সিমিন বেহবাহানির কয়েকটি 888sport app download apk

ভাষামন্তর : মঈনুস সুলতান

ইরানের কবি সিমিন বেহবাহানির (১৯২৭-২০১৪) জন্ম তেহরানে। তাঁর পিতা আববাস খলিলি ছিলেন লেখক ও সংবাদপত্রের সম্পাদক। তাঁর জননী কবি ফখর আজমা আরগুনও যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতায়। 888sport promo codeবাদী জেন্ডার-বিশেষজ্ঞ হিসেবেও তিনি ছিলেন খ্যাতিমান। মাত্র বারো বছর বয়সে সিমিন বেহবাহানি রচনা করেন তাঁর প্রথম 888sport app download apk। চোদ্দো বছর বয়স থেকে তাঁর 888sport app download apkদি প্রকাশিত হতে থাকে পত্রপত্রিকায়। বিষয়বস্ত্তর দিক থেকে অত্যমত্ম আধুনিক হলেও তিনি গজলের ধ্রম্নপদী প্রকরণকে প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে পছন্দ করতেন। জেন্ডার বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার এ-কবির 888sport app download apkয় ইরানের সমকালীন সমাজবাস্তবতা তীব্রভাবে প্রতিফলিত। বোদ্ধা-সমালোচকরা তাঁকে বিশ শতকের ফার্সি 888sport live footballের প্রধান কবি হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন।

সিমিন বেহবাহানি অনেক বছর ইরানের রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ ও ২০০২ সালে পরপর দুবার তিনি নোবেল 888sport app download bdের জন্য মনোনয়ন পান। ১৯৯৮ সালে তিনি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তরফ থেকে লাভ করেন ‘হামেট গ্রান্ট’ 888sport app download bd। ২০০৬ সালে নরওয়েজিয়ান অথরস ইউনিয়ন তাঁকে ‘ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন’ 888sport app download bdে সম্মানিত করে। তাঁর রচিত বিশটি কাব্যগ্রন্থের মধ্যে ১৯৫২ সালে প্রকাশিত শেহ-তার এ শেকাস্ত বা দ্য ব্রোকেন লুট এবং ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত চেলচেরাগ বা শ্যান্ডেলিয়ার বিশেষভাবে উলেস্নখযোগ্য।

২০১০ সালে ৮২ বছর বয়স্ক প্রায় অন্ধ কবি তাঁর প্রতিবাদী ভূমিকার জন্য কারারুদ্ধ হন। অবশেষে আমত্মর্জাতিক মহলের চাপে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হলেও ইরান সরকার তাঁর পাসপোর্ট জব্দ করে। সে-কারণে জীবনের শেষ দিকে আমন্ত্রিত হয়েও তিনি ভিন্ন ভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত নানা কবিসভা ও সেমিনারে যোগ দিতে পারেননি।

এখানে সিমিন বেহবাহানির নয়টি 888sport app download apk উপস্থাপিত হচ্ছে। 888sport app download apkগুলো ফারজানে মিলানি ও কাভেহ সাফার ইংরেজি 888sport app download apk latest version থেকে ভাষামত্মর করা হয়েছে।

 

গলার হার

 

অত্যমত্ম অসুখী দুশ্চিমত্মায় – সতত উদ্বেগে সে উত্তেজিত

চোখমুখচুল তার 888sport app নেই কোনো চাদরে

পরেনি নেকাব আজ,

গ্রেফতারের সম্ভাবনায় আতঙ্কিত নয় সে-888sport promo code

বিস্মৃত হয়েছে স্রেফ পর্দাপুশিদার সামাজিক রেওয়াজ।

 

আঁখিদুটি তার দ্রাক্ষার গুচ্ছ থেকে আলাদা করা জোড়া আঙুর

কালের নিষ্পেষণে নির্যাস নিংড়ে

রক্তাক্ত মদিরা ভরা হয়েছে শতেক ব্যারেলে,

সংগীত থেকে যেন নির্বাসিত হয়েছে সুর।

 

ক্রোধে উন্মাদ সে – নিজেরই কাছে অচেনা আগন্তুক

অন্যদের কাছেও এ চেহারা-সুরত সমানভাবে অপরিচিত,

আশপাশের জগৎ সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিস্মৃত

কোনো কিছুতেই নয় সে আজ উৎসুক।

 

বয়ে বেড়াচ্ছে গলায় সে অভিশাপ ও অশ্রম্নর যুগল হার

কোনো এক সৈনিকের বুট জোড়াও ঝুলছে নেকলেস থেকে,

জানতে চাই হে খানুম – কী সমাচার?

হেসে জবাব দেয়, ‘হতভাগা ছেলেটি আমার

বসে আছে কাঁধে দু-পা তুলে

ধূলিমাখা বুট জোড়া তার এখনো সে নেয়নি খুলে।’

 

 

আলোর মদিরা

 

চোখ মুদেছে নক্ষত্ররাজি – এসো

নিশীথের ধমনিতে প্রবাহিত হচ্ছে আলোর মদিরা – এসো

অপেক্ষায় রাত্রির পানপাত্র ভরেছি আমার উদ্গত অশ্রম্নতে

কুঁড়ি মেলছে প্রদোষ, প্রস্ফুটিত হচ্ছে ঊষা – তুমি এসো

তোমার 888sport sign up bonus নিহত নক্ষত্রের মতো সোনালি নকশা আঁকে

আমার অমত্মর্গত আকাশে – এসো

অপেক্ষার বেদিতে বসে বসে বলছি

আমার যন্ত্রণাদগ্ধ কথকতা দীর্ঘ রাতভর

নিশীথের প্রকৃত কৃষ্ণাভা সহমর্মিতায় হয়েছে ধূসর

তুমি শুনছো… এসো

আমার মৃত্যুর পর তুমি যদি আরেকবার আমাকে দেখতে চাও

বুঝতে পারছো – এখনই সময়, সুতরাং এসো

যদি আমি শুনি কারো পদশব্দ

ধরে নেবো এ মৃদু আওয়াজ তোমারই

হার্টবিটের তীব্র স্পন্দন – এতো জোরে তড়পাচ্ছে

মনে হচ্ছে বেরিয়ে আসবে হৃৎপি- পাঁজর ছিঁড়ে… এসো

ভগ্নহৃদয় সিমিনের বুকে তুমিই অবশিষ্ট একমাত্র আশা

গোছাও আমার দুর্ভোগের দুর্বিপাক… তুমি এসো।

 

জননীর জলপাইশাখা

 

রেশমের উজ্জ্বল ফিরোজা কাফতান পরে 888sport promo codeত্বের নীরব মহিমায় হাতে জলপাইয়ের একটি সবুজ শাখা নিয়ে তিনি এসে দাঁড়ান। ভাসছে তাঁর চোখে থরে-বিথরে বেদনার বিপুল কাহিনি। দুহাত বাড়িয়ে ছুটে গিয়ে আমি তাঁকে স্পর্শ করতেই মনে হলো – নাড়ি যেন স্পন্দিত হচ্ছে এখনো তাঁর ধমনীতে, এবং তাঁর শরীরও উষ্ণ জীবনের সঞ্চারণে; অবাক হয়ে বলি, ‘তুমি তো মৃত! অনেক বছর আগে না বিগত হয়েছো তুমি জননী!’ না, তাঁর শরীর থেকে ছড়ায় না আতর-লোবানের খুশবু, দেহও জড়িয়ে নেই সফেদ কাফনে। আড়চোখে তাকাই, আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে জলপাইয়ের শাখা মৃদু হেসে তিনি বলেন, ‘নাও, শামিত্মর প্রতীক।’ আমি সবুজপত্র ছুঁতে গিয়ে এক অশ্বারোহীর জোরালো পদাঘাতে থমকে ফিরি। আলোয়ানের ভেতর থেকে চকচকে ছুরিকা বের করে ঘোড়সওয়ার পুরুষ খপ করে জলপাইয়ের শাখাটি তুলে নিয়ে চেঁছে চেঁছে নিপুণ হাতে তৈরি করে সে লিকলিকে একটি বেত। তার স্থিতিস্থাপকতা যাচাই করতে করতে বলে, ‘পাপীদের সাজা দেওয়ার জন্য চমৎকার হয়েছে বেত্রদ-টি।’ অশ্বারোহী এবার স্যাডেল ব্যাগ খুলে তাতে বেত্রদ-টি ঢোকাতে গেলে… দেখি! হা ঈশ্বর! থলের তলায় পড়ে আছে মুচড়ে গলাভাঙা সুতলি দিয়ে বাঁধা মৃত একটি ঘুঘু। বিষণ্ণ হয়ে আমার জননী হেঁটে যান দূরে। আমার দুচোখ অনুসরণ করে তাঁকে।… দেখি তাঁর পোশাকও বিবর্তিত হচ্ছে অমেত্ম্যষ্টিক্রিয়ায় শামিল হওয়া শোকার্তদের কৃষ্ণাভ গাউনে।

 

 

চাই এক পেয়ালা পাপ

 

সে বললে, আমি যা চাই তা আসলে অপ্রাপ্য।

মৌলভী

 

আমি চাই এক পেয়ালা পাপ, গেলাসভর্তি দুর্নীতি। কুচকুচে কালো অন্ধকার মেশানো কিছু কাদা, যা থেকে বানানো যেতে পারে একটি মূর্তি। সে আকৃতিতে হবে মানুষের মতো। তার থাকবে কাঠের বাহু ও খড়ের চুল। তার মুখগহবর হবে মস্তবড়। থাকবে না কোনো দমত্মরাজি। চেহারাসুরতে প্রতিফলিত হবে কুৎসিত অভিব্যক্তি। প্রলোভন তাকে প্ররোচিত করবে তাবৎ নিষেধাজ্ঞা ভেঙে ফেলতে। কুঁচকানো ললাটে তার তৈরি হবে একটি ‘লজ্জাজনক প্রত্যঙ্গ’। তার চোখদুটি রক্তাভ শিখা যেন। একটি তাকিয়ে থাকবে সারাক্ষণ স্বর্ণের থলির দিকে। অন্যটি খুঁজবে শয্যায় মিথুনে মগ্ন হওয়ার ফিকির। মুখোশ পরিবর্তন করবে সে বর্ণচোরা গিরগিটির মতো অহরহ। পিছল ইল মাছের মতো তার হৃৎপি- হবে দুটি। সে বাড়তে থাকবে দৈত্যাকৃতির বৃক্ষশাখার মতো। তারপর সে আসবে আমার কাছে স্রেফ নিপীড়নের অসিলায়। তার বিভীষিকার বিরুদ্ধে আমি চিৎকারে প্রতিবাদ করবো; এবং মানুষ নামের এক দানবমূর্তি আমাকে শায়েসত্মা করবে অশস্নীল খিসিত্ম-খেউড়ে। আর আমি যখন তাকাবো তার চোখে … লাজুকভাবে নিষ্পাপ ভঙ্গিতে আমি নীরবে নিজেকে শাসন করতে করতে বলবো – ‘দ্যাখো মেয়ে, কীভাবে সারাটি জীবন তুমি কামনা করেছিলে ‘আদম’, আর এবার পাওনি কী – তুমি যা চেয়েছিলে।’

 

 

শিকড়সুদ্ধ উৎপাটনের ঋতু

 

সময় হয়েছে শিকড়সুদ্ধ চারা উৎপাটনের

ফুল না ফুটলে কী এমন আসে-যায় –

কাসেত্ম-নিড়ানি নিয়ে এসো ত্বরা করে

একটি টিউলিপও যেন রেহাই না পায়।

হাসছে বাগিচা পুষ্পের চন্দ্রকলায়

কে দেখেছে এ হেন আচরণ কদাপি কোনো কালে,

ঘাসের সবুজ গিলাফ পায়ে মাড়িয়ে

জুতোর ছাপ এঁকে দিচ্ছো পুষ্পের কপালে।

ফুলভারে নুয়ে পড়ছে প্রতিটি শাখা

পত্রপলস্নবে দীপ্ত হচ্ছে সৃষ্টির অভিষেক,

বর্ণাঢ্য প্রদর্শনী রুখতে শপথ নিয়েছো

খুলে ফেলছো বৃক্ষঘাতকের ছদ্ম ভেক।

বাগিচায় নিয়ে এসেছো কিরিচ এক ধারালো

বিদ্ধ করছো ফুলের অক্ষিগোলক –

কালো সিয়া পর্দা ফেলে রুখে দিচ্ছো আলো।

জল ঢেলে দিচ্ছো আমাদের বাসনার বহ্নি প্রজ্বলনে

দেখার মতো একটি চোখও আর রাখবে না অবশিষ্ট,

খরগোশ খাবে না ঘাস – হরিণও লোপ পাবে বনে।

ভয় হয় – নার্সিসাসের দুর্নীতি ক্রমান্বয়ে বিসত্মৃত হবে সর্বত্র

বন্ধ করে দেবে সোনালি খুঞ্জায় প্রতিফলনের দেখনদারি,

আত্মরতি বনানী অতিক্রম করে ছড়াবে জনপদের যত্রতত্র

উর্বর জমিনে আর হবে না চাষ – শিকড়ে ঢালা যাবে না বারি।

বৃক্ষকে গোড়ায় জুতমতো কাটতে না পারলে

কুড়োলের মর্যাদাই-বা কী,

ম্যাপলের ডালে যেন নীড় বাঁধতে পারে না কোনো খেচর

বাতি জ্বালাতে পারে না জোনাকি।

 

আমার 888sport app download apk ও বুনো পুদিনা বহন করছে বার্তা ও সুরভি,

এদের বন্যসংগীতে যেন না বাজে আন্দোলনের দুন্দুভি।

হৃদয় আমার সবুজের চেয়েও অধিক সজীব

আমার অসিত্মত্বের জলকাদা থেকে জন্মায় প্রসূন সতত

তাদের করে দিতে চাও সৌরভরিক্ত ক্লীব।

যদি হও তুমি বাসমত্মী বাহারের দুশমন,

দাঁড়াতে দিও না আমাকে

যুঝে যাও হে তরুঘাতক, যুদ্ধ করো আমার বিরুদ্ধে প্রাণপণ।

 

 

 

আমার স্বদেশকে ছুড়ে দিও না বাতাসে

 

ক্রোধের বাষ্প যদি হয় আরো উত্তপ্ত

অগ্নি মেঘে ছেয়ে যায় জন্মভূমির আকাশ,

ধুলোবালিতে ঢেকে যাবে তোমার সমাধিফলক

ঝোপঝাড়ের ঝিঁঝি পোকারা হবে রুদ্ধশ^াস।

খিসিত্ম-খেউড়ে করে যাচ্ছো জীবনের আয়ুক্ষয়

তোমার অশোভন আচরণ আজ –

ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের বিষয়।

অহংকারে ভারী হয়েছে মস্তক তোমার

হারিয়ে বিশ^াস হয়েছো খল,

কর্দমে নিমজ্জিত হলে হাতিও হয় হীনবল।

 

বন্ধ করো – স্বদেশের সাথে ব্যভিচার

হিংসা হানাহানি ঘাতপ্রতিঘাত,

বন্ধ করো – সৃষ্টির চোখে যা ঝরায় অশ্রম্ন

অযথা রক্তপাত।

তোমাকে চাই না দিতে আমি অভিশাপ

শত্রুর যাতনায়ও আমার হৃদয়ে জমে সমত্মাপ।

 

তোমার হয়তো ইচ্ছা হবে আমাকে

জীবমত্ম পুড়িয়ে ফেলতে কিংবা খুন করতে ছুড়ে পাথর,

কিন্তু জেনে রাখো – তোমার হাতের শিলা বা দিয়াশলাইয়ের

শিখা

আমার শরীরে হবে স্রেফ অকার্যকর।

 

এসে পড়েছি সড়কের শেষ প্রামেত্ম

 

সড়কের শেষ অবধি এসে বসে পড়েছো তুমি আবার, ক্লামিত্ম তোমার অশেষ, ভেঙেপড়া শরীর-মন নিয়ে তুমি বাড়াতে পারছো না পা। তোমার দৈহিক ক্রমাবনতির সাক্ষ্য দিচ্ছে হাঁটুর পুরনো হয়ে আসা অস্থিসন্ধি। আঙুলের মাংস পচে খুলে খুলে পড়ছে। বেঁচে থাকতে বাসনা তোমার, কিন্তু তোমার অনুভবের চেয়ে অধিক ক্লামত্ম ও ভেঙেপড়া তুমি।

হে হৃদয় – কোনো বাসনাই আর ছড়াবে না সবুজ অংকুর তোমার ঊষর জমিনে। আমার শরীরের শুকনো মরুর মৃত মৃত্তিকায় তুমি বীজবিশেষ। উড্ডীন হতে চাও তুমি। কিন্তু ঈর্ষান্বিত দীর্ঘশ^াস ছাড়া তোমাতে আর অবশিষ্ট কিছু নেই। তোমার নিশ^াস-প্রশ^াসে ছড়াচ্ছে কারারুদ্ধ প্রাণের আকুতি। হে হরিৎ পাতা ঝরানিয়া হেমমত্ম – কি বর্ণ আর কোন সৌরভে তুমি সম্ভাষণ জানাতে চাও সুখী পাখিদের।

 

তোমার জরাজীর্ণ গৃহের ভাঙাচোরা চাল অমঙ্গলের বার্তাবাহী পেঁচার বাসা বাঁধা ছাড়া অন্য কোনো কাজে লাগবে কি? তোমার বাগিচার যে পুষ্পসম্ভার তৈরি করতো বর্ণাঢ্য সাজি – তা শুকিয়ে হয়েছে খড়খড়ে।

 

হে মেরুদ-, বিদ্রোহ করো না আর আমার শরীরের বিরুদ্ধে। যতোক্ষণ না আমি মুক্ত হচ্ছি জীবন থেকে, আর তুমি মুক্ত হচ্ছো আমার দেহ থেকে।

 

 

ভালোবাসায় এতোটা নিমজ্জিত

 

ভালোবাসায় এতোটা নিমজ্জিত আমি –

দেখতে পাই না আমি আর আমাকে,

আয়নার দিকে তাকিয়ে বলি

সিমিনের পা দুটি ডুবেছে চোরাবালির কোন পাঁকে।

ঘন পলস্নবে 888sport app আঁখি দুটি তার কোথায় আজ

যে-চোখ নিমগ্ন হতো বালিশের পাশে রাখা বই পাঠে,

যে-আঙুল রুমালে তুলে যেতো রেশমের কারুকাজ

নীড় বেঁধেছিল জোড়া চড়ুই যে-ঘরের কড়িকাঠে;

যে-ঠোঁট কাছে এসে বলেছিল পরশের উষ্ণতায় অস্ফুট স্বরে

তুলে নাও, দ্রাক্ষাপ্রতিম সুমিষ্ট আমি – গোপন কিছু নেই অমত্মরে।

 

কেন ভিষক বলে দূরত্ব অতিক্রমণে সহনশীলতার প্রয়োজন

কেন সয়ে যাবো – মৌমাছির গুঞ্জরণে পুষ্পিত আমার নীপবন,

নাজুক এ-হৃদয়ে চঞ্চল আত্মা আমার তড়পায়

পাষাণ গড়েনি আমাকে – সহনে সিমিনের কী-বা দায়।

সহস্র বাসনার যোগফলে আমার মাঝে তৈরি হয়েছে একটি সম্পাদ্য,

প্রিয় এক সঙ্গীর সাথে হরেক মূর্ছনায় বাজাতে চাই স্বর্গীয় বাদ্য।

এসেছিল শোণিতে মৌসুম আমার জীবনে – এখন তা বিগত,

ধরে রাখতে পারিনি তারুণ্য

স্থিত হতে চাই বার্ধক্যে কিছুটা কাল অমত্মত।

আরশিতে তাকিয়ে আমি তাকে বলি হালফিল,

কী দেখছো তুমি –

চিরায়ত প্রেমিক সিমিনের হৃদয়ে ধরা পড়েছে যে নিখিল।

 

 

বানু – হে আমাদের সম্ভ্রামত্ম মহিলা

 

বানু, হে আমাদের সম্ভ্রামত্ম মহিলা, ‘গ্রহণ করুন আমার এ উপহার’, বলে সে তা ঊর্ধ্বে তুলে ছুড়ে দেয় নিম্নগামী সিঁড়িতে। পতিত হয়ে উৎসর্গের ভিকটিম হাত-পা ছুড়ে যন্ত্রণায় চিৎকার করে। তার পতনের সাথে সাথে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে রক্তধারা। খানিক কাতরানোর পরপর নেমে আসে নীরবতা। শয়তানের যূপকাষ্ঠে এইমাত্র বলি হলো তার জীবন। মানুষটি এখন মৃত।

আহা – এতো অল্প বয়সে শিশুটির মৃত্যু হলো। হায় – বৃদ্ধা জননী, যে জঠরে ধারণ করেছিল তাকে।

বানু – হে সম্ভ্রামত্ম মহিলা, আমি আপনাকে স্বপ্নে দেখেছি, চাঁদের বলয়ে দৃশ্যমান। আপনার পবিত্র মুখশ্রী ফ্যাকাসে, বিষাদে চোখ লোহিত। আপনার বাহুতে জড়িয়ে ধরা দুই পুত্রসমত্মান। একজন পূর্ণচন্দ্রের মতো নিখুঁত। অন্যজন ছড়াচ্ছেন সূর্যের দীপ্তি।

মৃত মানুষটির পাশে আপনি বসেন। এখনো পথের ধুলোবালি লেগে আছে আপনার আননে। আপনার আত্মা বেদনায় মুহ্যমান। আপনার হৃৎপি- ধেয়ে আসা তীরে বিদ্ধ, তাই – আপনি নালিশ জানান।

হে ইনসাফ, হে বিশ^াস, হে নির্মমের লজ্জাহীনতা, আমাকে একটি লাশ উৎসর্গ করে তা গ্রহণ করার অনুরোধ করছো।

বানু, হে সম্ভ্রামত্ম মহিলা আমাদের – সীমাহীন অজ্ঞতার অভিশাপে যে-মানুষটি খুন হলো, তার জন্য ঝরে আপনার অশেষ অশ্রম্ন। রেশমি গিলাফ খুলে নিয়ে তা দিয়ে ঢাকেন আপনি মৃতদেহের আব্রম্ন।

বানু – হে আমাদের পথপ্রদর্শক, আপনাতে আমরা খুঁজি সতত রক্ষাকবচ। হে সম্ভ্রামত্ম নিরুপমা জ্যোতির্ময়।