888sport live footballের দায়

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

অন্য সবকিছুর মতো 888sport live footballেরও প্রতিপক্ষ আছে, থাকতেই হবে। 888sport live football তার প্রতিপক্ষকে চেনে, এবং দায় নেয় তার মোকাবিলা করবার। একালে সে-প্রতিপক্ষ মনে হচ্ছে প্রযুক্তি। প্রযুক্তি নিজে নয়, তার ব্যবহার। প্রযুক্তির কারণে 888sport live football বুঝি কিছুটা বিপদেই পড়েছে। বিশ্বজুড়েই তার বিপদ, বিপদ আমাদের 888sport appsেও।

বিপদটা আসছে প্রযুক্তির শ্বাসরম্নদ্ধকর প্রাচুর্য ও ব্যবহার থেকে। প্রযুক্তি আগেও ছিল; কিন্তু তার উদ্ভাবন 888sport live footballকে কখনোই বিপদগ্রসত্ম করে নি; উল্টো সাহায্য করেছে। যেমন কাগজের উদ্ভাবন, তারপরে আগমন ছাপাখানার। এরা 888sport live footballকে সহায়তা দিয়েছে বিপুলভাবে প্রচারে এবং ভাবী কালের জন্য সংরক্ষণে। পরে এসেছে রেডিও ও live chat 888sport; এরা 888sport live footballের প্রতিদ্বন্দ্বী হয় নি; বরং 888sport live footballকে ব্যবহার করেছে নিজেদের প্রয়োজনে, এবং মাধ্যম হয়েছে 888sport live footballের প্রচারের। ফলে 888sport live footballের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছে। টেলিভিশনও ভূমিকা রেখেছে 888sport live footballকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার ব্যাপারে। 888sport live footballকে এরা কেবল চোখের নয়, কানের কাছেও পৌঁছে দিয়েছে। 888sport live footballে লেখা হয় ভাষায়, ভাষা তো আসলে শব্দই, সেই শব্দকে মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়াটা উপকারী কাজ বৈকি। এর পরে এসেছে কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ওয়েবসাইট, মোবাইল ফোন, ফেসবুক, সেলফি। এরা চলে গেছে হাতে হাতে। এই প্রযুক্তি 888sport live footballের সহযোগী না হয়ে বুঝি প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। 888sport live football যে-আনন্দ দেয় সে-আনন্দ এখন পাওয়া সম্ভব মনে হচ্ছে এসব যন্ত্রের কাছ থেকে। অত্যমত্ম সহজে, প্রায় বিনা পরিশ্রমে; আঙুল দিয়ে টিপলেই হয়, এসে যায়। অনুগত ভৃত্যের মতো।

কিন্তু এরা যা দেয় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা আনন্দ নয়, বিনোদন বটে। 888sport live footballে যে বিনোদন নেই তা নয়। কিন্তু সে বিনোদন অনেক গভীর। 888sport live football নাড়া দেয়, সাড়া ফেলে। ভেতরে ভেতরে, পাঠকের অজ্ঞাতেই পাঠককে বদলে দেয়। প্রযুক্তি-নির্ভর বিনোদন সে-কাজটা করতে পারে না। প্রযুক্তির ব্যবহার তাই 888sport live footballের বিকল্প নয়, তবে প্রতিপক্ষ যে হতে চাইছে সেটা মানতেই হবে। দেখা যাচ্ছে লোকে তখন আর আগের মতো বই পড়ে না। ওয়েবসাইটে দেখে; প্রয়োজনে ডাউনলোড করে নেয়। কিন্তু বই তো দেখার জিনিস নয়, মন দিয়ে, চোখ দিয়ে, প্রাণ দিয়ে পড়ার জিনিস। সেই পড়ার মধ্যে অনেক কিছু অর্জন করা সম্ভব, সবচেয়ে বেশি যা পাওয়া যায় তা হলো আনন্দ। পড়তে গিয়ে আমরা চোখে দেখি, কানে শুনি, কল্পনা করি, বুঝতে পারি। আনন্দ চলে যায় গভীরে, থাকে সেখানে স্থায়ী হয়ে। এর কোনো বিকল্প নেই।

যতই যা ঘটুক, বই মানুষ পড়বেই, ভরসা এটাই। কেননা বইয়ের চাইতে বড় বন্ধু আর নেই। নির্জনতায়, নিঃসঙ্গতায় বই বান্ধব হিসেবে থাকে, এবং মানুষকে সুস্থ রাখে। রবিনসন ক্রুশো নির্জন এক দ্বীপে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল, জাহাজডুবির কারণে। সেখানে একনাগাড়ে চবিবশ বছর কাটিয়েছে সে। কিন্তু তার নিজস্ব সভ্যতা হারায় নি, উন্মাদও হয়ে যায় নি সে। তার একটা কারণ একটি বই ছিল সঙ্গে, সেটি সে পড়তো, যখনই নিজেকে অসহায় মনে হতো তখনই চলে যেতো ওই বইটির কাছে। বইটি হচ্ছে বাইবেল। ধর্মের বই, কিন্তু ওই বইও 888sport live footballই। ধর্মগ্রন্থেও 888sport live football থাকে, বাইবেলেও আছে। রবিনসন ক্রুশোর জন্য বাইবেলপাঠও 888sport live footballপাঠই ছিল। বাইবেল সে তোতাপাখির মতো পড়ে নি, পড়েছে বুঝে বুঝে এবং গভীর আগ্রহে, তাকে অতিআপনজন হিসেবে আঁকড়ে ধরে। ক্রুশোর জন্য প্রধান সমস্যা ছিল বিচ্ছিন্নতার; সে একাকী, একেবারেই নিঃসঙ্গ, বাইবেলের 888sport live football তার একাকিত্ব ঘোচাতে সাহায্য করেছে, তাকে যুক্ত করে দিয়েছে যিশু খ্রিস্টের সঙ্গে, এবং খ্রিস্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের সঙ্গে।

888sport live footballিক ড্যানিয়েল ডিফো রবিনসন ক্রুশো 888sport alternative linkটি লেখার ধারণাটা পেয়েছিলেন কল্পিত নয়, বাসত্মবিক একজন নিঃসঙ্গ মানুষের অভিজ্ঞতার কাহিনী পড়ে। ওই মানুষটিও নির্জন এক দ্বীপে সঙ্গীহীন অবস্থায় অনেকটা সময় কাটিয়েছে; তবে চবিবশ বছর নয়, সাড়ে চার বছর। নাম তার আলেকজান্ডার সেলকার্ক। তার দুর্ভাগ্য, সঙ্গে কোনো বই ছিল না। দ্বীপে অনেক ছাগল ছিল। সেলকার্কের জন্য সময় কাটাবার একটা উপায় ছিল ছাগলদের সঙ্গে খেলাধুলা করা। ফল দাঁড়িয়েছিল এই যে, সে তার নিজের ভাষা ভুলে যাচ্ছিল, পরিণত হচ্ছিল বন্যপ্রাণীতে। 888sport live footballের সাহায্য না পেলে বিপদের ওপর ওই বিপত্তিটা ঘটে।

আধুনিক প্রযুক্তি মানুষকে বনবাসে পাঠাতে চায়। অনেক মানুষের ভেতরে থেকেও মানুষ নির্জন হয়ে পড়ে, বিচ্ছিন্ন বোধ করে। বড় জগৎটা ভুলে সে ছোট জগতে চলে যায়। যন্ত্রপাতি নিয়ে খেলাধুলা করে। একাকী। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে মনে করে সামাজিকভাবে যুক্ত হচ্ছে অন্যের সঙ্গে। কিন্তু যুক্ত হতে তো পারে না। ফেসবুকে লেখালেখিটা ডাইরী লেখারই শামিল; ওটি নিজের সঙ্গেই কথোপকথন, প্রকারামেত্ম। ওই কাজটা রবিনসন ক্রুশোও করতো। ডাইরীতে প্রতিদিন লিখে রাখতো নিজের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতির কথা। কিন্তু ডাইরীতে লেখাতে কুলাতো না, বিচ্ছিন্নতা দূর হতো না; যদি বাইবেলরূপী 888sport live football না থাকতো সঙ্গে। বাইবেল সে একাকীই পড়তো, কিন্তু পড়ে সুযোগ পেত একাকিত্ব কাটিয়ে ওঠার।

আধুনিক প্রযুক্তি মানুষকে যে বিচ্ছিন্ন করতে পারছে সে দোষটা কিন্তু প্রযুক্তির নয়, দোষটা হচ্ছে প্রযুক্তির যে মালিক তার। মালিকের নাম পুঁজিবাদ। পুঁজিবাদ মুনাফা বোঝে; সবকিছুর আগে, এবং সবকিছুকে বাদ দিয়ে হলেও সে মুনাফা করতে চায়। পুঁজিবাদের ভেতর যেটুকু অগ্রগামিতা ছিল তার বিশেষ প্রকাশ ঘটেছে ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ গুরম্নত্ব দেবার চেষ্টাতে। এখন সে তার অগ্রগামিতা হারিয়ে ফ্যাসিবাদী চেহারা নিয়েছে। সভ্যতার, প্রকৃতির এবং মনুষ্যত্বেরও সে শত্রম্ন হয়ে পড়েছে। পুঁজিবাদের এমন সর্বজনীনতা ও সর্বত্রবিসত্মৃতি আগে কখনো দেখা যায় নি। সে যেমন ভেতর থেকে মারছে, তেমনি মারছে বাইরে থেকেও। প্রযুক্তিকে সে ব্যবহার করছে উন্নয়নের কাজে যেমন, তেমনি ধ্বংসের কাজেও। পুঁজিবাদের মুনাফালোভী তৎপরতা মানুষকে ভেতরে ভেতরে বিচ্ছিন্ন এবং আত্মকেন্দ্রিক করে তুলেছে। 888sport live footballের অনেক প্রতিপক্ষের বিষয়ে জানি আমরা, 888sport live footballের প্রধান প্রতিপক্ষ হচ্ছে এই বিচ্ছিন্নতা।

888sport live football চায় সংযোগ, পুঁজিবাদের সঙ্গে তাই তার স্বাভাবিক বিরোধ। 888sport live football চায় আনন্দ দেবে, আমোদ-প্রমোদে উৎসাহী পুঁজিবাদের ভোগবাদিতার সঙ্গে তাই তার জাত-শত্রম্নতা। 888sport live football চায় যোগাযোগ হবে মানবিক, পুঁজিবাদ চায় যোগাযোগটা হোক বাণিজ্যিক। পুঁজিবাদের পক্ষে 888sport live footballকে সহ্য করা কঠিন এবং 888sport live footballকে সে যে কোণঠাসা করে রাখতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। এবং সে-কাজটাই করছে সে। নানাভাবে। প্রযুক্তি যে পরিমাণে খপ্পরে পড়েছে পুঁজিবাদের ঠিক সেই পরিমাণেই সে ব্যর্থ হচ্ছে 888sport live footballকে আনুকূল্য দিতে। আগের প্রযুক্তির সঙ্গে একালের প্রযুক্তির মূল পার্থক্যটা এখানেই। চরিত্রে নয়, ব্যবহারে।

888sport live footballের সঙ্গে ফ্যাসিবাদের বিরোধটাও নতুন নয়; এটা প্রাচীন গ্রীক দার্শনিক পেস্নটোর লেখাতেও দেখা গেছে। নিজে অত্যমত্ম বড়মাপের 888sport live footballিক হয়েও পেস্নটো 888sport live footballবিরোধী ছিলেন; কবিদেরকে তিনি পছন্দ করতেন নির্বাসনে পাঠাতে। এর একটা কারণ কবিরা মানুষের মধ্যে আবেগের সৃষ্টি করেন, এবং আবেগ শ্রেণীবিভাজন মানে না। ওদিকে পেস্নটো নিজে বিশ্বাস করতেন যে, শ্রেণীবিভাজন হচ্ছে রাষ্ট্রের স্থায়ী ভিত্তি; ওটি ভাঙলে রাষ্ট্র তার আদর্শ চরিত্র হারিয়ে ফেলবে। পেস্নটোর ওই চিমত্মাটি ছিল অগণতান্ত্রিক। কেবল অগণতান্ত্রিকই নয়, আধুনিক পরিভাষায় বলতে গেলে বলতে হয় ফ্যাসিবাদী। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র সব সময়েই 888sport live footballবিরোধী। হতেই হবে। হিটলারের গ্রন্থবিরোধিতা এবং ১৯৭১ সালের 888sport appsের আল-বদরদের ‘হিন্দুদের-লেখা’ বই থেকে গ্রন্থাগারকে মুক্ত করবার আকাঙক্ষা একই ফ্যাসিবাদী প্রণোদনা থেকে যে উদ্ভূত তাতে সন্দেহ কী!

পুঁজিবাদী ব্যবস্থার একটা সঙ্কট প্রকাশ পেয়েছিল দুই বিশ্বযুদ্ধের সময়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পূর্বে এবং তাঁর নিজের মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগে রবীন্দ্রনাথ তাঁর শেষ 888sport liveটি লেখেন। নাম দিয়েছিলেন ‘সভ্যতার সংকট’। সভ্যতার ওই সঙ্কটটি আসলে ছিল পুঁজিবাদেরই সঙ্কট। সেই সঙ্কট এখন আরো গভীর ও উৎকট হয়েছে। বিচ্ছিন্নতা ও ভোগবাদিতা বৃদ্ধি পেয়েছে, আর বেড়েছে সহিংসতা। সারা পৃথিবী এখন ভয়ে কাঁপছে, আতঙ্কে সে অস্থির। পুঁজিবাদের মোকাবিলা করার জন্য 888sport live footballের তাই খুবই দরকার। অস্ত্র ওই দানবকে পরাভূত করবে না। প্রযুক্তিও পারবে না। তারা চলে যাবে মালিকের অর্থাৎ পুঁজিবাদের পক্ষে। পারবে মানুষ, যে মানুষ শক্তি, সাহস ও পথের সন্ধান পাবে দার্শনিকতার ভেতর, এবং দর্শন জীবমত্ম হয়ে উঠবে 888sport live footballচর্চার মধ্য দিয়ে।

888sport live footballের কাজ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ নানা জায়গাতে বলেছেন। তাঁর জীবনের প্রথম 888sport live footballপাঠের অভিজ্ঞতা ছিল ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’ পড়া। তিনি লিখছেন,

সেদিনের আনন্দ আজও যখন মনে পড়ে তখন বুঝিতে পারি, 888sport app download apkর মধ্যে মিল জিনিসটার এত প্রয়োজন কেন। মিল আছে বলিয়াই কথাটা শেষ হইয়াও শেষ হয় না – তাহার বক্তব্য যখন ফুরায় তখনো তাহার ঝংকারটা ফুরায় না – মিলটাকে লইয়া কানের সঙ্গে খেলা চলিতে থাকে। এমনি করিয়া ফিরিয়া ফিরিয়া সেদিন আমার সমসত্ম চৈতন্যের মধ্যে জল পড়িতে ও পাতা নড়িতে লাগিল।

শব্দ, ছন্দ, ধ্বনি সকল কিছু একত্র হয়ে নাড়িয়ে দেয়, জাগিয়ে তোলে। চৈতন্যের ব্যাপারটাই সব চেয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ। জাগরণের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে অন্যত্র রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘শিশুকালে কেবল চোখ দিয়া দেখাতেই অভ্যসত্ম হইয়া গিয়াছিলাম, আজ যেন একেবারে সমসত্ম চৈতন্য দিয়া দেখিতে আরম্ভ করিলাম।’ 888sport live football চৈতন্যকে যে জাগিয়ে দেয় সে তার ধ্বনির কারণে নয় শুধু, দার্শনিকতার কারণেও। বস্ত্তত দার্শনিকতা না থাকলে কোনো রচনাই 888sport live football হয় না, মহৎ 888sport live football হবার প্রশ্নই ওঠে না। 888sport live footballে নান্দনিকতা অপরিহার্য, কিন্তু নান্দনিকতা নিজেই সুন্দর হয় ভেতরকার গভীরতার দরম্নন। দার্শনিক গভীরতা ও নান্দনিকতার ভেতর একটা দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। সেটা অবৈরী দ্বন্দ্ব। যার দরম্নন নান্দনিকতা পায় গভীরতা, এবং দার্শনিকতা পায় দৃশ্যমানতা। 888sport live footballবিচারে মননশীলতা ও সৃজনশীলতাকে ভাগ করে দেখবার একটা রেওয়াজ আছে; সেটিকে বেশী দূর নিয়ে যাওয়াটা নিতামত্ম অ888sport live footballিক কাজ; কারণ 888sport live footballমাত্রেই মননশীল; এবং সৃজনশীলতা সর্বদাই মননশীলতাকে খুঁজতে থাকে, যুদ্ধ আহবান করে শক্তিবৃদ্ধির আকাঙক্ষায়। 888sport live footballের দায় থাকে একই সঙ্গে গভীর ও সুন্দর হবার, এবং যত সে গভীর হয় ততই বাড়ে তার সৌন্দর্য, এবং সে-কারণে বাড়ে তার আকর্ষণ।

দৃষ্টামত্ম পাওয়া যাবে অহরহ। মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং ঈশ্বর গুপ্ত দু’জনেই অত্যমত্ম বড়মাপের কবি। অসাধারণ তাঁদের ছন্দ-দক্ষতা ও শব্দব্যবহার-কৌশল। কিন্তু দু’জনের 888sport live footballিক মূল্য দু’ধরনের। তার প্রধান কারণ মধুসূদনের গভীর দার্শনিকতা এবং দর্শনের ব্যাপারে ঈশ্বর গুপ্তের অনীহা। মধুসূদন গভীরে গেছেন, ঈশ্বর গুপ্ত যেতে চান নি। বঙ্কিমচন্দ্র অনুরাগী ছিলেন ঈশ্বর গুপ্তের, কিন্তু তিনিও দুঃখ না করে পারেন নি এই বলে যে, ওই কবির ‘এতটা প্রতিভা ইয়ারকিতেই ফুরাইল।’ অপর দিকে মধুসূদনের মৃত্যুতে তাঁর মমত্মব্য ছিল, ‘এই ভূম-লে বাঙ্গালী জাতির গৌরব হইবে। কেন না বঙ্গদেশ রোদন করিতে শিখিয়াছে – অকপটে বাঙ্গালী, বাঙ্গালী কবির জন্য রোদন করিতেছে।’

কিন্তু দর্শন নিজে যে স্বাধীন তা নয়। দর্শনে ইতিহাস থাকে; ইতিহাসের ভেতর থেকেই 888sport live footballিকরা লেখেন, তাঁদের লেখা সমসাময়িক ইতিহাসকে ছাড়িয়ে যায়, কিন্তু সময়ের দ্বারা লেখকের দার্শনিক চিমত্মা প্রভাবিত হয়। কেবল সময় নয়, ছাপ পড়ে দেশেরও। শ্রেণীরও।

শেকস্পীয়র ও সার্ভেন্টিজ একই সময়ের মানুষ। মিল আছে তাঁদের ভেতর, গরমিলও প্রচুর। শেকস্পীয়রের শ্রেষ্ঠত্ব ট্র্যাজেডিতে, সার্ভেন্টিজের শ্রেষ্ঠত্ব মহাকাব্যিক 888sport alternative linkে। দু’জনের ব্যবধানের একটা ব্যাখ্যা হতে পারে স্থানের ভিত্তিতে। ইংল্যান্ড ও স্পেন কাছের হলেও বেশ দূরের; একটি শীতের দেশ, অপরটি উষ্ণতার। একটি উত্তরের অপরটি দক্ষিণের।

এই পার্থক্যটির কথা বলেছেন রম্নশ নাট্যকার তুর্গেনিভ। তাঁর ধারণা মানুষ দু’রকমের হয়; একটির প্রতিনিধি শেকস্পীয়রের হ্যামলেট, অপরটির সার্ভেন্টিজের ডন কুইকজট। হ্যামলেট চিমত্মাপ্রবণ, বিষণ্ণ, আবদ্ধ; তার পেছনে রয়েছে শীতার্ত উত্তর। ডন কুইকজট কর্মব্যসত্ম, দুঃসাহসী, উন্মুক্ত; প্রতিনিধি সে উষ্ণ দক্ষিণের। তবে পার্থক্যের ব্যাখ্যা করার জন্য দেশ যথেষ্ট নয়, আনতে হয় ইতিহাসকেও। ইংল্যান্ডের ইতিহাস আর স্পেনের ইতিহাস এক নয়। স্পেনের তখন সাম্রাজ্য ছিল, ইংল্যান্ডের যা ছিল না। 888sport app download for android করতে হয় দুই লেখকের ব্যক্তিগত ইতিহাসকেও।

শেকস্পীয়র মফস্বলের লোক। ভাগ্যান্বেষণে তাঁকে যেতে হয়েছে লন্ডনে; সেখানে অভিনয় করেছেন, নাটক লিখেছেন, ভালো আয় উপার্জন হয়েছে; নিজের শহরে ফিরে বড় একটা বাড়ী কিনেছেন। অপর দিকে সার্ভেন্টিজ বড় শহরে বড় হয়েছেন; যৌবনে যোগ দিয়েছিলেন নৌবাহিনীতে; যুদ্ধ করেছেন, বন্দী হয়েছেন জলদস্যুদের হাতে, মুক্তি পেয়েছেন মুক্তিপণ মিটিয়ে দিয়ে। সরকারী খাজনা সংগ্রহের কাজ নিয়েছিলেন, ঠিকমত হিসাব দিতে না-পেরে জেল খেটেছেন। ইতিহাসের এই ভিন্নতা পথ করে নিয়েছে তাঁদের 888sport live footballেও।

কিন্তু এই দুই বড় লেখকের মিল আছে দার্শনিকতায়। এই সাদৃশ্য ছাড়িয়ে যায় তাঁদের পার্থক্যকে। দার্শনিকতাটা তাঁদের সৃষ্ট চরিত্র হ্যামলেট ও ডন কুইকজটের আচরণে, অঙ্গীকারে ও উক্তিতে পাওয়া যাবে। উভয়েই দাঁড়িয়েছে ন্যায়ের পক্ষে এবং অন্যায়ের বিরম্নদ্ধে। দু’জনের কেউই জয়ী হতে পারে নি শেষ পর্যমত্ম। উভয়ের পরিণতিই করম্নণ; কিন্তু পাঠকের সহানুভূতি থাকে তাদের জন্য। বিশেষভাবে হ্যামলেটের জন্য। তার দুঃখে আমরা কাতর হই, আতঙ্কিত হই তার বিপদে। এভাবে নিজের ব্যক্তিগত গ–র বাইরে চলে যাই আমরা। উন্নত হই অনুভূতির অনুশীলনের ভেতর দিয়ে। 888sport live footballের দায় ওইটিও, নৈতিক প্রশ্নকে অনুভবের ব্যাপার করে তোলা।

হ্যামলেটের প্রায় দু’শ বছর পরে, ঊনবিংশ শতাব্দীর আরেক তরম্নণ, দসত্ময়ভস্কির রাসকলনিকভও ঠিক করেছিল লড়বে সে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে। রাসকলনিকভ দসত্ময়ভয়স্কির অপরাধ ও শাসিত্মর (ইংরেজীতে ক্রাইম অ্যান্ড পানিসমেন্ট) নায়ক। হ্যামলেটের মতো এই তরম্নণও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। হ্যামলেট পড়েছে দর্শন, রাসকলনিকভ পড়েছে আইন। রাসকলনিকভ রাশিয়ার রাজধানী পিটার্সবার্গে থাকে। একদিকে সে দেখে বিলাস ও প্রাচুর্য, অন্যদিকে অতিশয় নির্মম দারিদ্র্য। রাসকলনিকভ রাজপুত্র নয়, নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের সমত্মান; দরিদ্রই বলতে হয় তাকে। তার পিতা নেই, বিধবা মায়ের অর্থনৈতিক অবস্থা করম্নণ, বোনটিকে বিয়ে দিতে হচ্ছে অপাত্রে। রাসকলনিকভ ইচ্ছা করলে উপার্জন হয়তো কিছু করতে পারতো, অমত্মত গৃহশিক্ষকতা পাওয়াটা অসম্ভব ছিল না তার পক্ষে; কিন্তু তার চিমত্মা অত্যমত্ম উঁচু। কাঁধে তার ভর করেছে পৃথিবীটাকে বদলাবার দায়িত্ব। বদলাবার জন্য নিজেকে সে নেপোলিয়ন হিসেবে দেখতে পায়; ওই সম্রাট রম্নশ দেশকে যদিও দখল করবার জন্য আক্রমণ করেছিল। নেপোলিয়ন হবার চিমত্মাটা এসেছে দার্শনিক কারণে; নীৎসের দর্শন পড়ার ফলে। নীৎসে অতিমানবের ধারণা প্রচার করেছেন। নীৎসের মতো সেও মনে করে, পৃথিবীটা মানুষে নয়, কীট পতঙ্গে ভরা। কীট পতঙ্গদের বাঁচবার কোনো অধিকার নেই।

রাসকলনিকভের দু’বেলা খাবার জোটে না। সে তার আংটিটি বন্ধক রেখেছে, যেটি তার মায়ের দেয়া। আংটিটি ছাড়াতে পারে নি। এবার বন্ধক রাখতে গেছে হাতের ঘড়িটি, যেটি সে তার বাবার কাছ থেকে পেয়েছে। বন্ধক রেখেছে যে মহিলার কাছে সে এক বৃদ্ধা; থাকে সে একাকী, ডাইনীর মতো তার আচার-আচরণ। সুদখোর মহিলার অনেক টাকা। রাসকলনিকভ ভাবে, এর তো বাঁচারই কোনো অধিকার নেই। সে তাকে হত্যা করে ফেলল; ঠিক টাকার লোভে নয়, অনেকটাই ঘৃণাবশত। ঘটনাক্রমে মহিলার বোন তখন এসে পড়েছে। সেও থাকে ওই বাড়ীতেই। সাক্ষী না-রাখার প্রয়োজনে তাকেও হত্যা করতে হলো।

এর পরেই শুরম্ন হয় তার আসল যন্ত্রণা। রাসকলনিকভ অসুস্থ হয়ে পড়ে। পুলিশের লোকের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা তার জন্য অসহ্য হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যমত্ম সে স্বীকার করে তার অপরাধ। তার শাসিত্ম হয়; সাইবেরিয়াতে নির্বাসন। রাসকলনিকভ পৃথিবীকে বদলাবার কথা ভাবছিল, শেষ পর্যমত্ম আত্মিক মুক্তির পথ খুঁজে পেল সে বাইবেলে।

ধর্মগ্রন্থ তার কাছে 888sport live footballগ্রন্থ হয়ে ওঠে, যেমনটা ঘটেছিল রবিনসন ক্রুশোর ক্ষেত্রে। নীৎসের অতিমানবতাবাদ ত্যাগ করে সে চলে আসে যিশু খ্রিস্টের সরল জীবনের কাছে। গ্রন্থপাঠে সে অন্ধকার থেকে আলোর পথ খুঁজে পায়। পথের ভালোমন্দ অন্যপ্রশ্ন; গ্রন্থ যে পথ দেখাচ্ছে এটাই তাৎপর্যপূর্ণ। নীৎসের 888sport live football তাকে একদিকে টেনেছিল, বাইবেল নিয়ে গেল একেবারে বিপরীত দিকে। আত্মদম্ভের জায়গাটা চলে গেল বিনয়ের দখলে।

দসত্ময়ভস্কি নিজেও পথ খুঁজেছিলেন। সমাজে তিনিও দুঃসহ অন্যায় দেখেছেন, এবং পরিবর্তন চাইছিলেন। যৌবনে তিনি স্বৈরাচারী জারতন্ত্রের উচ্ছেদকামী সশস্ত্র বিপস্নবীদের দলে যোগ দিয়েছিলেন। ওই অবস্থাতেই একবার ধরা পড়েন। তাঁর প্রাণদ-াদেশ হয়, ফাঁসি হয়ে যাবার কথা, ঠিক আগের মুহূর্তে ছাড়া পান; কিন্তু কারাদ- ভোগ করেন চার বছরের। তবে তিনি সমাজ বিপস্নবের পক্ষে ছিলেন না, বিশ্বাস করতেন ব্যক্তির হৃদয় পরিবর্তনে। রাসকলনিকভকে তার বাইবেল-পাঠ যে জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল চলে যায় সে সেই গমত্মব্যে।

দসত্ময়ভস্কির পরপরই রম্নশ ভাষার শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক টলস্টয়ের আগমন। সাত বছর পরে। টলস্টয়ও সমাজ-বিপস্নবের পক্ষে ছিলেন না; কিন্তু বিপস্নবীদের আনাগোনা আছে তাঁর 888sport live footballে। লেভিন নামের চরিত্রটি আন্না কারেনিনা 888sport alternative linkের নায়ক নয়, প্রতিনায়ক সে; তাকে দেখে নায়ককে এবং অন্যদেরকেও ভালোভাবে চেনার ব্যাপারে সুবিধা হয়। লেভিনের ভাইদের একজন সমাজ888sport apkী, আরেকজন সমাজবিপস্নবী। কিন্তু এই দুইজনের কেউই সফল নয়; সফল লেভিনই, যে ব্যক্তিমালিকানায় আস্থা হারায় নি ঠিকই, কিন্তু উৎপাদনের ক্ষেত্রে শ্রমকে সর্বাধিক গুরম্নত্বপূর্ণ উপাদান বলে মনে করে, এবং নিজের কৃষিভূমিতে কৃষিকাজের সময় কৃষকদের সঙ্গে কাজে হাত লাগায়। টলস্টয়ের অন্য 888sport alternative link পুনরম্নত্থানে (ইংরেজী নাম রেজারেকশন) বিপস্নবীদের ভূমিকা কিন্তু অপ্রত্যক্ষ নয়। সেখানে নায়ক একজন ভূস্বামী, পরে যে হয়েছিল সামরিক বাহিনীর বড় অফিসার; কিন্তু নৈতিকভাবে সে হেরে যায় একজন বিপস্নবীর কাছে। বিপস্নবীদের আরেকজনের থলির ভেতর কার্ল মার্কসের বই উঁকি দিচ্ছে, আমরা, পাঠকেরা, দেখতে পাই।

হ্যামলেট, ডন কুইকজট, অপরাধ ও শাসিত্ম, আন্না কারেনিনা – এই রচনাগুলোর সবকয়টিই কিন্তু একই খবর বিভিন্ন উপায়ে দিচ্ছে; সেটা হলো এই যে, অন্যায়কে পরাসত্ম করার কাজটা একাকী চেষ্টায় সম্ভব নয়, তার জন্য যুক্ত হতে হয় অন্যদের সঙ্গে। আর দসত্ময়ভস্কি এবং টলস্টয় যদিও সমাজবিপস্নবের পক্ষে লেখেন নি, কিন্তু তাঁদের লেখা ১৯১৭ সালের বলশেভিক বিপস্নবকে সাহায্য করেছে। এই যোগাযোগটা অস্বাভাবিক কোনো ব্যাপার নয়। অনেক ক্ষেত্রেই 888sport live football 888sport live footballিকের উদ্দেশ্যকে ছাড়িয়ে যায়, 888sport live footballিকের বিনানুমতিতেই। দসত্ময়ভস্কি এবং টলস্টয় উভয়েই বিপস্নব-পূর্ববর্তী রম্নশ সমাজের অমত্মঃসারশূন্যতা ও নিষ্ঠুরতাকে উন্মোচিত করে দিয়ে বিপস্নবের আগমনকে সাহায্য করেছেন; এবং তরম্নণ আদর্শবাদীদেরকেও জানিয়ে দিয়েছেন এ খবর যে, একাকী যাত্রায় সাফল্য আসবে না। যদিও দু’জনের কেউই সশস্ত্র অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিলেন না।

 

দুই

ওই যে একাকিত্ব মানুষের; ঘটনা, দুর্ঘটনা, অবস্থান ইত্যাদি কারণে যা ঘটে, সেটাকে দূর করাই হচ্ছে 888sport live footballের প্রধান দায়। একাকিত্বটা কৃত্রিম; সংলগ্ন থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সংলগ্ন থাকা যায় না; নানাভাবে, বিভিন্ন পথে বিচ্ছিন্নতা এসে পড়ে মানুষের জীবনে। আর সে জন্যই 888sport live footballের কাজটা জরম্নরী হয়ে ওঠে।

টলস্টয়ের নায়িকা আন্না কারেনিনার দিকে আবার তাকানো যাক। আন্নার সঙ্গে তার স্বামীর বয়সের ব্যবধান বিশ বছরের। 888sport promo code হয়ে ওঠার আগেই সে স্ত্রী ও মাতা হয়ে গেছে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটা নিবিড় নয়, কিন্তু একমাত্র পুত্রসমত্মানটির জন্য তার স্নেহ অকৃত্রিম। আন্নার মধ্যে আছে স্বেচ্ছাসেবীর মনোভাব। ভাইয়ের দাম্পত্য জীবনে একটি সঙ্কট দেখা দিয়েছে, তাই সমত্মানটিকে রেখে সে চলে এসেছে মস্কোতে। স্বামীর সঙ্গে তাকে থাকতে হয় রাজধানী পিটার্সবার্গে। ভাইয়ের সমস্যার একটা সমাধান করা গেছে, এখন সে ফেরত যাচ্ছে পিটার্সবার্গে। যাচ্ছে ট্রেনে করে, রাতের বেলা। বাইরে তুষারপাত ও ঝড় চলছে। ট্রেনের কামরায় বসা অবস্থায় তার ভেতরে অস্বসিত্ম। সে একটা ইংরেজী 888sport alternative link পড়তে শুরম্ন করেছে। ইংরেজী 888sport alternative link পড়তে তার কোনো অসুবিধা নেই। রম্নশ দেশের বুর্জোয়ারা তখন যতটা স্থানীয় তার চেয়ে বেশী ইউরোপীয়। তারা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলে ফরাসী ভাষায়, 888sport live football পড়ে ইউরোপীয়। ইংরেজী 888sport alternative linkটি পড়তে পড়তে আন্নার অনুভূতিই হচ্ছে এই রকমের : ‘888sport alternative linkের নায়িকা যখন একজন অসুস্থ মানুষের শুশ্রূষা করছে তখন তার নিজের ইচ্ছা হচ্ছিল নিঃশব্দ পদক্ষেপ ওই রোগীর কামরায় হাঁটবার; যখন সে পড়ছিল পার্লামেন্টে একজন সদস্য বক্তৃতা করছে, তখন তার ইচ্ছা করছিল সেও বক্তৃতা করবে; যখন সে পড়লো লেডী মেরী কীভাবে ঘোড়ায় চড়ে যাচ্ছে, সঙ্গে চলেছে তার কুকুরগুলো, মহিলা বিয়ের কনেটিকে ঠাট্টা করছে, এবং নিজের সাহস দিয়ে সবাইকে সত্মম্ভিত করে দিচ্ছে, তখন তারও ইচ্ছা করছে ওরকমটা করতে।’ কিন্তু সে দেখতে পাচ্ছে তার মন বসছে না পড়াতে। জোর করে পড়লো সে সেই জায়গাটা যেখানে 888sport alternative linkের নায়ক নতুন উপাধি পেয়ে এবং একটি খামারের মালিক হয়ে তার ইংরেজী-সুখ প্রায় পূর্ণ করে ফেলেছে তখন তার সঙ্গে সেও যেতে চাইলো খামারে; কিন্তু হঠাৎ করে তার লজ্জা পেল কি জানি কেন। লজ্জার গোপন কারণ ভাবী প্রেমিক ভ্রনস্কির কথা তার মনে পড়া, যার সঙ্গে তার এই প্রথম দেখা মস্কোতে; আন্না এই প্রথমবারের মতো আত্মসচেতন হয়ে উঠেছে, সে অতিক্রম করে যেতে চাচ্ছে নিজেকে; পারছে না, লজ্জা পাচ্ছে; তার ভেতর কৃত্রিমতা দেখা দিয়েছে। এর পরে তার আত্মসচেতনতা বাড়বে, দেখা যাবে সে বাচ্চাদের জন্য বই লিখছে, কিন্তু নিজের মেয়েটির যত্ন নিচ্ছে না। তার আত্মসচেতনতা আরো বাড়বে, আরো বেশী কৃত্রিম হবে সে, এবং শেষ পর্যমত্ম আত্মহত্যা করবে ট্রেনের ইঞ্জিনের নীচে নিজেকে নিক্ষেপ করে। সেদিন রাত্রি বেলায় ট্রেনে বসে বই পড়তে গিয়ে সে যে নিজেকে ভুলতে পারছিল না, ওইখানে তার 888sport live footballপাঠে ব্যর্থতা। 888sport live footballের দায় থাকে পাঠককে অন্য একটা জগতে নিয়ে যাবার, পাঠক যেখানে আত্মসচেতন থাকবে না, ভুলে যাবে নিজেকে, বাসিন্দা হয়ে পড়বে ওই নতুন ভুবনের। না-পারলে সেটা 888sport live footballের ব্যর্থতা। তবে ব্যর্থতা হতে পারে পাঠকেরও; আন্নার বেলাতে যেমনটা ঘটেছিল।

888sport live footballের ওই ভুবনটা কি একেবারেই আলাদা? তাকে দ্বিতীয় ভুবন বলাটা কি সকল অর্থে যথার্থ? তা বোধ করি নয়। কেননা 888sport live football হচ্ছে জীবনেরই সম্প্রসারণ; জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন নয় সে। 888sport live footballের কাজ যুক্ত করা, এবং নিজেও সে বিচ্ছিন্ন হয় না জীবন থেকে, বিচ্ছিন্ন হলে তার মূল্য থাকে না। তিন

ব্যক্তি যখন নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে, অত্যমত্ম আত্মসচেতন থাকে তখন জীবন যাপন তার জন্য কঠিন এক বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। জীবনকে বহন করাটা হয় যন্ত্রণাদায়ক, অনেক সময় দুঃসহ। বিচ্ছিন্নতার ওই কারণেই আন্না শেষ পর্যমত্ম আত্মহত্যা করেছে। ট্র্যাজেডির লেখকরা মানুষের এই যন্ত্রণার খবর আমাদের কাছে পৌঁছে দেন। তাঁদের রচনায় নায়কেরা ক্রমাগত নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে, কিন্তু নিঃসঙ্গ হতে তারা চায় না। গ্রীক ট্র্যাজেডিতে এই নিঃসঙ্গতার কথা আছে। খুব ভালোভাবে আছে শেকস্পীয়রের ট্র্যাজিক নাটকগুলোতে। দুঃসহ যন্ত্রণায় হ্যামলেট ভেবেছে সে আত্মহত্যা করবে। কিন্তু তার আত্মসচেতনতাই তাকে নিবৃত্ত করেছে, সে ভেবেছে মৃত্যুর পরে জীবনের যন্ত্রণাগুলো যদি স্বপ্ন হয়ে দেখা দেয় তাহলে তো মুক্তি পাওয়া গেল না। শেষ পর্যমত্ম সে মারা যায়। তার প্রিয় এবং একমাত্র বন্ধু হোরেশিও। হোরেশিও ভেবেছিল হ্যামলেট না থাকলে তার জীবনও অর্থহীন হয়ে পড়বে। উদ্যত হয়েছিল বন্ধুর অনুগামী হতে। হ্যামলেট তাকে নিবৃত্ত করেছে; বলেছে, তার বেঁচে থাকা দরকার; বেঁচে থাকলে সে হ্যামলেটের কাহিনী অন্যদেরকে জানাতে পারবে। মৃত্যুর পরও হ্যামলেট বেঁচে থাকতে চায়, সঙ্গে থাকতে চায় জীবিত মানুষের।

সঙ্গ পাবার এই আকাঙক্ষাটা মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। সে জন্যই বলা হয় যে, মানুষ সামাজিক প্রাণী; সমাজ না থাকলে সে অমানুষ হয়ে পড়বে। নিজের সঙ্কীর্ণ গ–র ভেতর থেকে মনুষ্যত্বকে রক্ষা করা অসম্ভব, কারণ কোনো মানুষই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়; সকল মানুষই অন্য অনেক মানুষের ওপর নির্ভরশীল – বহুভাবে, বহু কারণে।

যুক্ত হবার আকাঙক্ষা মেটাবার ব্যাপারে 888sport live football যেমন সাহায্য করে, তেমনি আকাঙক্ষাটাকে সে প্রতিফলিতও করে থাকে।

প্রতিফলন দেখা যায় ট্র্যাজেডির নায়কদের ভেতর যেমন, তেমনি মহাকাব্যিক নায়কদের বেলাতেও। একটা দৃষ্টামত্ম আছে ফাউস্টের কাহিনী নিয়ে রচিত 888sport live footballের ভেতর। ফাউস্ট ছিলেন মধ্যযুগের জার্মানীর একজন প্রবাদপ্রসিদ্ধ জ্ঞানী ও চিকিৎসক। তাঁর ইচ্ছা হয়েছিল জ্ঞান অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে যৌবনকে চিরস্থায়ী করবেন, এবং যাদুকরী এমন শক্তি আয়ত্তে আনবেন যাতে যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। এই লক্ষ্যেফাউস্ট চুক্তি করেছিলেন মেফিস্টোফিলিসের সঙ্গে। ধর্মগ্রন্থে এই মেফিস্টোফিলিসকে শয়তান বলা হয়। ইংরেজ নাট্যকার ক্রিস্টোফার মার্লো ফাউস্টকে নিয়ে একটি ট্র্যাজিক নাটক লিখেছেন; নাম রেখেছেন ডক্টর ফস্টাস। এই নাটকে ফস্টাস তাঁর জ্ঞান নিয়ে তৃপ্ত নন, তিনি আরো আরো অনেক জ্ঞান চান, ভেতরে ভেতরে লোভ ঈশ্বরের মতো ক্ষমতাবান হবেন। মেফিস্টোফিলিসের জন্মগত কাজ মানুষের সঙ্গে শত্রম্নতা করা; সে দেখলো এই জ্ঞানীকে কব্জা করাটা একটা ভালো কাজ। মেফিস্টোফিলিস চুক্তি করলো ফস্টাসের সঙ্গে। ফস্টাসের ভৃত্য হিসেবে কাজ করবে, ফস্টাসের সমসত্ম ইচ্ছা সে পূরণ করবে, এমনকি মৃত মানুষকে জীবিত করে তুলবার ক্ষমতা পর্যমত্ম এনে দেবে, চবিবশ বছর ধরে ফস্টাস সব সুখ ভোগ করবে, কিন্তু তারপরে তার আত্মাকে মেফিস্টোফিলিস নিয়ে চলে যাবে। চুক্তি পূরণ হয়েছে, চবিবশ বছর পরে ফাউস্টের আত্মাকে যখন নরকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেই মুহূর্তটিই নাটকের সবচেয়ে উলেস্নখযোগ্য অংশ। নরকে প্রবেশের আগেই ওই জ্ঞানী, গুণী ও ক্ষমতাবান মানুষটির নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে।

মার্লো রেনেসাঁসের নাট্যকার। রেনেসাঁস সেই যুগে মানুষ যখন বিশ্বাস করতো যে, জ্ঞানই হচ্ছে শক্তি। মার্লোর ফস্টাস তাই জ্ঞান চায়, শক্তি তথা ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করবার জন্য। এই জ্ঞান একামত্মই তার নিজের জন্য। মেফিস্টোফিলিসও ক্ষমতাবান, কিন্তু তার ক্ষমতা কাজে লাগে মানুষের অমঙ্গল করতে। ফস্টাস সে-ধরনের ক্ষমতা চায় না। তবে জ্ঞানী ও তার প্রতিপক্ষ ওই শয়তানের ভেতর এক জায়গায় সূক্ষ্ম একটা মিল কিন্তু রয়ে যাচ্ছে, যেটা সম্বন্ধে ফস্টাস নিজে সচেতন নন। মিলটা এইখানে যে, তারা উভয়েই আত্মকেন্দ্রিক।

ক্রিস্টোফার মার্লোর দুই শতাব্দী পরে জার্মানীর শ্রেষ্ঠ কবি গ্যেটে ফাউস্টের কাহিনী নিয়ে তাঁর শ্রেষ্ঠ 888sport live footballকর্মটি সৃষ্টি করেছেন। এই ফাউস্ট কিন্তু ভিন্ন মানুষ। তিনি আত্মকেন্দ্রিক নন, তাঁর আকাঙক্ষাও জ্ঞানের, কিন্তু জ্ঞানের আপেক্ষিকতাটা তিনি জানেন, জানেন জ্ঞানের শেষ নেই, এবং জানেন যে সেই মুহূর্তেই তিনি নিঃশেষ হয়ে যাবেন যে মুহূর্তে তাঁর মনে হবে আর কিছু পাবার নেই। গ্যেটের মেফিস্টোফিলিস রেনেসাঁসের সময়কার নয়; তার সব কাজকর্ম পুঁজিবাদের দুঃশাসনের কালের। ততদিনে রেনেসাঁসের মানবমুক্তি আটকা পড়ে গেছে বাণিজ্য ও দস্যুতার জালে, ব্যক্তিগত সম্পত্তির লালসা আক্রমণ করেছে মানুষের সামাজিক সত্তাকে; ফরাসী বিপস্নব পারে নি নিজের ঘোষিত লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে, মানুষের মনে হতাশা ও ক্লামিত্ম দেখা দিয়েছে। মেফিস্টোফিলিসকে দেখা যাচ্ছে একবার আসে কুকুর হয়ে, আবার আসে ভদ্রলোক সেজে; দু’টিই তার স্বাভাবিক ছদ্মবেশ। মানুষকে সে মনে করে ঘাসফড়িঙ-এর মতো লাফালাফি-করা একটি পতঙ্গবিশেষ, যে পতঙ্গটি ঘাসের রাজত্বে থাকলেই ভালো করতো, কিন্তু লাফিয়ে গিয়ে মুখ গোঁজে সে আবর্জনায়, এমনই তার স্বভাব।

ওদিকে ঈশ্বর মানুষকে খুবই পছন্দ করেন; মানুষকে তিনি গড়েছেন অনেকটা নিজের প্রতিবিম্ব হিসেবে। মানুষদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হচ্ছে ডক্টর ফাউস্ট। মেফিস্টোফিলিসের স্বভাব ঈশ্বরকে চ্যালেঞ্জ করা। সে বলে ওই শ্রেষ্ঠকে সে পারবে ধুলাবালি খাইয়ে ছাড়তে। ঈশ্বর তাকে অনুমতি দেন। মেফিস্টোফিলিস এসে ভৃত্য হয়ে যায় ফাউস্টের, বলে যা বলবেন তাই করবো, আমি আপনার দাসানুদাস। তার ইচ্ছা ফাউস্টকে সে নিয়ে আসবে নিজের পথে, জ্ঞানী মানুষটিকে সে তার নিজের মতোই আত্মকেন্দ্রিক করে ছাড়বে। অনেক চেষ্টা করেছে, কিন্তু পারে নি। কারণ ফাউস্ট আত্মকেন্দ্রিক হতে সম্মত হন নি। ফাউস্টের পিতা ছিলেন পরোপকারী চিকিৎসক; ফাউস্টও তাই রয়ে গেছেন, তিনি উপকার করতে চান মানুষের। ঈস্টার উপলক্ষে উৎসব বসেছে নগরে, সব মানুষ বের হয়ে এসেছে বসমেত্মর উদার আহবানে; যা ইচ্ছা তাই করবার ক্ষমতা পেয়েছেন যে ফাউস্ট তিনি কিন্তু চলে যাচ্ছেন ওই মানুষদের ভীড়ে। তাঁর ভেতর অহঙ্কার নেই, দম্ভ নেই, নেই বিচ্ছিন্নতা; সকলের আনন্দেই তাঁর আনন্দ। কিন্তু নগরে আটকে থাকেন না ফাউস্ট, নগর ছেড়ে গ্রামে চলে যান, মেফিস্টোফিলিসের-দেওয়া ক্ষমতা ব্যবহার করে। গ্রামের কৃষক খুশি হয় তাঁকে পেয়ে। তাঁদের মনে পড়ে যায় যে ফাউস্টের পিতাও ছিলেন তাঁদের চিকিৎসক, তাঁরা আশা করে তিনিও হবেন পিতার মতো। মেফিস্টোফেলিসকে উদ্দেশ করে ফাউস্ট বলেন, ‘মানুষের কল্যাণ ও বেদনা জমে উঠবে আমার কণ্ঠের মালা হয়ে, নিজেকে আমি ছড়িয়ে দেবো সকল মানুষের সত্তাকে আলিঙ্গন করবার জন্য।’

মার্লোর ফস্টাসের মতোই গ্যেটের ফাউস্টের পরিণতিও মৃত্যুতেই। নরকের প্রতিনিধিরা চেয়েছিল তাঁকে নিজেদের আওতায় নিয়ে আসবে। পারে নি। স্বর্গের দূতেরা তাঁর দেহের অবিনশ্বর অংশকে, অর্থাৎ তাঁর আত্মাকে, নিয়ে চলে যায় স্বর্গে, গান গাইতে গাইতে। মার্লোর নাটকের পরিণতি থেকে এই নাটকের পরিণতি একেবারে উল্টো। বুঝতে অসুবিধা নেই যে, মার্লোর ফস্টাস ছিলেন পুঁজিবাদের আত্মপ্রকাশের যুগে ব্যক্তির আত্মবিকাশের উন্মাদনার প্রতীক, আর গ্যেটের ফাউস্ট হচ্ছেন পুঁজিবাদের বিচ্ছিন্নতার যুগে মানুষের প্রতি ভালোবাসার অমত্মর্লীন ঝর্ণাধারার প্রতিনিধি।

গ্যেটের ফাউস্ট দেখেছেন তাঁর পরিচিত একখ- জমি ডুবে গিয়েছে সমুদ্রের পানির নীচে, মেফিস্টোফিলিসকে কাজে লাগিয়ে সেই ভূমি উদ্ধার করে দিলেন তিনি, মানুষের উপকারে লাগবে বলে। তাঁর স্বপ্ন ওই ভূমিতে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করবে; সেখানে বিপদ থাকবে হয়তো, কিন্তু সুযোগ থাকবে অগ্রগমনের। মানুষ সেখানে নিজের শ্রম ও কর্মদক্ষতা নিয়োগ করবে; পরিশ্রম করে ফলে ও ফসলে ভরে ফেলবে সবুজ ভূমি, সেখানে জায়গা হবে পশু ও পাখির।

পুঁজিবাদের দুঃশাসনের যুগে বসবাস করে গ্যেটে কি দেখতে পাচ্ছিলেন যে ওই ব্যবস্থার দৌরাত্ম্যে ধরিত্রী একদিন উষ্ণ হবে, বরফ যাবে গলে, সমুদ্র গ্রাস করে ফেলতে চাইবে বেলাভূমিকে? অসম্ভব কি! অমন অমত্মর্দৃষ্টি না থাকলে অতবড় 888sport live footballিক হলেন কী করে? পুঁজিবাদ অবশ্য ফাউস্টের যুক্ত হবার আকাঙক্ষাকে মোটেই প্রশ্রয় দেয় নি, সযত্নে প্রতিপালন করেছে বিচ্ছিন্নতাকে। এর কয়েক যুগ পরে গ্যেটের ওই জার্মানীতেই তো আবির্ভাব ঘটেছে দার্শনিক নীৎসের, যিনি তাঁর 888sport live footballে অতিমানবের আবশ্যকতার তত্ত্ব ফেরি করেছেন, পূর্বাভাস দিয়েছেন হিটলারের আগমনের।

যুক্ত হবার আকাঙক্ষাটা রবীন্দ্রনাথের রচনার সর্বত্র পাওয়া যাবে। রবীন্দ্রনাথের সেই অসাধারণ 888sport app download apkটি 888sport app download for android করা যাক, যেটি তিনি লিখেছিলেন বাইশ বছর বয়সে। কলকাতার ব্যসত্ম শহরে সূর্যোদয়ের দৃশ্যটি দেখেছিলেন তিনি জানালা দিয়ে, দেখে সেই প্রভাতে তাঁর ভেতরে স্বপ্নভঙ্গ ঘটেছিল নির্ঝরের। ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ 888sport app download apkটিতে বন্ধনের বিরম্নদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ আছে। বন্ধনটা ব্যক্তিগত, কিন্তু ব্যক্তি তো বন্দী ছিলেন ঔপনিবেশিক বন্দীশালাতেও। কবি বলছেন, তিনি দেখতে পাচ্ছেন চারদিকে তাঁর পাষাণ রচিত কারাগার ঘোর। কিন্তু নির্ঝর জেগে উঠেছে, সে থামবে না। ‘থর থর করি কাঁপিছে ভূধর/ শিলা রাশি রাশি পড়িছে খসে।’

‘বাহিরেতে চায়, দেখিতে না পায় কোথায় কারার দ্বার।’ এই নির্ঝর পাষাণ মানে না, আঁধার মানে না।

প্রভাতেরে যেন লইবে কাড়িয়া

আকাশেরে যেন ফেলিবে ছিঁড়িয়া

 

সে বেরিয়ে পড়বে

 

দেখিব না আর নিজেরি স্বপন

বসিয়া গুহার কোণে

আমি ঢালিব করম্নণাধারা

 

জগতে ঢালিব প্রাণ

গাহিব করম্নণাগান।

নির্ঝর বলছে, ‘ভাঙ ভাঙ কারা, আঘাতে আঘাত কর।’ নির্ঝর বেরিয়ে পড়েছে, ‘ওরে আজ কী গান গেয়েছে পাখি/ আসিছে রবির কর।’

এর প্রায় চলিস্নশ বছর পরে এই একই বয়সের এক যুবকের, কাজী নজরম্নল ইসলামের, একই রকমের অভিজ্ঞতা হয়েছিল। ওই কলকাতা শহরেই। সকালে নয় মধ্যরাতে। সেই অভিজ্ঞতাও বন্ধনমুক্তিরই। তুলনা করাটা অবশ্যই অন্যায় হবে, রবীন্দ্রনাথের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ আর নজরম্নলের ‘বিদ্রোহী’ এক বস্ত্ত নয়, বিসত্মর পার্থক্য: কিন্তু মিল আছে, এবং সেটা পার্থক্যের চেয়ে অধিক তাৎপর্যপূর্ণ। নজরম্নলের 888sport app download apkতেও সেই একই উদ্দীপনা; ‘আমি উপাড়ি’ ফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে/ নবসৃষ্টির মহানন্দে।’ আকাঙক্ষাটাও একই, বন্ধনমুক্ত হয়ে মিলবার, একাত্ম হবার। উপসংহারটা মনে হবে ভিন্নতর, কিন্তু মর্মবস্ত্ততে তারা অভিন্ন, বলেছেন,

আমি সেই দিন হব শামত্ম,

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে

ধ্বনিবে না

অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে

রণিবে না।

করম্নণাধারা ঢালবার কথাটাই, ভিন্ন ভাষায়। মানুষের সঙ্গে মিলিত হবার আকাঙক্ষায় গ্যেটের ফাউস্ট, রবীন্দ্রনাথের নির্ঝর, এবং নজরম্নলের বিদ্রোহী এক স্রোতে এসে মিলে যায়। বলে দেয় 888sport live footballের মূল দায় ওইটিই, বিচ্ছিন্নতা ঘুচিয়ে দিয়ে সংলগ্ন করে দেওয়া।

 

চার

উপমা হিসেবে নদী খুবই উপকারী। বড় সহজে তাকে পাওয়া। বলতে পারি 888sport live football অনেকটা নদীর মতোই। নদীর যেমন, তেমনি তারও আকাঙক্ষা সংলগ্ন হবার। সংলগ্ন না হতে পারলে নদী আর নদী থাকে না, বালুকাবেলায় হারিয়ে যায়। 888sport live footballের ব্যাপারটাও ওই রকমেরই, তার জীবনও সংলগ্ন হওয়ার ওপর নির্ভরশীল।

বালুর উপমাটাও বেশ উপযোগী। নদীতে ঢেউ থাকে, থাকে বালুও। নদীই বালুকে বহন করে আনে, ওই বালু বালুব্যবসায়ীদের কাছে খুবই আদরের বস্ত্ত। কিন্তু বালুতো নদী নয়। 888sport live football বালুকে উপেক্ষা করে না, কিন্তু বালুকে সে কখনোই আদর্শ বলে মনে করে না। 888sport live footballের আদর্শ হচ্ছে নদীর ঢেউ, যারা একের পর এক আসে। থাকে তারা সংলগ্ন হয়ে। বালুর ব্যাপারটা একেবারেই উল্টো। বালুকে কণাতে কণাতে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে হয়। ঢেউ হতে তো পারেই না, কাদা হতেও রাজী হয় না। 888sport live footballের দায়টা ঢেউ সৃষ্টির, বালু সৃষ্টির নয়। সে নিজেও চায় ঢেউ হবে, বালু না-হয়ে। মানুষকেও সে পরস্পরসংলগ্ন ঢেউ করতে চায়, বিচ্ছিন্ন বালুর বিপরীতে। r