রহস্য-রোমাঞ্চ live chat 888sportদক্ষ কারিগর স্যার অ্যালফ্রেড হিচকক

১৮৯৯ সালের ১৩ আগস্ট ইংল্যান্ডের এক ক্যাথলিক পরিবারে মা-বাবার কোল আলো করে জন্মালেন অ্যালফ্রেড হিচকক। ইংল্যান্ডের অন্য প্রামেত্ম তখন ভবিষ্যৎ live chat 888sportের আরেক দিকপাল মাত্র দশ বছর বয়সেই নিষ্করুণ দারিদ্রে্যর সঙ্গে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। বাল্যকালে জেসুইট স্কুলে যেহেতু হিচককের পড়াশোনা তাই ধর্মের শিকড় চলে গিয়েছিল সত্তার গভীরে। যৌবনে দান্তের ইনফের্নোতে ঘুরতে ঘুরতে বিস্ময়ে বিমুগ্ধ হিচকক অপরাধজগতের মধ্যেই খুঁজে পেলেন তাঁর জীবনের রোমাঞ্চ, অনুভব করলেন এ-পথেই চলতে চলতে একদিন তিনি খুঁজে পাবেন ‘পারাদিজো’র গার্ডেন অব ইডেন। কারিগরিবিদ্যায় ডিগ্রি লাভ করলেও পিতার অকালমৃত্যু আর ছবি আঁকায় গভীর অনুরাগ তাঁকে টেনে নিয়ে এলো লন্ডনের স্টুডিওপাড়ায় টাইটেল নিয়ে কাজ করতে – সেটা ছিল ১৯২০ সাল – এখানেই আলমা রেডেলিস্নর সঙ্গে শুরু হয় তাঁর প্রেমপর্ব। ১৯২১-২৩ সালে তিনি বার্লিনের উলফা স্টুডিওতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজে যোগদান করেন। এখানকার প্রকাশবাদী live chat 888sport তাঁকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। এরপর দেশে ফিরে তিনি ১৯২৬ সালে দ্য লজার : অ্যা স্টোরি অব লন্ডন ফগ নামে একটি নির্বাক ছবি পরিচালনা করেন। হিচককের বিশেষ মানসিকতাই তাঁকে দ্য লজার ছবিটির গল্প বেছে নিতে সাহায্য করে। রহস্য-রোমাঞ্চ ঘিরে শহরের মানুষের কলকোলাহল এবং তার থেকে সৃষ্টি হওয়া অনিশ্চয়তা ও বিভীষিকা রসজ্ঞ মানুষকে হিচককের জাত চিনিয়ে দিলো। ছবির শুরুতেই দেখি, শীতের এক সন্ধ্যায় একটি সোনালি চুলের মেয়েকে খুন হয়ে যেতে। মৃত তরুণীটির পাশে পড়ে ছিল সিরিয়াল কিলারের

রেখে-যাওয়া ‘অ্যাভেঞ্জার’ লেখা একটি চিরকুট। এরপর ক্যামেরা চলে আসে বস্নুমসবেরির এক মধ্যবিত্ত পরিবারের কেন্দ্রে। এই পরিবারের মেয়ে ডেইজিরও সোনালি চুল। খুনের ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দা জো ডেইজিকে পেতে চায়। বুড়ো মা-বাবার সংসার চলে মেয়ের উপার্জনে। জোয়ের লালসা তারা দেখেও না-দেখার ভান করে। ঠিক এ-সময়েই একটি সুদর্শন যুবক আসে তাদের বাড়ি ভাড়া নিতে। ঘরে ঢুকেই দুটো কাজ সে করে ফেলে। প্রথমত, সপ্তাহের ভাড়ার বদলে পুরো মাসের টাকাটাই সে দিয়ে দেয়। আর ঘরের দেয়ালে টাঙানো একটি সোনালি চুলের সুন্দরীর ছবি সে সেখান থেকে সরিয়ে দিতে বলে। বুড়ো-বুড়ি তো মহাখুশি! জোয়ের মাকড়সা-প্রেমের জালে হাঁপিয়ে-ওঠা ডেইজি ধীরে ধীরে নবাগত যুবকের দিকে ঝুঁকে পড়ে। এদিকে এক সন্ধ্যায় নিচের ঘরে বসা মা-বাবা শুনতে পায় ওপরের ঘরে যুবকের অস্থির পদচারণা। এখানে আমরা পরিণত হিচককের একটা ছোঁয়া খুঁজে পাই। সুপার ইম্পোজের মাধ্যমে চোখের সামনে ফুটে ওঠে যুবকের পদচারণা। মনে হয় যুবকটি যেন কাচের মেঝের ওপর দিয়ে হেঁটে চলেছে। গভীর রাতে মুখ ঢেকে তাকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে দেখে ডেইজির মায়ের মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়। ডেইজিকে যুবকটির ঘনিষ্ঠ হতে দেখে জোয়ের মনে হিংসা বেড়েই চলে। যুবকটিকেই ‘অ্যাভেঞ্জার’ মনে করে পুলিশের দলবল নিয়ে সার্চ ওয়ারেন্ট সঙ্গে করে তাকে ধরতে আসে জো। খোঁজাখুঁজির ফলে বেরিয়ে আসে একটি রিভলবার আর প্রথম খুন হওয়া মেয়েটির একটি ছবি। ডেইজির অনেক কাকুতি-মিনতি সত্ত্বেও যুবকটিকে হাতকড়া পরিয়ে থানার দিকে নিয়ে যায় ওরা। পথে যুবকটি পুলিশের হাত ছাড়িয়ে পালায়। এরপর আমরা যুবকটিকে পার্কের মধ্যে একটি গাছের তলায় ডেইজির সঙ্গে বসে কথা বলতে দেখি। আমরা জানতে পারি, প্রথম খুন হয়ে যাওয়া মেয়েটি ওরই বোন। মৃত্যুশয্যায় শায়িত মা ওকে দিয়ে শপথ করিয়ে নিয়েছিলেন, যেভাবেই হোক এর প্রতিশোধ ওকে নিতেই হবে।

প্রেমিককে শীতে কাঁপতে দেখে ডেইজি পার্ক-সংলগ্ন একটি পানশালায় ওকে নিয়ে যায় – হাতকড়া ঢাকতে ভালো করে চাদর মুড়িয়ে দেয়। সেখানে এসে খানিকটা মদ খেতেই পুলিশ আসছে বুঝতে পেরে যুবকটি রাস্তায় নেমে ছুটতে থাকে। সবটা শুনে ক্ষক্ষপ্ত জনতা ওর পিছু ধাওয়া করে। যুবকটিও ছুটতে থাকে। একসময় শ্রান্ত যুবক পার্কের মধ্য দিয়ে পালাতে গিয়ে রেলিংয়ের ফাঁকে আটকে যায়। জনতার মারে যুবকটি যখন মৃতপ্রায়, তখনই থানা থেকে খবর আসে ‘অ্যাভেঞ্জার’ ধরা পড়েছে। হাসপাতালে নিয়ে যুবকটিকে সারিয়ে তোলা হয়। এবার ডেইজির সঙ্গে মিলনের পথে আর কোনো বাধাই থাকে না। ছবিটি দর্শকদের কাছ থেকে প্রচুর বাহবা লাভ করে। এই সাফল্যের পর ওই বছরের ২ ডিসেম্বর আলমার সঙ্গে হিচককের পরিণয়সূত্র বাঁধা হয়ে যায় পাকাপোক্তভাবে।

এরপর কেটে যায় তিন বছর, যার মধ্যে তোলা হয় ছয়টি নির্বাক live chat 888sport। ১৯২৯ সাল, অর্থনীতির আকাশে দেখা দিয়েছে সিঁদুরে মেঘ। এ সময়েই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে শব্দের ঘটে জয়যাত্রা। যদিও অহেতুক টাকা ঢালতে ভয় পাচ্ছে সবাই। এ সময়েই তিনি প্রথম ব্রিটিশ সবাক ছবি বস্ন্যাকমেইল তৈরি করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। যদিও live chat 888sportটি প্রথমে নির্বাক ছবি হিসেবেই তৈরি হয়, কিন্তু পরে প্রযোজকদের উৎসাহে কিছু অংশ ডাব করে ও বাকি অংশে শব্দ যোজনা করে ছবিটি তৈরি করেন। অবশ্য আমরা বুঝতে পারি, হিচককের তখনো অনেক কিছু শেখার বাকি আছে। live chat 888sportের

প্রথম দৃশ্যেই আমরা পুলিশ অফিসারদের যে-কর্মব্যস্ততা দেখতে পাই, মূল ছবির শরীরে তা আর বোনা হয়ে ওঠে না। তবে এ-live chat 888sportটিতে শব্দের সম্ভাবনা নিয়ে হিচকক যেভাবে খেলা করেছেন তা বিস্ময়কর! মনে করুন সেই তরুণীটির কথা, খুনের পরদিন সকালে অবসন্ন অবস্থায় যে খাবার টেবিলে এসে বসে। প্রতিবেশীদের কিছু কথা ভেসে আসতে থাকে – সাউন্ডট্র্যাকে মুখর কোলাহল কথাগুলো ভেঙে ভেঙে দিয়ে যেতে থাকে, ‘ও ফড়হহঃ যড়ষফ রিঃয শহরাবং … ঘড়, শহরাবং রংহহঃ ৎরমযঃ … হড়,, সরহফুড়ঁ, ধ শহরভব রং ধ ফরভভরপঁষঃযরহম …’ সব কথা তালগোল পাকিয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে শহরভব শব্দটি। এই সময় মেয়েটির বাবা বলে ওঠে, আমাকে দু-একটা রুটি কেটে দাও। ক্যামেরা চকিতে টিল্ট-ডাউন করে টেবিলে রাখা ছুরিটিকে ধরতে যায় – ছুরিটি যেন লাফিয়ে ঘরের এক কোণে পালিয়ে যায়। এই হলো হিচককের গল্প বলার ধরন। অথবা মনে করুন ডাউনহিল (১৯২৭) live chat 888sportটির কথা, এ-গল্পের তরুণ নায়ক এক লাস্যময়ী 888sport promo codeর পাল্লায় পড়ে কলেজ থেকে সাসপেন্ড হয়। বাড়ির লোকজন একে মেনে নিতে পারে না। বড়বাড়ির সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ছেড়ে সে ঘুরতে ঘুরতে এসে পৌঁছায় প্যারিসে। এখানেও আবার সে এক নাটুকে যুবতীর পাল্লায় পড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে কিছু পরিচিত মানুষ লন্ডনগামী একটি জাহাজে তাকে তুলে দেয়। অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকা তরুণটির ঘরে একটি গ্রামোফোন বাজে। হিচককের চাতুর্যে গ্রামোফোনের ঘুরতে থাকা ডিস্কটি সুপার ইম্পোজ করে নিয়ে আসা হয় বিকারগ্রস্ত তরুণটির ওপর – সুন্দর ফুটে ওঠে তরুণটির যন্ত্রণাকাতর চেহারাটা।

১৯৩০ সালে হিচকক অ্যান ইলাস্টিক অ্যাফেয়ার ও এলস্ট্রি কলিং নামে দুটো স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি তৈরি করেন – যা পরে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এছাড়া ওই বছরেই তিনি ক্লিমেন্স ডেনের ব্রিটিশ নাটক এন্টার স্যার জন অবলম্বনে মার্ডার নামে একটি ও বিখ্যাত আইরিশ নাট্যকার শন ও’কেসির মঞ্চসফল নাটক জুন অ্যান্ড পেকক নামে আরেকটি পূর্ণদৈর্ঘ্য live chat 888sport তৈরি করেন। মার্ডার ছবির চিত্রনাট্য লেখার কাজে হিচককের দিকে হাত বাড়িয়ে দেন স্ত্রী আলমা রেডিল্লে ও পারিবারিক বন্ধু ওয়াল্টার সি মাইক্রফট।

live chat 888sportের শুরুতেই আমরা দেখি একটি ভ্রাম্যমাণ নাট্যগোষ্ঠী থিয়েটার শেষে গল্পগুজবে মাতোয়ারা হয়ে বাড়ির পথে হাঁটা দিয়েছে। দুই উঠতি অভিনেত্রী ডায়না ব্যারিং ও এডনা ড্রুস গল্পে এতটাই মশগুল, বাড়ি যে এসে গেছে তা খেয়ালই করে না। ডায়না বন্ধুকে নিয়ে নিশুতিতে ঢেকে যাওয়া মফস্বলের ওই বাড়ির দোতলার ঘরে গিয়ে বসে। একটু পরই আততায়ীর হাতে খুন হয় এডনা। পুলিশ আসে, ডায়নার জামা-কাপড়ে রক্ত দেখে আর খুনের অস্ত্র পায়ের কাছে পড়ে থাকতে দেখে তাকে থানায় ধরে নিয়ে যায়। সেখানে হাজারো জিজ্ঞাসাবাদ সত্ত্বেও তার কাছ থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায় না। সে শুধু বলে, আমার কিছুই মনে পড়ছে না। আদালতে দু-একজন জুরি ছাড়া সবাই ডায়নাকে দোষী সাব্যস্ত করে। কেউ কেউ ডায়নার মানসিক অসুস্থতার কথা বিবেচনা করলেও ফাঁসির দিকেই আঙুল তোলেন।

ফাঁসির দুদিন আগে সম্ভ্রান্ত জুরি, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা স্যার জন বিচলিত হয়ে ওই দলেরই সদস্য মার্কহ্যামকে ডেকে পাঠান। সস্ত্রীক মার্কহ্যাম স্যার জনকে সাহায্য করতে উৎসুক হয়ে ওঠে। দলবল নিয়ে স্যার জন ডায়নার বাড়ি ও মঞ্চের অন্ধিসন্ধি তন্নতন্ন করে খুঁজে বেড়ায়। ডায়নার বাড়ি এসে তারা খুঁজে পায় স্যার জনের একটি আবক্ষ ছবি – তারা জানতে পারে, ডায়না স্যার জনকেই আদর্শ পুরুষ ভেবে নাটকের দিকে এগিয়ে এসেছিল। ডায়নার বাড়ির দোতলার উচ্চতা এবং সাজঘরের ভাঙা বেসিন নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বুঝতে পারে, সেদিন ওই দুই মহিলার মধ্যে এসে উপস্থিত হয়েছিল কোনো ট্র্যাপিজ জানা পুরুষ মানুষ। ওদের সন্দেহের ভাবনা চলে যায় ওই দলেরই অভিনেতা হ্যান্ডেল ফেনের দিকে। ফেন ছিল একজন হাফ-কাস্ট (সাদা-কালো রক্তের মিশ্রণে জাত) মানুষ। নিজেকে ঢেকে রাখতে সে মহিলা সেজে অভিনয় করে আর সার্কাসেও সে মহিলা সেজেই ট্র্যাপিজের খেলা দেখায়।

হ্যামলেটের অনুকরণে স্যার জনের হত্যাকা- নিয়ে লেখা একটা নতুন নাটকে অভিনয়ের জন্য তাকে আহবান জানানো হয়। অভিনয়ের ডাকে সাড়া দিতে সে এসে পৌঁছায় স্যার জনের বৈঠকখানায়। সেখানে হত্যাদৃশ্যটি পুনর্নির্মাণের জন্য তাকে অনুরোধ জানানো হয়। মহড়ার সময় তার আচার-আচরণে তাদের সন্দেহ ঘনীভূত হয়। পরদিন দলবল নিয়ে স্যার জন সার্কাসের আঙিনায় এসে উপস্থিত হয়। ট্র্যাপিজের দোলনায় বসে ফেন সবই দেখতে পায় এবং সবই বুঝতে পারে। মুহূর্তে সে পাশে ঝোলানো দড়িটাকে টেনে নিয়ে গলায় পেঁচিয়ে নেয় এবং শূন্যে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করে।

ছবির শেষ দৃশ্যে পৌঁছে আমরা দেখি, স্যার জনের নতুন নাটকের জন্য একটা ঝলমলে পোশাক পরে ডায়না এসে দাঁড়িয়েছে মঞ্চের পাদপ্রদীপ জুড়ে।

১৯৩৪ থেকে ১৯৩৮ সাল রহস্য-রোমাঞ্চ মোড়কে তৈরি করলেন কয়েকটা ছবি, যার মধ্যে সবিশেষ উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হলো – দ্য ম্যান হু নিউ টু মাচ (১৯৩৪), দ্য থার্টি-নাইন স্টেপস (১৯৩৫), দ্য সিক্রেট এজেন্ট (১৯৩৬), স্যাবোটেজ (১৯৩৬), ইয়াং অ্যান্ড ইনোসেন্ট (১৯৩৭) ও লেডি ভেনিসেজ (১৯৩৮)।

দ্য ম্যান হু নিউ টু মাচ live chat 888sportটি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ এবং সবদিক থেকেই খুব সার্থক ছবি। এই live chat 888sportের মধ্যে যে পথযুদ্ধের মহড়াটা আমরা দেখতে পাই তা মনে করিয়ে দেয় ১৯১১ সালের ৩ জানুয়ারির বিখ্যাত লন্ডন ইস্ট এন্ডের সিডনি স্ট্রিট পথ-লড়াইয়ের কথা। সেই ঘটনার প্রামাণ্য দলিল জুড়ে আছে এই live chat 888sportের শরীর। ছবি থেকে ছবিতে হিচককের চেহারাটা ক্রমেই পরিণত হয়ে ফুটে উঠছিল। সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ছিল দূরদূরামেত্ম। এই ছবিগুলো থেকে আমরা যেমন বুঝতে পারি হিচককের গল্প বলার জন্মগত সামথ্যটাকে, তেমনি বুঝতে পারি তাঁর খাঁটি ব্রিটিশ চরিত্রটাকেও। তিনি যেমন অল্প কথায় ঘটনাকে পরিবেশন করতে পারতেন, তেমনি এড়িয়ে যেতে পারতেন অহেতুক আবেগপ্রবণতাকেও। এরই সঙ্গে ছিল তাঁর হিউমার পরিবেশনের অসাধারণ দক্ষতা। দ্য ম্যান হু নিউ টু মাচ, দ্য থার্টি-নাইন স্টেপস, লেডি ভেনিসেজ প্রভৃতি দু-তিনটি ব্যতিক্রম ছাড়া এই live chat 888sportগুলো কিন্তু দর্শকমনে ঝংকার তুলতে পারল না। হিচককের পছন্দের অতিনাটকীয়তা পরিবেশিত হলো বিলম্বিত লয়ে। এই live chat 888sportগুলোর শেষপ্রামেত্ম পৌঁছে হিচকক তৈরি করলেন একটি চিত্তাকর্ষক live chat 888sport লেডি ভেনিসেজের চিত্রনাট্য।

live chat 888sportটির প্রথম দৃশ্যটিই আমাদের মুগ্ধ করে – একটি টপ শট, মফস্বলের কোনো রেলওয়ে স্টেশনের ওপর দিয়ে প্যান করে ক্যামেরা এসে পৌঁছায় প্রতীক্ষালয়ে। আমরা এটা ভেবেই আশ্চর্য হয়ে যাই, ক্রেনের ব্যবহার ছাড়াই হিচকক কী করে এই দৃশ্যটি ক্যামেরায় ধরলেন! ছবি শুরু হয়। আমরা দেখি, একটি সুন্দরী 888sport slot gameপিপাসু ব্রিটিশ তরুণী কন্টিনেন্টাল ইউরোপ ঘোরার ইচ্ছা নিয়ে ওই রেলওয়ে স্টেশনে এসে হাজির হয়েছে। কিন্তু তুষারপাতের দরুন ট্রেন পৌঁছতে অনেক সময় চলে যায়। আমরা দেখতে পাই প্রতীক্ষারত নানা যাত্রীর নানা চেহারা। রাত কেটে সকাল হলে ট্রেন এসে যাত্রীদের উদ্ধার করে। ট্রেনে ওঠার আগমুহূর্তেই একটি ভারী জিনিস তরুণীটির মাথায় এসে পড়ে। তরুণীটির মাথা ঘুরে যায়। হিচকক এখানে মেয়েটির কাতর চেহারাটা বোঝাতে ট্রেনের চলন্ত চাকা সুপার ইম্পোজ করে তরুণীটির ওপরে বসিয়েছেন। যেতে যেতে তরুণীটির সঙ্গে আলাপ জমে ওঠে মিস ফ্রোয় নামে একজন বয়স্ক ব্রিটিশ মহিলার। তরুণীটির মাথার যন্ত্রণা কমাতে ওডিকোলন লাগানো রুমাল এগিয়ে দেয় বয়স্ক বন্ধু। ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসে, ঘুম ভাঙলে তরুণীটি বয়স্ক বন্ধুটিকে খুঁজে পায় না আর। সহযাত্রীদের যাকেই জিজ্ঞেস করে, মহিলার কথা সবাই এড়িয়ে যায়। আমরা বুঝতে পারি, কেউই অহেতুক ঝামেলায় জড়াতে চায় না। কিন্তু ব্যতিক্রমী মানুষও আছে। একজন সংগীত-উৎসাহী মানুষ এগিয়ে আসে তরুণীটিকে সঙ্গ দিতে। দুজনে মিলে তোলপাড় করে খুঁজে বেড়ায় ট্রেনের ফাঁকফোকর। একসময় হতাশ মানুষ দুজন একটি পরিত্যক্ত কূপে ঢুকে দেখতে পায় মুখে ব্যান্ডেজ বাঁধা আর সারাশরীর চাদর দিয়ে 888sport app একটি মানুষকে। আড়াল সরাতেই বেরিয়ে আসে মিস ফ্রোয়ের লুকিয়ে রাখা দেহটা। শয়তানি চক্রের মাথা এক জার্মান চিকিৎসক তাদের বাধা দিতে চেষ্টা করে। ট্রেনটাকে বিপথে চালানোর চেষ্টা করে। মধ্য ইউরোপের কোনো এক অরণ্যপ্রামেত্ম শুরু হয়ে যায় বন্দুকের লড়াই। এবার নিজেদের প্রাণ বাঁচাতেই তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় এতক্ষণের বিমুখ সহযাত্রীরা। শেষ পর্যন্ত জয় হয় মিত্রপক্ষেরই। জানা যায়, মিস ফ্রোয় একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর।

লেডি ভেনিসেজ আজ বহু মানুষের বিচারেই অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্রিটিশ live chat 888sport হিসেবে পরিগণিত।

এই live chat 888sportগুলোর শেষপ্রামেত্ম পৌঁছে হিচকক যখন ডুবে আছেন দফেন দু মারিয়ার 888sport alternative link জ্যামাইকা ইন নিয়ে, ঠিক তখনই কথা শুরু হয় ডেভিড ও সেলজেনিকের সঙ্গে। হলিউডে গিয়ে ছবি বানানোর কথা পাকা হয়, সই হয় কনট্রাক্টেও। আসলে সেই সময়েই হিচককের মনের কোণে আন্তর্জাতিক দর্শকদের সম্মোহিত করার ইচ্ছাটা প্রবল হয়ে উঠেছিল, সর্বশেষ উন্নত যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করার ইচ্ছেটাও দুর্দম হয়ে উঠেছিল তাঁর মনের কোনায়। ব্রিটিশ live chat 888sportকে রিক্ত করে দিয়ে দুজন প্রবল প্রতিভাধর live chat 888sport করিয়ে মানুষ চলে গিয়েছিলেন হলিউডে। ব্রিটিশ চরিত্র অনুসারী দুজনেই ছিলেন অল্প কথার মানুষ। ‘গ্রেট ডিক্টেটরে’র আগে পর্যন্ত চ্যাপলিনের কথা বলায় ছিল প্রবল অনীহা। অথচ অন্যদিকে সেলজেনিককে দেখুন, কত বিসত্মৃত অঞ্চল উঠে আসে তাঁর live chat 888sportে – গন উইথ দ্য উইন্ড, সিনস ইউ ওয়েন্ট অ্যাওয়ে বা ডুয়েল ইন দ্য সান। আর সেলজেনিকের সঙ্গে তাঁর প্রথম ছবি রেবেকার তুলনা টানলে দেখা যাবে ব্রিটিশ পর্বের যে-কোনো ছবির চেয়ে এ-ছবি অন্তত দু-হাজার ফুট দীর্ঘ।

১৯৪০ সালে দফেন দ্যু মারিয়ার 888sport alternative link অবলম্বনে হিচককের প্রথম আমেরিকান live chat 888sport রেবেকা। এ-ছবির পটভূমি হিচককের পরিচিত ইংল্যান্ড আর হিচককের পছন্দের মঞ্চসফল তারকারাও ব্রিটিশ।

লরেন্স অলিভিয়ের ও জোয়ান ফনটেইনের অভিনয়ে সমৃদ্ধ রেবেকা সহজেই দর্শকমন জয়ে সমর্থ হলো। ছবিতে দেখি মেনডারলির বাগানঘেরা প্রাসাদোপম বাড়ির আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়ায় সন্ত্রস্ত নায়িকা। হিচককের ক্যামেরা সঞ্চালনের গুণে আমরাও ঘুরে বেড়াই নায়িকাকে অনুসরণ করে। কখনো কখনো চমক দিয়ে সামনে এসে দাঁড়ায় অপদেবতাসদৃশ প্রধান পরিচারিকা মিসেস ড্যানভার্স। জোয়ান ফনটেইনের দুরন্ত অভিনয়ের জোরে সেই সিকোয়েন্সগুলোতে আমরাও খানিকটা কেঁপে কেঁপে উঠি।

সাধারণ বাঙালির আটপৌরে জীবনে হিচককের হাতছানি পৌঁছতে আরো কিছুদিন সময় চলে গেল। বাংলা ছবির পরিচালক হরিদাস ভট্টাচার্য রেবেকা দেখেই ঠিক করলেন, এই live chat 888sportটা নিয়েই তিনি একটা বাংলা ছবি বানাবেন। তৈরি হলো শেষ অঙ্কের চিত্রনাট্য। উত্তমকুমার-শর্মিলা ঠাকুর-বিকাশ রায়-সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়ে, গল্পের ঠাসবুনুনিতে দর্শকরা অভিভূত হলেন। হিচককের live chat 888sport দফেন দ্যু মারিয়ার 888sport alternative link থেকে সরে  এসেছিল অনেকটাই। আর বাঙালি পরিচালক শেষ অঙ্ককে হিংসার 888sport alternative link থেকে সরিয়ে সাজিয়ে তুললেন প্রেম-ভালোবাসার live chat 888sport হিসেবে।

এ সময় চারদিকে বেজে উঠেছে যুদ্ধের দামামা। হলিউডে হিচকক নিজের জায়গাটাকে এর মধ্যেই বেশ পোক্ত করে নিয়েছেন। মার্কিন জনগণের চাহিদা অনুযায়ী live chat 888sportের কলা-888sport live chatকে

বাণিজ্য-888sport live chat হিসেবে গড়ে তুলতে হিচককও তৎপর হয়ে উঠেছেন। তারকাখচিত জাঁকজমকপূর্ণ live chat 888sport-করিয়েদের মধ্যে তিনি হয়ে উঠেছেন একজন অগ্রগণ্য 888sport live chatী। এছাড়া মহাযুদ্ধের দাবিতে দুটো প্রচারে ছবি তৈরি করলেন হিচকক। আরেকটি live chat 888sportের জন্য বন্দিশিবিরের প্রচুর ছবি দেখলেন; কিন্তু live chat 888sportের দেখা পাওয়া গেল না আর।  রেবেকার পর এক এক করে তিনি সাসপিসান, স্যাবটিয়ার প্রভৃতি চারটি মঞ্চসফল live chat 888sport তৈরি করে ফেলেছেন। হিচককের ছবিতে অবশ্য নানা ঘটনার ঘনঘটা – এই ঘটনার দ্বারা আবর্তিত হচ্ছে হিচককের live chat 888sportের চরিত্ররা, কোনো চরিত্রই ঘটনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। ফলে এই live chat 888sportগুলো কোনোমতেই বাণীবহ হয়ে উঠতে পারছে না।

এবার দর্শকদের একটু ভিন্ন স্বাদের ছবি উপহার দিতে চাইলেন হিচকক। যুদ্ধের বাজারে সুদর্শন চার্লি চাকরি খুঁজে পাচ্ছে না কিছুতেই। তাই সে শুরু করল বড়লোক বিধবাদের বিয়ে করে তাদের হত্যা করে সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে। চকিতে আমাদের মনে উঁকি দেয় চ্যাপলিনের মঁসিয়ে ভের্দুর কথা। কিন্তু দুটো live chat 888sportে তফাৎ বিস্তর!

অ্যা শ্যাডো অব অ্যা ডাউট (১৯৪৩) ছবির শুরুতেই আমরা দেখি, নায়ক চার্লিকে ধরার জন্য গোয়েন্দারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার মফস্বল শহর সান্টা রোসায় সে হাজির হতে চেয়ে বোনকে চিঠি লেখে। সেখানে বোন-ভগ্নিপতি-ভাগ্নে-ভাগ্নিদের নিয়ে মজায় মেতে ওঠে চার্লি। এখানকার নিস্তরঙ্গ জীবনটাকে হিচকক তুলে ধরেছেন অপূর্ব দক্ষতায়। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সম্মিলিত অভিনয়ে live chat 888sportে প্রতিফলিত জীবনের ছবিটা জীবন্ত হয়ে উঠেছে। কিন্তু শেষ পর্বে এসে হিচকক আর তাল রাখতে পারেননি। বিশেষত ভাগ্নি ছোট চার্লি যে মামারই অল্টার ইগো, সেটা বোঝাতে তারও নাম রাখা হয়েছে চার্লি। মামার খুনি-চরিত্রের কথা জেনে ভাগ্নির হাতে মামার মৃত্যুবরণ একটু জোর করে তৈরি বলে মনে হয়। মঁসিয়ে ভের্দুর কথা ভাবলে তফাৎটা আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ভের্দু যেখানে ঘোষণা করে, ‘একজন মানুষকে খুন করলে সে হয় খুনি। আর লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করলে সে হয় নায়ক’ – সেখানে হিচকক একেবারেই নিশ্চুপ। কোনো বার্তাই বহন করে আনে না এই ছবি।

অবশ্য চ্যাপলিনের এই ঘোষণা তাঁকে ‘আন আমেরিকান অ্যাকটিভিটিজে’র জালে জড়িয়ে ফেলল। ছেড়ে যেতে হলো এতদিনের প্রিয় বাসভূমি। হিচকক কিন্তু অনেক বেশি বিচক্ষণ। এবার তিনি স্পেল বাউন্ড (১৯৪৫) নামে মনোবিকলনের একটি ছবি তৈরি করলেন। এ-ছবির স্বপ্নদৃশ্যের সেট তৈরি করে দিতে তিনি হাজির হলেন বিখ্যাত স্যুরিয়ালিস্ট 888sport live chatী সালভাদোর দালির কাছে। নায়ক-নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করলেন গ্রেগরি পেক ও ইনগ্রিড বার্গম্যান। দালির তৈরি সেট ও আকর্ষণীয় নায়ক-নায়িকার স্বাভাবিক অভিনয় সাধারণ দর্শককে এ-ছবির জন্য মাতিয়ে তুলল। শোনা যায়, এ-ছবিতে স্বাভাবিক অভিনয় করতে করতে নায়ক-নায়িকার মনে জন্মায় পরস্পরের প্রতি এক তীব্র আকর্ষণ। ইনগ্রিডের মৃত্যুর পর গ্রেগরি পেক নিজেই এ-কথা স্বীকার করেছেন।

পরের বছর তিনি যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইনগ্রিড বার্গম্যান ও ক্যারি গ্রান্টকে নিয়ে তৈরি করলেন নটোরিয়াস (১৯৪৬) নামে একটি live chat 888sport। এ-ছবিতে জার্মান গুপ্তচরদের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়ে মাতাহরির মতোই নায়িকা ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্সের গলায় ঝোলালেন বিজয়মাল্য।

যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ভোগবাদী মার্কিন সমাজের সাধারণ মানুষ ‘খাও-পিও-জিও’র আদর্শে মজে রইল। অবশ্য পকেটে টান পড়লেই হাঁসফাঁস করে উঠত তারা। খুঁজতে হতো ভিন্ন রাস্তা। ঠিক এমনই একটা সময়ে সুইডেন-স্পেন-ইতালি প্রভৃতি দেশের বড়লোক বিধবা মহিলারা বেদনাময় গস্নানি থেকে বেরিয়ে স্বাদ-আহ্লাদময় জীবনের হাতছানিকে উপেক্ষা না করতে পেরে আমেরিকায় এসে বসবাস করতে শুরু করত। আর ডাঙায় আটকেপড়া মাছের মতোই হাঁসফাঁস করতে থাকা তরুণরা তখন বড়লোক বিধবাদের বিয়ে করে তাদের হত্যা করে সম্পত্তি আত্মসাৎ করে কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেতে চাইল। মার্কিন সমাজের এই চেহারাটাকেই হিচকক তাঁর live chat 888sportে ধরে রাখতে চাইলেন। অ্যা শ্যাডো অব অ্যা ডাউটের পর তৈরি হলো ডায়াল এম ফর মার্ডার (১৯৫৪) ও ভার্টিগো (১৯৫৮)।

এক কথায় অনবদ্য ভার্টিগো live chat 888sportটির গোয়েন্দা-প্রধান স্কটি (জেমস স্টুয়ার্ট) একদিন দুই পুলিশ অফিসারকে নিয়ে এক অপরাধীকে তাড়া করতে করতে এক বহুতল থেকে অন্য বহুতলে ছুটে যাচ্ছিলেন। একটি ছাদের চালের ওপরে লাফাতে গিয়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তার পা পিছলে যায়, স্কটিও ঝুলতে থাকে। বহু নিচে পুলিশ কর্মকর্তার পড়ে থাকা মৃতদেহটি দেখতে দেখতে স্কটি ভার্টিগো রোগে আক্রান্ত হয়। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে গিয়ে সে জানতে পারে, এই সমস্যাটির নাম অ্যাক্রোফোবিয়া – যার লক্ষণ হচ্ছে বহু ওপর থেকে নিচের দিকে তাকালে ভয়ংকর এক ভয় এসে আক্রমণ করে। স্কটি চাকরি থেকে অবসর নেয়। এক বাল্যবন্ধু স্কটিকে আমন্ত্রণ জানায়, হঠাৎ হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়া তার স্ত্রীর খোঁজখবর নিতে। বন্ধুটি আরো জানায়, তার স্ত্রী মেডালিনের (কিম নোভাক) দিদিমার মা শার্লোট ছিলেন এক ধনী ব্যবসায়ীর রক্ষক্ষতা। তার একটি কন্যাসন্তান জন্মালে ধনী পুরুষটি শিশুসন্তানটিকে নিজের কাছে রেখে শার্লোটকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। শোকে, দুঃখে, দারিদ্রে্য ক্লিষ্ট হতে হতে একদিন শার্লোট আত্মহত্যা করে। প্রথমে আপত্তি জানালেও ইন্টারেস্টিং মনে করে কেসটি সে গ্রহণ করে। অনুক্ষণ মেডেলিনকে অনুসরণ করতে করতে বেরিয়ে আসে, সে কাছের একটি মিউজিয়ামে গিয়ে শার্লোটের একটি ছবির সামনে ধ্যানমুগ্ধ হয়ে বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকে। গোয়েন্দাপ্রধান

সে-বাড়িটিরও সন্ধান পায়, যেটা একসময় ছিল শার্লোটের বাড়ি, এখন সেটা পরিণত হয়েছে এক বনেদি হোটেলে।

মেডেলিনকে অনুসরণ করতে করতে একদিন স্কটি চলে আসে সানফ্রানসিসকো উপসাগরের কাছে। সেখানে মেডেলিন জলে ঝাঁপ দেয়। তৎপর স্কটি তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে নিজের ফ্ল্যাটে। ক্রমশই দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব গাঢ় হয়। একদিন দুজনে উধাও হয়ে চলে আসে ক্যালিফোর্নিয়ার পশ্চিম প্রামেত্ম প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে নিবিড় এক বনানীর প্রামেত্ম। বিশাল বিশাল গাছ যেন ইতিহাসের দিগচিহ্ন বহন করে চলেছে। এখানে হিচককের ক্যামেরা ডিপ ফোকাসের সাহায্যে সিকোয়েন্সটিকে একটি 888sport app download apkয় পরিণত করেছে। আমাদের মনে পড়ে যায় জীবনানন্দের 888sport app download apkর কথা। ‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা/ মুখে তার শ্রাবসত্মীর কারুকার্য …’। স্কটি মেডেলিনকে জিজ্ঞেস করে, সে কবে জন্মেছে। 888sport app download apkর মতো করেই মেডেলিন উত্তর দেয়, সে কি আজকে? হাজার/ দুহাজার বছর আগে। প্রগাঢ় প্রেমে দুজনেই তলিয়ে যেতে থাকে। জীবনের পিপাসায় উদ্বেল মেডেলিনের কিন্তু অস্থিরতা দূর হয় না। এক মরণেচ্ছা তাকে ঘুমে-জাগরণে তাড়িয়ে বেড়ায়। একদিন স্কটি জানতে চাইলে সে বলে স্বপ্নে দেখা একটি স্প্যানিশ চার্চের কথা, যা সে আগে কখনো দেখেনি। স্কটি সব শুনে বলে, এই চার্চের অস্তিত্ব আছে, সে দেখেছে, এমনকি মেডেলিনও দেখেছে। ওরা দুজনে সেই চার্চের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে। একসময় তারা চার্চটি খুঁজে পেয়ে দেখতে পায় সবটাই মেডিলিনের বর্ণনামতো মিলে যাচ্ছে, এমনকি ঘোড়ার গাড়িগুলোও।

সেদিনের পর অন্য আরেকদিন মেডেলিনের অনুরোধে দুজনে আবার ফিরে আসে গম্বুজওয়ালা গির্জাটার কাছে। অনেক বারণ সত্ত্বেও মেডেলিন গির্জাটার ভেতরে ঢোকার জেদ ধরে। শেষ পর্যন্ত মেডেলিনের গভীর চুম্বনের কাছে হার মানতে হয় স্কটিকে। সিঁড়ি দিয়ে দ্রম্নত উঠতে থাকে মেডেলিন। স্কটিও তাকে অনুসরণ করে ছুটতে থাকে। কিন্তু ঘূর্ণি রোগের ভয়ে শেষ কয়েক ধাপ আর পেরোনো হয় না স্কটির। অল্প কিছু পরে তীব্র এক আর্তনাদ এবং পতনের ভারী আওয়াজ স্কটিকে বুঝিয়ে দেয়, সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।  একটা টপ শটে আমরা দেখতে পাই, অনেক নিচে আরেকটা বাড়ির ছাদে মেডেলিনের মৃতদেহটা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। বিচারে মেডেলিনের মৃত্যু আত্মহত্যা বলে গণ্য করা হয়। আর স্কটির মানসিক অসুস্থতার জন্যই তার অস্বাভাবিক আচার-আচরণ বলে রায় দেওয়া হয়। অনেকদিন অ্যাসাইলামে কাটাতে হয় স্কটিকে।

এরপর কেটে গেছে বেশ কিছুদিন, স্কটি এখন অনেকটাই সুস্থ। সেদিন সে আনমনে ঘুরে বেড়াচ্ছিল একটি জনবহুল রাস্তায়। হঠাৎ তার চোখে পড়ল হুবহু মেডেলিনের মতো দেখতে একটি মেয়েকে। অনুসরণ করে তার হোটেলে এসে পৌঁছাল। অনেক কথা-কাটাকাটির পর মেয়েটি রাজি হলো তার সঙ্গে কথা বলতে। মেয়েটিকে ডিনারে নেমন্তন্ন করল স্কটি। ডিনারে কী পোশাক পরবে ভাবতে ভাবতে সেদিনের কথা মনে পড়ে গেল তার। আমরা দেখতে পেলাম সেদিন ছাদে দাঁড়িয়েছিল একজন নয়, দুটি মেয়ে একই পোশাক পরে। মেডেলিন নয়, অন্য মেয়েটিকে স্কটির বন্ধু নিচে ছুড়ে ফেলে দিলো। আমরা বুঝলাম স্ত্রীকে হত্যা করে সম্পত্তি আত্মসাৎ করার এ এক নৃশংস খেলা।

সে-রাতে মেডেলিনের মতোই একটি হেলিওট্রোপ রঙের গাউন পরল সে। ডিনারের পর রাতে মেয়েটিকে বাড়ি পৌঁছে দিতে এসে পরের দিন আবার তাকে নিয়ে ঘোরার প্রস্তাব দেওয়ায় মেয়েটি রাজি হয়ে গেল। এভাবেই ক্রমশ তাদের প্রেম জমে উঠল। আবার একদিন ডিনারে যাওয়ার সময় সাজগোজ করে শার্লোটের গলার হারটি পরল সে। স্কটির কাছে এবার সবই জলের মতো পরিষ্কার হয়ে গেল। জুডিকে নিয়ে আবার সে সেই গির্জার কাছে পৌঁছল। মেয়েটি কিছুতেই ভেতরে যেতে রাজি না-হওয়ায় স্কটি একরকম জোর করেই তাকে ছাদের ওপরে নিয়ে গেল। সেখানে সে মেয়েটির কাছ থেকে সব স্বীকার করিয়ে নিতে চাইছে। ঠিক তখনই অন্য একটা সিঁড়ি দিয়ে আধো-অন্ধকারে উঠে এলো গির্জার মাদার। মেয়েটি ভীষণ ভয় পেয়ে পা পিছলে পড়ে গেল নিচে।

জানা যায়, প্রথমে ভার্টিগোর শেষ দৃশ্যটিতে ছিল ঘরে বসে মদ্যপান করতে করতে স্কটি আর তার সঙ্গিনী রেডিওতে শুনতে পেল বন্ধু গেভিন এলস্টারকে পুলিশি তৎপরতায় ইউরোপ থেকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত live chat 888sport থেকে এই দৃশ্যটি কেটে দেওয়া হয়।

‘সাইট অ্যান্ড সাউন্ড’-আয়োজিত হাজার জন ফিল্ম ক্রিটিক ও পরিচালককে আহবান করে ২০১২ সালের এক ভোটাভুটিতে ভার্টিগোকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ live chat 888sport হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।