ভাষান্তর : মঈনুস সুলতান
ভূমিকা ও কবি-পরিচিতি : কবি বাইবা বাইকোলের জন্ম ১৯৩১ সালে, পূর্ব ইউরোপের ছোট্ট দেশ লাটভিয়ার রিগা নগরীতে। তাঁর জননী ছিলেন কবি, কিছু 888sport liveও রচনা করেছিলেন তিনি। পিতাও ছিলেন 888sport live footballের ইতিহাস রচনার জন্য প্রসিদ্ধ ব্যক্তিত্ব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে বাস্তুহারা শরণার্থী হিসেবে কবি স্বদেশ ত্যাগ করেন। ১৯৫০ সাল থেকে তিনি বসবাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রে। গত শতাব্দীর সত্তরের দশক থেকে বাইবা বাইকোলের 888sport app download apk তাঁর স্বদেশে জনপ্রিয় হতে থাকে এবং ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে লাটভিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর 888sport app download apk জোগায় অনুপ্রেরণা।
তৎকালীন সোভিয়েত যুগে প্রবাসী এ-কবির 888sport app download apk তাঁর জন্মভূমিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছিল। তাঁর কাব্যগ্রন্থের 888sport free bet ছয় এবং স্বাধীনতা-উত্তর নিজ দেশে কবি একাধিক 888sport live football 888sport app download bdেও সম্মানিত হয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে কবি বিবাহে আবদ্ধ হন লামারস্ রুমপিটারস্ নামক লাটভিয়ার একজন 888sport live chatীর সঙ্গে। তাঁদের তিন সন্তানের মধ্যে একজন আরভিলিস রুমপিটাস্ খ্যাতি পেয়েছেন কবি হিসেবে।
দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধোত্তর পৃথিবীতে নানা দেশের যেসব কবি নীতি ও আদর্শগত কারণে বেছে নিয়েছিলেন প্রবাসজীবন, তাঁদের অন্যতম কবি বাইবা বাইকোল। তাঁর 888sport app download apkর শৈল্পিক পরিণতি এসেছে দূর বিদেশে, তবে তিনি আন্তর্জাতিক পরিসরে গুটিকয়েক বিরল কবিদের অন্যতম – যাঁদের 888sport app download apk দশক কয়েকের ব্যবধানে শুধু তাঁদের স্বদেশে জনপ্রিয়ই হয়নি, প্রেরণাও জুগিয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামে। কবি বাইবা বাইকোলের 888sport app download apkর একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বহতা সময় সম্পর্কে প্রখর সচেতনতা। মাঝেমধ্যে ছিন্নমূল হওয়ার সংগ্রামও প্রতিফলিত হয় বিমূর্ত দৃশ্যকল্পের সৃজনে। তাঁর উচ্চারণ মূলত ভাবনাপ্রধান, যাতে বিম্বিত হয় অন্তর্গত অভিজ্ঞতা। তীব্র আবেগকে কবি অনায়াসে 888sport app download apk latest version করেন ভাবচিত্রে। বিষয়বস্তুতে ফিরে ফিরে আসে – পরস্পরের ছাড়াছাড়ি, স্বজন হারানো, সংগীত ও ভালোবাসার প্রসঙ্গ। দৈনন্দিন জীবন যাপনের অনুভবরাজি উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে বৃষ্টি, কুয়াশা, তুষার, নদী, সূর্য, আকাশ প্রভৃতি প্রতীকের মাধ্যমে প্রিজমে প্রতিসরিত আলোর মতো।
এখানে উপস্থাপিত 888sport app download apkগুলি লাটভিয়ান ভাষা থেকে ইংরেজিতে 888sport app download apk latest version করেছেন বিটিটি ভিংলার্স নামে একজন খ্যাতনামা 888sport app download apk latest versionক। 888sport app download apkগুলির সূত্র ইন্টারনেট।
বসবাস করি আমি সময়ের বাইরে
বহতা সময়ের বহির্ভাগে আমার অস্তিত্ব।
তুমি যখন খোলো দরোজা, তোমার নগ্ন পদযুগলের নিচে মথিত
হয় ঘাস,
চোখে লাগে বাতাসের ঝাপটা।
যখন বাড়িয়ে দাও দু হাত,
দ্যাখো – ধুলো-বালি ও ভুষিকণা নৃত্যের এক অশেষ শিকল
হয়ে চূর্ণিত হচ্ছে।
আমাদের অস্তিত্ব বহতা সময়ের বহির্ভাগে।
চলে যাওয়া কিংবা ফিরে আসা – কোনো কিছুরই চৌকাঠ নই
আমরা।
চোখে কেবলই দেখতে পাই অনস্তিত্ব,
আর যমজ সত্তাকে আঁকড়ে ধরে থাকি আমি।
পাথরের ভারী দেয়াল ভেদ করে
পাথরের ভারী দেয়ালটিকে দুমড়ে-মুচড়ে নিষ্পেষিত করলে
সৃষ্ট শব্দ হালকা হতে হতে মিলিয়ে যায়
যতক্ষণ না দেয়ালটি ভেঙেচুরে টুকরা টুকরা হচ্ছে,
আর আমার ওষ্ঠযুগল চেপে ধরি দেয়ালে
বিগত দিনের কোনো অনুষ্ঠানের ঘোষণার মতো।
আমাদের মধ্যবর্তী বিপুল শূন্যতা
আমাদের অভ্যন্তরে বিরাটাকারের ব্যবধান জুড়ে আছে
সমুদ্রের জনশূন্য এক নোনা প্রান্তর।
স্বর্গের দরোজা খোলার জন্য অপেক্ষা করেছি আমি
আর প্রতীক্ষা করেছি আশ্চর্য এক প্লাবনের,
যা জলের তুমুল সয়লাবে পরিপূর্ণ করে দেবে আমাদের বিরান
শ্ন্যূতা
অপেক্ষা করে আছি কখন
গভীর গহন ভয়ংকর তরঙ্গরাশিতে ভেসে যাবে সমুদয়;
প্রত্যাশিত প্লাবন এসেও ছিল কিন্তু ভেসে গেল তা।
আর আমরা – তুমি আর আমি,
আমাদের ভিন্ন ভিন্ন সৈকত থেকে
হেঁটে হেঁটে অতিক্রম করে তুমুল জলরাশি
এসে দাঁড়িয়েছি সমুদ্রের মাঝ বরাবর।
আমি হচ্ছি ঢোলকের টান টান চামড়া
আমি হচ্ছি ঢোলকের টান টান চামড়া, আদিবাসী গোত্রের
সন্তান।
আমার ওপর নৃত্য করে যখন তোমার আঙুলরাজি,
রহস্যময় ভঙ্গিতে স্পন্দিত হই আমি তোমার দিকে;
লীলায়িত হাত ও দোদুল্যমান কাঠির ছন্দমুখর মুদ্রায়
আমার হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনের তোড়ে নৃত্যরত হও তুমি –
ওহ্! তুমি তো দেখি ইতোমধ্যে আমার কাছে আত্মসমর্পণ করে
বসেছো!
বাজিয়ে যাও ঢোলক, আর হ্যাঁ, আমাকে দুলিয়ে দিতে থাকো,
কবরের অন্ধকারে পড়ে থাকা আমার হাড়গোড়, আমার পুরু
চামড়া
স্ফীত হতে হতে বিস্ফোরিত হতে যাচ্ছে –
আমার পিতৃভূতিতে যখন হবে ক্রমাগত বজ্রপাত,
বাঞ্ছা করি – ফাঁসিকাষ্ঠে যেন ঝুলো তুমি।
ধোঁয়ার ধূসর জিহ্বাগুলো ইতোমধ্যে মেতেছে সংগীতের
কলতানে :
শুনতে পাচ্ছো কী তুমি?
শিরোনামহীন
এক
শিকারির দক্ষতায় দু-চোখে আমার ঝাঁপিয়ে পড়ে গাঢ় নিদ্রা, আর মস্ত মুখটি দিয়ে চুষে বিগত দিনের ক্লেদ ও স্যাঁতসেঁতে কালিমা, চুষে চুষে করে তোলে বিশুষ্ক, কিন্তু তার অনামিকায় ঝলমল করে ওঠে আঙ্গুরীয় – যাতে বসানো আগামীকালের চোখপাথর – যার নিবিড় বর্ণে ভাসছে স্বপ্নের জখম। আমি এবার ভবিষ্যৎকে অনুভব করতে চেষ্টা করবো।
দুই
খেয়ে ফেলা হয়েছে সূর্যকে, পড়ে আছে চন্দ্রের পেটানো একটি টুকরা, দুর্ভিক্ষে একটি ঋতু খালি হাতে ছুটে বেড়ায় – গাতাগর্তে পরিপূর্ণ পথরেখা ধরে।
তিন
বিপুল জলরাশিতে বিবর্তিত রাজপথগুলো তরঙ্গের লোহিত সোনালি রেখায় তেড়ে ছুটে আসে আমার দিকে, হাত-পা জড়িয়ে বসে পড়ে আমার কোলে, নদীমালা প্রসারিত হয় আমার অভ্যন্তরে, আমি দোল দেই – দোলাতে থাকি বাড়িঘর, মিনাররাজি ও অসংখ্য প্লাবন, আর দোলাই তোমাকেও।
চার
আমার গহন-গভীরে অতি ধীরে বাজে ঘণ্টা,
ধ্বনির মন্থর তরঙ্গ,
দোলায় আমার অস্থি-মজ্জা-মাংসপেশি,
বিবর্তিত হই আমি এক শ্রবণেন্দ্রিয়ে,
শুনতে শুনতে উন্মোচিত হয় আমার অভ্যন্তর
বিশাল এক কক্ষের মতো।
পাঁচ
সারা দিন সারা রাত ধরে
হাতুড়ি পিটিয়ে বেঁধাই পেরেক,
শরীরের মাংসপেশি আমার লৌহে রূপান্তরিত হয়
তাতে ফুটে ওঠে মরচের ফুল।
ছয়
অনেক দিন ধরে গোপন থাকা কিছু জানতে পেরে
আমার ঠোঁটে ফুটে ওঠে মৎস্যজীবী 888sport promo codeর হাসি,
জাল টেনে গোটাতে গোটাতে
রাতনিশীথে আমি নৃত্য করি
আর তোমাকে নিয়ে ভারাক্রান্ত হয়ে উঠি।
সাত
জাগ্রত হয় আমার সমগ্র সত্তা –
আমি ছিঁড়ে খুলে ফেলি আমার চামড়া,
দেয়াল তৈরি করতে পারে না প্রতিবন্ধক
হাট করে খুলে দেই দরোজাও,
ভেসে যাই আমি কূলকিনারবিহীন সয়লাবে –
তোমার ক্রমাগত ক্রন্দনে তৈরি হয়েছে সমুদ্র।
আট
এক ফোঁটা লোহিত বিন্দুর অভ্যন্তরে বন্দি আমি,
ঘুমিয়ে পড়ি আমি আমারই ভেতরে।
নয়
হাতের মুঠোয় আমি শক্ত করে ধরে থাকি কম্পমান সময়কে
ইতোমধ্যে পায়ের তলায় জল হয়েছে বাষ্পীভূত,
ইতোমধ্যে ঢাকনা উপচে ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে পড়ে তরলায়িত বাষ্প – ভিজে যায় কেশদাম,
ইতোমধ্যে শিশির হয়ে আসা তপ্ত বাষ্পে সিক্ত হয়েছে আমার শরীর, আধডোবা হয়ে আলসে ভঙ্গিতে আমি নড়াচড়া করি,
ছাপিয়ে ওঠে আমার করতল আর বেড়ে ওঠে জল।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.