প্রথম যৌবনে 888sport app download apkর প্রতি হাবিব তানভীরের এক অসম্ভব আকর্ষণ ছিল। ওই সময়েই তিনি পাবলো নেরুদা, নাজিম হিকমত, মায়াকভস্কি, পুশকিন আর ইয়েভতুশেঙ্কোকে ইংরেজি 888sport app download apk latest version পড়ে ফেলেছেন। এসব 888sport app download apk পুরো ঔপনিবেশিক বিশ্বকে স্বাধীনতার লড়াইয়ে রত মানুষদের অনুপ্রেরণা ও সাহস জুগিয়েছে। হাবিব চিন্তা-চেতনায় এবং ভাবাদর্শের দিক থেকে নিজের আদর্শকে নিজের মধ্যে গড়ে নিতে প্রয়াস পেয়েছেন। মুম্বাইয়ে পাবলো নেরুদার 888sport app download apk সামনে বসে শুনে রোমাঞ্চিত হয়েছেন। নেরুদার 888sport app download apk আগে পড়ে যতটা না বিস্মিত, সামনাসামনি নেরুদার কণ্ঠের ধ্বনির অনুরণন ছিল অসাধারণ। সুন্দর পাঠের মাধ্যমে সুন্দর প্রকাশ যে 888sport app download apkকে মহিমান্বিত করে তা নেরুদার 888sport app download apk সামনে থেকে শুনে বুঝতে পেরেছিলেন সেদিন হাবিব।
তিনি প্রগতিশীল লেখক সংঘের সাজ্জাদ জহীর এবং পিসি যোশীর সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাঁরাই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন IPTA। এ সময় মুলকরাজ আনন্দ, সিবতে হুসন, মমতাজ হুসন, রাজেন্দ্র সিং বেদী, কৃষণচন্দর, ইসমত চুঘতাই, আলী সর্দার জাফরী, মখদুম মুহিউদ্দীন, মজাজ জজরী, জানেসার আখতার, মজরুহ সুলতানপুরী, শাহির লুধিয়ানভী, কায়ফি আজমী এসব কবি-888sport live footballকের সংস্পর্শে আসেন হাবিব।
এদের মধ্যে জাফরী, খাজা আহমেদ আব্বাস, ইসমত চুঘতাই, রাজেন্দ্র সিং বেদী ও কৃষণচন্দর ইপ্টার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। উদয় শংকরের নেতৃত্বে নৃত্যের শিক্ষালয় তখন চালু হলো ইপ্টার ব্যানারে। নরেন্দ্র শর্মা, শচীন শংকর, শান্তা গান্ধী, দীনা পাঠক, রেখা জৈন, পণ্ডিত রবিশংকর, আলী আকবর খান, বাহাদুর হোসেন খান প্রমুখ যুক্ত ছিলেন। এঁরা সবাই IPTA-র ব্যানারে ১৯৪৩ সালে অমর ভারত ব্যালে প্রযোজনা এবং জহরলাল নেহ্রুর তৈরি। হিন্দুস্তান কি কাহনি-তে যুক্ত ছিলেন। সারাদেশে ঘুরে ঘুরে এসবের প্রদর্শনী চলতে থাকে। এ সময় নির্মিত বাংলার দুর্ভিক্ষ নিয়ে প্রযোজনা আকাল প্রযোজনাটি নির্মিত হয় মন্বন্তরের দুর্ভিক্ষপীড়িতদের সাহায্যার্থে। এই ব্যালেটি তখন সবার মন জয় করেছিল এবং প্রদর্শনী থেকে লাখো টাকা উপার্জন হয়েছিল এবং তা আকাল-পীড়িতদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এ সময় খাজা আহমেদ আব্বাস ইপ্টা প্রযোজনা নবান্ন-র হিন্দি live chat 888sport ধরতি কে লাল তৈরি করেন, যেখানে শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র ও অন্যরা কাজ করেন। তিনি এ-সময়ে হেমাঙ্গ বিশ^াস, জ্যোতির্ময় দত্ত, জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র এবং পরে দিল্লি আর্ট থিয়েটারের বলবন্ত গার্গি, সন্নো খুরানা, ইন্দর রাজদান এঁদের সংস্পর্শে আসেন।
১৯২৩ সালের ১ লা সেপ্টেম্বরে যাঁর জন্ম হয়েছিল, তিনি চলে গেলেন ২০০৯ সালের ৭ই জুনে। ভারতীয় নাট্য ইতিহাসের এক সমৃদ্ধতম অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে হাবিব তানভীরের প্রয়াণে। হাবিব তানভীরের থিয়েটার যাত্রা শুরু হয়েছিল মুম্বাইয়ে ভারতীয় জননাট্য সংঘের (IPTA-Indian People’s Theatre Association) সঙ্গে, যেখানে তিনি স্বপ্ন দেখতেন, লালন করতেন জনগণের থিয়েটার করার এবং শেখার। বঞ্চিত, অধিকারচ্যুত, নির্যাতিত মানুষের কথা, জীবন ও সংস্কৃতিকে মানুষের সামনে তুলে ধরার অদম্য ইচ্ছা পোষণ করতেন। এই ভাবনাচিন্তা, আদর্শকে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত লালন করেছেন এবং চর্চা চালিয়ে গেছেন তাঁর থিয়েটার চর্যার মধ্য দিয়ে। বের্টোল্ট ব্রেখটের নাট্য আঙ্গিক, তত্ত্ব ও আদর্শের মতো একটা দেশজ থিয়েটারের ভাষা তৈরির অনুসন্ধানে নিজেকে সর্বদাই ব্যাপৃত রেখেছেন। মুম্বাই থেকে তিনি ফিরে এলেন রায়পুরে, সেখানে তিনি ছত্তিশগড়ের ঐতিহ্যবাহী নাচা (Nacha) আঙ্গিকের মধ্যে অযুত সম্ভাবনার দ্বার উদ্ঘাটনে অনুসন্ধান ও গবেষণা চালাতে লাগলেন। এই আঙ্গিকের মধ্যে প্রাণবন্ত হাস্যরসের শক্তি তিনি আবিস্কার করেছিলেন।
১৯৬০-এর পর থেকে তিনি এই ছত্তিশগড়ের বেশ কিছু অসম্ভব দক্ষ, পটু ও প্রতিভাশালী লোক888sport live chatীকে নিয়ে তাঁর নতুন থিয়েটার কোম্পানি নয়া থিয়েটার গঠন করলেন। এই লোক888sport live chatীদের সমন্বয়ে তিনি তাঁর স্বপ্ন-ভাবনা-চিন্তা কার্যকর করার প্রয়াস পেলেন। অবশেষে তিনি এক জনপ্রিয় ও নমনীয় থিয়েটারের ভাষা খুঁজে পেলেন, যেটা ছিল সম্পূর্ণতই তাঁর নিজস্ব। আধুনিক ও ঐতিহ্যবাহী এক ধারা; আনন্দোচ্ছল বিনোদনধর্মী এবং চিন্তার খোরাক জোগায় যুগপৎ। এই থিয়েটার ছিল শিকড় থেকে উৎসারিত এবং ওই একই সময়ে তাঁর থিয়েটার সমালোচিতও হয়েছে। ভালোমন্দ দুটো দিকই আলোচিত হয়েছে। তিনি কখনো লোক আঙ্গিক যেটা বাইরের নয়, যেটা শুদ্ধ, এরকম আঙ্গিকের ফাঁদে পা দিতে চাননি সেটা উদযাপন করার জন্য। তিনি ভারতীয় গণতন্ত্রের ধারার বিপক্ষে বা বিরুদ্ধ স্রোতে হুমকি হয়ে দাঁড়াতেও চাননি কখনো।
হাবিব তানভীর জন্মেছিলেন ছত্তিশগড়ের রায়পুরে। রায়পুর এবং নাগপুরে তিনি কলেজে পড়াশোনা করেছেন। এই সময় তাঁর প্রিয় বিষয় ছিল 888sport app download apk এবং সিনেমা। তিনি তাঁর রায়পুরকে পুরোপুরি আবিস্কার করলেন ইউরোপে দীর্ঘ সফরের পর, যখন তিনি আবার রায়পুরে ফিরে এলেন। তাঁর পুরো নাম ছিল হাবিব আহমেদ খান। বাড়িতে ও এলাকায় তাঁকে সবাই ‘বাবা’ বলেই ডাকতেন। তিনি তাঁর 888sport app download apk লেখার জন্য ছদ্মনাম নিয়েছিলেন ‘তানভীর’। পরে তিনি আহমেদ খান বাদ দিয়ে হাবিব তানভীর নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন।
১৯৪৫ সালে হাবিব তানভীর live chat 888sportে যোগ দেওয়ার জন্য মুম্বাই যান; কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই নিজেকে ‘প্রগতিশীল লেখক সংঘ’ এবং ইপ্টার কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি 888sport app download apk লেখা ও রচনা কার্যক্রমের সঙ্গে থিয়েটারের থেকেও বেশি যুক্ত থাকেন। তিনি প্রতি রোববার কমিউনিস্ট কবি ও কর্মী সাজ্জাদ জহিরের বাসায় রবিবাসরীয় আড্ডায় যোগ দিতেন। তিনি সেখানে তুলসী দাস, মীরাবাঈ, কবির – এঁদের রচনায় আঞ্চলিক ভাষা বা উপভাষায় খুঁজে পেলেন জনগণের বোধ্য ভাষা। এটা তাঁর কাছে খুবই গ্রহণযোগ্য মনে হলো। এই ভাষার ব্যবহারের মধ্যে তিনি এক অসম্ভব শক্তি ও সম্ভাবনা খুঁজে পেলেন। তিনি বুঝতে পারলেন, ভাষা নিত্যই পরিবর্তিত হয়, সৃষ্টি হয়। মানুষই তা তৈরি করে, ব্যবহার করে তাদের প্রয়োজনে। এ ভাষা ব্যবহার করেই তাঁরা তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
থিয়েটারে হাবিব তানভীর সহ-অভিনেতা ও শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন বলরাজ সাহানি ও দীনা পাঠককে। ১৯৪৮ সালে ইপ্টা (ওচঞঅ) সম্মেলনে বিশ্বামিত্র আদিল-রচিত একটি একাঙ্ক ট্র্যাজেডি নাটকের এক চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছিলেন। এই নাটকের বিষয় ছিল অন্ধ্র প্রদেশের তেলেঙ্গানা আন্দোলন। তিনি এক বৃদ্ধের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, যেখানে তাঁর পুত্র গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এই চরিত্রে তাঁর একটি দীর্ঘ সংলাপ ছিল। চিৎকার এবং ফুপিয়ে কান্নার দৃশ্যও ছিল। বলরাজ সাহানি এই নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন। বলরাজ সাহানি তাঁর অভিনয়ে মোটেই সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না। মাঝেমধ্যেই ক্ষেপে যাচ্ছিলেন। মহড়ায় মঞ্চে উঠে এসে বলরাজ অভিনেতা হাবিব তানভীরকে খুব জোরে মুখে একটা থাপ্পড় কষালেন। তাঁর চিবুকে বলরাজের পাঁচ আঙুলের লাল দাগ বসে গিয়েছিল। তাঁর চোখে জল চলে এসেছিল। বলরাজ চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘এখন সংলাপটা বল’। হাবিব তানভীর কাঁদতে কাঁদতে সংলাপগুলো বললেন। তারপরে বলরাজ তাঁকে জড়িয়ে ধরে আদর করে বললেন, ‘এখন আর তুমি এটা কখনো ভুলবে না।’ তখন তাঁর খুবই অল্প বয়স, বিশ-বাইশ হবে হয়তো, চরিত্র করতে হচ্ছে আশি বছরের এক বৃদ্ধের ভূমিকায়। অনেক কান্না কাঁদতে হয়েছে। যেটা ঠিকমতো হচ্ছিল না। তাই হাবিব বলরাজকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এটা কি আপনার নির্দেশনা দেওয়ার একটা পদ্ধতি? বলরাজ উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ তাই, এটাকে বলে মাসল মেমোরি।’
১৯৪৮ সালে যখন কমিউনিস্ট পার্টি ও ইপ্টা নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো তদানীন্তন ভারত সরকার আলী সরদার জাফরী, বলরাজ সাহানি, দীনা পাঠক ও অন্য ইপ্টা সদস্যদের তারা কারান্তরালে পাঠালো। তখন হাবিব তানভীর সংগঠক, সাধারণ সম্পাদক, নাট্যকার এবং অভিনেতা-নির্দেশক হিসেবে নিষিদ্ধঘোষিত ইপ্টার দায়দায়িত্ব ঘাড়ে তুলে নিলেন। নির্দেশনার কাজটি তাঁর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলো। তিনি ওই সময়ে কান্তিদূত কামগার নামে একটি পথনাটক তৈরি করেন। নাটক রচনা ও নির্দেশনা হাবিব তানভীর দিয়েছিলেন। অনুষ্ঠিত হয়েছিল ছাওয়ালে।
যখন নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল, ততদিনে ইপ্টার অবস্থাও একটু এলোমেলো। হাবিব তানভীর ১৯৫৪ সালে মুম্বাই ত্যাগ করে দিল্লি চলে আসেন। মাথা থেকে live chat 888sportে অভিনয়ের চিন্তা ঝেড়ে ফেললেন। ১৯৫৪ সালে প্রথম পূর্ণাঙ্গ নাটক তৈরি করলেন আগ্রা বাজার জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর বন্ধু আতহার পারভেজের আত্যন্তিক অনুরোধে আগ্রা বাজার। নাটকটি তিনি লিখলেন এবং প্রযোজনা করলেন। এই প্রযোজনায় তিনি জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের ছাত্র এবং পাশের গ্রাম ওখলার গ্রামবাসী এই নাটকে অভিনয় ও 888sport app কাজে যুক্ত হয়েছিল। হাবিব তানভীরের এই নাটক প্রযোজনাটি ছিল অসাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে শহুরে ও গ্রামীণ অভিনেতাদের সমন্বয়ে সংগীত ও নাট্যের একটি নিরীক্ষাধর্মী প্রযোজনা তৈরি হলো।
নাটকটির ঘটনাস্থল একটি বাজার, সেখানে অসংখ্য লোকজন চলাচল করছে, আর ছিলেন নাটকের প্রধান চরিত্র আগ্রার অষ্টাদশ শতাব্দীর জনপ্রিয় উর্দু কবি নাজির আকবরাবাদী। বহুকার এই প্রযোজনাটি সংশোধন করা হয়েছে। নতুন অভিনেতাদের সমন্বয়ে এমনকি ২০০৪ সালেও এটিকে নতুন রূপে নতুন অভিনেতাদের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছিল।
হাবিব তানভীর ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৮ এই তিন বছর ছিলেন ইউরোপে। এখানে কাজ করে তিনি অনেক পরিচিতি পেলেন, তাঁর উপলব্ধির দিগন্ত উন্মোচিত হলো। রয়েল একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টস তাঁকে ব্রেখট বিষয়ে মহান শিক্ষক আখ্যা দিয়েছিল। কিন্তু ব্রেখটের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ঘটেনি। তিনি বার্লিন যাওয়ার কিছুদিন আগেই বের্টোল্ট ব্রেখট প্রয়াত হন। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে। তারপরও তিনি ব্রেখট বিষয়ে তাঁর মতো করে শিক্ষা দিয়ে গেছেন। বের্টোল্ট ব্রেখট ও ফেদেরিকো গারসিয়া লোরকা এই দুই মহান নাট্যকারকে তাঁর জীবনের শেষ পর্যন্তই শিক্ষক মেনে কাজ করেছেন হাবিব।
গায়ক ও ব্যালাড গায়করা তাঁদের প্রযোজনা তৈরিতে সাহায্য নিয়েছেন এপিক ফর্ম থেকে, সেখানকার জনপ্রিয় গান ব্যবহার করেছেন। গদ্যের সঙ্গে কাব্যের মিলন ঘটিয়ে এবং সংলাপের সুন্দর নির্মাণের মধ্যে দিয়ে সাংগীতিক ও নাটকীয় ঐক্যের এক অসাধারণ উপস্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করেন, যেটা ভারতবর্ষে বিশেষভাবে অনুকরণ করে নির্মাণের চেষ্টা করো হতো। পরবর্তী সময়ে এই একজাতীয়তা এই দেশে থিয়েটারের এক নিদর্শন হিসেবে দাঁড়িয়ে যায়। এই নিরীক্ষাই পরবর্তী সময়ে হাবিব তানভীরের থিয়েটারের ধারা হিসেবে দাঁড়িয়ে যায়।
১৯৫৮ সালে ইউরোপ থেকে ফিরে আসার পর, হাবিব তানভীর রায়পুরে যান তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে। তখন তিনি সেখানকার ঐতিহ্যবাহী আঙ্গিক নাচা-এর সঙ্গে পরিচিত হন। এটি ছত্তিশগড়ের জনপ্রিয় মিউজিক্যাল কমেডি আঙ্গিক। এই নাচা আঙ্গিকের দল থেকে তিনি দুজন অভিনেতাকে নির্বাচন করেন তাঁর সঙ্গে কাজ করার জন্য। এরা হলেন মদনলাল, ঠাকুর রাম, বাবু দাস, ভুলবা রাম, লালু রাম এবং জগমোহন, – সেইসঙ্গে একজন ক্ল্যারিনেট বাদককে সঙ্গে নিয়ে দিল্লিতে এলেন তাঁর মিট্টি কা গাড়ি প্রযোজনাটিতে কাজ করার জন্য। হাবিব তানভীর মোটেই খুশি ছিলেন না তাঁর এই প্রথম প্রযোজনা মৃচ্ছকটিকম নাটকে পরিষ্কার শুদ্ধ হিন্দির ব্যবহার নিয়ে; কিন্তু এটা ছিল একদম সূচনা পর্বের প্রয়াস। মনিকার সঙ্গে তাঁর সারাজীবনের কর্মযোগ এবং সারাজীবনের সহযোগ পেয়েছেন যে ছত্তিশগড়ি অভিনেতার দলকে নিয়ে, যারা ছিল অভিনব ও অসাধারণ; এদেরকে সঙ্গে নিয়ে মিট্টি কা গাড়ি বহুবার নতুন বা তার নবরূপায়ণ ঘটিয়েছেন। এটা তাঁর নয়া থিয়েটারের অনবদ্য প্রযোজনা ছিল, যেখানে হাবিব নিজে এক অবিচ্ছিন্ন অংশ চরিত্র হিসেবে রাজা কা সালা ছিলেন।
মিট্টি কা গাড়ি নাটকটি প্রযোজনা করেছিল ‘হিন্দুস্তানি থিয়েটার’। ১৯৫৯ সালে মনিকা মিশ্রকে সঙ্গে নিয়ে হাবিব ওই কোম্পানি ছেড়ে দেন। তৈরি করেন ‘নয়া থিয়েটার’। এই দলটি নিবন্ধিত হয় ১৯৬৪ সালে এবং পেশাদার কোম্পানি যাত্রা শুরু করে ১৯৭২ সালে। মনিকা মিশ্রকে বিয়ে করেন ওই ১৯৫৯ সালেই। ১৯৮৩ সালে তিনি বলেন, ‘১৯৭০ সাল থেকেই লোকনাট্যশৈলী নিয়ে আমার মধ্যে ভাবনা কাজ করছিল; কিন্তু ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত কোনো নতুন পথ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তখন ১৯৭৩-এর ৬ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত রায়পুরে ৪০ জন লোকনাট্য 888sport live chatীকে নিয়ে একটা কর্মশালা করি। এরা সবাই ছত্তিশগড়ি রায়পুরের নাচা আঙ্গিকের লোকনাট্য 888sport live chatী। এদের মধ্যে দুর্গা এবং রাজনন্দগাঁও ছিলেন এবং ৫০ জন পর্যবেক্ষকও ছিলেন এই কর্মশালায়। সুরজিৎ সিনহা ও কোমল কোঠারিও ছিলেন। তিনি নির্মাণ করলেন গাঁও কা নাম সসুরাল। মোর নাম দামাদ এটি ছিল তিনটি নাচা নাটকের একটি কোলাজ। এই নাটকে প্রখ্যাত অভিনেত্রী ফিদাবাঈ তাঁর অভিনয়ের সূচনা করেছিলেন।’
গাঁও কা নাম সাসুরাল যখন প্রযোজনাটি দিল্লিতে মঞ্চস্থ হলো তখন প্রযোজনাটি নয়া থিয়েটারের মোড় পরিবর্তন করে দিলো। এই প্রযোজনাটি একটানা ১২টি প্রদর্শনী পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ ছিল। এই নাটকে ভাষার প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করা গিয়েছিল। সবাই উপভোগ করেছেন নাটক আনন্দের সঙ্গে। এরই রাস্তা ধরে ১৯৭৪ সালে তৈরি হয় হাবিবের অসাধারণ কীর্তি চরণদাস চোর সম্ভবত একমাত্র সেরা 888sport live chatকর্ম হিসেবে যেটি স্বীকৃত হয়েছে স্বাধীনতা-পরবর্তী ভারতীয় থিয়েটারের মধ্যে। এই প্রযোজনাটি প্রাণবন্ত দেশজ কর্ম, সুসমন্বিত নাচ, গান ও অভিনয়ে দুর্দান্ত এক পরিবেশনা। এই হাস্যরসাত্মক প্রযোজনার মধ্য দিয়ে ধনতন্ত্রপূর্ব মূল্যবোধের ধারণা সমুন্নত করা হয়েছে এবং এর নাটকীয়তা এক অনন্য মাত্রিক ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করেছে।
নয়া থিয়েটার রেপার্টরির আরো উল্লেখযোগ্য কাজ হলো বাহাদুর কালারিন (১৯৭৮)। স্থানীয় একটি কিংবদন্তি ট্র্যাজেডি কাহিনি নিয়ে রচিত নাটকটি। এর মধ্যে ইডিপাস জটিলতার উপাদান ছিল। এই নাটকে ফিদা বাঈ ছিলেন অদম্য অসাধারণ। তাঁর আর একটি প্রযোজনা হিরমা কি অমর কাহানি (১৯৮৫) সম্পর্কে সফদর হাশমি বলেছেন, গত দশ বছরে তিনি যেসব নাটক প্রযোজনা করেছেন তার মধ্যে এটিতে তিনি প্রকাশ্যে রাজনীতির কথা বলতে চেয়েছেন এবং হিরমার ভূমিকায় ভুলবা – অনেক রাজকীয়, অনেক অদ্ভুত ও খামখেয়ালি।
হাবিবের শেষের কয়েকটি বছর অনেকটা যুদ্ধ লড়াইয়ের মতো গেছে। একে একে তাঁর প্রিয় অভিনেতারা প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর দিল্লির বাসস্থান থেকে তাঁর কোম্পানিকে উৎখাত করা হয়েছে। পোঙ্গা পণ্ডিত নাটকে ধর্মীয় মৌলবাদ সম্পর্কে সরাসরি শক্ত কটাক্ষ করায় মৌলবাদী গুন্ডাদের ভয়ে সারাক্ষণ তটস্থ থাকতে হয়েছে। তাঁর ওপর আক্রমণও হয়েছে। তাঁর শেষ কাজ ছিল রাজরক্ত; নয়া থিয়েটারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিসর্জন নাটকের রূপান্তর। কিন্তু নয়া থিয়েটার চালু রয়েছে। তাঁর অদম্য কন্যা নাগিনের নেতৃত্বে নতুন প্রজন্মের একঝাঁক 888sport live chatী নিয়ে দল এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রযোজিত নাটক
আগ্রা বাজার – ১৯৫৪; শতরঞ্জ কে মোহরে – ১৯৫৪; লালা মোহরত রায় – ১৯৫৪; মিট্টি কা গাড়ি – ১৯৫৮; পোঙ্গা পণ্ডিত ১৯৬০; সাজাপুর কা শান্তিবাঈ; গাঁও কে নাম সসুরাল, মোর নাম দামাদ – ১৯৭৩; চরণদাস চোর – ১৯৭৫; উত্তর রামচরিত -১৯৭৭; বাহাদুর কালারিন – ১৯৭৮; এক আওরাত হাইপাথিয়া ভি থি – ১৯৮০; জিস লাহোর নহি দেখা – ১৯৯০; কামদের কা আপনা বসন্ত ঋতু কা সান্ত্বনা-১৯৯৩; দ্য ব্রোকেন ব্রিজ – ১৯৯৫; জহরিলি হাওয়া – ২০০২; কার্তুস; দেখ রহে হ্যায় ন্যায়; হিরমা কি অমর কাহানি।
গ্রন্থপঞ্জি
দ্য লিভিং টেলস অব হিরমা-হিরমা কি অমর কাহানি (২০০৫) সিগাল বুকস; চরণদাস চোর-অনূদিত অঞ্জুম কাটিয়াল (১৯৯৬); ইউজ অব মিউজিক অ্যান্ড ডান্স ইন কনটেম্পরারি ড্রামাটিক পারফরম্যান্স; দ্য বুড্ডিস্ট থিয়েটার অব টিবেট; থিয়েটার অব স্ট্রিটস : জননাট্য মঞ্চ – জননাট্য মঞ্চ প্রকাশিত অর্জুন ঘোষ-রচিত ও সুধন্ব দেশপাণ্ডে-সম্পাদিত।
888sport app download bd
১৯৮২ সালে এডিনবার্গ ফ্রিঞ্জ উৎসবে চরণদাস চোর নাটকের জন্য পুরস্কৃত হন। ফ্রিঞ্জ তাঁর প্রথম 888sport app download bd। সংগীত নাটক একাডেমি 888sport app download bd – ১৯৬৯; সংগীত নাটক ফেলোশিপ – ১৯৯৬; পদ্মশ্রী – ১৯৮৩; জহরলাল নেহ্রু ফেলোশিপ – ১৯৭৯; কালিদাস সম্মাননা – ১৯৯০; পদ্মভূষণ – ২০০২; রাজ্যসভা সদস্য (নির্বাচিত) – ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮।
অভিনীত live chat 888sport
রাহি (১৯৫২) – রামু; ফুটপাত (১৯৫৩); চরণদাস চোর (১৯৭৫) – গীতি ও চিত্রনাট্য; স্টেয়িং অন (১৯৮০), টিভি – ড. মিত্র; গান্ধী (১৯৮২) – ভারতীয় ব্যারিস্টার; ম্যান ইটারস অব কুমায়ুন (১৯৮৬), টিভি – বাহাদুর; ইয়ে ও মঞ্জিল তো নহি (১৯৮৭) – আখতার বেগ; হিরো হিরালাল (১৯৮৮); প্রহার : দ্য ফাইনাল অ্যাটাক (১৯৯১) – জো ডি’ সুজা, পিটার ডি’ সুজার বাবা; দ্য বার্নিং সিজন (১৯৯৩) – রাজা; সরদার (১৯৯৩); মঙ্গল পাণ্ডে : দ্য রাইজিং – বাহাদুর শাহ জাফর; ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট (২০০৮) – গফফর মিঞা (কবি)


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.