প্রবল বৃষ্টির তোড়ে গাড়ির কাচ ঝাপসা হয়ে আসছিল। ভেতর থেকে রাস্তাঘাট ঠিক ঠাহর করা সম্ভব হচ্ছিল না। কেবল চোখে আবছা-আবছা ধরা পড়ছিল জনবসতি-বিপণিবিতান-যাত্রীবাহী বাস। এরকমই এক বৃষ্টিস্নাত বৈশাখি সকালে বাংলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় 888sport app থেকে নরসিংদীর ভেলানগরের উদ্দেশে আমাদের যাত্রা শুরু হয়। যানজট আর জলকাদা মাড়িয়ে যখন ভেলানগর কালীবাড়ি রোড এলাকার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছলাম, ততক্ষণে ঘড়ির কাঁটা এগারোটার কোঠায়। আরো অবাক বিষয়, গাড়ি থেকে নামতেই অনুভব করি, কড়কড়ে রোদ আমাদের চোখ ধাঁধাচ্ছে! প্রকৃতির এ-এক অদ্ভুত আচরণ। বিচিত্রতা। কোথাও বৃষ্টি, কোথাও রোদ। সেরকম এক রৌদ্রকরোজ্জ্বল চারপাশ সঙ্গী করে আমরা বসলাম বনবাসে রূপবান যাত্রাপালা দেখতে।
যাত্রামঞ্চের সামনে পাতা পস্নাস্টিকের চেয়ারে আরো অনেক দর্শনার্থীর মতো যে-স্থানটিতে বসেছি, সেখানে অবশ্য রোদের প্রকোপ ছিল না। একে তো শামিয়ানা টানানো, এর মধ্যে চারপাশে ছিল অসংখ্য গাছ, তাই রোদ আমাদের ধারেকাছেও ভিড়তে পারেনি। তবে প্রচ- গরমে ঘেমেঘুমে জবুথবু হওয়ার জোগাড়; কিন্তু তাতে কী? আমাদের চোখ-মন সবকিছুই তো নিবিষ্ট মঞ্চের দিকে। বাঁশের খুঁটিতে সাদা কাপড় প্যাঁচানো। এর ওপর ছাদ দেওয়া হয়েছে কমলা-নীল রঙের শামিয়ানা দিয়ে। সেই শামিয়ানায় আবার ঝুলছে সুতোর রং-বেরঙের ঝালর। সূর্য যখন মধ্য আকাশে ‘যাচ্ছে যাচ্ছে’ ভাব, এমনই এক ক্ষণে এই দৃষ্টিনন্দন মঞ্চে উঠে উপস্থাপক টি এইচ আজাদ কালাম যাত্রা শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
উপস্থাপকের ঘোষণা শেষ হতে-না-হতেই বেজে ওঠে বাদ্য। বাদ্যের তালে-তালে সারিবদ্ধভাবে মঞ্চে আসেন আটজন 888sport promo code। এই 888sport promo codeরা মঞ্চে এসেই দুপাশে চারজন করে দাঁড়িয়ে পড়েন। এবং যাত্রাগানের চিরায়ত রীতি অনুযায়ী শুরুতেই কণ্ঠে তোলেন দেশাত্মবোধক গান। তাঁরা গাইলেন ‘ও আমার বাংলা মা তোর’। আট 888sport promo codeর গান পরিবেশনার সময় এক তরুণীকে একটু শরমিন্দা বলেই মনে হলো, কোনো কারণে ওই তরুণীটি যে বিব্রত সেটা তাঁর আচরণেই প্রকাশ পায় (পরে অবশ্য খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ওই তরুণীটির এটিই ছিল মঞ্চে প্রথম অভিনয়)। সে-কারণেই কিনা, যাত্রা শুরু হওয়ার আগে বন্দনা পর্বের মধ্যে চারপাশের দর্শক-শ্রোতারা বারবার ‘কিয়া বাত, কিয়া বাত’ বলে হর্ষধ্বনি দিচ্ছিলেন। এভাবে একসময় গানটি গাওয়া শেষ করে যখন 888sport promo codeরা মঞ্চ মাত্র ত্যাগ করেছেন, এমনি সময় দৌড়ে এসে মঞ্চে ঢোকেন নিরাশপুরের বাদশা একাববর আর তার রাজ্যের উজির। শুরু হয় যাত্রার মূলপর্ব।
একাববর বাদশা আর তার উজিরের মধ্যে কথোপকথন চলে। দুজনের হাতে দুটো হ্যান্ডমাইক। বাদশা বলেন, ‘শোনো উজির, আমি শুনলাম প্রজারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। কী ষড়যন্ত্র করছে এবং কেন করছে বলতে পারো?’ এ-প্রশ্নের উত্তর দিতে উজির আমতা-আমতা করেন। তখন বাদশা অভয় দিলে উজির বলেন, ‘কী বলব জাঁহাপনা, আপনার ছেলেমেয়ে নাই। খোদা আপনাকে আটকুঁড়ে করে রেখেছেন। তাই প্রজারা বলছে, আপনার মুখদর্শনে অন্ন জোটে না, তাই সবাই এ রাজ্য ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা ভাবছে।’ এভাবেই যাত্রার মূল কাহিনি শুরু হয়। এরপর মনের দুঃখে সমত্মানহীন বাদশা স্বেচ্ছায় বনবাসে চলে গেলেন। বনে বাদশার সঙ্গে এক মুনির সাক্ষাৎ হয়। মুনি ঘটনাক্রমে বাদশাকে জানান, শিগগির বাদশা এক পুত্রসমত্মানের বাবা হবেন। তবে পুত্রের বয়স যখন বারো দিন হবে, তখন বারো বছরের এক মেয়ের সঙ্গে শিশুটির বিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি বিয়ের রাতেই তাদের বারো বছরের জন্য বনে নির্বাসনে পাঠাতে হবে। তা না-হলে ওই শিশুর মৃত্যু হবে।
মুনির কথা শুনে বাদশা পুনরায় তাঁর রাজ্যে ফিরে আসেন এবং সব কথা তাঁর স্ত্রী জাহানারাকে খুলে বলেন। সব শুনে জাহানারা বলেন, ‘খোদা, আমি মা হয়ে বারো দিনের ছেলেকে বনে পাঠিয়ে কেমন করে গৃহে থাকব? আমি এ শোক সহ্য করতে পারব না। তুমি একি করলে খোদা!’ বাদশা জাহানারাকে সান্তবনা দেওয়ার পর কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাহানারা বলেন, ‘আমি সহ্য করব। তবু আমাদের আটকুঁড়ে নাম মুছে যাক।’ কিছুদিন পর মুনির ভবিষ্যদ্বাণী সত্য প্রমাণিত হয়। বাদশা এক ফুটফুটে ছেলেসমত্মানের বাবা হন। আর তখনই ছেলের জন্য বারো বছর বয়সী পাত্রী খুঁজতে থাকেন বাদশা। কিন্তু কোথাও মেলে না সেই পাত্রীর সন্ধান। অবশেষে রাজা খবর পান, তাঁর উজিরের বারো বছর বয়সী রূপবান নামের এক মেয়ে রয়েছে। বাদশা তৎক্ষণাৎ উজিরকে খবর পাঠিয়ে তাঁর বারো বছরের ছেলে রহিমের সঙ্গে রূপবানের বিয়ের প্রস্তাব দেন; কিন্তু উজির বারো বছর বয়সী শিশুর সঙ্গে তাঁর মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি হন না।
উজির একাববর বাদশার উদ্দেশে বলেন, ‘বাদশার ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের বিবাহ, এর চেয়ে আনন্দের বিষয় আর কী আছে জাঁহাপনা। কিন্তু বিবাহ যে পুতুল খেলা নয়। হয় খেললুম, না-হয় ভেঙে ফেললুল। বারো দিনের শিশুর হাতে মেয়ে সমর্পণ করতে পারব না জাঁহাপনা। এ অসম্ভব কাজ আমার দ্বারা সম্ভব হবে না। কেননা আমি যে তার পিতা।’ নানা অনুনয়-বিনয় ও লোভ দেখানো সত্ত্বেও উজির যখন তাঁর মেয়েকে রহিমের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না, তখন ক্ষুব্ধ বাদশা প্রহরী ডেকে উজিরকে বন্দি করার আদেশ দেন এবং এতেও কাজ না-হওয়ায় জলস্নাদ ডেকে উজিরকে হত্যার নির্দেশ দেন। বাদশার এমন আদেশ যখন রূপবানের কানে পৌঁছে, তখন সে দৌড়ে এসে রাজার কাছে বাবার মুক্তি প্রার্থনা করে। তবে রাজা রহিমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেই কেবল উজিরকে মুক্তি দেবেন বলে রূপবানকে জানান। রূপবান রাজার প্রস্তাবে রাজি হলে তবেই উজিরকে প্রাণভিক্ষা দেওয়া হয়।
এক শুভক্ষণে রহিম ও রূপবানের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বাসরঘরে কেঁদে বুক ভাসায় রূপবান আর মনের দুঃখে গান ধরে : ‘বাসরঘরে থাকো পতি গো, ও পতি খেলো নানা ছলে গো/ আমার পতি গো \/ কে পরাবে তৈল কাজল রে, ও আলস্না কে খাওয়াবে দুধ রে’। ওইদিন বাসর শেষে রূপবান রহিমকে কোলে নিয়ে অজানার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। তার আগে গানের সুরে সুরে সবার কাছ থেকে এভাবেই বিদায় নেন : ‘বিদায় দেন বিদায় দেন আববা গো/ ও আববা বিদায় দেন আমারে গো/ আমার আববা আববা গো।/ বিদায় দেন বিদায় দেন আম্মা গো/ ও আম্মা বিদায় দেন আমারে গো/ আমার আম্মা আম্মা গো \/ বারো দিনের স্বামী লয়ে গো ও আববা চললেম নির্বাসনে গো/ আমার আববা আববা গো \’ রাজ্য থেকে বেরিয়ে রূপবান এক নদীর ঘাটে এসে মাঝিদের পার করে দেওয়ার অনুরোধ জানায়। মাঝিরা দু-আনা পয়সা ছাড়া পার করবে না বলে জানালে রূপবান তাতে সম্মতি জানায়। তবে নদী পার হওয়ার পর রূপবান তার আঁচলে বেঁধে রাখা একটি স্বর্ণালঙ্কার তাদের বকশিস দেয়। মাঝিরা পিতলের টুকরো ভেবে সেখান দিয়ে যাতায়াতরত এক পথিকের কাছে বিক্রি করে দেন।
রূপবান রহিমকে নিয়ে বনের পথে ঘুরতে থাকে। ওখানেই রূপবান দুজন দস্যুর কবলে পড়ে। তবে বনরাজাধিপতি জংলিরাজা এসে রূপবান ও রহিমকে উদ্ধার করেন। জংলিরাজা রূপবানের দুঃখ-কষ্টের কথা শুনে বনের মধ্যে রূপবান ও রহিমের বসবাসের জন্য একটি ঘর তৈরি করে দেন। সে-ঘরেই রূপবান বসবাস করতে শুরু করে। একদিন ঘরের উঠোনে শিশু রহিমকে ঘুম পাড়িয়ে রূপবান পানি আনতে ঘাটে যায়। এসে দেখে একটি হিংস্র বাঘ রহিমের দিকে এগোচ্ছে। রূপবান ভয়ংকর ওই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে গান ধরে : ‘খেয়ো না খেয়ো না বাঘ রে, ও বাঘ খেয়ো না মোর পতি রে/ বনের বাঘ বাঘ রে \/ হাতে ধরি পায়ে ধরি রে, ও বাঘ ছেড়ে দাও মোর পতি রে/ বনের বাঘ বাঘ রে \’ গান গাইতে গাইতে রূপবান তার ধর্মের বাবা জংলিরাজাকে ডাকে। রূপবানের আর্তনাদ শুনে জংলিরাজা ছুটে এসে বাঘের সঙ্গে লড়াই শুরু করেন। কিছুক্ষণ জংলিরাজা ও বাঘের যুদ্ধ চলে এবং একসময় বাঘ জংলিরাজার হাতে মারা পড়ে।
সময় গড়ায়। রহিম ধীরে ধীরে বড় হয়। তবে তার কাছে রূপবানের প্রকৃত পরিচয় অজানাই রয়ে যায়। রহিমের কাছে রূপবান নিজেকে তার দাসী বলে পরিচয় দেয়। রূপবান রহিমকে ডাকে ‘দাদা’ আর রহিম ডাকে ‘দিদি’। রূপবান রহিমকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়; কিন্তু রহিমের সঙ্গে কোনোভাবেই পড়ালেখায় কুলিয়ে উঠতে পারছিল না ছায়েদ বাদশার মেয়ে তাজেল। এটি শুনে ছায়েদ বাদশা স্কুলের হেডমাস্টারকে নানা কায়দায় রহিমকে বিব্রত করার জন্য পরামর্শ দেন। মাস্টারও সে অনুযায়ী রহিমের ওপর নানা রকমের মানসিক দ্বন্দ্ব তৈরি করে দিতে থাকেন। অন্যদিকে ছায়েদ বাদশার মেয়ে তাজেল রহিমের প্রেমে দেওয়ানা হয়ে পড়ে। সবসময় তাজেল রহিমকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলার প্রচেষ্টা চালায়। এভাবেই যাত্রা নানা কাহিনির মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে। একদিন ছায়েদ বাদশা রহিমের কাছে ঘোড়ার রেসে হেরে গিয়ে তাকে পুরস্কৃত করার বদলে বন্দি করে ফেলেন। তাজেল বাবার কাছ থেকে রহিমকে মুক্ত করতে এসেও ব্যর্থ হয়। যথারীতি রূপবানের অনুরোধে জংলিরাজা ছুটে এসে ছায়েদ বাদশার কাছ থেকে রহিমকে উদ্ধার করেন। এরই মধ্যে রূপবান-রহিমের নির্বাসনের বারো বছর পূর্ণ হলে জংলিরাজা তাদের একাববর বাদশার কাছে নিয়ে যান। একাববর বাদশা পরম মমতায় রহিম-রূপবানকে গ্রহণ করেন।
যাত্রা শেষে দর্শনার্থীরা কড়কড়ে রোদ মাথায় নিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য পথে পা বাড়ায়। আমরা কয়েকজন ছুটে চলি বাঁশ-টিন দিয়ে তৈরি একটি ঘরে, যেটি যাত্রা888sport live chatীদের গ্রিনরুম হিসেবে পরিচিত। সেখানে কথা হয় কয়েকজন অভিনেতা-অভিনেত্রীর সঙ্গে। তাঁরা জানালেন, নরসিংদীর ভেলানগরে আটটি সাজঘর রয়েছে। এর মধ্যে সাতটির অবস্থান ভেলানগর পশ্চিমপাড়ায় এবং একটি বাজির মোড়ে অবস্থিত। যাত্রাপালাটির অন্যতম অভিনেতা এবং নরসিংদী জেলা যাত্রা888sport live chat উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক টি এইচ আজাদ কালাম ১৯৭৮ সাল থেকে যাত্রা পরিবেশনার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। তিনি জানান, বনবাসে রূপবান যাত্রাটি নানা নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে মঞ্চায়িত হয়। রহিম বাদশা ও রূপবান কন্যা নামেও এ-পালাটি প্রচলিত। তাঁরা যেটি মঞ্চায়ন করেছেন, সেটির নির্দেশনা দিয়েছেন সালাউদ্দিন বাহার। নরসিংদীর একাধিক সাজঘরের যাত্রা888sport live chatীদের অংশগ্রহণে বনবাসে রূপবান যাত্রাটি মঞ্চায়িত হয়েছে।
রূপবান চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন, তাঁর নাম ফরিদা পারভীন। বয়স আনুমানিক ২৫। নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার সাধুপাড়া গ্রামে তাঁর বাড়ি। ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার চষচষা এলাকায় তাঁর বিয়ে হয়। ১২ বছর আগে নরসিংদীর ভেলানগরের মিতা সাজঘরের অধীনে তিনি যাত্রাপালায় অংশ নিতে থাকেন। তাঁর বাবা ইদ্রিস আলী, মা মর্জিনা বেগম থেকে শুরু করে শ^শুর-শাশুড়িসহ পরিবারের অনেকেই যাত্রাপেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। পরিবারে স্বামী ছাড়াও দুই ছেলে রয়েছে। স্বামী যাত্রাদলের বাদন888sport live chatী। তিনি ড্রাম ও প্যাড বাজান। পারভীন বনবাসে রূপবান ছাড়াও আলোমতি, কাসেম মালা, আপন দুলাল, গুনাই বিবি, খায়রুন সুন্দরী, কমলার বনবাসসহ অন্তত শতাধিক ঝুমুর ও সামাজিক যাত্রাপালায় অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনীত এসব যাত্রা 888sport app, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পরিবেশিত হয়েছে। এমনকি যাত্রাগান গাইতে ভারতেও তিনি আমন্ত্রিত হয়ে গিয়েছেন। বনবাসে রূপবান যাত্রাটিতে পঞ্চাশেরও বেশিবার তিনি রূপবান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এর বাইরে আলোমতি পালাটিও তাঁর বেশি গাইতে হয় বলে জানালেন।
ফরিদা পারভীন জানালেন, সাত বছর বয়স থেকেই পারিবারিক সূত্রে তিনি যাত্রাগানের দলে ঢোকেন। যাত্রা পরিবেশনের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত সামাজিক বা পারিবারিকভাবে তিনি বাধাগ্রস্তহননি। যাত্রার গান ও অভিনয় প্রসঙ্গে পারভীন বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই দেখেশুনে গান শিখছি। এখন আর রিহার্সেল লাগে না। নিজের ভেতর অনেক যাত্রাপালা ঢুকে গেছে, অভ্যাস হয়ে গেছে। বইয়ের (যাত্রাগানের পা-ুলিপি) সিন বাই সিন, পাঠ বাই পাঠ টোটাল মুখস্থ হইয়া গেছে।’ যাত্রার বিভিন্ন পর্যায়ে পোশাকের বদল প্রসঙ্গে পারভীন বলেন, ‘এইটা তো আদিযুগ থেকে চলে আসছে। এই রূপবান দেখে, আমার আগে যাঁরা এই যাত্রার জগতে আইছে, তাঁদের পোশাকের ব্যবহার দেখে আমি শিখছি। যেমন বনে যাওয়ার সময় কালো শাড়ি পিন্দা থাকতে হয়, মাসির বাড়ি যাওয়ার সময় আবার কাপড় চেইঞ্জ করা লাগে। তারপরে, রহিম তো স্বামী, রূপবান চুল দিয়া রহিমের পা মুছতেই পারে, এইটা ব্যাপার না। এইসব দেখে দেখেই আমরা শিখছি।’
‘মনে করেন, আমি রূপবানের অভিনয় করতাছি, আমি নিজেকে মনে করি বাস্তবেই রূপবান। তার জন্যে ভিতর থেকে আবেগটা রূপবানেরই আসে। আমি মনে করি, কাহিনিটা পঞ্চাশ বছর আগের বা একশ বছর আগের হোক, হয়তো এটা বাস্তব ছিল, নয়তো অবাস্তব। ওইখানে যে-মেয়েটা রূপবান ছিল, সে হয়তো আমার মতোই ছিল। বাস্তবে তার কাছে বারো দিনের স্বামী হয়তো আসছিল। এইটাই ভেবে সিন বাই সিন আমি অভিনয় করি। এই জন্যেই আবেগটা ভিতর থেকে আসে।’ বললেন ফরিদা পারভীন। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের অফ সিজন হলো চার মাস। আর সিজন হলো ছয় মাস। বাকি দুমাস রোজাসহ 888sport app কারণে যাত্রা হয় না।’
তাজেল চরিত্রে অভিনয় করেছেন শিউলি বেগম। আট বছর ধরে অভিনয় করছেন। ফরিদপুরে পৈতৃক বাড়ি, শ^শুরবাড়ি নরসিংদীতে। এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক যাত্রাগানে অভিনয় করেছেন। প্রখ্যাত অভিনেত্রী মায়ারানির সঙ্গেও তাঁর অভিনয়ে অংশ নেওয়ার সুখ888sport sign up bonus রয়েছে। এছাড়া একাববর বাদশা চরিত্রে বাহার, ছায়েদ বাদশা চরিত্রে আজাদ, জাহানারা চরিত্রে লক্ষ্মী, রহিম চরিত্রে ইকবাল হোসেন, উজির চরিত্রে আলম, বাঘ চরিত্রে হোসেনসহ অনেকেই বনবাসে রূপবান যাত্রাগানে অভিনয় করেছেন।
যাত্রা888sport live chatীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেল, প্রত্যেক যাত্রা888sport live chatীই একেকটি সাজঘরের অধীনে কাজ করে থাকেন। কোনো পাড়া, মহলস্না কিংবা গ্রামের মানুষ যদি যে-কোনো যাত্রাপালা মঞ্চায়ন করাতে চান, তাহলে যে-কোনো একটি সাজঘরের সঙ্গে তাকে চুক্তিবদ্ধ হতে হয়। যাত্রাগানটির জনপ্রিয়তা অনুযায়ী সে-চুক্তি ২৫ হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ টাকা পর্যন্তও হয়। সেসব যাত্রা মঞ্চায়ন শেষে সাজঘরের মালিক অভিনয়888sport live chatীদের তাৎক্ষণিকভাবেই যোগ্যতা ও অভিনয়ের ধরন অনুযায়ী পারিশ্রমিক দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি যাত্রাগানে কনসার্ট পরিবেশনায় অংশগ্রহণকারী বাদ্যযন্ত্র888sport live chatীদের টাকাও একইভাবে দেওয়া হয়ে থাকে। যাত্রাগানে সচরাচর ড্রাম, প্যাড, বাঁশি, জুরি, কর্নেট, কঙ্গো, কি-বোর্ড, মন্দিরা জাতীয় বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
যাত্রা888sport live chatীদের মারফত সাজঘরের বিষয়টি জানার পর সেগুলো পরিচালনা-সংক্রান্ত তথ্য জানার ব্যাপারে বেশ আগ্রহ তৈরি হয়। আমাদের অন্যতম সফরসঙ্গী বাংলা একাডেমির পরিচালক শাহিদা খাতুন, সহকারী পরিচালক সাইমন জাকারিয়াসহ অন্যরাও আগে থেকেই এসব সাজঘর দেখার ব্যাপারে উৎসাহ জুগিয়েছিলেন। তাই কোনোরকমে দুপুরের খাওয়া শেষে আমরা চলে গেলাম ভেলানগর বাজারের 888sport app বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। যেখানে এক সারিতে বেশ কয়েকটি সাজঘর অবস্থিত। এর মধ্যে মিতা সাজ বিতান, মঞ্চ শোভা সাজঘর, লোকনাথ সাজ বিতান উলেস্নখযোগ্য। আমরা কয়েকজন ঢুকলাম মিতা সাজ বিতানে, কারণ একটু আগে ওই সাজ বিতানের অধীনেই বনবাসে রূপবান যাত্রাপালাটি মঞ্চায়িত হয়েছিল। তাই স্বাভাবিকভাবেই সাজঘরটি নিয়ে আকর্ষণবোধ করছিলাম।
মিতা সাজবিতানে ঢুকতেই দেখা যায়, কালো হাতলবিশিষ্ট একটি ফোমসমেত চেয়ারে বসে রয়েছেন এক যুবক। জানা গেল, তাঁর নাম শাখাওয়াত হোসেন। বয়স ৩৪। বাড়ি নরসিংদী সদরের বদরপুর গ্রামে। পেশায় যাত্রাগানের ড্রেসার, অর্থাৎ অভিনয়888sport live chatীদের মেকআপ থেকে শুরু করে সাজসজ্জা সবকিছুই তিনি করে থাকেন। যাত্রাপালার নির্দেশকের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি পাত্রপাত্রীদের সাজিয়ে দেন। অপর আরেকজন ব্যক্তিকে বাইরের একটি চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায়। কথাপ্রসঙ্গে জানা গেল, ওই ব্যক্তির নাম মো. ওসমান গনি। বয়স ৫১। সাজঘরের মালিককে নিয়ে আসার জন্য শাখাওয়াতকে পাঠিয়ে ওসমান একসময় ওই কালো হাতলের চেয়ারটিতে গিয়ে বসেন। যাত্রাপালার ডাকসাইটে খলনায়ক হিসেবে এলাকায় ওসমানের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার লাকপুর গ্রামে তাঁর বাড়ি। ২১ বছর ধরে অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন।
ওসমান আক্ষেপ করে বললেন, ‘অছলিশ (অশস্নীল) নৃত্যের কারণে যাত্রাগানটা বিপথে চলে যাচ্ছে। অছলিশ নৃত্য না-থাকলে দর্শক হয় না, জুয়া ছাড়া যাত্রা হয় না। দেখা যাচ্ছে, জুয়া না হলে যাত্রা চলে না। তাই যাত্রাপেশাটা এখন খুব নাজুক অবস্থায় আছে। অছলিশ নৃত্য বন্ধ না-করলে যাত্রাটা ভালো পজিশনে যাবে না। পুরুষ888sport live chatীরা অভিনয়ে উঠতেই পারি না। দর্শকরা কেবল 888sport promo codeদের নাচ দেখতে চায়। কিন্তু আমরা কখনো অছলিশ নৃত্য করাই না, যেখানে জুয়া হয় সেইখানে যাত্রা করতে যাই না। আমরা ভালোভাবে যাত্রাপালা করি, কোনো উলটাপালটা কাজে আমরা নাই।’ তিনি আরো জানান, ওসমান আমত্মঃজেলা ট্রাকচালক ছিলেন। সে-পেশা ছেড়ে শখের বশে যাত্রাগানে এসেছিলেন। অথচ তাঁর পরিবারের কেউ আগে এ-পেশায় সম্পৃক্ত ছিলেন না। স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়েসহ তাঁর পরিবারের লোক888sport free bet ১০ জন। এত লোক888sport free betর পরিবার কেবল যাত্রা করে তিনি আর চালাতে পারছেন না বলে জানালেন। আবার অন্য পেশায়ও এখন তাঁর আর মন বসে না।
ওসমানের আক্ষেপের কথা শোনার সময়েই মিতা সাজঘরের মালিক (স্বত্বাধিকারী) শাহীনূর আক্তার লক্ষ্মী এসে উপস্থিত হন। একটু আগেই তিনি বনবাসে রূপবান যাত্রাপালায় জাহানারা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। শাহীনূরের মূল বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায়। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়ে। বাবা একনাম কীর্তন গাইতেন। বাবার সঙ্গে তিনি বিভিন্ন পালা পরিবেশনা দেখতে যেতেন। সে-সুবাদে শিখে নিয়েছিলেন রাধার মানভঞ্জন, কৃষ্ণলীলার মতো গুরুত্বপূর্ণ সব পালা। কিশোরী বয়সেই নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের বিষনন্দী গ্রামের প্রখ্যাত মাস্টার ধনু মিয়াকে ওস্তাদ ধরে নিজে যাত্রাগান শেখা রপ্ত করতে থাকেন। নাচ-গান-অভিনয় শেখা শেষে কাসেমমালা যাত্রাপালায় অভিনয় দিয়ে তাঁর এ-পেশা শুরু হয়। এরপর দেদার অভিনয় করে যেতে থাকেন। ১৯৯৪ সালে এক মুসলমান যুবককে ভালোবেসে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত হন। তাঁর নতুন নাম হয় শাহীনূর আক্তার। কিন্তু ‘লক্ষ্মী’ নামে সুপরিচিত নায়িকার ওই নামটি নামের শেষে ঠিকই রয়ে যায়। এখন তাঁর বয়স প্রায় ৩৫।
শাহীনূর জানান, শুরুর বাইশ বছর নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করে গেলেও এখন গুরুত্বপূর্ণ পাশ^র্চরিত্রে অভিনয় করে থাকেন। এ পর্যন্ত অন্তত শতাধিক যাত্রাগানে অভিনয় করেছেন এবং দুই সহস্রাধিকবার মঞ্চে উঠেছেন অভিনয়ের সুবাদে। আগে অন্যের পরিচালনাধীন অপেরার অধীনে থাকলেও এখন নিজেই একটি সাজঘর ও অপেরার মালিক হয়েছেন। তাঁর সাজঘর ‘মিতা সাজ বিতানে’র পাশাপাশি যাত্রাগানের দল ‘মিতা অপেরা’ও এখন যাত্রামোদীদের কাছে সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান। আগে 888sport appর মায়া ও আয়েশা নামের দুজন 888sport promo code যাত্রা888sport live chatী দুটি সাজঘরের মালিক থাকলেও এখন সারা দেশে তিনিই একমাত্র সাজঘরের 888sport promo code মালিক বলে জানালেন। যদিও অসংখ্য পুরুষের মালিকানাধীন সাজঘর নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে। তিনি আরো জানালেন, সাধারণত আশি^ন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ ও ফাল্গুন এই ছয় মাস যাত্রার মৌসুম হিসেবে স্বীকৃত। এর বাইরে বাকি ছয় মাস টুকটাক যাত্রা গাইতে ডাক পড়ে। তবে সাজঘর সারা বছরই খোলা থাকে। বছর জুড়েই গায়ে হলুদ, বিয়ে ও জন্মদিনের অনুষ্ঠানে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকায় নানা সাজের সামগ্রী তারা ভাড়া দিয়ে থাকেন।
শাহীনূর আক্তার জানান, যাত্রাপালার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী আয়োজকদের কাছ থেকে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেন। প্রতি রাতে অভিনয়ের জন্য একজন নায়িকাকে পাঁচ হাজার, নায়ককে তিন হাজার এবং 888sport app চরিত্রে অভিনয়কারীদের আটশ’ থেকে আড়াই হাজার টাকা দিতে হয়। তবে বায়নার ধরন অনুযায়ী অভিনয়888sport live chatীদের সম্মানীর পরিমাণ হেরফের হয়ে থাকে। একেকটি দলে সাধারণত ৩০ জন সদস্য থাকেন। তাঁর অপেরা থেকে রূপবান, আলোমতি প্রেমকুমার, আপন দুলাল, গুনাইবিবি, কাসেমমালা, সাগর ভাসা, কমলার বনবাস, কাজলরেখা, বেদের মেয়ে জোছনা, খায়রুন সুন্দরী, রাখালবন্ধু, লাইলি মজনু, ভিখারির ছেলে প্রভৃতি ঝুমুর যাত্রা এবং প্রেমের সমাধিতীরে, জেল থেকে বলছি, জীবননদীর তীরে, একটি পয়সা, সূর্যসাক্ষী প্রভৃতি লেবেল যাত্রাপালা পরিবেশন করে থাকেন। এর বাইরে তাঁরা কৃষ্ণলীলা, রাজা হরিশচন্দ্র, রাধার মানভঞ্জন জাতীয় ঢপযাত্রা এবং পালা-কীর্তনও পরিবেশন করে থাকেন।
শাহীনূর নিজের পরিবারের বর্তমান অবস্থার বিষয়টি উলেস্নখ করেন এভাবে – দুই বছর আগে স্বামী আরেকটি বিয়ে করে চলে গেছেন। এখন দুই মেয়েকে নিয়েই তাঁর সংসার। দুই মেয়েই পড়ালেখা করছে। বড়টা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে, ছোটটা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। ভেলানগরের পশ্চিম পাড়াতে এখন তাঁর বসতি। বাসা ভাড়া দেন পাঁচ হাজার টাকা। এ ছাড়া সাজ বিতানের ভাড়া দুই হাজার টাকা, বিদ্যুৎ বিল প্রতি মাসে দিতে প্রায় প্রায় তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো টাকা। মাসে আয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। সে-টাকা দিয়েই চলে পরিবারসহ সাজ বিতানটি পরিচালনার কাজ। তিনি আরো জানান, মিউজিক, পোশাক, মেকআপ, 888sport promo code888sport live chatী থেকে শুরু করে পুরুষ888sport live chatী পর্যন্ত তাঁরা সাজঘরের অধীনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্দিষ্ট কিছুদিনের জন্য ভাড়া দিয়ে থাকেন। আয়োজকরা যাত্রাপালা মঞ্চায়নের পর অভিনয়888sport live chatীরা পুনরায় এসে পরবর্তী কাজের আশায় সাজঘরে যোগ দেন।
শাহীনূর যাত্রা-পেশা সম্পর্কে আক্ষেপ করে বলেন, ‘নরসিংদী, রায়পুরা, শ্রীপুর, গাজীপুর, কটিয়াদি, কিশোরগঞ্জসহ ভাটি অঞ্চলে যাত্রাগানের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। হিন্দু-মুসলমান মিলিতভাবে, এমনকি 888sport promo codeরাও আমাদের যাত্রা নিয়মিত দেখেন। আমাদের একেকটা যাত্রা দেখতে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ পর্যন্ত হয়। আমাদের যাত্রায় কোনো নৃত্য হয় না। অনেকে 888sport app থেকে প্রিন্সেস নিয়ে এসে নাচায়। নগ্ননৃত্যের কারণে যাত্রা ধ্বংস হচ্ছে। যাত্রার দর্শক ঠিকই আছে; কিন্তু মুষ্টিমেয় কিছু অসৎ উদ্দেশ্য লালনকারী অপেরার কারণে সুস্থ যাত্রাচর্চা লালনকারী অপেরাগুলো টিকে থাকতে পারছে না।’
শাহীনূরের আলাপের সময় পাশেই ছিলেন যাত্রাগানের নির্দেশক শহীদুলস্নাহ বাহার। মঞ্চায়ন হওয়া বনবাসে রূপবান যাত্রাপালার নির্দেশকও তিনি। তাঁর মূল বাড়ি নরসিংদীর বারবাড়িতে। বর্তমানে ভেলানগরের পশ্চিম পাড়ায় থাকেন। শহীদুলস্নাহ জানান, রহিম বাদশা রূপবান কন্যা নামের যাত্রাপালাটির প্রথম লেখক জসীমউদ্দীন আহমেদ। এরপর মো. সামসুল হক দ্বিতীয়বারের মতো এটি পুনঃলেখন করেন। তৃতীয়বারের মতো ২০০৬ সালের দিকে তিনি বনবাসে রূপবান নাম দিয়ে এটি কিছুটা পুনঃলেখন করেন। তিনি জানান, শিউলি অপেরা, মিতা অপেরা, মেঘনা অপেরা, কর্ণফুলী অপেরা, লোকনাথ অপেরাসহ বিভিন্ন অপেরার অধীনে নরসিংদীতেই বর্তমানে পাঁচ শতাধিক যাত্রা888sport live chatী রয়েছেন।
শহীদুলস্নাহ বাহারের সঙ্গে আলাপ শেষ করে গাড়িতে আমরা 888sport appর উদ্দেশে ফিরতি পথে পা বাড়াই। ততÿণে সন্ধ্যার আলো-অাঁধারি চারপাশে ভর করেছে। গাড়ির খোলা জানালা দিয়ে বৈশাখের লু-হাওয়া আছড়ে পড়ছিল আমাদের শরীরে। সহযাত্রীরা আড্ডা-কৌতুকে মেতে ওঠেন। একে অপরের সঙ্গে যাত্রা দেখার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে থাকেন। সে-আড্ডায় থেকেও আমার মন পড়ে রয় রূপবানে। আহা, কী চোখ-ধাঁধানো অভিনয় আর মনকাড়া সৌন্দর্য! ভাবি আর অবাক হই, কেমন করে কখনো আলেয়া, কখনো রূপবান, কখনো আলোমতি কখনো কমলা, কখনো খায়রম্নন সুন্দরী হয়ে দোর্দ-প্রতাপে ফরিদা পারভীন শাসন করে চলেছেন বাংলার লোকনাট্যজগতের সাম্রাজ্য?

