আমি সেই সময়ের কথা বলছি, যখন আমরা সদ্য 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। ষাটের দশকের শুরু। আমাদের বৌদ্ধিক-সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে আজকে যা-কিছু দৃশ্যমান তার বীজবপনের সময়, আমাদের জাতিসত্তার বিকাশ ও বিবর্তনের সময়, আমাদের আত্মপরিচয়ের অবয়ব-ধারণের থরথর কম্পমান সময়। একটি রুদ্ধকণ্ঠ সমাজের বিবরে পচনের পঙ্কে পা রেখেও আমরা উদ্বেল হয়ে উঠতে পারতাম অনেক পরিচর্যায় লালিত এক অনাগত উচ্চকিত ভবিষ্যতের আকাক্সক্ষায়। সে আকাক্সক্ষা বা স্বপ্ন থেকে আজকে আমরা কতদূরে বা কাছে সেটা ভিন্ন কথা; কিন্তু তখন যে আমাদের একটা জাতিসত্তা নির্মিত হয়ে এক বিশিষ্ট রূপ পরিগ্রহ করছিল তাতে সন্দেহ নেই। আমরা এসেছিলাম দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে, দেশের শ্রেষ্ঠতম বিদ্যাপীঠে অধ্যয়নের জন্যে। চোখে আমাদের অনন্ত স্বপ্নের বিভা, হৃদয়ের চিত্তবৃত্তির অনন্য উদ্বর্তনে বিকশিত হয়ে-ওঠার ঐকান্তিক অভিনিবেশ। রমনার ইউনিভার্সিটি-ক্যাম্পাসে তখনো পর্যন্ত বুদ্ধদেব বসুর বর্ণনার বাতাবরণের কিছুটা হলেও বিদ্যমান ছিল। আমাদের কাছে তখনো পরিবেশটি এমন ছিল যে, হলগুলোসহ পুরনো ঔপনিবেশিক স্থাপত্য-চিহ্নিত বিশ্ববিদ্যালয় অঞ্চলকে মনে হতো ছায়াবৃত জ্ঞানচর্চার প্রাণকেন্দ্র এবং সাংস্কৃতিক রুচিনির্মাণের অনন্য নিকেতন। তখনো পর্যন্ত বৃহত্তর জীবনের অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতার নানা যন্ত্রণাক্লিষ্টতা আমাদেরকে স্পর্শ করেনি। ফলে শঙ্কাহীনভাবে ভবিষ্যতের অমেয় সম্ভাবনার কথা ভাবতে পারতাম। একটি বিশুদ্ধ নিভৃতচারী শৈল্পিক-যন্ত্রণা হয়তো সবারই ছিল, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে হালকা হওয়ায় মনে মনে কোথাও হারিয়ে যাওয়ার মানা ছিল না আমাদের। আমরা সবাই একটা রক্ষণশীল, পশ্চাৎপদ, প্রায় স্থবির সমাজ থেকে যাত্রা করে যেন মুক্তচিন্তা ও অন্যতর মহত্তর জীবনজিজ্ঞাসায় জেগে উঠতে চেয়েছিলাম আমাদের বিদ্যাপীঠের বিস্তৃত মঞ্চে।
তখনকার দিনে 888sport app ছিল একটি ঘুমন্ত প্রাদেশিক শহর। ধানমন্ডি কেবল নির্মিত হচ্ছে, গুলশান-বারিধারার ওই অঞ্চলটি প্রায় জঙ্গলাকীর্ণ। মুড়ির টিনমার্কা টাউন-সার্ভিস বাসগুলো যাতায়াত করে সদরঘাট থেকে নবাবপুর হয়ে গুলিস্তান-রমনা পর্যন্ত। চার আনায় রিকশা পাওয়া যায়। র্যাংকিন স্ট্রিট অভিজাত বসতি। নিউমার্কেট একদিকে। একটু সরে এসে এদিকে শাহবাগ হোটেল, যা আজকের দিনের পোস্ট গ্রেজুয়েট মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট। তার ওপাশে রেডিওর স্টুডিও, যা এখনো বর্তমান। তখন ওখান থেকেই সম্প্রচার হতো।
একষট্টি-বাষট্টিতে মাঝে মাঝে অনুষ্ঠান ঘোষণা করছি মাসে পনেরো টাকার বিনিময়ে। স্টুডিওর পাশেই আরো কিছুদিন পরে শুরু হলো আজকের শেরাটন, সেদিনের ইন্টারকন্টিনেন্টাল। এর উলটোদিকে ছিল সাকুরা, নতুন জাপানি রেস্তোরাঁ। একদিন চা খেতে গিয়েছিলাম হুমায়ুন চৌধুরীর সঙ্গে। এক সুন্দরী জাপানি মহিলা দুধ ঢেলে দিলেন চায়ের কাপে এতোটাই যে, আমার চায়ের লিকারটি নষ্ট হলো। কিন্তু মহিলার সেই গৌর নরম নির্জন হাতে – আহা কী রোমাঞ্চ! হুমায়ুন চৌধুরী তখন রেডিওতে অনুষ্ঠান ঘোষণা ছাড়াও মারাত্মক রোমান্টিক লেখা লিখতেন। পরবর্তীকালে প্রবাসী হয়ে টেলিমিডিয়ায় সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। সমস্ত রমনা অঞ্চল উত্তরে শাহবাগ প্রান্ত থেকে দক্ষিণে নাজিমুদ্দীন রোড পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তখন সারা এলাকাটি বড় বড় কড়ই গাছের স্নিগ্ধ ছায়ার সম্প্রীতিতে নিবিড় হাতছানি দিয়ে আমাদেরকে ডাকত। তখনো সন্ত্রাস সংক্রমিত হয়ে ওঠেনি 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে, ষাটের দশকের মধ্যবিন্দুতে এসে মোনেম খান যেটি ভালো করে মিশিয়ে দিয়েছিলেন একদল ছাত্রের চরিত্রে। সেই থেকে শুরু। বহিরাগত অর্থে বিদ্যাপীঠে সন্ত্রাসের ফ্যাসিবাদের লালন, ছাত্ররাজনীতির আদর্শচ্যুতি ও অবক্ষয়।
সেই সময় ছিল দারুণভাবে উত্তাল, তরঙ্গবিক্ষুব্ধ কিন্তু তলদেশে স্থিতধী, একটি ধ্রুবের দিকে স্থিরনিবদ্ধ। সংঘাত ছিল স্বার্থবুদ্ধির সঙ্গে আদর্শের, সংঘাত ছিল রাষ্ট্রচিন্তায় ও সমাজবিবর্তনে, কিন্তু মূলধারার আবহমান বাংলার যে মর্মরূপ তার পরিচর্যায় আমরা প্রায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নিয়োজিত ছিলাম মূলত আত্মরক্ষার খাতিরে। আমাদের চিরায়ত চিন্তনের সেই আত্মিক রূপটিতে মোনেমখানি হীনম্মন্যতাবোধ কখনোই অধিকার করতে পারেনি। এই চিন্তার ফসলই স্বাধিকারের স্বপ্নে বিকশিত হয়ে উঠেছিল এবং শেষে এক পরাক্রান্ত সময়ে মুক্তিযুদ্ধের রক্তস্নানের মধ্য দিয়ে সেই স্বপ্ন পূত করেছে মাতৃভূমিকে। আজ চারিদিকে তাকিয়ে মনে হয় সম্ভবত সেই সময়ের পুনর্বিবেচনা দরকার, দরকার নিজেকে আবার ভালো করে চিনে নেবার। সেই দুর্মর সময়ে আমাদের বিদ্যাপীঠে ও 888sport appসহ সারা দেশেই যে-888sport live football ও সংস্কৃতির একটি বিশিষ্ট আবহ তৈরি হয়েছিল, তাকে 888sport sign up bonus থেকে কতখানি তুলে আনতে পারব জানি না। সময়ের দুস্তর ব্যবধানে 888sport sign up bonusতে নানা প্রলেপ পড়েছে কাক্সিক্ষত বা অনাকাক্সিক্ষত, ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়।
আমাদের জাতিসত্তায় একটি সুস্পষ্ট দ্বৈরথ আমার মনে হয় সুদীর্ঘকাল থেকে চলে আসছে, যার নিরসন এখনো ঘটেনি। আর তা ঘটেনি বলেই আমরা কোন পথে যাবো, তা এখনো নিশ্চিত করতে পারিনি। একটা আত্মপরিচয়ের সঙ্কট হয়তো এখনও বিদ্যমান রয়েছে, যা ততোদিনে নিশ্চিতভাবে মিটে যাওয়ার কথা। কিন্তু মেটেনি। অথচ অনিবার্যভাবেই ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও অর্থনেতিক সমাজ-প্রতিবেশই দীর্ঘদিন ধরে একটি কালের 888sport live football-সংস্কৃতির চরিত্র নির্মাণ করে। এই উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্রীয় সত্তা হিসেবে 888sport appsের উদ্ভব স্বল্পকালের হলেও এই ভূখণ্ডের 888sport live footballিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হাজার বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে বহমান থেকেছে। এই সুদীর্ঘ সময়ের পরিসরে তার ইতিহাস প্রবাহিত হয়েছে বিচিত্র ধারায় বিচিত্র শক্তির টানে। সেই বিচিত্র সমাজ-বিবর্তনের নানা পর্যায়ে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের উপাদানগুলো আমাদের মূল সংস্কৃতির ধারায় যুক্ত হয়েছে, আত্মীকৃত হয়েছে এবং জন্ম দিয়েছে এক অনন্য 888sport live footballিক-সাংস্কৃতিক সত্তার। তার উৎকর্ষ বা অপকর্ষের কথা নয়, তার অনন্যতা, বিবর্তনের অনিবার্যতা ও তার আত্মশক্তির তীব্রতায় আজকে কোনো দ্বিমত থাকার কথা নয়।
শূন্যের ভেতর থেকে একটি সমাজ গড়ে ওঠে না। আজকে আমরা যা হয়েছি বা যা হইনি, তারও শেকড় আছে, ইতিহাস-ঐতিহ্য আছে, সমাজ-বিবর্তনের মধ্যে আছে তার আদ্যোপান্ত সম্পর্ক। এ কারণেই আমাদের এক ভূখণ্ডে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর ভাষা, 888sport live chat ও 888sport live footballে একদিকে যেমন প্রাচীন ভারতীয় ধর্মচিন্তা ও তার কিংবদন্তির গভীর পরাক্রম নিহিত রয়েছে, তেমনি অন্যদিকে রয়েছে বুদ্ধের মানবিক মূল্যবোধ থেকে শুরু করে ইসলামি সামাজিক ধ্যান-ধারণা এবং অপেক্ষাকৃত আধুনিককালে এসে শুভবুদ্ধি ও 888sport apkমনস্কতার উপাদান। এই সবকিছুর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আবহমান সংস্কৃতিতে বিস্মৃতপ্রায় প্রাগৈতিহাসিক ধারণা ও অনুভূতির অনুষঙ্গও লক্ষণীয়। আমাদের আদিবাসীদের আমরা যতোই প্রান্তিকতায় ঠেলে দিই না কেন, সেই প্রাচীন প্রাগৈতিহাসিক অনুষঙ্গগুলো সমাজ888sport sign up bonus থেকে সম্পূর্ণ মুছে যায়নি। নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে 888sport apps বলে যে-রাষ্ট্রীয় সত্তার উদ্ভব ঘটেছে এবং সবাইকে তা যে-পরিণতির দিকে এগিয়ে বা পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তার বীজ-বপন হয়েছিল প্রাচীনকালে যদিও, তবু আধুনিককালে বিশেষত বিংশ শতাব্দীর মধ্যবিন্দু থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সমাজ-জীবনের যে বিপুল পরিবর্তনগুলো সাধিত হয়েছে, তা-ই নির্মাণ করেছে আমাদের বর্তমানকালের সাংস্কৃতিক-888sport live footballিক বাস্তবতার অবয়ব।
১৯৪৭ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমাদের 888sport live footballিক-সাংস্কৃতিক বাতাবরণে যে-বিবর্তন সাধিত হয়েছে তার প্রকৃতি এবং এদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিবর্তন এবং তার সমান্তরালে যে-মধ্যবিত্তের উদ্ভব তা উৎসারিত হয়েছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে এবং বিশেষত ষাটের দশকের 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ষাটের দশকে 888sport app ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যে-বৌদ্ধিক আবহ নির্মিত হয়েছে তা প্রণিধানযোগ্য। সে-সাংস্কৃতিক আবহে আয়ুবি ও মোনায়েমখানি অত্যাচার ছায়া ফেললেও তা আমাদের মূলধারার চৈতন্যকে বিচলিত করতে পারেনি, বরং বাধাপ্রাপ্ত হয়ে তা নবতর শক্তিতে একাগ্রভাবে অগ্রবর্তী হয়েছে। কেননা ১৯৪৭-এর ধর্মীয় মোহাবেশ পাকিস্তান-উদ্ভবের সঙ্গেই উবে যেতে থাকে। অদ্ভুত পাকিমস্তান রাষ্ট্রের উদ্ভবের একবছরের মধ্যেই এই ভূখণ্ডের মানুষের এটুকু বুঝতে কষ্ট হয়নি যে, শুধু ধর্মান্ধতা দিয়ে একটি রাষ্ট্র টেকে না। পরবর্তীকালেও যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে এই ধর্মান্ধতাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। অবস্থাদৃষ্টে স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে, সেই অন্তঃসারশূন্য রাষ্ট্রব্যবস্থার অর্থহীনতা তার প্রতিষ্ঠাতার কাছেও সেদিন অস্পষ্ট থাকেনি। হয়তো সে-কারণেই পাকিস্তান-প্রতিষ্ঠার পরপরই তিনি রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষতার কথা উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু মৃত্যুপথগামী জিন্নাহর সেই উক্তিতে সে দিন কেউ বিশ্বাস বা কর্ণপাত করেনি। তদুপরি রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে তখন থেকেই অগ্রাধিকার পায় পুঁজিপতি পাকিস্তানি সামন্ত মুসলমান আমলা ও মিলিটারি আমলার যুগ্মস্বার্থ। সেটি পাকিস্তান-আন্দোলনের শুরু থেকে থাকলেও এবং ওই শ্রেণিসমূহের ধ্যান-ধারণা ও স্বার্থের সঙ্গে বাঙালি মধ্যবিত্ত (যা প্রকৃতপক্ষে ’৪৭-এর পরেই প্রধানত গড়ে ওঠে) ও কৃষক মুসলমানের কোনো স্বার্থ জড়িত না থাকলেও তৎকালীন বাস্তবতায় কেবল অস্তিত্বরক্ষার খাতিরেই তাঁরা পাকিস্তানের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু শাসকশ্রেণির প্রকৃত চরিত্র-উন্মোচনের সঙ্গে সঙ্গেই তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের আপামর মানুষের সে-বিভ্রান্তি কেটে যেতে সময় লাগেনি। এমনি একটি রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে যখন উর্দুভাষাকেই পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা বলে ঘোষণা দেওয়া হলো, তখন ওই নব্যরাষ্ট্রের প্রগতিশীল ছাত্রসমাজ প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল। বাঙালি মুসলমানের যে-মৌলিক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, তাকেই সেদিন নস্যাৎ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা সেদিন আঘাত করেছিল আমাদের অস্তিত্বের মূলে। তাই ভাষাকে ঘিরে দ্বিতীয়বারের মতো যে-অস্তিত্বরক্ষার আন্দোলন গড়ে ওঠে তা-ই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে পূর্ণতা অর্জন করে।
ষাটের সেই উত্তাল সময়ে পাকিস্তানি শাসকচক্রের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উপনিবেশবাদের সমান্তরালে তাদের সাংস্কৃতিক উপনিবেশবাদের চরিত্রটিও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কিন্তু এদেশের মৃত্তিকার গভীরে প্রোথিত ছিল এক অবিচ্ছিন্ন অথচ স্থিত সাংস্কৃতিক মহীরুহের বীজ আমাদের সমাজ888sport sign up bonusর গভীরে। অতএব পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এদেশের নবোদ্ভিন্ন বাঙালি মধ্যবিত্তের মনে সৃষ্ট হয় এক তীব্র প্রতিক্রিয়া, আর তা ক্রমশ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ব্যাপ্ত হয়ে যায়। পুরো ষাটের দশক জুড়ে এর প্রতিক্রিয়া অসংখ্য ধর্মঘট, মিটিং ও শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে তা একটি সংঘবদ্ধ রূপ পরিগ্রহ করে। 888sport appsের একটি বিশিষ্ট জাতীয়তাবাদের উদ্ভব হয় তখনই। পঞ্চাশের শেষে এবং ষাটের শুরুর পটভূমি যেমন সেই সময়ের একটি সুনিশ্চিত আত্মবিশ্বাসী ও প্রকাশের উন্মাদনায় উন্মুখ একদল তরুণের সৃষ্টিশীলতায় প্রকটিত হয়ে উঠবার সময়, তেমনি অন্যদিকে আমাদের আজকের দিনের 888sport live footballকর্মের মূল চরিত্রটির নির্মাণও হয়েছিল তখনই। স্পষ্টতই একটি পালাবদলের সময় তখন এসে গিয়েছিল এবং মাত্র সিকি শতাব্দীর পরিসরে একটি নগরমুখী শিক্ষিত মধ্যবিত্ত-সমাজ তার নিজের ধ্যান-ধারণা ও আশা-আকাক্সক্ষার নান্দনিক উচ্চারণে সমর্থ হয়ে উঠেছিল। এই মধ্যবিত্ত-সমাজের চরিত্র-নির্মাণে 888sport app ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট ভূমিকা ছিল – বিশেষত 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের। কারণ তৎকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র ছিলেন। আমাদের 888sport live footballিক ও নান্দনিক বোধ নির্মাণ করেছিলেন যাঁরা, তাঁরা সবাই 888sport app ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন – বিশেষত বাংলা ও ইংরেজি 888sport live footballের।
সে-সময় বাংলা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন মুনীর চৌধুরী, আহমদ শরীফ, আনিসুজ্জামান, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম, আবু হেনা মোস্তফা কামাল – এঁরা সবাই। বাংলা বিভাগের প্রধান ছিলেন মুহম্মদ আবদুল হাই। সে-সময়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন সেবাব্রত চৌধুরী, হায়াৎ মামুদ (মনিরুজ্জামান), হুমায়ুন চৌধুরী, আসাদ চৌধুরী, আবদুল মান্নান সৈয়দ, সিকদার আমিনুল হক, দিলীপ দত্ত, রশীদ হায়দার, আমিনুল ইসলাম বেদু, মোহাম্মদ রফিক, রফিক আজাদ, আফজাল চৌধুরী, প্রশান্ত ঘোষাল, ফেরদৌসী বেগম (পরে ফেরদৌসী মজুমদার), হুমায়ুন খান প্রমুখ। তখন 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান ছিলেন ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হোসায়েন। তিনি স্বগত সংলাপ নামে একটি ত্রৈমাসিক সম্পাদনা করতেন। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, ড. খান সারওয়ার মুরশিদ, কে এম এ মুনীম, এহসানুল হক, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, রাজিয়া খান, হুসনে আরা হক প্রমুখ। ইংরেজির ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন – মনজুরে মওলা, শওকত আলী (পরে ড.), খুরশীদ হামিদ, আবদুশ শাকুর, নিয়াজ আলী, রাজা আলী, সাইফুল ইসলাম খান (হায়াৎ সাইফ), আখতার ইমাম (এখন ব্যারিস্টার), রামেন্দু মজুমদার, জিয়াউদ্দিন মুহাম্মদ চৌধুরী (এখন প্রবাসী), আতাউর রহমান, আরিফা আহমেদ, সালমা আকবর (এখন রহমান), রেহানা করিম, জেবুন্নেসা প্রমুখ। এঁদের মধ্যে যাঁরা তখনো লিখতেন, পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠিত, তাঁদের মধ্যে ছিলেন মনজুরে মওলা এবং হুমায়ুন চৌধুরী। তাঁরা দুজনেই আমাদের জ্যেষ্ঠ ছিলেন। আবদুশ শাকুর তাঁর দুর্দান্ত বুদ্ধিদীপ্ত রচনায় বাকি সবার দৃষ্টি কেড়েছেন। মনজুরে মওলা রবীন্দ্রবীক্ষায় রেখেছেন বিশেষ অবদান। মোফাজ্জল করিম ছিলেন আমাদের জ্যেষ্ঠদের মধ্যে একজন। পরবর্তীকালের হায়াৎ সাইফ তখনই স্বাক্ষরের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং সমকালে তাঁর লেখা বেরোয়। জিয়াউদ্দিন মুহাম্মদ চৌধুরী ইংরেজিতে চমৎকার কলাম লিখেছেন একসময়। নিয়াজ আলী অত্যন্ত প্রশংসনীয় গবেষণামূলক লেখা ইংরেজিতে লিখেছেন আমাদের সংস্কৃতির ওপর। রাজা আলী চমৎকার 888sport app download apk লিখতেন ইংরেজিতে। এখন প্রবাসী আমেরিকায়। আমাদের সময়ে যাঁরা সতীর্থ ছিলেন তাঁরা সবাই পরবর্তীকালে জীবনের বিভিন্ন অঙ্গনে নানাভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। সাম্প্রতিককালে অসাধারণ 888sport app download apk latest version করছেন শাহরুখ রহমান।
বাংলা বিভাগে যাঁদের কথা বলেছি তাঁরা নিজের শক্তিতে বাংলা 888sport live footballের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। এঁদের মধ্যে যেমন ছিলেন রশীদ হায়দার, তেমনি ছিলেন আমাদের সমসাময়িক রফিক আজাদ, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, আসাদ চৌধুরী, আবদুল মান্নান সৈয়দ, মোহাম্মদ রফিক ও হায়াৎ মামুদ। এঁরাসহ আরো অনেকেই আজকে বাংলা 888sport live footballে পরিচিত নাম। আমাদের শিক্ষকদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম নজরুল-গবেষণায় সুপ্রতিষ্ঠিত নাম। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী তাঁর আপন মহিমায় আমাদের 888sport live 888sport live footballে প্রোজ্জ্বল। সে-সময় তিনি পরিক্রম সম্পাদনা করেছেন, যেখানে আমরা অনেকেই লিখে নিজেদের ধন্য মনে করেছি। ড. খান সারওয়ার মুরশিদ ইংরেজি ও বাংলায় আলোচনা ও সম্পাদনা করে আমাদের সুষ্ঠু 888sport live footballিক রুচি যেমন নির্মাণ করেছেন তেমনি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন ভবিষ্যতের, 888sport live footballিকদের। তিনি যে ঘবি ঠধষঁবং সম্পাদনা করতেন তাতে লেখা প্রকাশিত হওয়াও ছিল গৌরবের বিষয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী ছিলেন ইংরেজির প্রধান আর বাংলায় ছিলেন মুস্তফা নূরউল ইসলাম। এঁদের যুগ্ম-সম্পাদনায় বের হতো রীতিমতো অভিজাত 888sport live footballপত্রিকা পূর্বমেঘ। ড. মাজহারুল ইসলাম ষাটের দশকের শেষের দিকে বের করলেন উত্তর অন্বেষা, রাজশাহী থেকে। এমনসব প্রখ্যাত ও যোগ্য শিক্ষকের সাহচর্যে ও শিক্ষকতায় আমাদের 888sport live football-সংস্কৃতির রুচি ও 888sport live chat-888sport live footballের বিচার-ক্ষমতা একটি চমৎকার প্রমিত স্তরে উপনীত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের 888sport app বিভাগে আমাদের সময়ে প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক, ড. জি সি দেব, রেহমান সোবহানের মতো বিখ্যাত ও বরেণ্য মানুষেরা ছিলেন, তেমনি ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন অর্থনীতিতে আবু আহমেদ আবদুল্লাহ – যাঁর মতো প্রতিভাবান ছাত্র আমার জীবনে অন্তত আর দেখিনি, যিনি তখনই একাধিক ইউরোপীয় ভাষায় লিখতে ও বলতে পারতেন। এঁদের 888sport live footballে পঠন-পাঠন, বিশেষত ইংরেজি 888sport live footballে, রীতিমতো ঈর্ষণীয় ছিল। অর্থনীতিতে ছিলেন সৈয়দ আবদুস সামাদ, যাঁর ছোটগল্প এবং 888sport app download apkয় চমৎকার হাত ছিল; রাষ্ট্র888sport apk বিভাগে ছিলেন মিজানুর রহমান শেলী, যিনি একটি 888sport alternative link এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক 888sport app download apk তখনই লিখেছেন, এটি তাঁর নিজের মননধর্মী কাজের অতিরিক্ত। অর্থনীতিতে ছিলেন তরুণ তৌফিক এলাহী চৌধুরী, শাহ মোহাম্মদ ফরিদ ও কামাল সিদ্দিকী – পরবর্তীকালে প্রশাসনিক উচ্চপদ ছাড়াও গবেষণাকাজ তাঁদের বিখ্যাত করেছে। পদার্থ888sport apkে ছিলেন সৈয়দ তারেক আলী, আরেকজন প্রতিভাবান ছাত্র, যাঁর ইংরেজিতে পঠন-পাঠন ছিল ঈর্ষণীয়, ভূগোলের ছাত্র ছিলেন এজাজুল হক (এমরান, এখন আর আমাদের মধ্যে নেই), কিন্তু চমৎকার 888sport live footballিক রুচি ছিল তাঁর। বাচনে যেমন তুখোড় তেমনি রচনা করতে পারতেন প্রোজ্জ্বল পঙ্ক্তিমালা। আবদুল্লাহ তাঁর গবেষণা-কর্মের বাইরে সৃষ্টিশীল রচনায় অনবদ্য কিছু 888sport app download apk লিখেছেন। পরবর্তীকালে এপিঠ ওপিঠ প্রকাশিত হয়েছে হায়াৎ সাইফের সঙ্গে যুগলবন্দি হয়ে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন বাংলা বিভাগে ছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, ড. মযহারুল ইসলাম, মুস্তফা নূরউল ইসলাম প্রমুখ। ইংরেজিতে ছিলেন আলী আনোয়ার ও জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী। জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী ও মুস্তফা নূরউল ইসলামের যৌথ সম্পাদনায় রাজশাহী থেকে প্রকাশিত হতো অত্যন্ত সমৃদ্ধ, সুচারু, কিছুটা অভিজাত 888sport live footballসৌকর্যে ঈর্ষণীয়ভাবে সুন্দর সাময়িকী পূর্বমেঘ। হাসান আজিজুল হক প্রধানত এই পত্রিকার লেখক ছিলেন। এতে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গল্প প্রকাশিত হয়েছে আবদুশ শাকুরের। এতে হায়াৎ সাইফ করেছেন পুস্তক-সমালোচনা এবং বেরিয়েছে তাঁর বেশকিছু 888sport app download apk। সনৎকুমার সাহাও প্রধানত এই সাময়িকীরই লেখক। শেষেরদিকে হায়াৎ মামুদ এতে লিখেছেন কি? মুনীর চৌধুরী, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, ড. খান সারওয়ার মুরশিদ ও জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা প্রমুখ বিরল 888sport live footballরুচির শিক্ষকেরা আমাদের 888sport live football-সংস্কৃতির একটি বিশুদ্ধ মান নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমরা ষাটের দশকের শুরুতে এসে ও তার মধ্যপর্যায়ে যারা 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে 888sport live football ও সংস্কৃতিচর্চার সঙ্গে জড়িত ছিলাম, তারা একটি পরাক্রান্ত সময়ের মধ্যে হঠাৎ করে জেগে উঠেছিলাম এক নিরঙ্কুশ সামাজিক পচনের প্রেক্ষাপটে। আমরা এমন একটি সমাজে নিমজ্জমান ছিলাম, যে-সমাজ ছিল মৃত্তিকা-বিচ্ছিন্ন অনিকেত, যেখানে রাজনীতি ছিল আপন যৌবনে বৈরী, যেখানে জনগোষ্ঠী হিসেবে আমাদের আত্মপরিচয়কে নির্মম ও নির্লজ্জভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এই অসহনীয় প্রেক্ষাপটে আমরা যেমন ব্যক্তির মধ্যে বিবরবাসী হয়েছি, তেমনি এক অনমনীয় ও অপ্রমেয় বিশুদ্ধ 888sport live footballচর্চায় নিজেদেরকে নিয়োজিত করেছিলাম, যা প্রাতিষ্ঠানিক গতানুগতিক শুচিবায়ুগ্রস্ত ও সে-কারণে নির্জীব-নির্বীজ সময়কে প্রশ্নে প্রশ্নে বিদ্ধ করে প্রচণ্ড চপেটাঘাতে অপমানিত করতে চেয়েছে। আমাদের সন্ত্রস্ত রাগী, অসন্তুষ্ট, রুষ্ট উন্মাদনায় আমরা যেমন একদিকে সামাজিক স্থবিরতার অবক্ষয়ের ও নেতির মধ্যে সমর্পিত হয়েছি, তেমনি অন্যদিকে একটি অনেকান্ত স্বপ্নের মধ্যে জেগে উঠতে চেয়েছি বিশুদ্ধ সুন্দরের ঐকান্তিক আরাধনায়। এই সমস্ত উদ্গ্রীবতার অনুষঙ্গ নানাবর্ণে বিধৃত হয়েছিল আমাদের তৎকালীন বিপুলসংখ্যক 888sport live footballপত্রিকা বা লিট্ল ম্যাগাজিনগুলোতে। সমকাল ও পূর্বমেঘের মতো প্রতিষ্ঠিত পত্রিকাগুলো একটি চমৎকার 888sport live footballিক মানদণ্ড নির্মাণ করে দিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু আমাদের প্রজন্মকে একটি অভেদ্য শক্তির প্রবাহ তাকে তার নিজের মতো চলতে প্রণোদিত করেছে। তখন পঞ্চাশের দশকের তুলনায় অপেক্ষাকৃত নবীন এনামুল হকের উত্তরণ পত্রিকা বেরিয়ে গেছে। জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত ও হায়াৎ মামুদ বের করেছিলেন কালবেলা। সপ্তক বলে একটি ভালো লিট্ল ম্যাগাজিন বেরিয়েছিল। জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত বের করতেন পরিচয়। রাজশাহী থেকে কিছু পরেই বেরিয়েছিল মোহসিন রেজার সম্পাদনায় অনিকেতমল্লার, মযহারুল ইসলামের সম্পাদনায় উত্তর অন্বেষা। এইসব সাময়িকীর মাধ্যমে তখন আমাদের মধ্যবিত্ত-সমাজ তাদের নান্দনিক চেতনাকে নানাভাবে প্রকাশিত করতে উদ্যোগী হয়েছে। ঠিক সেই সময়ে আমাদের প্রজন্মের আবির্ভাব।
আমার মনে হয় তৎকালীন সামাজিক বিনষ্টি ও নেতি যেমন আমাদেরকে বিদ্ধ করেছে, তেমনি একই সঙ্গে অনুপ্রাণিত করেছে 888sport live footballের শুদ্ধতম পরিশীলনের মধ্য দিয়ে এক উজ্জ্বল উদ্ধারের দিকে অগ্রসর হতে। সেই উজ্জ্বল উদ্ধার রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে ষাটের দশকের শেষের দিকে আমাদেরকে স্বাধীনতার দিকে ধাবিত করেছে। এর একটি প্রধান কারণ কিন্তু ওই মধ্যবিত্ত-সমাজের উন্মেষ ও তার তৎকালীন পরিণতির পর্যায়, যা খুব কম সময়ে আমাদের চৈতন্যে এক ধরনের জাগরণ সৃষ্টি করেছিল, যে-জাগরণ সংঘটিত হয়েছে কলকাতাকেন্দ্রিক ভদ্রলোক-সংস্কৃতির তুলনায় অনেক সামান্য সময়ের পরিসরে।
এই সময়ে অর্থাৎ ষাটের দশকের প্রথম পর্যায়েই এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটল। স্বাক্ষর প্রকাশিত হলো ১৯৬৩-তে। স্বাক্ষরের প্রধান পুরুষ ছিলেন রফিক আজাদ এবং এই পত্রিকাটি প্রকাশ করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন তিনিই। প্রথম 888sport free betটি সম্পাদনা করেন রফিক আজাদ ও সিকদার আমিনুল হক। স্বাক্ষরকে কেন্দ্র করে মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু করে সর্বত্র আমরা একত্রিত হয়েছিলাম এবং এই একত্রিকরণের প্রায় সবটুকু কৃতিত্বই রফিকের। এতে লিখেছেন সিকদার আমিনুল হক, রফিক আজাদ, অশোক সৈয়দ (আবদুল মান্নান সৈয়দ), ইমরুল চৌধুরী, আবদুল্লা আবু সায়ীদ, শহীদুর রহমান, আসাদ চৌধুরী, সফিকুল আলম, আফজাল চৌধুরী, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, হায়াৎ মামুদ, শাহজাহান হাফিজ, মোহাম্মদ রফিক, হায়াৎ সাইফ, মাহবুব সাদিক (মুস্তফা নূরউল আমিন), ফরহাদ মাজহার প্রমুখ। এই স্বাক্ষরেই বিজ্ঞাপন বেরিয়েছিল কণ্ঠস্বর (888sport app download apk-পত্রিকা), শব্দরূপ (গল্প-পত্রিকা), বক্তব্য (সমালোচনা-পত্রিকা), সূচীপত্র – এইসব পরবর্তীকালের বাস্তবায়িত বা অবাস্তবায়িত পত্রিকার। স্বাক্ষর তৎকালীন অনড় প্রাতিষ্ঠানিকতাকে একটি বড়রকমের ঝাঁকুনি দিয়েছিল। স্বাক্ষরের চতুর্থ ও সর্বশেষ 888sport free bet বেরিয়েছিল ১৯৬৭ সালে, আর এই চারটি 888sport free betতেই এই পত্রিকাটি আমাদের 888sport app download apkর ক্ষেত্রে একটি নতুন পথ-চলার সূচনা করেছিল। সেই পথটিকে পাকা করে গড়া হলো পরবর্তী এগারো বছর ধরে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের সম্পাদনায় কণ্ঠস্বর দিয়ে। কণ্ঠস্বর প্রথম বেরিয়েছিল ১৯৬৫ সালে, যখন আমরা 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌহদ্দি পেরিয়ে যাচ্ছি।
আমাদের কিছু বড় আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ছিলেন কণ্ঠস্বরের প্রাণপুরুষ। তাঁর অবশ্যবাহন সাইকেলে চড়ে তিনি কেবল যে লেখাগুলো সংগ্রহ করতেন তাই নয়, তিনি সম্পাদনা করতেন পত্রিকাটি এবং চরম বিড়ম্বনার মধ্য দিয়ে তার দীর্ঘদিন প্রাণপ্রতিষ্ঠা করে রেখেছিলেন। আমার ধারণা, সমকালের মতো কণ্ঠস্বরও আমাদের বর্তমানকালের 888sport live footballের প্রকৃতিসৃষ্টিতে পথিকৃতের কাজ করেছে। স্বাধীনতা-পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে কণ্ঠস্বর একটি মহৎ 888sport live footballিক দায়িত্ব পালন করেছে এবং তা হলো ষাটের ও সত্তরের দশকের কাব্যধারাকে একটি পরিপূর্ণ পাত্রে ধারণ করা।
আমার সঙ্গে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের পরিচয় সম্ভবত রাজশাহী কলেজের শূন্য টেনিস লনের দর্শক-বেঞ্চিতে বসে ১৯৬২ বা ৬৩-এর কোনো শীতের বিকেলে তৎকালীন বিশ্ব888sport live football ও বিশেষত বাংলা 888sport app download apk-বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনার মধ্য দিয়ে। আমার সঙ্গে সম্ভবত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার ছাত্র হাসানুজ্জামান ছিলেন। ১৯৬১-তে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজ বিভাগে ভর্তি হই, কিন্তু পিতৃদেব থাকেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহারে। ছুটিতে রাজশাহীতে যাওয়া এবং রাজশাহীর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে শরিক হওয়া স্বাভাবিক ছিল আমার জন্যে। সেখানেই হাফিজ ভাই (অধ্যাপক আবদুল হাফিজ), নূরুল আরিফিন (নূরউল ইসলাম সন্তু) – এঁদের সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠেছিল। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের সঙ্গে 888sport live football-বিষয়ে আলোচনা আমার জন্যে রীতিমতো রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা ছিল তখন। তারপর বিভিন্ন সময়ে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে। বিশেষত 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে মধুর ক্যান্টিন ও পাবলিক লাইব্রেরির চত্বরে যখন আমরা স্বাক্ষর বের করি। তখন স্বাক্ষরের সঙ্গে আমার নিবিড় সম্পর্ক ছিল, কণ্ঠস্বরের সঙ্গে তেমন না হলেও সেখানেও আমার লেখা বেরিয়েছে। ১৯৬৫ সালের পরে কিছুকালের জন্যে লেখালেখি থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি জীবনের নানাবিধ অত্যাচারে। আমার 888sport app download apk প্রথম প্রকাশিত হয় সমকাল পত্রিকায়, ১৯৬২ সালে। আমি এস এম হলে থাকতাম। বন্ধুদের মধ্যে মাহবুব জামিল হলের বাইরে থাকলেও অধিকাংশ সময় তিনি আমাদের হলে সময় কাটাতেন। তাঁর সঙ্গে থাকতেন সমাজ888sport apkের আরো দুজন, আহমদুজ্জামান চৌধুরী ও খালেদ ইউসুফ। আহমদুজ্জামান চৌধুরী ও মাহবুব জামিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আদ্যোপান্ত জড়িত ছিলেন। বিশেষত মাহবুব জামিল ছাত্রদের ওয়ার্কক্যাম্প থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মযোগী হিসেবে ব্যাপৃত থাকতেন। তারুণ্যের উচ্ছ্বাস আমাদের সকলের মধ্যে থাকলেও ওকে অনেক বেশি পরিণত ও বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন মনে হতো। কর্মযোগী হিসেবে পরবর্তীকালে তার সাফল্য ও প্রতিষ্ঠা তার সেইসব প্রোজ্জ্বল গুণাবলিরই যথার্থ বিকাশের ফল। সদাহাস্য মাহবুব জামিল একদিন হলে এসে আমার গোটাদুয়েক 888sport app download apk নিয়ে গেলেন। কয়েকদিন পরে জানালেন যে, সমকালের সম্পাদক সিকান্দার ভাই অর্থাৎ সিকান্দার আবু জাফর আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত জামিলের পেছনে গুটিসুটি হয়ে সিকান্দার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। সেখানে তখন হাসান হাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এই 888sport app download apk দুটো যখন জামিল নিয়ে যায় তখন আমার অকবিসুলভ নামটিকে কীভাবে সংস্কার করা যায়, সে-সম্পর্কে এস এম হলে আমাদের কক্ষে আলোচনা হয় এবং আহমদুজ্জামান চৌধুরী আমার নামের অপ্রচলিত অংশ (আবুল হায়াৎ মোহাম্মদ) ও প্রচলিত অংশ (সাইফুল ইসলাম) কেটে-ছেঁটে হায়াৎ সাইফ নামটি উদ্ধার করেন। ওই নামেই 888sport app download apkদুটো ছাপা হয় সমকালে। সে-সময় সম্ভবত মাহবুব জামিল, আহমদুজ্জামান চৌধুরী ছাড়াও বন্ধুবর রাজিউল হাসান (রঞ্জু) ও খালেদ ইউসুফ উপস্থিত ছিলেন।
প্রাতিষ্ঠানিকতার বিরুদ্ধে আমাদের যে-যুদ্ধ তা যখন স্বাক্ষরের মতো পত্রিকার মাধ্যমে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেছে তখন আরেকদিকে কিছুটা প্রাতিষ্ঠানিক হলেও নানারকমের 888sport live footballিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরকে মুহুর্মুহু আলোড়িত করছে। বলাবাহুল্য সে-সময়ে আমরা আয়ুবি আমলের দোর্দণ্ড প্রতাপের মধ্যে বসবাস করি। আন্দোলনে-আন্দোলনে ফেটে পড়ছি আমরা বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে – শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট, রবীন্দ্রসংগীত বন্ধ করা ইত্যাদি। তারই সমান্তরালে আবার দেখা যায় যে, বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট হয়ে বেশকিছু অর্থাগম হচ্ছে সমাজের কোনো কোনো ফোকরে। বিশ্ববিদ্যালয়েও উন্নয়নের কাজ চলছে। নির্মিত হচ্ছে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র। প্রাথমিকভাবে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রটি চালু হয় কার্জন হলের দোতলার একাংশে। সেখান থেকেই ১৯৬৩-এর নভেম্বরে বেরুল সংযোগের প্রথম 888sport free bet, ত্রৈমাসিক বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদপত্রিকা। সম্পাদক মাহবুব জামিল, সহযোগী সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খান এবং উপদেষ্টা ড. আনিসুজ্জামান। এটি মুদ্রিত হয় সমকাল-মুদ্রায়ন থেকে, প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন প্রাণেশ মণ্ডল। আমি নামেমাত্র সহযোগী হলেও সব কাজই করতেন কর্মযোগী মাহবুব জামিল। সংযোগ নামটি আমি ঠিক করে দিয়েছিলাম, বাকি কাজ সবই জামিলের। প্রথম 888sport free betর সম্পাদকীয় থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি :
আপনাদের কাছে উপস্থিত করছি একটি সংবাদ পত্রিকা যা আমাদের নিজস্ব, আমাদের আপন সংবাদ ও তথ্যে পূর্ণ। ‘আমরা’ 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অনেক সংবাদের, অনেক ঘটনার সৃষ্টি করি। তা’ শুধু ক্ষণিকের বুদবুদ তুলে ক্ষান্ত হয় না – এর সুদূরপ্রসারী রূপ আছে, এর একটা স্থায়ী মূল্য রয়েছে। আমাদের আমতলা আছে। দেশের বিভিন্ন সমস্যার আলোচনায় তাই আমরা তৎপর – ফলে সংবাদের জন্ম।
আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। আমরা নাটক মঞ্চস্থ করি, নাট্যান্দোলনকে সবেগ করি। আমরা সংগীতানুষ্ঠান করি, তাই অনেক নতুন 888sport live chatীর জন্ম হয়, পূর্ব-পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলকে ব্যাপ্ত করার প্রয়াস হয়। আমরা 888sport live footballচর্চা করি, তাই 888sport live footballিকের জন্ম হয়। আমাদের মধ্য থেকে গল্পকার, ঔপন্যাসিক, কবি, 888sport liveকার সবই আমরা দিয়েছি বাংলা 888sport live footballকে।
আরো বলা হয়েছে : ‘আমাদের ‘মধুর’ রেস্তোঁরা রয়েছে। আমরা তাই আড্ডা দিই – নিরবচ্ছিন্ন, ক্লান্তিহীন। আড্ডা কি শুধুই আড্ডা? না, আমরা মনে করি তার মধ্যে দিয়েই প্রকাশিত হয় আমাদের জীবনযন্ত্রণা, জীবনভাবনা।’
প্রথম 888sport free betতে তৎকালীন 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। যেমন, তখনকার ছটি ছাত্রাবাসের মোট আবাসিক ছাত্র888sport free bet ছিল ১,৮০০ জন, যার মধ্যে আবাসিক ছাত্রীর 888sport free bet ছিল ১৫০ জন। তখন বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে পুস্তকের মোট 888sport free bet ছিল ১,৮৫,০০০টি। আমরা জানতে পারি যে, তখন প্রতিটি হলে সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদযাপিত হতো। এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ও বৌদ্ধিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। বাংলা বিভাগের উদ্যোগে যে উল্লেখযোগ্য ‘বাংলা ভাষা ও 888sport live football সপ্তাহ’ উদযাপিত হয় ২২-২৮ মে ’৬৩-তে, তার উল্লেখও পাচ্ছি। প্রথম 888sport free betতেই বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক 888sport live footballচর্চা-বিষয়ে যে-বিবেচনাটি রয়েছে তাতে স্বাক্ষর, বহুব্রীহি ও নতুন বাঁক সম্পর্কে আলোচনা বাদ পড়েনি।
ওই সময়ে বিভিন্ন হলের মঞ্চে নাটকগুলো মঞ্চায়িত হতো, তাতে মহিলা-চরিত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের অংশগ্রহণ সহজ ছিল না। ১৯৬৪-তে ডাকসু আলাউদ্দীন আল আজাদের মায়াবী প্রহর মঞ্চায়িত করে। এ বিষয়ে যা উল্লিখিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদে তা ছিল : ‘এই নাটকের প্রতিটি মহিলা-চরিত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা অংশ নিয়েছেন।’
১৯৬৪ সালের ১১ ও ১২ই জানুয়ারি বাংলা একাডেমী মিলনায়তনে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কৃষ্ণকুমারী নাটক মঞ্চস্থ করে ছাত্র-শিক্ষক নাট্যগোষ্ঠী। নাটকটি সম্পাদনা করেছিলেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, প্রযোজনা করেন রামেন্দু মজুমদার এবং মঞ্চ-পরিকল্পনা করেন আহমদুজ্জামান চৌধুরী। ধর্মদাসের ভূমিকায় অভিনয় করেন রামেন্দু মজুমদার। সেই সময়ের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের কিছু কিছু স্পষ্ট মনে পড়ে। ’৬৪ সালের ৬ জুন বাংলা বিভাগে বেশ ঘটা করে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদযাপিত হয় এবং সেই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছিলেন দিলীপ দত্ত। ওই বছর ১৯ ও ২০ জুন সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে তিন দিনব্যাপী এক সাংস্কৃতিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এই অধিবেশনটি ছিল ‘সঙ্গীত ও সমীক্ষা’ শীর্ষক। প্রথমদিনে হয় নজরুল ও রবীন্দ্রনাথ-বিষয়ে আলোচনা, রচনাপাঠ ও গানের আসর। আলোচনায় ছিলেন ড. জি সি দেব ও আবু জাফর শামসুদ্দীন। দ্বিতীয় দিনে শেক্সপিয়রের ওপর আলোচনা করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বাংলায় শেক্সপিয়র-888sport app download apk latest versionের বিষয়ে অপূর্ব বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা করেছিলেন। আবৃত্তি করেছিলেন আবু আহমেদ আবদুল্লাহ, তারেক আলী, রাজা আলী ও সাইফুল ইসলাম খান (হায়াৎ সাইফ)। সভাগুলো সামগ্রিকভাবে পরিচালনা করেন হল ইউনিয়নের 888sport live football-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খান।
ছাত্র-শিক্ষক সংগীতগোষ্ঠীও উচ্চকিত হয়ে উঠেছিল ১৯৬৩-তে তাদের প্রথম অনুষ্ঠান ‘বৃষ্টি এলো’ সংগীত মঞ্চস্থ করে। অনুষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয়। নকশাটি রচনা করেন সাইফুল ইসলাম খান। পরিচালনা করেন অধ্যাপক আবু হেনা মোস্তফা কামাল। তত্ত্বাবধানে ছিলেন আগা কোহিনূর আলম ও মাহবুব জামিল। এই সময়েই এই গোষ্ঠী মলুয়া গীতিনাট্য মঞ্চস্থ করে বিপুল প্রশংসা অর্জন করে। তত্ত্বাবধানে ছিলেন আগা কোহিনূর আলম ও মাহবুব জামিল। ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সে-সময় নতুন শুরু হলেও বেশকিছু সাংস্কৃতিক কাজ সম্পাদন করেছিল।
সেদিনের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কর্মোদ্যমে একদিকে মাহবুব জামিল বা রামেন্দু মজুমদারের মতো কর্মবীরের উপস্থিতি যেমন ছিল, তেমনি আমার মতো হতোদ্যম ভাবপ্রবণ বাস্তববুদ্ধি-বিবর্জিত ভাঙাচোরা ছাত্র দুই-একজন কেমন করে যেন জড়িয়ে পড়েছিলাম। সংযোগের চতুর্থ 888sport free betয় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি ছিল এইরকম – ‘ছাত্র-শিক্ষক 888sport live footballগোষ্ঠী যদিও খুব একটা তৎপরতা দেখাতে পারেনি তবুও একেবারে আড়ষ্টতাও এর বিশেষত্ব নয়। এই গোষ্ঠী একটি বার্ষিক 888sport live footballপত্রিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক জনাব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এই 888sport live footballপত্রিকার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। সাইফুল ইসলাম খান সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন। এই পত্রিকা প্রকাশিত করবার চেষ্টা নেওয়া হচ্ছে।’ শেষ পর্যন্ত ১৯৬৫-তে সংযোগের 888sport live football 888sport free betটি প্রকাশিত হয়েছিল। এতে যাঁরা লিখেছিলেন তাঁরা হচ্ছেন, ১. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক বাংলা বিভাগ, ২. আসকার ইবনে শাইখ, অধ্যাপক 888sport free betতত্ত্ব বিভাগ, ৩. মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক বাংলা বিভাগ, ৪. সৈয়দ মুর্তজা আলী, সাবেক কোষাধ্যক্ষ, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়, ৫. ফৌজিয়া খান, দ্বিতীয় পর্ব এম এসসি পদার্থ 888sport apk, ৬. জিনাত আরা মালিক, তৃতীয় বর্ষ অনার্স, বাংলা বিভাগ, ৭. হুমায়ুন খান, বাংলা 888sport live footballে এম এ পরীক্ষার্থী, ৮. প্রশান্ত ঘোষাল, দ্বিতীয় পর্ব, এম এ বাংলা বিভাগ, ৯. ইমরুল চৌধুরী, দর্শনে এম এ পরীক্ষার্থী, ১০. হুমায়ুন আজাদ, দ্বিতীয় বর্ষ অনার্স, বাংলা বিভাগ, ১১. আবদুল মোমেন, দ্বিতীয় পর্ব এম এ, রাষ্ট্র888sport apk বিভাগ, ১২. খন্দকার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, তৃতীয় বর্ষ বি এ, অনার্স, ইংরেজি বিভাগ, ১৩. রশীদ হায়দার, বাংলা 888sport live footballে এম এ পরীক্ষার্থী, ১৪. জিয়া আনসারী, বাংলা 888sport live footballে এম এ পরীক্ষার্থী ও ১৫. মাহবুব জামিল, সমাজতত্ত্বে এম এ পরীক্ষার্থী। তখন প্রতিটি হলে 888sport live football ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদযাপিত তো হতোই, একটি হল থেকে বেরুত অন্ততপক্ষে একটি বার্ষিক সংকলন। সংযোগের একটি 888sport free betয় আহমদুজ্জামান চৌধুরী লিখেছেন – সলিমুল্লাহ মুসলিম হল 888sport live football সঙ্কলন সম্পর্কে, ‘গল্প, 888sport live, ‘আধুনিক’ 888sport app download apk ও ব্যক্তিগত 888sport liveের সমন্বয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল বার্ষিকী একটি সুন্দর 888sport live football সংকলন। সৈয়দ শামসুল হক ও গোলাম সারওয়ারের গল্প, শামসুর রাহমানের 888sport app download apk এবং হাসান হাফিজুর রহমানের 888sport live পাঠকালে সহজেই আনন্দ দেবে, এ-কথা নির্দ্বিধায়ই বলা যায়। হায়াৎ সাইফ, ইমরুল চৌধুরী ও জিয়া আনসারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিশ্রুতিশীল লেখকত্রয়। সলিমুল্লাহ হলের ইংরেজি বার্ষিকীও আমাদের আনন্দিত করে, আনন্দিত হওয়ার একাধিক কারণ রয়েছে প্রথমত রচনাবৈচিত্র্য, দ্বিতীয়ত সুষ্ঠু প্রকাশনা ও সম্পাদনা। জহিরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম খান, আবু আহমেদ আবদুল্লাহ ও রাজা আলীর রচনার স্বাদ সহজে ভোলা যায় না।’
সেদিনের আমতলা, মধুর ক্যান্টিন, আবাসিক হলগুলো, বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি, ব্রিটিশ কাউন্সিল নিয়ে নীলক্ষেত থেকে রমনা হয়ে আজকের মেডিক্যাল কলেজের প্রান্ত পর্যন্ত আমাদের পাঁচ বছরের ছাত্রত্ব এক অনির্বচনীয় সময়ে আমাদেরকে জাগিয়ে তুলেছিল। সেটি ভুলবার নয়।
চৌষট্টির ডিসেম্বর মাসে 888sport appর টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু হলো বর্তমান রাজউক ভবনের বামদিকের নিচের তলা থেকে। আমরা প্রথম স্টুডেন্টস ফোরাম অনুষ্ঠান করলাম। স্ক্রিপ্ট লিখেছিলাম আমি, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরীর নির্দেশনায়। আমাদের তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আমাদের যে-জীবন তারই কিছু কিছু জীবন্ত ছবি আমরা সেখানে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছিলাম। যেমন মধুর ক্যান্টিনে আড্ডার দৃশ্য ও শব্দাবলি, আমতলার তুমুল বক্তৃতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা, হলের নির্বাচনী প্রচারণা – সবকিছু মিলিয়ে আমাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের একটি প্রতিবিম্ব। অংশ নিয়েছিলেন রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী (এখন মজুমদার), সাইফুল ইসলাম খান, আবু আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ আল মামুন, ইফতেখার আহমেদ (টুকু, এখন ড. ও আইএলও-র বিশাল কর্মকর্তা), রশীদ হায়দার, জিয়া আনসারী ও আরো বেশ কয়েকজন, যাদের কথা এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না। তখন এই অনুষ্ঠানটি ধরে রাখার ব্যবস্থা ছিল না বলে আজ হয়তো তার কিছুই আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। জানি না টিভির আর্কাইভে আজ তা আছে কিনা। থাকলে সেই সময়ের বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনের একটি জীবন্ত চিত্র আমরা দেখতে পেতাম। এই অনুষ্ঠানে মুনীর চৌধুরী নিজেও অংশ নিয়েছিলেন পুস্তক-সমালোচনায়। অনুষ্ঠানটি আজকে আর্কাইভে থাকলে মুনীর চৌধুরীর অননুকরণীয় বাচনভঙ্গি ও উপস্থাপনার অনবদ্য চিত্র থাকত আজকের প্রজন্মের জন্যে।
অগ্রজদের মধ্যে যেমন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের তীব্র, তীক্ষè শক্তিমান উপস্থিতি ছিল আমাদের নতুন মাত্রার নতুন কালের ষাটের দশকের 888sport live footballাদর্শ নির্মাণের ক্ষেত্রে, তেমনি আমাদের বন্ধুদের মধ্যে উদ্যোগী ও তৎপর ছিলেন রফিক আজাদ, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, রশীদ হায়দার, আবদুল মান্নান সৈয়দ, আসাদ চৌধুরী, সিকদার আমিনুল হক, হুমায়ুন চৌধুরী, আবদুশ শাকুর, মনজুরে মওলা, সৈয়দ আবদুস সামাদ, হায়াৎ মামুদ, ইমরুল চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম বেদু, আফজাল চৌধুরী, প্রশান্ত ঘোষাল, জাকারিয়া সিরাজী, মোহাম্মদ রফিক, হায়াৎ সাইফ, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, সেবাব্রত চৌধুরী, শাহজাহান হাফিজ, শহীদুর রহমান, আবদুল্লাহ আল মামুন, মিজানুর রহমান শেলী, হুমায়ুন খান, জিয়া আনসারী, জিনাত আরা মালিক প্রমুখ। কালানুক্রম অনুসৃত হলো না, নামগুলো যখন যেভাবে মনে এসেছে বললাম। সেই সময়ে যাঁরা 888sport live footballকর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের নিয়োজিত করেছিলেন, তাঁদের সকলের সেই সম্মিলিত কর্মে সেদিন যে-আবহ নির্মিত হয়েছিল তাই পরবর্তীকালের 888sport live footballে সংস্কৃতি-নির্মাণের পথ রচনা করেছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মে রশীদ হায়দার, রামেন্দু মজুমদার, দিলীপ দত্ত, আমিনুল ইসলাম বেদু, আহমদুজ্জামান চৌধুরী, আগা কোহিনূর আলম এঁদের প্রবল উপস্থিতি সুস্পষ্ট ছিল।
সে এক উত্তাল আরাধনার কাল, সমাজের বিনষ্টির, পচনের, স্বৈরতন্ত্রের কণ্ঠরোধের, আর তারই বিপ্রতীপে সংগ্রামের, উদ্যমের, স্বপ্নের, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে নবতর নান্দনিক অবয়বরচনার, আত্মশক্তিতে উদ্বুদ্ধ হবার, চিত্তবৃত্তির দীনতার, একমাত্রিকতার, শুচিবায়ুগ্রস্তদের উৎখাতের কাল, পুরনোকে ঝেড়ে ফেলে দেওয়ার কাল, শিরদাঁড়া শক্ত করে আত্মমর্যাদাবোধে সোজা হয়ে দাঁড়াবার সময়। সে-সময় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পড়তেই পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছি। রেডিওতে কাজ করেছি এবং ’৬৪-৬৫-তে টিভিতে অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। তখনই রশীদ হায়দার সাপ্তাহিক চিত্রালী ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পত্রিকা বই সম্পাদনার কাজ করতেন। রফিক আজাদ কাব্যনির্মাণের ও কাব্য-আন্দোলনের উদ্দীপনায় ঠেলে নিয়ে যেতেন আমাদের সকলকে। অগ্রজ কবি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সে-সময়ে একটি অপরূপ কল্পনার মধ্যে আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে যেতেন। আমাদের অব্যবহিত আগে পঞ্চাশের দশকে যাঁদের আবির্ভাব তাঁদেরও পরিণতির কাল ষাটের দশকের মধ্যবিন্দুতে। প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগের প্রকাশ ১৯৬১-তে। তারপর থেকে অনবরত বেরিয়ে এসেছে শামসুর রাহমানের রৌদ্র করোটিতে, বিধ্বস্ত নীলিমা, আল মাহমুদের কালের কলস এবং শহীদ কাদরীর উত্তরাধিকার। কেবল 888sport app download apkয়ই নয়, শওকত আলী, সৈয়দ শামসুল হক, রশীদ করীম, হাসান আজিজুল হক, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস – এঁদের হয় পরিণতি না হয় উন্মেষ ও পরিণতির কাল ছিল ষাটের দশক। আমাদের জাতিসত্তার পরিশীলন ও পরিণতির কালও তখনই। আমাদের অব্যবহিত আগের যাঁরা তাঁরাও আমাদের সঙ্গেই একটি সৃষ্টিশীল বাতাবরণে নূতন করে জেগে উঠেছিলেন মধ্যষাটের 888sport appয়। এবং আমরা প্রধানত বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে এক সংগ্রামী, সংক্রামী নবজাগরণের উন্মাদনার বাত্যাতাড়িত উত্তুঙ্গ তরঙ্গে উৎক্ষিপ্ত হয়েছিলাম। পঁয়ষট্টিতে আমরা ছিলাম ষাটের দশকের একেবারে মধ্যবিন্দুতে, নতুন কালের উন্মেষ আমাদের ভেতর দিয়ে রূপপরিগ্রহ করেছিল। আমরা ছিলাম এক সমূহ বিবর্তনের মধ্যবিন্দুতে, ঝড়ের কেন্দ্রে।
আজ জীবনের উত্তীর্ণ ষাটে যখন প্রৌঢ়ত্ব বার্ধক্যের দিকে এগিয়ে চলেছে গুটিসুটি, তখন আমার অর্জনহীন, ছেঁড়াখোঁড়া জীবনের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে অন্তত এটুকু আনন্দ যে, আমি একসময় আমাদের অত্যুজ্জ্বল সতীর্থদের সঙ্গে এক অনন্য ক্রান্তিলগ্নে আমাদের জাতিসত্তার নবোন্মেষের মাহেন্দ্রক্ষণে তাঁদের সহযাত্রী ছিলাম। 888sport live footballে-সংস্কৃতিতে আমরা সেদিন আমাদের আত্মস্বরূপকে উপলব্ধি করেছিলাম এক মঙ্গলালোকের বিচ্ছুরিত রশ্মিতে। আমরা সেই বিপুল বিশাল উত্তাল তরঙ্গের শ্বেতশুভ্র ফেনরাশির শিখরে শিখরে আমাদের উত্তরীয় উড়িয়ে দিয়েছি ঝড়ো হাওয়ায়। সে-সময়কার কর্মকাণ্ড ও কুশলতার যে-সামষ্টিক অর্জন, তা নানাদিক থেকে আমাদের জাতিসত্তা-নির্মাণে মূল অবদান রেখেছে, আর সেজন্যেই সেই সময়টি নানাবর্ণের বিভায়, নানাচিত্রকল্পের অনুষঙ্গে উৎকীর্ণ হয়ে আছে আমাদের অস্তিত্বের নিবিড়তম সুন্দরতম প্রকোষ্ঠে। ৎ
* এই লেখাটি কালি ও কলমের দ্বিতীয় বর্ষ, তৃতীয় 888sport free betয় (এপ্রিল ২০০৫/ বৈশাখ ১৪১২) প্রকাশিত।
তিন মাথার মোড়
সুবোধ সরকার
১.ওয়াশিংটন
দুরন্তকে বাগে এনেছ
বিদ্রোহীকে আপোস
কিন্তু তোমার হাত ফস্কে শোল পালালো
সেটাই আপসোস
আমার সেটাই আপসোস!
২. চমস্কি
আপনি কারো চাকর নন
আপনি কারো মাতব্বর নন
ভিক্ষে দেননি, ভিক্ষে নেননি
পৃথিবী জুড়ে তবু আপনার ভক্ত অগণন।
গোলাপ খেয়ে
গোলাপ বমি করে
মরার কথা ছিল না যাদের
তারাও গেছে মরে।
ওরা যখন গায়ের জোরে, বোমার জোরে
হাতে নিয়েছে মরুতেলের ঠিকা
আমেরিকার মধ্যে থেকেও
আপনি তখন আরেক আমেরিকা।
৩. প্যালেস্টাইন ইজরায়েল
এক আকাশ জুড়ে তখন বৃষ্টি
বৃষ্টি নাকি দুভাগ হবে, কী করে হয়?
পাড়ার ছেলে, রকের ছেলে, তেড়ে দিচ্ছিল খিস্তি
এক আকাশ জুড়ে তখন বৃষ্টি।
বৃষ্টি নাকি দুভাগ হবে, কী করে হয়?
পৃথিবী জুড়ে এল.ও.সি, কাঁটাতারের ভয়
এপারে এক ইহুদি মেয়ে, ওপারে তার প্রেমিক বেদুইন
আর ওইপাশে আরব মাতৃভূমি
নিজের ভাষায় কথা বলতে ভয় পেয়েছ তুমি?
মাঝখানে নামে বৃষ্টি
মেলেনি ওই মেয়েটি আর বেদুইনের দৃষ্টি
কারা করেছে প্যালেস্টাইন?
কারা করেছে, কারা করেছে ইজরায়েলের সৃষ্টি?


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.