সামসুল ওয়ারেসকে সবাই চেনে স্থাপত্যকলার একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক হিসেবে, যিনি স্থাপত্যকে মনে করেন আধুনিকতার এক ধরনের দর্শন, যেখানে নির্মাণ888sport live chatকে দেখা হয়েছে বিংশ শতাব্দীর বিমূর্ত নান্দনিকতা, প্লেটোনিক বিশুদ্ধতা আর সর্বজনীন মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে। এই পরিচিতির আরেকটি অন্যতম দিক হচ্ছে, 888sport apps প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের একজন আধুনিকমনস্ক শিক্ষক হিসেবে তাঁর ব্যক্তিগত বিকাশ ছিল স্বাধীনতা-পরবর্তী 888sport appsের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বিবর্তনের সমান্তরাল। এ-কারণে এটা বলা যেতে পারে যে, সামসুল ওয়ারেসের আপসহীন আধুনিক জীবনবোধ এবং চিন্তা-চেতনার বিশ্লেষণ 888sport appsের আর্থ-সামাজিক উত্তরণের পথে রাজনীতি ও নান্দনিকতার জটিল সমীকরণের একটি দিকনির্দেশনা দিতে পারে।
কিন্তু এই কাজের একটি অপ্রত্যাশিত সীমাবদ্ধতা আছে। একজন উঁচুমানের শিক্ষক হিসেবে তাঁর পরিচিতি তাঁর পেশাদারি স্থপতির পরিচয়কে কিছুটা ঢেকে রেখেছে। তিনি নিজেই অনেক সময় দুঃখ করে বলেছেন : ‘আহ, আমি যদি আমার নিজের স্থাপত্যকর্মের দিকে আরেকটু বেশি মনোযোগ দিতাম, তাহলে আমার পরিচয়ে আরো বহুমাত্রিকতা থাকতো।’ এই কথায় বোঝা যায়, তিনি তাঁর জীবন-দর্শন আর জ্ঞান-অনুসন্ধানকে শুধু শিক্ষকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি। তাঁর স্থাপত্যচর্চার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যেও তা চেয়েছেন। ভাষা, চিত্র888sport live chat, 888sport live football, ইতিহাসচর্চা আর সংগীতের মতো স্থাপত্য888sport live chatও একটি জাতির সামষ্টিক চরিত্র, তার আশা-আকাঙ্ক্ষা আর আত্মপরিচয়ের অনুসন্ধানকে ফুটিয়ে তোলে। নেপোলিয়ন-উত্তর ইউরোপে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে যখন আধুনিক জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটছিল, ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের জাতিগত স্বকীয়তা ফুটিয়ে তোলার প্রচেষ্টায় তাদের 888sport live chatকলার তাৎপর্যকে গুরুত্ব দিয়েছিল। স্থাপত্য ছিল জাতীয় পরিচয় শক্তিশালী করার অন্যতম হাতিয়ার। কোনো দেশের আর্থ-সামাজিক আর রাজনৈতিক চরিত্রের ধরন বুঝতে হলে তার স্থাপত্য888sport live chatের দিকে তাকানো যেতে পারে। এই কথাগুলো বলছি এ-কারণে যে, সীমিত আকারে হলেও সত্তর দশকের প্রথম থেকে সামসুল ওয়ারেসের বুদ্ধিবৃত্তিক শিক্ষা-দর্শন আর স্থাপত্যচর্চার গতিপ্রকৃতি থেকে 888sport appsের সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক বিবর্তনের একটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে। শিক্ষকতার পাশাপাশি তাঁর স্থাপত্যকর্মের ব্যাপ্তি অনেক বড়।
এক-পরিবার আবাসিক ভবন, কারখানা, গবেষণা কেন্দ্র, পার্ক, ইনস্টিটিউশন ভবন, সিনেমা, বিপণিবিতান, অ্যাপার্টমেন্ট ভবন – অনেক ধরনের স্থাপনা নির্মাণ তাঁর স্থপতি পরিচয়কে শক্তিশালী করেছে। তাঁর কাজ আমাদের দেয় গবেষণার একটি সময়োপযোগী সুযোগ।
এটা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে, সামসুল ওয়ারেস – সবার প্রিয় ওয়ারেস স্যার – কয়েক প্রজন্মের অগণিত 888sport appsি স্থপতির অনুপ্রেরণা। কিন্তু কী কারণে এবং কেন – এই প্রশ্ন করা যেতেই পারে। এই অনুপ্রেরণার অন্যতম একটি দিক হচ্ছে এই যে, তিনি তাঁর ছাত্রছাত্রীদের বোঝাতে পেরেছিলেন – স্থাপত্য শুধু একটি পেশাই নয়, এটি হওয়া উচিত একটি আধুনিক জীবনচর্চা, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা প্রকাশের একটি বলিষ্ঠ মাধ্যম। সামসুল ওয়ারেস একজন সন্ধিক্ষণের বুদ্ধিজীবী হিসেবে এক সাংস্কৃতিক সেতুর ভূমিকা পালন করেছিলেন – একদিকে মাজহারুল ইসলাম, লুই কান, কনস্টান্টিনোস ডক্সিয়াদিস, পল রুডলফ আর স্ট্যানলি টাইগারম্যানদের মতো বিশ^খ্যাত স্থপতি, যাঁরা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আধুনিক স্থাপত্যের একটি ‘স্বর্ণযুগ’ তৈরি করেছিলেন আর আরেকদিকে স্বাধীনতা-পরবর্তী নতুন প্রজন্মের 888sport appsি স্থপতিরা, যাঁরা দেশগঠনে স্থাপত্যের ভূমিকায় ছিলেন উদ্যোগী, যাঁরা বিশ্বাস করেন বিশ্বের মানচিত্রে ‘বেঙ্গল স্ট্রিম’ বলে বঙ্গীয় স্থাপত্যের একটি আধুনিক ধারা প্রতিষ্ঠিত করা যায়।
কিন্তু আধুনিকতা বলতে সামসুল ওয়ারেস কী বোঝাতে চেয়েছেন? রবীন্দ্রনাথের দিকে চোখ ফেরানো যেতে পারে এখানে বিষয়টা পরিষ্কার করা দরকার। রবীন্দ্রনাথ আধুনিকতা বলতে বাঙালিকে ঔপনিবেশিকতার প্রেক্ষাপটে নতুন করে বাঙালিত্ব জাহির করতে বলেননি। বরং বাঙালিকে বৈশ্বিক ধ্যান-ধারণায় যুক্ত হয়ে বাঙালিত্বকে ক‚পমÐূকতার কারাগার থেকে আত্ম-অবমুক্তায়নের পথে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। আধুনিকতার বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট নিয়েও কথা বলা যেতে পারে। আধুনিকতার প্রথম স্রোতের প্রবক্তারা – তাঁদের মধ্যে আছেন গ্যেটে, হেগেল, মার্কস, বোদলেয়ার, কার্লাইল আর ডিকেন্স – বুঝেছিলেন আধুনিকতার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আর এর বিপরীত ধারার বিমূর্ত একত্রীকরণের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। আধুনিকতার একদিকে আছে ঐতিহ্যবাহী ধ্যান-ধারণাগুলো ধসে পড়া। এ-প্রসঙ্গে মার্কসের কথা শোনা যেতে পারে : ‘আধুনিকতার দাবদাহে যা কিছু কঠিন সবই বায়বীয় হয়ে যায়।’ আরেকদিকে আছে আধুনিকায়ন, যার মাধ্যমে প্রাত্যহিক মানবজীবন হয়েছে প্রযুক্তিমুখী, পাশাপাশি হয়েছে সামাজিক ক্ষমতায়ন। ফরাসি কবি বোদলেয়ার তাঁর 888sport app download apkয় এই বিপরীত স্রোতগুলোর মিলনস্থল কল্পনা করেছেন। সামসুল ওয়ারেস 888sport appsের বিবর্তনশীল নান্দনিক প্রেক্ষাপটে আধুনিকতার ধারণার অন্তর্নিহিত জটিলতা আর বৈপরীত্যের সহাবস্থানের একটা স্থানিক সমাধান দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সমাধান ছিল আপসহীনভাবে বিমূর্ত। এই বিমূর্ত বহিঃপ্রকাশে ইতিহাসের প্রতি, মাটি-মানুষের প্রতি পোশাকি দায়বদ্ধতা নেই, বরং ছিল প্লেটোনিক অভিব্যক্তিতে বাঙালিত্বের নৈর্ব্যক্তিক অনুসন্ধান। এখানেই সামসুল ওয়ারেস ব্যতিক্রম : পোশাকি আধুনিকতার আকর্ষণ উপেক্ষা করে এর নান্দনিক বহুমুখিতা স্বীকার করে একে বিমূর্ততার মূল শক্তি ও মৌলিক প্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করে নেওয়ার অঙ্গীকার।
888sport appsের জাতীয় সংসদ ভবনের মার্কিন স্থপতি লুই কানের পুত্র নাথানিয়েল কান ২০০৩ সালে তাঁর পিতার স্থাপত্যকর্ম আর বৈবাহিক জীবনের জটিল সম্পর্ক নিয়ে একটি সংবেদনশীল ডকুমেন্টারি তৈরি করেছিলেন। কান নাথানিয়েলের মাকে বিয়ে করেননি। ফিলাডেলফিয়ার রক্ষণশীল সমাজে এটি সহজ বিষয় ছিল না। ১৯৭৪ সালে কান অপ্রত্যাশিতভাবে মারা যান, ভারত উপমহাদেশ থেকে বিমানে ফেরার পর নিউইয়র্ক শহরে ট্রেনস্টেশনের টয়লেটে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হলে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। নাথানিয়েল তাঁর বাবাকে মাত্র কয়েকবার দেখেছেন। এই অপ্রাপ্তির কষ্ট থেকেই তিনি এই ডকুমেন্টারি বানিয়ে তাঁর বাবাকে কাছে পেতে চেয়েছেন বলে অনেকে মনে করেন। ডকুমেন্টারির শেষদিকে একটি খুব মর্মস্পর্শী মুহূর্ত দেখা যায়। আমি ডকুমেন্টারিটির একটি অ্যাকাডেমিক পর্যালোচনায় লিখেছিলাম : ‘পার্লামেন্ট ভবনের ভেতরে, নাথানিয়েল 888sport appর জনপ্রিয় স্থপতি সামসুল ওয়ারেসের ইন্টারভিউ নেন। সেই কথোপকথনে সামসুল ওয়ারেস একটি ব্যতিক্রমী বক্তব্য দেন – জিনিয়াস-এর অবদান তাঁর ব্যক্তিগত ব্যর্থতায় খুঁজলে অন্যায় হবে, তাঁর স্থাপত্যের মর্ম বুঝতে হলে তাঁর জিনিয়াসের জটিল অংক বুঝতে হবে, তাঁর স্থাপত্যের মানবিক বিন্যাসকে বিশ্লেষণ করতে হবে।’ কানের প্রতিভা বর্ণনা করতে গিয়ে ওয়ারেস ফিলাডেলফিয়ার এই স্থপতিকে বলেছিলেন, ‘আমাদের মোজেস’ যে সদ্য স্বাধীন 888sport appsকে দিয়েছিলেন গণতন্ত্রের একটি প্রতীক, যেখানে আধুনিকতা পেয়েছে একটি শাশ্বত বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু ডকুমেন্টারির এই দৃশ্যে সামসুল ওয়ারেসের অবি888sport app download for androidীয় বক্তব্যের চেয়েও অনেক বেশি কৌতূহলী ছিল তাঁর মুখের অভিব্যক্তি। সেই অভিব্যক্তির কেন্দ্র ছিল তাঁর অশ্রু। নাথানিয়েল কান অনেক সময়, অনেক জায়গায় বলেছেন, এই দৃশ্যই তাঁর ডকুমেন্টারির প্রাণকেন্দ্র। অনেকেই নাথানিয়েলের বক্তব্যের সঙ্গে একমত।
সামসুল ওয়ারেসের অশ্রুর সামাজিক অর্থ কী? এই অশ্রুর মাধ্যমে তিনি কি কানের প্রতি তাঁর আবেগতাড়িত 888sport apk download apk latest version দেখাতে চেয়েছিলেন, নাকি আরো অনেক কিছু? প্রথমবার আমেরিকাতে এই ডকুমেন্টারি দেখার পর, ভারতের বিখ্যাত স্থপতি চার্লস কোরিয়ার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল আমার শিক্ষক এমআইটির অধ্যাপক স্ট্যানফোর্ড এন্ডারসনের বস্টনের বাসায়। আমি 888sport apps থেকে গিয়েছি শুনে কোরিয়া আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কানের কথা বলতে গিয়ে তোমাদের একজন স্থপতি কেঁদেছিল কেন? আমি ভাবলাম, তাই তো, এরকম একটা ফরর্মল ইন্টারভিউতে ক্যামেরার সামনে তিনি কেঁদেছিলেন কেন? প্রথমে উত্তর দিতে পারিনি। তারপরে যা ব্যাখ্যা দিয়েছিলাম, তা হলো এই : 888sport appsিরা লুই কানের কথা বলতে গেলে প্রায়ই আবেগায়িত হয়ে পড়ে, কিন্তু কেন? তার সম্ভাব্য কারণগুলো এমন হতে পারে : কানের জাতীয় সংসদ ভবনের নির্মাণকাল (১৯৬৩-৮৩) আর 888sport appsের স্বাধীনতা সংগ্রাম আর জাতিসত্তার উন্মেষের সময়কাল মোটামুটি সমান্তরাল; স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে এই দেশের স্থাপত্য888sport live chatের বিবর্তনে কানের প্রভাব মোটামুটি সর্বজনস্বীকৃত। অনেকেই মনে করেন যে, এদেশের মানুষেরা আমাদের জাতীয় সংসদ ভবনের স্থাপত্যের ভাষায় খুঁজে পেয়েছিল গণতন্ত্র আর জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিচ্ছবি। আমি চার্লস কোরিয়াকে বোঝাতে চেয়েছিলাম যে, এগুলো আবেগের বিষয়, হয়তো সামসুল ওয়ারেসের অশ্রুভেজা চোখ অপ্রত্যাশিত কিছু নয়। ব্যাখ্যাটা কোরিয়ার খুব একটা মনঃপুত হয়েছে বলে মনে হলো না। তাঁর ভাবখানা ছিল এমন, পূর্বের মানুষদের এত আবেগ হয়তো ঔপনিবেশিক আমলের শাসিত মানসিকতারই ধারাবাহিকতা। বেশ কিছু বছর পরে, লুই কানের ওপর নির্মিত টাইগার সিটি (২০১৯) নামে ডকুমেন্টারির পরিচালক সুন্দরম টেগোরকে বলেছিলাম, আমাদের পার্লামেন্টের ভেতরে, আলো-ছায়ার নান্দনিক খেলায় এক ধরনের আধ্যাত্মিক অনুভূতি তৈরি হয়, এই ভবনের ভেতরে কেঁদে ফেলা মোটেই বিরল কোনো ঘটনা নয়।
তারপরেও অনেক প্রশ্ন থেকে যায়, অনেক ভেবেছি সামসুল ওয়ারেসের অশ্রুর বৃহত্তর সামাজিক অর্থ কী হতে পারে, তা নিয়ে। আমি মনে করি না এই অশ্রু শুধু আবেগের অথবা 888sport apk download apk latest versionর। আমরা আমাদের মৃত মা-বাবার কথা বলতে গিয়ে অনেক সময় কেঁদে ফেলি। সামসুল ওয়ারেসের কান্না সেই কান্না নয়। আমি মনে করি, স্থাপত্য888sport live chatের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা আর অঙ্গীকার চোখের জল হয়ে নেমে এসেছিল। তিনি মনে করেন, একটি
সংস্কৃতি-সংবেদনশীল সমাজ তৈরিতে স্থাপত্য বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে। ইট, কংক্রিট, আলো, ছায়া, বাতাস, সবুজ নিয়ে স্থাপত্যের নান্দনিক ভাষা তৈরি করতে পারে একটি জাতির সুস্থ সমাজচেতনা। স্থাপত্যের রয়েছে মানবসেবায় নিয়োজিত হওয়ার অফুরন্ত সুযোগ। তিনি লুই কানের স্থাপত্যকর্মে এই সম্ভাবনা দেখতে পেতেন। ওয়ারেস বলতেন : ‘স্থাপত্যের মাধ্যমে সমাজের উপকার করার মানসিকতা তৈরি করতে হলে আগে আত্মত্যাগের মানসিকতা তৈরি করতে হবে, সে-কারণে স্থপতিদের প্রথমে ভালো মানুষ হতে হবে, আর ভালো কিছু করতে গেলে কাজের প্রতি ভক্তি থাকতে হবে।’
শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে সামসুল ওয়ারেসের একধরনের মেটাফিজিক্স ছিল। তাঁর কাছে স্থাপত্য ছিল একটি জীবনধারা, জীবনের বিমূর্ত অবয়ব। তাঁর ছাত্র হিসেবে এই ধারণাগুলো আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক মানসিক গঠনের মূল চালিকাশক্তি ছিল। আমাদের তরুণ মনে তিনি ছিলেন আমাদের নিজস্ব প্লেটো, যিনি আমাদের সচেতন করতেন দুই ধরনের জ্ঞানচর্চা সম্পর্কে : প্রাকটিকোস (ব্যবহারিক জ্ঞান) আর নোসটিকোস (জানা)। তাঁর আধুনিকতার সংজ্ঞা ছিল : সত্যের আপসহীন অনুসন্ধান। পশ্চিমা বিশ্বে উনিশশো আশি আর নব্বইয়ের দশক থেকে পোস্টমডার্ন আর পোস্টকলোনিয়াল বুদ্ধিজীবীরা truth বা সত্যের ন্যায্যতা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন। বইয়ের পরে বই প্রকাশিত হয়েছে, সত্য কি, কার সত্য, সত্য কি সর্বজনীন, এক হাজার বছর আগের সত্য কি বর্তমানের সত্য হতে পারে, সত্যের ধারণা দিয়েই কি সমাজের ক্ষমতাধরেরা সমাজ নিয়ন্ত্রণ করেছেন, এ-সম্পর্কিত তর্ক নিয়ে। গ্রামসি, ফুকো, দেরিদা, ডেলুজদের পরে সত্যের ধারণা নিয়ে অবারিত সংশয় তৈরি হয়েছিল। কিন্তু অনেকের মতোই, সামসুল ওয়ারেস সত্য অনুসন্ধানের প্রতি এক ধরনের নীরব আনুগত্য দেখিয়ে গেছেন সারাজীবন। এই অনুসন্ধানে
ভালো-মন্দের ধারণার মধ্যে একধরনের সুস্পষ্ট বিভাজন তিনি দেখতেন। এই আনুগত্য থেকেই তিনি ইতিহাসের প্রতি 888sport apk download apk latest versionশীল ছিলেন; কিন্তু মূল লক্ষ্য ছিল ভবিষ্যতের সংবেদনশীল বিনির্মাণ। এই কারণেই হয়তো তিনি প্রায়ই ডেনিশ অস্তিত্ববাদী দার্শনিক কিয়ের্কেগার্দের কথা মনে করিয়ে দিতেন : ‘জীবনকে পিছে ফিরে বোঝা যেতে পারে, কিন্তু জীবনকে ধারণ করতে হবে ভবিষ্যতের পথে থেকে।’ মনে পড়ে, ওয়ারেস স্যারের ইতিহাসের ক্লাসগুলো আমাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতো। কিন্তু এটাও বুঝতাম, ইতিহাসে ফিরে গিয়ে তিনি আসলে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা মোকাবিলার পুষ্টি জোগাচ্ছিলেন আমাদের।
সামসুল ওয়ারেস ইস্ট পাকিস্তান ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির (স্বাধীনতার পরে বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৬৮ সালে। চার বছর পর তিনি একই বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন, ছাব্বিশ বছর বয়সে। তিনি বড় হয়েছেন চাঁদপুরে, 888sport appর দক্ষিণ-পূর্বে, বঙ্গীয় বদ্বীপের দুই শক্তিধর নদীর সংযোগস্থলে। পদ্মা আর মেঘনার মিলন থেকে যে ভৌগোলিক প্রাচুর্য উৎসারিত হয়েছিল সেটার প্রভাব কি সেই অঞ্চলের মানুষের ওপরে পড়েছিল? এখানকার প্রকৃতির জল আর জমির খেলা কি সামসুল ওয়ারেসকে প্রভাবিত করেছিল? আমি অনেক সময় ভেবেছি, এই শিক্ষকের তীব্র আর তির্যক জীবনবোধের কোনো প্রাকৃতিক উৎস আছে কি না। তিনি স্নাতক ডিগ্রির পর আর প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা করেননি। তবে যতটুকু দেখেছি, তিনি সবসময় ছিলেন জ্ঞান-অনুসন্ধানী। তাঁর মধ্যে ছিল সহজাত প্রজ্ঞা, যা তাঁকে দিয়েছে যে-কোনো বিষয়কে বহুমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখার সক্ষমতা।
ছোটবেলা থেকে তিনি প্রকৌশল শিক্ষায় উৎসাহী ছিলেন। ১৯৬০ দশকের প্রথম দিকে 888sport appয় প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয় দেখতে এলে সেই স্বপ্ন নতুন মোড় নেয়। পূর্ব পাকিস্তানে তখন সবেমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক স্থাপত্যশিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। স্থাপত্যের খোঁজখবর নিয়ে তিনি বুঝতে পারেন এটাই তাঁর জীবনের লক্ষ্য। ষাটের দশক ছিল বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের সময় এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত। বাঙালির রাজনৈতিক ভবিষ্যতের রূপরেখা নির্মাণের লক্ষ্যে অবিচল পূর্ব পাকিস্তানের নেতৃবর্গ। এই দশক আন্তর্জাতিক ভ‚রাজনীতির কারণেও ছিল একটি অনিশ্চিত সময়। শীতল যুদ্ধের কারণে দুই পরাশক্তি বিশ্বময় তাদের প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ছিল। ১৯৬১ সালে, জন এফ কেনেডির প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ফরেইন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাক্টের মাধ্যমে উন্নয়নশীল নানা দেশে সামরিক আর বেসামরিক সহযোগিতা দিচ্ছিল। এই অ্যাক্টের মাধ্যমে ইউএসএআইডি নামে একটি সাহায্য সংস্থা তৈরি হলো। দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক গুরুত্বের কারণে যুক্তরাষ্ট্র এই সংস্থার মাধ্যমে তাদের মিত্র দেশ পাকিস্তানের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করছিল। শিক্ষাক্ষেত্র ছিল এগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৯৬২ সালে 888sport appয় তৎকালীন আহসানুল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ^বিদ্যালয়ে পরিণত করা হয়। ঠিক একই সময়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের প্রথম স্থাপত্যশিক্ষা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মূল কারণ ছিল দেশে স্থানীয় পেশাদার স্থপতির অভাব এবং বিদেশি স্থপতিদের ওপর অতিনির্ভরশীলতা। পাকিস্তানের শাসক আইয়ুব খানের ‘উন্নয়ন দশকে’ (১৯৫৮-১৯৬৮) অনেক নির্মাণ প্রকল্পে দেশীয় স্থপতিদের প্রয়োজন হচ্ছিল, যাঁদের বুঝতে হবে এই দেশের মাটি-মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা, এই দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের ধরন। বিদেশি স্থপতিরা অনেক সময় এসব বুঝতে পারতেন না।
দেশে স্থাপত্যশিক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের একদল স্থপতির নেতৃত্বে। টেক্সাস এঅ্যান্ডএম ইউনিভার্সিটির স্থাপত্যের অধ্যাপক রিচার্ড ভ্রুম্যান স্থাপত্য বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন ১৯৬১ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত। ভ্রুম্যান স্থাপত্য বিভাগের ভবন ডিজাইন করেন, যা ক্রমে পরিণত হয় এই দেশের স্থাপত্যশিক্ষার একটি প্রকৃতিবান্ধব প্রতীকে। 888sport app বিদেশি শিক্ষকের মধ্যে ছিলেন : জ্যাক ইয়ার্ডলি, ড্যানিয়েল ডানহাম, জোয়ান ওয়াল্ডেন, মেরি ডোনাল্ডসন আর মেরি ফ্রান্সেস ডানহাম। পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম দেশীয় স্থপতি মাজহারুল ইসলামও এই প্রতিষ্ঠানে পড়িয়েছেন। 888sport live chatী রশিদ চৌধুরী, হামিদুর রহমান এবং আব্দুর রাজ্জাক স্থাপত্য বিভাগে 888sport live chatকলা পড়াতেন। আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ বাংলা 888sport live footballে পাঠদান করেছেন। লুই কানের দুই সহকারী – রয় ভোলমার আর গাস লাংফোর্ড – মাঝে মধ্যে ডিজাইন পড়িয়েছেন। স্থাপত্য বিভাগের এই সময়টা ছিল জীবনীশক্তিতে ভরপুর। পরিবেশ ছিল কসমোপলিটান। অনুপ্রাণিত হওয়ার সব উপকরণ ছিল উপস্থিত।
সামসুল ওয়ারেস ছিলেন এই দেশে স্থাপত্যশিক্ষার প্রথম স্রোতের ফসল। ষাটের দশকের কসমোপলিটান সংস্কৃতি তিনি আত্মস্থ করেছিলেন। পাশ করে বেরুনোর পরে স্থপতি মাজহারুল ইসলামের অফিস ‘বাস্তুকলাবিদ’-এ কাজ করেন বেশ কয়েক বছর। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, ১৯৭২ সালে, স্থাপত্য বিভাগে যোগ দেন প্রভাষক হিসেবে। প্রথম থেকেই তাঁর পড়ানোতে প্রকাশ পেত বহুবিষয়ভিত্তিক এবং কসমোপলিটান সংবেদনশীলতা। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সত্তরের দশক স্থাপত্যচর্চার জন্য ছিল অনুর্বর। তৎসত্তে¡ও ওয়ারেস ওই সময়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন : বুয়েটের ভিসির বাংলো (১৯৭৫-৭৭) আর শাহবাগে শিশু পার্ক (১৯৭৮-৭৯), যেটা ছিল দেশের প্রথম বিনোদন পার্ক। এ-দুটো প্রকল্প সংবেদনশীল স্থপতি হিসেবে তাঁর পরিচয়কে সংহত করে।
একজন পেশাদার স্থপতি হিসেবে খ্যাতি বিস্তারের পরও সামসুল ওয়ারেসের মূল সামাজিক পরিচয় ছিল, তিনি একজন শিক্ষক। তিনি তাঁর পেশাদারি কাজ নিয়ে খুব একটা কথা বলতেন না, বা চাইতেনও না। কিন্তু কেন তা বলা মুশকিল। কিন্তু নিশ্চিতভাবেই, তাঁর শ্রেণিকক্ষ ছিল আমাদের জ্ঞান আহরণের অন্যতম জায়গা, অনুভূতিটা ছিল কিছুটা ইলেকট্রিক, কিছুটা ভয়ের (তিনি ইয়ার্কি-ফাজলামি একেবারেই পছন্দ করতেন না), আর তীর্থস্থানে যাওয়ার বাসনার মতো একটা ঘটনা। ওয়ারেস স্যারের প্রশংসা পেলে জীবন যেন ধন্য। তাঁর ছোটখাটো শারীরিক গড়ন কিন্তু বিশাল ব্যক্তিত্ব শ্রেণিকক্ষে আনতো একধরনের রহস্য, বুদ্ধিবৃত্তিক চাঞ্চল্য। তাঁর ডিজাইন স্টুডিওতে আমরা আত্মসমালোচনার নতুন নতুন দৃষ্টিভঙ্গি খুঁজে পেতাম। মাঝে মধ্যে বুঝতাম না তিনি কী বোঝাতে চাচ্ছেন। কিন্তু সেই না বোঝার মধ্যেও আমরা পেতাম কৌতূহলী হওয়ার প্রেরণা।
ডিজাইন শিক্ষার বাইরে সামসুল ওয়ারেসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ক্লাস ছিল আধুনিক 888sport live chatকলার ইতিহাস। এই ক্লাসটি আমাদের মধ্যে 888sport live chatকলাকে নতুন করে দেখার আর বোঝার চেতনা তৈরি করেছিল। ফরাসি 888sport live chatী ক্লদ মোনের বিখ্যাত 888sport live chatকর্ম ইম্প্রেশন, সানরাইজ (১৮৭৩) নিয়ে তাঁর গল্প এখনো মনে আছে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে, ১৮৬০-৭০-এর দশকে, ফরাসি বন্দর-জীবনের পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে, দ্রুত ব্রাশ স্ট্রোকে আঁকা এই ছবিটি আক্ষরিক দৃশ্য পরিবেশনায় উৎসাহী ছিল না, বরং এটি সচেষ্ট ছিল পানিতে সূর্যোদয়ের আলো-খেলার সময়নির্ভর ইম্প্রেশনকে ফুটিয়ে তুলতে। তখন এই ধরনের চিত্র888sport live chatের কোনো ধারা নেই। একেবারেই আনকোরা। ফরাসি প্রাতিষ্ঠানিক 888sport live chatবোদ্ধাদের নিন্দা-সমালোচনায় ইম্প্রেশনিজম একধরনের পরিত্যাজ্য চিত্র888sport live chatের তকমা নিয়ে যাত্রা শুরু করে। কালক্রমে ইম্প্রেশনিজম আধুনিক চিত্র888sport live chat আর আধুনিকতার অন্যতম পরিচয়বাহী ধারা হিসেবে পরিণত হয়। কবি শার্ল বোদলেয়ারের রচনা ‘আধুনিক জীবনের বীরত্ব’ তাঁদের সময়ের মুখপাত্র হতে ফরাসি 888sport live chatীদের উদ্বুদ্ধ করে। বোদলেয়ার বলতেন, প্রাচীনকালের বীরত্ব আরো একবার বলার দায় তাদের নয়, হওয়া উচিত নয়। ফ্রান্সিস গয়া থেকে পাবলো পিকাসো, পল সেজান থেকে ভিন্সেন্ট ভ্যান গগ – সামসুল ওয়ারেসের ক্লাস ছিল পশ্চিমা আধুনিকতার প্রাণবন্ত ইতিহাস জানার দারুণ এক সুযোগ। অনেক বছর পরে অবশ্য ভেবেছি, পূর্বের 888sport live chatীরাও ঊনবিংশ শতাব্দীতে আধুনিকতার অন্তর্দ্ব›দ্বকে কিভাবে আলিঙ্গন করেছিলেন, সেটাও আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত ছিল।
সামসুল ওয়ারেসের 888sport live chatকলার ইতিহাস ক্লাসটি নেওয়ার পর আমরা বুঝেছিলাম আধুনিকতা বলতে তিনি কি বোঝাতে চাইতেন। আধুনিকতার অভ্যন্তরীণ বৈপরীত্য আর এর প্লেটোনিক-নান্দনিক দার্শনিকতার প্রতি অনুগত হওয়ার মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। আশির দশকে এই চেতনা ছিল স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কাটার মতো, কারণ আধুনিকতার মূল ধারণাগুলো – যেমন, যৌক্তিকতা, বুদ্ধির মুক্তি, সত্যের প্রাধান্য, জ্ঞানের শক্তি ইত্যাদি – তখন বিভিন্ন তাত্তি¡ক তর্কের সম্মুখীন। ১৯৬৮ সালে প্যারিস অভ্যুত্থানের পরে পোস্টমডার্নিজম আর পোস্টস্ট্রাকচারালিজমের বিদ্রোহী প্রবক্তাদের ডিসকোর্সগুলো আধুনিকতার তাৎপর্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে শুরু করে। বার্থ, ফুকো, দেরিদা, লটার্ড, দেলুজ আর তাঁদের অনুসারীরা বলতে থাকেন, আধুনিকতার সার্বিক বুদ্ধিবৃত্তিক কাঠামোয় অনেক অসংগতি রয়ে গেছে। তাঁরা আধুনিকতায় যৌক্তিকতার প্রাধান্যে অনেক ফাটল ধরান। স্থাপত্য তাত্তি¡ক চার্লস জেঙ্কস তাঁর দ্য ল্যাংগুয়েজ অফ পোস্ট-মডার্ন আর্কিটেকচার (১৯৭৭) বইটিতে স্থানহীনতা, ইতিহাসহীনতা আর বিমানবিকতার কারণে আধুনিক স্থাপত্যের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন। স্থাপত্য ইতিহাসবিদ কেনেথ ফ্র্যাম্পটন তাঁর ‘ক্রিটিক্যাল রিজিওনালিস্ম’ (১৯৮৩) রচনায় আধুনিকতার ধারণাকে সর্বজনীনতার খোলস থেকে বের করে এনে স্থানিক বৈশিষ্ট্য, জলবায়ু আর মাটি-মানুষের সংস্কৃতিকে বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সংযুক্ত করতে আবেদন জানান।
সামসুল ওয়ারেস আধুনিকতার এসব সমালোচনার সঙ্গে একমত হননি। তিনি মনে করতেন, আধুনিকতার ধারণা গতিশীল। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আধুনিকতা মানিয়ে চলে, মৃত্যু তো নয়ই, বরং আধুনিকতার জীবনীশক্তি খুঁজে পাওয়া যায় এর স্থিতিস্থাপকতার তীব্রতায়, তার আত্মবিনির্মাণের গতিশীলতায়। এখানে তিনি জার্মান দার্শনিক হাবারমাসের সঙ্গে যেন সহমত। হাবারমাস লেখেন : ‘আধুনিকতার পরাজয় স্বীকার না করে বরং এর অযৌক্তিক সমালোচনার তাত্তি¡ক দুর্বলতাগুলোকে ফুটিয়ে তোলা অতি প্রয়োজন।’ ওয়ারেসও হাবারমাসের মতো কখনোই আধুনিকতার ধারণায় আস্থা হারাননি।
স্বাধীনতা-উত্তর 888sport appsে আধুনিকতা নিয়ে বিভিন্ন তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। আশির দশকে 888sport appয় চেতনা নামে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক পাঠচক্র গড়ে ওঠে, যার নেতৃত্বে ছিলেন স্থপতি মাজহারুল ইসলাম। তিনি স্থাপত্যচর্চায় একধরনের ক্রিটিক্যাল পেডাগজি আর সমালোচনামুখী, আত্মসচেতন, ইতিহাস-সংবেদনশীল চিন্তাশীলতা আনতে চেতনার সদস্যদের উদ্যোগী হতে বলেন। এই পাঠচক্রের আস্তানা ছিল মাজহারুল ইসলামের অফিস, পরিবাগে ‘বাস্তুকলাবিদ’। দেশের চলমান স্থাপত্যপেশার অন্তঃসারহীনতা অনেক স্থপতিকে চেতনা পাঠচক্রের প্রতি আকৃষ্ট করে। রবীন্দ্রনাথ থেকে ল্য কর্বুসিয়ে, 888sport live football থেকে 888sport live chatকলা, স্থাপত্য থেকে সংগীত, এখানে আলোচনা হতো সংস্কৃতির সার্বিক অবকাঠামো নিয়ে। আরো কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে চেতনার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও সামসুল ওয়ারেস এখানে একটি বড় বুদ্ধিবৃত্তিক ভূমিকা রাখেন।
অনেক স্থপতি কিন্তু স্থাপত্যপেশাকে বেশি বুদ্ধিবৃত্তিক করার বিরোধী ছিলেন। তাছাড়া অনেকে চেতনা পাঠচক্রের চিন্তার আভিজাত্যের বিরোধিতা করেছিলেন এই ভেবে যে, বেশি বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা স্থাপত্যকে প্রায়োগিক প্রক্রিয়া থেকে দূরে ঠেলে দেবে। এসব বিরোধিতা সত্ত্বেও চেতনা ১৯৮০ আর ’৯০-এর দশকে স্থাপত্য888sport live chatে নতুন প্রাণশক্তি সঞ্চারিত করেছিল, যা 888sport appsে স্থাপত্যের বিবর্তনে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
নান্দনিক আধুনিকতা সব দেশে একই ধরনের অলংকারবিহীন, স্থানিক বৈশিষ্ট্যবর্জিত স্থাপত্য তৈরি করে বলে একটি অভিযোগ জোরালো হয়েছিল ১৯৭০ আর ’৮০-র দশকে। এই প্রেক্ষাপটে আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচারের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এই বৈশ্বিক 888sport app download bdটি স্থাপত্যে ইসলামের নান্দনিক প্রভাব, স্থানিক চরিত্র, সংস্কৃতি-সংবেদনশীলতা আর স্থানীয় নির্মাণকৌশলের প্রাধান্যকে উদ্বুদ্ধ করতে সচেষ্ট হয়। অনেক 888sport appsি স্থপতি আগা খান 888sport app download bdের স্থাপত্যিক আঞ্চলিকতার ম্যান্ডেট দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। আগা খান উদ্যোগের ফ্ল্যাগশিপ ম্যাগাজিন, মিমার, প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮১ সালে। এটিকে পথিকৃতের মর্যাদা দেওয়া যায় এই অর্থে যে, এটি ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক একটি ম্যাগাজিন, যা উন্নয়নশীল দেশের স্থাপত্যকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন করেছিল। এই ম্যাগাজিনটি অনেক 888sport appsি স্থপতি ও স্থাপত্যের শিক্ষার্থীকে বাঙালি স্থাপত্যের শেকড়-অন্বেষণে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
সামসুল ওয়ারেস স্থাপত্যে স্থানীয় বৈশিষ্ট্য খোঁজার প্রচেষ্টা থেকে একধরনের অভিজাত দূরত্ব রেখে চলতেন। স্থানিকতার আক্ষরিকতাকে বর্জন করে তিনি স্থানের বিমূর্ত আর সর্বজনীন বহিঃপ্রকাশকে সত্যের অনুসন্ধানের সঙ্গে সমার্থক ভাবতেন। যে অর্থে রবীন্দ্রনাথ বাংলার মানুষ, প্রকৃতি, নদী আর বৃষ্টিকে নিয়ে লিখতেন; কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই সবকিছুকে অতিক্রম করে একটি শাশ্বত মানবিকতার আবহে পৌঁছে যেতেন, ওয়ারেসও স্থানকে নিয়ে যেতে চাইতেন সর্বজনীনতার দোরগোড়ায়। সত্যজিৎ রায় তাঁর অপু ত্রয়ীতে (১৯৫০ দশকে) গ্রামবাংলাকে নিয়েই গল্প বলেছেন; কিন্তু শেষ পর্যন্ত উড়িয়েছেন মানবিকতার পতাকা। এ-কারণেই পথের পাঁচালি (১৯৫৫) শ্রেষ্ঠ মানবিকতার দলিল হিসেবে 888sport app download bd পায় কান live chat 888sport উৎসবে। এসব উদাহরণ থেকে সামসুল ওয়ারেসের দর্শনের ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে। তিনি স্থানকে প্রত্যাখ্যান অথবা মহিমান্বিত কোনোটাই করেননি। বরং গেয়েছেন স্থানের নির্মোহ, শাশ^ত জয়গান।
রাজনৈতিকভাবে অস্থির সময় হলেও ১৯৭০ আর ’৮০-র দশকে স্থাপত্য888sport live chatে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছিল।
১৯৬০-এর দশকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম পেশাদার বাঙালি স্থপতি মাজহারুল ইসলাম আর পশ্চিমা বিশ্ব থেকে আগত লুই কান, কনস্টান্টিনোস ডক্সিয়াদিস, ড্যানিয়েল ডানহাম, রবার্ট বুই, পল রুডলফ আর স্ট্যানলি টাইগারম্যানদের স্থাপত্য স্বাধীনতা-উত্তর 888sport appsে একটি সুস্থ স্থাপত্যধারা তৈরি করেছিল। একটি জাতীয় নান্দনিক চরিত্র গঠনে এই ধারার অবদান কোনোভাবেই ছোট করে দেখা যাবে না। ১৯৭৮ সালে জাতীয় 888sport sign up bonusসৌধ নির্মাণ প্রতিযোগিতায় ২৭ বছর বয়সী স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেইন বিজয়ী হন তাঁর কংক্রিট ত্রিভুজ প্লেটের আকাশমুখী, উড্ডয়নশীল প্রকল্পটি নিয়ে। তাঁর এই প্রকল্প যেন মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের প্রতি করজোরে 888sport apk download apk latest versionর্ঘ্য অর্পণ। স্থপতি রবিউল হুসাইনের 888sport apps কৃষি গবেষণা কাউন্সিল ভবন যেন একটি ইটের তৈরি বাঙালি পার্থেনন। আড়াই হাজার বছর আগে, পেরিক্লেসের আমলে এথেন্সের অ্যাক্রোপলিসের ওপরে নির্মিত পার্থেনন যেন ফিরে এসেছে রবিউল হুসাইনের ইটের 888sport app download apkয়। অন্য স্থপতিদের মধ্যে বশিরুল হক, খাদেম আলী, মাহবুবুল হক, খাইরুল এনাম, মনজুর আহমেদ টুকু আর মিজানুর রহমান খানদের স্থাপত্য 888sport appsের স্থাপত্যে গতিশীলতা দেয়।
এই সময়ে সামসুল ওয়ারেসের স্থাপত্যকর্ম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৭০-এর দশকে, বুয়েট ভাইস চ্যান্সেলরের বাসভবন আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিশু পার্কের পরে তিনি 888sport appয় পাকিস্তান আমলের বোটানিক্যাল গার্ডেনে একটি গ্রিনহাউস, বাউন্ডারি দেয়াল এবং নিরাপত্তা প্রহরী ও মালিদের জন্য বাসভবন ডিজাইন করেন (১৯৮২)। স্থপতি হিসেবে তিনি ধীরে ধীরে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। ১৯৮০ আর ১৯৯০-এর দশকে তাঁর মূল পেশাদারি পরিচিতি তৈরি হয় এক-পরিবারের বাড়ির স্থপতি হিসেবে। এই সময়ে 888sport appsের অর্থনীতির গতিশীলতা আর দ্রæত নগরায়ণের ফলে একটি কসমোপলিটান মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব হয়, যাঁরা তাঁদের বাড়ি নির্মাণের জন্য স্থপতির অফিসে হাজির হতে শুরু করেন। স্থপতি দিয়ে তৈরি করা বাড়ি কিছু উচ্চবিত্ত আর মধ্যবিত্ত পরিবারের সামাজিক উত্তরণের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। সামসুল ওয়ারেসের হানিফ ভবন (১৯৮৪-৮৬), কামাল ভবন
(১৯৮৬-৮৮), ওয়াহিদ ভবন (১৯৮৮-৯০), আজিম ভবন (১৯৮৮-৯৪), আতিক ভবন (১৯৯০-৯৪) আর বশির ভবন (১৯৯৩-৯৪) বিত্তশালী শ্রেণির নান্দনিক আভিজাত্যের বহিঃপ্রকাশের উদাহরণ হিসেবে দেখা যেতে পারে। এই বাড়িগুলোতে আমরা দেখতে পাই জ্যামিতিক অনুপাতের বিন্যাস, ভাস্কর্যিক সারল্য এবং ভল্যুমেট্রিক গঠন। সামষ্টিকভাবে এই বাড়িগুলো 888sport appsের স্থাপত্যের বিবর্তনে একটি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে 888sport appsে নগরায়ণের রাজনৈতিক অর্থনীতির কারণে ওয়ারেসের কিছু বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে আরো উঁচু ভবন নির্মাণের তাগিদে।
সামসুল ওয়ারেসের স্থাপত্যকর্ম শুধু আবাসিক ভবনে সীমাবদ্ধ নয়, তাঁর পরিকল্পনা করা 888sport apps লাইভস্টক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (১৯৮৪) মাস্টারপ্ল্যান গ্রামীণ জীবন আর বসতির ধারণাকে একটি আধুনিক রূপ দেয়। সারিবদ্ধ এখানকার প্রতিটি ক্লাস্টারে চারটি করে দোতলা, দোচালা বাড়ি গ্রামীণ কুটিরের আধুনিকায়ন হিসেবে দেখা হয়েছে। প্রকৃতির প্রতি ওয়ারেসের মনোযোগ আর সংবেদনশীলতা বুঝতে হলে তাঁর ডিজাইন করা ফুলার রোডে অবস্থিত উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (১৯৮৪) দিকে তাকানো যেতে পারে। যে আশির দশকে স্থপতিদের মধ্যে প্রকৃতি-সচেতনতা খুব একটা দেখা যেত না, সেই সময়ে তিনি বিদ্যালয়ের সীমানার কাছে একটি তেঁতুল গাছ কাটতে না দিয়ে বরং এটিকে যেন ভবন থেকে সুস্পষ্টভাবে দেখা যায় সেই চেষ্টা করেছেন। এই গাছটি প্রকৃতির প্রতীক হয়ে যেন এই বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে রবীন্দ্রনাথের বলাই চরিত্রের অবি888sport app download for androidীয় গল্পটি মনে করিয়ে দেয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে সিনেমা হল (১৯৮৩), খুলনায় বিভাগীয় মিউজিয়াম (১৯৮৭) আর বহু-পরিবারের নাফিসা চৌধুরী আবাসিক ভবন (১৯৮৮-৮৯) – যদিও সেগুলি নির্মিত হয়নি, সামসুল ওয়ারেসের জ্যামিতিক মুনশিয়ানা, সাবলীল পরিসর তৈরিতে পারদর্শিতা আর জলবায়ু-সচেতনতার নিদর্শন হিসেবে পরিগণিত হতে পারে। গাজীপুরে একটি পুকুরের ধারে তিনতলা ভ্যাকেশন হাউসের (২০১০) কিউবিক্ল ভলিউম, ইট আর কংক্রিটের কাব্যিক সংমিশ্রণ, আলো-ছায়ার খেলা, অন্দর-সদরের জড়াজড়ি – এখানে সামসুল ওয়ারেসের বিমূর্ত আধুনিকতা গ্রামীণ আবহে আরেক রূপে ফুটে ওঠে।
আমি মনে করি, একজন শিক্ষক আর স্থপতি হিসেবে সামসুল ওয়ারেসের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো, জীবন আর স্থাপত্য দুটোকেই শেষ ফসল হিসেবে না দেখে এদেরকে চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে দেখার সাহস। ওয়ারেস প্রায়ই বলতেন : ‘কেউ যদি বলে যে সে জীবনে যা অর্জন করেছে তাতে সে সার্থক, তাহলে বুঝতে হবে এই মানুষটি আসলে জীবিত হয়েও মৃত, একজন সৃষ্টিশীল মানুষ কখনোই তার কাজে পরিপূর্ণভাবে তৃপ্ত হতে পারে না, অতৃপ্তির ভেতরেই লুকিয়ে থাকে সৃষ্টিশীলতার চালিকাশক্তি।’
সম্প্রতি আমি ওয়ারেস স্যারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, একজন সদ্য গ্র্যাজুয়েট হওয়া স্থপতির জন্য একটি বই সুপারিশ করতে পারেন কি না? তিনি যে উত্তর দিয়েছিলেন তা ছিল মগজ-ঝাঁকুনি দেওয়া সুন্দর। তাঁর বক্তব্য ছিল এমন : ‘যদি এই বই স্থাপত্য সম্পর্কিত হয় তাহলে আমার পক্ষে একটি মাত্র বইয়ের নাম বলা সম্ভব নয়, কারণ একটি বই যেটি অন্য সব বইকে অতিক্রম করে যাবে সে রকম বই নেই, কারণ এই যুগে স্থাপত্যের সংজ্ঞা বহুমুখী আর প্রসারিত। একটি মাত্র বই আজকের স্থাপত্যের মাল্টিডিসিপ্লিনারি ধারণার জন্য অপ্রতুল। যদি আপনি তিরিশ বছর আগে এই প্রশ্ন করতেন, তাহলে হয়তো বলতাম সিগফ্রিড গিডিএনএ’র স্পেস, টাইম অ্যান্ড আর্কিটেকচার (১৯৪১) পড়–ন। কিন্তু আজকে এটা আর বলতে পারবো না। যদি একটি বইয়ের কথা বলতেই হয়, তাহলে বলবো একটি 888sport alternative link পড়ুন। সেটা হলো, লুইগি বার্তোলিনির দ্য বাইসাইকেল থিফ (১৯৪৬)।’ বার্তোলিনির 888sport alternative linkে ফুটে উঠেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী রোমের নগরজীবনের উদ্বেগ আর হতাশার চিত্র, যাকে ভিত্তোরিও ডে সিকা পরিণত করেছেন একটি তীক্ষ্ন-তির্যক নিওরিয়ালিস্ট live chat 888sportে (১৯৪৯)। এই ছবিতে আমরা দেখি রোম যেন একটি মঞ্চ আর নগরের মানুষগুলো সেই মঞ্চে একেকটি চরিত্র। একজন দরিদ্র বাবা তার সাইকেল হারিয়ে যাওয়ার পরে অন্যের সাইকেল চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায়, চোখের সামনে বাবার অপমান দেখে করুণ অসহায়ত্বে তাকিয়ে থাকে তার শিশুপুত্র। সাধারণ গল্প, কিন্তু অসাধারণ মানবিক পরিবেশনা। সামসুল ওয়ারেস কেন এই বইটি সুপারিশ করেছিলেন? হয়তো বা একজন নতুন স্থপতিকে স্থাপত্যের সরাসরি একটি বইয়ের পরামর্শ দেওয়া খুব সংকীর্ণ অথবা উপদেশমূলক মনে হতে পারে। বরং একজন নব্য স্থপতির জন্য হয়তো প্রয়োজন সমাজকে বিভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা আর বোঝা। সমাজের মানবিক যুদ্ধগুলো হয়তো দিতে পারে স্থাপত্যচেতনায় নতুন মাত্রা। মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার বিশ্লেষণ করতে হয়তো বা 888sport live football হতে পারে শিক্ষার অন্যতম ভিত্তি। এখানেই সামসুল ওয়ারেসের অপরিহার্য কসমোপলিটানিজম, শিক্ষক হিসেবে তাঁর বিচক্ষণ জীবনবোধ, ছাত্রদের জ্ঞান-অন্বেষায় তাঁর অবারিত বিনিয়োগ।
অ্যারিস্টটল একবার বলেছিলেন : ‘যারা জানে, তারা করে, যারা বোঝে, তারা পড়ায়।’ সামসুল ওয়ারেস বোঝেন, তাই পড়ান। তাঁর ছাত্র হওয়া একটি সৌভাগ্যের বিষয় ছিল। ৎ
সামসুল ওয়ারেস
স্থপতি ও 888sport live chatসমালোচক। জন্ম ১৯৪৬ সালের ২১শে জানুয়ারি। ১৯৬৮ সালে 888sport apps প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি কর্মজীবনে বিংশ শতকের শ্রেষ্ঠ পুরকৌশলী ফজলুর রহমান খান এবং প্রথিতযশা স্থপতি মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে কাজ করেছেন। এছাড়া বিশ্বখ্যাত স্থপতি লুই আই কানের জীবন নিয়ে নির্মিত ‘মাই আর্কিটেক্ট : এ সন’স জার্নি’তে তাঁর সাক্ষাৎকার স্থান পেয়েছে। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত স্থপতি মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে বেশ ভবনের নকশা প্রণয়নে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭২ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত 888sport apps প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। বর্তমানে স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ 888sport appsের ডিন ও হেড প্রফেসর হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ইত্যাদিসহ অনেক সরকারি সংস্থার কারিগরি উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। দুবার 888sport apps স্থপতি ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। 888sport apps জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের সদস্য। সম্মাননা : 888sport apps স্থপতি ইনস্টিটিউটের আজীবন সম্মাননা, 888sport apps জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের সাবেক সদস্য। উল্লেখযোগ্য স্থাপত্যকর্ম : জাতীয় শিশুপার্ক, বোটানিক্যাল গার্ডেন ইত্যাদি।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.