সমকালীন বাস্তবতার আলেখ্য

প্রণব চৌধুরী গত শতকের ষাটের দশক থেকে ছড়াকার হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। তাঁর শ্রেষ্ঠ ছড়া গ্রন্থের ভূমিকায় তিনি বলেছেন, ‘ছেলেবেলায় বন্ধুদের অবাক করে দিতাম ছন্দ মিলিয়ে ছোটো ছোটো পদ্যে।’ কাগজে তাঁর ছড়া প্রথম প্রকাশ পায় ১৯৬৪ সালে স্কুলবার্ষিকীতে। এরপর 888sport appsের প্রায় সব দৈনিক পত্রিকা শিশু পাতা ও শিশু পত্রিকায় তাঁর অনেক ছড়া প্রকাশিত হয়েছে। শ্রেষ্ঠ ছড়াসহ এরই মধ্যে তাঁর প্রকাশিত ছড়াগ্রন্থের 888sport free bet সাতটি।

সরল, জনবোধ্য, সাধারণত নৈর্বস্তুক ও অলৌকিক ব্যঞ্জনাবহির্ভূত হালকা চালের আদিতম এই কাব্যমাধ্যমটি প্রধানত শিশুকে তুষ্ট করা বা ঘুম পাড়ানো, বয়স্কদের হাস্যরসের মধ্য দিয়ে আনন্দদান, সাধারণ মানুষের মনের কথার বয়ান বা গণমুখিনতা অথবা প্রকৃতিকে আশ্রয় করেই রচিত হয়ে চলেছে। প্রণব চৌধুরীর ছড়ায় এই সব ধারা লক্ষ করা গেলেও তাঁর প্রধান প্রবণতা গণমুখিনতা। বিশেষ করে তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠাকালীন সময়ে সংঘটিত ঘটনাসমূহ, যেমন – ভারত বিভক্তি, পাকিস্তান সৃষ্টি, পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের শাসন, শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির আত্মজাগরণ, বিদ্রোহ, আন্দোলন, সংগ্রাম, যুদ্ধ, স্বাধীনতা; নতুন দেশের শাসকশ্রেণি ও তাদের পোষ্যবর্গের লুণ্ঠন-শোষণ-বঞ্চনা; রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক নানা সংকট, দ্বন্দ্ব; সাম্যবাদী রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে নাগরিক মধ্যবিত্ত জনতার তীব্র আন্দোলন ও সংগ্রাম, বহমান সামন্ত সমাজের অবক্ষয়-বিপর্যয়, পুঁজিবাদের উত্থান ও বিকাশ, বিধ্বস্ত সামন্তশ্রেণির পুঁজিপতিতে আর মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের রুটলেস সর্বহারা শ্রেণিতে রূপান্তর এবং সমাজটির আধা সামন্ত, আধা ধনতন্ত্রী, আধা প্রলেতারীয় রূপ পরিগ্রহণ – এসব ঘটনা আমাদের সামাজিক বিন্যাস, মূল্যবোধে যে-বিপর্যয় ঘটিয়েছে তা তাঁর মনে যে বিচিত্র ভাঙচুর বা ঘাত-প্রতিঘাত, প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে, আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে থাকা সেসব চিত্র, জীবনকথা, সংগ্রাম ও ইতিহাসের ছবিকেই তিনি তাঁর ছড়ার বিষয়বস্তু করে তুলেছেন।

শ্রেষ্ঠ ছড়া গ্রন্থে শিশুতোষ বা ননসেন্স ছড়া নেই বললেই চলে। রম্য ছড়াও খুব কম। যেগুলি আছে সেগুলিতেও এক ধরনের সচেতনতার প্রলেপ মাখানো। এগুলি শিশু, কিশোর এমনকি বুড়োদেরও আনন্দের উপকরণ হয়ে উঠেছে। যেমন ‘টন’ নামের ছড়ার দুটি লাইন, ‘মন তো বুঝি ‘টন’টা আবার কি?/ টন হলোগে,  আচ্ছা রাখুন চিন্তা করে নি’ -/ টন মনেরই অংশ বিশেষ-ছোয়া ছটাক মাপ/ দেখবেন ঠিক বিক্রি হবে পাঁচ টাকা এক কাপ।’ বলার অপেক্ষা রাখে না এটা শিশু-কিশোর কি বয়সীদের ছড়া। লক্ষ্য আনন্দ দান। বাংলা ভাষায় অনেক সময়ই কিছু শব্দ অন্য শব্দের সহযোগী হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। ‘টন’ সেরকমই একটি শব্দ। মূল শব্দটির সঙ্গে ব্যবহারের সময় এসব শব্দের অর্থ থাকলেও তা নিজস্বতা হারায়। এ-ছড়া থেকে আরেকটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা আরো পরিষ্কার হবে। আমরা অনেক সময়ই রাজাটাজা, খাবার-দাবার এরকম ব্যবহার করি। উদ্ধৃত অংশে সেটাই করেছেন তিনি, আর তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

‘এই পৃথিবী ঘোরে’ নামের ছড়ায় লক্ষ্যটা ওরকম থাকলেও কবির কলম তা পালটে দিয়েছে, ‘এই পৃথিবী কেমন করে ঘোরে!’ শিশুমনে এই কৌতূহল দিয়ে শুরু ছড়াটি একটু পরেই শিশুকে বিস্ময়াবিষ্ট করেছে যখন কবি বলেছেন, ‘ভাবতে গেলে অবাক লাগে/ মাথার ঘিলু ওড়ে!/ কারখানা আর মানুষ বাড়ি/ সাগর পাহাড় সারি সারি/ সব মিলিয়ে ওজন কি আর কম!’ এর পরেই কবি একটি প্রতীকার্থ নিয়ে সরাসরি হাজির হয়েছেন শুধু শিশু নয়, সমাজের শিশুবাচ্য বড়দের সামনেও এই বলে, ‘এই পৃথিবী সহজভাবে সহজ পথে ঘোরে/ এই যে মানুষ এত এত, তাদের কথার তোড়ে/ এবং যাদের ভুঁড়ি আছে তাদের ভুঁড়ির জোরে।’ আপাতত হাস্যরসাত্মক মনে হলেও এর মর্মার্থ গভীর। আমাদের সমাজের নিয়ন্ত্রক লুণ্ঠক, শোষকশ্রেণির আঙুলের ইশারায়ই যে পৃথিবী নামে এই গ্রহ আর এর বাসিন্দারা পরিচালিত হচ্ছে কবি সেদিকেই আঙুল তুলেছেন।

বস্তুত এটাই প্রণব চৌধুরীর ছড়া রচনার মৌলিক লক্ষ্য, মূল বৈশিষ্ট্য। রম্য ছড়ার আদলে সমাজচিত্র, সমাজের গঠন, গলদগুলির নগ্নচিত্র অঙ্কন এবং তার বিরুদ্ধে রঙ্গ ও ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের ভাষায় আক্রমণ ও ভেতরটা খোলাসা করা। উচ্চবিত্ত, বিত্তহীন এবং সুবিধাভোগী ও সুবিধাভোগহীন শ্রেণিসমন্বয়ে গঠিত বৈষম্যপীড়িত যে-সমাজ আমরা গড়ে তুলেছি তার বিচ্যুতির ছবি আঁকা।

প্রায় বিদায় নেওয়া সামন্তবৈশিষ্ট্য এখনো কীভাবে আমাদের চরিত্রে কি সমাজগঠনে ঘাপটি মেরে বসে আছে তার একটা ছবি ‘আচ্ছা বেটার ঝি’ নামের ছড়ায় তিনি এভাবে এঁকেছেন, ‘ধরেন তো ধরেন না/ নড়েন তো চড়েন না/ বসেন তো সরেন না/কাজকম্ম করেন না/ আচ্ছা বেটার ঝি!’ এটা কোনো অবাক করা চিত্র নয়। এই মেয়েটি আমাদের অপরিচিতও নয়। আমাদের চারপাশের শোষকশ্রেণির প্রতিভূ এই কন্যাটি সমাজের লুণ্ঠক সুবিধাভোগী পরনির্ভরশীল অবক্ষয়িত সামন্তশ্রেণির বিলাসী জীবনযাপনেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। এর একটু পরে একটু রম্য-রসিকতা যুক্ত করে কবি বলেছেন, ‘বিয়ে দিলে উপায় হবে কি?’ এর উত্তরটাও সমাজের চরিত্রের মধ্যেই আছে। কবির মতে,  ‘বিয়ে হবে সোনার গাঁয়ে/ খাট-পালঙে পা দোলায়ে/ শোবেন এবং/ খাবেন এবং/ এবং ঘুমাবেন,/ দাস-দাসীদের যত্ন-আদর পাবেন,/ ইচ্ছেমতো শ্বশুরবাড়ি, বাপের বাড়ি যাবেন।’

এর উল্টো চিত্রটা অর্থাৎ বাকি মানুষদের জন্য লুণ্ঠক সমাজ কী ধরনের সুখের নহর তৈরি করে রেখেছে ‘চাকর’ নামের ছড়ায় তা দেখা যাক। চাকর ‘কর্তাবাবুর টিপছিল পা, গিন্নি হাঁকেন :/ ‘এই এখুনি চা কর,’/ অমনি দুয়ার শব্দ হল, বলেন বাবু :/ ‘দৌড়ে গিয়ে না কর’/ যাচ্ছিল যেই-কান্না জুড়ে খোকন বলে :/ ‘প্যাঁচার মতো হা কর’…।’ এই হচ্ছে সমাজের নিচুতলায় অবস্থিত অবহেলিত, খেটে খাওয়া মানুষের বাস্তব ছবি।

গ্রন্থটিতে শোষক শ্রেণির চরিত্রের নিখুঁত ও উত্তম ব্যাখ্যা পাওয়া যায় ‘লাটসায়েবের জুতো’ ছড়ায়। লাটসাহেবের এই জুতো পৃথিবীর তাবৎ অত্যাচারী শোষকের প্রতিনিধি। এরা স্বেচ্ছাচারী, অত্যাচারী, উগ্র লুণ্ঠক, শোষক। এরা দরিদ্র, দুর্বল মানুষকে শুধু ঠকায়ই না, নিষ্ঠুর নির্যাতনও করে। মাত্র কয়েকটা পঙ্ক্তিতে প্রণব চৌধুরী এই শ্রেণিটির সামগ্রিক পরিচয় তুলে ধরেছেন, ‘লাটসায়েবের জুতো/ রাগ কি বাবা, পেলেই হল/একটা কিছু ছুতো’। তখন সে রাগে ‘পালিশ করা চকচকে লাল’ গাল ফোলায়। এর পরের দৃশ্য কবির ভাষায়, ‘তখন যদি একটু হাসো,/ কিংবা ধরো একটু কাশো,/ সুড়সুড়িয়ে তখন সে ভাই/ মারবে পেটে গুঁতো।’ কিন্তু কবি এরকমটা চান না। তিনি এর বদল চান। তাই স্বপ্ন দেখেন। কল্পনা করেন যদি অবস্থাটা পাল্টায় তবে কেমন হবে! ‘কাণ্ড হত’ নামের ছড়ায় ছাগলের রূপকের আড়ালে তিনি সে-আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করেছেন। কবির ভাষায় তার ছবিটা এমন, ‘কাণ্ড হত বিটকেলে/ ছাগলে নাক সিটকেলে।’ ছাগল এ-ছড়ার নায়ক, সাধারণ মানুষ; নির্যাতিত, সর্বহারা শ্রেণির প্রতীক। কবির মতে, ছাগল বিগড়ে গেলে, জনতা জেগে গেলে আসল কাণ্ডটা হবে। ছাগল তো সবই খায়। সাধারণ মানুষকে শোষক বুদ্ধিমান শ্রেণি যা বোঝায়, তাই বোঝে, যা খাওয়ায় তাই খায়। এ-অবস্থা বোঝাতে তিনি ‘…ছাগল দালান ভেঙে/ একটি করে ইট খেলে’ রূপকটি ব্যবহার করেছেন। অর্থাৎ সাধারণ মানুষ যদি দীর্ঘকালের শোষণের ইটে গড়া বিধানের প্রাসাদটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় কাণ্ডটা ঠিক তখনই হবে। কিন্তু সেটা কি সম্ভব? কবির মতে, সম্ভব যদি তারা বুঝতে পারে যে তারা ছাগল নয়, বাঘ। কিন্তু এই অনুভূতি, বোধ, সচেতনতা তাদের নেই। তাই তারা ক্ষুধায় কাতর, ছাগলের চামড়া পরা নিস্পৃহ বাঘ।

কবি চান এ অবস্থা থেকে তারা মুক্তি পাক। আর তা পেতে চাইলে তাদের নিজেদের চিনতে হবে, বুঝতে হবে, তাদের ভেতরে এই অনুভূতি জাগতে হবে যে তাদের ‘বাঁচার মতো বাঁইচতে হবে/ ‘আর’ বাঁইচতে হলে-কইত্তে হবে কি?’ সেজন্য ‘মইত্তে হবে জ্বি।’ কিন্তু শোষকরা তো তা চায় না। কারণ তারা জানে এমন হলে তাদের প্রতিপত্তি, ক্ষমতা শেষ হয়ে যাবে। সবাই তখন সমান হবে। তাই তারা এদের দাবিয়ে রাখার মন্ত্র, ঘুম পাড়ানিয়া গান রচনা করেন।

কবি তাঁর স্বপ্ন ‘রাজার ঘোড়া’ নামের দীর্ঘ ছড়ায় পূরণের প্রয়াস চালিয়েছেন। এই ছড়াকাব্যটিতে তিনি একদার দুর্দান্ত প্রতাপ রাজার ঘোড়ার পতনের কাহিনির মধ্য দিয়ে সমাজ বদলের অনিবার্য ইতিহাস বর্ণনা এবং আকাঙ্ক্ষা পূরণের চেষ্টা করেছেন।

কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা প্রণব চৌধুরীর চোখের সামনে সংঘটিত হয়েছে। সেসব বাঙালির সংগ্রামের গৌরবের ইতিহাস সংগত কারণেই তাঁর 888sport app download apkয় জায়গা করে নিয়েছে। ‘তাদের ফিরে চাই’ নামের ছড়ায় মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি হানাদারদের নিষ্ঠুর নির্যাতনের তেমন একটা ছবি পাওয়া যায়। তাঁর ছড়ায় ধরা পড়েছে সে-সময় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ভূমিকাও। তিনি ভুলে যাননি মনে করিয়ে দিতে যুদ্ধাপরাধীদের কথাও। 

প্রকৃতি বিশেষ করে 888sport appsের ষড়ঋতু তাঁর 888sport app download apkয় অনেকটা জায়গা দখল করেছে। তবে শরৎ ছাড়া বাকি ঋতুগুলি তিক্ত অভিজ্ঞতা ও বিরক্তি নিয়ে হাজির হয়েছে। যেমন গ্রীষ্ম ঋতুতে তাঁর অনুভূতি, ‘প্রচণ্ড রোদ, ঘামের জ্বালা/ না ঘুমানোর কষ্ট।’ বর্ষা বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘আকাশবাবার মুখখানা থমথমে/ মেঘের পরে মেঘ উঠেছে জমে/ চোখ থেকে জল গড়িয়ে বুঝি পড়ে/ এই চললো সারা দুপুর ভরে।’ জীবনানন্দ দাশের কাছে হেমন্ত ফসলের ঐশ্বর্য আর রিক্ততার প্রতীক হিসেবে ধরা দিলেও প্রণব চৌধুরীর কাছে শুধুই শূন্যতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। সেরকম একটা পদ, ‘হেমন্ত তো ফাঁকা ফাঁকা, শূন্য মাঠের গল্প।’ আর শীত যে তাঁকে কষ্ট ছাড়া আর কিছু দেয়নি তা বোঝা যায় এ লাইনে, ‘হাড়কাঁপা শীত, ঠান্ডা হাওয়া/ রোদের তাপ কি অল্প।’ সবার প্রিয় বসন্তও তাঁকে তেমন নাড়া দিতে পারেনি। বরং উল্টো অভিজ্ঞতা উপহার দিয়েছে, ‘বসন্তে রোজ ডাকুক কোকিল, ধুলোর ওড়াউড়ি/ অসুখ-বিসুখ, কালবোশেখির বড্ড ঘোরাঘুরি।’ কিন্তু শরৎ তাঁকে হতাশ করেনি। দিয়েছে মুগ্ধতা, ভালোবাসা। সেকথা এসব পদে, ‘সবচে ভালো শরৎ আমার, কাঁচা রোদের খেলা/ দুর্গা-অপুর ছুটির দুপুর, হালকা মেঘের ভেলা/ কাশের বনে লুটিয়ে পড়ে জ্যোৎস্না আলোর ঘুম/ ঢাকের বোলে তাকধুমাধুম তাকধুমাধুম ধুম।’ এ পদগুলো কিন্তু 888sport app download apk, ছড়া-888sport app download apk। বিশুদ্ধ 888sport app download apkও বলা চলে।

888sport live football, রাজনীতি, দেশের জন্য নিবেদিত মানুষ, জাতীয় নেতা তাঁদের জন্য নিবেদিত ছড়া আছে তাঁর। রবীন্দ্রনাথ তাঁর ছড়ায় বেশ কয়েকবার হাজির হয়েছেন। তার একটায় রবীন্দ্রনাথের পরিচয় দিয়েছেন এই বলে, ‘চুল-দাড়িতে ঋষির মতো/ তিনিই/ জোড়াসাঁকোর/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।’ মধুসূদনকে পরিচিত করতে গিয়ে বলেছেন, ‘সাহেবি চাপদাড়ি/ এই ছবিটা তাঁরই/ যাঁর বাড়ি সাগরদাঁড়ি।’ নজরুলও আছেন কয়েক ছড়ায়। তাঁকে চিনিয়েছেন এসব পদে, ‘ঝাঁকড়া মাথার চুল/ সবাই জানে বিদ্রোহী নজরুল।’ সুকান্ত ও সুকুমার রায়ও তাঁর ছড়ায় জায়গা পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে দুবার পাওয়া যায় তাঁর ছড়ায়। একবার রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের সঙ্গে, ‘চাঁদকে যেমন চাঁদই জানি/ ফুলকে বলি ফুল/ চিনতে কোথাও ভুল হয়নি/ রবীন্দ্র-নজরুল/ চিনতে কোথাও ভুল করিনি/ তেমনি মুজিবুর/ আকাশছোঁয়া বুকের ভেতর/ হৃদয় সমুদ্দুর।’ আরেকবার ‘শেখ মুজিবুর রহমান’ নামের ছড়ায়, ‘বিদ্যাসাগর/ রবীন্দ্রনাথ/ হয়নি দেখার ভাগ্য/ কাজী নজরুল/ জগদীশ বসু/ কোনো বিজ্ঞ-প্রাজ্ঞ/ কাউকে দেখিনি/ দেখা হল তবু/ একজন বারবার/ বাংলার মুখ/ দেখিয়াছি আমি/ খুঁজিতে যাই না আর।’ নিবেদিত হয়েছে শহিদদের প্রতি 888sport apk download apk latest version, ‘রক্ত দিয়ে’ ছড়ায়, ‘এই যে মুখের ভাষা, গোবিন্দ দেব, মুনীর স্যার/ ঐ আনোয়ার পাশা।’ ‘সালামান্তে’ ছড়ায় শহিদ জননী জাহানারা ইমামের প্রতি 888sport apk download apk latest version – ‘শহীদ জননী/ আমার সালাম নিন/ আপনার কাছে/ দেশ ও জাতির ঋণ।’

এসব ছাড়াও তাঁর ছড়ায় আরো বিচিত্র বিষয়, যেমন বাঙালির খাবার, চাটুকারিতা, দ্রব্যমূল্য, সুবিধাবাদিতা, বাব-মায়ের প্রতি 888sport apk download apk latest version, অর্থের গুরুত্ব, ভারতবিদ্বেষ, নাগরিক যন্ত্রণা, অসুখ-বিসুখ, স্বাস্থ্য সচেতনতা, আধুনিক প্রযুক্তি, একাল সেকাল,
হরতাল-ধর্মঘট, 888sport promo code-পুরুষের অধিকার, বিচিত্র মানবচরিত্র ইত্যাদি উঠে এসেছে। এককথায় তাঁর চোখ প্রায় সর্বত্র গমন করেছে।

প্রণব চৌধুরী শ্রেষ্ঠ ছড়া একটি অনবদ্য, 888sport live chatসমৃদ্ধ ছড়াকাব্য। সমকালীন জীবনের খাড়াবড়ি থোড় কাহিনির, মানুষের জীবনের ব্যর্থতার-বেদনার, আনন্দের, ঐশ্বর্যের আর কপর্দকহীন বাস্তবতার সংগ্রামের মিলিত আলেখ্যের ছন্দরূপ এ-গ্রন্থ। পাঠক এর থেকে একালের যন্ত্রণাদগ্ধ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের একটি রক্তাক্ত রোজনামচার ছবি অনায়াসে উপভোগ করতে পারবেন।