আমাদের পূর্ব-বাংলায় সাতচল্লিশের আগেই 888sport alternative link লেখা শুরু হয়; প্রায় চল্লিশ থেকেই। রিজিয়া রহমান (১৯৩৯-২০১৯) তার একটু পরে। মূলত 888sport appsের 888sport alternative linkের যে-বুনিয়াদ গড়ে তোলেন শওকত ওসমান, আবু রুশ্দ, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্, আবু জাফর শামসুদ্দীন, শামসুদ্দীন আবুল কালাম প্রমুখ, সে-ধারাতেই এই স্বাধীন 888sport appsে রিজিয়া রহমানের লেখালেখি শুরু। যদিও তাঁর প্রথম 888sport alternative link ঘর ভাঙা ঘর লেখা শুরু হয় ১৯৬৭-৬৮-র দিকে। ছেপে বের হয় ১৯৭৪-এ। অবিভক্ত বাংলায় রিজিয়া রহমানের জন্ম। তিনি বলেন : ‘আমার শৈশবের 888sport sign up bonusতে সশব্দে বিরাজ করছে যুদ্ধ, মহাযুদ্ধ। সেখানে কান পাতলে এখনো শুনতে পাই সাইরেনের বিকট চিৎকার, বোমার গগনবিদারী আওয়াজ, জাপানি বোমারু বিমানের গুটগুট শব্দ আর অ্যান্টি এয়ারক্রাফটের ঘন ঘন কড়া ধমক। এখনো মনের অবচেতনে কুণ্ডলী পাকায় শিশুকালের রাতগুলোর ব্ল্যাকআউটের ঘুটঘুটে অন্ধকার।’ তিনি আরো বলেন : ‘জ্ঞানের আলো ফুটতে শুরু করার পর থেকে হিংস্র পৃথিবীর উন্মত্ততা অনুভব করতে করতেই বেড়ে ওঠা।’ এই অনুভব তাঁর গোটা জীবনের লেখালেখির সঙ্গে লেপ্টে ছিল। তাই তাঁর লেখায় পুনর্গঠিত হয় আলাদা জীবন, আলাদা স্বরভঙ্গি। তাতে কী নেই – সেটাই প্রশ্ন! নিছক লেখার লেখক নন তিনি। লেখালেখির অভিনিবেশে যুক্ত হয় অসাম্য, পিছিয়ে পড়া মানুষ, গণজীবন, গলিত-পিষ্ট জীবন, অমত্ম্যজ-অভাবময়
ক্লিষ্ট-ক্লিশে-ক্লিন্ন 888sport promo code, ভোগবাদী সমাজের নখর, পুরুষতন্ত্রের আধিপত্য, 888sport promo codeর কারুণ্য – কত কী! রিজিয়া রহমান সুদূর বেলুচিস্তান থেকে শুরু করে পতিতার জীবন কিংবা আদিবাসী অমত্ম্যজ মানুষ কাউকেই পিছিয়ে রাখেন না। কখনোবা মুক্তিযুদ্ধ, জাতি গঠনের ইতিহাসও স্বয়ং স্বাতন্ত্রিকতায় বাস্তবনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। 888sport live chatকে তিনি নিছক প্রয়োজনহীনতার আদর্শে গ্রহণ করেননি, নিয়েছেন জাত-কুল-জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মনুষ্য-মর্যাদার আনুকূল্য হিসেবে এবং তা সম্প্রসারিত হয়ে চলেছে বিস্তর বৈচিত্র্যময় জনপদে কৃষ্টি-সংস্কৃতির অন্তর্গত দ্বন্দ্বের সংগ্রামশীল শাশ্বত অভীপ্সায়। এর কেন্দ্র কী? জীবনে জীবন যোগ করার অভিপ্রায়ইবা কী? অধ্যাপক আলী আনোয়ার বলছেন : ‘রিজিয়া রহমান সমাজতাত্ত্বিক ধারার একজন জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক। তাঁর সমস্ত 888sport alternative linkেই একটি সামাজিক গোষ্ঠী বা শ্রেণির জীবনযাত্রা পদ্ধতির চিত্রণ আছে। প্রভূত যত্নের সঙ্গে তিনি ওই জীবনপদ্ধতি সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক তথ্যসমূহ সংকলন করেন।’ অধ্যাপক আনোয়ারের এ-বক্তব্যের প্রতিফলন আছে তাঁর লেখায়। প্রথম 888sport alternative link থেকে শুরু করে প্রায় সব রচনায়ই বলতে হবে। রিজিয়া রহমানকে আমরা ঔপন্যাসিক হিসেবেই বিবেচ্য করি। যদিও 888sport alternative link ছাড়াও নানা রকমের কাজ করেছেন তিনি; কিন্তু পূর্ণ মেধার প্রতিফলন ঘটেছে তাঁর 888sport alternative linkে।
দুই
ঘর ভাঙা ঘর দিয়ে শুরু। এ-ভাঙনের স্বর তিনি শুনেছিলেন – কিছু চরিত্রের নামের ভেতরে। চরিত্রই স্বয়ংপ্রকাশ। ফুলজান, জোলেখার মা, ময়না, সোনাবরু, হাবুর মা, ছুওনারার খালা, পাগলা হাশেম, ফকিরচাঁদ, অজিফা, ওমরতুন, খালেকের মা প্রমুখ কেউ কি সম্বল ছাড়া! প্রত্যেকেরই স্বতন্ত্র জীবনাচার, নতুন ইতিহাস, পূর্বাপর অভিজ্ঞতা নতুন – কিন্তু সবাইকে মিশিয়ে দিয়েছেন আখ্যানের এক পথরেখায়। বুনুনিতে বেঁধে ফেলেন সব আর্ত কণ্ঠস্বর। আবারো স্মর্তব্য, লেখকের এনিকডৌট নিছক কল্পনাবিলাসী নয়। উপর্যুক্ত চরিত্র নির্ণয় এ-কালের সমাজবাস্তবতায় হয়তো নতুন কিছু নয়। কারণ, পুঁজির ত্রাসন এখন অধিক আগ্রাসী। করায়ত্তপ্রবণ ক্ষমতা চুরি করে ফেলছে মানুষের মন, পণ্য আর ভোগে চূর হয়ে গেছে সমাজ। কিন্তু ষাটের শেষ পাদে রিজিয়া রহমানের চোখে যে-চরিত্র চিহ্নিত হয়েছে, ব্যতিক্রমী হয়ে উঠেছে এই ভূখ–, তা রাজনৈতিক গড়-কাঠামোয় নয়, সৃজিত জনপদ টোটাল বিশ্বব্যবস্থার যাবতীয় অংশীদারিত্বের প্রতীক-সংবেদরূপ। তাই তার প্রতিবেশ :
গৃহহীন বিত্তহীন সেই নদীর সমত্মানেরা এই নগরীকে আশ্রয় করে আসে। গ্রামে টানাটানি আর মন্দা সময় তো এটাই। ক্ষেতের ধান-পান নাই। বীজধান পর্যন্ত খেয়ে শেষ হয়েছে। কচুশাক হেলঞ্চা আর কলমীলতা সিদ্ধ খেয়ে খেয়ে ছেলেমেয়েগুলোর হাত-পা ফুলতে থাকে। মহাজনের ধার ঘটি-বাটি, বাগান-ভিটের বন্ধকের পরিবর্তে শোধের কড়ার নিয়ে ছেঁড়া হোগলাপাতার চাটাই, দু-চারটে ছেঁড়া কাপড়-কাঁথা ও মাটির সরাখোরা নিয়ে লঞ্চভাড়ার বাড়তি দু-চারটি টাকার ভরসায় এই মহানগরীর ভিড়ে এসে তারা থই পায় না। তারপর এক কঠিন মাটির দালানকোঠায় ধাক্কা খেয়ে জীবন তাদের এক এক জীবিকার দিকে ঠেলে দেয়।
বিবরণে ঘর ভাঙার কারণ কিংবা ঘর নির্মাণের স্বপ্নও জ্ঞাত হওয়া যায়। আশ্রয় তাদের নগরে। গ্রাম ছেড়ে তারা নগরে আসে। এই নগর কোন নগর? বিশ শতকের বৈশ্বিক বাস্তবতায় নগর কেমন? আর আমাদের এই 888sport app নগরী? রিজিয়া রহমান অভিজ্ঞতার সঙ্গে বিশ্বযুদ্ধের বর্ণিত 888sport sign up bonus সন্তর্পণে কাহিনিতে বুনে যান। 888sport alternative linkের প্রকরণ তাঁর বহির্মুখী, অন্তস্তলের প্রবাহরীতি তাতে নেই। সমালোচক আলী আনোয়ার-কথিত ইনার রিয়েলিটির বদলে সরল-সাপ্টা জনপ্রিয় সমাজতত্ত্বেরই কথক তিনি। তাঁর বিবরণী ভেসে বেড়ানো মানুষের (refugee) বাঁচার অনিবার্য ইচ্ছা-বাসনা-আকুতি। তারই পরিপ্রেক্ষিত উপর্যুক্ত উদ্ধৃতির নির্মেদ বয়ানে ব্যাপকভাবে প্রশ্নশীল। এই প্রশ্নশীলতাই ঔপন্যাসিকের ধর্ম, যা রিজিয়া রহমানকে বড় ঔপন্যাসিক রূপে চিহ্নিত করেছে। ওইসব চরিত্রের একটা বিবরণ এখানে দেওয়া যায় : ফুলজানের আছে যক্ষ্মারোগী স্বামী ও তিনটি সমত্মান, জোলেখার মা
ঠিকা-ঝিয়ের কাজ করে আর স্বামী সবজি-ফেরি করে, আলেকজান মেসের রাঁধুনি, আট বছরের শামসের আইসক্রিম ফেরি করে, ফকিরচাঁদ ডাকাত, সোনাবরু ভ্রাম্যমাণ পতিতা, খালেক সিঁধেল চোর। এসব চরিত্রের জীবনযাপন এই বস্তিতে। সবাই উঠেছে বস্তিতে, লঞ্চে করে এসেছে গ্রাম পেরিয়ে – কেউবা ভিটে হারিয়ে। আর সে-বস্তির ভাড়া, টাকা আদায়, শক্তিপ্রদর্শন, অসাধুতা, অসততা, নোংরামি, ষড়যন্ত্র, সংগ্রাম, পরিশ্রম, খেটে খাওয়ার জীবনের মধ্যে জন্ম-মৃত্যু-স্বপ্নের সতত সঞ্চরণ – ‘স্বামী তাহের আলী অন্ধ খঞ্জ আতুর কিছুই নয়। দিব্যি জোয়ান শক্ত-সামর্থ্য শরীর। সে-শরীর খাটিয়ে রোজগার করে না করে বুদ্ধি খাটিয়ে।’ – আর ফকিরচাঁদ ‘দেশে থাকতে রামদা ঘুরিয়ে নৌকায় ডাকাতি করত। এখন হয়েছে 888sport appইয়া গুন্ডা’ – এই চলছে উদ্ধত নগরে! এদের ভেতর চাতুরী, ছলনার ছবি আছে; কিন্তু জীবনের কাছে সবটুকুই উদ্ধতরূপে পরাস্ত। তাই বলা হয় : ‘যেন এ বাড়িতে সিঁধেল চোর, দুর্ধর্ষ গুন্ডা, পকেটমার, অথবা দেহোপজীবিনীদের সঙ্গে বাস করা স্বাভাবিক! কিন্তু একটা যক্ষ্মারোগী? না, না! মনে মুখে কেউই তা সমর্থন করলো না।’ – এতে কী কোনো আশা আছে? ‘চাঁদনীভরা রাতের আকাশে তাকিয়ে আপন মনে বলল – আমি তাইলে মরুম না। আমি বাইচ্যা উঠুম! বাইচ্যা থাকুম!’ এই সহজ সত্য – মিলিয়ে দেওয়ার পথ এতে অবমুক্ত, পরাজয়হীন সকলে – কিন্তু পরাজয় কি নেই এতে? তা কি বলা হয়নি? কিংবা পরাজয়ের পেছনে কথা কি অনুক্ত? – ‘মনে হয় জীবনে ওরা ভয় করতে শিখেছে শুধু তাকে যার নাম ক্ষুধা। ক্ষুধার অবধারিত যন্ত্রণা ওরা জানে। আর এই ক্ষুধাই ওদেরকে নদীর ঢেউ ছোঁয়া শ্যামল ছোট ছায়ায় 888sport app, পাখি ডাকা গ্রামের নীড় থেকে ছিনিয়ে এনে ফেলেছে ইস্পাতকঠিন শহরের বুকে।’ ফুলজানরা, ফকিরচাঁদ কিংবা গ্যাদা, ফ্যালাইন্যা, রইস্যা, বাতাসীরা শহরে এসেছে। ‘শেকড়হীন উড়ে চলা বৃক্ষ’ – এ-‘বৃক্ষে’র জীবন কতটা আশাপ্রদ হতে পারে! তবু আশা তো মলিন নয়! স্বপ্নও তাই। আর সংগ্রাম চলছেই। রিজিয়া রহমান এসব নিয়ে প্রভূত হয়ে ওঠেন আখ্যানের ভেতরে। বিচিত্র চরিত্রের সমাহার ঘটিয়ে কিছু সিরিয়াস অসঙ্গতিকে তিনি প্রথম 888sport alternative linkেই চিনিয়ে দেন। দায়বদ্ধতার অবিকল রূপটি এরূপ ক্ল্যাসিক ফ্রেমে আটকালে এর গুরুত্ব বহুত্ব অভিমুখে বিচিত্র সৌকর্যে সমাপতিত হয়। এরকম অধিক প্রশ্নসিদ্ধ ও সাহস-সঞ্চয়ী 888sport alternative link রক্তের অক্ষর (১৯৭৮)। ঘর ভাঙা ঘর 888sport alternative linkের জীবনসত্য যেন অধিক ঘনপিনদ্ধ এবং মনোযোগ কেন্দ্রিকতা পেয়ে বিশ্বস্ত চিন্তনকণায় পর্যবসিত হয়েছে 888sport appর পতিতালয় গোলাপীপট্টিতে। বস্তি থেকে গোলাপীপট্টি ঠিক আলাদা কি কোনো প্রয়াস দাবি করে! সতীমাসি, ইয়াসমীন কিংবা পারুল, জাহানারা, কুসুম পূর্বোক্ত ফুলজান বা সোনাবরুদের থেকে তেমন পৃথক মনে হয় না। সেটি করেনওনি লেখক। রিজিয়া রহমানের পস্নটের একটি বিশেষ দিক, চরিত্রের পেছনের প্রত্যন্তকে তুলে ধরা। চরিত্রকে বাস্তবানুগ ও নিখুঁত করার এ-কৌশলটিতে তিনি মুন্শিয়ানা দেখান। রক্তের অক্ষরের ইয়াসমীনের জীবন কেমন ছিল? সে-প্রশ্নের ভেতর থেকেই আখ্যানের ডিসকোর্সে তীব্রতর হয়েছে। উচ্চবিত্ত শিক্ষিত সমাজে যে ইয়াসমীনের জন্ম সে কেন অমত্ম্যজ হয়ে অন্ধকারাচ্ছন্নতার অতলে তলিয়ে গেল! এক ধরনের বিপরীতাত্মকতার কারণ কী? কোন ঘূর্ণিতে পড়ে তার এ-পরিণতি! ‘When we respond to the greatest narratives is the quality of mind transmitted to us through the language of characterization, motivation, description, and commentary – the intelligence and sensitivity with which the fictional events are related to the perceivable world or the world of ideas : the accuracy and insight of the artist’s picture of the brazen world in which we live, or the beauty and idealism of the golden world created in the fiction.’ রিজিয়া রহমান বলিষ্ঠ মেধায় ফিকশনের ভেতরে মানবমহিমার চিরসত্য অংশটি বুনে দেন – যেখানে সমাজ-রাষ্ট্র-জাতি – বিশেষত নির্মীয়মাণ ক্ষমতাকেন্দ্র-শাসনে আশ্রিত অনুগত ব্যক্তির প্রতিবন্ধিত প্রতিক্রিয়াগুলো নির্মোহ ও প্রশ্নোত্তর সংকলনে উঠে আসে। এ-সংকলন পরোক্ষ কিন্তু তা তীব্রতার স্বরে দৃঢ়ভাবে প্রত্যক্ষ। বস্ত্তত এমনটা সমাজ-প্রগতির নিরন্তর বিশ্বাস থেকেই 888sport live chatরূপে প্রোথিত। ফলে রক্তের অক্ষর শুধু কোনো কাহিনি-বিবরণী নয়, ‘the artist’s picture of the brazen world in which we live’ – যেটি সমাজের হতাশা, অবক্ষয়, দিক্ভ্রান্ততা ও নীতিভ্রষ্টতার প্রতিচিত্র। এ চিত্র-বিবরণে প্রচুর প্রশ্ন রেখে যায়। সে প্রশ্নটি কী? স্বাধীন 888sport appsে সকল মানুষের সমঅধিকার ও বাঁচার স্বপ্ন ছিল – তা সকলের হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ ইয়াসমীনের সম্ভ্রম নিয়েছে, সম্ভ্রমের বিনিময়ে পেয়েছে দেশ, দেশ দিয়েছে ‘বীরাঙ্গনা’র সম্মান; কিন্তু এ-সমাজে সে হয়েছে অস্পৃশ্য, ঘৃণ্য, অপাঙ্ক্তেয়। উচ্চবিত্ত শিক্ষিত সমাজের মানুষ হয়েও সে হয়েছে পতিত। স্বামী-পরিজন কেউ তাকে গ্রহণ করেনি। স্বাভাবিকভাবে নেয়নি। এ পুরুষ সমাজে স্বামীর লাম্পট্যের শিকার হয়ে তাই ঠাঁই হয়েছে পতিতালয়ে। ফিকশন এ-চরিত্রটিকে নিয়ে কী বলতে পারে? একি নিছক আইডিয়ার দাস? কোন স্বর্ণপৃথিবী তৈরি করতে পারেন কথা888sport live footballিক? রক্তের অক্ষরের শুরুটা এরকম :
সকালটা এখানে অকেজো নেশাখোরের মতো ঝিম ধরে পড়ে আছে। পলেস্তারা খসা ইট বের করা দেওয়ালের সরু রোদের রেখা বিনা পয়সার খরিদ্দারের মতো বেহায়াভাবে লুটোপুটি খাচ্ছে। ময়লা উপচানো ড্রেনের ধারে কয়েকটা শালপাতার ঠোঙা আর ছেঁড়া তেল-চপচপে কাগজ নিয়ে গৃহবিবাদে রত একদল কাক।
বর্ণনাটা আমাদের ত্রিশের লেখক প্রেমেন্দ্র মিত্রের মতো। ওখানে জীবন কেমন? রিজিয়া রহমান নির্ভার থেকে বাস্তবতার পিঠে গতি দেওয়ার জন্য কিছু উপমাকে অলংকৃত করেন। যেন 888sport live chatের এক সাহস সৃষ্টি করেন পস্নটের ভেতরে, যা ফ্যাকাসে জীবনের দিকে ইঙ্গিত করে। সদ্য-স্বাধীন দেশকে প্রশ্নবোধক করে তোলে। এ প্রশ্নের ভেতরে দুলে উঠেছে হতাশাগ্রস্ত মানুষ; ক্লিশে জীবনের মাত্রাকে তা দেখিয়ে দিচ্ছে, অভিব্যক্ত ব্যক্তি তাতে কোনোভাবেই 888sport apk download apk latest versionশীল নয় – তীব্রতর রূপে অসম্মানিত, নীতিহীন, বৈষম্যপীড়িত, অমত্ম্যজ, দাসত্বপ্রবণ। ভয়ংকর আশঙ্কা তার জীবন নিয়ে। গলিত প্রজন্ম যেন আক্ষেপকাতর। শুধু ইয়াসমীন নয়, একে একে কাহিনির পরত অবমুক্ত হয় – বরিশালের মমতা – যে-live chat 888sportে অভিনয়ের মোহে নগরে এসে এখন প্রতারিত এবং এই বৃত্তিই তার পেশা, পারুল এখানে এসেছে চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষে, খেপুপাড়ার জরিনারও প্রায় একই পরিণতি; আর মতি এসেছে হিন্দু-মুসলিম রায়টে – সব হারিয়ে এখানে আশ্রিত। কী এক কাহিনি সব! দালাল, প্রতারক ভর্তি সমাজে পরিবারের অভাব-অনটন-পরিত্যক্ততার সুযোগে সবাইকে পশুর মতো বেঁধে ফেলে যেন। উপায়হীন ফাঁসির দড়ি সকলের গলায়। কিন্তু শেষ পরিণতি কী? শরীর-মন কিংবা স্বপ্ন-সুখ – যাই হোক, তার তো পুষ্টতা দরকার, অসুখ-বিসুখ তো আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা – ফলে দিনগত সময় আর আয়ুক্ষয় হয় – এই শেষ পরিণতি! পতিতালয়ের ক্ষেত্র প্রস্ত্ততের পর ক্রমশ 888sport alternative linkে ঘনিয়ে আসে মুক্তিযুদ্ধ, তারপর একে একে প্রতিটি চরিত্রের বিলাপ আর্তস্বরের কাতরোক্তি প্রভূত হয়ে ওঠে আখ্যানে :
(ক) এ পাড়ায় এসে ইয়াসমীন জেনেছে পুরুষের রুচির কতোরকম ভেদ আর বিকৃতি আছে। তাই পিরুরও খরিদ্দার জোটে। জোটাতে ব্যস্ত হয় ওরা। খরিদ্দার না পাওয়া মানেই মালিকের হাতে নির্মম লাঞ্ছনা।
(খ) চারিদিকে পানির ছড়ছড়, কলকল শব্দে কুসুমের মনে হয় গোলাপজান বুড়ির মতো সেও যেন বৃষ্টিতে তলিয়ে যাচ্ছে। একটু শুকনো ঘর আর শুকনো বিছানার জন্য প্রাণটা আকুলি-বিকুলি করছে। কুসুমের চোখের সামনে গুঁড়ো গুঁড়ো অন্ধকার ঝরতে থাকে।
(গ) এ পাড়াটা এখন শব্দ আর গন্ধের জগৎ। গুন্ডা, দালাল, চিৎকার, কান্না, ঝগড়া, চটুল হাসি আর পাশবিকতার জগৎ। এ সময় মাঝে মাঝে ইয়াসমীনের দম বন্ধ হয়ে আসে। মনে হয় সারা পৃথিবীটা এখন এক পশুর হিংস্র থাবায় গোল বলের মতো গড়াগড়ি খেয়ে ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে।
এসবের ভেতরে একটা নতুন ইঙ্গিত দেন লেখক, যা আখ্যানকে একপ্রকার উচ্চতা দেয়। সেটি লেখকের অভিপ্রায় কিন্তু রুচি ও চিমত্মাসৌন্দর্যের কাঙিক্ষত দৃকপাত। প্রোটাগনিস্ট চরিত্রটিকে সে গল্প বলা শেখায়। আশা আর মর্যাদার সূত্রটি ধরিয়ে দেয়। জন্ম তো সহজ, বাঁচাটা কত কঠিন – কিন্তু মানুষ হয়ে বাঁচতে হবে। তাই বলে ‘তোরা নিজেদের কেবল বেশ্যা ভাবিস কেন? মানুষ ভাবতে পারিস না?’ – তাই কল্যাণ বা শুভচিমত্মার কথা বলে ইয়াসমীন। সে রাশিয়ার গল্প শোনায়। চীনাদের কাহিনি শোনায়। ওদের প্রতিবাদ আর অধিকারের কথা বলে। এ কি সমাজতান্ত্রিক আদর্শ? 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নও তো তাই ছিল। সে-আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য শরীর-দেহ বিক্রি বা যা খুশি তাই করা – দালালরা যা বলবে তাই করা – কামতৃষ্ণা নিবারণের এ প্রচলিত আচরণ এখানে আর চলবে না। ‘মানুষ মুক্ত হয়ে জন্মায় কিন্তু সর্বত্রই সে শৃঙ্খলিত’ – ইয়াসমীন রুশোর প্রতিপাদ্য করে, শৃঙ্খলাকে ঘৃণা করে। গোলাপীপট্টির লালসার রুক্ষ-প্রাসাদে সে যেন এক বৈজয়মত্মীর বিজলী!
কিন্তু 888sport alternative link তো শুধু বিষয় নয়! আখ্যানের ভেতরে নির্মিত বৃত্ত ‘perceivable world’-এর ছায়ায় মোড়ানো। পতিতার জীবনের সংবেদনা, তাদের শরীরকে পুঁজি করে খদ্দেরের মনোরঞ্জন-সামর্থ্য – পেছনে ফেলে আসা পুরনো জীবন, মাতৃত্ব কিংবা বিয়ে-সংসারের স্বপ্নবাসনা, পতিতালয়েও নায়কের স্ট্যাটাস বা মর্যাদা নিয়ে থাকা, উচ্চ অর্থের খদ্দেরের কাম্য পতিতা হওয়ার বাসনা, পতিতার জীবন ও স্বাভাবিক 888sport promo codeজীবনের দ্বন্দ্ব, 888sport promo codeর চোখে পুরুষের কাম্য দৃষ্টি বা পুরুষের চোখে কাম্য 888sport promo code, অন্তরে পুষে রাখা ক্ষোভ ও ক্রোধ, জীবন-ব্যর্থতার হাহাকার, হতাশা ও নৈরাশ্যের করুণ পরিণতি, ভবিষ্যশূন্য জীবনের খুঁটিনাটি সমন্বয়ে এক পোড়া বা ফসিল সভ্যতাকে শৈল্পিক অর্থসম্পন্নতা দান করেন লেখক। এ শুধু একপ্রকার বৃত্তিজীবীর চিত্র তাই নয়, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন 888sport appsের এক অব্যবস্থাপনার বিক্ষত রূপ উঠে আসে। ‘একসঙ্গে সবার খরিদ্দার এসে গেলেই সমস্যা। প্রথমজনকে ঢুকবার অধিকার দিয়ে বাকি দুজন বাইরে দাঁড়িয়ে ঘন ঘন ঘর খালি করার তাগাদা দিতে থাকে।’ … ‘এই বেশ্যাপাড়ায় কারো ব্যারাম-আজাব হইলে ডাকতর আহে কবে? ব্যারাম ধরলে হায়াত থাকলে বাইচ্যা উঠে। না হইলে মইরা যায়। ডোমে আইস্যা লইয়া যায়।’ … ‘যুদ্ধ যদি আমাকে বেশ্যাই বানাল তবে তার ওই ফলভোগ ওই ক্রিম খাওয়া লোকদের করতে দেব না। আমি বেশ্যা। বেশ্যাই হয়ে যাব।’ … ‘আপনাদের ভঙ্গি বলে দিচ্ছে যে আমি সমাজ ছাড়া মেয়ে। সরকার বোধহয় বারাঙ্গনা বলতে ভুলে বীরাঙ্গনা খেতাব দিয়ে ফেলেছে।’ – এসব অকৃত্রিম সংলাপ রিজিয়া রহমানের 888sport live chatশক্তির স্বাধীনতা। প্রতীকী চরিত্র কামাল রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত ও লুটেরা ধনিক শ্রেণির প্রতীক। ইয়াসমীন গোলাপীপট্টির অন্ধগলিতে কামালকে দেখলে সে ব্যর্থ এক সমাজ-রাষ্ট্রকেই যেন প্রত্যক্ষ করে। প্রশ্ন ছুড়ে বলে :
সমাজ কাদের নিয়ে? যারা এখানে বেশ্যার ঘরে উত্তেজনা কিনতে আসে, তারা কী বাইরের মানুষ? যারা বেশি পয়সা দিয়ে সুন্দরী বেশ্যাদের গাড়ি চড়িয়ে এখান থেকে বাইরে নিয়ে যায়, তারা সমাজের মানুষ নয়? আর যারা আমাদের লাইসেন্স কেনার টাকা তোলে তারা সমাজের বাইরে?
এরকম প্রশ্নবাণে রক্তের অক্ষরের ইয়াসমীন তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। পাশাপাশি কাসুম, জাহানআরার ভেতর দিয়ে আরেকটি বক্তব্যও আসে – ‘নেশার শরীর’ একসময় ফুরিয়ে গেলে তাদের যে পথে বসতে হয়! পতিতার শরীর না থাকলে খদ্দের থাকে না, তখন ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়া আর কি! তাই যে-জীবনের কোনো প্রত্যাবর্তন নেই – তার পরিণতি কেমন? সেজন্য যে-888sport promo codeরা স্বাভাবিক জীবনে আছে তারাও পতিতাদের ঈর্ষার কারণ। এ অন্য 888sport promo codeযন্ত্রণা!
রক্তের অক্ষর রিজিয়া রহমানের অসামান্য কাজ। এর ভাষাভঙ্গি, বর্ণনা, পরিবেশ প্রস্ত্ততকরণ, আঞ্চলিক ভাষার সংলাপ পূর্ণ 888sport live chat-কাঠামোর এক অনবদ্য চিত্রলিপি। মুখ্যত সমাজের ক্ষত চিহ্নিত করতে গিয়ে, নিজস্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছেন লেখক; বাংলা 888sport live footballে শরৎচন্দ্র, প্রেমেন্দ্র মিত্র কিংবা এ-সময়ে সেলিনা হোসেনের মতো লেখকদের সঙ্গে তুল্যমূল্য করে দেখা নয়; কিন্তু বিস্তর যে বিবরণী-সংকলন তিনি পাঠকের সামনে হাজির করেন, তাতে তাঁর পর্যবেক্ষণ ও পরিবেশন দক্ষতার অনন্যতা কিছুতেই অস্বীকার করা যায় না। পূর্বোক্ত ঘর ভাঙা ঘর 888sport alternative linkটির অধিকতর ও বর্ধিত-ঘনসংবদ্ধ পরিমার্জনা এ-888sport alternative linkের কাহিনি। এটি উত্তুঙ্গস্পর্শীও। আমাদের 888sport alternative link-888sport live footballে রক্তের অক্ষর একটি অনন্য সংযোজন, সন্দেহ নেই।
তিন
উত্তরপুরুষ (১৯৭৭) উত্তর প্রজন্মের অভিঘাত। এ-অভিঘাত ইতিহাসের, পূর্বজ মূল্যবোধের। কিছুটা নবীন-প্রবীণেরও। 888sport alternative linkটি পড়তে গিয়ে মনে পড়ে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের (১৯১৮-৭০) উপমহাদেশ (১৯৩৮-৪৬) 888sport alternative linkের কথা। সেখানেও পর্তুগিজ-আরাকান-বাঙালি জাতি-সংস্কৃতির মিশ্রণ ও মর্যাদার দ্বন্দ্বের স্বরূপ প্রকাশ ঘটেছে। সেটি তিনখ–র বৃহৎ 888sport alternative link। রিজিয়া রহমানও ইতিহাসপিপাসু। ইতিহাসের সঙ্গে নৃ-জীবন ও জাতি-কাঠামোর সূক্ষ্ম সংস্রবগুলো তাঁর আগ্রহের ক্ষেত্র। ফলে তিনিও চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গিবাজারে পর্তুগিজ বংশোদ্ভূত পরিবার অ্যান্টনি ডিক্রুজের উত্তরপুরুষ বনি ডিক্রুজের দ্বন্দ্ব; কিংবা এ-দ্বন্দ্বের নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব-প্রবণতা আবিষ্কারে নামেন। এক দ্বন্দ্বময় প্রজন্মবৃত্তান্তই উত্তরপুরুষ 888sport alternative linkে তুলে ধরেন। আলাদা ধরনের অঞ্চলবেষ্টিত একটি 888sport alternative link। প্রৌঢ় অ্যান্টনি ভালোবাসে পর্তুগিজ ইতিহাস-সংস্কৃতি এবং তার অতীত888sport sign up bonus। কিন্তু পুত্র বনি একেবারে তার বিপরীত। সে বঙ্গদেশের প্রেমানুকূল্য-ধন্য। কিন্তু বনির বাবা অ্যান্টনি ডিক্রুজের উলটো মানসিকতা এবং অবস্থানের পরিপ্রেক্ষেতে লেখক বর্ণনা করেন শ্যামল-সুন্দর প্রকৃতির প্রতি তার অনিমেষ ভালোলাগার কথা। সেটি ছড়ায় বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত। বনি ভালোবাসে রবীন্দ্রনাথকে। 888sport alternative linkে এসব বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় বোন লিসির বোহেমীয় চলাফেরা – এক পর্যায়ে জেরি ফার্দিনান্দের সঙ্গে সম্পর্ক এবং পর্যাবৃত্তে তার বিরূপ পরিণতি। বনির পরিচ্ছন্ন ও যুক্তিসিদ্ধ মন সবকিছু এড়িয়ে চলে এবং মংপুর জটিল ব্যবসায়িক চাতুরী থেকেও সে বেরিয়ে আসে। এরপর মূলত মিসেস ডিক্রুজের হাতেই পড়ে আখ্যানের যাবতীয় মীমাংসার পরিবেশ ও দায়ভার। বস্ত্তত, অ্যান্টনি ডিক্রুজের যে-ইতিহাস তাকে মাহাত্ম্যপ্রবণ করে পুত্র বনি তাকে দেখে ‘রক্তাক্ত’ হিসেবে। কারণ, বনি পর্তুগিজ সাম্রাজ্যকে সমর্থন করতে পারে না, যে-গির্জা সে দেখছে সেখানে একসময় ধর্মান্তরকরণের রক্তে নিমজ্জিত ছিল, ধর্ম-মানবতা-মনুষ্যত্ব চরমভাবে হয়েছে লাঞ্ছিত, বিপন্ন। তাই সে বলে : ‘কার্স! অভিশাপ। আমরা সবাই ভুগছি।’ এ পূর্বপুরুষের পাপ। লিসিকে সতর্ক করে বলে :
প্রায়শ্চিত্ত আমাদের সবাইকে করতে হবে। কারণ আমরা যে মধ্যযুগের ধর্মোন্মাদ দস্যু পর্তুগিজের রক্তবীজ। ক্রিশ্চিয়ানিটির ভাঁওতা দিয়ে আমরা কেউ রক্ষা পাব না। তার চাইতে ভুলে যা আমরা পর্তুগিজ গঞ্জালেসের উত্তর পুরুষ। ভুলে যা আমরা ক্রিশ্চিয়ানিটির রক্ষাকারী। শুধু মনে রাখ আমরা মানুষ।
এমন তুমুল অপরাধবোধে ছেয়ে যায় তার মন। উত্তর পুরুষের প্রতিনিধিত্বকারী বনি জটিল গোলকধাঁধায় পড়ে। সে কি অত্যাচারীর উত্তরাধিকার! এর প্রায়শ্চিত্ত কী? সে যদি লুণ্ঠনকারীর উত্তরাধিকার হয় তবে তার কণ্ঠে কীসের গান? এক ধরনের আত্মসংকটে নিপতিত হয় সে। রিজিয়া রহমানের 888sport app 888sport alternative linkের মতো এখানেও নায়ক প্রশ্নশীল। আত্মসংকট-তাড়িত চরিত্র – ভেতরে নিজের প্রশ্নই প্রস্ত্তত করে। প্রজন্ম-সংকট, আত্মসংকট, ইতিহাসের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন, নায়ক বনির ফিরিঙ্গি প্রেমিকা মারিয়া, এলিজা, মনিকা কেউই তাকে নির্বাচিত জীবন দিতে সমর্থ হয় না, কোনো প্রলুব্ধতাও আনে না। সে দুঃস্বপ্নের মতো পূর্বজের অত্যাচারের ইতিহাস আওড়ে বেড়ায়। চিত্তে তার অনুরণন মেলে :
বৃদ্ধা মায়ের একমাত্র কর্মক্ষম পুত্রকে গলায় রশি বেঁধে মায়ের চোখের ওপর দিয়ে অঙ্কুশের আঘাতে রক্তাক্ত করতে করতে টেনে নিয়ে জাহাজে তুলে অমানুষিক অত্যাচারে মেরেছে। পিতার সামনে হত্যা করেছে পুত্রকে। কিশোরী যুবতী গৃহস্থ কন্যাদের এই চট্টগ্রামে, কক্সবাজারে উন্মুক্ত হাটে অর্ধনগ্ন করে দাঁড় করিয়ে গরু-ভেড়ার মতো দরাদরি করে বেচেছে আরাকানি, মালাবরি, দিনেমার, ওলন্দাজ বণিকদের কাছে।
বনির তো এ অসহ্য! কিন্তু এর ঠিক বিপরীত অ্যান্টনি ডিক্রুজ। ইতিহাসের আনুগত্য, স্বীয় জাতিপ্রেম, 888sport sign up bonusচারণা তাকে পুলকিত করে। পূর্বজ আর উত্তর পুরুষের এ-চেতনাদ্বন্দ্বই 888sport alternative linkের উপলভ্য। জীবন তো একরৈখিক নয়! চট্টগ্রামে দীর্ঘ সময় ফিরিঙ্গি-আরাকান বসবাসের মিশ্রিত সংস্কৃতি, পরস্পরের মধ্যে সম্পর্ক, আর্থিক উন্নতি, উৎপাদন ব্যবস্থার সংস্রব এই বঙ্গীয় অঞ্চলে সংকরায়ণেরই অংশ। সেখানে কেউ পূর্ব-ইতিহাস মন্থন করে, কেউবা আত্ম-উদ্ধারে নতুন পথচলা শুরু করে; কিন্তু সত্তার সংকট অপসৃত হয় না। প্রজন্মান্তরে তা বয়ে চলে। কখনোবা তা কালের ধুলোয় মুছেও যায়। রিজিয়া রহমান এই পটভূমিতে একটি অঞ্চলের পরিচয়, জাতি-সংস্কৃতি, প্রজন্মদ্বন্দ্ব, আত্মসংকট, জটিল মনোসংশ্লেষ ও মুক্তির অভিপ্রায় বয়ান করেন। এরকম বিষয়ের 888sport alternative link আমাদের 888sport live footballে নতুন যোজনা সৃজিত করেছে। তবে এ-888sport alternative linkটির কাহিনির উৎস ও পরিণতিতে কিছুটা অসতর্কতা ও পরিচর্যার অভাব রয়েছে।
ধবল জ্যোৎস্না (১৯৮১) 888sport alternative linkে লেখকের চেতনাজাল বৈচিত্র্যের সূত্রে সম্প্রসারিত। আঞ্চলিক জীবনের ধারাপাতে দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার। জেলেজীবন ও রাবার বাগান শ্রমিক, কেন্দ্র মকবুল – যে উভয় পেশার সঙ্গেই নিজেকে যুক্ত করেছে। এ সংযুক্তির পেছনে অভাব, দারিদ্র্য, বঞ্চনা, প্রবৃত্তি, জৈবিকতা, অপরাধ, অস্থিরতা, দোলাচলতা প্রথাগতভাবেই আছে। এ-888sport alternative linkের 888sport live chatউচ্চতা তেমন পরিপক্ব ও সমৃদ্ধিজ্ঞাপক নয়। তবে বৈচিত্র্যপিয়াসী ঔপন্যাসিক যেভাবে বিচিত্র-সন্ধিৎসা নিয়ে কাজ করেন, সে-লক্ষ্যে মকবুল কিংবা ফাতেমা অনুসন্ধিৎসু চরিত্র। একদম ছড়িয়ে পড়েছে সমাজ-জীবন ও জৈবিক সংস্রবে। সেজন্য মূল্যবোধের টানাপড়েন ঘটেছে। জীবনে এসেছে উত্থান-পতন। বস্ত্তত, সেটিই মানবধর্ম। রক্তের অক্ষরের ইয়াসমীন ও ধবল জ্যোৎস্নার ফাতেমা এক নয়; কিন্তু স্বভাবের টানে, পরিবেশের চাপে – অন্য আলো এসে জুটেছে তার জীবনে। মকবুল-ফাতেমা জোড় বাঁধলেও বয়সে ফাতেমা নবীন, বেখেয়ালি মকবুল সেখানে না টিকলে সে গুলজারের দিকে ঝুঁকে পড়ে – সেটি আবেগের অচঞ্চল প্রবাহ, লেখক যাকে সূত্রবদ্ধ করেন : ‘ধবল জ্যোৎস্নার সুতোয় বোনা স্বপ্ন ছিঁড়ে গেল’ কিংবা ‘সাপের মতো জড়িয়ে ধরা’ – এমন সংলাপ শুভ-অশুভ ইঙ্গিত করে, যা জীবনবিচ্যুত কিছু নয়। রিজিয়া রহমানের 888sport live chatীসত্তার প্রধান ক্ষেত্র ব্রাত্য-অমত্ম্যজ মানুষের সংস্কৃতি তুলে ধরা। সেক্ষেত্রে অধিকার ও বঞ্চনার বিষয়টি বৃহত্তর আর্থ-দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে তাঁর সব রচনায় :
আত্মগত হয়ে হাঁটছে মকবুল। হাঁটছে আজ থেকে পনেরো বছর আগের বাতাসে সোনাদিয়ার চরের মাটিতে। সেখানে হাঙর শিকারি মকবুল ভাঙা নৌকা, ছেঁড়া জাল নিয়ে সাগরে হাঙর মারে। তবু পয়সা পায় না। তার বউ ছেঁড়া শাড়ি পরে চেউয়া মাছ ধরে শুঁটকি দেয়। মাছ না পেলে লবণ তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে নেয়। তবু অভাব মেটে না। মহাজনের কাছে কর্জের সুদ বাড়ে।
বুঝে নেওয়া যায়, ঘর ভাঙা ঘরের 888sport promo codeরা কিংবা রক্তের অক্ষরের নায়িকা আর এই ধবল জ্যোৎস্নার পাত্র-পাত্রীও একই লক্ষ্যাভিসারী। কিন্তু জীবনের জঙ্গমতা তো থাকবেই। মনের চাঞ্চল্য রুচি বদলাবে, জীবনের রাগ-অনুরাগ নতুন বসমেত্মর দিকে টানবে – সেটি সর্বদা সমাজ-মূল্যবোধের নিয়মে ঘটবে, এমনটা নয়। তা ঘটেওনি কখনো। ফাতেমা একসময় চলে যায় মকবুলকে ছেড়ে। যদিও শেষ পর্যন্ত লেখক উভয়কেই মিলিয়ে দিয়ে অন্য 888sport alternative linkের মতো আশাবাদী প্রত্যয়ের সীমারেখা টেনে দেন। যা হোক, যে-চরিত্র দৃশ্যমান তার পেছনের কর্ম-সংগ্রাম-বাস্তবতা কেমন সেটিই 888sport live chatের বিশ্বস্ততা, চরিত্র নির্মিতির ক্ষেত্রে তাই পেশা ও প্রাপ্তি এবং তৎসৃষ্ট সংকটের নিমিত্ত আখ্যানের কার্যকর শক্তি। সেটি গড়ে উঠেছে ধবল জ্যোৎস্নায়। দক্ষেণাঞ্চল মানেই নদী-সমুদ্রবেষ্টিত জনপদ। সেখানে যে-চরাঞ্চলকে (সোনাদিয়া, বাঁকখালি, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, চর-ওসমান) লেখক আখ্যানকেন্দ্র করেছেন, তাতে জেলে মকবুল তুমুল জঙ্গমী চরিত্র। আর মাছ ধরার চেয়ে হাঙর শিকার তার অধিক পছন্দ। এ-আনন্দের অসীমতায় হয়নি তার নির্ধারিত বসত কিংবা সচ্ছল অর্থকরী পরিবার-সংসারের স্বার্থ। কিন্তু সে হাঙরের নেশায় মত্ত। তাই অভাবী স্ত্রী সাবজান অসুখী। হাশেম রাজার হাত ধরে সে চলে যায়। মকবুল তাতে অখুশি হয়। তার আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগে। প্রতিশোধপ্রবণ হয়ে সে হাশেমকে খুন করে চলে যায় রামুর রাবার বাগানে। সেখানে সে ট্যাপারের কাজ নেয়। পেশার বদল ঘটে; কিন্তু এ-পেশা তার ভালো লাগে না :
মকবুলের মাথার মধ্যে ঝিমঝিম করে উঠল। মনে হয় মাইলের পর মাইলজুড়ে ছায়াচ্ছন্ন স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার রাবার বাগানের কারাগারে সে বন্দি। কোনো দিক দিয়েই একটা খোলা আকাশের নিচে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে পাচ্ছে না। জেলখানার গরাদের মতো সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে কেবল রাবার গাছ আর রাবার গাছ।
রাবার বাগানে আরাকানিরাও কাজ করে। আরাকানি-কন্যা ফাতেমা তার জীবনে আসে; কিন্তু হাঙরের স্বপ্ন মন থেকে যায় না। হাঙর শিকার তার রক্তের নেশা। সেজন্য সে ক্রিশ্চিয়ান মিশনারি থেকে টাকা ধার নিতে চায়, ছেকু বা গিরিবালার সাহায্যে কিছু করতে চায়। শেষ পর্যন্ত হয় না। একসময় ফাতেমাকে নিয়ে সে নিঝুম দ্বীপে চলে যায়। কার্যত, এই সংক্ষিপ্ত আখ্যানের দুটো দিক : এক. জেলেজীবন, দুই. রাবার শ্রমিকের সংগ্রাম। মকবুল জেলেজীবন থেকে বিতাড়িত হয়ে রাবার শ্রমিক হলে – পাখি আর হাঙর শিকারের নেশা তাকে পেয়ে বসে। মনে তার হাঙর আর পাখির বসতি। কিন্তু এ-জীবনে সে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। হাশেম নামক দস্যু-প্রতারক বা ছেকুর চোরাকারবারির প্রলোভিত অর্থে সে কিছু করতে চায় না, সেজন্য সে পুনরায় জেলেজীবনে ফিরে গেছে। শুধু সঙ্গে নিয়ে গেছে ফাতেমাকে।
তবে যেটি আগেই বলা গেছে তা হলো, মকবুলের সংসারের অভাব আর রাবার শ্রমিক ফাতেমার অভাব ও অস্তিত্ব সংকটকে লেখক বিষয়কেন্দ্র করেন। তবে এ-888sport alternative linkে লক্ষ্য তাঁর রাবার বাগান। সত্তাজাত চেতনায় লেখক রাবার বাগানকেই আখ্যানে গুরুত্ব দেন। বিচিত্র ও রহস্যময় জীবনের প্রতি তাঁর আগ্রহ। রাবারজীবনের বাস্তবতায় শ্রমিকরা নানাভাবে শোষিত। এ শোষণ প্রকৃতির, মালিকের, সমিতির বা মিশনের। তাছাড়া পরস্পরের হিংসা-বিদ্বেষ তো চরমে। চৈত্রের খরায় রাবার গাছ শুকালে কম রস পড়ে। তখন দৈনিকের শ্রমিকরা বেকার। কাজে থাকে শুধু ট্যাপাররা। ট্যাপারদের আবার লড়তে হয় সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে। সুপারভাইজার আবার বখরা খেয়ে বাগান শ্রমিকদের নানারকম কাজের সুযোগ করে দেয়। ওদিকে মিশনারিরা আছে ধর্মান্তরের কাজে। ফলে, এমনসব অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা আর লাভ-লোকসানের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ভালো থাকে না। এছাড়া আরাকানি-বাঙালি জাতিগত সংকটও কম নয়। তবু হ্লামে-ফাতেমা-ক্যেফ্র রাবার বাগানের উড়িয়া টিলার জীবনস্বপ্ন কখনো নতুন জীবনের কথা বলে। পূর্ব888sport sign up bonus তাদের আলোড়িত করে। উদ্বাস্ত্ত জীবনের মধ্যেও তারা কল্পনাবিলাসী হয়ে ওঠে।
সাধারণত পার্বত্য জীবনধারা সহজ নয়। চর-দ্বীপ-সমুদ্র-অরণ্য-টিলার বসতি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। প্রকৃতি এবং ক্ষমতাশীল মানুষদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেই তারা বেঁচে থাকে। খেয়ালি প্রকৃতি কখনো এদের আশীর্বাদ, কখনো অভিশাপ। চমৎকার বর্ণনা আসে লেখকের :
(ক) দুপুরটা এখানে কাঁচারঙা জাফরানি শাড়ির মত টিলায় টিলায় আর ধানক্ষেতের ওপর ছড়িয়ে আছে। নিরীহ নীল চেহারায় হাসছে। বর্মা পাহাড়ের নীলাভ আঁকাবাঁকা ঢেউ সুস্পষ্ট। জঙ্গলের বৃষ্টি ধোয়া সবুজ থেকে উড়ে এসে ঘুঘু আর টিয়ার ঝাঁক নেমেছে ধানক্ষেতে। … অল্প বাতাসেই বাঁশঝাড়ে মরমর শব্দ ওঠে। ঝরনার ঝিরঝির শব্দটার সঙ্গে বনের বাতাসে মিশিয়ে ফাতেমা যেন অন্য কিছু শুনতে পায়।
(খ) চর ওসমানের নাম হয়েছে নিঝুম দ্বীপ। সেবার তুফানে তো একটা প্রাণীও বাঁচেনি। এখন দু-চারজন লোকের বসতি হয়েছে। ফরেস্টের লোকেরা গিয়ে গাছপালা লাগাচ্ছে। বাঁধ দিয়ে নতুন বসতি হবে শুনছি। লোকজন নিচ্ছে ওখানে কাজ করবার জন্য, তুই চলে যা।
শেষ পর্যন্ত মকবুলের স্বপ্নেই 888sport alternative linkের যবনিকাপতন ঘটে : ‘নতুন দ্বীপে নতুন জেলে-বসতি হবে। জেলেরা মাছ ধরবে। হাঙ্গর মারবে। কারও সাহায্যে বা অনুগ্রহে নয়, নিজের শক্তিতে গড়ে উঠবে এক জেলে-পত্তনি। … সমুদ্রের চিরন্তন অনুশাসনের নীল ঢেউ উপেক্ষা করে চর ওসমান জাগছে।’ – এই তো আশাবাদ।
একাল চিরকাল (১৯৭৮) আদিবাসী জীবনচেতনার স্বরূপচিহ্ন। রিজিয়া রহমানের সবচেয়ে উল্লেখনীয় কাজ। এর আগে মহুয়ার দেশে (১৯৫৯) লিখেছেন তসাদ্দুক হোসেন। একাল চিরকাল সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর ধর্মীয়-সংস্কার, ঐতিহ্য, সংগ্রাম, মুক্তিচেতনাবিধৃত 888sport alternative link। হোপনা সরেন, চুবকা সরেন, সুরকা সরেনকে নিয়ে চবিবশ পরিচ্ছেদের 888sport alternative linkে প্রজন্মান্তরের ধারা বয়ে চলে; তাদের শোষণ-বঞ্চনা-পীড়নও চমৎকার উঠে আসে। একাল চিরকাল 888sport alternative linkে একপর্যায়ে সাঁওতাল অসমেত্মাষের ভেতর দিয়ে তেভাগার বিষয়টিও লেখক কাহিনিতে ধৈর্যের সঙ্গে প্রবিষ্ট করেছেন। এমন ক্ষুদ্র জাতিসত্তাভিত্তিক অনালোকিত বিষয়টি কাহিনিবদ্ধ করায় একদিকে
যেমন 888sport appsের 888sport alternative linkে নিষ্পেষিত ও বিলুপ্তপ্রায় সংস্কৃতির 888sport live chatগত সমর্থন তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে তেমনি শক্তিশালী ঔপন্যাসিক হিসেবে তাঁর দৃঢ় অবস্থানও প্রতিষ্ঠার প্রয়াস পেয়েছে।
চবিবশ পরিচ্ছেদের একাল চিরকাল 888sport alternative linkের কালপরিসর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে এবং সাতচল্লিশ-পূর্ব সময়ের। এটি প্রাসঙ্গিক সময় – কারণ, ব্রিটিশ-কর্তৃক রেল আসা এবং উপনিবেশ-শাসনসূত্রে পাদ্রিদের মিশনারি স্থাপন। সমালোচকের মন্তব্য : ‘সময় ও সমাজবিবর্তনের অনিবার্য টানে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যলালিত জীবনের রূপান্তরের ট্র্যাজিক সত্য উন্মোচিত হয়েছে রিজিয়া রহমানের একাল চিরকাল 888sport alternative linkে।’ এই ট্র্যাজিক সত্যটি কী? হোপনা ছিল শিকারি, চুবকা হলো কৃষক, সুরকা হলো রেলযাত্রী। এই পরিবর্তন কি সভ্যতাজ্ঞাপক! সময়ক্রমে তা আরো পরিবর্তনমুখী। আর এখন তো প্রযুক্তির উপাদান গ্রহণ করতে হবে সকলকে – এই-ই স্বাভাবিক। সময়প্রবাহের ভেতরে উপাদান গ্রহণের বিষয়টি যেমন যুক্তিযুক্ত, তেমনি টিকে থাকার সারস্বতও তার মধ্যে নিহিত। তাই তো তৃতীয় প্রজন্মের সুরকা রেগে গিয়ে বলছে : ‘রাজার দেওয়ানের মতো রাস্তাঘাট হাটবাজার তৈরি করেছি আমরা? আমরা পারি সাহেবদের মতো কলের উড়োজাহাজ, রেলগাড়ি, বন্দুক তৈরি করতে? আমরা তো শুধু পারি তীর ধনুক দিয়ে শিকার করতে আর বোংগার বলি দিতে।’ শুধু এমন সংস্কার-কুসংস্কার নয়, বাইরের শোষিত শক্তি দেওয়ান রাজা তো তাদের বঞ্চিত করছে। সম্পত্তি লুটে নিচ্ছে। ভূসম্পত্তি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। বিপরীতে তারা যে-প্রতিরোধ করছে, সেটি নানা কারণে হয়েছে পরাস্ত। কী কারণ? সাঁওতালদের সংস্কার-বিশ্বাসে দেবতাদের যে-ছায়া তা – তাই তাদের চরমভাবে পেছনে টেনেছে – এ তাদের সম্মুখে এগোতে দেয় না। তালাময়ী তো চুবকাকে কৃষক বানিয়েছিল, চুবকার স্ত্রীও তা মেনে নিয়েছিল; কিন্তু তালার মৃত্যু আবার ওই অশনিসংকেতে ভর করে। এ সংস্কার তো রক্তের মধ্যে প্রোথিত। তারা আবার হতাশায় পড়ে। এই হতাশার সুযোগ নেয় দেওয়ান রাজা। সংঘবদ্ধ সাঁওতাল সম্প্রদায় তা বুঝতে পারে। বোঙার অভিশাপ বা জীয়ো ঠাকুর মারাংবুরোর প্রতিরোধ তারা ক্রমশ ভাঙতে পেরেছে। অস্তিত্ব আর আত্মমর্যাদা এখন বড় হয়ে উঠেছে। অধিকার সম্পর্কে তাদের প্রশ্ন জন্মেছে। সংস্কার মুছে দিয়ে অন্ধকার ঘরের আলোর জানালা তারা খুলে দিয়েছে :
জানালাহীন ঘরে নিজেকে আটকে রাখলেই যেন সব অমঙ্গল থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। অথচ বাইরের অমঙ্গল থেকে কি রক্ষা পাচ্ছে সাঁওতালরা। সুরকা ছেলেবেলা থেকেই শুনে আসছে মরা-বাঁচা, রোগ-ব্যাধি, কল্যাণ-অকল্যাণ, সবই বোঙার ইচ্ছায় হয়। বোঙাকে খুশিতে রাখতে কত সাদা মুরগি পাঁঠা বলি দেওয়া হচ্ছে। তবু সাঁওতালদের জীবনটা কেন কেবলই অমঙ্গলের আঁচড়ে অসুস্থ হচ্ছে।
যে হোপনা দেবতার আশীর্বাদে বুনো হরিণ-মহিষ-নীল গাই শিকারকেই পেশা করে নিয়ে কৃষিকাজকে অনুকম্পা মনে করেছে; কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে ধানজুড়ি, চাঁচিয়া, খাগড়াবনে জুড়ে বসেছে কৃষির আবাদ, তখন পরাস্ত হয় শিকারির পেশা। বেসরার স্বামীর মতো তালাময়ীও তখন চুবকাকে কৃষির দিকে ঝুঁকতে বলে, স্বামীর আদেশ প্রত্যাখ্যান করে। কৃষক চুবকা পরে দেখেছে রাজার শোষণ, পাদ্রিদের প্রতারণার ফাঁদ। সেটি ক্রমশ বিস্তারলাভ করে চলেছে পরের প্রজন্মের মধ্যে। তারা সংকুচিত হয়ে পড়েছে কূটবুদ্ধির কাছে, অভাব আর দারিদ্রে্যর কাছে। সরল কৌম জীবনের সংস্কার, বিশ্বাস, মূল্যবোধ তাদের প্রতিরোধের শক্তি হতে পারেনি। মাঝে মাঝে কখনো তা সংঘশক্তির রূপ নিলেও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার অবকাশ থাকে না। ফলে সুদের ফাঁদে, কখনোবা চাকরির ফাঁদে, কখনো অর্থের ফাঁদে নিজের আনুগত্য পোষণ করেছে। তাই তো নিজ ভাষা-ধর্ম ছেড়ে কেউ হয় ধর্মান্তরিত, কেউ হয় রাজাসাহেবের দালাল। চুবকা নিহত হলে অচেতন মুংলা মার-ী ঠাকুরের সহায়তায় তার নাম মার্টিন লুথার সরেন হয়ে যায়। সুতরাং সব মিলে ‘সেরমা দিসিমে’র স্বপ্ন ব্যর্থ হয়ে যায়। কৌম জীবন হয়ে যায় পরিত্যক্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে দিনাজপুর জেলার বীরবাড়ির খাগড়াবন রেলওয়ে তৈরি হয়, পাদ্রিদের সঙ্গে মিশে যায় সাঁওতালরা – এ এক অপসৃত কৌম সমাজ! যার অনিবার্য পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে হারিয়ে গেছে
কৃষ্টি-ভাষা-জাতিগত অস্তিত্ব। অস্তিত্বশূন্য হয়ে তারা 888sport free betগরিষ্ঠের দলে মিশে গেছে। এর জন্য শুধু অভাব আর ক্ষুধাকে দায়ী করা যায় না। এক ধরনের শোষণ আর প্রভুত্বও দায়ী। যার পেছনে আছে দমন, লোভ আর ক্ষমতা। বস্ত্তত, তা বুর্জোয়া ব্যবস্থারই অন্যরূপ। তবে এখানে একটি নতুন দৃকপাত উন্মোচন করেন লেখক। তেভাগা আন্দোলনের সঙ্গে সাঁওতালদের সম্মিলিত প্রতিরোধকে ঐতিহাসিক সত্যে তুলে আনেন তিনি। দেওয়ান রাজা ঋণের চুক্তি ভঙ্গ করে লাঠিয়ালদের দিয়ে ফসল তুলে নেন। এ এক আদিবাসীদের নিঃস্বকরণ প্রক্রিয়ার সামন্ত প্রবৃত্তি। এ কূটকৌশলে সরল কৌম-জনতা পরাস্ত। যাতে শোষণ-ত্রাসনের মাত্রা বীভৎসরূপ লাভ করে। তবে এটা সত্য, এদের কেউ ধর্মান্তরিত হলেও যে অভাব হবে, তা নয়। আবার ভূমির শ্রমে নিয়োজিত হলেও তাদের সবকিছু মুক্ত হয়ে যাবে, তাও না। অভাব তাদের চিরন্তন। ধোঁকা আর ফাঁকির ফাঁদে আটকানো। এভাবে একাল চিরকালের জীবনসত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তবু ঔপন্যাসিকের অতুল প্রাণশক্তি আশাবাদের ধ্বজাই উড়িয়ে চলে। 888sport alternative linkে দেখা যায় একসময় রাজা পালিয়ে গেছে – পেছনে পড়ে আছে জ্বলন্ত সাঁওতালপল্লি। কার্যত তা আদিবাসীদের জ্বলন্ত সমস্যায় আঁধার – যেখানে তাদের জাতিগত অস্তিত্ব, নৃ-চিহ্ন, আত্মপরিচয় মুছে গেছে – ধর্মান্তরে সংকটাপন্ন হয়েছে তার পূর্বপরিচয় – সংস্কৃতিও মুছে গেছে। আদিবাসীদের যে প্রশ্নবিদ্ধ যাপনচিত্র তা একাল চিরকাল 888sport alternative linkে উন্মোচিত হয় – এ এক বিরাট জীবনসত্যের বড় দায় নিয়ে পাঠকের সম্মুখে উপস্থাপিত হয়, যা 888sport alternative link888sport live chatকে এক নতুন সত্যে দাঁড় করিয়ে দেয়।
মংলাছড়ি চা-বাগানের কাহিনি নিয়ে সূর্য সবুজ রক্ত (১৯৮১)। রিজিয়া রহমান ব্যক্তির সঙ্গে ইতিহাস-নির্ধারিত সমাজ-সংস্কৃতি ও শ্রেণি-শোষণচিত্র অবলোকন করেন। এ প্রত্যয়েই দায়নির্ভর ভাষায় রচিত হয় তাঁর 888sport alternative link। ভাষার ভেতরেই প্রতিকার-প্রতিরোধের প্রকাশ নির্ণীত। চেনা যায় হরিয়া, অর্জুন, চাঞ্চল্য, বিন্দিয়া, শ্রীমতি, লছমিদের। বাগান ঘিরে আবর্তিত এঁদের জীবন। এদের যজ্ঞ-পূজা-সংস্কৃতি-আচার আনুষ্ঠানিকতার প্রকাশ মিলেছে প্রথম কয়েকটি অধ্যায়ে। যথারীতি ফ্ল্যাশব্যাকে গিয়ে বাগানের ইতিহাস, ব্রিটিশ গার্ডেনারদের অত্যাচারের কথা, কুলিমেমদের পরিণাম বিবৃত হয়েছে 888sport alternative linkে। 888sport alternative linkের আরণ্যক পরিবেশ বর্ণনায় লেখক বিচিত্র বৃক্ষরাজির কথা যেমন বলেছেন, তেমনি আলো-ছড়ানো প্রকৃতির বিবরণও দিয়েছেন। বস্ত্তত অঞ্চলভিত্তিক 888sport alternative linkের মৌল কারুকর্ম তিনি বজায় রাখেন। এখানেও দুটো অংশ – একদিকে কুলিদের শোষিত জীবন, অন্যদিকে বাগানকর্তা ও অফিসারদের শোষণ। শ্রীমঙ্গলের স্পন্সর কোম্পানির চা-বাগান, ঋতুর পরিবর্তন, কুলিদের অস্তিত্বসন্ধানী চেতনা, কুলি-কামিনের সংকট-বঞ্চনা ইত্যাদি নিয়ে 888sport alternative link। এর কাহিনি অখ-। চঞ্চলা, বিন্দিয়া, শ্রীমতী, রজরমার মতো শ্রমিকরা শিউরাম দেশোয়ালের অধীনে বাইশ নম্বর মোকামে কাজ করে। কাজের ফাঁকে অকাজ, ফাঁকি দেওয়া, সুযোগ খোঁজা, অফিসারদের ধমক-অত্যাচার, রোগ-বিস্তার, শোক-উৎসব সবই আছে চা-বাগানের ফিল্ডে। যথারীতি মালিক-ম্যানেজারের লক্ষ্য তো শুধু মুনাফা। শ্রমিক স্বার্থের কোনো প্রশ্ন নেই। ব্রিটিশ আমল থেকে আজ অবধি এমনটাই হয়ে চলছে। উচ্চতর শ্রেণির দ্বন্দ্ব-ঈর্ষা প্রবল। ব্রিটিশের অধীনে ম্যানেজার আর এদেশীয় মালিকদের ম্যানেজারে বেতনে-মর্যাদায় পার্থক্য অনেক। এই পার্থক্যের রেশ ধরে পরস্পরের ভেতরে নানারকম জটিলতা তৈরি হয়। ঔপন্যাসিক মূলত শ্রমিক-স্বার্থ ও কামিনদের দুর্ভোগের চিত্র চিত্রণে অধিক মনোযোগী হয়েছেন। কিন্তু কাহিনির প্রয়োজনে তিনি বিস্তর চা-বাগানের সমস্যাকে নতুন আয়োজনে তুলে ধরেছেন। এদের সংস্কার-উৎসব আলাদা, সম্পর্কের বন্ধন তেমন দৃঢ় নয়। সেটি হওয়ারও কথা নয়। কারণ, স্বার্থ-আনুকূল্য। আর্থিক অনটনের উৎস বঞ্চনা ও ব্যক্তিস্বার্থ। আলোচিত অন্য 888sport alternative linkগুলোর মতো এ-888sport alternative linkেও শ্রম ও 888sport promo codeজীবনের অমত্ম্যজ দিকের প্রতি নজর ঔপন্যাসিকের। এ লক্ষ্যেই আখ্যান নির্মাণ করেছেন। প্রকৃতির বর্ণনাও সেই দৃষ্টিকোণে পরিচালিত। এবং তা যথাযথ। প্রকৃতির সঙ্গে বাস্তবতাকে গেঁথে দেন রিজিয়া রহমান :
হরিয়া এখন সোজা হয়ে দাঁড়াতে ভুলে গেছে। হরিয়া দাঁড়িয়ে আছে সেই পুরনো মাটিতে। হরিয়ার পরনে ছেঁড়া ধুতির টুকরো। সারাদিন পেটে পড়েছে এক পেয়ালা লবণ গোলা রং চা, আর এ মুঠো ছাতু। কাল হরিয়া তলব পাবে। তার সবটাই চলে যাবে মহাজনের কাছে আর পাট্টায়। হরিয়ার অনেক ধার। হরিয়ার ছেলেটা বাগানের গরুর পাল নিয়ে জঙ্গলে চরায়। চামেলী পাতা তোলে। আঙুল কেটে রক্ত ঝরলে চায়ের পাতা ছিঁড়ে ঘাস দেয় আঙুলে। তবু ফোঁটা ফোঁটা রক্ত ঝরে।
পর্যবেক্ষণটা দৃঢ়; লেখকের দায়িত্ব অকুণ্ঠ, ভাষা ক্ষিপ্র-তরঙ্গসংকুল গতি – ফলে চরিত্র নিঃসংকোচে অকৃত্রিমতায় প্রকাশিত। সূর্য সবুজ রক্ত আলাদা পরিবেশে, জীবনযাত্রার বিশেষত্বে, সংগ্রাম প্রতিরোধের শক্তিতে ভিন্ন যোজনা তৈরি করে। হরিয়ার মতো অনেক চরিত্র অমত্ম্যজ-অবহেলার ভাগ্য অস্বীকার করে অধিকারের চেতনায় সোচ্চার হয়ে ওঠে। আন্দোলন ছাড়া তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় না। অজয় ভট্টাচার্যের (১৯১৪-৯৯) কুলিমেম (১৯৭০) এ-ধারার একই চেতনার 888sport alternative link। তবে রিজিয়া রহমান আশরাফ, ইফতেখার, এলিস, রিণা, মহাজন ফয়েজ আলী প্রমুখ অভিজাত চরিত্রের আত্ম:সম্পর্ক, মর্যাদার দ্বন্দ্ব যেমন তুলে ধরেছেন, তেমনি দীর্ঘ ইতিহাসের অভিমুখগুলোও অবলোকন করে একপ্রকার প্রথা ভাঙার চেষ্টা করেছেন। আবার অত্যাচারী অফিসারের পাশাপাশি ত্যাগী অফিসারদের কথাও প্রকাশ করেছেন। এ লক্ষ্যে এটি সরল একরৈখিক বিবরণধর্মী 888sport alternative link হলেও চা-বাগানের পুরো চিত্রটি পাওয়া যায়। এই অকৃত্রিম 888sport live chatবিন্যাসে চা-শ্রমিকদের পূর্ণ জীবনের যে ছায়াপাত ঘটেছে – তা একপ্রকার সময়সাক্ষ্যকেই বহন করেছে বলে মনে হয়।
চার
888sport appsের জাতিত্ব ও নৃতত্ত্বের অস্থিকে অবলম্বন করে 888sport live chat-কল্পনার মেদমজ্জায় লেখা বং থেকে বাংলা (১৯৭৮)। বং এবং এলা নামের চরিত্র সেই অনার্য যুগ থেকে প্রতিরোধে কীরূপে নিজস্বতা পেয়েছে এবং স্বাধীনতা পেল তার ইতিবৃত্ত এই 888sport alternative link। প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক যুগের ইতিহাস, রাজন্য রাজত্বকাল, ভঙ্গুর সামন্তবাদ, উত্থিত পুঁজিবাদ, ইংরেজ শক্তি, স্বদেশিদের আন্দোলন, জাতীয়তাবাদী শক্তির উত্থান, বিভাগোত্তর পাকিস্তানি অপশাসন এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীন 888sport appsের ইতিহাস ও নৃতত্ত্বের বৃত্তান্ত বং থেকে বাংলা। এক্ষেত্রে বং এবং এলার বংশধর, প্রজন্মান্তর তৈরি হয় 888sport alternative linkে। তারাই 888sport alternative linkের কাহিনিকে এগিয়ে নিয়ে চলে। দশ অধ্যায়ে বিভক্ত 888sport alternative linkে বঙ্গালের সংগ্রাম ও প্রতিরোধ, সংস্কার, ধর্মীয় রীতি, কোমল প্রকৃতির বিহবলতা কাহিনিবৃত্তকে তৈরি করে। অনার্য বা ব্রাত্যকুল আর্য-প্রতিরোধে বাইদ্যা, পাইক্কী, কৈয়ারত নিরন্তর সংগ্রাম করে। ক্রমশ তাই গোত্র, সমাজ পেরিয়ে নির্ধারিত কালখ–র ধারায় এগিয়ে যায়। এই অনার্য প্রতিনিধিরাই 888sport alternative linkে বিভিন্ন খ– বিচিত্র নামে আবির্ভূত হয়। তারই ধারায় বাঙালিসত্তার বিকাশ, এবং পূর্ণায়ত স্বাধীনতা অর্জন।
বস্ত্তত লেখক, বাঙালির সময় ও সংগ্রামকে সচেতন ঐতিহ্যে প্রতিষ্ঠা করতে চান, দীর্ঘ সময়বিন্যাসের এ-আখ্যানে। কোন প্রবণতায় একটি জাতি-সংস্কৃতির হাজার বছরের সংগ্রামশীল জীবন ব্যাখ্যা করেন – তার উত্তর আছে 888sport alternative linkের শেষাংশে : ‘বং আর এলা নামে আড়াই হাজার বছর আগে দু’টি তরুণ-তরুণী সব হারিয়ে এই পাখি ডাকা নীল জল টলটল শাপলা ফোটা বিলের ধারে, এই নদীর পাড়ে আল ঘর গড়েছিল। সেই বঙ আল আজ হাজার হাজার বছরের বঞ্চনা লাঞ্ছনা আর যন্ত্রণার আবর্তনের মধ্য দিয়ে অনেক বিনিময়ে হল 888sport apps।’ স্বাধীন সার্বভৌম এ 888sport apps। এর ভিত্তিভূমি, ঐতিহ্য প্রজন্মান্তরে সংবাদ পুনর্গঠিত 888sport alternative linkে। সত্যিকার অর্থে, ঐতিহ্য সচেতনতা, জাতির ইতিহাস অনুসন্ধান, মিশ্র ধর্ম ও বর্ণের সংস্কৃতির পাদপীঠ উন্মোচনের একটা তাগিদ তীব্রতররূপে 888sport alternative linkটিতে প্রতিষ্ঠিত। স্বাধীন 888sport appsের জন্ম ও একটি জাতির দীর্ঘদিনের স্বপ্নই শুধু নয়, প্রতিবাদী চরিত্র হিসেবে শোষণের শৃঙ্খলমুক্তি, পাক-উপনিবেশে বঞ্চনার চূড়ান্ত পর্যায় থেকে অবমুক্তি – যেটি পৌঁছেছে ১৯৭১ অভিমুখে – আপামর বাঙালির স্বপ্নসাধ পূরণের সেই মন্দ্রিত সন্ধিক্ষণ!
বং থেকে বাংলা 888sport alternative link হিসেবে যতটা আকর্ষণীয় তার চেয়ে বেশি বাঙালি জাতির সংগ্রামমুখর ইতিহাসের ঘটনাক্রম উন্মোচনে। দশটি অধ্যায়ে বিভক্ত 888sport alternative linkটির একেকটি অধ্যায় যেন একেকটি সময়কে চিহ্নিত করেছে। প্রতিটি অধ্যায়ে নতুন নায়ক-নায়িকার পরিচয় মিলেছে; তাদের জীবনাচারে যুক্ত হয়েছে নির্দিষ্ট সময়। এজন্যই কাহিনি নয়, বরং সময়ের সূত্রই 888sport alternative linkের গতিকে রক্ষা করেছে, সামগ্রিকতা বজায় রেখেছে। প্রথম খ– মূলত বঙ্গীয় ভূখ–র প্রতিই লেখকের দৃষ্টি আচ্ছন্ন থাকে। বং আর এলার বিস্ময়মুগ্ধ দৃষ্টি, ভূমি আবিষ্কারের প্রয়াস, প্রকৃতিমুগ্ধতা, সংস্কার-কুসংস্কারের বন্দনা এমনটা লক্ষ করা যায়। অনার্য ভূমিতে আর্যদের আগমন বর্ণনায় বলা হচ্ছে :
এখানে এল একদিন দুটি ছিন্নমূল মানুষ। উত্তরের সমৃদ্ধশালী দ্রাবিড়ভূমিতে স্বর্ণ, রৌপ্য, তাম্র আর মণিমুক্তার লোভে হানা দিল স্বর্ণকেশী গৌরবর্ণ দীর্ঘকায় অশ্বারোহী যাযাবর আর্যরা। তাদের বর্বর অস্ত্রের আঘাতে শামিত্মপ্রিয় নিরীহ দ্রাবিড়েরা হলো ছিন্নবিচ্ছিন্ন। কিন্তু আর্যদের বিক্রম কেবল স্থলভূমিতে, জল বিচরণে তারা অপটু। তাই সেই স্থলেই বারংবার হানা দিয়ে তারা এক সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করল। অসংখ্য দ্রাবিড় পুরুষ নিহত হলো। 888sport promo codeদের লাঞ্ছিত করে করা হলো দাসী। শিশুদের বর্শার ফলকে বিদ্ধ করে বলস্নমধারী চর্ম-পরিহিত আর্যরা মহাউল্লাসে অগ্নিসংযোগ করল দ্রাবিড় জনপদে।
আর্য অত্যাচারে স্থানান্তর ঘটে, সমুদ্রচারী হয়, দলভ্রষ্ট হয়, আবার যাত্রা, আবার আশ্রয়। বং আর এলা আশ্রয় নেয় গাছের নিচে। ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব, অলৌকিক শক্তির দাপট, পুজো দেওয়া – এমনি করেই চলতে থাকে জীবন। চলার পথে আবার সাক্ষাৎ মেলে বাইদ্যা, পাইক্কী, কৈয়ারত এমন ভিন্ন বর্ণ-গোত্রের মানুষের সঙ্গে। আহারে বিহারে জীবনাচরণে তাদের নৈমিত্তিক সময়ের সঙ্গে মিশে যায় বং আর এলা। লেখক আসলে খ্রিষ্টপূর্ব আনুমানিক তিন হাজার বছর আগের ইতিহাস, ভূমির প্রতি দৃষ্টি দেন। এ ভূমিতে বেড়ে উঠতে থাকে বংগাল। কালু বংগালের ভূমিতে কিরাত কোচ বণিকদের আগমন ঘটে, বাইদ্যারা আসে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য। কিরাত বণিকদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ে, শক্তিশালীরা গোত্রপতি হয়, কিরাত নমসিন বিদেশি হলেও বংগালভূমি জনগোষ্ঠীর প্রতি আকৃষ্ট হয়। বুইনীর বন্ধনে নমসিন নতুন জীবনের সন্ধান খোঁজে। বুইনী উচ্চারণ করে – ‘আমি বাইদ্যা গোত্রের মেয়ে। নদী পানি নতুন চর বাদাবন এসব না দেখলে আমি বাঁচব না। আর তোমাকেও চাই ভিনদেশি কিরাত। কোল কিরাত, বুনা কৈবর্ত বংগালদের মত আমি নতুন গোত্র তৈরী করব।’ গোত্রপতি ভুলুর মৃত্যু হলে কালুর হাতে ক্ষমতা চলে আসে, বুইনী কালুকে অমান্য করে স্বাধীন গোত্রের ভূমির কথা ভাবে। কিন্তু হিংসা-দ্বেষ, প্রতিহিংসা ক্রমাগত জোরাল হয়ে পড়ে। কালু নতুন জনপদ, ভিন্ন বসতি সহজে মানতে চায় না – ‘শুধুমাত্র নিজ গোত্রের ক্ষমতা কব্জাধীন করেও সেই আদিম আকাঙক্ষার শামিত্ম নেই। দরকার যে আরো, সে দরকার অন্যকে পরাজিত করে আরো ক্ষমতা লিপ্সার আকাঙক্ষা।’
তৃতীয় অধ্যায়ে বং থেকে বাংলার কাহিনি অগ্রসর হয় এমন বার্তার সূত্র ধরে – ‘বৈদেশিক সভ্যতার ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয় প্রাধান্য-পুষ্ট উত্তরের আর্যরা জানতে পারে এই নদীবিধৌত অরণ্যময় ভূখ– গড়ে উঠেছে দামিল নিষাদ কিরাত জাতি অধ্যুষিত সমৃদ্ধশালী জনপদ। গঙ্গা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রের পলিবাহিত ভূমিতে সুবর্ণচ্ছটা।’ ব্রাহ্মণকুলের বিধান এবার মেস্নচ্ছদের ওপর চাপানো হলো। আর্যযোদ্ধারা পৌঁছে গেল রাঢ়, গৌড়, সমতট আর পু-্রনগরে। বিধ্বস্ত অঞ্চলে নীলাক্ষের মতো আর্যরা রয়েই গেল। বিনিকাদের স্পর্শে মুগ্ধ হলো। নীলাক্ষ বলে, ‘এই যাদুর দেশে এলে পাষাণ হৃদয়েও ভাবের নদী বয়ে যায় … এতো গান বাঁধো, ছড়া কাটো। … যোদ্ধাও অস্ত্র ফেলে হাতে বংশী তুলে নেয়।’ ব্রাহ্মণ তা-ব প্রবল হয়ে ওঠে, আচার-আনুষ্ঠানিকতার বাইরেও কর্মপ্রবাহে অস্থিরতা আনল, বঙ্গীয় ভূখ– বৌদ্ধ ও জৈন মতবাদ চালু হয়ে যায়। 888sport alternative linkের চতুর্থ অধ্যায় তীর্থংকরের উক্তিতে মেলে, ‘নিগ্রন্থরা দিগম্বর শ্বেতাম্বরের দলাদলিতে সত্যভ্রষ্ট, বৌদ্ধরা হীনযান, মহাযানের বিভাগে কলহলিপ্ত। তা না হলে তুমি কি ভাবতে পার প্রকৃত নিগ্রহ অহিংসার ধ্বজাবাহী হয়েও দাস ক্রয় করে, শরীরে জোঁক লাগিয়ে দাসের রক্ত পান করায়। একেই তারা বলে জীবে দয়া। বৌদ্ধ সংঘগুলিতে ভিক্ষুরা বৈরাগ্যের নামে আড়ম্বরপূর্ণ জীবনের প্রতি লোলুপ হয়ে উঠেছে। ব্রাহ্মণ ধর্ম বেদের মনগড়া প্রচার দ্বারা মানুষের মধ্যে জাতিভেদের কঠোরতায় ভয়াবহ। সত্য যুগে যুগে ঠিকই আসে। মানুষই তাকে বিকৃত করে তোলে ফলে মানুষেরই মুক্তি শামিত্ম কিছুই লাভ হয় না। বরং এই বিকৃত মত রাজ-রাজড়াদের হাতে অস্ত্র হয়ে দাঁড়ায়। আর হয় সাধারণ মানুষকে নিপীড়ন করাবার সহজ পন্থা।’ সময়ের সঙ্গে মানুষ নানা পর্বে বিভক্ত হয়ে যায়; ধর্ম সেখানে ব্যবহৃত হয় শোষক বা প্রতারকদের শিখ-ী হিসেবে। কারাগারে বন্দি অবস্থায় নীলেন্দ্র এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায় না; সে শামিত্ম চায়, মুক্তি চায়। দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মধ্য দিয়ে, জোটবদ্ধ সংগ্রামের মধ্যে কীভাবে মুক্তি আসবে এটাই প্রশ্ন। পু-্রনগরের ব্রাহ্মণ্য প্রাসাদে সমতটের দুবাক অঞ্চলের স্বাধীন হবার খবর আসে, অনংগভট্ট, শীলভদ্রের মধ্য দিয়ে সমতটের ইতিহাস বিবৃত হয়। গুপ্ত শাসনাধীন হলেও স্বাধীন বংগালরা এর অধীনতা অস্বীকার করে এবং ব্রাহ্মণ্যদের প্রতি বিদ্রোহস্বরূপ তারা বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা নেয়। এ সময়েই বৌদ্ধধর্ম চরম প্রসিদ্ধি লাভ করে। গুপ্ত সাম্রাজ্যের পর রাজা শশাঙ্কের রাজত্বকালের পরিচয় মেলে পঞ্চ গোপাল চাঁদ, ভিখু ও চম্পার জীবনধর্মের মধ্য দিয়ে। ধর্মরক্ষকরা কখনো পরিণত হয়েছে রাজ্যরক্ষকে, কখনো নিজের কীর্তিকে ধর্মের চেয়ে বড় করে দেখেছে। শুধু ব্রাহ্মণ্য নয়, বৌদ্ধ ধর্মেও আচার্যদের ধর্মের নামে নিজেদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার প্রয়াস লক্ষ করা যায়। এবং যথারীতি সাধারণ মানুষ, স্বাধীনচিত্তে পুরোহিতদের মতো আচার্যদেরও গ্রহণ করে না। রাজা মহীপালের বিরুদ্ধে কৈবর্ত বিদ্রোহের সংবাদ আসে পঞ্চ গোপালের 888sport sign up bonusচারণে। সত্যেন সেনের বিদ্রোহী কৈবর্তের নায়ক দিবেবাকের সঙ্গে ইতিহাসের সত্যতার মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
888sport alternative linkে ষষ্ঠ পর্বে রামচরণ কাব্যরত্নের সঙ্গে কমলাকামেত্মর দ্বন্দ্বের শুরু; ভজহরির পালা রচনা, কমল-মহুলার প্রণয় ও কৈবর্ত সমাজে কমলের মেলামেশার মধ্য দিয়ে। কুলীন সম্প্রদায় রক্ষায় কাব্যরত্নের আদেশে ভজহরির সমাজচ্যুতি; এর মধ্যে ত্রাণকর্তা হিসেবে ঈশান মলের আবির্ভাব, ভজহরির সপরিবারের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ ইত্যাদি 888sport alternative linkে একটা পরিবর্তিত সময়কে জানা যায়। কৈবর্তপাড়ায় আগুন জ্বললে কিংবা মহুলাকে নির্যাতন-অপহরণ করলেও রামচরণের ধর্ম রক্ষা হয় না। লেখকের মেসেজ :
জাতিচ্যুত ব্রাহ্মণরা বিরস মনে রাঢ়ে ফিরে এসে মেস্নচ্ছকন্যাদের বিবাহ করে এদেশেই স্থায়ী হয়ে যায়। এই ব্রাহ্মণদের মৃত্যু ঘটলে তাঁদের মুখাগ্নি করার জন্য ব্রাহ্মণপত্নীর গর্ভজাত পুত্ররা এদেশে আগমন করে। তারাও কন্যাকুব্জের ব্রাহ্মণ সমাজ দ্বারা বিতাড়িত হয়ে আচারভ্রষ্ট ব্রাহ্মণ হয়ে এদেশে বসবাস করতে থাকে। এই ব্রাহ্মণদের বংশধররাই রাঢ়ী বরেন্দ্রী ব্রাহ্মণদের উত্তরপুরুষ। আর সাতশো বামুনদের পূর্বপুরুষরা ছিল জাতি কিরাত। পেশায় শিকারি। এই কিরাত পাখি শিকারিকে উপবীত পরিয়ে বংগালের রাজা আদিশূর ব্রাহ্মণ উপাধি দান করেছিলেন।
তুর্কির আগমন ঘটে, সুলতানেরা ক্ষমতায় আসে। হায়াত মাহমুদ খান বাউল-বৈষ্ণবের দেশে এসে পৌঁছে। নমসিন যেমন
বুইনীর প্রেমে, নীলাক্ষ যেমন নির্বিকার; কমল-মহুলার মতো হায়াত মাহমুদ ও রূপসীর প্রণয়ে যথারীতি বাধা পড়ে।
বাংলায় সুবাদারদের রাজত্বকাল, মারাঠা-বর্গির আক্রমণ, মারাঠি শাসন, অনাহারে প্রপীড়ির মানুষের হাহাকার, ফারলং-রেনীর মতো নীলকুঠিয়াল ও পদলেহনকারী জমিদারদের হাতে কৃষক অত্যাচার 888sport appsের শোষণের ইতিহাসকে 888sport alternative linkে চিত্রিত করেছে। একই সঙ্গে এ-পর্বেও ঈশান মল কিংবা দিবেবাকের মতো বেরিয়ে এসেছে হারাধনের বিদ্রোহ। ‘ছত্রভংগ দিশেহারা চাষীদের এই আচমকা আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলবার নেতৃত্ব নিয়ে এগিয়ে এল হারাধন। দুদিন দুরাত প্রতিরোধ টিকিয়ে রাখল নীল চাষীরা। প্রতিজ্ঞায় অটল হারাধন। এদেশের মাটি থেকে শুধু নীলের চারা নয়, ইংরেজের অস্তিত্বকে মূলোচ্ছেদ করবার প্রতিজ্ঞা ভাল।’ 888sport alternative linkের শেষ অধ্যায়টি নির্মিত হয়েছে পাকিস্তান ও ভারতের জম্মু, রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য সংগ্রাম, পঁচিশে মার্চের যুদ্ধ-তা-ব এবং মুক্তিযোদ্ধা মিন্টু ও রমিজার মিলনে স্বাধীন 888sport apps প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পাকিস্তানে রাষ্ট্রভাষার প্রশ্ন নিয়ে আনোয়ার, সাবের, জমিলার মতো কিছু মধ্যবিত্ত চরিত্রের সংশয়, দ্বিধাদ্বন্দ্ব, পক্ষ-বিপক্ষ মত ইত্যাদি উঠে এসেছে। সুযোগসন্ধানী ও সুবিধাভোগী মধ্যবিত্ত নিজেদের নিরাপত্তা এবং আশ্রয়ের নিশ্চয়তা চায়। সেজন্যই হয়তো মঞ্জুররা একাত্তরে রাজাকার বনে যায়। কিন্তু গোটা 888sport alternative linkে সামগ্রিকতা রক্ষা হয় তিন হাজার বছর আগে বং ও এলার ক্ষুদ্র ভূখ– বসতির মধ্য দিয়ে। ‘হাত ধরাধরি করে ভেজা মাটিতে দুজোড়া পায়ের ছাপ এঁকে ওরা দাঁড়াল পানির ধারে। গোধূলীর সোনালী আভা যেন গৌরবের আধার ছড়িয়ে দিল দুটি মানব-মানবীর ওপর, যেমন দিয়েছিল হাজার হাজার বছর আগে।’
রিজিয়া রহমান 888sport alternative linkে স্বাধীন বঙ্গীয় ভূমির প্রতিবাদী চরিত্রকে স্বীয় চেতনায় তুলে আনেন। এখানে কাহিনি, চরিত্র কিংবা 888sport live chatের কলাকৌশলের চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে হাজার হাজার বছরের ইতিহাস বা ঐতিহ্যের অন্বেষণ। অন্য 888sport alternative linkের মতো এতে উচ্ছ্বাস কম, ইতিহাসের সরলরেখায় নির্মিত পস্নট, চরিত্র-উত্তেজনা কম; ঘটনার প্রতিও তেমন আগ্রহ থাকে না, যখন ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় লেখক নির্দিষ্ট চরিত্রগুলোকে ফ্রেমে তুলে আনেন। সাড়ে তিন হাজার বছরের ইতিহাস-নৃতত্ত্ব তুলে আনতে গিয়ে চরিত্রের অভ্যন্তরীণ সংকট কিংবা মনস্তত্ত্বের দিকে লেখকের তেমন নজর পড়েনি। ইতিহাসের খিলানে মানব চরিত্রের বৈচিত্র্য অনুসন্ধানে তৎপর না হয়ে খুব দ্রম্নত একাত্তরের কালসীমায় পৌঁছে যান লেখক। এমনটায় লেখকের উদ্দেশ্য সিদ্ধি হয়েছে, কিন্তু রচনার শৈল্পিক-সাফল্যের বিচ্যুতি ঘটেছে। কার্যত, লেখকের বিশ্বাস ও অঙ্গীকারের প্রতিফলনেই বং থেকে বাংলা 888sport alternative linkটি রচিত। এক্ষেত্রে 888sport alternative linkের রস আহরণের চেয়ে পাঠক একটি জাতির নিরন্তর সংগ্রাম এবং জাতি গঠনের পূর্বাপর ইতিবৃত্তকেই অনুধাবন করতে পারবেন। এতে 888sport alternative linkের গুরুত্ব মূলত ইতিহাসের চরিত্রের প্রতিই নিবদ্ধ থাকে – বোধ করি এইটিই লেখকের দায়বদ্ধতা।
পাঁচ
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেলুচিস্তান বিদ্রোহের পটভূমি এবং কালাত যুদ্ধ নিয়ে লেখা 888sport alternative link শিলায় শিলায় আগুন (১৯৮০)। বঙ্গীয় ভূখ–র বাইরের ঘটনা হলেও দেশপ্রেম ও স্বাজাত্য চেতনা তো কোনো বৃত্তেই আবদ্ধ নয় বইকি। রিজিয়া রহমান এ-888sport alternative linkেও সত্যনিষ্ঠ ও দায়িত্বশীল। অলিখিত উপাখ্যান (১৯৮০) 888sport alternative linkটির চরিত্র মধুসূদন দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। সময়কাল উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ। পাওয়া যায় চিরস্থায়ী বন্দোবসেত্মর পরিণতি, সরালীয়ার জমিদার মিসেস মার্গারেট মোরেলের অত্যাচার, ছেলে হেনরী মোরেল, ম্যানেজার হেইলী, নীল ব্যবসায়ী উইলিয়াম হান্টের শোষণ-নিষ্পেষণ চিত্র। এর বিপরীতে মেলে প্রতিরোধী মানুষ রহিমউল্লা, হোসেন আলী, জোহরা প্রমুখ। ভূমি-বিস্তার, দাদন গ্রহণ, নীল চাষ ইত্যাদির সঙ্গে কৃষকদের ভাগ্য জড়িত; সর্বস্বান্ত হয় তারা। নেটিভ ও ইংরেজ দ্বন্দ্ব অধিকারের, আধিপত্যের। নেটিভদের পক্ষে দাঁড়িয়ে মধুসূদন কী করবেন; দীনবন্ধুর নীলদর্পণের 888sport app download apk latest versionেই কি তাঁর দায়িত্ব শেষ? আর বঙ্কিম নেটিভদের পক্ষে আইনি লড়াই করেছেন কিন্তু সাজার বদলে আইনের ফাঁক গলিয়ে বেরিয়ে এসে বলছে – ‘ভুলে যেও না তুমি একজন নেটিভ। এবং আমি একজন ইংরেজ।’ প্রতিবাদী রহিমউল্লা ইংরেজদের গুলিতে নিহত, তবে অত্যাচারী মোরেলদের বিচার কে করবে। অলিখিত উপাখ্যানের শেষে অসহায় ‘ডেপুটি’ বঙ্কিমের আত্মগস্নানি লেখা হয়। তবে তা করতে গিয়ে কোনো চরিত্রই তৈরি হয় না, নিছক সময়ের 888sport world cup rateই লেখা হয়। এমন 888sport alternative linkে চরিত্র সৃষ্টির জন্য যে সজাগ সহানুভূতি ও ধৈর্য দরকার – তা 888sport alternative linkকারের মধ্যে দৃষ্ট হয়নি। তাঁর অন্য 888sport alternative link প্রেম আমার প্রেম (১৯৮৫), অরণ্যের কাছে (১৯৮০), ঝড়ের মুখোমুখি (১৯৮৬), একটি ফুলের জন্য (১৯৮৬), শুধু তোমাদের জন্য (১৯৮৮), হারুণ ফেরেনি (১৯৯৪), হে মানব মানবী (১৯৮৯), আবে-রওয়াঁ (২০০৩) প্রভৃতি।
ছয়
রিজিয়া রহমান নিরন্তর লিখেছেন। 888sport alternative link লিখে তিনি আধুনিক 888sport alternative link888sport live chatের শর্তকেই বদলে দিয়েছেন। রূপান্তর ঘটিয়েছেন। অমত্ম্যজ-আদিবাসী জনজীবন, শ্রম ও সংগ্রামশীলতা, 888sport promo codeর মূল্য ও মর্যাদা – তাঁর 888sport alternative linkে পেয়েছে নতুন সংজ্ঞার্থ। তাঁর সব 888sport alternative linkই যে গুরুত্বপূর্ণ সেটি বলা যাবে না। কিন্তু বক্ষ্যমাণ 888sport alternative linkগুলো তো বটেই, এর বাইরেও সিরিয়াস কিছু 888sport alternative link আছে, যেখানে তাঁর শৈলী – স্বতন্ত্র ও সম্মুখ দিকচিহ্নজ্ঞাপক। 888sport alternative linkের পাশাপাশি রিজিয়া রহমান গল্পও লিখেছেন। অগ্নি-স্বাক্ষরা তাঁর উল্লেখনীয় গল্পগ্রন্থ। এ-আলোচনায় কয়েকটি 888sport alternative linkের মধ্য দিয়ে তাঁর মৌলিক চেতনাটি ধরার প্রয়াস পাওয়া গেছে। সেখানে বলা গেছে, উপর্যুক্ত 888sport alternative linkের যে ভিত্তি ও প্রসার তা নিছকই কোনো আখ্যান নয়, পূর্ণ দায়বদ্ধতা এবং তীব্র পর্যবেক্ষণ শক্তিতে তিনি নিজস্ব 888sport live chatক্ষেত্রটি বেছে নিয়েছিলেন। তাঁর এ-নির্বাচন পরিশ্রমী এবং ধ্রম্নপদী ঢংয়ের। এজন্য যেমন অভিজ্ঞতা দরকার, তেমনি প্রয়োজন সৃষ্টিশীল মেধার। লেখকের এমন মেধার মূলে ছিল নিপাট প্রগতি-বিশ্বাস। সেজন্য তাঁর রচনায় অঞ্চলভিত্তিক শ্রমী মানুষের জীবন, 888sport promo codeর অধিকার-চেতনা, সংগ্রাম ও জঙ্গমী জীবনের প্রতিচ্ছবিকে অকৃত্রিমভাবে তুলে ধরেছে। তাঁর আরো একটি দিক, জাতি পরিচয় ও নৃ-ধারণার ঐতিহ্যকে উপলভ্য করা। রিজিয়া রহমানের কোনো লেখাই রাজনীতি-বিশিস্নষ্ট নয়। 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধ এক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই গুরুত্ব গর্ব ও উচ্চাশার। তবে 888sport live chatী হিসেবে তিনি কোনো একচক্ষু নীতি প্রয়োগ করেননি। প্রকৃত 888sport live chatী তা করেনও না। ফলে, দেশ-জাতি-সংস্কৃতি-মুক্তিযুদ্ধ ছিল তাঁর চেতনার অহংকার। সেই অহংকার থেকেই তাঁর সব রচনা – যেখানে শেষ পর্যন্ত আশাবাদই প্রতিধ্বনিত হয়েছে। রিজিয়া রহমানের প্রতিনিধিত্বমূলক কিছু লেখার অকিঞ্চিৎকর আলোচনা এখানে প্রস্ত্তত করা হলো। সেটি স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। তবে 888sport appsের কথা888sport live footballে যে তিনি প্রতিনিধিত্বশীল লেখক, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁর সৃষ্টি সর্বদা মাটি-মানুষ ও আবহমান বাংলার বৈচিত্র্যের কথাই বলবে। তিনি কর্মগুণে আমাদের মধ্যে 888sport apk download apk latest versionর সঙ্গে 888sport app download for androidীয় হবেন। তাঁর পাঠ আমাদের প্রেরণা দেবে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.