শেক্সপিয়রের মুখোমুখি মার্গারেট অ্যাটউড ঝড়ের আদলে ডাইনির সন্তান

গত সাড়ে চারশো বছর ধরে উইলিয়াম শেক্সপিয়রকে (১৫৬৪-১৬১৬) আমরা পড়ছি। তাঁকে নিয়ে লিখছি, ভাবছি আর তাঁর মূল্যায়ন করে চলেছি। বিভিন্ন ভাষায় তাঁর নাটক 888sport app download apk latest version করা হচ্ছে, রিমেকিং কিংবা রিটেলিং হচ্ছে; সেসব নিয়ে 888sport alternative link, সিনেমা, যাত্রাপালা – সবই হচ্ছে। সাম্প্রতিককালের এক নতুন প্রজেক্ট হচ্ছে ‘দ্য নভেলাইজেশন অব শেক্সপিয়রিয়ন প্লেজ’। ‘দ্য হোগার্থ প্রেস’ এই প্রকল্পের উদ্যোক্তা। 888sport live footballিক ভার্জিনিয়া উলফ (১৮৮২-১৯৪১) ও তাঁর স্বামী রাজনৈতিক তাত্ত্বিক লিওনার্ড সিডনি উলফ (১৮৮০-১৯৬৯)-এর উদ্যোগে ১৯১৭ সালে লন্ডনে এই প্রেসটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁদের লক্ষ্য ছিল, আধুনিক পাঠকদের জন্যে সময়ের সেরা নতুন লেখা বাজারে নিয়ে আসা। হোগার্থ প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ছিল ২০১৬ সালে শেক্সপিয়রের প্রয়াণের চারশো বছরপূর্তি উপলক্ষে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ এই নাট্যকারের সিংহাসনটিকে নতুন 888sport live footballভাবনা দিয়ে রাঙিয়ে তোলা। শেক্সপিয়রের নাটক দ্য উইন্টার’স টেলকে দ্য গ্যাপ অব টাইম শিরোনামের 888sport alternative link বানিয়ে ২০১৫ সালে প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন ইংরেজ লেখক জিনেট উইন্টারসন। হোগার্থ প্রকল্পের অধীনে এই পর্যন্ত শেক্সপিয়রের মোট সাতটি নাটক 888sport alternative linkে রূপান্তরিত হয়েছে। অন্য ছয়টি 888sport alternative link লেখা হয়েছে মার্চেন্ট অব ভেনিস, দ্য টেম্পেস্ট, দ্য টেমিং অব দ্য শ্রু, কিং লিয়ার, ওথেলো এবং ম্যাকবেথকে অনুসরণ করে। ২০১৬ সালে দ্য টেম্পেস্ট নাটকটিকে পুনর্কথন করে 888sport alternative linkের রূপ দিয়েছেন কানাডিয়ান লেখক মার্গারেট এলিনর অ্যাটউড (জ. ১৯৩৯)। আজকের 888sport liveটিতে অ্যাটউডের এই 888sport alternative link হ্যাগ-সিড-এর ওপর আলোকপাত করা হবে।

পুনর্কথনের 888sport live footballধারায় মার্গারেট অ্যাটউডের কুশলতা এবং সফলতা বরাবরই ঈর্ষণীয়। ম্যারি শেলি (১৭৯৭-১৮৫১) রচিত ইংরেজি 888sport live footballের বহুল পঠিত ফ্রাঙ্কেনস্টাইন (১৮১৮) 888sport alternative linkের কাব্যরূপ স্পিচেস ফর ড. ফ্রাঙ্কেনস্টাইন (১৯৬৬) দিয়েই অ্যাটউড শুরু করেন তাঁর পুনর্কথনধারার সফল 888sport live footballকর্ম। ২০০৫ সালে স্কটিশ প্রকাশক ক্যাননগেট বুকস-এর ক্যাননগেট মিথ সিরিজে গ্রিক পুরাণের হোমারের ‘ওডিসি’ অবলম্বনে প্রকাশিত অ্যাটউডের নাতিদীর্ঘ 888sport alternative link দ্য পেনেলোপিয়াড
888sport live football-বিশ্লেষকদের প্রশংসা অর্জন করে। হ্যাগ-সিড নিয়ে আলোচনাপর্বে যাওয়ার আগে জাদুর খেলা দিয়ে গড়া শেক্সপিয়রের মূল দ্য টেম্পেস্ট নাটকটি নিয়ে কিছু কথা বলে নেওয়া যায়।

মিলানের ডিউক প্রস্পেরোকে ক্ষমতা থেকে ষড়যন্ত্র করে সরিয়ে দিয়ে তাঁর আপন ভাই অ্যান্টোনিও ডিউক পদে ক্ষমতাসীন হন। এই ষড়যন্ত্রে সম্মতি ও সহযোগিতা ছিল নেপল্সের রাজা অ্যালন্সোর। তিন বছরের একমাত্র শিশুকন্যা মিরান্ডাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি একটি নৌকায় করে সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে গিয়ে পৌঁছেন এক অজানা দ্বীপে। জনমানবহীন এই দ্বীপে একমাত্র বাসিন্দা ছিল মৃত ডাইনি সিকোরাক্সের ছেলে ক্যালিবান। অর্ধেক দৈত্য আর অর্ধেক মানব সন্তান ক্যালিবানই এই দ্বীপের মালিক। এখানে অ্যারিয়েল নামে একটি স্পিরিট থাকলেও তাকে একটি পাইন গাছের ভেতর বন্দি করে রেখেছিলেন ক্যালিবানের মা। নির্বাসনে এসে, জাদুবিদ্যার বলে, ক্ষমতাচ্যুত ডিউক প্রস্পেরো ক্যালিবানকে নিজের অনুগত করে তাঁর ভৃত্য বানিয়ে নেন। তিনি বন্দি অশরীরী অ্যারিয়েলকে মুক্ত করে দেন। প্রস্পেরোকে নিঃশর্তে যে-কোনো সেবা দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলে তিনি অ্যারিয়েলকে মানবসঙ্গ থেকে বিদায় দিয়ে তার নিজের জগতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিতে প্রতিশ্রুত হন।

এই সময় নেপল্সের রাজা অ্যালন্সো তাঁর মেয়ে ক্ল্যারিবেলকে তিউনিসের অধিকর্তার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে জাহাজে করে দেশে ফিরছিলেন। সঙ্গে ছিলেন রাজপুত্র ফার্ডিন্যান্ড, মিলানের নতুন ডিউক অ্যান্টোনিও, রাজভ্রাতা সেবাস্টিয়ান এবং উপদেষ্টা গঞ্জালো। জাহাজটি প্রস্পোরোশাসিত নির্জন দ্বীপের কাছাকাছি এলে জাদুবিদ্যার বলে প্রস্পেরো সমুদ্রে প্রচণ্ড এক ঝড় উঠিয়ে দেন। জাহাজটি ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়, যদিও বাস্তবে এটি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত ছিল। এসবই ছিল প্রস্পেরোর জাদুবিদ্যার চাল। অ্যারিয়েল বিধ্বস্ত জাহাজ থেকে সবাইকে উদ্ধার করে দ্বীপে নিয়ে আসে এবং উদ্ধারকৃতদের ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় রাখে। ঝড়ের মধ্যে বিচ্ছিন্ন হয়ে ফার্ডিন্যান্ড সাঁতরে আগেই দ্বীপে পৌঁছে গিয়েছিলেন এবং ঘুরতে ঘুরতে মিরান্ডার দেখা পেয়েছিলেন। প্রথম দেখাতেই মিরান্ডা এবং ফার্ডিন্যান্ড পরস্পর ভালোবাসার বন্ধনে জড়িয়ে পড়েন। নাটকের শেষে মিরান্ডা এবং ফার্ডিন্যান্ডের পরিণয়পর্বটিকে মাথায় রেখে প্রস্পেরো তাঁদের বাগদান অনুষ্ঠানটি সেরে ফেলেন নির্জন দ্বীপে।

দ্বীপে এসেও কুটিল দুই চরিত্র – অ্যান্টোনিও ও সেবাস্টিয়ান – ষড়যন্ত্র শুরু করেন। ক্লান্ত রাজা অ্যালন্সো ও গঞ্জালো ঘুমিয়ে পড়লে অ্যান্টোনিও সেবাস্টিয়ানকে প্রস্তাব দেন ঘুমন্ত অবস্থায় এই দুজনকে হত্যা করার। রাজা অ্যালন্সোকে হত্যা করা হলে অ্যান্টোনিও নেপল্সের রাজা হবেন। এই পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে অ্যারিয়েল তার মায়ার বলে তখনই ঘুমন্ত অ্যালন্সো ও গঞ্জালোকে জাগিয়ে দিয়ে এই পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেয়। অ্যারিয়েলের কাছ থেকে এই ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পেরে প্রস্পেরো একবার ভেবেছিলেন প্রতিশোধ নেবেন। পরে, ক্ষমা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি সবার কাছে নিজের পরিচয় দিলেন। ইচ্ছা করলে তিনি নেপল্সের রাজাও হতে পারতেন। তিনি তা করলেন না; নিজের হারানো ডিউকত্বেই তিনি ফিরে গেলেন। পূর্বপ্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিনি অ্যারিয়েলকে মুক্তি দিয়ে দিলেন। ক্যালিবানের কাছে দ্বীপটি ফিরিয়ে দিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, সবাইকে নিয়ে জাহাজে করে দেশে ফিরবেন।

নাটকের পঞ্চম দৃশ্যে প্রস্পেরো মঞ্চে এসে দর্শকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, আমাকে আপনারা এবার অব্যাহতি দিন। তাঁর শেষ সংলাপ (ইপিলগ) ছিল :

And my ending is despair,

Unless I be relieved by prayer,

Which pierces so that it assaults

Mercy itself and frees all faults.

As you from crimes would pardoned be,

Let your indulgence set me free.

প্রস্পেরো যে ‘set me free’ অর্থাৎ তাঁকে মুক্তি দিতে বললেন, এটি একটি রহস্যময় উক্তি। তিনি কোথায় বন্দি হয়ে আছেন? কে তাঁকে বন্দি করলেন? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজতে যাওয়ার আগে আমরা এখন অ্যাটউডের হ্যাগ-সিড-এর প্রধান চরিত্রের কাহিনির দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারি।

হ্যাগ-সিড 888sport alternative linkের পটভূমি কানাডার অন্টারিও প্রদেশের একটি শহর। পেশাদার নাট্যব্যক্তিত্ব ফিলিক্স ফিলিপ্স প্রতিষ্ঠানের জনপ্রিয় আর্টিস্টিক ডাইরেক্টর, যিনি তিন বছরের মধ্যে হারিয়েছেন তাঁর স্ত্রী ন্যাডিয়া ও একমাত্র সন্তান শিশুকন্যা মিরান্ডাকে। মিরান্ডার শেষকৃত্যানুষ্ঠানের পরদিনই মেকশিওয়েগ থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শেক্সপিয়রের দ্য টেম্পেস্ট। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে স্ত্রী ও কন্যার বিয়োগবেদনায় শোকার্ত হয়েও ফিলিক্স আশায় ছিলেন, এই নাটকের মূল চরিত্র প্রস্পেরোর মেয়ে মিরান্ডার মধ্যে আজ তাঁর সদ্যপ্রয়াত মেয়ে মিরান্ডাকে আবার হয়তো দেখতে পাবেন। নাটকের দিন নাটক শুরু হওয়ার আগেই শুরু হলো হঠাৎ এক ঝড়। সেই ঝড়ে উড়ে গেল প্রত্যাশার ছাউনি। ফিলিক্সের এতদিনের বিশ্বস্ত সহকারী ফান্ড-রেইজিং ম্যানেজার টনি প্রাইস ফিলিক্সকে জানালেন, ‘ফেস্টিভ্যাল বোর্ড, আপনার সাম্প্রতিক শোক এবং শোকের কারণে আপনার মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে আপনাকে ‘আর্টিস্টিক ডাইরেক্টর’-এর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। আজ থেকে আমিই প্রতিষ্ঠানের আর্টিস্টিক ডাইরেক্টর। তবে বিশ্বাস করুন, এই পরিবর্তনের পেছনে আমার কোনো হাত নেই।’ ফিলিক্স বুঝতে পারলেন, এই কাজটি টনি – ‘that devious, twisted bastard’ – তাঁর বন্ধু, সরকারের হেরিটেজ মন্ত্রী তথা ফেস্টিভ্যাল বোর্ডের প্রভাবশালী সদস্য স্যাল ও’ন্যালিকে দিয়ে করিয়েছেন।

দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর অপমানবোধের তাড়নায় ফিলিক্স নিজেকে যাবতীয় সামাজিক যোগাযোগের বন্ধন থেকে আলগা করে নিলেন। আশ্রয় নিলেন অন্টারিওর প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাহাড়ঘেঁষা একটি ছোট কটেজে। তিনি এই নতুন এলাকায় ‘ডিউক’ নাম ধারণ করে নতুনভাবে নিজেকে মেলে ধরেন। জীবনের সমস্ত উপার্জিত সঞ্চয়কে একত্র করে আধুনিক শহরের কোলাহল ছেড়ে বেছে নিলেন এক নির্বাসিত জীবন। টনির অপমান আর মিরান্ডার শোককে সঙ্গী করে কেটে যেতে থাকে নতুন ডিউকের মায়াবদ্ধ জীবন। মৃত মিরান্ডা এসে বাবার সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটায়, কথা বলে। পিতা ডিউকের মনোজগতে কন্যা মিরান্ডার মানসিক বয়সও বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফিলিক্সের কল্পজগতে প্রয়াত মেয়ের অবস্থান ক্রমশ ছড়াতে থাকে প্রতীত প্রতাপ। ফিলিক্স মেয়ের জন্যে স্থানীয় বাজার থেকে শিশুশ্রেণির পাঠ্যবইও কিনে নিয়ে আসেন। ধীরে ধীরে মেয়ে টিনএজে পা দেয়; বাবাকে পরামর্শ দেয় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে, শরীরের যত্ন নিতে। ফিলিক্স উপলব্ধি করতে পারেন, মিরান্ডাবিষয়ক এসব ফ্যান্টাসিই তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে আগামীদিনের লড়াইয়ের জন্যে। ইতোমধ্যে তিনি ইন্টারনেট থেকে জানতে পেরেছেন, টনি এখন থিয়েটার জগৎ ছেড়ে রাজনীতিতে এসে মন্ত্রীগিরিতে ব্যস্ত। এই সময় হঠাৎ একদিন পঞ্চদশী মিরান্ডার কণ্ঠে গান শুনতে পেয়ে ডিউক নিজেকে নিয়ে আবার নতুন করে ভাবতে শুরু করলেন। সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি আবার কাজ করবেন। টনির অপমানের জবাব দেওয়ার গরজটি তাঁকে কাজে ফেরার ব্যাপারে আরো বেশি অনুপ্রাণিত করে।

ফ্লেচার কারেকশনাল ইনস্টিটিউট নামে একটি প্রাদেশিক জেলখানার বন্দিদের মানসিক উন্নয়নে শিক্ষাদানের লক্ষ্যে গঠিত ‘লিটারেসি থ্রু লিটারেচার’ প্রকল্পে একজন শিক্ষকের প্রয়োজন হয়। বিজ্ঞাপন দেখে ফিলিক্স আবেদন করলে তাঁকে নির্বাচিত করা হয়। গুয়েলফ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর এস্টেল স্থানীয় একটি ম্যাকডোনাল্ড রেস্টুরেন্টে বসে ইন্টারভিউ নেওয়ার সময় ফিলিক্সের পেশাগত জীবনের গৌরবময় অধ্যায়ের পাতাগুলো উল্টিয়ে দেখেন। এস্টেল ফিলিক্সের মুখ থেকে শুনলেন টনি প্রাইস কীভাবে তাঁকে নাটকপাড়া থেকে বিতাড়িত করেছে। এস্টেল ফিলিক্সকে কথা দিলেন, বিষয়টি তিনি গোপন রাখবেন। ফিলিক্স তাঁকে জানিয়ে দিলেন, তিনি বন্দিদের সঙ্গে গল্প বা 888sport alternative linkের পরিবর্তে নাটক নিয়ে কাজ করবেন এবং বছরে একটি করে শেক্সপিয়রের নাটক বন্দিদের দিয়ে মঞ্চস্থ করাবেন।

জেলখানার বন্দিদের শেক্সপিয়রের ক্ল্যাসিক নাটক বোঝার যোগ্যতা সম্পর্কে এস্টেল কিছুটা সন্দিহান থাকলেও ফিলিক্স এই কাজে নিজের পেশাগত দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে সফল হন। ইতোমধ্যে তিনি রাজনৈতিক নাটক জুলিয়াস সিজার ও ম্যাকবেথসহ তিনটি নাটক মঞ্চস্থ করে কর্তৃপক্ষের প্রশংসা অর্জন করেন। প্রতিটি নাটকের পটভূমি, ইতিহাস এবং চরিত্রের তাৎপর্য তিনি খুব সহজ ভাষায় বন্দিদের বুঝিয়ে দিতেন। রিহার্সালের সময়, সমসাময়িক সামাজিক প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট নাটকটির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও তিনি বন্দিদের কাছে তুলে ধরতেন। ফলে, বন্দিদের অভিনয়কালে প্রতিটি চরিত্র বাস্তবতার ছোঁয়া পেয়ে দর্শকদের কাছে প্রাণবন্ত হয়ে উঠতো। অভিনীত তিনটি নাটকের সবই ক্যামেরায় ধারণ করে পরে টেলিভিশনের মাধ্যমে জেলখানার অন্য বন্দিদের কাছে প্রদর্শন করা হয়।

চতুর্থ নাটকটি শুরু হওয়ার আগে এস্টেল ফিলিক্সকে জানালেন, এবার প্রাদেশিক সরকারের দুজন মন্ত্রী, টনি প্রাইস ও স্যাল ও’ন্যালি, জেলখানা পরিদর্শনে আসবেন। নাটকের চূড়ান্ত মঞ্চপর্বটি মন্ত্রীরা সরাসরি দেখতে চান। তাঁদের সন্তুষ্টির ওপর নির্ভর করবে প্রকল্পটির আর্থিক ভবিষ্যৎ। মন্ত্রীদের নাম শুনে ফিলিক্স পুলকিত হলেন; এবার হয়তো টনির অতীত ষড়যন্ত্রের বদলা নেওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে।

‘Suddenly revenge is so close he can actually taste it. It tastes like steak, rare.’ (Hag-Seed, p.72)

হিসাব কষে অত্যন্ত আবেগী মেজাজে ফিলিক্স এস্টেলকে জানিয়ে দিলেন, চতুর্থ নাটকটি হবে শেক্সপিয়রের দ্য টেম্পেস্ট।

টনি ও স্যালের অতীত দুষ্কর্মের বদলা নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েই ফিলিক্স এবার মাঠে নামলেন। তিনি নাটকটিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে শত্রুদের শায়েস্তা করতে চান। প্রস্পেরোর ভূমিকায় তিনি নিজেই অভিনয় করবেন। বন্দিদের মধ্যে মেয়ে না থাকায় তিনি তাঁর পুরনো সহকর্মী অ্যান মেরি গ্রিনল্যান্ডকে দিলেন মিরান্ডা চরিত্রটি। অনুষ্ঠানের দিন সময়মতো এসে গেলেন টনি ও স্যাল। তাঁদের সঙ্গে অতিথি হিসেবে আরো এসে যুক্ত হয়েছেন মেকশিওয়েগ থিয়েটারের প্রাক্তন চেয়ার ও বর্তমানে একজন স্থানীয় রাজনৈতিক তহবিল সংগঠক লনি গর্ডন, আগামী নির্বাচনে স্যালের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী সেবার্ট স্ট্যানলি এবং স্যাল ও’ন্যালির পুত্র একজন অসফল নাট্যপরিচালক ফ্রেডেরিক ও’ন্যালি। 

পরিকল্পনা অনুযায়ী মঞ্চে নাটকের প্রস্তাবনা শুরু হতেই থেমে গেল সবকিছু। চারদিক অন্ধকার হয়ে গেল। বাইরে গুলির আওয়াজ। অনেক শোরগোল। একটি অপরিচিত কণ্ঠ সক্রিয় হয়ে জানালো, জেলখানায় দাঙ্গা শুরু হয়ে গেছে। তিনি দর্শকদের চুপ থাকতে এবং নড়াচড়া না করতে বললেন। এরই মধ্যে কিছু অপরিচিত লোক এসে দর্শকদের মধ্য থেকে স্যালের ছেলে ফ্রেডেরিককে উঠিয়ে নিয়ে গেল। আরো কিছু লোক আলাদাভাবে এসে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকেও উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে সেলের ভেতরে আটকে রাখলো। সোডার বোতল দিয়ে আঘাত করায় স্যাল ও লনি গর্ডন অজ্ঞান হয়ে গেলেন। এই অবস্থায় টনি সেবার্টকে প্রস্তাব দিলেন, ‘চলো, আমরা স্যাল ও লনিকে অজ্ঞান অবস্থায় মেরে ফেলি। সবাই ধরে নেবে ওদেরকে বন্দিরাই মেরে ফেলেছে।’ স্যাল অবশ্য একজন স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ। তাঁর কাছ থেকে টনি অতীতে অনেক আনুকূল্য নিয়েছেন। স্যাল মরে গেলে ভবিষ্যতে তাঁর প্রতিদানের দায় থেকে রেহাই পাবেন টনি। সেবার্টও জানেন, জনপ্রিয়তার কারণে স্যালের বিরুদ্ধে তাঁর নির্বাচনে জয়লাভ করা কঠিন।

এদিকে অন্য আরেকটি সেলের মধ্যে ফ্রেডেরিক প্রায় চেতনা ফিরে পাওয়ার পথে। নাটকের মিরান্ডার সাজে অ্যান তাঁকে সেবা দিয়ে ভালোবাসা দিয়ে অনেকটা নিজের করে নিয়েছেন। অ্যান একটি স্ক্রিপ্ট হাতে নিয়ে তাঁকে বললেন, ‘একজন উন্মাদ লোক নিজেকে প্রস্পেরো মনে করে মঞ্চে আবোল-তাবোল বলছে। তুমি যদি এই স্ক্রিপ্টে লেখা সংলাপগুলো মঞ্চে গিয়ে বলে আসতে পারো, ভালো হয়।’ ফ্রেডেরিক তখনই স্ক্রিপ্টটা অ্যানের হাত থেকে নিয়ে মঞ্চে গিয়ে পড়তে শুরু করলেন। আসলে, এটি ছিল মূল নাটকে মিরান্ডার জন্যে ফার্ডিনান্ডের ভালোবাসা নিবেদনের সংলাপ। ফিলিক্সের পরিকল্পনায় এটিও একটি কৌশল ছিল। এমন একটি মুহূর্তে তুমুল করতালির শব্দে স্যাল ও লনি গর্ডন জেগে ওঠেন। জ্বলে উঠলো আলো। খুলে গেল সব সেলের দরজা। বেজে উঠলো এক সুমধুর সংগীতের সুর। রাজনীতিবিদরা সুরের তালে এগোতে এগোতে একটি কক্ষে ঢুকে পড়লেন, যেখানে ছিল গামলাভর্তি ড্রাগমেশানো আঙুর। এই আঙুর খেয়ে স্যাল, সেবার্ট আর টনি নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে মেঝেতে গড়িয়ে পড়েন। একটু পরে ঘুমের ঘোর কেটে গেলে টনি ও তাঁর দল দেখতে পান তাঁদের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন ফিলিক্স, যাঁকে বারো বছর আগে তাঁরা ষড়যন্ত্র করে মেকশিওয়েগ থিয়েটার থেকে বহিষ্কার করেছিলেন। ফিলিক্স সত্য উন্মোচনের দায়িত্ব নিয়ে তাঁদের জানিয়ে দিলেন যে, স্যালকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রকারী টনির সংলাপ রেকর্ড করা হয়েছে। এই কথা শুনে টনি ও সেবার্ট ঘাবড়ে গেলেন। ফিলিক্স পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, টনিদের অতীতের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দায় স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে। ফিলিক্সকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। টনি ও সেবার্টকে রাজনীতি থেকে অবসর নিতে হবে। ফিলিক্সের সব দাবি পূরণ করা হলো। ফ্রেডেরিককে তাঁর বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হলো। অ্যানের সঙ্গে ফ্রেডেরিকের শুভ পরিণয়ের ব্যবস্থা হলো। ফ্রেডেরিককে ফিলিক্সের সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলো। ফিলিক্স চাকরি ফিরে পেলেও তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, ফ্রেডেরিককে তৈরি করে তাঁর হাতেই তিনি থিয়েটারের দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন।

সপ্তদশ শতাব্দীর একটি নাটককে একবিংশ শতাব্দীর প্রেক্ষাপটে 888sport alternative linkে রূপান্তরিত করার কাজটি নিশ্চয় দুরূহ। পুরনো কাহিনির মেজাজ ঠিক রেখে আধুনিক প্রেক্ষাপটে কাহিনিকে নতুন করে বুনন করা, প্রয়াত চরিত্রের আত্মাগুলোকে নতুন শরীরে প্রতিস্থাপন করা এবং সর্বোপরি শেক্সপিয়রের ‘রান্না’য় অভ্যস্ত পাঠকের থালায় ভিন্ন সংস্কৃতির নতুন এক শেফের ‘রান্না’ করা আহার পরিবেশন করে সমীহ আদায় করা কঠিন একটি সৃষ্টিকল্প। আমার কাছে অ্যাটউডের পরিবেশিত ‘খাবার’ পছন্দ হয়েছে।

মূল নাটকে ইতালির মিলানের ডিউক প্রস্পেরো, ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন তাঁর নিজের ভাই অ্যান্টোনিওর ষড়যন্ত্রের কারণে। 888sport alternative linkে মেকশিওয়েগ থিয়েটার ফেস্টিভ্যালের আর্টিস্টিক ডাইরেক্টর ফিলিক্স ফিলিপ্স ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন তাঁরই একান্ত বিশ্বস্ত সহকর্মী টনি প্রাইসের ষড়যন্ত্রে; এখানে সহযোগী ছিলেন সরকারের হেরিটেজ বিষয়ক মন্ত্রী স্যাল ও’ন্যালি। প্রস্পেরো বিপত্নীক, যিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়ে তিন বছরের মেয়ে মিরান্ডাকে নিয়ে নির্বাসনে গিয়েছিলেন নির্জন দ্বীপে। ফিলিক্সও স্ত্রীকে ও মেয়েকে (যার নামও ছিল মিরান্ডা) হারিয়েছিলেন ক্ষমতা হারানোর ঠিক আগের দিন। তিনিও নির্বাসনে ছিলেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক কটেজে। নাটকের এই পর্যায়ে এসে অ্যাটউড চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন। কারণ, স্যাটেলাইটের যুগে জগতের কোনো দ্বীপ আর অজানা নেই। তাই, ফিলিক্সকে নির্বাসনে পাঠানোর জন্যে দ্বীপের পরিবর্তে অ্যাটউডকে বেছে নিতে হয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি কটেজকে। প্রস্পেরোর সঙ্গে নির্জন দ্বীপে তাঁর সঙ্গে থাকা তিন বছরের মিরান্ডাকে একটি জনমানবহীন দ্বীপে লালনপালন করা সম্ভব হলেও আধুনিক যুগে একটি কটেজের বেষ্টনীর মধ্যে অনুরূপ আরেকটি শিশুকে সমাজ থেকে আড়াল করে পঞ্চদশী করে গড়ে তোলা অনেক কঠিন একটি কল্পবাজি। বাস্তবতার নিরিখে কাহিনিটি বিন্যাস করতে গিয়ে অ্যাটউডের পক্ষে ফিলিক্সের মেয়েটিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। তাই প্রস্পেরোর সঙ্গে থাকা মেয়ে মিরান্ডা জীবিত থাকলেও ফিলিক্সের সঙ্গে ছিল তাঁর প্রয়াত মেয়ে মিরান্ডার আত্মা।

অ্যাটউড এই অশরীরী আত্মার চরিত্রটিকে অসাধারণ এক মনস্তাত্ত্বিক মেজাজ, সতর্কতা ও যত্ন দিয়ে নির্মাণ করেছেন এবং পাঠকের কাছে উপস্থাপন করেছেন শৈল্পিক রুচি ও কৌশল দিয়ে। শেক্সপিয়রের নাটকে অশরীরী অ্যারিয়েলের উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মেয়ে ও হবু জামাইয়ের বাগদান অনুষ্ঠানটি জিন-পরিদের জমজমাট কার্যক্রমে পরিপূর্ণ ছিল। অ্যাটউডের 888sport alternative linkে ফিলিক্সের প্রয়াত মেয়ের আত্মাকে হাজির করে অ্যাটউড এখানে একটি অশরীরী চরিত্রের আবহ তৈরি করতে পেরেছেন অসাধারণ সফলতার সঙ্গে। বলা যায়, অশরীরী অ্যারিয়েল প্রতিস্থাপিত হয়েছেন একজন শরীরী মিরান্ডার অশরীরী চরিত্রে। অ্যারিয়েল প্রস্পেরোকে নানাভাবে সাহায্য করেছে, বিভিন্ন দুর্বিপাক থেকে রক্ষা করেছে; মিরান্ডার আত্মা ফিলিক্সকে নিঃসঙ্গতার যন্ত্রণা থেকে টেনে উঠিয়েছে জীবন-নদীর তীরে। প্রয়াত মেয়ের কণ্ঠের সংগীতলহরী বাবাকে আবার বেঁচে ওঠার জন্যে প্রাণের রসদ জুগিয়েছে। অশরীরী আত্মার সুরের আমেজে তিনি নিজের জন্যে খুঁজে বের করেছিলেন একটি শরীরী সুরের আস্তানা – কয়েদিদের সংশোধনাগারে।

চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার জন্যে প্রফেসর এস্টেলের কাছে ফিলিক্স কৃতজ্ঞ। মূল নাটকে জাহাজে করে শত্রুপক্ষের পুরো বাহিনীকে ঝড়ের মধ্যে নির্জন দ্বীপে নিয়ে আসার জন্যে একটি ‘auspicious star’-কে কৃতিত্ব দিয়েছেন শেক্সপিয়র; 888sport alternative linkে এই বাহবাটা অবশ্যই এস্টেলের প্রাপ্য। জাহাজে যেমন কুচক্রীরা দল বেঁধে প্রস্পেরোর জাদুতে ধরা দিয়েছেন, জেলখানার নাট্যমঞ্চেও ষড়যন্ত্রকারীরা এক কাতারে এসে দর্শক হয়ে ঢুকে পড়েছেন ফিলিক্সের জালে।

একটি নাটকের দর্শক মঞ্চে এবং নেপথ্যে সৃষ্ট সাজসজ্জা ও নিনাদশৈলী যেভাবে প্রত্যক্ষভাবে উপলব্ধি করেন, 888sport alternative linkের একজন পাঠক সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত। তবু বিভিন্ন সময় বিখ্যাত অনেক নাটক ও live chat 888sportের পুনর্কথন হয়। জিনেট উইন্টারসন দ্য গ্যাপ অব টাইম নাটকে তাঁর কিছু বন্য উপকরণ ব্যবহার করে ‘সময়’কে একটি চরিত্রের আমেজে উপস্থাপন করেছেন এবং এই বনজ আবহ সৃষ্টিতে ভিডিও গেমের সহায়তা নিয়েছেন। উইন্টারসন দ্য টেম্পেস্ট নাটকে ঝড়-বিধ্বস্ত জাহাজ নামক একটি ‘বড়শি’ দিয়ে নাট্যকার ‘মাছ’কে তীরে উঠিয়েছেন। পুনর্কথন হিসেবে অ্যাটউড কারাগারে মিলান নাটক দিয়ে কৃত্রিম নাটকীয়তার অবতারণা করে নাটকের খলচরিত্রকে মঞ্চে এনে দাঁড় করিয়েছেন। কারাগারে নাটক মঞ্চায়নের কৌশলটি খুবই বাস্তবসম্মত হয়েছে। কারণ, প্রস্পেরোর নির্জন দ্বীপটিও তো একটি কারাগার। এই কারাগারকেই নাট্যকার থিয়েটারে প্রদর্শন করেছেন। শেক্সপিয়রের কাজটি যদি হয় ‘প্লে-উইদিন-অ্যা-প্লে’ কৌশল, অ্যাটউডের কাজটি
‘প্লে-উইদিন-অ্যা-নভেল’ কৌশল। অ্যাটউড এর আগে তাঁর দ্য ব্লাইন্ড অ্যাসাসিন-এ ‘888sport alternative linkের ভেতর 888sport alternative link’ কৌশলটি  প্রয়োগ করে পাঠকনন্দিত হয়েছেন।

এক সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, হোগার্থ প্রকল্পে দ্য টেম্পেস্ট নাটকটিকে বেছে নিয়ে প্রথমদিকে অ্যাটউড বোকামি করেছিলেন বলেই মনে করেছিলেন। কারণ, মূল নাটকের পুরো কাহিনি জুড়েই একটি নির্জন দ্বীপে কেটে গেছে এক জাদুকরের বারোটা বছর। সঙ্গে বেড়ে উঠেছে তিন বছরের মেয়ে। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে মূল নাটকের পটভূমি ও অনেক পটভূমি চরিত্র আধুনিক 888sport alternative linkে সংযোজন করার কাজটি সহজসাধ্য নয়। শেষ দৃশ্যে প্রস্পেরোর শেষ সংলাপ ছিল ‘Set me free’। অর্থাৎ আমাকে মুক্তি দাও। কিন্তু তিনি তো কোথাও বন্দি ছিলেন না।

প্রকৃতপক্ষে, মূল নাটকে কোনো চরিত্রই মুক্ত ছিল না, তারা কোনো না কোনোভাবে নিজ বলয়ের মধ্যে আটকে আছে; সবাই অন্তরীণ। অ্যাটউড তাই দ্বীপের পরিবর্তে কারাগারকেই তাঁর 888sport alternative linkের একটা পটভূমি হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

হ্যাগ-সিড নামকরণের মধ্য দিয়ে অ্যাটউড তাঁর প্রিয় লেখক শেক্সপিয়রের প্রতি অন্তর্নিহিত 888sport apk download apk latest version জ্ঞাপন করেছেন।

হ্যাগ-সিড শব্দটি বেরিয়ে এসেছিল প্রস্পেরোর মুখ থেকেই। প্রস্পেরো একদিন ক্যালিবানকে ‘ঘৃণ্য চাকর’ বলে গালি দিয়েছিলেন। গালি শুনে ক্যালিবান রেগে গিয়ে বলেছিল,

You taught me language, and my profit on’t

Is, I know how to curse: the red plague rid you,

For learning me your language!

                                           (The Tempest, Act1, Scene2)

অর্থাৎ, আপনারা আমাকে আপনাদের ভাষা শিখিয়েছেন। অতএব, আমিও জানি কীভাবে আপনাকে অভিশাপ দিতে হয়। আমি অভিশাপ দিচ্ছি, আপনাকে লাল মহামারি রোগে ধরবে, আপনার চামড়া খেয়ে ফেলবে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রস্পেরো তাকে ‘Hag-seed’ (ডাইনির পুত) বলে চিৎকার দিয়ে বলেছিলেন,

Hag-seed, hence!

Fetch us in fuel; and be quick, thou ‘rt best,

To answer other business. Shrug’st thou, malice?

If thou neglect’st, or dost unwillingly

What I command, I’ll rack thee with old cramps,

Fill all thy bones with aches; make thee roar,

That beasts shall tremble at thy din.

(The Tempest, Act1, Scene2)

অত্যাচারী মনিবের ভাষায় তিনি গালি দিয়ে বলেছিলেন, ‘যা, ডাইনির পুত, আমার চোখের সামনে থেকে যা। জঙ্গলে যা; রান্নাবান্না করার জন্যে জঙ্গল থেকে কাঠ নিয়ে আয়। নইলে মেরে হাড্ডি গুঁড়া করে দেবো।’ প্রস্পেরোর মুখে উচ্চারিত একটি খারাপ গালিকেই অ্যাটউড তাঁর 888sport alternative linkের টাইটেল হিসেবে পছন্দ করেছেন। তিনি এই কাজটি সম্পন্ন করেছেন এমন একটি অঞ্চলে যেখানে সত্যিই শেক্সপিয়রের নাটকের উৎসব হয়। এখানকার দর্শকরা ষড়যন্ত্রকারীদের ভূমিকায় রাজা/ডিউকদের দেখতে অভ্যস্ত হলেও অ্যাটউড তাঁর 888sport alternative linkে টনি-স্যালের মতো কিছু দুর্নীতিবাজ রাজনীতিককে পাঠকের সামনে দাঁড় করিয়েছেন।

ভিলেন অ্যান্টোনিও এবং তাঁর সহযোগী নেপল্সের রাজা অ্যালন্সো ও রাজভ্রাতা সেবাস্টিয়ানকে ক্ষমা করে দিয়ে শুধুমাত্র নিজের হারানো ক্ষমতাটুকু উদ্ধার করে শেক্সপিয়রের প্রস্পেরো প্রতিশোধ অভিযান শেষ করেছেন। দুর্নীতিবাজরা সুযোগ পেলে বারবার দুর্নীতি করে জনগণের দুর্ভোগ বাড়ায়। প্রস্পেরো এই সাধারণ মানুষের কথা ভাবেননি, ভেবেছেন নিজের ক্ষমতার কথা। সেদিক থেকে, অ্যাটউডের ফিলিক্স চরিত্রটি শেক্সপিয়রের প্রস্পেরোর চাইতে অনেক বেশি গণমুখী ও সপ্রতিভ। ফিলিক্স তাঁর হারানো মর্যাদা পুনরুদ্ধার করেছেন এবং দুর্নীতিবাজ টনি, স্যাল ও তাদের সহযোগীদের শাস্তি দিয়ে সাধারণ মানুষকে আগামী দিনের সম্ভাব্য প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করেছেন।

শরীরী চরিত্রের ছায়াতল থেকে মুক্তির প্রতীক্ষায় যেমন দিন গুনেছিল নির্জন দ্বীপের অশরীরী অ্যারিয়েল, শরীরী মিরান্ডার অশরীরী আত্মাও তেমনি প্রহর গুনেছে কটেজের আঙিনায়। উভয়ের মুক্তি দেখেছি আমরা যথাক্রমে দ্য টেম্পেস্ট ও হ্যাগ-সিড কাহিনির শেষ দৃশ্যে। গ্রাম ছেড়ে শহরের দিকে রওনা দেওয়ার আগে জিনিসপত্র গোছগাছ করার সময় নাইট স্ট্যান্ডে রাখা প্রয়াত মিরান্ডার ফটোগ্রাফের দিকে তাকিয়ে ফিলিক্স উপলব্ধি করেন যে, মেয়ের অশরীরী আত্মাকে মুক্তি দেওয়ার সময় হয়ে গেছে। তিনি বললেন, ‘To the elements be free.’ অতঃপর, মিরান্ডার আত্মা অতিক্রান্ত হলো।

একজন আধুনিক অ্যারিয়েলকে আমরা খুঁজে পাই হ্যাগ-সিড-এর এইট হ্যান্ডস (8 Hands) চরিত্রে। কারাবন্দি এইট হ্যান্ডস পেশাগত জীবনে একজন মেধাবী কম্পিউটার-হ্যাকার। হ্যাকিংয়ের অপরাধে তিনি কারাবন্দি হন। কারেকশনাল সেন্টারে তিনি ফিলিক্সের নির্দেশনায় দ্য টেম্পেস্ট নাটকে অ্যারিয়েল চরিত্রে অভিনয় এবং ফিলিক্সের প্রধান সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ফিলিক্সের মর্যাদা হননকারীদের ফাঁদে ফেলার লক্ষ্যে নাটকের শুরুতে সংযোজিত হয় একটি কৃত্রিম দুর্বৃত্তায়ন পর্ব। এই পর্বে গোপন ক্যামেরা ও টেপে টনি ও স্যালের মাতাল অবস্থা এবং স্যালকে সেদিনের কারাগারে হত্যা করার জন্যে টনির পরামর্শ-সংলাপ রেকর্ড করা এইট হ্যান্ডস হ্যাকারের প্রযুক্তিগত কৌশল ছাড়া কারো পক্ষে সম্ভব ছিল না। অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী অ্যারিয়েল যা করতে পেরেছে, একজন সাধারণ মানুষ হয়েও এইট হ্যান্ডস সেই কাজটি করতে সমর্থ হয়েছেন। দ্য টেম্পেস্ট নাটকের শেষে এসে, অ্যারিয়েলের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সেবা পেয়ে সন্তুষ্ট প্রস্পেরো তাঁকে মুক্তি দিয়েছেন। কারাগারের নাটকে টনি ও স্যালের অপরাধ প্রমাণে বিশেষ অবদান রাখার জন্যে হ্যাকার এইট হ্যান্ডসও নির্দিষ্ট সময় পূর্ণ হওয়ার আগেই ফ্লেচার কারেকশনাল সেন্টার থেকে মুক্তি পেয়েছেন এবং মুক্ত হয়ে সামাজিক জীবনে ফিরে এসে ফিলিক্সের সহকারী হিসেবে যোগদান করেছেন মেকশিওয়েগ ফেস্টিভালে।

হ্যাগ-সিড-এর প্রান্তসীমায় আমরা দেখেছি, টনিকে শাস্তি দেওয়ার পর ফিলিক্সের আর এই পদটি আঁকড়ে থাকার ইচ্ছে নেই।

He’ll be an éminence grise, he’ll work behind the scenes. … it’s time for the younger people to take over. He’s hired Freddie as Assistant Director : let him learn by doing. … though in essence he’ll be handing over the keys, a process he’s already begun.

                                                    (Hag-Seed, p.288)

দ্য টেম্পেস্ট ছিল শেক্সপিয়রের রচিত শেষ নাটক যদিও এরপর অন্য নাট্যকারদের সঙ্গে মিলে দু-তিনটি নাটক তিনি লিখেছেন। এই নাটকে শেষ ভাষণে প্রস্পেরো বলেছিলেন, ‘Let your indulgence set me free.’ অর্থাৎ তোমাদের আনুকূল্যে আমাকে করো অনিরুদ্ধ, উন্মুক্ত। নাট্যকার শেক্সপিয়র ব্যক্তিগত জীবনে অবসরে যাওয়ার বাসনাটুকু প্রকাশ করেছিলেন নিজেরই সৃষ্ট চরিত্রের সংলাপের মধ্য দিয়ে, হ্যাগ-সিড-এর কাহিনির অন্তিম পর্বে ফিলিক্সও তাঁর নিজের ক্যারিয়ারের যবনিকা টেনেছেন মুক্তির আশায় – আত্মার অতিক্রমণের তাড়নায়।