বাধা-বিঘ্ন সত্ত্বেও সিসিলিতে কেন জানি না, সিসিলি নামটিকে আমার সবসময়ই একটু রোমান্টিক মনে হতো। দ্বীপের কথা হলেই আমার মনে হয় অজানা-অচেনা কোনো দূর দ্বীপবাসিনীর কথা। আর সে-দ্বীপের নাম যদি হয় সিসিলি তবে সে তো হৃদয়ে একটু ঝংকার তুলতেই পারে – না হোক সে দারুচিনির দেশ। ম্যাপের দিকে তাকালে দেখা যায়, ইতালীয় উপদ্বীপের দক্ষিণে খুব সরু একটি প্রণালি দিয়ে আলাদা করা এই ভূখণ্ডটি তিউনিসিয়ার উত্তর উপকূলের খুব কাছে। এরকম অবস্থানের জন্য অনেক কারণেই কৌতূহল জাগাতে পারে সে। তবে তা সত্ত্বেও যাওয়া হয়নি সেখানে – যদিও অনেকবার গিয়েছি ইতালির রোম, ভেনিস, ফ্লোরেন্স – এসব শহরে। তাই সেবার (২০২৩ সালে) যখন ছেলেমেয়েদের প্রস্তাব এলো সেখানে পরিবারের সবাই একসঙ্গে হতে পারি, আমার স্ত্রী আর আমি সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হয় গেলাম।
গ্রীষ্মকালে ইউরোপের কোথাও 888sport slot gameের ইচ্ছা থাকলে তার পরিকল্পনা বেশ আগেভাগেই করতে হয়। আমরাও তা-ই করেছিলাম যদিও তখন জানতাম না, এই 888sport slot game খুব মসৃণ হবে না। কোভিড মহামারির ভীতি কাটিয়ে বিশ্ব আবার ফিরে এসেছিল মোটামুটি স্বাভবিক অবস্থায়। মানুষ বিশেষ করে পশ্চিমা এবং ধনী দেশের লোকেরা মুখিয়ে ছিল কখন গ্রীষ্মকাল আসবে আর বেরিয়ে পড়া যাবে ঘর থেকে। হয়েছিলও তাই; মানুষের ঢল নেমে গিয়েছিল পর্যটকদের প্রিয় জায়গাগুলোতে। প্যারিস, রোম, ভেনিস, আমস্টারডাম ইত্যাদির মতো শহর তো ছিলই, তাছাড়াও ছিল সিসিলি, মালটার মতো দ্বীপগুলো। সে-সময়ই শুনেছিলাম অতিপর্যটন শব্দটি। অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে, অনেক জায়গায় স্থানীয় লোকেরা এত বেশি পর্যটক আর তাদের অনেকের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছিলেন। আর সে-সময়ই আমাদের 888sport slot game পরিকল্পনা। মনের মধ্যে সে-কারণে একটু অস্বস্তি ছিল।
সে-বছর দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলোতে গরম পড়েছিল অস্বাভাবিক মাত্রায়। তার মধ্যে ছিল ইতালি, স্পেন, পর্তুগাল, ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশ । অনেক শহরে – বিশেষ করে রোম আর মাদ্রিদে মানুষকে উপদেশ দেওয়া হচ্ছিল দুপুরে ঘর থেকে বের না হতে। বেড়াতে গিয়ে যদি হোটেলের ঘরে বসে থাকতে হয়, তাহলে আর যাওয়ার অর্থ কি! কীভাবে দেখা যাবে রোমের দ্রষ্টব্য সব জায়গা? সিসিলির সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এটনা কী দেখা যাবে না? যখন এসব ভাবছি আর আলোচনা করছি সে-সময় কাকতালীয়ভাবে হলেও খবর এলো এটনায় অগ্ন্যুৎপাতের। মনে হলো, শুধু মানুষ নয়, প্রকৃতিও প্রতিবাদ জানাচ্ছে পর্যটকদের ভিড়ের বিরুদ্ধে।
প্রায় একই সঙ্গে ঘটল আরেকটি ঘটনা। আগুন লেগে পুড়ে গেল সিসিলির প্রধান এয়ারপোর্ট কাতানিয়ার একটা বড় অংশ। কয়েকদিন সব ফ্লাইট বন্ধ থাকার পর আবার চালু হলেও অবস্থা স্বাভাবিক নয়। তাছাড়া ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনি মিলিয়ে তেরোজনের বড় দল আমাদের। ইচ্ছে করেই আমরা তিন ভাগে ভাগ হয়ে তিনটি ফ্লাইটে টিকিট করেছিলাম। ফ্লাইট বাতিল, সময় বদল ইত্যাদি সত্ত্বেও আমরা অনড়। সৌভাগ্যবশত তিনটি ফ্লাইট এক ঘণ্টা সময়ের ব্যবধানে পৌঁছে গেল কাতানিয়া। কিন্তু সমস্যা হলো নামার পর। টার্মিনাল বিল্ডিং আগুনে পুড়ে অকেজো। তাই প্লেন থেকে নামার পর আমাদের বাসে করে নিয়ে যাওয়া হলো টার্মিনালের বাইরে, যেখানে বসার মতো কোনো জায়গা নেই। এক কোণে একটি ক্যাফে; সেখানেও ভিড়। কোনো চেয়ার খালি নেই। তাছাড়া সঙ্গে আমাদের সব লাগেজ। সুতরাং অন্য কোথাও কিছু আছে কি না দেখার জন্য বেশি দূর যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না বলেই মনে হলো। দাঁড়িয়ে এক ঘণ্টা সময় কাটানো সহজ নয়। ভাবছিলাম স্যুটকেস পেতে তার ওপর বসব কি না। ছোটবেলায় 888sport appsের ট্রেনস্টেশনে হোল্ডঅলের ওপর বসার 888sport sign up bonus মনে পড়ে গেল। কয়েক মিনিট পর দুজন মনে হলো দয়াপরবশ হয়ে তাদের চেয়ার ছেড়ে দিয়ে উঠে গেল; আমরা দ্রুত সেগুলো টেনে বসে পড়লাম।
সৌভাগ্যবশত পরের ফ্লাইটে সুজয় ওর পরিবার নিয়ে এসে গেল কিছুক্ষণ পরই। এবং আগের কথামতো ওদের ভাড়া করা গাড়িতে আমাদের উঠিয়ে নিল। সেখান থেকে আমাদের গন্তব্য মোদিকা অঞ্চলে ফ্রিজিন্তিনি নামে একটি গ্রাম। গাড়িতে প্রায় এক ঘণ্টার যাত্রা। কাতানিয়া এয়ারপোর্টের এলাকা ছাড়িয়ে শহরের একটু অংশ কয়েক মিনিটের মধ্যেই পার হওয়া গেল। তার পরই গ্রামের পথ। কাতানিয়া এয়ারপোর্ট আর মোদিকা সিসিলি দ্বীপটির পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে। এদিকেই মোদিকা আর নোতো নামে দুটি ছোট মধ্যযুগের শহর, যেগুলো ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায় স্থান পেয়েছে। তাছাড়া পূর্ব উপকূলের দিকেই মাউন্ট এটনা, যা আমাদের প্রাথমিক তালিকায় ছিল। সেভাবেই থাকার জায়গা ঠিক করা হয়েছিল। আরো বিবেচ্য বিষয় ছিল, সুইমিং পুলসমেত এমন বাড়ি যাতে সবার জায়গা হতে পারে।
রোম থেকে ফ্লাইট ছিল ঘণ্টা দেড়েকের মতো। কিন্তু কাতানিয়া এয়ারপোর্টের অবস্থার কারণে বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। ফলে ফ্রিজিন্তিনি যাওয়ার পথে একটু ঝিমাচ্ছিলাম। তা সত্ত্বেও দেখতে দেখতে যাচ্ছিলাম এবং ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের গ্রাম সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়ে গেলাম। দিগন্তবিস্তৃত অবারিত প্রান্তর, কিন্তু সবুজের মধ্যে কোথায় যেন একটু শুষ্কতা। তাছাড়া উঁচু গাছের অভাবে ছায়ার অভাব।
আমাদের ভাড়া করা বাড়িটিতে পৌঁছেই ক্লান্তি কিছুটা হলেও কমে গেল। বিশাল এলাকাজুড়ে বাড়ি; একটি দোতলা দালান ছাড়াও একপাশে একটি একতলা দালানে কয়েকটি বাড়তি ঘর আর অন্য পাশে আলাদা রান্না ও খাবার ঘর। খাবার ঘরের সামনে টানা চওড়া বারান্দায় বাড়তি ডাইনিং টেবিল। সেখানে বসলে সুইমিংপুল, বাগান সবই দেখা যায়। বাগানের একপাশে টমেটো, বেগুন ইত্যাদির গাছ। চেরি টমেটোর বেশ কয়েকটি গাছে ফল পেকে লাল হয়ে ছিল। অন্যপাশে ছিল কমলার গাছ। আর মাঝখানে বড় আকৃতির ঝাঁকড়া-মাথার জলপাইয়ের গাছ। বাড়ির কেয়ারটেকার আমাদের বলে গেল, বাগানের সবকিছুই আমাদের জন্য। শুধু বাচ্চারা নয়, আমরাও টমেটো তুলে খেয়েছি মহাআনন্দে। সুইমিংপুলের পাশে চেয়ারে আরাম করে বসে থাকা, চাইলে কিছু পড়া, অথবা কিছু না করে সময় কাটিয়ে দেওয়ার মধ্যে যে কী আনন্দ তা আমরা অনেকেই অনেক সময়ই বুঝি না। একদিন সন্ধ্যায় জলপাইয়ের গাছের ওপর দেখা গেল পূর্ণিমার চাঁদ উঠেছে। এমন চাঁদ অনেকদিন দেখিনি।
এরকম বাড়িতে নিজেদের খাওয়ার ব্যবস্থা নিজেদের করতে হয়। ডিনারের ব্যবস্থা ছিল বাড়িতেই, কিন্তু নিজেরা রান্না না করে। তবে কয়েকদিন ব্রেকফাস্ট খেতে হবে; তার জন্য কিছু জিনিস আর খাওয়ার পানি কেনার দরকার ছিল। গুগল সার্চ করে জানা গেল, গ্রামের মধ্যে অল্প দূরত্বেই রয়েছে সুপার মার্কেট। এসব কাজের জন্য একটি ভাড়া করা গাড়ি রাখা ছিল সার্বক্ষণিকভাবে। সুতরাং সময় বেশি ব্যয় করতে হলো না।
ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট : নোতো আর মোদিকা
পারিবারিক 888sport slot gameে – বিশেষ করে শিশুরা সঙ্গে থাকলে ইতিহাস, সংস্কৃতি, স্থাপত্য এসবের ওপর বেশি জোর দেওয়া মুশকিল। ওদের জন্যও এটা ছুটির সময়; সুতরাং তাদের মনোরঞ্জনের দিকেও নজর দিতে হয়। কিন্তু তাই বলে পুরো সময় সুইমিংপুল বা বিচে কাটানো যায় না – বিশেষ করে যেখানে দেখার মতো সব পুরনো শহর রয়েছে। সিসিলির আটটি পুরনো শহর ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায় রয়েছে, যার মধ্যে দুটি – নোতো আর মোদিকা – আমাদের বেশ কাছে ছিল।
ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায় যে, প্রাচীন নোতো ছিল এখনকার নোতো শহর থেকে একটু দূরে এক পাহাড়ের ওপর মালভূমির মতো জায়গায়। ১৬৯৩ সালের শেষের দিকে এক বড় ভূমিকম্পে পুরো শহরটি ধ্বংস হয়ে যায়। সে-অঞ্চলের রাজার ইচ্ছায় এবং আনুকূল্যে বর্তমান শহরটি সম্পূর্ণ নতুন করে বানানো হয়। এক স্থপতিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নতুন শহরের এবং প্রধান ভবনগুলোর নকশা তৈরি করার। ইউরোপে তখন বারোক স্টাইলে ভবন নির্মাণ করার ধারা চলছিল। এ-ধরনের স্থাপত্যে অলংকরণ, কারুকার্য এবং দেয়ালে ও ছাদে ফ্রেস্কো ইত্যাদি দিয়ে নাটকীয়তা সৃষ্টি করা হয়। ফলে প্রথম দৃষ্টিতেই দর্শক আকৃষ্ট হন আর অজান্তেই বলে ওঠেন, বাহ্!
আমাদের গ্রাম ফ্রিজিন্তিনি থেকে নোতোর দূরত্ব তিরিশ কিলোমিটারের মতো। কিন্তু গ্রামের ভেতর দিয়ে সরু রাস্তা; পৌঁছতে প্রায় চল্লিশ মিনিট লেগে গেল। শহরের এক প্রান্তে আমাদের নামতে হলো, কারণ শহরের ভেতরে বা রাস্তাগুলোতে পার্কিংয়ের জায়গা পাওয়া দুষ্কর। শহরে ঢুকেই বুঝতে পারলাম কেন এটি ইউনেস্কোর হেরিটেজ সাইটে স্থান পেয়েছে। প্রতিটি ভবনই – হোক তা ব্যক্তিগত বাসস্থান বা ব্যবসার জায়গা, অথবা সরকারি অফিস বা ধর্মীয় উপাসনালয় – দেখার মতো। ছোট-বড় সাধারণ গির্জা তো রয়েছেই, তাছাড়া ক্যাথিড্রালটি বিশেষভাবে দর্শনীয়।
প্রথমেই যে চার্চটি দেখলাম তার নাম ইংরেজি করলে দাঁড়ায় The Holy Saviour, অর্থাৎ পুণ্য ত্রাণকর্তা। ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহরের বিকল্প হিসেবে বানানো নতুন শহরের জন্য ত্রাণকর্তার শরণ নেওয়া ধর্মপ্রাণ মানুষের পক্ষে স্বাভাবিক। আর তার জন্য উপযুক্ত জায়গা (দুই রাস্তার সংযোগস্থলে) যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনি তার স্থাপত্যে দেওয়া হয়েছে যথাযথ গাম্ভীর্য। প্রবেশদ্বারে যাওয়ার জন্য যে প্রশস্ত সিঁড়ি, দরজার দুপাশে এবং ওপরে যে-ধরনের কারুকাজ, সেগুলো দেখলে বারোক স্টাইলের ভালো উদাহরণও পাওয়া যায়।
পরে দেখলাম, গুরুত্বপূর্ণ ভবনে প্রবেশের পথে প্রশস্ত এবং অনেক সিঁড়ির ব্যবহার এই শহরের একটি বৈশিষ্ট্য। তবে রোমান সভ্যতার 888sport app শহরেও এ-ধরনের সিঁড়ি দেখেছি (যেমন দক্ষিণ ফ্রান্সের আর্ল শহরের অ্যাম্পিথিয়েটারে)। নোতোর ক্যাথিড্রালের সিঁড়ির 888sport free bet এবং প্রস্থে অন্য অনেক ভবনের সিঁড়িকেই হার মানাতে পারবে। তবে সেখানে চমৎকৃত হওয়ার আরো কিছু রয়েছে। তা হলো, প্রধান হলটির দেয়ালের এবং ছাদের ফ্রেস্কো। সেগুলোকে রোমের সিস্টিন চ্যাপেলের মাইকেল অ্যাঞ্জেলোর কাজের সঙ্গে তুলনা করা হয়তো উচিত হবে না; তবে তাদের পরিকল্পনায় একই ধারণা কাজ করে থাকতে পারে।
ক্যাথিড্রালের উল্টোদিকেই আরেকটি উল্লেখযোগ্য ভবন – নোতোর টাউন হল। রাস্তা থেকে হলে ঢোকার দরজা পর্যন্ত অর্ধচন্দ্রাকৃতি সিঁড়ির বিন্যাস শুরুতেই দিয়েছে নান্দনিকতার ছোঁয়া। ভবনের প্রধান ঘরটি ডিম্বাকৃতি; চারদিকে বিভিন্ন ধরনের আকারের ও প্রকারের আয়না। সে-কারণেই এর নাম ‘হল অফ মিররস’ – আয়নার ঘর। এর ছাদেও মনোরম ফ্রেস্কো। এই হলে একসময় গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু এখন পুরো ভবনই দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত।
শুধু স্থাপত্য নয়, 888sport live chat-সংস্কৃতিতেও নোতো শহরটি প্রাণবন্ত। প্রধান রাস্তাতেই চোখে পড়ল এক মিউজিয়াম, যেখানে চলছিল বারোক স্থাপত্য নিয়ে চল্লিশটি 888sport live chatকর্মের এক প্রদর্শনী। এক গলির মধ্যে একটি ব্যক্তিগত ধরনের আর্ট গ্যালারি। উৎসুক হয়ে ঢুকে পড়লাম। কয়েক মিনিট ছবি দেখার পরই আমার উৎসাহ দেখে গ্যালারির 888sport promo codeকর্মীটি আমাকে একটি বই এগিয়ে দিয়ে বললেন, এতে এই 888sport live chatীর কাজ সম্পর্কে লেখা আছে, কিছু ছবিও পাবে; তুমি নিতে পারো। পেইন্টিংয়ের রঙিন ছবির এ-ধরনের বই শুধু ওজনে নয়, দামেও ভারী হয়। আমি ভয়ে ভয়ে দাম জানতে চাইলাম। তখন আমাকে অবাক করে দিয়ে তিনি বললেন, 888sport live chatী এখানেই বসে আছেন; তিনি এটি তোমাকে সৌজন্য কপি হিসেবে দিচ্ছেন। আমি কয়েক মুহূর্ত প্রায় বাকরুদ্ধ। তারপর এগিয়ে গিয়ে 888sport live chatীকে ধন্যবাদ জানালাম। তিনি ইতালীয়; ইংরেজি বলেন ভাঙা ভাঙা। তাই আলাপ ভালো জমলো না। কিন্তু আমার 888sport slot game888sport sign up bonusর মধ্যে এটি নিঃসন্দেহে ওপরের দিকে থাকবে।
মোদিকা শহরটি আমাদের গ্রাম থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে কয়েকটি পাহাড়ের মাঝখানে। তবে এই শহরের একটি অংশ পাহাড়ের ওপরে। আর এই শহরও ধ্বংস হয়েছিল সপ্তদশ শতকের সেই ভয়াবহ ভূমিকম্পে। তাই নোতোর মতো অনেক ভবনই ১৬৯৩ সালের পর আবার বানানো। এবং স্থাপত্যের দিক থেকে একই রকম – বারোক ঘরানার, যদিও আকারে এবং আয়তনে কিছুটা ছোট। তবে শহরটির কোনো কোনো ভবনের স্থাপত্যে মুর/ ইসলামি প্রভাব লক্ষ করা গেল।
শুধু স্থাপত্যে নয়, শহরের দৈনন্দিন জীবনেও যে ধর্মটি উপস্থিত তা দেখা গেল একটু পর। সুভ্যেনিরের দোকান খুঁজছিলাম আমরা। হাঁটতে হাঁটতে এক পাড়ায় কিছু দোকান দেখে এগিয়ে গেলাম। একটি দোকানের সাইনবোর্ড লেখা আরবি ভাষায়। ভাষাটি ভালো না জানলেও একটি শব্দ পড়তে পারলাম। ছোট্ট করে লেখা শব্দটি ছিল ‘হালাল’। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় যে, স্পেনের আন্দালুসিয়া অঞ্চলের মতো সিসিলিতেও একসময় মুসলমানরা রাজত্ব করেছিল।
মোদিকার ক্যাথিড্রালটি তুলনামূলকভাবে ছোট হলেও নোতোর মতো একই কায়দায় তৈরি। মূল ভবনটি রাস্তা থেকে বেশ খানিকটা ওপরে এবং সেখানে ওঠার জন্য অনেক কটি চওড়া সিঁড়ি। আমরা সেখানে গিয়েছিলাম একদিন বিকেলে। সেদিন কাকতালীয়ভাবে ক্যাথিড্রালে হচ্ছিল একটি বিয়ের অনুষ্ঠান। যখন আমরা সেখানে পৌঁছেছি, তখনই একটি ঘোড়ার গাড়িতে করে এসে নামলো বর আর কনে। তাদের অভ্যর্থনা জানাতে দাঁড়িয়েছিল কয়েকজন লোক। আমাদের দেশে শিশুদের জন্মদিনের পার্টিতেও এর চাইতে বেশি মানুষ দেখা যায়।
ক্যাথিড্রালে ঢুকতে না পেরে আমরা শহরের কেন্দ্রে সিটি হলের দিকে চলে গেলাম। আসলে এই শহরটি বেশ ছোট বলে হেঁটেই অনেকখানি দেখা হয়ে গেল। বড় রাস্তার পাশে এমন কিছু ছোট গলি, যেখানে গাড়ি ঢুকতে পারার কথা নয়। তার মধ্যে এখানে-সেখানে পাহাড়ের গায়ে ধাপে ধাপে উঠে গিয়েছে সরু রাস্তা। তবে সিটি সেন্টারে টাউন হলের সামনে চত্বর বেশ প্রশস্ত – প্রায় বর্গাকৃতি। তার সামনে কয়েকটি ভূমধ্যসাগরীয় ধরনের গাছ দাঁড়িয়ে কিছুটা সবুজের আবহ সৃষ্টি করেছে।
গ্রীষ্মকাল বলে বিকেল সেখানে দীর্ঘ। কিন্তু ঘড়ি এবং শরীরী ভাষা একসময় জানালো এখন ডিনারের সময়। ইউরোপের গ্রীষ্মকালে বেশিরভাগ জায়গায় রেস্তোরাঁর সামনের চত্বরে চেয়ার-টেবিল পেতে খাওয়ার ব্যবস্থা। আমরা একদিকে ভালো খাবার যেমন চাই, তেমনি চাই একটি খোলা জায়গা, যেখান থেকে শহরের এবং আশেপাশের পাহাড়ের ওপরের দৃশ্য কিছুটা হলেও দেখা যায়। একটু খুঁজতেই পেয়ে গেলাম এমন একটি জায়গা, যেখানে বসে দেখতে পারলাম পাহাড়ের চূড়ায় বিকেলের রোদ লুকিয়ে পড়ার অপূর্ব দৃশ্য।
মোদিকার গ্রামে আর সৈকতে রসনাবিলাস
বাড়িতে খাওয়ার ব্যবস্থা নিজেদের। প্রায় প্রতিদিনের ডিনারের ব্যবস্থা আগে থাকতেই করা ছিল। এত বড় দল নিয়ে বাইরে যাওয়া, রেস্তোরাঁয় টেবিল পাওয়া এসব ঝামেলা এড়ানোর জন্য বাড়িতেই ব্যবস্থা, তবে নিজেরা রান্না না করে। প্রথম দিন বিকেল হতেই বুঝতে পারলাম সেটি কী। একটি গাড়ি করে এলো এক তরুণ আর এক তরুণী। সঙ্গে নামালো বেশ কয়েকটি ব্যাগ। আসলে এরা এসেছে একটি ক্যাটারিং কোম্পানি থেকে; তবে তৈরি খাবার নিয়ে নয়। ওরা নিয়ে এসেছে আমাদের অর্ডার করা খাবারের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপকরণ। রান্না হবে এখানে। তরুণ লেগে গেল রান্নায়, আর তরুণী টেবিল সাজাতে।
তরুণী তুলনামূলকভাবে কমবয়সী। সুন্দরী, নীল-সবুজে মেশানো আয়ত চোখ। আলাপে জানা গেল তার পূর্বপুরুষদের অর্ধেক লেবানন থেকে এসেছিল, আর অন্যদিক ইতালীয়। বুঝতে পারলাম কীভাবে সভ্যতার মিশ্রণ ঘটেছে সিসিলিতে – যার প্রতিফলন এই তরুণীর মধ্যে।
খাবার সার্ভ করার সময় তরুণী জানালো – সিসিলি ইতালির অংশ হলেও এই অঞ্চলের খাবারের কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে। প্রথমত মাটির গুণে (আগ্নেয়গিরির লাভা মিশে মাটিকে দিয়েছে কিছু বাড়তি উপাদান) একই ফল বা সবজির স্বাদ এখানে আলাদা। তার ওপর রয়েছে তাদের নিজেদের উদ্ভাবন। সালাদের জন্য অথবা রান্না করা ডিশে ব্যবহৃত সসে তাদের নিজেদের একটু ছোঁয়া থাকবে। ইতালিতে সাধারণভাবে স্টার্টারের পর আরো দুটি পদ থাকে। সিসিলিতেও এরকমই। এখানেও বেগুন, জুকিনি, টমেটো এসবের ব্যবহার বেশি। কিন্তু প্রণালিতে বৈচিত্র্য থাকে। যেমন একদিনের স্টার্টার একেবারে ঠান্ডা বা বেশি গরম না করে কিছুটা গরম করে তৈরি করা হলো বেগুন, জুকিনি আর শুকনো টমেটোর পদ।
প্রথমদিনেই ডিনারের সঙ্গে ডেজার্ট ছিল একেবারে ভিন্ন ধরনের। ঠান্ডা তরমুজের টুকরায় জেলো, চকলেট আর পেস্তা মিশিয়ে তৈরি এক পদ, যা আগে কখনো খাইনি। গরমের দিনের জন্য নাকি এটি শেফের বিশেষ সৃষ্টি। পরের দিন ডেজার্ট ছিল ক্যানোলিনা, যার কথা সেখানে যাওয়ার আগেই শুনে গিয়েছি। এটি ছোট আকারের ক্রিমরোলের মতো; তবে আমাদের জন্য ছিল ভেতরে রিকোটা ক্রিম চিজের সঙ্গে চকলেটের গুঁড়ো আর কমলার কোয়ার কুচি।
আমাদের গ্রাম থেকে মোদিকা বিচ প্রায় আধ ঘণ্টার ড্রাইভ। বিচের পাশে যে-শহর সেটি দেখে আমার বিশেষ পছন্দ হলো না। অল্প জায়গায় অনেক হোটেল আর ভাড়াবাড়ির ভিড়। রাস্তাগুলো সরু। বিচের কাছে থাকার জন্য এখানে থাকাটা আমি মোটেও পছন্দ করতাম না। আমরা যখন সেখানে পৌঁছলাম তখন লাঞ্চের সময় হয়ে গিয়েছিল। চাইলে সহজেই কোনো রেস্তোরাঁয় টেবিল পাওয়া যেতে পারত। কিন্তু আমাদের ছেলেমেয়েরা একটি রেস্তোরাঁয় টেবিল বুক করেছে। সেটি খুঁজে বের করতে কয়েক মিনিট সময় লাগলো। তবে তার কাছে গিয়ে বুঝতে পারলাম কেন এই রেস্তোরাঁ। একেবারে বিচের ওপরে এটি। আর বিচের বেশ খানিকটা জায়গা তাদের নিজস্ব বলে মনে হলো। সেখানে এক ধরনের পাতা দিয়ে তৈরি ছাতার তলায় বিচ চেয়ার। একেবারে ভিন্ন ধরনের।
আমাদের টেবিল ছিল সমুদ্রের দিকে। মেনুতে বেশ কয়েকটি আইটেম থাকলেও ওয়েটার আমাদের জানালো যে, এখানকার সমুদ্রের টাটকা মাছ ওদের বিশেষ আকর্ষণ। আর তার রান্নার পদ্ধতিও নিজস্ব। আমরা 888sport app পদ (বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য পাস্তা) নিলেও মাছ খাব বললাম। অর্ডার হওয়ার পর ওয়েটার একটি থালায় করে নিয়ে এলো দুটি ভালো আকৃতির তাজা মাছ। আমাদের জিজ্ঞেস করলো মাছ পছন্দ কি না। অবশ্যই – সানন্দে রায় দিলাম আমরা। যখন মাছ দুটি ‘রান্না’ হয়ে এলো, তখন মাছের কিছুই দেখতে পেলাম না। ময়দার আস্তরে পুরো মাছ 888sport app। এভাবেই নাকি এদেরকে বেক বা স্টিম করা হয়েছে; এবং এখন এই আস্তর সরিয়ে আমাদের পাতে সার্ভ করা হবে। ওয়েটার আমাদের টেবিলের পাশে একটি ছোট টেবিলে মাছ দুটি রেখে নিপুণভাবে ময়দার আস্তর সরিয়ে মাছ বের করলো এবং টুকরো করে আমাদের পরিবেশন করলো। পুরো প্রক্রিয়াটি দেখার মতো ছিল। সেই মাছের সঙ্গে এলো সিসিলির বিশেষ সস, যা একটি আলাদা ধরনের স্বাদ তৈরি করলো। টাটকা মাছ দেখিয়ে নিয়ে রান্না করা আগেও কোনো কোনো রেস্তোরাঁয় দেখেছি; কিন্তু এভাবে রান্না আর পরিবেশন আর কোথাও দেখিনি।
টিটোটালারের ওয়াইন টেস্টিং
যেসব দেশে আঙুর উৎপাদিত হয় এবং তা থেকে ওয়াইন প্রস্তুত করা হয়, সেসব দেশে ওয়াইন টেস্টিং পর্যটনের একটি অন্যতম অংশ। গ্রীষ্মকাল শুরু হওয়ার একটু আগেই অনেক প্রস্তুতকারক দর্শনার্থীদের জন্য তাঁদের কাভ খুলে দেন। অনেক সময় দামে কিছু ছাড় দেওয়া হয়। মূল লক্ষ্য পরের মৌসুমের পণ্যের জন্য জায়গা খালি করা। আমি জেনেভায় বেশ কিছুদিন যাবত বসবাস করি, যেখানে আছে এ-ধরনের বেড়ানোর অনেক জায়গা। শুধু সুইজারল্যান্ড নয়, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন এসব দেশের অনেক জায়গায় লোকেরা ওয়াইন টেস্টিংয়ে যায় শুনি। আমি টিটোটালার, তাই সবসময় মনে হয়েছে – এ ধরনের জায়গায় গিয়ে আমি কী করবো। আমার বন্ধুরাও কখনো আমাকে তাদের সঙ্গে এ-ধরনের কোনো জায়গায় বেড়াতে যেতে বলেনি। কিন্তু সুজয়ের উৎসাহে এবার সুযোগ এসে গেল।
ইতালিতে আঙুর উৎপাদিত হয় এবং ভালো ওয়াইন প্রস্তুত হয় – এটা আমার জানা ছিল; কিন্তু এটা জানতাম না যে সেই ওয়াইনের একটা বড় অংশ আসে সিসিলি থেকে। সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনায় ওয়াইন টেস্টিং ট্রিপের জন্য সময় রাখা ছিল। যেখানে আগাম ব্যবস্থা করা ছিল সে-গ্রামের নাম মেনফি। আমাদের ফ্রিজিন্তিনি গ্রাম থেকে আধঘণ্টার ড্রাইভ। যথাসময়ে পৌঁছে গেলাম সেখানে। গাড়ি পার্ক করে যেখানে গিয়ে ঢুকলাম সেটিকে বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই, কত বড় প্রতিষ্ঠান এই কোম্পানি। আমাদের যথাযথ অভ্যর্থনা জানিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো একটি ঘরে, যেখানে সেমিনার করার মতো টেবিল-চেয়ার সাজানো। বাচ্চাদের একদিকে বসিয়ে ছবি আঁকার জন্য কাগজ, রং, পেনসিল ইত্যাদি দেওয়া হলো। আর বাকিদের জন্য দুজন এসে রীতিমতো এক বক্তৃতা দিলেন।
এই কোম্পানির মালিক পরিবারটি সেখানকার বাসিন্দা। বহু প্রজন্ম ধরে আছেন সেখানে। আঙুরের চাষের পাশাপাশি ইদানীং জলপাইয়ের বাগান করছেন। সুতরাং শুধু ওয়াইন নয়, অলিভ অয়েলও প্রস্তুত করেন তাঁরা। ভূমিকায় এসব বলার পর এলো কারিগরি দিক। সিসিলির, বিশেষ করে আমরা যেখানে আছি, সে-অঞ্চলের জমি আঙুর উৎপাদনের জন্য কেন বিশেষ উপযোগী সে-বিষয় থেকে শুরু করে কত ধরনের আঙুর উৎপাদিত হয় আর তা থেকে প্রস্তুত ওয়াইন যে কত ভালো মানের, তা জানলাম। আর তারপর কয়েক ধরনের ওয়াইন চাখার সুযোগ। টিটোটালারদের জন্য ছিল জুস।
ওয়াইনের পর্ব শেষ হওয়ার পর অলিভ অয়েল, কারণ এই কোম্পানির জলপাইয়ের ক্ষেতও আছে। জলপাই থেকে তেল বানানোর পদ্ধতি আর তিন রকমের মানের অলিভ অয়েলের সঙ্গেও পরিচিত হলাম।
বক্তৃতা পর্বের পর ওয়াইন প্রস্তুতের পুরো প্রক্রিয়াটি ঘুরিয়ে দেখানো হলো। সে-কাজটি হয় বেজমেন্টের কয়েকটি পেল্লায় সাইজের ঘরে। তখন বুঝতে পারলাম যে, সে-কারণেই প্রতিষ্ঠানটির ভবন বাইরে থেকে দেখে তার সত্যিকারের আকার-আয়তন বোঝা যায় না। একটি হলঘরে বিশালাকৃতি পিপেতে ওয়াইন রাখা। সেগুলো থেকে ভরা হয় বোতলে। তারপর কর্ক দিয়ে বন্ধ করা, লেবেল লাগানো ইত্যাদি সবই দেখানো হলো। কারখানা এবং স্টোর দেখার পর আমাদের নিয়ে যাওয়া হলো বাইরে – ক্ষেত দেখানোর জন্য। প্রথমেই জলপাইয়ের বাগান – যেখানে বিশাল জায়গাজুড়ে সারিবদ্ধভাবে লাগানো জলপাইয়ের গাছ। সেটি পার হয়ে আরো সামনে এগিয়ে গেলে আঙুরের ক্ষেত। কিন্তু ততক্ষণে দুপুরের রোদ তেতে উঠেছে। তাই আমাদের কারো আঙুর ক্ষেত দেখতে যাওয়ায় উৎসাহ ছিল না।
পিপেতে ওয়াইন
ঘরের ভেতরে ফেরার পর আমাদের নিয়ে যাওয়া হলো সেই ঘরে যেখানে বক্তৃতা হয়েছিল। ততক্ষণে তার এক কোণে টেবিল পেতে বুফে লাঞ্চের ব্যবস্থা। সেখানে আমার জন্য অপেক্ষা করছিল সামান্য চমক। আটটি পদের সম্পূর্ণ নিরামিষ এক ভোজ। পদগুলো যে ভালোভাবে চিন্তা করে সাজানো হয়েছে তা বোঝা গেল, কারণ সেখানে বেগুন, জুকিনি, টমেটো ইত্যাদি ছাড়াও প্রোটিনের জন্য শিমজাতীয় সবজি আর মাশরুমের পদ ছিল। ওয়াইন টেস্টিংয়ে গিয়ে এত সুন্দর একটি ভেজিটেরিয়ান লাঞ্চ খাওয়া হবে, এটা একেবারেই ভাবিনি।
দূর থেকে মাউন্ট এটনা আর ফেরার সময়ের অব্যবস্থা দেখতে দেখতে আমাদের ফেরার দিন এসে গেল। প্রত্যেকেরই রোম হয়ে যার যার জায়গায় যাওয়ার ফ্লাইট। কিন্তু যাত্রার দুদিন আগে থেকেই খবর আসতে থাকল ফ্লাইট বাতিল বা সময়ের পরিবর্তনের। বুঝতে পারলাম, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কাতানিয়া এয়ারপোর্ট এখনো সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় আসেনি। ফলে আমাদের টিকিট বদল করে (অথবা ক্যানসেল করে) নতুন করে টিকিট কিনতে হলো। তবে ঝক্কির সেখানেই শেষ ছিল না। এয়ারপোর্টে পৌঁছে দেখলাম টার্মিনাল বিল্ডিংয়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ডিপার্চার এলাকার সামনের রাস্তায় সবাই ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে। ফ্লাইটের সময়ের কাছাকাছি কেউ এসে জানাচ্ছে যে, তার যাত্রীরা এখন ঢুকতে পারে। গরমে এবং রোদে সেই ভিড়ে দাঁড়িয়ে ডাকের অপেক্ষায় থাকলাম। একসময় ভেতরে গিয়ে দেখলাম এক কোণে একটি কাউন্টারে সব আনুষ্ঠানিকতার ব্যবস্থা। তারপর প্লেনে ওঠার জন্যও আবার লম্বা লাইন এবং দাঁড়িয়ে থাকা, কারণ মাত্র দুটি গেট খোলা ছিল। সব সেরে বোর্ডিংয়ের জন্য বের হয়ে আবার একটি তাঁবুর তলায় কিছুক্ষণ।
ইউরোপে গ্রীষ্মাবকাশের সময় 888sport slot game এমনিতেই কষ্টকর। তার ওপর আগুন লেগে বিপর্যয়। সব মিলিয়ে যাত্রীদের – বিশেষ করে আমাদের মতো বয়োজ্যেষ্ঠ, শিশু এবং মাতৃত্ব-আসন্ন 888sport promo codeদের অবস্থা স্বাভাবিকভাবেই একটু নাজুক। তাই প্লেনে উঠে আমরা সবাই হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম।
তাছাড়া পেছনে রয়ে গিয়েছে কিছুটা অতৃপ্তি : সিসিলিতে এসেও দেখা হলো না মাউন্ট এটনা। যদিও মোদিকার গ্রাম থেকে এয়ারপোর্টে যাওয়ার পথে দূর থেকে দেখা গিয়েছিল পর্বতটির ত্রিকোণ চূড়া।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.