শার্ল বোদলেয়ারের একটি গদ্য888sport app download apk

888sport app download apk latest version ও টীকা : সনৎকুমার সাহা

স্বপ্নের মতো এক ঘর, সত্যিকার বোধ জন্ম নেয়। বদ্ধ বাতাসে ভাসে হালকা গোলাপি নীল আভা।

চেতনা সেখানে ভেজে অলস বর্ষণে। ঘ্রাণে মিশে থাকে তার খেদ ও বাসনা – নীলাভ সিঁদুরে ছায়া এ যেন সাঁঝের। গ্রহণের কালে খোঁজা শরীরের স্বাদ। আসবাব-তৈজস-সব প্রসারিত বাধ্য অভিলাষে, ছড়ানো-ছিটানো আর ঝিমুনি জড়ানো। তারা যেন মগ্ন ঘোর কল্পনা মায়ায় যেন তারা চলমান ঘুমের ভেতর। বাগানে সবজির মতো, অথবা খনিতে হিরে-মণি-মানিকের। অলক্ষে পূর্ণতা পায়। ফুল সূর্য আকাশেরা দিনান্তে কথা বলে নীরব ভাষায়। এরাও তেমন। দেয়ালে ঝোলে না কোনো 888sport live chatিত নিষেধ। শুদ্ধ স্বপ্ন অনুভব সমগ্রকে আনে। আঁকা ছবি তার পাশে বিশুদ্ধ বিকার। আলো-অন্ধকার মেশা মনোরম পূর্ণতা এখানে সবেতে।

নিখুঁত পছন্দ করা অচেনা সুবাস, যাতে আছে আবছা এক ভেজাভেজা ভাব, এ-ঘরে বাতাসে ভাসে। আমার অলস হিয়া তার অনুভবে শান্তি পায়। কবোষ্ণ ঘেরাটোপে লতাগুল্ম চারাগাছ প্রাণের নীরব গান গায়।

মসলিন বরিষণ অজস্র ধারায় জানালা ও বিছানা পেরিয়ে। জলপ্রপাতের মতো শুভ্র ফেনায় গড়ে সামনে আড়াল। আর ওই বিছানায় এলিয়ে দিয়েছে দেহ – প্রিয়তমা সুন্দরীতমা সে। কী ক’রে এখানে? কে তার সারথি? কোন মন্ত্রবল তাকে শায়িত করেছে এই সুখস্বপ্নে কোমল শয্যায়? কী এসে-যায় তাতে? ওই সে ওখানে! আমি তাকে চিনি।

ওই সে দু-চোখ, যাদের আগুনে পুড়ে ছাই হয় প্রভাতের নরম আঁধার; ওই সে চাহনি চতুর। বাসনা ঘন – চিনেছি তাদের রক্ত জমাট করা হিম তাড়নায়। ওরা কাছে টানে, বশে আনে সরল নির্মল চোখে মধুর এষণা। ধ্বংস করে তাকে। কতবার ডুবে গেছি আমি ওই  কৃষ্ণ ভ্রমরের সুতীব্র নেশায়। কৌতূহল তবু অশেষ।

কোন সে শুভার্থী দানবের কাছে আমি ঋণী, যার অবদানে এই রহস্য, নৈঃশব্দ্য, মিষ্টি সুগন্ধের জালে বন্দি হয়ে থাকি? হে প্রশান্তি-পরমাকান্তি-প্রমা, তোমার প্রসাদে যত কিছু আছে, যা-কিছু আছে, তারা কিছু নেই, কণাটুকু নেই, সাদা চোখে এই জীবনের নামে যতই যা জানি, যেমন যা পাই, তাদের কোন কিছুতে। আমি তাকে বুঝেছি এখন। ক্ষণে ক্ষণে পলে পলে তার স্বাদ অগাধ পেতেছি।

না। কোনো ক্ষণ নেই, পল নেই। মুছে গেছে সময়ের দাগ। অনন্ত বিরাজ করে! আনন্দ অশেষ! …

 অকস্মাৎ করাঘাত। দরজায় ঝন্ঝন্ রোল। নরকের দুঃস্বপ্ন যেন! যেন এক মুষ্ট্যাঘাতে ধরাশায়ী আমি।

প্রেত এক ঘরে ঢোকে। হয়তো পেয়াদা কোনো ধমকাবে কড়া স্বরে আইনের নামে, অথবা নষ্ট বেশ্যা এক, দুঃখের পাঁচালি গেয়ে আমাকে জড়াবে, পাণ্ডুলিপি কিস্তির তাগাদায় – হতে পারে কাগজের লোক।

এই ঘর – মরলোকে স্বর্গের রচনা – আমার স্বপ্নের রানী – মানস সুন্দরী – সব জাদু উবে যায় প্রেতের হামলায়।

হায় বিষীষিকা! হায়! আমি তো জানি, এই আঁস্তাকুড়, এই চির অবসাদ – অন্ধ কারাগার এসব আমারই! এই যে ভাঙাচোরা ধুলোভরা আসবাবস্তূপ, শিখাহীন চটচটে নোংরা বাতিদান, বরষার ছাঁট ঢুকে জানালার নিচে জমা জ্যাবজেবে জল, কাটাকোটা পাণ্ডুলিপি – আধখেঁচড়া অথবা, ক্যালেন্ডারে দাগ দেওয়া নষ্ট দিনগুলো, এরাই বহন করে আমার নিয়তি। আর ওই অন্য জগতের ঘ্রাণ, হৃদয়ে জাগিয়েছিল যা এক তুরীয় উল্লাস, হায়! তা হারিয়ে গেছে। তামাকের কটু গন্ধ ভ্যাপসা হাওয়াতে মিলে দখল নিয়েছে তার। তুমুল তাণ্ডবে ঘেরে শুধু নির্বাসন।

বিরাগ জড়ানো এ দমবন্ধ জগৎ। একমাত্র প্রেয়সী এই আফিমের ঢেলা – আমাকে তৃপ্ত করে। মোহতে জড়ায়।

: কিন্তু হায়! সেও তো পালায়। বিশ্বাস রাখে না। আমার সঙ্গিনী যারা সবাই এমন!

সময়ও যে ফিরে আসে : আবার শাসন করে সম্রাটের মতো। ওই বৃদ্ধ শয়তান সঙ্গে আনে ফেরুপাল যত – 888sport sign up bonus আর অনুতাপ, মনের বিকার, ভয়, আত্মরতি, ক্রোধ, আর, দুঃস্বপ্ন-যন্ত্রণা।

পল-অণুপল সব অনর্থক দীর্ঘ হয় আরো। ঘড়ির শাসন থেকে ছিটকে বেরিয়ে এসে বলে, ‘আমিই জীবন, অসহ্য-জঘন্য এই ভারবাহী পশুর জীবন!’ সুখবর জানাবার একটি মুহূর্ত শুধু মানুষের অস্তিত্ব সীমায় – সুখের সে-বার্তায় কেঁপে ওঠে অকারণ মানবহৃদয় – এবং তা ব্যতিক্রমহীন। ছাড় নেই কারো।

সময় রাজত্ব করে, এই সত্য শুধু। দাপটে চালায় তার একক শাসন। আমাকে তাড়ায়। কলুর বলদ যেন। শুধুই হাঁকড়ায়, ‘মরবি না। অভিশপ্ত! এমনই বাঁচবি!’

(প্রকাশকাল ১৮৬২)

* ফরাসি শিরোনাম  La Chambre Double – ইংরেজি 888sport app download apk latest versionে পাই The Double Room। আমি ফরাসি জানি না। দুটো 888sport app download apk latest version পড়েছি। একটি Anthony Hartley-র, অন্যটি Francis Scarfe-র। ইংরেজি ভাঙা-ভাঙা জানি। নিজের কথায় বোঝাতে প্রয়োজনমতো দুটোর ওপরই – হয়তো একটার সেখানে, অথবা পরে, অন্যটা-নির্ভর করেছি। শুদ্ধতার দাবি করি না। ভাবের ধারাবাহিকতা ফুটল কি না, আমার দিক থেকে সেইটুকুই যা দেখবার। 888sport app download apkর অন্তর্লীন মাধুর্য ক্ষুণ্ন হয়েছে নিশ্চয়। আমি সেজন্য ক্ষমাপ্রার্থী।

এই 888sport app download apk বাছাই করার পেছনে অন্য একটি কারণ রয়েছে। এটা বহুল প্রচারিত, ১৯২৪-এ আর্জেন্টিনায় অসুস্থ রবীন্দ্রনাথ ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর আন্তরিক শুশ্রƒষায় সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। তখন কবির লেখায় কাটাকুটি জোড়া লাগিয়ে অন্যমনস্ক রেখার টানে নানারকম আকার যে ফুটে ওঠে, অনেক কিছু অচেনা ও অদ্ভুত তা ওকাম্পোর নজরে আসে। ওই সময়ে ইউরোপে চিত্রকলায় অবচেতনের প্রায়োগিক ভূমিকা নিয়ে হইচই বেশ প্রবল। ওকাম্পো, অনুমান, তার সঙ্গে যোগাযোগের একটা সূত্র খুঁজে পেয়েছিলেন। তিনি কবিকে ছবি আঁকায় উৎসাহিত করেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁর কথায় শুরুতে পাত্তা দেননি। কিন্তু কদিন পরে অনেকটা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলেন, তিনি ছবি আঁকবেন।

এই সময়ের আরো একটা বিষয়ের উল্লেখ পাই। ওকাম্পো রবীন্দ্রনাথকে বোদলেয়ারের 888sport app download apkর সঙ্গে পরিচিত করায় উৎসাহী হয়ে ওঠেন। একটা 888sport app download apk তাঁকে পড়তে দেন। পরে জানতে চান, কেমন লাগলো তাঁর ওই 888sport app download apk। যেটুকু জানতে পাই, রবীন্দ্রনাথ উপেক্ষার স্বরে উত্তর দেন, ওই ‘ফার্নিচারের’ 888sport app download apkটি? এ নিয়ে কথোপকথন আর এগোয়নি বলে নানা লেখায় পড়ি।

এখন বোদলেয়ারের এই 888sport app download apkটিতে আমরা ‘ফার্নিচার’ (আসবাব) শব্দটি (ইংরেজি 888sport app download apk latest versionে) দু’বার পাই। দুই বিপরীত দৃশ্যকল্প অনুভব তা রচনা করে। এ থেকে এমন অনুমান (অনুমানই, কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য বা সিদ্ধান্ত নয়) কী করা যায়, ওকাম্পো এই 888sport app download apkটি রবীন্দ্রনাথকে পড়তে দিয়েছিলেন এবং কবির এতে কোনো উৎসাহ জাগেনি? বোদলেয়ার ও রবীন্দ্রনাথ, সৃষ্টিকলায় দুই ভিন্ন জগতের বাসিন্দা, এ-কথা আমরা বরাবর শুনে আসছি। মঙ্গল-অমঙ্গল, সত্য-সুন্দর, এসবের ভাবনা বলয়ে আবু সয়ীদ আইয়ুবও এমনটিই বোঝাতে চান। গত শতকে তিরিশের দশকের বিতর্কে রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেন। ‘আধুনিক কাব্য’ (১৩৩৯) 888sport liveে তিনি বলছেন, … ‘অতি বড়ো বৈজ্ঞানিক সাম্যতত্ত্বেও যে হাসি সূর্যের, যে হাসি ওক-বনস্পতির, যে হাসি অ্যাপলোর, সে হাসি ব্যাঙের নয়। …’ আরো জানাচ্ছেন ‘888sport live football তত্ত্ব’ (১৩৪০)-এ, ‘গোলাপের আকারে আয়তনে, তার সুষমায়, তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গের পরস্পর সামঞ্জস্যে বিশেষভাবে নির্দেশ করে দিচ্ছে তাঁর সমগ্রের মধ্যে পরিব্যাপ্ত এককে, সেই জন্যে গোলাপ আমাদের কাছে কেবল একটি তথ্যমাত্র নয়, সে সুন্দর।’ অন্যত্র প্রশ্ন তুলেছেন, গোলাপ ফুল যেমন ফুল, ঘেঁটুফুলও কি তেমন? এখানে অবশ্য একটা কথা বলা যায়, প্রাচীন ভারতবর্ষের 888sport live chat-888sport live footballে গোলাপের কোনো উল্লেখ নেই। পদ্মফুল আছে। গোলাপ এসেছে পারস্যের সঙ্গে সংযোগে। আর ঘেঁটুফুলেও আছে প্রকৃতির বিস্ময়। তাছাড়া সুন্দর কি স্বয়ংসিদ্ধ? সে কি দৃষ্টি-নিরপেক্ষ? বোদলেয়ারে রোমান্টিক আর্তি (romantic agony), মারিও পুত্জো (Mario Puzzo) এই রকমই বলেছেন, সমস্ত বৈপরীত্য, সূচিমুখ তীব্রতা নিয়ে চেতনার শীর্ষবিন্দুতে আছড়ে পড়েছে, এ-কথা তাঁর নিন্দুকেরাও স্বীকার করেন। জীবনের নানা বিড়ম্বনা তাঁর 888sport app download apkকে অভিজ্ঞতার সীমায় বেঁধে রেখে পাঠককে বিপন্ন বিস্ময়ে অভিভূত করে, এমন কথাও আমরা শুনি। কিন্তু তাঁর ক্লাসিক সমগ্রতার তৃষ্ণা ও সেই তৃষ্ণাপূরণের অসিধারা কতশত বিপর্যয়েও অটুট থেকেছে। ভাষার শৃঙ্খলা ও নান্দনিক পরিমিতিবোধ এতটুকু ক্ষুণ্ন হয়নি। কবিজীবনের গোড়ার দিকেই তিনি তাঁর দেখা ও লেখার ব্রত একভাবে স্থির করে তা ঘোষণা করেছিলেন Correspondences 888sport app download apkয়। এতে আকুতির তীব্রতা আছে, ক্লাসিক সমগ্রের আকাক্সক্ষাও আছে। পড়লেই তা বোঝা যায় :

সংবেদনা

প্রকৃতি মন্দির এক – তার থামগুলো নানা সুরে

বহু মুখে ধায়, অরণ্যে সংকেত এক, –

মানুষের নিত্য আসা-যাওয়া পরিচিত

দৃষ্টি হেনে হেনে বুঝে নিতে থাকে।

বহু দূরে মিশে যাওয়া ঘনকালো ছায়া –

ভেসে আসে অতলের প্রতিধ্বনি যেন,

আরো গাঢ় আলো অন্ধকার।

শব্দ-বর্ণ-ঘ্রাণ সব একে অন্যে কানাকানি করে।

শিশুর ত্বকের মতো নরোম আবেশ, যেন

মিষ্টি সুরের দোতারা, আরো সে সবুজ বন

দিগন্তের পানে – অন্যদিকে নষ্টভ্রষ্ট ধনাঢ্য বিজয়ী।

অসীমে বিস্তৃত সীমা। মৃগনাভি,

হালকা লোবান, ধূপের মাদক গন্ধ।

গেয়ে ওঠে দেহে মনে আনন্দ অপার।  

এই অনুভবে পূর্ণতার আকাক্সক্ষা থেকে তাঁর 888sport live chatীসত্তা কখনো এতটুকু সরেনি। ফলে রোমান্টিকের তলদেশে ক্লাসিকের শক্ত পাটাতন থেকেই যায়। শত বিপন্নতাতেও তাঁর 888sport live chatীসত্তা তাঁকে আঁকড়ে থেকেছে। অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথ নিজেই 888sport app download apkর আড়ালে জোরের সঙ্গে জাত চিনিয়েছেন, তিনি রোমান্টিক। কিন্তু সত্যিই কি তাই? রাজা নাটকের শেষে রানী সুরঙ্গমা আঁধারঘরের রাজাকে দেখতে চাইলে তিনি বাধা দেন। বলেন, সহ্য করতে পারবে না। তবু রানীর আগ্রহে শেষ পর্যন্ত দেখা দেন। কেমন সে দেখা, জানতে চাইলে রানী বলেন, ‘তুমি সুন্দর নও প্রভু, তুমি অনুপম।’ ‘অনুপমে’র ভাবকল্পনা মুহূর্তে রোমান্টিকতার সীমা পেরিয়ে বিশেষ থেকে নির্বিশেষে, এক ক্লাসিক্যাল, বা, ধ্রুপদী সমগ্রতায় বিস্তার পায়। গানেও আছে ‘পূর্ণপ্রাণে’ চাওয়ার কথা। আছে ‘অশেষে’র জন্যে আকুতি। এগুলো রোমান্টিক নয়। সামগ্র্যের চাহিদা পূরণ। অবশ্য আরো রোমান্টিক।

তাহলে রবীন্দ্রনাথ যখন বোদলেয়ার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন, এবং তাঁকে নিয়ে কোনো আলোচনা থেকে বিরত থাকেন, তখন সেটা কি সংগত মনে হয়? এমন কি হতে পারে, তিনি তাঁর ব্রাহ্ম ও ভিক্টোরীয় শিক্ষাচারের বৃত্তে অভ্যস্ত থেকে বোদলেয়ারে এবং

এরকম অনেক প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে মৌন থেকেছেন, কিন্তু ভেতরে ভেতরে ঠিকই নিজের সৃষ্টিশীল অধ্যবসায়ে তাদের মিশিয়ে নিয়েছেন? হয়তো সবার সামনে না হলেও আস্থাভাজন কারো সঙ্গে একান্তে এসব নিয়ে কথা বলে কল্পনা ও 888sport live chatের সংযোগশৈলী রচনায় সামঞ্জস্য খুঁজেছেন?

প্রশ্নটা মনে গভীরভাবে দাগ কাটলো একটা বইতে তাঁর আঁকা একাধিক ছবির পুনর্মুদ্রিত প্রতিলিপি দেখে। এগুলোতে যে সমসাময়িক ইউরোপীয় প্রকাশবাদী অনুশীলনের প্রেরণা কাজ করেছে, তা অনেকেই বলে থাকেন। কিন্তু কোনো-কেনোটি যে অন্তরে-বাইরে বোদলেয়ারীয়, এ-কথা বলায় কি কেউ আঁতকে উঠবেন? আমি অবশ্য এতে দুজনেরই অপার মহিমায় বিস্ময়ে আপ্লুত হচ্ছি।

একটি ছবির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করি।

ছবির কেন্দ্রে এক করুণ কোমল অবনতমুখী বিশুদ্ধ নগ্নিকা, ভূলুণ্ঠিতা – যেন দণ্ডিতা লাবণ্যময়ী শাশ্বত কন্যা। পেছনে উচ্চাসনে, ইঙ্গিতে, উদ্ধৃত বিচারক – পুরুষ, কঠোর, কর্তৃত্বপরায়ণ। বাঁয়ে পশ্চাৎপটে তিনজন : 888sport promo code, পুরুষ ও শিশু – পুরুষের চাউনি কঠিন, 888sport promo codeর কাতর, শিশুর সরল। দৃষ্টির সামনে মধ্যডানে এক বিষণ্ন বালক। ছবির জমিন গাঢ় কালো। বিচারকের উচ্চাসন গেরুয়া রঙের। নিজে উৎকট স্বর্ণাভ হলুদ। নগ্নিকা হালকা শ্যামল। অস্পষ্ট নয় দেহের রেখা। সব মিলিয়ে যেন, ‘বেদনা কী ভাষায় রে মর্মে মর্মে গুঞ্জরি বাজে -।’ কিন্তু একই সঙ্গে বোদলেয়ারের ‘গেয়ে ওঠে দেহে মনে আনন্দ অপার’ – 888sport live chatশুদ্ধির আনন্দ। করুণ রঙিন বাস্তবের সত্য-আচ্ছন্নতায় স্নাত।  (ছবির পুনর্মুদ্রণ, দেখুন,  Partha Mitter, The Triumph of Modernism : INDIA’S ARTISTS AND THE AVANT-GARDE, 1922-47, Reaction Books, ১৯২২-৪৭, Reaction Books, London, 2007, p 76) চিত্রকলায় স্থান-কালের বহুমাত্রা একসঙ্গে ধরা দেয়। পটের সীমায় যেন চলমান বিশ্বরূপের একটি দিক দেখি। এখানে ক-টুকরো তথ্যের ওপর নির্ভর করে আবছা সম্ভাবনার এক অনুমান (অনুমানই, কোনো সিদ্ধান্ত নয়। স্বল্প পড়াশোনায় আমার জানার পরিধি খুব ছোট) সসংকোচে করি : রবীন্দ্রনাথ ও ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর অবিন্যস্ত আলাপে বোদলেয়ার হয়তো নানা সূত্রে নানাভাবে এসেছেন। কবির চিত্রকলায় তার পরোক্ষ ছাপ পড়া অসম্ভব নয়। আমরা জানি, প্যারিসে রবীন্দ্রনাথের ছবির প্রদর্শনীর (১৯৩০) আয়োজনে প্রধান ভূমিকা ছিল ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর। তিনি নিশ্চয় ১৯২৪-এ দেখা কবির খাতায় কাটাকুটি জোড়া দেবার অবচেতন খেলার ছবি মাত্র দেখে এমন উদ্যোগ নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েননি। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ব্যক্তিগত সৌহার্দ্য মাত্র এর কারণ হতে পারে না। এই গুণবতী রমণী পরে সংগীত888sport live chatী স্ট্রাভিন্স্কির বিশ্বপরিচিতি ঘটাতেও অনুরূপ যত্নশীল ছিলেন।