888sport live footballের চাহিদা

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

যথার্থ 888sport live football বারবার পড়া যায়, কখনোই পুরাতন হয় না। উলটো প্রতিপাঠেই নতুন চেহারায় ধরা দেয়। এর কারণ 888sport live footballের ভেতর একটা রহস্য থাকে। রহস্যটা কী? থাকে সে কোথায়? সেসব কথা একেবারে পরিষ্কার করে বলা যাবে না, বলতে গেলে কারণের একটা ফর্দ তৈরি করতে হবে। ফর্দে উল্লেখ থাকবে লেখকের কল্পনার, তাঁর অনুভূতির, এবং তাঁর দর্শনের। কোনটা আগে, কোনটা পরে সেটার মীমাংসাও একটা সমস্যা। কারণ ওই তিনটি মিলেমিশে যায়, অভেদ্য হয়ে পড়ে। তবে এটা খুবই সত্য যে, দর্শন ছাড়া 888sport live football নেই। সাংবাদিকতা যে 888sport live football নয়, তার প্রধান কারণ ওই দর্শন। সাংবাদিকতা দর্শনকে এড়িয়ে চলে, ওদিকে দর্শনের সন্ধান না পেলে 888sport live footballের একেবারেই চলে না। তা দর্শন বলতে আমরা কী বোঝাবো? দর্শনের মূল কথাটা হচ্ছে জীবন ও জগতের ব্যাখ্যা। সে-ব্যাখ্যা অন্যত্রও পাওয়া যায়, কিন্তু দর্শনের ব্যাখ্যাটা আসে যুক্তির পারম্পর্যের ভেতর দিয়ে। এখানে তার আত্মীয়তা আছে 888sport apkের সঙ্গে। কিন্তু 888sport apk যে-পরিমাণে নৈর্ব্যক্তিক দর্শন সে-পরিমাণে নৈর্ব্যক্তিক নয়। দর্শনের চরিত্রটা সর্বদাই মানবিক, এবং মানুষের অমঙ্গল যদি করে ফেলে তাহলেও সে মানবিকতার গুণ ও সীমা লঙ্ঘন করে না। এই মানবিকতাই 888sport live footballকে দর্শনাভিমুখী করে তোলে।

দুই
888sport app download apkই প্রথমে এসেছে, তার পরে দর্শন। কিন্তু 888sport app download apk দর্শনকে খুঁজেছে। যদিও দুয়ের মধ্যে ব্যবধান বিস্তর – জন্মসময়গত যতটা, তার চেয়ে অনেক বেশী চরিত্রগত। 888sport app download apkর তথা 888sport live footballের উপজীব্য হচ্ছে বিশেষ; দর্শনের উপজীব্য নির্বিশেষ। তাদের অবলম্বন ভিন্ন ভিন্ন; 888sport live football বিশ্বাস করে সংশ্লেষণে, দর্শনের আগ্রহ বিশ্লেষণে। তবু 888sport live footballের জন্য দর্শনানুসন্ধান অপরিহার্য। কেননা, মানুষের বিশেষ অনুভূতিগুলোর প্রবণতা থাকে নির্বিশেষ সাধারণীকরণের দিকে; সব সময়েই তাই দেখা যায় তারা কোনো জ্ঞানের অভিমুখে যেতে চাইছে। অন্যদিকে আবার দর্শন যদিও বিশ্লেষণধর্মী ও চিন্তানির্ভর, তথাপি দর্শন 888sport apk নয়, 888sport apkের মতো খ- খ- করে অবলোকন করে না সে জীবন ও জগৎকে; সংলগ্ন ও ঐক্যবদ্ধ করতে চায়, অনেক সময় আকাক্সক্ষা রাখে সমগ্রকে ব্যাখ্যা করবে একক কোনো মানদ-ে। তবে সত্য থাকে এটা যে, দর্শনের তবু 888sport live footballকে বাদ দিলে চলে, কিন্তু 888sport live football কখনো চলতে পারে না দর্শনকে বাদ দিয়ে।
তাই দেখি ইন্দ্রিয়সংবেদী কবি, কীটস, চরমভাবে যিনি আস্থা রেখেছিলেন ংবহংধঃরড়হং-এ, তিনিও বারংবার বলছেন দর্শনের কথা, ভয় পাচ্ছেন চিন্তাবিহীন অনুভবকে, দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন মননশীলতার দিকে, এবং গভীরতম অনুভবশক্তির প্রকাশে-সমৃদ্ধ 888sport app download apkসমূহেও অনুপ্রাণিত দার্শনিক উক্তি করছেন। সেটা একটা দিক। অপরদিকে এও অনিবার্য সত্য যে, কোনো মানুষই তার সমসাময়িক দার্শনিক আবহাওয়ার বাইরে নয়, লেখক তো ননই। যেমন করে প্রাকৃতিক জলবায়ু প্রভাবিত করে মানুষের দৈহিক স্বাস্থ্যকে, ঠিক তেমনিভাবে দার্শনিক আবহাওয়া প্রভাব রাখে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর। এই প্রভাব একজন লেখক অন্য মানুষের তুলনায় অধিক পরিমাণে গ্রহণ করেন, কেননা লেখক সাধারণ-মানুষের তুলনায় অধিক সংবেদনশীল, গ্রহণসমর্থ। টেনিসনের ‘ইন মেমরিয়াম’ 888sport app download apkয় বিবর্তনবাদী চিন্তার উপস্থিতি কোনো গোপন ব্যাপার নয়; এই 888sport app download apk কিন্তু লেখা হয়েছিল ডারউইনের বিবর্তনতত্ত্বের বই প্রকাশের নয় বছর আগে। ডারউইনের বই প্রকাশের পূর্বেই বিবর্তনবাদী চিন্তা অগ্রসর হয়ে এসে পৌঁছেছিল অগ্রসর মানুষের মনে, এবং সেই অগ্রসর চিন্তা থেকে দূরে ছিলেন না কবি টেনিসন, মূলত যিনি সৌন্দর্যপিপাসু; বিশেষ দক্ষতা যাঁর দার্শনিক ভাবনার চঞ্চল অনুসরণে নয়, অনুভবের অচঞ্চল চিত্রায়ণে।
জীবনানন্দ দাশ ও জসীমউদ্দীন পরস্পরের সমসাময়িক। দুজনেই পূর্ববঙ্গের মানুষ, শ্যামল ও সিক্ত প্রকৃতির প্রতি দুজনেরই গভীর ভালোবাসা। কিন্তু তাঁদের 888sport app download apkয় যে পারস্পরিক দূরতিক্রমণীয় ব্যবধান তার কারণটা মূলত দার্শনিক। সময়কে জয় করবার প্রয়োজনে বিপন্ন জীবনানন্দ যে একটি ইতিহাসচেতনা নীরবে গড়ে তুলেছিলেন নিজের মতো করে, জসীমউদ্দীনের লেখায় তেমন কোনো দর্শনানুসন্ধান আমরা পাবো না। এখানে জীবনানন্দ বড় জসীমউদ্দীনের তুলনায়; একই সঙ্গে তিনি বৈচিত্র্যপূর্ণ ও গভীর। অথবা ধরা যাক কাজী নজরুল ইসলামের কথা। বড় মাপের কবি তিনি। কিন্তু মনে হবে 888sport app download apkয় তিনি বড়ই অগোছালো, অনেক সময় স্ববিরোধী। আসলে নজরুল ইসলামের ভেতরে ন্যায়-অন্যায়ের প্রকারভেদের বোধ আছে, রয়েছে সুন্দর জীবনের জন্য আকাক্সক্ষা, আর তার বিপরীতে অসুন্দরের জন্য প্রবল ঘৃণা। দেখা যাবে প্রবহমান ঘটনা ও নির্যাতিতের দুঃখের ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত আগ্রহী। সব মিলিয়ে একটি দার্শনিকতা রয়েছে, যেমনটা আমরা পাই ইংরেজি রোমান্টিক কবিদের লেখায়। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় যে একজন কালজয়ী 888sport live footballিক সে কেবল হৃদয়গ্রাহী ও কৌতূহলোদ্দীপক গল্প বলার দরুন নয়, আরো বড় কারণ তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি, যাতে রয়েছে মানুষের জন্য গভীর মমতা; এবং যে-দৃষ্টিটি উল্লেখযোগ্য এই বৈশিষ্ট্যের কারণেও বটে যে, এতে একই সঙ্গে রয়েছে সামন্তবাদের প্রতি ঘৃণা ও ভালোবাসা।
রবীন্দ্রনাথের 888sport live footballে সৃজনীকল্পনা ও দার্শনিকতা একেবারে হাত ধরাধরি করে আছে। একই সঙ্গে তিনি ইহজাগতিক ও আধ্যাত্মিক। তাঁর রচনায় রক্ত-মাংসের মানুষেরা রয়েছে, তাদের নিজস্ব দাবি নিয়ে। বহু বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক কৌতূহল। সমসাময়িক জগৎ ও ঘটনা সম্পর্কে তিনি সজাগ, যেমন সচেতন তিনি অতীত ইতিহাস বিষয়ে। গতির প্রতি তাঁর স্বাভাবিক পক্ষপাত। অন্যদিকে আবার রয়েছে তাঁর ধর্মচেতনা। তিনি উপনিষদের উত্তরাধিকারী। ধর্ম তাঁকে সাম্প্রদায়িক করে নি, বরঞ্চ বাংলা 888sport live footballকে তিনি যে-পরিমাণে অসাম্প্রদায়িক করে গেছেন তার আগে তেমনটি আর কেউ করতে পারেন নি। আধ্যাত্মিকতার প্রতি তাঁর স্বাভাবিক টান। এবং এও মোটেই তাৎপর্যহীন নয় যে, তাঁর গান যেমন ভারতের তেমনি 888sport appsে জাতীয় সংগীত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের বহুমুখিতা ও বৈচিত্র্যকে ধারণ করে রয়েছে একটি দার্শনিকতা, যেটি ছাড়া তাঁর 888sport live footballকে ভাবাই যায় না। রবীন্দ্র888sport live football অবশ্যই আদর্শ-নিরপেক্ষ নয়, রবীন্দ্রনাথ অত্যন্ত গভীরভাবে আদর্শবাদী।
888sport live footballিক-শ্রেষ্ঠ শেক্সপীয়র মত-প্রচারক ছিলেন না আদৌ, কোনো বিশেষ দার্শনিক মতবাদের স্থিরপ্রতিজ্ঞ উপস্থাপকও নন তিনি; জীবনের জটিলতাকেই নাট্যায়িত করেছেন এই লেখক – নিরাসক্ত পক্ষপাতবিহীন অবস্থানে দাঁড়িয়ে। তিনি দার্শনিক নন – দান্তে নন, গ্যেটে নন, নন টলস্টয়, কিন্তু তাই বলে কি তাঁর রচনায় জীবনের কোনো ব্যাখ্যা নেই, চিন্তা নেই গভীরতম? অবশ্যই আছে। বস্তুত শেক্সপীয়রের রচনায় অনুভূতি ও চিন্তাশক্তি – এ দুই শত্রুর মধ্যে জীবনমরণ, সামনাসামনি, সমান-সমান মল্লযুদ্ধের যে চিত্র কবি-সমালোচক কোলরিজ দিয়েছেন তা অসত্য নয় মোটেই। সাদায়-কালোয় জীবন আঁকেন নি তিনি, শুভ ও অশুভ সর্বক্ষণ আছে তাঁর লেখায়, আছে তাদের ক্ষান্তিহীন রক্তাক্ত দ্বন্দ্ব।
রেনেসান্স ও রিফরমেশনের যে দার্শনিক আবহাওয়ার মধ্যে শেক্সপীয়রের অবস্থান তা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর 888sport live footballে; শুধু প্রতিফলিত নয়, সেই আবহাওয়া গভীরতর ও সমৃদ্ধতর হয়ে উঠেছে তাঁর রচনার মধ্য দিয়ে। ঈশ্বর নয়, মানুষই থাকবে বিবেচনার ও মূল্যবোধের কেন্দ্রভূমিতে – এই দর্শন রেনেসান্স শিখিয়েছে তাঁকে। মানুষের চরিত্র যে অপার বিস্ময়ের এক রহস্যলোক, এই বোধও ওই রেনেসান্সেরই। রিফরমেশন দৃঢ়তর করেছে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের এই চেতনাকে, ধর্মের ক্ষেত্রে বিবেকের স্বাধীনতাকে স্বীকার করে নিয়ে। সেই সঙ্গে ধর্মনিহিত মূল্যবোধকেও গ্রহণ করেছেন শেক্সপীয়র, এলিজাবেথীয়
জগৎ-দৃষ্টিকেও। স্পেনীয়দের পরাজিত করে এবং নাবিকদের সাহায্যে নতুন নতুন দেশ আবিষ্কার করায় যে বহির্মুখী উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছিল সেকালে তার প্রভাবও পড়েছে শেক্সপীয়রে। এক কথায় বলতে গেলে, ইহলৌকিকতার এবং জীবনকে নিরুদ্বেগে নির্দ্বিধায় গ্রহণের ফলে যে-একটি মানববাদী শক্তি তৈরি হয়েছিল, সেই শক্তিই আপন সৃজনক্ষমতা অবারিত করেছে শেক্সপীয়রের অসামান্য রচনাবলীর মধ্য দিয়ে। শেক্সপীয়রের ব্যক্তি-মনীষাকে খাটো করার আবশ্যকতা নেই, কিন্তু তাঁর মনীষা অবশ্যই একটি বিশেষ সামাজিক ও দার্শনিক পরিবেশের আনুকূল্যে বিকশিত হয়েছিল; সেই পরিবেশটি মোটেই উপেক্ষণীয় নয়। গ্রীক নাট্যকাররাও একটি বিশেষ আবহাওয়ার মানুষ, এবং তিনজন শ্রেষ্ঠ গ্রীক নাট্যকার যখন একই বিষয়ের ওপর তিনটি সম্পূর্ণ ভিন্ন নাটক রচনা করেন, তখন একটি বড় ও সাধারণ দার্শনিক পরিম-লের ভিতরে থেকেও তাঁদের নিজস্ব দার্শনিক অবস্থানের স্বাতন্ত্র্যকে উদ্ভাসিত করেন তাঁরা। কীটসের মধ্যে শেক্সপীয়রের গুণ ছিল। কিন্তু কীটসের তুলনায় শেক্সপীয়র যে বড় লেখক তার একমাত্র কারণ এটা নয় যে, শেক্সপীয়র দীর্ঘজীবন লাভ করেছিলেন কীটসের তুলনায়; কারণ এটাও যে, শেক্সপীয়রের দার্শনিকতা গভীরতর ছিল কীটসের অপেক্ষা। ট্র্যাজেডি গীতি888sport app download apkর চাইতে উচ্চতর রূপকল্প – দার্শনিক গভীরতার কারণে।
মূল কথা দাঁড়ায় তাহলে এরকম। কোনো লেখকই দার্শনিক বলয়ের বাইরে নন – তখন তো ননই যখন তিনি সেই বলয়কে মান্য করেন, যেমন শেক্সপীয়র করেছেন; তখনো নন যখন তিনি তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন, যেমন মাইকেল মধুসূদন করেছিলেন।
মাইকেল প্রসঙ্গ এলে 888sport app download for android করা যায় যে, তাঁর ওপর হোমার-মিল্টনের 888sport live footballিক ও দার্শনিক প্রভাব সক্রিয় ছিল। সেই তুলনায় তাঁর লেখায় শেক্সপীয়রের প্রভাবটা পড়েছে কম। বাংলা 888sport live footballে শেক্সপীয়রের প্রভাব গভীর নয়। শেক্সপীয়রের মৃত্যুর এতো বছর পরেও বাংলায় তাঁর একই সঙ্গে সার্থক ও যথার্থ 888sport app download apk latest version হয় নি। এর কারণ ভাষাতাত্ত্বিক তো বটেই, তার চেয়েও অধিক পরিমাণে দার্শনিক।
যে-বিশেষ দার্শনিক পরিম-লে শেক্সপীয়রের অবস্থান, বাঙালীর মনন থেকে তার দূরবর্তিতা নিতান্ত সামান্য নয়। শেক্সপীয়রের দি টেমপেস্ট নাটক সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের মন্তব্যটি তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি লিখেছেন, ‘নাটকের নামও যেমন, তাহার ভিতরকার ব্যাপারও সেইরূপ। মানুষে প্রকৃতিতে বিরোধ এবং সেই বিরোধের মূলে ক্ষমতালাভের প্রয়াস। ইহার আগাগোড়া বিক্ষোভ।’ এই বিক্ষোভ পছন্দ হয় নি রবীন্দ্রনাথের। না-হওয়ার কারণটি নিছক ব্যক্তিগত নয়, ব্যক্তিগত হয়েও তা সমষ্টিগত ও আদর্শিক বটে।
এই আদর্শগত কারণেই আমাদের, বাঙালীদের পক্ষপাত গীতি888sport app download apkর প্রতি। নাটক এসেছে ধীরে ধীরে। এবং সেখানেও কমেডি প্রাধান্য পেয়েছে ট্র্যাজেডির তুলনায়। ট্র্যাজেডি চূড়ান্তরূপে ইহজাগতিক, অন্যপক্ষে বাঙালী জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্মভিত্তিক ভাববাদ শিক্ষা দেয় যে, জগৎ অনিত্য, নিত্য হচ্ছে মানুষের আত্মা ও তার পরকাল। ইহকালের দুর্ভোগ চূড়ান্ত নয়, বরঞ্চ এই দুর্ভোগের 888sport app download bd পাওয়া যাবে পরলোকে – এই যে ধারণা, এটি ট্র্যাজেডির জন্মবিরোধী। শুধু ভাববাদের কারণে নয়, দারিদ্র্যের কারণেও ‘মরলে বাঁচি’র জীবনদর্শন গড়ে উঠেছে এই দেশে। এই দর্শন ট্র্যাজেডির শত্রু; ট্র্যাজেডি মরার পরে বাঁচার কথা বলে না, বাঁচার মধ্যে বাঁচাকেই চরম ও চূড়ান্ত জ্ঞান করে। তপোবনে দ্বন্দ্ব নেই, কেননা সেখানে প্রতাপান্বিত অশুভ নেই। পারলৌকিক স্বর্গেও ওই একই ব্যাপার। আমাদের শুভ সংঘর্ষে যেতে চায় না অশুভের সঙ্গে, ফলে তার শক্তি কখনো যথার্থ রকমে বিকশিত ও সম্পূর্ণরূপে পরীক্ষিত হতে পারে নি। শুভ-অশুভের দ্বন্দ্ব নিতান্তই যখন অনিবার্য হয়ে ওঠে 888sport live footballে, নিরুপায় লেখক তখন পক্ষ নেন, বিপন্ন হয়ে। অশুভ তাঁর ব্যক্তিগত শত্রুতে পরিণত হয়েছে মনে হয়। তিনি সমবেদনা প্রকাশ করেন শুভের প্রতি, এমনকি অশ্রুপাতও করতে বলেন পাঠককে, যেমন শরৎচন্দ্র বলেছেন, দেবদাসের অন্তিম লাইনগুলোতে।
এই ভাববাদী ও তপোবনপ্রিয় চেতনায় ট্র্যাজেডি অনাহূত, স্বভাবতই। গিরিশ ঘোষ ম্যাকবেথ 888sport app download apk latest version করেছিলেন। তিনি নিজেই বলেছেন, ওই নাটক দু-চারদিনের বেশি চলে নি, শূন্য হয়ে গেছে রঙ্গালয়, পরে যখন ‘আবু হোসেন’ এলো, তখন যেন ভোজবাজি, আবার ভরে গেল আসনসমূহ। পাঠক-দর্শক হাসি চায়, পরিহাস চায়, চায় উৎফুল্লতা; চায় না দুর্ভোগ, চায় না দ্বন্দ্ব। আপন ঘরে দুর্ভোগ যার নিত্যসঙ্গী, কোন দুঃখে সে দুঃখকে খুঁজবে রঙ্গমঞ্চে। পয়সা দিয়ে?
শেক্সপীয়র 888sport app download apk latest version-ব্যর্থতার ভাষাতাত্ত্বিক কারণটাও দর্শননিরপেক্ষ নয়। ভাষা ওপর থেকে আসে না, নীচের থেকেই গড়ে ওঠে; ওপর থেকে এলেও টেকে না, টেকে তা-ই যা গড়ে উঠেছে নীচের প্রয়োজনে। বাংলা বাঙালী মানসেরই ভাষা। এই ভাষার 888sport apk-চর্চার ছাপ যেমন অল্প, তেমনি অল্প দর্শনচর্চার ছাপও। কারণটা অন্যকিছু নয়। সেটি হচ্ছে এই যে, আমাদের চেতনায় কাব্যের শান্ত ও নিরীহ কিন্তু শক্ত ও অচঞ্চল আচ্ছাদনটি ভেদ করে মননশীলতার, বুদ্ধিবৃত্তির অনুশীলনের প্রবল ঐতিহ্য গড়ে ওঠে নি। আমাদের প্রধান গৌরব গীতি888sport app download apk, প্রধান অগৌরব 888sport apkের ও দর্শনের অভাব। সেই গৌরব ও অগৌরবের যুগ্ম পতাকা ভাষা তার পেলবতা ও কাব্যময়তার মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত আন্দোলিত করছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর সূচনাকালে একজন সমালোচক বলেছিলেন, বাংলা ভাষা কেবলি এলাইয়া এলাইয়া পড়ে, ধরি ধরি করিয়া তাহাকে রাখা যায় না। সে-সত্য অপ্রাণিত হয় নি অদ্যাবধি।
রবীন্দ্রনাথ ম্যাকবেথের অংশবিশেষের 888sport app download apk latest version করেছিলেন, তাঁর গৃহ-শিক্ষকের শাসনের মুখে। সে-888sport app download apk latest versionটি রক্ষা করার মতো আগ্রহ কবির ছিল না। সেই 888sport app download apk latest versionের প্রথম দৃশ্যে এই ধরনের পঙ্ক্তি আছে, ‘পোড়ারমুখী বোল্লে রেগে ডাইনী মাগী যা তুই ভেগে।’ ওই যে শব্দ ‘মাগী’ তা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ওই পরিবেশে। বিদ্যাসাগর অনায়াসে ব্যবহার করেছেন ওই শব্দ। পরে মধ্যবিত্ত মানসের বর্জনপ্রিয়তা এইসব শব্দকে অশ্লীল জ্ঞানে জিভে কেটে পরিত্যাগ করেছে। বলা বাহুল্য, এর কারণ ভাষাতাত্ত্বিক নয়, মনস্তাত্ত্বিক। এই প্রবণতা শেক্সপীয়রের নিজের কালে ছিল না এবং ছিল না বলেই তিনি তাঁর রচনাবলী সৃষ্টি করায় আনুকূল্য পেয়েছিলেন। আমরা শেক্সপীয়রের যথেষ্ট ও যথার্থ 888sport app download apk latest version করতে পারি নি, কেননা আমাদের মনস্তাত্ত্বিক পরিধিটা এখনো বিস্তৃতির ও গভীরতার অপেক্ষায় আছে।
রবীন্দ্রনাথ অন্য সবার চেয়ে বড়; কিন্তু ভক্তিবাদের অবস্থান তাঁর 888sport live footballেও উজ্জ্বল। তাঁর বিশ্বাস, ‘স্থূলত্ব বর্জন করতে করতে তপস্যার মধ্য দিয়ে মানুষই দেবতা হয়ে উঠবে।’ এই বিশ্বাসে উঁচু আশাবাদ আছে, কিন্তু মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখবার বাস্তবিক ইচ্ছার কিছুটা অভাব রয়েছে। মানুষ মানুষই, এই সত্য এমনকি রবীন্দ্রনাথও গ্রহণ করছেন না, মানুষকে দেবতা করতে চাইছেন। তদুপরি মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ যে তপস্যার দ্বারা হয় না, হয় সংগ্রাম ও দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে, এই বৈজ্ঞানিক সত্যও অস্বীকৃত রয়ে যাচ্ছে। রক্ত-মাংসের মানুষ রবীন্দ্রনাথের কথা888sport live footballে উপস্থিত আছে; কিন্তু তিনি প্রধানত কবি-ই, ঠিক যে-অর্থে শেক্সপীয়র প্রধানত নাট্যকার। এবং তাঁর 888sport app download apkয় মানুষের চাইতে মনুষ্যত্ব সম্পর্কে তাঁর ধারণাটাই বড়, দ্বন্দ্বের চাইতে অধিক মূল্যবান সমন্বয়। যেন তপোবনই চাইছেন তিনি, তপস্যার জন্য। গীতাঞ্জলির সেই অসাধারণ চরণগুলো 888sport app download for android করা যাক, যেখানে বলেছেন তিনি যে, ঈশ্বর স্থপতিনির্মিত মন্দিরে নেই, তিনি আছেন ‘যেথায় মাটি ভেঙ্গে করছে চাষা চাষ/ পাথর ভেঙ্গে কাটছে যেথায় পথ, কাটছে বারো মাস/ রৌদ্র জলে আছেন সবার সাথে,/ ধূলা তাঁহার লেগেছে দুই হাতে।’ কিন্তু কর্মের এই যে জগৎ সেও তো মন্দিরই, বৃহৎ মন্দির। অথবা তপোবন একটি। শ্রমিককে শ্রমিক হিসেবে স্বীকার করেছেন না কবি, দেখছেন তাকে ঈশ্বরের প্রকাশ-ভূমি হিসেবে। শ্রমিক কিন্তু নিজেকে জানে মেহনতি মানুষ বলেই; ঈশ্বর তাকে সুখ দেয় নি, মেহনত দিয়েছে, দিয়েছে অনাহার ও দারিদ্র্য। এইভাবে রবীন্দ্রনাথ বাস্তবকে কোথাও কোথাও অবাস্তব করে তুলেছেন তাঁর আলোকসামান্য প্রতিভার জাদুকর ও গীতিময় স্পর্শে। ‘মানুষের ধর্ম’ বক্তৃতাতে তিনি জ্ঞান, অনুভূতি ও কর্মের মাধ্যমে জগৎকে জানার বিষয়ে বলেছেন; বলে নিয়ে নিজের স্বাভাবিক পক্ষপাত প্রদর্শন করেছেন অনুভূতির প্রতি। জ্ঞান ও কর্ম কম মূল্য পেয়েছে, তুলনায়।
জ্ঞান ও কর্মের এই অবমূল্যায়নটা আমাদের অধিকাংশ লেখকের বেলাতেই সত্য। কল্লোল যুগের লেখকেরা হুজুগ তুলেছিলেন বিদ্রোহের। বিদ্রোহ ছিল যৌনালোচনা সম্পর্কে সামাজিক নিষেধের এবং রবীন্দ্রনাথের 888sport live footballিক নীতির বিরুদ্ধে, মূলত। কিন্তু সেই বিদ্রোহে বড় রকমের স্থান ছিল না জ্ঞান ও কর্মের; বড় বেশী উচ্ছ্বাস ছিল অনুভূতির। এই বিদ্রোহীদের জগৎটাও ভাববাদী। তফাৎ এই পরিমাণে যে, কর্মের স্থলে এঁরা স্থাপন করেছেন আবেগকে; আবেগের কাছ থেকে এঁরা সেই ধরনের তৃপ্তি কামনা করেছেন ধার্মিক যা পায় ধর্মানুশীলনের মধ্য দিয়ে। বেদের লেখক অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত যখন পরমহংসের জীবনী রচনায় নিয়োজিত হন, তখন আসলে বিস্ময়ের বিশেষ কোনো কারণ থাকে না। কেননা তিনি, এবং তাঁরা সকলেই, ভাববাদীই ছিলেন, শুরু থেকেই; একটা ভাব অন্য একটা ভাবের জন্য জায়গা করে দিয়েছে মাত্র, এর বেশী নয়। তবু মানতেই হবে যে, ‘বেদে’র জীবন থেকে পরমহংসের জীবনে চলে আসাটা জীবন-সংকোচন এক প্রকারের। যেমন, রবীন্দ্রনাথের গোরার জগৎ থেকে বুদ্ধদেব বসুর 888sport alternative linkে আসা উন্মুক্ত প্রান্তর থেকে সরে এসে বন্দি হওয়া ড্রয়িংরুমে। ড্রয়িংরুম তথা বন্ধ ঘরের দিকেই গোপন ও সক্রিয় পক্ষপাত অধিকাংশ ‘আধুনিক’ লেখকের। সেজন্য পরবর্তীকালে দেখি, সমরেশ বসু গঙ্গার তীর ভেঙে আহ্লাদিতচিত্তে বিবরে প্রবেশ করেছেন, মধ্যবিত্ত কলকাতার। সেই একই পলায়ন, জীবন থেকে। পুঁজি হিসেবে জীবনকে সঙ্গে নেন নি, সঙ্গে নিয়েছেন জীবন সম্পর্কে খ-িত কিছু ধারণাকে। পুঁজি নিঃশেষিত হয়ে গেছে দ্রুত, তখন তাঁরা নানাবিধ উত্তেজনাকে মূলধন হিসেবে খাটাবেন ভেবেছেন তাঁদের লেখায়। অনেক দিক দিয়ে শরৎচন্দ্র অত্যন্ত বস্তুবাদী। কিন্তু তিনি আবার ভাববাদীও; সংস্কারে বিশ্বাস রাখেন, আস্থা রাখেন ভক্তিতে, পরিত্যাজ্যকে মোহনীয় করে তোলেন নানানভাবে। চেতনাগত পরিচয়ে তারাশঙ্কর হচ্ছেন সংশোধিত শরৎচন্দ্র।
গদ্যের অবস্থাই যদি হয় এমন তবে 888sport app download apkর পরিস্থিতি অধিকতর শোচনীয় হতে বাধ্য। হয়েছেও। সেখানে ব্যক্তির সমন্বয়বাদী ও গীতিধর্মী অনুভবই প্রধান সত্য; এবং সেই অনুভব জীবনে যেমন 888sport live footballেও তেমনি, ইন্দ্রিয়সংবেদী ও প্রগতিবিরোধী। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত ও বুদ্ধদেব বসুর মধ্যে মনে হবে দূরত্ব বিস্তর; কিন্তু দূরত্ব নেই প্রকৃত প্রস্তাবে। দুজনেই ভাববাদী।
ব্যতিক্রম কি নেই? আছে। বিদ্রোহ হয়েছে। বিদ্যাসাগর করেছেন বিদ্রোহ, করেছেন মধুসূদন, নজরুল ইসলাম, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুকান্ত ভট্টাচার্য। কিন্তু এঁদের সকলেরই পরিণতি বেশ করুণ, তাঁদের লেখা মূল ধারায় পরিণত হতে পারে নি। সমাজ, এমনকি প্রকৃতিও সহ্য করতে চায় নি তাঁদের দার্শনিক বিদ্রোহকে। বঙ্গভূমির মধ্যবিত্ত সংস্কৃতির প্রবণতা মূলতঃ বশ্যতার, বিদ্রোহের নয়।
রবীন্দ্রনাথ যথার্থই বলেছেন, বাঙ্গলা 888sport live footballে 888sport promo codeর মর্যাদা পুরুষের তুলনায় অধিক। তাঁর মতে, পুরুষ এখানে ‘মহাদেবের ন্যায় নিশ্চলভাবে ধূলিয়ান এবং রমণী তাহার বক্ষের উপর জাগ্রত জীবন্তভাবে বিরাজমান।’ এর কারণ হিসেবে তিনি সরাসরি বলেছেন পুরুষ এদেশে অকর্মা। কিন্তু অকর্মণ্যতা একমাত্র কারণ নয়; 888sport live footballে 888sport promo codeর আধিপত্যের আরো একটি কারণ বোধ করি এই যে, এ 888sport live football অত্যন্ত কোমল, ভাবালু ও অনুভূতিপ্রবণ, এক কথায় বেশ মেয়েলি। দার্শনিক চিন্তায় তা যথেষ্ট পুষ্ট বা সমৃদ্ধ নয়। সেই অপুষ্টি ও অসমৃদ্ধি রবীন্দ্রনাথ-নির্দেশিত অকর্মণ্যতা থেকে এসেছে বললে হঠকারী কথা বলা হবে না।

তিন
বাংলাভাষায় 888sport live footballচর্চার সঙ্গে রাষ্ট্রের একটা প্রত্যক্ষ দ্বন্দ্ব ছিল। ইংরেজ আমলে যেমন, পরেও তেমনি। ইংরেজের শাসনামলে মনে হয়েছিল রাষ্ট্র বাংলা 888sport live footballকে বিকাশের ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে। তা করেছে বটে। বাংলা গদ্যের সৃষ্টি ইংরেজ আগমনের ফল, এ-কথা ইতিহাসে লেখা আছে। যে-মধ্যবিত্ত শ্রেণী আধুনিক বাংলা 888sport live footballকে অতটা এগিয়ে নিয়ে গেল তারাই-বা কোথা থেকে আসতো, ইংরেজ না-এলে? ইংরেজি শিক্ষা প্রবর্তন না করলে, চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি করে না দিলে, কেইবা পড়তো বাংলা 888sport live football? সবই সত্য।
কিন্তু বাঙালী যে ইংরেজির চর্চা না-করে বাংলা চর্চা করলো এটা একটা রাষ্ট্রবিরোধিতা তো বটেই। বাঙালী মিশে গেল না। কেউ কেউ অবশ্য গেল, তারা যারা ইংরেজ হতে চাইলো। কিন্তু অত্যন্ত বড়মাপের বেশ কিছু মানুষ যে গেলেন না, তাঁরা যে মাতৃভাষার চর্চা করলেন সেই ঘটনা তো বলছে এ-কথা যে, তাঁদের গ্রহণের অন্তরালে সুদৃঢ় একটা বর্জন কার্যকর ছিল। মধুসূদন চলে গিয়েছিলেন; তিনি সাহেব হয়েছেন, মেম সাহেব বিয়ে করেছেন, ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিষ্টান হয়েছিলেন, ইংরেজিতেই লিখবেন ঠিক করেছিলেন; কিন্তু ওই যে ফিরে এলেন, হলেন বাঙালী লেখক, ওইখানেই তাঁর আসল বিদ্রোহ, ইংরেজ হওয়ার অতিনাটকীয় বিদ্রোহের চেয়ে যা অনেক গভীর।
রাষ্ট্রভাষা ছিল ইংরেজি। বাঙালী সে-ভাষার চর্চা করেছে; কিন্তু সে-ভাষায় 888sport live football সৃষ্টি করে নি। না-করে বাংলা ভাষাকেই বরঞ্চ এগিয়ে নিয়ে গেছে। স্বাধীনতার দাবি সেই 888sport live footballে এসেছে, নানান ভাবে, নানান সুরে। কিন্তু রাষ্ট্র ছিল অত্যন্ত প্রবল। তার ক্ষমতা ছিল অপরিমেয়। তার ক্ষতিকর দাপটকে যে অস্বীকার করা যাবে তা সম্ভব ছিল না। না, 888sport live footballও পারে নি অস্বীকার করতে।
রাষ্ট্রীয় দাপটে 888sport live footballের বিশেষ রকমের ক্ষতি হয়েছে দুটো। একটি সাম্প্রদায়িকতা, অপরটি শ্রেণীবিভাজন। বঙ্কিমচন্দ্রের দৃষ্টান্ত সহজেই আসে। তিনি অসামান্য ছিলেন যেমন ইহজাগতিকতায়, তেমনি স্বাধীনতাপ্রিয়তায়। স্বাধীনতার পক্ষে লিখতে গিয়ে তাঁর লেখবার কথা ছিল ইংরেজের বিরুদ্ধে; কিন্তু তা লেখা সম্ভব ছিল না বলে আনন্দমঠ ও দেবী চৌধুরাণীতে শত্রু হিসেবে দাঁড় করালেন অনুপস্থিত মুসলমানকে। 888sport live footballে ওই যে সাম্প্রদায়িকতা প্রবেশ করলো, ওই যে নদী ঘুরে গেলো তার স্বাভাবিক ধারা থেকে ভিন্নদিকে, তার প্রভাব পরবর্তীকালে অনেক ক্ষতির কারণ হয়েছে। বাঙালীর জন্য। ১৯৪৭-এ এসে বঙ্গদেশ যে দু-টুকরো হলো তার প্রধান কারণ সাম্প্রদায়িকতা, এবং সেই কারণকে 888sport live football প্রতিহত করার ব্যাপারে সক্রিয় থাকে নি, বরঞ্চ পুষ্টই করেছে।
আর রইলো শ্রেণী। ইংরেজের রাষ্ট্র বিদ্যমান শ্রেণীবিভাজনকে আরো শক্ত করেছে। 888sport live football তাকে ভাঙতে কোনো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয় নি। 888sport live football রয়ে গেছে বিত্তবান শ্রেণীর সাংস্কৃতিক অঙ্গ।
তখনকার পূর্ব পাকিস্তানে আমরা বাংলা 888sport live footballের চর্চা করেছি রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় নয়, রাষ্ট্রীয় বৈরিতার ভেতরে। হ্যাঁ, 888sport app download bd ছিল, পত্রিকা ছিল, গণমাধ্যমে প্রচার পাওয়া যেতো; কিন্তু মূল সত্যটা ছিল এই যে, ওই রাষ্ট্র বাংলা ভাষাকে রাখতে চেয়েছিল উর্দুর নীচে, ঠিক যেমন ইংরেজরা চেয়েছিল ইংরেজিই হবে প্রধান; মোগলরা চেয়েছিল ফার্সীর প্রাধান্য; আর্যরা সংস্কৃতের। দমনের ওই চেষ্টা বাঙালী মানে নি।
888sport live footballে রাষ্ট্রবিরোধিতা কতোটা এসেছে বা আসে নি সে-প্রশ্নটা থাকে। না, বেশি আসে নি। সাতচল্লিশের পরে আমাদের 888sport live football ছিল 888sport app download apkপ্রধান। আমাদের প্রধান কবিরা রাষ্ট্রের মহিমাকীর্তন করে অনেক 888sport app download apk ও গান লিখেছেন। সে-ব্যাপারে তাঁদের মধ্যে কোনো গ্লানি দেখা যায় নি। ফরাসী বিপ্লব কিংবা রুশ বিপ্লবের পেছনে যেমন 888sport live footballের একটা ভূমিকা ছিল, 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধের পশ্চাৎভূমিতে তেমন কোনো 888sport live footballিক ঘটনা ঘটে নি।
রাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্বের ব্যাপারটিকে গভীর ও প্রবল করতে না-পারা 888sport live footballের জন্য অবশ্যই একটা দুর্বলতা। সে-দুর্বলতা সেদিনও ছিল, আজো রয়েছে। মানুষের জীবনের অচরিতার্থতা ও দুঃখকে (কেবল বৈষয়িক অর্থে নয়, বুদ্ধিবৃত্তিক ও অনুভূতিগত অর্থেও) 888sport live football নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারে নি। সেজন্য তার স্তরটা রয়ে গেছে প্রধানত বিনোদনের। আর ওই স্তরে যেহেতু টেলিভিশন ও ইন্টারনেট কাজ করছে আরো জোরেশোরে, 888sport live football তাই নিজেকে ততটা প্রয়োজনীয় করে তুলতে পারছে না, যতটা প্রয়োজনীয় হওয়া তার নিজের জন্য তো বটেই, আমাদের সংস্কৃতির স্বাস্থ্যের জন্যও প্রয়োজনীয় ছিল।
বিষয়টা যে কোনো বিশেষ রাষ্ট্রের ব্যাপার তা নয়, রাষ্ট্রব্যবস্থারই ব্যাপার বটে। রাষ্ট্রগঠনে 888sport live football ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারে হয়তো, করেছেও কখনো কখনো; কিন্তু রাষ্ট্রের সঙ্গে 888sport live footballের দ্বন্দ্বটা একেবারেই মূলগত, এবং দার্শনিক। রাষ্ট্র হচ্ছে রক্ষণশীল প্রতিষ্ঠান, চরিত্রগতভাবেই। অপরদিকে 888sport live football চায় মুক্তি। প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রের পক্ষে 888sport live footballকে তার নিজের দিকে টেনে আনবার চেষ্টা ফুলকে বৃন্তচ্যুত করার সমতুল্য হয়ে দাঁড়ায়।
888sport app download apk না-লিখলেও দার্শনিক প্লেটো যে একজন কবি ছিলেন সেটা তাঁর গদ্য রচনার পরতে পরতে প্রমাণিত। উপমায়, রূপকে, শব্দ চয়নে ওই দার্শনিক তাঁর অন্তর্গত কবির কল্পনা ও সৌন্দর্যবুদ্ধি, উভয়কেই ব্যবহার করে গেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে 888sport app download apkর গুণ ও আবেদন তিনি যে জানতেন তাতেও সন্দেহ করবার অবকাশ নেই। কিন্তু তিনি তাঁর আদর্শ রাষ্ট্রে কবিদের জন্য কোনো জায়গা রাখেন নি। জায়গা রাখবেন কী, উল্টো নির্দেশ দিয়েছেন তাঁদেরকে বের করে দেওয়ার জন্য। কবিদের সম্মান দেয়া হবে, মালা ও সুগন্ধী দিয়ে তাদের সজ্জিত করা যাবে, কিন্তু তাদেরকে সবিনয়ে বলতে হবে, মহাশয়বৃন্দ, আমরা দুঃখিত, আপনাদের জন্য আমাদের রাষ্ট্রে কোনো স্থান নেই।
কেন নেই? অভিযোগটা আপাতত এটা যে, কবিরা মিথ্যা কথা বলে। কিন্তু গভীরে আরো একটা ব্যাপার রয়েছে। সেটা এই যে, কবিরা রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলাকে বিপন্ন করে। প্লেটোর ‘সাম্যবাদ’ ফ্যাসিস্ট ধরনের; অর্থাৎ শ্রেণীবিভাজনকে মেনে নিয়ে, তবেই সবাই সমান, বিভাজনের ভেতরে সমান, ভেঙে দিয়ে নয়। সে-রাষ্ট্রে দার্শনিকেরা শাসন করবে, সৈনিকেরা করবে যুদ্ধ, শ্রমিকেরা করবে উৎপাদন। এই বিভাজন কিছুতেই ভাঙা যাবে না। কাব্য তথা 888sport live football যে গ্রহণযোগ্য নয় তার মূল কারণটা নিহিত রয়েছে না-ভাঙার এই রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারের ভেতরেই।
তা 888sport live football করেটা কী? 888sport live football মানুষের আবেগকে জাগিয়ে দেয়। মানুষকে সংবেদনশীল করে, যার ফলে মানুষ শ্রেণীবিভাজনকে ডিঙিয়ে যেতে চায়। 888sport live football পাঠ করলে দার্শনিক হয়তো শ্রমিকের দুঃখ দেখে কাতর হবে, শ্রমিক হয়তো চাইবে সে শাসক হবে, সৈনিক হয়তো ক্ষমতার লোভে ওপরে যেতে চাইবে, কিংবা বলপ্রয়োগের জন্য নীচে; রাষ্ট্র তখন ভেঙে পড়বে, তখন ‘ন্যায়’ বলে কিছু থাকবে না, অন্যায়ে ছেয়ে যাবে সমস্ত কিছু। প্লেটোর রাষ্ট্রের প্রধান কথা হলো নিরাপত্তা অক্ষুণœ রাখা, সেখানে তাই 888sport live footballের স্থান নেই। প্লেটোর রাষ্ট্রের জন্য 888sport live football বিপজ্জনক, যেমন তা বিপজ্জনক ছিল হিটলারের রাষ্ট্রের জন্য।
রাষ্ট্রের অনেক কিছুই থাকে। সিপাহী, সান্ত্রী, আইন, আদালত – সবকিছুই আছে তার। বিবেক নেই? হ্যাঁ, বিবেকও আছে বইকি। সেই বিবেক হচ্ছে শাসক শ্রেণীর স্বার্থ। ‘ন্যায়’ও তাই। শাসক শ্রেণীর স্বার্থ। ওদিকে 888sport live footballের কাজটাই হলো মানুষের ভেতর যে বিবেকবান, অর্থাৎ সংবেদনশীল, মানুষটি থাকে তাকে জাগিয়ে রাখা, তাকে সতেজ করা। 888sport live football তাই শ্রেণীবিরোধী এবং সে-কারণে রাষ্ট্রবিরোধী।
প্রাচীন গ্রীক 888sport live footballে এন্টিগনির যে-গল্পটি আছে সেটি একটি বিদ্রোহের কাহিনী। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যক্তির বিদ্রোহ। শাসনের বিরুদ্ধে বিবেকের অভ্যুত্থান। এন্টিগনি বলেছে, মৃত ভ্রাতাকে সে কবর দেবে। দেবেই দেবে। কেননা, এটি তার দায়িত্ব ও কর্তব্য। রাষ্ট্র বলছে কবর দেওয়া যাবে না, কারণ লোকটি ছিল রাষ্ট্রদ্রোহী। এই বিশেষ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের মুখপাত্রটি অন্য কেউ নন, তিনি হচ্ছেন এন্টিগনিরই আপন মামা, ক্রিয়ন। কিন্তু এখানে আত্মীয়তা কাজে দেয় না। রাজা বন্দী রাষ্ট্রীয় স্বার্থের শৃঙ্খলে। এন্টিগনি এগিয়ে গেল, ভাইকে কবর দিতে। রাজা ক্রিয়ন কী করলো? ভগ্নিকন্যা বিদ্রোহী এন্টিগনিকে আটক করে কবর দিয়ে দিলো, জ্যান্ত। ক্রিয়নের পুত্র এন্টিগনিকে ভালোবাসে; এন্টিগনির কবরে গিয়ে সে মারা গেল, কাঁদতে কাঁদতে। কিন্তু ক্রিয়নের কিছু করার ছিল না। রাজা হয়ে তিনি বন্দী। ব্যক্তি যখন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় রাজা তখন রাষ্ট্রের পক্ষে এবং ব্যক্তির বিরুদ্ধে, অতি অবশ্যই; নইলে তিনি রাজা কেন?
এন্টিগনির মতো যাঁরা বিবেকবান মানুষ, রাষ্ট্র তাঁদেরকে ভয় করে। আর 888sport live footballের কাজই তো হচ্ছে সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে মানুষকে বিবেকবানে পরিণত করা। 888sport live football আনন্দ দেয় এ আমরা জানি; 888sport live football শিক্ষা দেয় এ-ও আমরা মানি; কিন্তু তবু 888sport live football বিনোদনের বিচিত্রানুষ্ঠান নয়। যেমন নয় সে প-িতের পাঠশালা। 888sport live footballে ওই দুয়েরই ভূমিকা থাকে, বিনোদনের যেমন, তেমনি শিক্ষা। কেননা, এরা উভয়েই 888sport live footballের মূল কর্তব্যের অংশ, যেটি হলো মানুষের হৃদয়কে সংবেদনশীল করা। 888sport live footballের শিক্ষাটা কেবল মস্তিষ্কের নয়, হৃদয়েরও। হৃদয়ই হচ্ছে প্রবেশপথ; আর হৃদয়বান মানুষেরাই সহজে বিবেকবান, যেজন্য হৃদয়কে রাষ্ট্রের বড় ভয়।
রাজনৈতিকভাবে শেক্সপীয়র ছিলেন রক্ষণশীল। তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু বড় 888sport live chatী ছিলেন বলেই শেক্সপীয়র বারবার তাঁর নাটকে দেখিয়েছেন রাষ্ট্র কী করে ব্যক্তিকে লাঞ্ছিত করে। রাজপুত্র হ্যামলেট একা লড়ছেন রাজার বিরুদ্ধে। কিন্তু রাজা একা নয়, রাষ্ট্র আছে রাজার আজ্ঞাবহ রূপে দাঁড়িয়ে। হ্যামলেট দেখছে একই দুর্বৃত্ত যেহেতু বসে আছে সিংহাসনে, তাই সবকিছুই রওনা হয়েছে নষ্টের অভিমুখে। রাষ্ট্র বড়ই কঠিন প্রাণী।

চার
টলস্টয় (১৮২৯-১৯১০) শেক্সপীয়রকে পছন্দ করতেন না। মনে করতেন, শেক্সপীয়র রাজাবাদশাদেরই গ্রহণ করেছেন পাত্র-পাত্রী হিসেবে; জনগণকে বিশেষ মর্যাদা দেন নি। তাঁর ধারণা, শেক্সপীয়রের দেশপ্রেমও ছিল সংকীর্ণ। কিন্তু প্রশ্ন তো চরিত্রের অবস্থান কী তা নয়, প্রশ্ন হচ্ছে চরিত্রের মানবিক পরিচয় কী সেটা। পোশাক, কিংবা সামাজিক অথবা জাতীয় পরিচয় যাই হোক, শেক্সপীয়র দেখছেন অন্তর্গত মানুষটিকে। সেই মানুষটি রাজা নন, রাজপুত্র নন, শুধুই একজন মানুষ। ডেনমার্কের বিবেকবান রাজপুত্র হ্যামলেটের জন্য রাষ্ট্র মিত্র নয়, শত্রু বটে। রাষ্ট্র তাকে হত্যা করার প্রচেষ্টার কোনো অবধি রাখে না।
888sport live football দেশ মানে না। কাল মানে না। রাষ্ট্র মানে না। শুধু মানে না বললে যথেষ্ট বলা হবে না, 888sport live football ব্যক্তির সঙ্গে রাষ্ট্রের দ্বন্দ্বটাকে তুলে ধরে। 888sport live football স্থানবিরোধী ও কালবিরোধী যতটা নয়, রাষ্ট্রবিরোধী সে-তুলনায় অনেক বেশি। কেননা, রাষ্ট্র স্থানে সত্য, কালেও সত্য।
টলস্টয়ের নিজের লেখাতেও রাষ্ট্রবিরোধিতা অত্যন্ত স্পষ্ট। স্বভাবতই। সেই অতিবৃহৎ 888sport alternative link যুদ্ধ ও শান্তিতে টলস্টয় দেখাচ্ছেন, যুদ্ধ ব্যাপারটা রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রেরই সংঘর্ষ আসলে, কিন্তু যুদ্ধের দুর্ভোগটা সাধারণ মানুষেরই। আর রাষ্ট্রনায়কেরাও সাধারণ মানুষই শেষ পর্যন্ত, যদিও তারা ভান করতে ভালোবাসে অসাধারণত্বের।
টলস্টয়ের আন্না কারেনিনার নায়ক-নায়িকারা অধিকাংশই রাষ্ট্রের সেবক। আন্নার স্বামী মস্ত বড় আমলা, তার প্রেমিক সেনাবাহিনীর অফিসার। আন্নার ভাইও বড় এক সরকারি কর্মচারী। ওই সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্রের ভেতরেই আন্নার চলাফেরা, ওঠাবসা ও জীবনযাপন। অনেক দিক দিয়েই অসাধারণ এই মেয়ে; সৌন্দর্যে, ব্যক্তিত্বে, মেধায় ও আচরণে নিজের বৃত্তের সব মানুষকে ছাপিয়ে ওঠে, বিশেষভাবে ব্যতিক্রমী হলো তার আন্তরিকতা। এই মানুষটিকে চরিতার্থতা দেওয়ার ক্ষমতা তার স্বামীর নেই, তার প্রেমিকেরও নেই। বেচারা আন্না বেশী-বয়সী স্বামীকে ছেড়ে প্রায় সমবয়সী প্রেমিকার কাছে যায়, কিন্তু তাকে চরিতার্থ না দিলো তার আমলা স্বামী, না দিলো তার সৈনিক প্রেমিক। উভয়েই সামান্য তারা, রাষ্ট্রলালিত বুর্জোয়া স্বার্থপরতার বন্ধনে আবদ্ধ হবার কারণেই, বিশেষভাবে। এ-888sport alternative linkে রাষ্ট্রবিরোধী রাজনৈতিক লোকেরাও রয়েছে, যদিও তারা ছায়াছায়া, খুব প্রত্যক্ষ নয়। তারা নতুন ব্যবস্থার কথা ভাবে, কমিউনিজমের কথাও তাদের চিন্তায় আসে। মোট বিষয়টা দাঁড়ায় এই যে, প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থা ব্যর্থ হয়ে গেছে, এটা ভেঙে পড়ছে। আন্নার মতো মানুষদের পক্ষে এখানে তাই আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় থাকছে না। টলস্টয়ের এ-888sport alternative linkে আসন্ন বিপ্লবের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। রেলগাড়ির নীচে পড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে-যাওয়া আন্নার সুশ্রী দেহটি যেন বলে দিচ্ছে, ওই রাষ্ট্র ও সমাজ মানুষের স্বপ্নগুলোকে ওইভাবেই কেটে টুকরো টুকরো করবে, যদি বিপরীত কিছু না ঘটে।
এক অর্থে টলস্টয় রক্ষণশীল। তিনি রক্তপাত পছন্দ করতেন না, রাষ্ট্রবিপ্লবও নয়; কিন্তু তাঁর লেখার ভেতর দিয়ে রুশ বিপ্লবকে তিনি এগিয়ে আনছিলেন; বিদ্যমান রাষ্ট্রের অন্তঃসারশূন্যতা ও নিষ্ঠুরতাকে উন্মোচিত করে দিয়ে। তাঁর পক্ষে এটা করাই স্বাভাবিক ছিল; হৃদয় দিয়ে বুঝেছেন এবং অন্যের হৃদয়ে সেই বুঝটাকে সংক্রমিত করে দিয়েছেন।
আন্না কারেনিনার পরের 888sport alternative link পুনরুজ্জীবন। এতে রাষ্ট্রের মুখচ্ছবি আরো প্রত্যক্ষ। কাটিউসা মাসলোভা একজন নিরপরাধ গরীব কিশোরী। সামন্ত পরিবারের যুবক নেখলিউদভ তাকে নষ্ট করলো। মাসলোভার সন্তান হবে, কিন্তু সন্তানের পিতা নেখলিউদভ তখন অনেক দূরে। সে তখন সেনাবাহিনীর নবীন অফিসার। জীবিকার জন্য মাসলোভা কাজ করে, দেহ বিক্রয় করে, জেলও খাটে। সবই ঘটে বাঁচার চেষ্টায়। আসামী হিসেবে আদালতে এসেছে মাসলোভা। অদৃষ্টের কী কৌতুকবোধ, তার বিচারে জুরিদের একজন হয়ে বসে আছে নেখলিউদভ স্বয়ং। নেখলিউদভ চিনেছে ওই মেয়েকে। তার ভেতরে পাপের বোধ জেগেছে। সে চাইলো মাসলোভাকে রক্ষা করবে; কিন্তু পারলো না। বিচারে জেল এবং নির্বাসন হয়েছিল মাসলোভার। জেলটা মওকুফ করালো নেখলিউদভ, আমলাদের কাছে দেনদরবার করে; কিন্তু নির্বাসন বলবৎ রইলো।
মাসলোভা চলেছে সাইবেরিয়ায়। নেখলিউদভ চলেছে পিছুপিছু। তার পুনরুজ্জীবন ঘটেছে। সে প্রায়শ্চিত্ত করতে চায়। সে মাফ চাইবে। মাসলোভা যদি রাজি হয় তাহলে তাকে বিয়ে করবে। শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবটা নেখলিউদভ করতে পারলো মাসলোভার কাছে, সাইবেরিয়ায় গিয়ে। আশা করেছিল মাসলোভা কালবিলম্ব করবে না, সম্মত হতে। কিন্তু মাসলোভা ওই প্রস্তাবে সম্মত নয়। তার প্রত্যাখ্যানটা খুবই দৃঢ়। সে বললো, ‘বুঝেছি, সেবার আমার দেহটা ব্যবহার করেছো, এবার ব্যবহার করতে চাইছো আমার আত্মাটাকে। না, তা হবে না।’
আসলে মাসলোভারও পুনরুজ্জীবন ঘটেছে। সেও আর আগের সেই পথহারা মেয়েটি নেই। পথের সন্ধান পেয়ে গেছে সে। সাইবেরিয়ায় তার সহবন্দীদের মধ্যে কয়েকজন ছিল রাজবন্দী। ওরা অন্য ধরনের মানুষ। এরা সংযমী, মেধাবী; এরা বই পড়ে। একজনের থলের ভেতর দেখা যায় মার্কসের পুঁজি বইটি উঁকি দিচ্ছে। এদেরই একজন হচ্ছে সাইমনসন। তার সঙ্গে পরিচয় হয়েছে মাসলোভার। তারা ভালোবেসে ফেলেছে পরস্পরকে। তাদের বিয়ে হবে।
নেখলিউদভরা যতই যা করুক, তারা বন্দী বটে, রাষ্ট্রের বৃত্তের ভেতর তারা আবদ্ধ। ওই বৃত্তে কারোরই মুক্তি নেই; না নেখলিউদভের, না মাসলোভার, না সাইমনসনের। বিশেষভাবে পীড়িত হবে মাসলোভারা; একে তো 888sport promo code, তদুপরি দরিদ্র। নেখলিউদভ তাদেরকে ব্যবহার করবে নিজেদের বিশেষ প্রয়োজনে। মানুষের মুক্তির জন্য নতুন ব্যবস্থা প্রয়োজন হবে। যে-ব্যবস্থার পক্ষে সাইমনসনেরা লড়ছে। বলা বাহুল্য, ওদের মধ্যেই লেনিন ছিলেন লুকিয়ে, যার সন্ধান টলস্টয় তখনো পান নি; পুনরুজ্জীবন 888sport alternative linkটি যখন তিনি লিখে শেষ করেন, ১৮৯৯-তে।
লেখক যদি রক্ষণশীলও হন তবু এটা নিশ্চয় করে বলে যাবে না যে, তাঁর লেখা প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থার পক্ষে যাবে। এক্ষেত্রে ব্যালজাকের (১৭৯৯-১৮৫০) কথা উল্লেখ করা হয়ে থাকে। ব্যালজাক রক্ষণশীল ছিলেন। কিন্তু মার্কসবাদের প্রতিষ্ঠাতারা যথার্থই মনে করেন যে তাঁর লেখা সমাজ-পরিবর্তনের বিপ্লবী ধারাকে সাহায্য করেছে। আপাতদৃষ্টিতে এমিল জোলা (১৮৪০-১৯১২) ব্যালজাকের তুলনায় অনেক বেশি প্রগতিশীল, কিন্তু এঙ্গেলস মন্তব্য করেছেন যে, একজন ব্যালজাকের যা মূল্য তা একশ’জন জোলা পরিশোধ করতে পারবেন না। কেননা, ব্যালজাকের নিজের রাজনৈতিক মতবাদ যাই হোক না কেন তাঁর 888sport live footballর বাস্তববাদিতা সমাজের নিষ্ঠুরতা ও অন্তঃসারশূন্যতাকে ভীষণভাবে উন্মোচিত করে দিয়েছিল।

পাঁচ
888sport live football ছাড়া দর্শন তাও চলতে পারে, কিন্তু দর্শন না-থাকলে 888sport live football একেবারেই অচল। 888sport live footballের লক্ষ্য থাকে কালজয়ী হওয়া, এবং কালজয়ী হতে হলে তার দরকার দার্শনিক গভীরতা। নইলে সে হালকা হয়ে ভাসবে হয়তো, তবে ভেলার মতো নয়, শুকনো পাতার মতো; এবং ডুবে যাবে অল্পকাল পরে। দর্শনে কল্পনা থাকে, থাকে দার্শনিকের অনুভূতি; কিন্তু অতিরিক্ত যা থাকে সেটাই প্রধান, তা হলো জীবন ও জগতের ব্যাখ্যা। ব্যাখ্যা আসে চিন্তার সঙ্গে কল্পনা ও অনুভূতির একত্রযাত্রায়।
একালে আমরা অনেক রকমের রচনা পাচ্ছি। কিন্তু অত্যন্ত উন্নত 888sport live football পাওয়া যাচ্ছে না। তার বড় কারণ দর্শনে অনাগ্রহ। ঘটনাটা বিশ্বব্যাপী সত্য; বিশেষভাবে সত্য আমাদের দেশে। এমনিতেই আমাদের জ্ঞানের চর্চা সীমিত। ঠেলায় ধাক্কায় চলছে; তবে যা বিপজ্জনক তা হলো, দর্শনের বিষয়ে উৎসাহটা হ্রাস পাচ্ছে।
একটি অভিজ্ঞতার কথা দিয়ে শেষ করি। সম্প্রতি আমি একটি 888sport live লিখেছি, নাম ‘দর্শনের সুখানুসন্ধান’। অন্তত দুজন বিজ্ঞ ব্যক্তি 888sport liveটির শিরোনামটি তাঁদের আকর্ষণ করে বলে জানিয়েছেন, কিন্তু শিরোনামটি তাঁরা উভয়েই পড়েছেন অন্যভাবে; দর্শনের ‘সুখানুসন্ধান’ হিসেবে নয়, দর্শনের ‘সুখানুভূতি’ হিসেবে। সুখের সন্ধানকে সুখের অনুভূতি মনে করবার এই ব্যাপারটাকে আমার কাছে মোটেই বিস্ময়কর ঠেকে নি। ঝোঁকটা এখন অনুভূতির দিকেই, সন্ধানের দিকে নয়। জীবিকার, অর্থের, ক্ষমতার সন্ধান সবেগে চলছে; কিন্তু দার্শনিক অনুসন্ধান অপ্রচুর। বিপরীতে অনুভূতির জগৎটা বড় হচ্ছে, স্ফীত হচ্ছে। এই স্ফীতি 888sport live footballের জন্য মঙ্গলজনক নয়, সমাজের জন্যও মঙ্গলজনক নয়। আমরা কী করে এগুবো 888sport live football ছাড়া, এবং 888sport live football কী করে এগুবে দর্শনবিমুখ হলে? আমরা 888sport live football চাই; এবং 888sport live football চায় দর্শন। 888sport live football ছাড়া চলবে না, যেমন 888sport live footballের পক্ষে চলা সম্ভব নয় দর্শনকে বাদ দিয়ে।