শিবনারায়ণ রায়ের 888sport live footballচিন্তার সুষমিত সমগ্রতা

দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় বলতেন, ‘দর্শন মানুষকে জীবনবিমুখ করে, একথা আমি কল্পনা করতে পারি না। দর্শন এক রকমের নয়। নানারকম ইন্টারেস্ট, নানারকম সামাজিক প্রলোভন দর্শনকে উদ¦ুদ্ধ করেছে। …উদ্দালক আরুণি যে দর্শনের কথা বলেছিলেন তা মানুষকে জীবনের দিকে আকৃষ্ট করে, জীবনকে উন্নত করার একটা পথ দেখায়।’ শিবনারায়ণ রায়ের জীবন ও তাঁর 888sport live footballকর্মের দিকে যখন আমরা তাকিয়ে দেখি, তখন দেবীপ্রসাদের উপর্যুক্ত বক্তব্যের তাৎপর্য মর্মে-মর্মে উপলব্ধি করতে পারি। বাঙালি পাঠকের কাছে তিনি যে সেভাবে পৌঁছাতে পারেননি, পাঠক যে তাঁকে মান্যতা দিয়েও তাঁর 888sport live footballকর্মের ভেতরমহলে প্রবেশ করতে চাননি – তার একটা বড় কারণ এই যে, আবেগের চেয়ে মননধর্মের প্রতি শিবনারায়ণের পক্ষপাতিত্ব খুব গভীর আর স্পষ্টভাবে দেখতে পাওয়া যায়। তাতে সমস্যা কোথায়? আমাদের মতো নরম কাদামাটির দেশে মননচর্চার ক্ষেত্রে নানান সমস্যা রয়েছে। সমস্যাটা যে নেহাতই বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া, সে-কথাটিও বলা যায় না।

‘888sport live footballের মাত্রা’ 888sport liveে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘প্রাণের ধর্ম সুমিতি, আর্টের ধর্মও তাই। এই সুমিতিতেই প্রাণের স্বাস্থ্য ও আনন্দ, এই সুমিতিতেই আর্টের শ্রী ও সম্পূর্ণতা।’ আমাদের 888sport live footballে মননশীলতার দিকে যাঁদের আস্থা, তাঁদের রচনাকর্মে এই ‘সুমিতি’র অভাব দারুণ রকম পরিলক্ষিত হয়। এটি রবীন্দ্রনাথেরও দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। সে-কারণে তিনি অন্যত্র মন্তব্য করেছিলেন, ‘সূক্ষ্মদৃষ্টি জিনিসটা যে রস আহরণ করে সেটা সকল সময় সর্বজনীন হয় না।’ রসের অসংযমকে, চিত্তবৃত্তির বাহুল্যবর্জিত আভিজাত্যকে তিনি মেনে নিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু সেইসঙ্গে ‘প্রাণের যে একটা স্বাভাবিক ছন্দমাত্রা আছে’, সেটিকেও অস্বীকার করতে পারেননি। সে-কারণেই তিনি বিশ্বাস করতেন, ‘প্রাণের একটা স্বাভাবিক ছন্দমাত্রা আছে, এই মাত্রার মধ্যেই তার স্বাস্থ্য, সার্থকতা, তার শ্রী। এই মাত্রাকে মানুষ জবরদস্তি করে ছাড়িয়ে যেতেও পারে। তাকে বলে পালোয়ানি, এই পালোয়ানি বিস্ময়কর কিন্তু স্বাস্থ্যকর নয়, সুন্দর তো নয়ই। এই পালোয়ানি সীমালঙ্ঘন করবার দিকে তাল ঠুকে চলে, দুঃসাধ্য-সাধনও করে থাকে, কিন্তু এক জায়গায় এসে ভেঙে পড়ে।’ আর ভেঙে পড়ে বলেই তিনি বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন জীবনের অন্তর্নিহিত সামঞ্জস্যকে। 888sport live footballের ক্ষেত্রেও এই ‘সুপরিমিত সামঞ্জস্য’কে তিনি কখনোই অবহেলা করেননি।

সুধীন্দ্রনাথ দত্তকে লেখা একটি চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘ইনটেলেক্টের ইঁট সাজিয়ে তুমি যদি কাব্যরূপ গড়তে যাও তবে সেই সৃষ্টিতে প্রত্যেক ইঁট ঠিক আপন পরিমাণটির চেয়ে আর কিছু দিতে পারে না।’ পাশাপাশি এটিও বলতে ভোলেননি যে, ‘সজীব গাছের প্রত্যেক অংশই আপনাকে ছাড়িয়ে যাচ্চে – তার মধ্যে সৃষ্টির মায়া আছে যাতে করে সেই অংশগুলি সমগ্রকে সহজেই স্বীকার করে। কাব্যরূপের কথাগুলির প্রত্যেকটাই যদি রূপবান হয় তবে সমস্ত রূপটিকেই অংশে অংশেই পাওয়া যায়। একেই বলে সৃষ্টি।’ (২৭শে আষাঢ়, ১৩৩৫)। সেই সৃষ্টিকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন বলেই সুধীন্দ্রনাথ দত্তকে তিনি অনুরোধ জানিয়েছিলেন এই মর্মে যে, তাঁর রচনাকর্মকে যেন অযথা ‘থিয়োরি দ্বারা পীড়ন’ না করেন। বরং এই উপদেশ দিয়েছিলেন, ‘তোমার রচনাগুলিকে … তার সহজ দেহকে সহজ সজীবতার লাবণ্যে যদি প্রকাশ করো তাহলে তোমার এই লেখাগুলি রসিক সমাজের উপাদেয় ভোজের আয়োজনে লাগবে।’ সুধীন্দ্রনাথ দত্তের কাছে তিনি এইটিও দাবি করেছিলেন, ‘মানুষের মধ্যে যে লোকটা বুদ্ধিমান তার দাবীর দিকে না তাকিয়ে যে লোকটা রসবিলাসী তাকে খুসি করবার চেষ্টা কোরো।’ এখানে লেখাই বাহুল্য যে, রবীন্দ্রনাথের সেই পরামর্শের প্রতি সুধীন্দ্রনাথ মনোযোগ দেননি, দেবার চেষ্টাও করেননি। কেননা, তাঁর চিন্তার বৈশিষ্ট্যগুলো ছিল একেবারেই আলাদা।

দুই

শিবনারায়ণ ছিলেন কতকটা যাকে বলে, মানব ‘মনের সুষমিত সমগ্রতা’য় বিশ্বাসী; যেখানে আবেগের সুমিতির চাইতে বুদ্ধির প্রাখর্যকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। শিবনারায়ণ বিশ্বাস করতেন, ‘বুদ্ধি বহুত্বের মধ্যে ঐক্য আনে, দ্বন্দ্বের মধ্যে সৌষম্য ঘটায়, পরিবর্তনকে স্থিতিস্থাপক করে তোলে। এক কথায়, বুদ্ধি ব্যক্তি-অস্তিত্বে সমগ্রতা সম্পাদন করে।’ সেইসঙ্গে তিনি এটিও মনে-প্রাণে মেনে নিয়েছিলেন যে, ‘বুদ্ধির ভিত্তিতে মানুষে মানুষে লেনদেন সম্ভব হয়, বিচিত্ররূপে সামাজিক সহযোগিতা গড়ে ওঠে এবং বুদ্ধির বিকাশের ফলে মানুষ ভাষা, যন্ত্র, রীতিনীতি, প্রয়োগপদ্ধতি ইত্যাদির উদ্ভাবন করে নিজের অন্তর্নিহিত অফুরন্ত সম্ভাবনাকে সার্থক করতে পারে। আর এই বিচিত্র সম্ভাবনাকে সার্থক করারই অপর নাম মুক্তি।’ এই মুক্তির আয়োজন করাই ছিল শিবনারায়ণের সমগ্র জীবনের ঐকান্তিক সাধনা। যে-সাধনার জোরে তিনি রবীন্দ্রনাথকে খানিকটা দূরে সরিয়ে রাখতেও দ্বিধা করেননি। কেননা, তাঁর মতে, ‘ভারতীয় ঐতিহ্যের প্রতি রবীন্দ্রনাথের গভীর অনুরাগ তাঁর অনুসন্ধিৎসু যুক্তিশীলতাকে পূর্ণ প্রতিষ্ঠা পেতে দেয়নি এবং শেষের দিকে তাঁর মনে দ্বিধা প্রবল হয়ে উঠলেও তিনি বিশ্বাস বা অপ্রতর্ক্য জ্ঞানের আশ্রয় ত্যাগ করেননি।’ এই যে রবীন্দ্রনাথকে পুরোপুরি গ্রহণে এক প্রকার দ্বিধা শিবনারায়ণের মধ্যে সারাজীবনই কাজ করে গেছে – এর কিন্তু একটি বাস্তব কারণও রয়েছে। শিবনারায়ণ নিজেও সেটি পুরোপুরি খুলে না-বললেও আমাদের সেটি বুঝতে অসুবিধে হয় না। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যারা এক মহাযুদ্ধের শেষে জন্মেছি, যাদের যৌবন কেটেছে আরেক মহাযুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, ব্যাপক সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড এবং দেশভাগের মধ্যে দিয়ে, তাঁদের পক্ষে ঐশ্বরিক মঙ্গলময়তার প্রকল্প মানা প্রায় অসম্ভব। রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব বানানোর মধ্যে আমি তাঁর ভাবুক হিসেবে ব্যর্থতা দেখতে পাই।’ এই কথাগুলো আমাদের কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্তের ‘যযাতি’ 888sport app download apkর সেই পঙ্ক্তিগুলো মনে করিয়ে দেয় –

আমি বিংশ শতাব্দীর

সমানবয়সী; মজ্জমান বঙ্গোপসাগরে; বীর

নই, তবু জন্মাবধি যুদ্ধে যুদ্ধে, বিপ্লবে বিপ্লবে

বিনষ্টির চক্রবৃদ্ধি দেখে, মনুষ্যধর্মের স্তবে

নিরুত্তর, অভিব্যক্তিবাদে অবিশ্বাসী, প্রগতিতে

যত না পশ্চাৎপদ, ততোধিক বিমুখ অতীতে।

কারণ ভূতের নির্বন্ধাতিশয়ে, তথা ভবিষ্যের

নিষেধে, অধুনা ত্রিশঙ্কু এবং সে-খণ্ড বিশ্বের

মধ্যে দ্বৈপায়ন আমরা সকলে, জানি কি না জানি,

নাস্তিরই বিবর্তবাদ।

‘নাস্তিকের ধর্মজিজ্ঞাসা’ 888sport liveেও আমরা দেখি যে, শিবনারায়ণ নিজের সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আমি আকৈশোর নাস্তিক। ঠিক কখন নাস্তিক্য আমার চেতনায় আকার পায় বলা শক্ত, কিন্তু 888sport sign up bonusর সড়ক ধরে যত পিছনেই যাই না কেন এমন কোনও কাল আমার নজরে আসে না যখন ঈশ্বর, দেবদেবী, আত্মা, প্রেত, পরকাল ইত্যাদি, কিংবা মানুষীকল্পনাজাত নয় এমন কোনও অতিপ্রাকৃতের অস্তিত্বে আমার আস্থা ছিল, অথবা পূজাপ্রকরণে আমার অনীহা গভীর ছিল না। এবং যদিও বহু শুভানুধ্যায়ীর মুখে বারবার শুনেছি যে রক্ত শীতল হয়ে এলে তুরীয়ের প্রয়োজন (এবং ভাগ্যে থাকলে, উপলব্ধি) নাকি আপনি ঘটবে।’ কিন্তু নিজের বিশ্বাসে তিনি এতটাই স্থিত ছিলেন যে, বয়সের দুর্বহ দুর্বিপাক সহ্য করেও তিনি সেখান থেকে সরে আসার তাগিদ অনুভব করেননি। সে-কারণেই হয়তো এভাবে বলতে পেরেছিলেন, ‘শাস্ত্রনির্দিষ্ট বানপ্রস্থের কোঠায় বেশ কয়েক বছর আগে পা দেবার পরও অদ্যাবধি আমার লোকায়ত প্রতিন্যাসে শৈথিল্য ঘটেনি। এমনকী অজ্ঞাবাদের বিদগ্ধ প্রলোভনও আমাকে কিঞ্চিন্মাত্র আকৃষ্ট করে না।’ (‘নাস্তিকের ধর্মজিজ্ঞাসা’)

তিন

শিবনারায়ণ রায়ের সারাজীবনের সাধনা ছিল এই যে, নিজের মধ্যে জগৎ-বিষয়ে যাবতীয় ‘জিজ্ঞাসাবোধ’কে জাগিয়ে তোলা এবং সেই জিজ্ঞাসাগুলোকে অপরের মনে সঞ্চারিত করে দেওয়া। সেই প্রেরণা থেকেই তিনি দীর্ঘকাল ধরে জিজ্ঞাসা নামেই একটি মননশীল ত্রৈমাসিক পত্রিকা সম্পাদনার সঙ্গে নিজেকে নিবিড়ভাবে যুক্ত রেখেছিলেন। এই পত্রিকা সম্পাদনার পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘ষাট এবং সত্তরের দশকে পৃথিবীর বহু দেশে এবং ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কিছু কৃতবিদ্য এবং দীর্ঘদর্শী বাঙালি স্ত্রী-পুরুষের পরিচয়, ভাবনার আদানপ্রদান, এবং কোনো-কোনো ক্ষেত্রে বন্ধুত্বের সৌভাগ্য ঘটেছিল। জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে এঁদের ভিতরে অধিকাংশেরই ইংরেজি একমাত্র না হলেও মুখ্য অবলম্বন। একটি ত্রৈমাসিক 888sport live পত্রিকার সূত্রে এইসব ভাবুককে যদি বাংলায় লেখার কাজে টানতে পারি, তাহলে বাংলায় মননশীল 888sport live football হয়তো কিছুটা ঋদ্ধ ও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।’ ত্রৈমাসিক জিজ্ঞাসায় প্রকাশিত 888sport liveগুলোর দিকে তাকিয়ে এ-কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, তাঁর সেই চিন্তা পুরোপুরি না-হলেও বেশ খানিকটা ফলপ্রসূ হয়েছিল।

‘মনস্বী বিপ্লবী’ হিসেবেই তিনি  আমাদের কাছে পরিচিত ছিলেন। এটা তাঁর একটি অর্জন, কেননা শুধুই তাঁর লেখালেখির মধ্যে নয়, তাঁর জীবনযাপনের মধ্যেও আমরা দেখতে পেয়েছি ‘ব্যক্তিত্ব-দৃপ্ত-মনীষা’কে। আমাদের 888sport live footballে এ-রকম নজির আরো আছে, কিন্তু খুব বেশি নেই। সেই ব্যক্তিত্বের স্বরূপ সম্পর্কে জানাতে গিয়ে স্বরাজ সেনগুপ্ত বলেছিলেন, ‘শিবনারায়ণের সত্যাশ্রয়ী বিশ্বাসের ভূমিতে যুক্তি, মুক্তবুদ্ধি ও বিবেকের অপলাপ লেশ মাত্র নেই।’ তাঁর এই বক্তব্যকে খানিকটা বিস্তারে নিয়ে গিয়ে স্বরাজ সেনগুপ্ত আরো বলেছিলেন, ‘শিবনারায়ণের বৈচিত্র্যসমৃদ্ধ সৃষ্টির জগতে, শুধু বিচরণ নয়, মনোযোগী অনুবোধে ও অনুধ্যানে আর একটি সত্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে – তিনি মনেপ্রাণে রেনেসাঁস-এর আর্কেটাইপ। রাষ্ট্র888sport apk, ইতিহাস, সমাজ888sport apk, 888sport live football-888sport live chat, চিত্র, সঙ্গীত ইত্যাদি নানা বিষয়ে তিনি বিস্তর সারগর্ভ লেখা লিখেছেন।’ কথাটা খুবই সত্যি। আর সে-কারণে কোনো একটি 888sport liveের মধ্যে দিয়ে শিবনারায়ণের কৃতিত্ব অনুসন্ধান করা, তাঁকে বিশ্লেষণ করা একটা অসম্ভব ব্যাপার হয়ে পড়ে। ফলে খণ্ড-খণ্ড শিবনারায়ণকে নিয়েই আমাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয় বটে, তবে সেইসঙ্গে সান্ত্বনাও পাই এই ভেবে যে, এই খণ্ড-খণ্ড মূল্যায়নের মধ্যে দিয়েই শিবনারায়ণের কৃতিত্ব একটি অখণ্ড রূপ লাভ করবে।

চার

শিবনারায়ণ রায়কে আমরা ‘মানবতন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করতে পারি। তিনি নিজেকে এই অভিধায় চিহ্নিত করতে কখনো অস্বস্তিবোধ করেননি। বরং তাঁর অবস্থানকে পরিষ্কার করার জন্যেই তিনি খোলাখুলিভাবে বলেছিলেন, ‘মানবতন্ত্র একই সঙ্গে বিশ্বমানবিক এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিক। বিশ্বমানবিক, কারণ দেশকাল জাতিবর্ণের কোনও প্রাচীর মানুষ সম্বন্ধে তার আগ্রহকে ব্যাহত করতে পারে না। ব্যক্তিকেন্দ্রিক, কারণ তার সমস্ত প্রয়াসের কেন্দ্রীয় উদ্দেশ্য ব্যক্তি-মানুষকে বিকশিত করা, কারণ ব্যক্তির বিকাশই তার বিচারে সার্থকতার একমাত্র মানদণ্ড।’ এর পাশাপাশি তিনি নিজের চিন্তাশীল জগতের তাৎপর্যময় ভূমিকাকে তুলে ধরে জানিয়েছেন, ‘অপর মানুষের সঙ্গে যোগসাধন না ঘটলে আমরা তো প্রত্যেকে আজীবনকাল শুধু আপন আপন কক্ষেই ঘুরে মরতাম। অপরের অভিজ্ঞতা আত্মসাৎ করতে পারি বলেই না আমাদের আত্মবিকাশের কোনও নির্দিষ্ট গণ্ডি নেই। প্রতি মানুষই অসামান্য, এবং প্রতি মানুষের অভিজ্ঞতা থেকে অপর মানুষের মন নিজের সমৃদ্ধিসাধনের উপাদান সংগ্রহ করতে পারে। প্রতি মানুষই যে স্বতন্ত্র এবং তাদের প্রত্যেককেই পৃথকভাবে বোঝা দরকার।’ (‘রেনেসাঁস ও মানবতন্ত্র’) এক কথায় আমরা বলতে পারি, চিন্তার জগতে তিনি ছিলেন সৎ ও স্বচ্ছ এক জ্ঞানকাণ্ডের অধিকারী। সেখানে তাঁর এই চিন্তার সঙ্গে আমাদের মতের মিল না-ও হতে পারে, কিন্তু সামগ্রিক দৃষ্টিতে তাঁকে 888sport apk download apk latest version না করে পারা যায় না।

পাঁচ

মানবতন্ত্রী শিবনারায়ণ তাঁর এই বিশ্বাস থেকে কখনোই সরে যাননি যে, ‘আমাদের স্বজন শুধু আমাদের ধারে-কাছে বা মাতৃভূমিতে সীমাবদ্ধ নয়; এবং কালের হিসাবে স্বকাল থেকে সভ্যতার আদিকাল পর্যন্ত সর্বকালে সম্ভাব্য স্বজন বিদ্যমান। এই স্বজনদের আবিষ্কার করতে হয়, তাঁদের সঙ্গে হার্দ্য সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য গভীর অনুরাগ ও যত্ন লাগে। তাঁরা তাঁদের হৃদয় মেলে ধরেন যখন তাঁদের বন্ধুতায় আমরা যোগ্য হই।’ শুধুই যে যোগ্য হয়ে উঠি কেবল তা-ই নয়, তাঁর মতে, ‘মুক্ত দৃষ্টি এবং আগ্রহ নিয়ে খোঁজ করলে স্থানেকালে বিস্তৃত সেই বিরাট জগতে মনের মতো স্বজন মেলে।’ এইভাবেই তিনি স্বদেশের সীমানাকে অতিক্রম করে আন্তর্জাতিকতাবাদী হয়ে নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছিলেন। তাঁর রচনায়, তাঁর বিভিন্ন কর্মেও সেসবের পরিচয় পাওয়া যায়।

শিবনারায়ণ রায় যখন মানুষে-মানুষে হার্দ্য সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে পারস্পরিক ‘গভীর অনুরাগ ও যত্নের’ কথা বলেন তখন আমাদের যিশু খ্রিষ্টের কথা মনে পড়ে যায়। ‘বাইবেলে’ আমরা দেখি, যিশু বলছেন : ‘Who is my mother? Who are my brothers’ যিশু নিজেই এ-প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘Whoever does what my Father in heaven wants is my brother, my sister, and my mother’। অর্থাৎ যাঁদের সঙ্গে তাঁর‘হার্দ্য সম্পর্ক’ গড়ে উঠেছিল, তাঁদেরকেই যিশু নিজের আত্মীয় হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছিলেন।

ছয়

প্রখ্যাত চিন্তাবিদ-প্রাবন্ধিক অম্লান দত্ত বলেছিলেন, ‘শিবনারায়ণ 888sport live chat888sport live footballে বিশেষভাবে আগ্রহী। মানবেন্দ্রনাথের জীবনদর্শনে এই আগ্রহের যথেষ্ট স্থান ছিল না, এই সমালোচনা তাঁরই মুখে শুনেছি একাধিকবার। 888sport live chat888sport live footballপ্রীতিকে কিন্তু যুক্তিবাদের সঙ্গে সম্পূর্ণ মেলানো সহজসাধ্য নয়। শিবনারায়ণ মেলাবার চেষ্টা করেন।’ অমøান দত্তের মন্তব্যটি যথার্থ, এর মধ্যে অত্যুগ্র অত্যুক্তি নেই। শিবনারায়ণ নিজেও জানিয়েছিলেন, ‘আমার নানা বিষয়ে আগ্রহ থাকলেও প্রধান অনুরাগ চিরদিনই 888sport live footballে। তরুণ বয়সে যাঁদের লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম যৌবনকালে তাঁদের ভিতরে কারও কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ পরিচয়ের সৌভাগ্য ঘটল। বয়সে এবং উৎকর্ষে তাঁরা অনেক বড়, কিন্তু হৃদয়ের ঔদার্যে আমার মতো কনিষ্ঠ এবং প্রতিষ্ঠাহীন তরুণকে তাঁরা সহজেই আপনজন করে নিলেন।’ মননজীবী, যুক্তিবাদী তিনি নিজের অভিজ্ঞতাকেও গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সে-কারণেই বলতে পেরেছিলেন, ‘নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই শিখি যাঁরা মনস্বী, তাঁরাও স্বজনলাভে উৎসুক।’ আর এইভাবেই অমিয় চক্রবর্তী, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, বুদ্ধদেব বসু, অন্নদাশঙ্কর রায়, আবু সয়ীদ আইয়ুব প্রমুখ বয়সের ব্যবধান পেরিয়ে তাঁর স্বজনভুক্ত হয়েছিলেন।

সাত

888sport live footballে মুক্তচিন্তার সমর্থক হয়েও লেখকের দায়বদ্ধতার সমর্থক ছিলেন শিবনারায়ণ রায়। সেই দায়বদ্ধতা কোনো দল বা সরকার কিংবা বিশেষ কোনো মতবাদের কাছে নয়। তাঁর মতে, লেখক দায়বদ্ধ থাকবেন তাঁর নিজের সততার কাছে। তিনি মনে করতেন, ‘পার্টি বা সরকার বা বিশেষ মতবাদের কাছে দায়বদ্ধ বোধ করা 888sport live footballের পক্ষে স্বাস্থ্যকর নয়।’ পাশাপাশি তিনি এটিও মনে করতেন, ‘888sport live footballে সার্থকতার প্রথম এবং অবিচ্ছেদ্য শর্ত সততা।’ কথাটি বিশদভাবে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘জগৎ সম্পর্কে আমার ধারণা সত্য নাও হতে পারে – চরম সত্য বলে যদি কিছু থেকে থাকে তা মানুষের অনায়ত্ত, ভুল এবং তার সংশোধনের ভিতর দিয়েই জ্ঞান আপেক্ষিক নির্ভরযোগ্যতার দিকে এগোয় – কিন্তু আমি যা লিখি তা যে আমারই মনের কথা, অন্যের অনুকরণ, প্রতিধ্বনি বা ভাবের ঘরে চুরি নয়, এটি লেখার ভিতর দিয়েই প্রত্যক্ষ হয়ে ওঠা দরকার।’ কখনোই তিনি বিস্মৃত হননি যে এই ‘সততাই 888sport live footballের নৈতিক নিয়ামক।’ এ-ছাড়াও তিনি এ-ও দৃঢ়ভাবে মনে রেখেছিলেন, লেখকের দায়িত্ব ‘সমগ্রভাবে মানবসমাজের কাছে – কোনো শ্রেণী, দল, সমাজ বা রাষ্ট্রের কাছে নয়। … আত্মিক সততা এবং ভাষাগত বিকাশের সাধনা যেমন 888sport live footballিকের স্বকীয় চরিতার্থতার জন্যই জরুরি, তেমনই সমগ্র মানবসমাজের কাছেও এই সততা এবং সাধনার মূল্য অপরিসীম। এ দুটির দ্বারাই সৎ 888sport live footballিক মানবসমাজকে যথেষ্ট সেবা করতে পারেন।’ (‘888sport live footballিকের ‘দায়বদ্ধতা’ বা দায়িত্ব’)

আট

নিজের সম্পর্কে শিবনারায়ণ বলেছিলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন … দুর্দশাপ্রবাহে নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও …বিপর্যয়ের নাকানিচোবানি খেয়েও মানুষী সৃজনীসামর্থ্যে আস্থা অটুট ছিল।’ এর নেপথ্যের কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি আকৈশোর নিরীশ্বরবাদী নাস্তিক, কিন্তু কোনদিনই শুভনাস্তিক নই। মানবতন্ত্রী প্রত্যয়ের পোষণে ও বর্ধনে বহু খ্যাতনামা ও অখ্যাতনামা স্ত্রীপুরুষের সহায়তা পেয়েছি।’ যাঁদের সহায়তায় তিনি সামর্থ্যবান হয়ে উঠতে পেরেছিলেন, তাঁর ভাষ্যমতে, ‘কবি ও মনীষী অমিয় চক্রবর্তী তাঁদের ভিতরে বিশেষভাবে উল্লেখ্য।’ সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘বয়সের ব্যবধান ছিল বিশ বছরের; প্রজ্ঞা ও প্রতিভার দূরত্ব ছিল অপরিমেয়। তবু অতি সহজেই তিনি আমাকে বন্ধুত্বের মর্যাদা দিলেন, এবং আমৃত্যু সেই সম্পর্কে গ্লানি স্পর্শ করেনি।’ (‘মহাপৃথিবীর কবি অমিয় চক্রবর্তী’)। শুধুই এইটুকু নয়, সেইসঙ্গে শিবনারায়ণ রায় এটিও জানাতে কোনোরকম দ্বিধা করেননি, ‘ইংরেজি ভাষা ও বিশ্ব888sport live footballের চর্চা এবং মাতৃভাষার সমৃদ্ধিসাধনের ভিতরে যে কোনো প্রকৃত বিরোধ নেই, তিরিশ-চল্লিশের দশকের কবিদের ভিতরে এটি আমার কাছে সব চাইতে পরিস্ফুট করে তোলেন অমিয় চক্রবর্তী।’

অমিয় চক্রবর্তীর প্রথম সার্থকনামা কাব্য খসড়া (১৩৪৫) ও তারপর প্রকাশিত এক মুঠো (১৩৪৬) সম্পর্কে শিবনারায়ণের মূল্যায়নের ধরনটি ছিল এ-রকম – ‘ধুলোয়, মগজের গলিতে বিচিত্র দাগ, সতত আসা যাওয়া, সবই অপূর্ণ, খসড়া, আর তা নিয়েই 888sport app download apk। ‘খসড়া’য় যার আভাস ছিল, হাত তখনো পাকেনি, তা আরো স্পষ্ট এবং ব্যঞ্জনাসমৃদ্ধ হয়ে আকার পেল পরের বই ‘এক মুঠো’য়। বিষয়, উপমা, ছন্দ, মিল, শব্দচয়ন, দেখার চোখ সবই অভিনব, অনাস্বাদিতপূর্ব। রবীন্দ্রনাথের প্রবল, মহাসম্পন্ন, বহু প্রসারিত ঐতিহ্য থেকে একেবারেই স্বতন্ত্র।’ আমাদের মনে পড়বে খসড়া প্রকাশের পরপরই 888sport app download apkয় প্রকাশিত বুদ্ধদেব বসুর সেই প্রাণবন্ত, সজীব প্রতিক্রিয়ার কথা। বুদ্ধদেব বসু লিখেছিলেন, ‘বিস্ময়কর বই … একেবারেই আধুনিক, একেবারেই অভিনব … বিস্মিত মন সানন্দে স্বীকার করে যে এখানে প্রকৃত কবিত্বশক্তির সাক্ষাৎ পেলুম।’ শুধু এইখানেই থামেননি বুদ্ধদেব; তার সঙ্গে আরো যোগ করেছেন এই অপূর্ব বয়ান, ‘কলাকৌশলের দিক থেকে তাঁর কাব্য দুঃসাহসিক। কিন্তু দুঃসাহসিক হবার অধিকারও তাঁর আছে। তিনি অভিনব, কিন্তু অভিনব হবার শক্তি ও আত্মপ্রত্যয় নিয়ে তিনি আসরে এসেছেন।’ কী সেই শক্তি আর কবির আত্মপ্রত্যয়? উত্তরে বুদ্ধদেব বসু জানিয়েছিলেন, ‘তাঁর ছন্দের বিচিত্র তির্যক গতি, অদ্ভুত শব্দযোজনা, দৃষ্টিভঙ্গির বিশেষত্ব – সমস্তই নিবিড় মননশক্তির ফল।’ আর এর পরপরই তিনি দায়িত্ব নিয়ে বলেছিলেন, ‘খসড়া প্রকাশের পরে অমিয় চক্রবর্তীকে উল্লেখযোগ্য বাঙালি কবিদের অন্যতম বলে মেনে নিতে আমাদের দ্বিধা করা উচিত নয়।’ পরবর্তীকালের 888sport live football-সমালোচক হিসেবে শিবনারায়ণের মধ্যে অমিয় চক্রবর্তীর কবিত্বশক্তিকে মেনে নিতে কোনোরকম দ্বিধা করেননি। তিনি বরং বিস্মিত হয়েছেন এটা ভেবে যে, ‘অমিয় চক্রবর্তী … রবীন্দ্রনাথের বিশেষ অন্তরঙ্গ, তিনি … বেশ কিছুকাল মহাকবির 888sport live footballসচিব হিসেবে কাজ করেছেন … অথচ তাঁর 888sport app download apkর দেহে, মেজাজে, রীতিতে রাবীন্দ্রিকতার চিহ্ন চোখে পড়ে না।’ অমিয় চক্রবর্তীর 888sport app download apkর আঙ্গিক বিষয়ে শিবনারায়ণ রায়ের বিশ্লেষণ হচ্ছে : ‘টেলিগ্রাফিক ভাষায়, ছন্দমিলের অভিনবত্বে, লঘুগুরুর বিস্ময়কর মিশ্রণে তিনি বিশেষ নিপুণতায় যে একান্তভাবে নিজস্ব কাব্যরীতি প্রণয়ন করলেন, তা প্রায় মাইকেলের অমিত্রাক্ষরের মতোই বৈপ্লবিক। এবং এখন মনে হয় প্রায় মাইকেলের মতোই পূর্বেপরে পরম্পরাহীন।’

নয়

এখানে একটা কথা বলা দরকার, সেটা হলো এই যে, 888sport app download apkর আলোচনায় ব্যক্তিগত প্রসঙ্গের অবতারণা কখনো-কখনো শিবনারায়ণের লেখায় গতি সঞ্চার করেছে আবার কখনো সেটা যুক্তির পারম্পর্য ভেঙে দিয়ে লেখার গতিমুখকে ভিন্ন দিকে নিয়ে গেছে। যেমন অমিয় চক্রবর্তীর 888sport app download apkর আলোচনা করতে গিয়ে এর মধ্যে মাঝে-মাঝেই ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন – ‘তাঁর নিজের সংগ্রহ থেকে অকৃপণভাবে বই, পত্রপত্রিকা পড়তে দিতেন। আমাদের আলোচনা 888sport live footballের ক্ষেত্রে আবদ্ধ থাকত না। দশটা নাগাদ তাঁর ফ্ল্যাটে গেলে কথায় কথায় দুপুর হয়ে যেত। হৈমন্তী দেবী ডাক দিতের তাঁদের লাঞ্চে অংশভাক হবার জন্য। আমি থাকি উত্তর কলকাতায়। প্রায়ই এলগিন রোড থেকে ফিরতে বিকেল হয়ে যেত। লাঞ্চ প্রসঙ্গে কিছু 888sport sign up bonus আছে।’ এতে করে কাব্যালোচনার ধার অনেকাংশে ফিকে হয়ে এসেছে। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত কিংবা বুদ্ধদেব বসুর 888sport live footballালোচনাতেও এই বিষয়টি আমরা দেখতে পাই।

888sport app download apkর পাশাপাশি অমিয় চক্রবর্তীর ব্যক্তিত্বের ধরন, বিন্যাস শিবনারায়ণ রায়কে মুগ্ধ করেছিল। তিনি এ-বিষয়ে বলেছেন, ‘অমিয় কোনোদিনই মতবাদগ্রস্ত মানুষ ছিলেন না। পথ চলবার সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতাকে আগেকার ধ্যানধারণার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতেন। ধারণাকে ‘আমার’ অথবা অপরিবর্তনীয় বলে আঁকড়ে ধরতেন না, ইন্দ্রিয়গ্রাম দিয়ে যেমন বিশ্বের অফুরন্ত বৈচিত্র্যকে নিজের চেতনায় গ্রথিত করতেন, তেমনই বিশ্বের অর্থ নিয়ে জিজ্ঞাসা তাঁর ভিতরে নিয়ত জাগ্রত ছিল।’ জাগ্রত যে ছিল অমিয় চক্রবর্তীর 888sport app download apkয় তার নিদর্শন নানাভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেখতে পাওয়া যায় –

শত শতাব্দীর

তরু-বনশ্রী

নির্জন মনশ্রী :

        তোমায় শোনায়, উপস্থিত ফর্দে

                            আরো আছে –

         দূর-সংসারে এলো কাছে,

বাঁচবার সার্থকতা।

(‘বড়োবাবুর কাছে নিবেদন’)

আলোচনার উপসংহারে এসে তিনি বলেছেন, ‘স্বর্গ অথবা মোক্ষ তাঁর জীবনের উদ্দিষ্ট নয়। দেহ এবং মনের বিশ্বপরিক্রমার আদিতে এবং অন্তে বিদ্যমান এই মহাপৃথিবীর তিনি কবি।’ (‘মহাপৃথিবীর কবি অমিয় চক্রবর্তী’, ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬)

দশ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মন্তব্য করেছিলেন, ‘সুধীন্দ্রের লেখা পাঠকদের কাছ থেকে ভাবনার দাবি করে, কেননা মননশীল তাঁর মন।’ এরই কাছাকাছি অনুভব নিয়ে শিবনারায়ণ রায় মনে করতেন, ‘বাংলা 888sport live footballে এবং বিশেষ করে সুধীন্দ্রনাথ দত্তের 888sport live footballজীবনে ত্রিশের দশক ছিল আশ্চর্য রকমের ফলপ্রসূ। বাঙালি কবি এবং কথা888sport live footballিকদের ভিতরে যেসব প্রতিভা ঐ সময়ে প্রস্ফুটিত হয়, তাঁদের মধ্যে সুধীন্দ্রনাথ দত্ত অন্যতম।’ (‘পরিচয়, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত এবং কিছু 888sport sign up bonus’)। সুধীন্দ্রনাথের মানস-গঠন সম্পর্কে শিবনারায়ণ জানিয়েছিলেন, তিনি ‘জার্মানিতে … পরিচিত হন একদিকে ফাসিস্ত ও নাৎসি এবং অন্যদিকে কমিউনিস্টদের ক্রিয়াকলাপ এবং ভাবনা-ধারণার সঙ্গে; আধুনিক সভ্যতার অনতিক্রম্য সংকট তাঁকে একদিকে ইতিহাস, সমাজ, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ বিষয়ে জিজ্ঞাসু এবং অন্যদিকে নিজের প্রাতিস্বিকতার অনুসন্ধানে অভিনিবিষ্ট করল। ভারতীয় হিন্দু ঐতিহ্য এবং জাতীয়তার যেটুকু পরিচয় তিনি স্বদেশে পেয়েছিলেন তাঁর প্রশ্নার্ত মনের কাছে তা নিতান্ত শূন্যগর্ভ আত্মপ্রতারণা বলে ঠেকল। অপরপক্ষে পশ্চিমের সমাজ-সংস্কৃতিও যে প্রায় নিঃশেষিত তাও তাঁর কাছে গোপন রইল না।’ সুধীন্দ্রনাথ মনে করতেন, 888sport app download apk হচ্ছে – ‘অভিজ্ঞতা ও অভিব্যক্তির অদ্বৈত।’ আর এই মন্তব্যের সূত্র ধরেই শিবনারায়ণ বলেছিলেন, ‘রাজনীতিতে নয়, ইতিহাসে নয়, 888sport apkে নয়, সার্থক 888sport app download apkয় তিনি এই অদ্বৈতের সন্ধান পেয়েছিলেন।’ সুধীন্দ্রনাথের কাব্যাদর্শ সম্পর্কে বলতে গিয়ে অনেকটা গভীরে গিয়ে শিবনারায়ণ বলেছিলেন, ‘শুধু উপজীব্য আর পরিপ্রেক্ষিত মিলে 888sport app download apk হয় না। 888sport app download apkর মূল বৈশিষ্ট্য তার রীতি। প্রতি 888sport live chatরূপেরই নিজস্ব প্রকাশরীতি আছে। 888sport app download apkর যেটি স্বকীয় প্রকাশরীতি তার প্রধান অঙ্গ দুটি : ছন্দ এবং ব্যঞ্জনা। … ছন্দ মূলত ইন্দ্রয়সঞ্চারী; অপরপক্ষে ব্যঞ্জনা বিশেষভাবে বুদ্ধিনির্ভর। কাব্যের যে উপাদান ভাষা, তার দুটি প্রধান দিক – ধ্বনি, অর্থ – এই দুটি কাব্যাঙ্গে প্রস্ফুরিত হয়। সুতরাং যে কবি ছন্দ এবং ব্যঞ্জনার ক্ষেত্রে প্রৌঢ়ত্ব অর্জন করেননি, তাঁর 888sport app download apk অন্য বিবিধ গুণ সত্ত্বেও পরিণত 888sport app download apkর পর্যায়ে উঠতে পারে না।’ আর সেই বিচারের কাঠামোয় ভর দিয়ে শিবনারায়ণ মনে করতেন, ‘আমার বিশ্বাস, বাংলা ভাষায় ব্যঞ্জনাসিদ্ধির বিচারে মাইকেল মধুসূদন এবং রবীন্দ্রনাথের পরে সুধীন্দ্রনাথ দত্তই সার্থকতম কবি।’

শিবনারায়ণের মতে, ‘সুধীন্দ্রনাথ বাংলাভাষায় একমাত্র কবি যিনি একই সঙ্গে শূন্যবাদী, সোহংবাদী, অনেকান্তবাদী ও অনাত্মবাদী। এবং একমাত্র না হলেও তিনিই প্রধান বাঙালি কবি যাঁর ক্ষেত্রে মনন এবং আবেগ পরস্পরে অনুস্যূত – একটিকে অন্যটি থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না।’ আর এই ক্ষেত্রে দশমী কাব্যের 888sport app download apkগুলো শিবনারায়ণকে গভীর অনুধ্যানে আচ্ছন্ন করেছিল –

পৃথিবী অনাথ; যথেচ্ছ পরমাণু

প্রাগতিক শুধু কালভৈরব সদলে।

অতএব কারও পথ চেয়ে লাভ নেই :

অমোঘ নিধন শ্রেয় তো স্বধর্মেই;

বিরূপ বিশ্বে মানুষ নিয়ত একাকী।

অনুমানে শুরু, সমাধা অনিশ্চয়ে,

জীবন পীড়িত প্রত্যয়ে প্রত্যয়ে :

তথাচ পাব না আপনার দেখা কি?

(‘প্রতীক্ষা’)

এতদিনে এসে রবীন্দ্রনাথের সেই শুরুর দিককার উপদেশ যেন ফলতে শুরু করেছিল। কিন্তু সুধীন্দ্রনাথের হাতে তখন আর খুব বেশি সময় ছিল না। শিবনারায়ণ মনে করতেন, ‘সুধীন্দ্রের হিউম্যানিজম-এ ট্র্যাজিকবোধ আমাদের চাইতে অনেক গভীর এবং প্রবল।’ আর সেই গভীর ও প্রবলতার কারণেই সুধীন্দ্রনাথের ‘888sport app download apk এবং মননের কেন্দ্রে ছিল গভীর, অনতিক্রম্য, নিঃসঙ্গ বিষাদ, কিন্তু সেই বিষাদ দহন করলেও তাঁর সরসতা, সহৃদয়তা এবং শালীনতাকে কখনো দুর্বল করতে পারেনি।’ আর এইখানে এসে শিবনারায়ণ রায় এই সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছেছিলেন, ‘বঙ্কিমচন্দ্র এবং রবীন্দ্রনাথের পরে বাঙালি 888sport live footballিকের ভিতরে সবচাইতে মননদীপ্ত, হৃদয়বান এবং অভিজাত পুরুষ ছিলেন সুধীন্দ্রনাথ দত্ত।’ আরো খানিকটা বিস্তারে গিয়ে শিবনারায়ণ এইটি বলতে দ্বিধা করেননি, ‘দর্শন তাঁকে ভরসা যোগায়নি, কিন্তু বাক্যের ভিতরে ‘অনির্বচনীয়ের মুক্তির’ যে আনন্দ সুধীন্দ্রনাথ সাতাশ বছর বয়সে অনুভব করেছিলেন, সেই আনন্দই শেষ পর্যন্ত তাঁর আর্ত, সত্যাশ্রয়ী ক্ষণবাদী নাস্তিক্যের শিরা-উপশিরায় অমৃতের সঞ্চার করেছিল।’ বুদ্ধদেব বসু যে বলেছিলেন, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত ‘চিন্তাকে তরল না-করে লিখতে পেরেছেন জটিল ও তাত্ত্বিক বিষয়ে 888sport live, এবং তাঁর 888sport app download apkকে দিয়েছেন এমন এক শ্রবণসুভগ সংহতি ও গাম্ভীর্য, যাকে বাংলা ভাষায় অপূর্ব বললে বেশি বলা হয় না।’ (বুদ্ধদেব বসু, ডিসেম্বর, ১৯৬০)। এইভাবেই বুদ্ধদেব বসুর সঙ্গে শিবনারায়ণের উপলব্ধি যেন এক বিন্দুতে এসে মিশে যায়, পায় অনন্য গভীর এক আন্তরিক সহানুভূতি।

এগারো

সন্তোষ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শিবনারায়ণ জানিয়েছিলেন, ‘আমি যখন প্রথম লেখা শুরু করি তখন বাংলা ভাষায় অনেকগুলি প্রথম শ্রেণির পত্রিকা ছিল – ‘পরিচয়’. ‘888sport app download apk’, ‘পূর্বাশা’, ‘চতুরঙ্গ’, ‘প্রবাসী’, ‘বিচিত্রা’ – এবং বেশ কয়েকজন প্রতিভাশালী বাঙালি 888sport live footballিক একইসঙ্গে দেখা দিয়েছিলেন। তিরিশের ও চল্লিশের দশক ছিল বাংলা 888sport live footballের এক আশ্চর্যকাল এবং আমাদের মহাসৌভাগ্য যে এই সমৃদ্ধ যুগে শুধু আমাদের বয়ঃপ্রাপ্তি ঘটেনি, এইসব প্রতিভাবান 888sport live chatী ও ভাবুকদের ভিতরে বেশ কয়েকজনের উষ্ণ সান্নিধ্য লাভ করেছিলাম। ফলে বাংলা ভাষা ও 888sport live footballের কাছ থেকে আমার প্রত্যাশা আগাগোড়াই উঁচু স্বরগ্রামে বাধা।’ এই দিকটা খেয়ালে রেখেই কেতকী কুশারী ডাইসন এই সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে, ‘আর্তির প্রকাশের প্রতি তাঁর বিশেষ পক্ষপাতের ফলে শিবনারায়ণ সেই ধরনের 888sport live chatবস্তুর রস কম উপভোগ করেন, যার মেজাজ অপেক্ষাকৃত হালকা, যা কৌতুকপ্রধান বা যেখানে সৌন্দর্যসৃষ্টিই প্রধান লক্ষ্য।’ (‘চলন্ত নির্মাণ’, জানুয়ারি, ২০০৫)। তার সঙ্গে-সঙ্গেই তিনি এইটিও বলতে সমর্থ হয়েছিলেন, মানুষের ‘মৌল বিরোধ, সমাধানহীন সমস্যার যন্ত্রণাবোধ এবং প্রতিকারহীন ট্র্যাজেডি তাঁকে স্পষ্টত টানে। মনে হয় যে অন্য কতগুলি জিনিস, যেমন আনন্দবোধ, প্রকৃতির সঙ্গে আত্মীয়তাবোধ, স্নিগ্ধতা, করুণা, শান্ত সৌন্দর্য, বিরোধের সমন্বয়, বা কৌতুক তাঁকে অপেক্ষাকৃত কম টানে। … মনে হয় আনন্দের প্রকাশও শিবনারায়ণকে তখনই বেশি টানে যখন তা ‘আর্ত আনন্দ’।’ (ওই) আর্ত-আনন্দের সেই সন্নিপাতেই শিবনারায়ণের 888sport live footballচিন্তা সন্নিবেশিত হয়েছিল।

বারো

একটু অবাকই হতে হয় এই কারণে যে শিবনারায়ণ রায় জীবনানন্দ, বুদ্ধদেব বসু বিষ্ণু দে – এঁদের 888sport app download apkকর্ম নিয়ে তেমনভাবে দীর্ঘ কোনো আলোচনা করলেন না। একটা বিষয় খেয়াল করার মতো, সেটা হচ্ছে, শিবনারায়ণ রায় তাঁদের 888sport live footballকর্ম নিয়েই আলোচনা বেশি করেছেনে যাঁদের সঙ্গে তাঁর একটা ‘ব্যক্তিগত যোগাযোগ’ ছিল – রাজশেখর বসু থেকে বুদ্ধদেব বসু কিংবা প্রতিভা বসু থেকে তসলিমা নাসরিন। এবং আলোচনার এই ক্ষেত্র ও পরিসর কোনোটাই কম ছিল না। তবে সেইসঙ্গে এটিও আমাদের স্বীকার করতে হবে যে যাকে বলে ‘রুচির সমগ্রতা’ সেইটা শিবনারায়ণের মধ্যে অনেকখানি বজায় ছিল। যেমন, তিনি সুধীন্দ্রনাথ দত্তের গূঢ় এবং জটিল তাত্ত্বিক চিন্তার ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য রূপের 888sport app download apkর প্রতি তাঁর অনুরাগের কথা জানিয়েও, সুধীন্দ্রনাথের সমকালের অন্য কবিদের একেবারে অগ্রাহ্য করেননি। শিবনারায়ণের ভাষ্যমতে, ‘আমার মতো যে লোক 888sport app download apk ভালোবাসে তার কাছে যেমন সুধীন্দ্রের তাত্ত্বিক 888sport app download apkও আবেদন করে, তেমনি জীবনানন্দের অনুভূতির 888sport app download apkও আবেদন করে। বিভিন্ন সূত্রে বিভিন্ন কবিরা আমাদের জয় করেন।’ তিনি অকপটে এটিও জানিয়েছিলেন, ‘আমার ধারণা যে 888sport app download apkর কোনও নির্দিষ্ট ফর্মুলা বলে কিছু নেই। নানারকমের কবি আছেন। … যেমন ব্লেক এবং ওয়ার্ডসওয়ার্থ মহৎ কবি, কীটসও তেমনি মহৎ কবি।’ এই সূত্রে আমাদের মনে পড়ে, কবি হপকিন্স (Gerard Manley Hopkins)-এর বলা সেই কথাগুলো – ‘It is a happy thing that there is no royal road to poetry. The world should know by this time that one cannot reach Parnassus except by flying thither.Õ (Oxford Diaries)

তেরো

জীবনানন্দ দাশ বলেছিলেন, ‘888sport app download apk কী এ-জিজ্ঞাসার কোনও আবছা উত্তর দেওয়ার আগে এটুকু অন্তত স্পষ্টভাবে বলতে পারা যায় যে 888sport app download apk অনেক রকম।’ কবি নিকলসন (Norman Nicholson) সে-রকম ভেবেই একটি ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন – ‘There are poems of protest, poems of rebellion, poems which cast a critical or sardonic or sympathetic look over the world..’ এক-একটি 888sport app download apkর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য যে আলাদা-আলাদা সে-দিকটিও তাঁর নজর এড়িয়ে যায়নি। সে-কারণেই বলেছিলেন – Poetry has many modes and many missions. It can be direct or oblique, simple or complex, casual or formal, down to earth or other wordly up to minute or timeless’ ওই যে শঙ্খ ঘোষের ভাষায় ‘ভিন্ন রুচির অধিকার’ কিংবা ‘একপেশেমির সংকট’ থেকে  অনেকটাই মুক্ত ছিলেন শিবনারায়ণ রায়। চেতনা ও বুদ্ধির বহুস্তরের বিন্যাসে তিনি আস্থা স্থাপন করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, ‘বুদ্ধি বহুত্বের মধ্যে ঐক্য আনে, দ্বন্দ্বের মধ্যে সৌষম্য ঘটায়, পরিবর্তনকে স্থিতিস্থাপক করে তোলে। এক কথায়, বুদ্ধি ব্যক্তি-অস্তিত্বে সমগ্রতা সম্পাদন করে।’ সেইসঙ্গে এ-ও বলেছিলেন, ‘শুধু তাই নয়, বুদ্ধির ভিত্তিতে মানুষে মানুষে লেনদেন সম্ভব হয়, বিচিত্ররূপে সামাজিক সহযোগিতা গড়ে ওঠে। এবং বুদ্ধির বিকাশের ফলে মানুষ ভাষা, যন্ত্র, রীতিনীতি, প্রয়োগপদ্ধতি ইত্যাদির উদ্ভাবন করে নিজের অন্তর্নিহিত অফুরন্ত সম্ভাবনাকে সার্থক করতে পারে। আর এই বিচিত্র সম্ভাবনাকে সার্থক করারই অপর নাম মুক্তি।’

শুধুই চেতনা কিংবা বুদ্ধিবৃত্তিক স্তরে নয়, 888sport live footballের 888sport live chatিত জগৎ নির্মাণের ক্ষেত্রেও এই ‘মুক্তি’কে তিনি আমৃত্যু গুরুত্ব দিয়ে গিয়েছেন। কেননা 888sport live footballে, বিশেষ করে 888sport app download apkয়, মননশীলতাকে বৌদ্ধিক ও আবেগের স্তরে নিয়ে যেতে এর কোনো বিকল্প তিনি খুঁজে পাননি। এখানেই তাঁর স্বাতন্ত্র্য, এখানেই তিনি  888sport live footballের সত্যাশ্রয়ী বিচারবোধের সজীবতা দিয়ে পাঠকের মুখোমুখি হওয়ার সাহস অর্জন করেছিলেন।

 চোদ্দো দর্শনের প্রতি আত্যন্তিক আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও 888sport live footballের প্রতি তাঁর অনুরাগ সম্পর্কে শিবনারায়ণ রায় বলেছিলেন, ‘আমার নানা বিষয়ে আগ্রহ থাকলেও প্রধান অনুরাগ চিরদিনই 888sport live footballে। তরুণ বয়সে যাঁদের লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম যৌবনকালে তাঁদের ভিতরে কারও কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ পরিচয়ের সৌভাগ্য ঘটল।’ সেইসব লেখক বিষয়ে তিনি আরেকটু বলেছেন, ‘বয়সে এবং উৎকর্ষে তাঁরা অনেক বড়, কিন্তু হৃদয়ের ঔদার্যে আমার মতো কনিষ্ঠ এবং প্রতিষ্ঠাহীন তরুণকে তাঁরা সহজেই আপনজন করে নিলেন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই শিখি যাঁরা মনস্বী, তাঁরাও স্বজনলাভে উৎসুক। অমিয় চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব বসু, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, অন্নদাশঙ্কর রায়, আবু সয়ীদ আইয়ুব বয়সের ব্যবধান পেরিয়ে স্বজনভুক্ত হলেন।’ (‘স্বদেশ, স্বকাল, স্বজন’)। স্বদেশের এই স্বজনদের কেন্দ্র করে যে-অভিঘাতের সূচনা হয়েছিল, সেটি শেষ পর্যন্ত বৈশ্বিক অস্তিত্বের কেন্দ্রে গিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিল। শিবনারায়ণের 888sport live footballানুচিন্তনের মৌলিকত্ব এইভাবেই একেবারে নিজস্ব রীতিতে বিন্যস্ত হয়েছিল। সে-কারণেই তিনি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, অমিয় চক্রবর্তী, জীবনানন্দ দাশ – এঁদের 888sport app download apk আর কাব্যানুচিন্তনের কাছে বারেবারে ফিরে গিয়েছেন ‘সুষমিত সমগ্রতা’য়। শিবনারায়ণ রায়ের জন্মশতবর্ষে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে এই কথাগুলো বলা না-গেলে মনস্বী এই মানুষটির প্রতি ভারী অন্যায় করা হবে!