজ্জ্বল সাক্ষী

দেশ স্বাধীন হয়েছে মাত্রই। বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছেন স্বদেশে। জনগণ ‘স্বাধীনতা’ নামের সেই কাঙ্ক্ষিত বস্তুটির দেখা পেয়ে গেছে; কিন্তু আনন্দের সঙ্গে আছে ব্যথা, দুঃখ, অনভিজ্ঞতা, সিদ্ধান্তহীনতা। সেই আপাত-অস্থির সময়ে জাতির পিতা কী ভাবছেন? কীভাবে দেশটা এগিয়ে নিয়ে যাবেন তিনি? শুধু তাঁর স্বজাতিই নয়, সারা পৃথিবী তাকিয়ে আছে তাঁর দিকে। আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত সাংবাদিকরা আসছেন তাঁর সঙ্গে কথা বলতে। live chat 888sportকাররা আসছেন লেন্সে এই নতুন সূর্যোদয়ের দৃশ্য ধারণ করতে। নাগিসা ওশিমা, এই জাপানি চিত্রপরিচালক, এলেন 888sport appsে। কথা বললেন জাতির পিতার সঙ্গে। জন্ম নিল এক অবি888sport app download for androidীয় প্রামাণ্য live chat 888sport – রহমান, ফাদার অব বেঙ্গল (১৯৭২)।

রহমান, ফাদার অব বেঙ্গল ছবিটি দেখলে তিনটি জিনিস বারবার পাবেন। সাধারণ মানুষ, নদী আর জাতির পিতা।তাদের একসঙ্গে জড়িয়ে রেখেছে মাটির গানের সুর। অর্থাৎ আমাদের 888sport appsের চিরচেনা রূপটাই তুলে এনেছেন নাগিসা। একেবারে প্রথম দৃশ্যে দেখতে পাবেন সদরঘাট। দক্ষিণবঙ্গে যাওয়ার জন্য বসে আছে লোকজন। খুব সাধারণ কিছু লোক। একজন বসে আছেন কলার কাঁদি নিয়ে। আরো আছে ফেরিওয়ালা। লুঙ্গিপরা লোকজন সারল্যমাখা দৃষ্টিতে চেয়ে আছেন ক্যামেরার দিকে। পরিচালক আমাদের নিয়ে যাবেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। তাঁর সঙ্গে লঞ্চে চেপে আমরাও যাত্রা শুরু করি।

‘ও নদী রে’ বলে নেপথ্যে সুর ভেসে আসে, আর আমরা অতিক্রম করতে থাকি একটার পর একটা নৌকা। যাত্রীবাহী ডিঙি নৌকা, গুণটানা নৌকা, মালবাহী নৌকা, তার ছেঁড়া পাল। এগুলোর সঙ্গে সঙ্গে সেই সময়ের একটি অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্র আপনি পাবেন। 888sport app  থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত ডেকে যেতে খরচ পড়ত চার টাকা। সেই সময়ের হিসাবে এক টাকা ছিল চল্লিশ জাপানি ইয়েনের সমমূল্যের। আজ দুই হাজার উনিশে যেটা দাঁড়িয়েছে এক দশমিক তিন ইয়েনে। আমাদের এবং জাপানের সাতচল্লিশ বছরের অর্থনৈতিক পরিবর্তনের একটি রূপ কি দেখতে পাচ্ছেন? তবে ভাড়া চার টাকা থেকে কিছু বোঝা যাবে না। একজন দিনমজুরের সারাদিনের মজুরি ছিল তিন টাকা। বর্তমান সময়ে সারাদিনের মজুরি মোটামুটি স্থানভেদে পাঁচশো থেকে আটশো টাকা ধরলে আপনি ভাবতে পারেন, সর্বনিম্ন প্রায় এক হাজার টাকা খরচ করে আপনি 888sport app থেকে গোপালগঞ্জ যেতে পারবেন।

প্রামাণ্যচিত্রটির মূল আকর্ষণ বঙ্গবন্ধুর খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যবাহী সাক্ষাৎকার। নির্বাচিত অংশটুকুই আমরা দেখতে পেয়েছি। পাঠকের উদ্দেশে এখানে তুলে ধরছি।

প্রশ্ন : একটি ছোট ছেলে সবসময় আপনাকে ঘেঁষে থাকে। এমনকি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময়ও ও আপনার পিছু ছাড়ে না। ব্যাপারটি আমাদের বেশ লেগেছে। আচ্ছা, নাম কী ওর? কত বয়স হলো ছেলেটার?

বঙ্গবন্ধু : ও রাসেল, শেখ রাসেল। এবার সাতে পড়েছে।

প্রশ্ন : ও তো আপনার পিছু ছাড়ে না দেখছি?

বঙ্গবন্ধু : ও আমাকে সঙ্গ দেয়। প্রায়ই আমার সাথে থাকতে ভালোবাসে, তবে সবসময় নয়। দাফতরিক কাজের সময় অবশ্য থাকে না। অন্য সময় থাকে, বিভিন্ন জায়গাতে যায় আমার সাথে। এর একটা কারণ আছে। ওর বেড়ে ওঠার সময়টা আমার কেটেছে জেলে। বারবার জেলে যেতে হয়েছে। ওর যখন পনেরো মাস বয়স, জেল হয়ে গেল আমার। তিন বছরের জন্য। বের হওয়ার পর আবারো জেলে যাই দেড় বছরের জন্য। ও আমার সাথে সাথে থাকে কারণ ওর মধ্যে ভয় কাজ করে। এই বুঝি বাবা আবার জেলে চলে যাবে। বাবাকে চোখের আড়াল করতে চায় না বলেই এই কাছে থাকা।

প্রশ্ন : বড় হয়ে ও কী হবে বলে আপনি মনে করেন?

বঙ্গবন্ধু : ও তো বড় হয়ে সেনাবাহিনীতে যেতে চায়। ভয়ংকর স্বপ্ন, না! হয়তো মুক্তিসেনাদের সংগ্রাম, লড়াই থেকে এই আগ্রহ জন্মেছে।

প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনি পশ্চিম পাকিস্তানে বন্দি। আপনার পরিবারকে রক্ষা করেছিলেন কীভাবে?

বঙ্গবন্ধু : এক মাস ওরা লুকিয়ে ছিল। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। এরপর আমার পরিবারকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রশ্ন : আপনি একবার বলেছিলেন, আপনার পিতৃভূমি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। যুদ্ধের সাথে এর কি কোনো যোগসূত্র থাকতে পারে?

বঙ্গবন্ধু : ফরিদপুর জেলার (তৎকালীন) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার সেই বাড়িতে আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা। যুদ্ধের সময় আমার নব্বই বছরের বৃদ্ধ বাবা, আশি বছরের বৃদ্ধ মা সেখানেই ছিলেন। পাকবাহিনী তাঁদের টেনে বের করে দেয়। তাঁদের চোখের সামনে ছয়জনকে হত্যা করে। আর বাড়িটি, আমার জন্মের চিহ্ন যেটা, পুড়িয়ে দেয়।

প্রশ্ন : ছাত্রাবস্থায় আপনি রাজনীতির সাথে জড়িয়ে গিয়েছিলেন?

বঙ্গবন্ধু : সময়টাই ছিল তখন উত্তাল। ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে চলছে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন। আর আমাদের 888sport apps, এই 888sport app, এটা তো আন্দোলনের মধ্যমণি। আমরা আন্দোলন করেই অভ্যস্ত ছিলাম। কয়েকটি তথাকথিত ‘সন্ত্রাসী’ (বঙ্গবন্ধু এই শব্দটিই ব্যবহার করেছিলেন) আক্রমণ তো খ্যাতিই পেয়েছিল। আমরা তখন তরুণ প্রজন্ম। ব্রিটিশের কবল থেকে দেশকে স্বাধীন করার চিন্তায় আমরা ব্যাকুল। রাজনৈতিক তৎপরতা ছিল তাই খুব স্বাভাবিক একটি ব্যাপার।

প্রশ্ন : সেই সময়টাতে আপনার পড়ালেখা ছিল কী নিয়ে?

বঙ্গবন্ধু : দেশে রাজনীতি নিয়ে যে বই-ই পেয়েছি, পড়েছি। অনেক বই ছিল নিষিদ্ধ; কিন্তু যেভাবেই হোক জোগাড় করেছি। ফরাসি বিপ্লবের কথা জেনেছি, মার্কস পড়েছি, মধ্যপ্রাচ্যের লড়াই, আমেরিকার স্বাধীনতার ইতিহাস জেনেছি। আরো কত বই-ই তো পড়েছি।

প্রশ্ন : আপনার বিয়ে তো খুব কম বয়সেই হয়েছিল। পারিবারিকভাবেই সব ঠিক হয়েছিল মনে হয়?

বঙ্গবন্ধু : আমার স্ত্রী ছিল আমার চাচার মেয়ে। আমার বাবা আর আমার শ্বশুর ছিলেন আবার চাচাতো ভাই। সেই অর্থে পরিবারের মধ্যেই আমাদের বিয়ে হয়েছিল। আমার স্ত্রী আড়াই বছর বয়সে বাবাকে, পাঁচ বছর বয়সে তার মাকে আর সাত বছর বয়সে তার দাদাকে হারায়। আমার বাবাই তখন অভিভাবক। তিনিই আমাদের বিয়ে ঠিক করেন।

প্রশ্ন : আমরা প্রায়ই বলতে শুনি, বাঙালি জাতি নাকি একটি গর্বিত জাতি। জাতিসত্তার এই অহংকারের উৎস কোথায়?

বঙ্গবন্ধু : তোমরা জাপানিরা কি নিজেদের নিয়ে গর্বিত নও? তোমাদের নিজেদের নিয়ে এই অহংকারটা ছিল বলেই তৎকালীন (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ) মহাশক্তিধর আরেকটি দেশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলে। এটাই ছিল চরম বাস্তবতা। নিজেদের ইতিহাস জানতে বলেই বর্তমানটাতে এত আত্মবিশ্বাস ছিল তোমাদের। আমরা বাঙালিরাও আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ভাষা, ইতিহাস, আত্মত্যাগ, সুফলা মাটি, আবেগ নিয়ে ওয়াকিবহাল। গর্ব আমরা করতেই পারি। কারো কাছে আমরা কখনো মাথা নত করিনি। লড়াই না করে মাঠ ছাড়িনি। হ্যাঁ, আমাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। অনেকবারই করতে হয়েছে। দুনিয়ার বিভিন্ন শকুনির শ্যেনদৃষ্টি এই সুজলা-সুফলা ভূখণ্ডটির দিকে হামলে পড়েছে বারংবার। আমাদের দমিয়ে রাখার, হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে অনেকবার। কিন্তু আমরা ঠিকই অত্যাচারীর শিকল ভেঙে বের হয়ে এসেছি। দুইশো বছরের ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন কিন্তু এই বাংলা থেকেই দানা বেঁধেছে। সিপাহি বিদ্রোহ, তিতুমীরের লড়াই, বিভিন্ন বিখ্যাত গুপ্ত-জঙ্গি হামলা এই ভূখণ্ডেরই অবদান। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, বিদ্রোহী কবি নজরুল, রবিঠাকুর, সোহরাওয়ার্দী, ফজলুল হক এই বাংলার সন্তান। আমাদের মধুর একটি ভাষা আছে। খুব সুন্দর গান আছে। তোমরা জাপানিরা 888sport live chatের কদর করে থাকো। আমাদের গান, নৃত্য, সাংস্কৃতিক বহুমাত্রিকতা তোমাদের মুগ্ধ করবে।

প্রশ্ন : এখানে আপনাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ বা বাংলার মানুষের বন্ধু হিসেবে সম্বোধন করা হয়। তবে আমার মনে হয় এই সম্বোধনটির চেয়ে ‘জাতির জনক’ উপাধিটিই আপনার জন্য বেশি উপযোগী এবং মানানসই। আপনার কী মনে হয়?

বঙ্গবন্ধু : দেখো, স্বাধিকার আন্দোলনের সময়টা মনে করো। আমরা যেনতেনভাবে পাকিস্তানের সাথে যুক্ত আছি। আমাদের ভাষা, কৃষ্টি, স্বাতন্ত্র্যের সাথে জড়িয়ে থাকা ‘বাংলা’ নামটা ওরা মুছে দিতে চাচ্ছে। বাংলা নামের ভূখ-টাকে বলছে পূর্ব পাকিস্তান। এটা আমাদের অস্তিত্বের ওপর আঘাত। বাঙালি জাতিসত্তার আন্দোলনের এক পর্যায়ে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আমাকে বন্দি করা হলো। এতে কিন্তু আন্দোলন আরো বেগবান হয়। জেল থেকে বের হওয়ার পর আমাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেওয়া হলো। এর তাৎপর্য অনেক গভীর। এরপর যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো তখন পরিস্থিতি আরো কঠিন হলো। আমার নেতৃত্বে বাঙালি জাতি তাদের স্বাধীনতার লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল। আমি যেমন তাদের ভালোবাসি, তারাও বাসে আমাকে। সেই ভালোবাসা থেকে নতুন জন্ম নেওয়া একটা জাতি আমাকে ‘জনকের’ আসনে সম্মান দিলো। দুইটি উপাধিই, আমার জনগণ যেভাবে আমাকে সম্বোধন করে, আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন : যুদ্ধের পর এখন দেশ স্বাধীন। এখন কোনো শত্রুও নেই। নতুন দেশটির নতুন পরিস্থিতিতে যত রকমের সমস্যায় পড়ার কথা, তেমন আশঙ্কা থেকেই যায়। কিছু লোক সমালোচনা করার জন্য মুখিয়ে থাকবেই। অতীতের চেয়ে ভবিষ্যৎ আরো কঠিন হওয়ার ভয় কি আপনার মধ্যে কাজ করে না?

বঙ্গবন্ধু : (ধারাভাষ্যকারের জবানিতে) আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। পরমতসহিষ্ণুতার নামই গণতন্ত্র। যে-কোনো সমালোচনা আমি সাদরেই গ্রহণ করব এবং মূল্যায়ন করব।

বাহাত্তরের ডিসেম্বর। নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শপথ নিচ্ছেন। বিভিন্ন জনসভায় ভাষণ দিচ্ছেন। বিভিন্ন সৌধ নির্মাণের কাজ হচ্ছে। এসবই উঠে এসেছে এই ছবিতে। আরো কিছু ব্যাপার নাগিসার দৃষ্টিতে ধরা পড়েছে। সংবিধানমতে জাতির চারটি মূলস্তম্ভের একটি হচ্ছে অসাম্প্রদায়িকতা। আবার এই দেশের মানুষ লঞ্চের ছাদে নামাজ পড়ছে, বঙ্গবন্ধুর পিতা নিজ বাসায় নামাজ পড়ছেন, বঙ্গবন্ধু আর তাঁর সাথিরা হাত তুলে দোয়া করছেন। আবার জাপানি দল অনেক খুঁজেও নিষিদ্ধ অ্যালকোহল না পেয়ে চোরাই বাজার থেকে হুইস্কি কিনছে। তাঁদের জন্য এসবই ছিল অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা।

বঙ্গবন্ধু তাঁর সহধর্মিণী, দুই ছেলে (শেখ কামাল, শেখ রাসেল) আর এক মেয়েকে (শেখ রেহানা) নিয়ে নাশতা করছেন। পরিচালকের ভাষায় পৃথিবীর সবচেয়ে ছিমছাম প্রধানমন্ত্রীর প্রাতরাশ। অফিসের কাজে বের হওয়ার আগে কথা বলতে হতো দর্শনার্থীদের সঙ্গে। এত ‘আপন’ প্রধানমন্ত্রী কিন্তু পৃথিবীতেই বিরল। নতুন প্রধানমন্ত্রীর প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করা। সাড়ে সাত কোটি মুখ তাঁর দিকে তাকিয়ে। তিনি তো জাতির পিতা। পিতা কি তাঁর সন্তানের আহারের কথা ভাববেন না?

এই সাক্ষাৎকারে রাসেলের প্রসঙ্গটি আসার সময় মনে পড়ল বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকারের কথা। ‘জেলে গিয়েছি বাবাকে দেখতে। শিশু জামাল জিজ্ঞেস করছে, বুবু এই লোকটা কে। বাবা, জানালাম আমি। বুবু, তোমার বাবাকে কি আমাকে বাবা বলে ডাকতে দিবে?’

888sport app থেকে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছতে নাগিসার লেগেছিল সাতাশ ঘণ্টা (চব্বিশ ঘণ্টা জলে, তিন ঘণ্টা হেঁটে)। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ছেলেবেলার বিদ্যালয় দেখলেন, পুড়ে যাওয়া বাড়ি দেখলেন, আর একজন পিতার মনের ইচ্ছা শুনলেন। ছেলে আর নাতিদের সঙ্গে যদি বাকি জীবনটা এই গ্রামে কাটিয়ে দেওয়া যেত! আমরা ভাবতে বাধ্য হই, এই ইচ্ছা কেন পূরণ হলো না।

প্রামাণ্যচিত্রটির শেষ কয়েকটি মিনিট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ধারাভাষ্যকার উদ্বিগ্ন, নতুন দেশ চালাতে গিয়ে তো জাতির পিতার সামনে দেখা দেবে একটার পর একটা নতুন সমস্যা। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি কীভাবে এসব সামলাবেন? কালকের কথা আজ কে বলতে পারে?

বঙ্গবন্ধু তাঁর অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য। জীবনের মোট এগারোটি বছর পার করেছেন বন্দি অবস্থায়। ১৯৭২ সালে নাগিসা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তাঁর পিতার, ছেলের সঙ্গে জীবনের বাকি দিনগুলো কাটানোর স্বপ্নটা বুঝি কখনো বাস্তবের দেখা পাবে না।

কেন পেল না, সেটা জেনেই ইহলোক ত্যাগ করেছিলেন রহমান, ফাদার অব বেঙ্গলের জনক নাগিসা ওশিমা।

[পরিচালক-পরিচিতি : নাগিসা ওশিমা জন্মেছিলেন জাপানে, ৩১ মার্চ ১৯৩২। স্নাতক ডিগ্রি শেষ করে যুক্ত হন live chat 888sportের সঙ্গে। সাতাশ বছর বয়সে তাঁর পরিচালনায় মুক্তি পায় টাউন অব লাভ অ্যান্ড হোপ (১৯৫৯)। এম্পায়ার অব প্যাশন (১৯৭৮) ছবির জন্য জিতে নেন কান live chat 888sport উৎসবে সেরা পরিচালকের 888sport app download bd। পঁচিশটি পূর্ণদৈর্ঘ্য live chat 888sport এবং ত্রিশটির মতো স্বল্পদৈর্ঘ্য live chat 888sportের পরিচালক তিনি। জানুয়ারি ২০১৫-তে তাঁর প্রয়াণ ঘটে।

নাগিসা ওশিমা ১৯৭২ সালে নির্মাণ করেন প্রামাণ্যচিত্র রহমান, ফাদার অব বেঙ্গল। আটাশ মিনিট তেত্রিশ সেকেন্ডের এই ছবিতে আমরা পাই বঙ্গবন্ধুর একটি নাতিদীর্ঘ কিন্তু খুবই তাৎপর্যপূর্ণ সাক্ষাৎকার, তাঁর পরিবার, তাঁর পিতা, পিতৃভূমি, সরকারের প্রতিনিধি, জনগণ এবং নদীমাতৃক 888sport appsের একটি চিরচেনা ছবি। বঙ্গবন্ধুর কথার সূত্র ধরে আন্দোলন, আত্মত্যাগ থেকে শুরু করে ভবিষ্যতের বন্ধুর পথ পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনার ছাপও পাওয়া যাবে। আমাদের ইতিহাসের উজ্জ্বল এই সাক্ষীর কথা আমরা অনেকেই জানি না। নাগিসা ওশিমার আরো তিনটি কাজ আছে 888sport appsকে নিয়ে। জয় বাংলা (১৯৭২), লিগ্যাসি অব ব্লাড (১৯৭৩) এবং দ্য গোল্ডেন ল্যান্ড অব বেঙ্গল (১৯৭৬)। সবগুলোই প্রামাণ্যচিত্র। লক্ষণীয়, ঠিক সে-সময়ে তিনি কিন্তু বাণিজ্যিক ছবি নিয়েও সমান ব্যস্ত। এই ভূখণ্ডের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসাই টেনে এনেছে তাঁকে বারবার। তাঁকেও নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা দরকার।]