এই কোভিড মহামারির সময়ে, যখন মুঠোফোনে এক-এক করে মুছে ফেলতে হচ্ছে প্রিয় মানুষের নাম্বার, যখন দূরবর্তী জগতের মানুষ ছাপিয়ে ব্যক্তিগত নৈকট্যের বলয়ে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়ে গেছে, তখন চিত্রক গ্যালারিতে জমেছিল ছবিপ্রেমীদের ভিড়। অনেকে সমবেত হয়েছেন, কেউ কেউ বন্ধুদের সঙ্গে অনেকদিন পর দেখা হবে বলে এসেছেন। সবার কাছেই খানিক স্বস্তিকর ছিল এই মিলনমেলা। এ যেন বাড়ির বাইরে এসে অনেকদিন পর পরিচিত পৃথিবীতে নিশ্বাস নেওয়া। বন্ধুদের সঙ্গে অনেকদিন পর দেখা হওয়া ছিল আনন্দময়। উপলক্ষ ছিল নিসার হোসেনের 888sport live chatপ্রদর্শনী, নাম ছিল ‘ষাট বছরের খতিয়ান’। নামটি অভিনব। ক্যালেন্ডারের সময় আর ইতিহাসের সময় মেলে না কখনোই। মনে হয় যেন কৈফিয়ত, মনে হয় ষাট বছর মাত্র – কত কিছু বাকি, আবার মনে যেন শঙ্কা দুলে ওঠে, আর কতদিন বাকি? কে জানে? হঠাৎ মনে হয়, এই মৃত্যুময় সময়ে ষাট বছর কম কিসে? জরা গ্রাস করতে পারেনি এখনো, মৃত্যুও নয়। এখনো বিপুল জীবনের আহ্বান। এখনো যৌবনদীপ্ত যুদ্ধে যাওয়ার মতো দিন পড়ে আছে। এই সময়স্পন্দন যেন জাগিয়ে রেখেছে 888sport live chatীকে। মনোরম এক বসন্তের বিকেলে প্রায় ৯৩টি চিত্রকর্ম নিয়ে রেট্রোস্পেকটিভের এই আয়োজন যেন শুধু 888sport live chatীকে বা তাঁর কাজকে বোঝার আহ্বান নয়, এ যেন সময়কে বোঝা। রাষ্ট্রকে বোঝা। মানুষের সম্পর্ককে বোঝা। যুক্তি আর হৃদয়ের মধ্যে একটা বিস্ময়ের মরু শিবির তুলে দেওয়া।
সুতি কাপড়ের ওপরে মণ্ড মাখিয়ে যে-ছবি আঁকা হতো একদিন, আমাদের ইতিহাসে তার চিহ্ন এখন আর নেই কোথাও। আধুনিক 888sport live chatীরা সেই 888sport sign up bonus ভুলেছেন; কিন্তু এই প্রদর্শনী সেই দিনের কথা মনে করিয়ে দেয়। 888sport live chatী খনিজ আর উদ্ভিজ্জ পদার্থ থেকে রং যেন নিজ হাতে বানান। এই রঙের জৌলুসে তাই একটা অকৃত্রিমতা আছে, রঙের গভীরতা বজায় রয়েছে। উজ্জ্বলতাও আশ্চর্য। চিত্রিত পুঁথির পাতায় যেমন করে মূর্তি সমাবেশ মনের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততার সাড়া জাগায়, তেমনই অনুভূতি জাগায় এই ক্যানভাস। 888sport live chatী যেন রেখার সমাহারে জীবন্ত করে তুলেছেন এই ক্যানভাস। তিনি যেন পাল যুগের 888sport live chatীর মতো রেখা অঙ্কনে নিপুণতা হারাননি কোথাও, কিন্তু দেহে গতি, তাদের কর্মকাণ্ড বাস্তবিকভাবে ফুটে থাকে।
888sport live chatীর ছবিতে পুড়ছে নিঃশব্দে প্রকৃতি আর জীবন। এই দগদগে আগুনের মধ্যে রংহীন গ্যাসও আছে – এমনই সপ্রতিভত ক্যানভাস। সোডা পানির মতো সামান্য গন্ধযুক্ত মনে হবে এই আগুনকে। 888sport live chatীর ক্যানভাসে সেই দগদগে ক্ষত উন্মুক্ত হয়ে আছে। এর রং লাল আবার কখনো কালো। এই রেখার ধাঁচকে অটোমেটিজম বলা যেতে পারে, নির্বাপিত হয় না সে। মনোজগতের খেয়ালে সে নিরন্তর নিশ্চিন্ত, স্থাণু
নির্মিত বচনকে ভেঙে ক্রমশ বিদ্যুৎময় গতিতে এগিয়ে চলে। ছবির জমিন কারুকৌশলের মধ্যে চিত্রবিদ্যার শিক্ষিত তুলির কোনো ছাপ নেই। 888sport live chatী যেন পাল যুগের 888sport live chatীর পটচিত্র সাজিয়েছেন। সেখানে আলোছায়ার তফাৎ দেখানোর কোনো কসরত নেই। পরিপ্রেক্ষিতের বালাই নেই। কেবল বর্ণবিন্যাসে জীবন্ত হয়ে উঠছে অঙ্কিত ঘটনাবলি। চিত্রিত অবয়বের পট যেন সেই প্যানডোরার দুঃখের বাক্সের ডালা খুলে ফেলেছে। তাই সব হিংস্র ঘাতক বেরিয়ে পড়েছে। 888sport live chatীর ছবিতে এখন পীতাভ রং, নীল রঙের প্রাণীরা ঘুরে বেড়ায়। অচেনা এদের অবয়ব। অতিবেগুনি রশ্মির বিষ তাদের দেহে, তার প্রভাবে উদ্ভিদের কোষের মতোই বিষাক্ত ও বিকৃত দানব সে আজ। ক্যানভাসে রঙের জৌলুস আছে; কিন্তু তা প্রয়োগের নৈপুণ্যের নিবিষ্টতা নেই। গ্রীষ্মে চৈত্রের দাবদাহের মধ্যে এই রং যেন ভিত্তিচিত্রের মতো জেঁকে বসে আছে। ছবির ক্যানভাসের বাইরেও দেয়ালে হাত দিয়ে কালো রঙের দগ্ধতা বিন্যস্ত করেছেন 888sport live chatী। এ যেন বুর্জোয়া রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে 888sport live chatীর হাতের ইনডেক্স। তাঁর ছবি কি নতুন ধরনের সম্পর্কের কথা বলে? ছবির মধ্যে কোনো শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার জায়গা নেই। দমবন্ধ হয়ে আসে। মনে প্রশ্ন আসে, চিত্রিত ক্যানভাসের ভরকেন্দ্র কোথায়? কোনো নিয়ম-বন্ধনের মধ্যে পড়ে না তাঁর ছবি।
পরিবেশ দূষণের দায়, গাছ কাটার দায় আজ কার? অনেক প্রশ্ন মনে আসে। পুঁজিবাদের প্রলোভনের শিকার আজ আমাদের বিশ্ব। মানুষের মধ্যে অমৃত লিপ্সা আজ কোথায়? 888sport live chatীর ক্যানভাসে কালো রংটা যেন শাপগ্রস্ত। কোথাও অগ্নিবর্ষী চোখ হায়েনার মতো তাকিয়ে আছে। এই ছবি কি দেখায়, 888sport live chatায়ন এই শহরের যত ক্ষতি করেছে, তার চেয়ে ক্ষতি করছে অনেক বেশি ‘ক্যাপিটালিস্ট অ্যাগ্রিকালচার’? আমরা কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বানিয়েছি; কিন্তু জ্বালানি তেল খরচ কমাইনি।
সুন্দরবন পুড়ছে, গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। সেই ছবির পাশে 888sport live chatী তুলি দিয়ে না একে হাত দিয়ে রং লেপে দিয়েছেন দেয়ালে। ছবিতে কোনো স্পেস নেই, ফর্মের ভারে স্পেস যেন ভারগ্রস্ত। অথবা ফর্মই যেন স্পেস। ভীতিকর কালো রংটা আসলে দানবীয় সময়ের স্মারক। তিনি দ্বিমাত্রিক স্পেসকে ত্রিমাত্রিক করেছেন পটচিত্রের মতো। ফর্মের চাপে বিধ্বস্ত চরাচর। বাতাস নেই, আকাশ নেই। এ আমাদের অচেনা পৃথিবী। ছবিতে তীব্র উদ্বিগ্নতা আছে। চিন্তার আগে ঘটনা ঘটছে তাঁর ক্যানভাসে অবিকল 888sport live chatীর স্বভাবের মতো। নিসার হোসেনের ক্যানভাস যেন 888sport live chatী স্যামুয়েল রোজেনবার্গের মতো ফর্ম স্থানান্তরিত হয়ে সরাসরি দর্শকের মস্তিষ্কে হানা দেয়। বাংলার লোক888sport live chatের নিজস্ব সম্পদ যেমন ছিল জনজীবনের প্রকৃত চিত্র ফুটিয়ে তোলা।
এ-সময়ের 888sport live chatীরা হ্যান্ডলুম পেপার খোঁজেন ছবি আঁকতে যদিও এসব সহজলভ্য নয়। কিন্তু আমাদের ঘরের পাশেই বহুকাল ধরে তালপাতার মধ্যে প্রাচীন 888sport live chatীরা ছবি এঁকেছেন। এই তালপাতার মধ্যে আমাদের লোকজ মোটিফে বর্ডার জুড়ে গ্রামীণ হাতের সরল নকশা রয়েছে। পুঁথিচিত্রের মতো এর মধ্যে হাতের স্পর্শ রয়েছে। মোগল বা কাংড়া চিত্রের কথা মনে পড়ে। তখন কাগজ বিদেশে থেকে আসেনি। 888sport live chatী এই তালপাতা যখন মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছেন তখন এর প্রস্তুতি পর্বকে মনে পড়ে, এসব উঠোনে গাছতলায় বসে তৈরি করতে হতো। কাগজের মণ্ডের মতো এর মধ্যে অনেক ময়লা-ধুলাবালিও উড়ে আসতো। নিসার হোসেন যেন এ-যুগের পটুয়া। ঝরঝরে রেখা কুঁদে গড়া মুখের ছাঁদে জীবন্ত মানুষকে বসিয়ে তিনি ছবি আর আঁকেন না। 888sport sign up bonusর আখ্যান জ্বলজ্বল করে এই পটজুড়ে। পাশ্চাত্য প্রভাবে আমরা বদলে গেছি, আমাদের রুচি উন্নত হয়েছে বলে ভাবি; কিন্তু সস্তা বিদেশি লিথো আমদানি করে যেমন লোক888sport live chatের মৃত্যু হয়েছিল – সেই ইতিহাসকে সামনে আনে, তখন নিসার হোসেনের এই সস্তা রঙের ব্যবহার, রেখা অঙ্কনের অদক্ষ প্রবণতা। এ যেন বিহিত করা, ছবি আঁকা নয়। এই সৃজনশীল ছাঁচকে কল্পনা করা হয় পুঁজিবাদী বুর্জোয়া ব্যবস্থার প্রতিবাদ হিসেবে। শহুরে মানুষের ভোগবাদের বিরুদ্ধে এই শৈলী কথা বলে। মানুষ ভোগবাদী বলে সে নিঃশেষিত করে চলে তার পরিবেশ।
অন্য অর্থে 888sport live chatী রেখার অদক্ষতা দেখাতে চান এখানে। সেই রেখা সরাসরি বুর্জোয়া সমাজের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। শ্রমিকের শোষণের চিহ্ন রয়েছে এ-রেখাতে। রিকশা শ্রমিক থেকে কারখানার শ্রমিকের নিপীড়নের কথা মনে করায় এই রেখা। দর্শকের মনে আসে, নিসার হোসেন ক্যানভাসে প্রকৃতিকে নষ্ট করা বলতে কী একধরনের ফ্যাসিবাদকে বোঝান, যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে মানুষের ভোগবিলাসের জীবন, কমোডিটি ফেটিশের আসক্তি, যা আদিম শেকড় বিচ্যুত হয়ে ক্রমে নিঃশেষিত করেছে আমাদের স্বাভাবিক আর প্রাকৃতিক বেঁচে থাকাকে। গ্রামাঞ্চলের সাধারণ জীবনের আঙ্গিকের বা নিম্নবিত্তের স্বল্পশিক্ষিত সরল মনকে, যারা হয়তো যুগ যুগ ধরে 888sport live chatচর্চা করেছেন; কিন্তু যার কিছু আর অবশিষ্ট নেই। তিনি যখন পটচিত্রের মতো ক্যানভাস সাজান তখন শহুরে 888sport live chatীর সঙ্গে তাঁর পার্থক্য তৈরি হয়। পট মানেই স্বল্প ব্যয়ে অসীম পরিশ্রমসাধ্য একটি 888sport live chat। নিসার হোসেন যেন অতীতের সেই ছেঁড়া কাপড়ের ওপর অতি সাধারণ পাতলা কাগজ সেঁটে ছবির জমি তৈরি করার ইতিহাসের কথা মনে করান। কাপড়ের মধ্যে পাতলা আস্তর দিয়ে ছবি আঁকতে গেলে রং রেখার বাইরে গড়িয়ে পড়ে, ছবি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে – তেমনি তাঁর রেখার গড়ন। সেটা তিনি এখানে ব্যক্ত করেন। খুব সুচারু নয়, তার ছবির পট। রং-নির্বাচন, মাধ্যম, বার্নিশ, রং তুলি এলামাটি, খড়িমাটি, গিরিমাটি, হরিতাল, ইতাদি সস্তা রঙের প্রতি আকর্ষণ রয়েছে 888sport live chatীর। তাঁর ক্যানভাসের কালো রং যেন প্রদীপের শিখার ওপর একটা সরা উপুড় করে ঝুলিয়ে রেখে আদিম পদ্ধতিতে নির্মিত। আধুনিক চিত্র888sport live chatের মতো রং ধুইয়ে ছবির কোমলত্ব বাড়ানোর চেষ্টা নেই। আলোছায়ার সমাবেশ এবং রেখা-রঙের কায়দাকানুন – সবকিছুই অনাড়ম্বর ও প্রাকৃতিক। এই নিম্নবিত্তের জীবন-জীবিকার কর্মযজ্ঞ ঘিরে যে সস্তা চট – তা তিনি ক্যানভাসে সেঁটে দিয়ে পুঁজিবাদী সমাজের স্ববিরোধ তুলে ধরেন।
এর ফলে এক নতুন সামাজিক অসংগতি তৈরি হয়। এর ভেতরে কৌতুক থাকলেও তা কিছুতেই হাস্যরসের নয়। ব্যক্তিগত এই পট নিম্নবিত্তের মতো পদাতিক। আমাদের শহুরে ধনী রাষ্ট্রের প্রলোভনের কাছে হেরে গেছে আজ সেই গ্রামীণ 888sport live chat। তাই এখন কদর্য রূপের খতিয়ান এই প্রকৃতি। এই ছবির নান্দনিক আকাক্সক্ষা যেন সৌন্দর্য নয়, বেদনার ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ঝরায়। এই রং বাংলার রিকশা ছবির রং থেকে নেওয়া। রিকশার মধ্যে সস্তা রেক্সিনের মধ্যে অঙ্কিত জবরজং রং নিম্নবিত্তের জীবনের প্রতীক। নিসার হোসেন সেই শ্রমিকের জীবনকে কোথাও অবচেতনে তার সৃজনভাবনায় দোসর করেছেন কি? তিনি যেন আজ ‘নেই’-এর অহংকারে উজ্জীবিত হতে চান। তত্ত্বের যান্ত্রিকতা নেই এই ছবিতে। কখনো ক্যানভাসের ফাঁকা জায়গাটুকু অনেক কথা বলে যায়। যদিও ধনিক শ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতায় এই 888sport live chat প্ররোচিত, তবু পুঁজিপতিদের তুষ্ট করার অভিপ্রায় নেই এই ছবিতে।
এই রঙের আভাস, চরিত্ররা কখনো সরসভাবে ব্যঙ্গ করছে বুদ্ধিবৃত্তিক আধুনিকতাকে। বুদ্ধি করে উজিয়ে দেওয়া নয় এ-পট। দ্বিমাত্রিক ছবির পট এখানে ত্রিমাত্রিক হয়ে উঠেছে। সত্য দৃশ্য সব সংঘটিত হচ্ছে। তাদের দেহের গতি, কর্মকাণ্ড বাস্তবিকভাবে ফুটে উঠছে। শুধু বর্ণবিন্যাসে একটি রূপ ফুটে উঠছে। 888sport live chat তৈরি হওয়ার পথে কী কী ঘটে আসলে? কী কী সরঞ্জাম নিয়ে 888sport live chatী ও দর্শক মুখোমুখি হয়েছেন? মাধ্যম একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরীক্ষার ক্ষেত্র নিসার হোসেনের কাজে। মাধ্যমকে তিনি ব্যবহার করেছেন সার্বভৌম শৈল্পিক প্রবণতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে।
একদিকে মৌলবাদীর চক্রান্ত অন্যদিকে শৈল্পিক কার্যক্রম নিয়ে দুই বিরোধাভাসের পটে 888sport live chatী যেন দর্শকের মনে নানা প্রশ্ন উস্কে দিচ্ছেন। সার্বভৌম 888sport live chat আসলে কী? অথবা এই দগ্ধ পাতার বিন্যাসের অর্থ কী? আমরা প্রকৃতিকে শেষ করেছি বলে কি 888sport live chatীর ক্যানভাস আর সৃজনশীল নয়? 888sport live chatীর বিক্ষুব্ধ হাতের স্পর্শে তা যেন আজ আরো ক্রূর। কী করে প্রকৃতি নষ্ট করে যাচ্ছি, তা বোঝার একমাত্র পথ হয়তো এই ধ্বংসসাধন দেখা। পাতার ওপর কার্বন দিয়ে কালচে রঙের প্রলেপ জুড়েছেন 888sport live chatী। পাতা এখন সবুজ রং হারিয়ে মৃত্যুমুখে – এই দৃশ্য দর্শককে সবুজ বন পুড়িয়ে ফেলার কথা মনে করায়। তিনি শৈল্পিক দক্ষতার দিকে দর্শককে আকর্ষিত করেন না আর। বরং সবুজ ক্ষেত থেকে রক্ত ঝরা দেখাতে তিনি ইনস্টলেশনের আশ্রয় নেন। নানা ধরনের প্রকরণ তিনি ব্যবহার করেছেন। কোনো গতানুগতিক শৈল্পিক মাধ্যম তাঁকে হয়তো আর আকর্ষণ করেনা।
বসন্তের এই বিকেলে শহরের এক প্রাণবন্ত পাড়ার গ্যালারিতে, এই 888sport live chatপসরাতে দর্শক আসলে কোনো মনোহর ব্যাপার দেখতে পান না। ক্যানভাসে নানা ক্ষত আর দানবের মুখ – এরা হিংস্র আর প্রতারক। ক্যানভাসের এই দগ্ধতা নিয়ে দর্শকের মনে নানা প্রশ্ন জাগে। 888sport live chatের আসল উদ্দেশ্য কী? 888sport live chatের উদ্ভাবনী শক্তি কী? তিনি কি বলতে চেয়েছেন, আসলে এর মধ্যে অভিনবত্ব বলে কিছু নেই? এমন নানা প্রশ্ন নিয়ে হাজির হয়েছেন তিনি এই ‘ষাট বছরের’ খতিয়ানে।
তালপাতায় নিসার হোসেন কোনো শৈল্পিক চিহ্ন রাখতে চাননি। তাঁর কাজে মাধ্যমের সারল্য রয়েছে; কিন্তু ছবির বিষয়কে সাজিয়েছেন তিনি মাধ্যমের বিপরীতে। এই পরস্পরবিরোধিতা কি আমাদের এই সময়ের চিহ্ন? সেই মাধ্যম তিনি খানিক আকস্মিকভাবে, সেই পাতার প্রকৃতি বদলে যাওয়া দেখান তিনি – ‘অবলুপ্তির পথে’ ইনস্টলেশনে। আমরা দেখি, দগ্ধ হয়ে সে কেমন ভয়ার্ত রূপ ধারণ করেছে, যা পাতার ভেতরের বিশুদ্ধ অর্থকে হত্যা করে। তিনি হয়তো বলেন, পুঁজিবাদ সবসময় একীভূত করে একক শ্রমিকের জীবনকে। সমবেত বলে কিছু রাখে না। অথচ প্রকৃতি সমবেত জীবনের প্রকাশ। বীজ থেকে উদ্ভিদ উৎপন্ন হওয়া, এর মঞ্জুরিত শাখা আসলে সমবেত জীবনের সংবেদ। সেই প্রকাশ পুঁজিবাদের আঘাতে ব্যাহত, মানুষ আজ প্রকৃতির সঙ্গে নিজেকেই যেন পুড়িয়ে মারছে। তার নিজের প্রলোভনের কাছে সে-ই আজ সবচেয়ে রহস্যময় সত্তা হয়ে উঠেছে।
রিক্শা ছবির রঙের আভাস, সিনেমা পোস্টারের 888sport live chatীর অদক্ষ হাতের বিন্যাস থেকে নিসার হোসেনের রেখা প্রভাবিত, যা আধ্যাত্মিক নয়। অন্যদিকে 888sport live chat যেহেতু একধরনের হাত, মস্তিস্ক আর মনস্তত্ত্বের নিবন্ধন, তাই এতে একধরনের সার্বভৌম সত্তা বজায় থাকে এখানে। তাঁর ছবির দিগন্ত মানুষের শৈল্পিক প্রবৃত্তিকে যেন প্রতিহত করে এগিয়ে যেতে চায়। নিম্নবিত্তের শ্রমের কোনো মূল্যায়ন আমাদের ধনী সমাজে নেই। তাঁর শ্রমে অর্জিত জিনিসকে আত্মসাৎ করে পুঁজিপতি মূল্যবান হয়। সেই আলোড়নের পথে নিসার হোসেনের রেখা ক্রমে নিভিয়ে ফেলেছে তথাকথিত নান্দনিক সৌকর্য।
888sport live chatী এখানে কল্পনা করেছেন এক নতুন ধরনের সম্পর্ক – জীবনের সঙ্গে নান্দনিক কার্যকারণের সম্পর্ককে প্রশ্ন করেছেন তিনি। এক রঙের এই ‘মনোক্রম শৈলী’ – কী আসলে নতুন পুঁজিবাদী রাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করছে? 888sport live chatী নিসার হোসেনের রেখাতে তালপাতার সংবেদ কি সাধারণ নিম্নবৃত্ত গ্রামবাংলা থেকে আসা খেটে-খাওয়া মানুষের প্রতিভূ? তিনি রেখার মধ্য দিয়ে শৈল্পিক আবেগ সঞ্চারের কারিগরি কৌশল আর দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। এটি যেন কোথাও তাঁকে ছন্দের রূপ গড়নের নিবিষ্ট কারিগর করেছিল তার আভাস রয়ে গেছে ‘আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের’ পোর্ট্রেটে।
তাঁর প্রকাশভঙ্গি সহিংস ও রক্তিম। এখানে কোনো রোমাঞ্চ নেই। স্পেস আর পরিবেশে ভারসাম্য করতে চাননি তিনি। নান্দনিকতার পথ খুঁজতে রেখার স্বভাব তেজোদীপ্তির ঝাপটায় নাটক তৈরি করে। এই শৈলী, এই রেখা যেন 888sport live chatীর হাতের তালু। এই রেখা অনেকটা ব্যক্তিগত অক্ষরের মতো। এই রেখা প্রাচীন প্রাচ্যকলার ক্যালিগ্রাফিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। এই প্রাচ্য কৌশল দিয়ে বিষয়বস্তুতে তিনি সর্বজনীন। নিসার হোসেনের 888sport live chat আর সংগ্রাম তাঁর জীবনেরই নিবিড় বোঝাপড়া। কোনোটা আলাদা নয়, অথবা বুদ্ধি করে উজিয়ে দেওয়া নয়। শান্তিনিকেতনের কলাতাত্ত্বিক সৌমিক নন্দী বলেন, ‘নিসার হোসেনের ছবি যতটা সময়কে ও সমকালকে পড়তে পড়তে জড়িয়ে নিয়ে গড়ে ওঠে, ততটাই সে সীমাহীন স্পেসের মাপে, ফ্রেমের বাইরে খণ্ড-অখণ্ড অবসরে নিজেই নিজেকে অতিক্রম করে বিস্তার লাভ করে। তাই নিসার হোসেনের 888sport live chatের সঙ্গে যখন যোগাযোগ ঘটে দর্শকের, তখন তাদের এক অপ্রতিরোধ্য বিরোধাভাসে আক্রান্ত হতে হয়।’


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.