‘সে যে বেঁচে ছিলো, সেটা কবুল করেছে’

পাবলো নেরুদার 888sport app download apkর মতোই তাঁর জীবনটাও যে কত অদ্ভুত আর উদ্ভটকে বুকে আঁকড়ে ধরেছে তার কোনো ইয়ত্তাই বুঝি নেই। জন্মেছিলেন ১২ জুলাই ১৯০৪, • দক্ষিণ চিলে-র একেবারে সীমান্ত ঘেঁসে বৃষ্টিভেজা এক শহরে, আর তাঁর বাবা ছিলেন রেলের কর্মী। মাকে তিনি প্রায় চোখেই দ্যাখেননি, তাঁর যখন দু’মাস বয়েস তখন তাঁর মা মারা যান। আর যখন তিনি কৈশোরও পেরোন নি তখন তাঁর বাবা মারা যান এক দুর্ঘটনায়, চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে। পরে নেরুদা বলেছিলেন, ‘আমার বাবাকে কবর দেয়া হয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বৃষ্টিভেজা কবরখানায়’, তেযুকোতে।

এই অব্দি কিন্তু মনেই হবে না গরিব পরিবারের এই ছেলের জীবনে তেমন একটা অদ্ভুত কিছু ঘটেছে। ছেলেমেয়ের জন্ম দিতে গিয়ে সূতিকা রোগে মায়েরা তখন মারাই যেতেন, রেলের শ্রমিকও কখনো কখনো রেল দুর্ঘটনায় মারা যায় বৈকি! কিন্তু জীবন যদি হামেশাই এমন সব মরণ ঘটায় কারো জীবনে, তবে সেটাকে মাথা পেতে মেনে নেয়া ছাড়াই বা আর কী করার থাকে! কিন্তু কার মা-বাবা ওভাবে মারা গিয়েছিলেন? পাবলো নেরুদার? উঁহু, তা তো নয়। নেরুদার তখনও জন্মই হয়নি, যার জন্ম হয়েছিল ওই ১২ জুলাই, তার নাম তো রিকার্দো এলিয়েসের নেফতালি রেইয়েস। আর মেফতালি রেইয়েসের রেলশ্রমিক বাবা চাননি যে তাঁর ছেলে কবি হোক। তো রিকার্দো একটা ছদ্মনাম উদ্ভাবন করেছিলেন: পাবলো নেরুদা। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে ইয়ান নেরুদা নামে এক লেখক দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন লাতিন আমেরিকায়, তাঁর সব অদ্ভুত রোমহর্ষক অতিপ্রাকৃত কাহিনীগুলোর জন্যে। আর সম্ভবত পোল ভেরলেনের পোল নাম থেকেই গজিয়ে উঠেছিল পাবলো নাম। পোল, পাউল, পাভেল, পাবলো এ তো একই নাম, বিভিন্ন ভাষায়।

যখন তাঁর বয়েস আঠারো, উনিশ, তখন বেরিয়েছিল তাঁর প্রথম 888sport app download apkর বই ক্লেপুস্কলারিও (১৯২৩), যে-নামটার মধ্যে যেমন লুকিয়ে আছে সন্ধ্যার আবছায়া তেমনি ওই প্রদোষ আলোর মধ্যেই মিশে আছে হয়তো ক্যালেন্ডারও। আর তারপরেই বেরুলো তাঁর দ্বিতীয় 888sport app download apkর বই : বিয়ন্তে পোয়েমাস দে আমোর ই উনা কামসিওন দেসেসপেরাদা (কুড়িটি প্রেমের 888sport app download apk আর একটি মরিয়া হতাশার গান, ১৯২৪)। এতদিনে অবিশ্যি হুয়ান রামোন হিমনেথ-এর তর্জমা মারফত তাঁর কাছে পৌঁছে গিয়েছে রবীন্দ্রনাথের 888sport app download apk : আর কুড়িটি প্রেমের গানের মধ্যে একটি তৈরি হয়েছে রবীন্দ্রনাথেরই একটি গান থেকে, ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা’। রবীন্দ্রনাথের প্রতি তাঁর টান আরো বাড়বে যখন কূটনৈতিক দফতরে কাজ নিয়ে তিনি ব্রহ্মদেশে আসবেন, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য তখন যাকে শ্রীলঙ্কার মতোই ভারতবর্ষের মধ্যে জুড়ে দিয়েছিল। রেঙ্গুন (এখন যা ইয়াঙ্গুন) থেকে কলকাতা আসবেন তিনি ১৯২৭-এ, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করতে, রবীন্দ্রনাথ ঠিক সে সময় কলকাতা ছিলেন না– তো কালিঘাট, নিমতলা, চিৎপুর, চৌরঙ্গী, ঘুরেটুরে সেবার আবার তিনি রেঙ্গুনের কূটনৈতিক দফতরেই ফিরে যাবেন। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর দেখা হবে পরে, অন্যত্র, একাধিকবার; পরে অবশ্য আবার আসবেন তিনি কলকাতায়, ১৯৫৭-তে, সেবার তাঁর সঙ্গে দেখা হবে বিষ্ণু দে’র, আর তাঁর সেই বিখ্যাত সবুজ কালিতে (সবসময়ই লিখতেন সবুজ কালিতে) সই করে বিষ্ণু দেকে উপহার দেবেন তাঁর বই। রেঙ্গুন বা কলকাতা কখনো কখনো অতর্কিতে দেখা দেবে তাঁর 888sport app download apkয়, বোঝাই যায় এই শহরগুলোর অভিজ্ঞতা তাঁর কাছে ছিল 888sport sign up bonus – বি888sport sign up bonusর চেয়ে কিছু বেশি।

কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তাঁর দিন ভাল কাটেনি; তখনকার 888sport app download apkয় ফুটে উঠেছে মর্মন্তদ জ্বালাযন্ত্রণা, হতাশা, পরাবাস্তব 888sport app download apkর কৌশলের মধ্যে। ওই পরাবাস্তববাদ যতটা না আন্দ্রে ব্রেত বা লুই আরাগর, তার চেয়েও অনেক বেশি লোত্রেয়ামো বা লাফগেরী যদিও তাঁর সত্যিকার শুরু হয়ে উঠবেন ওয়াল্ট হুয়িটম্যানই, যাঁর সঙ অভ মাইসেলফ-এর সঙ্গে তাঁর আত্মীয়তা সম্বন্ধ থেকেই গড়ে উঠবে কান্তো হেনেরলি— যেটা পুরো আমেরিকা মহাদেশেরই মহাকাব্য। আর তা থেকেই আরো স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে নেরুদা আসলে জীবনেরই কবি, মহাজীবনের কবি, অথচ আশ্চর্য এরোস আর পাশাপাশি তাঁর 888sport app download apkয় চিরকাল কিন্তু থেকে যাবে থানাটোস ও জীবনকে ভালোবেসেই জীবনের মধ্যেই পাশাপাশি থেকে যাবে মরণ, মরণের আকুতি।

অনেক পালাবদল ঘটেছে নেরুদার 888sport app download apkয় আর সম্ভবত তাঁর মতো এত 888sport app download apk বিংশ শতাব্দীতে আর কেউই লেখেননি। কিন্তু সব পালাবদলের মধ্যেই শেষ অব্দি থেকে গিয়েছে সাম্যবাদে তাঁর আস্থা, এস্পানিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় হেনেরাল ফ্রাঙ্কোর পৈশাচিক কাণ্ডকীর্তি দেখে তারই জবাব খোঁজবার জন্যে মার্ক্সবাদ এক পরম আশ্রয় হয়ে উঠেছিল। আর তাইতেই, সব মৃত বা অনাগত মানুষকে সম্বোধন করে তিনি বলতে পেরেছিলেন, “কথা বলো আমার ভাষায়। কথা বলো আমার রুধিরে।” ১৯৭২-এ নোবেল 888sport app download bd গ্রহণ করবার সময় তিনি যা বলেছিলেন, তাও আমাদের এই খেইটা ধরিয়ে দেবে:

“আজ থেকে ঠিক একশো বছর আগে, এক দুস্থ কিন্তু আশ্চর্য সহৃদয় কবি, সকলের মধ্যে যার ছিল সবচেয়ে গভীর মর্মপীড়া, এই ভবিষ্যদ্বাণী লিখে গিয়েছিলেন ঊষসীতে, জ্বলন্ত ধৈর্যে সশস্ত্র হয়ে, আমরা গিয়ে পৌঁছুব আলো ঝলমল নগরীগুলোয়’। ব্যাঁবো, যাঁর ছিলো অলোকদৃষ্টি, আমি তাঁর সেই ভবিষ্যদ্বাণীতে আস্থা রাখি, শুধু জলন্ত ধৈর্য নিয়েই আমরা জয় করে নিতে পারব আলোকচ্ছটার নগরী, যা আমাদের দেবে জ্যোতি, ন্যায়বিচার আর সমস্ত মানুষকে মহিমা। “

এই জ্যোতি, ন্যায়বিচার আর মানুষের মহিমা পাবার আকুতিই চিরকাল তাঁর 888sport app download apkকে এমন উদ্দীপক করে রেখেছে। সেইজন্যেই এক সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হুক্কাহুয়ায় রব মেলানো প্রেসিডেন্ট গনসালেস বিদেলার সঙ্গে এক সময় তাঁর বিরোধ বেঁধেছিল— তাঁর স্বৈরাচারী একনায়ক শাসনের বিরুদ্ধে উদ্যত হয়েছিলো তাঁর শানিত লেখনী আর ঝলমলে সবুজ কালি। তখন তাঁকে চলে যেতে হয়েছিল আন্ডারগ্রাউন্ডে, ছদাবেশে আত্মগোপন করেও প্রাণ বাঁচানো প্রায় অসম্ভব হয়েই উঠেছিল, আর তখন চিলে থেকে বেরিয়ে পড়তে হয়েছিল তাঁকে, যেতে হয়েছিল। স্বেচ্ছানির্বাসনে, আন্দেসের গিরিশিখরের উপর দিয়ে টগবগ টগবগ ঘোড়া ছুটিয়ে।

নোবেল 888sport app download bd পাবার সময়েই, যখন তিনি ফ্রান্সে চিলের রাষ্ট্রদূত, তাঁর শরীরের মধ্যে বাসা বেঁধেছিল কর্কট রোগ আর ফিরে এসেছিলেন তিনি ইসলা নেপ্রায়। গনসালেস বিদেলা তখন নেই বটে, কিন্তু মার্কিন মদতেই তারপর ১৯৭৩-এ ফেটে পড়েছিল হেনেরাল পিনোচেৎ-এর নৃশংস সময়- ১৯৭০-এর ১১ সেপ্টেম্বর (তারিখটা খেয়াল করার মতো) পিনোচেৎ বিমান থেকে বোমা ফেলে খুন করেছিল এল সেমিওর প্রেসিডেন্ট সালভাদোর আইয়েন্দেকে আর ইসলা নেগ্রায় পিনোচেৎ-এর সশস্ত্র বাহিনী ঘিরে রেখেছিল নেরুদার বাড়ি, এমনকি কোনো চিকিৎসককে অব্দি তারা তখন ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। বন্ধু, দোসর, সালভাদোর আইয়েন্দের হত্যার বারোদিন পরে ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩-এ নেরুদার মৃত্যু হলো কর্কট রোগ ও পিনোচেৎ-এর সাঁড়াশি আক্রমণে। তখন এমনকি সেনাবাহিনী নেরুদার মরদেহ নিয়ে তাঁর ভক্তদের আর তাঁর ভক্ত তো চিলের অগণিত মানুষ – সমাধিস্থলে যেতেও দেয়নি।

কিন্তু 888sport app download apk? তাকে কি আটকে রাখতে পেরেছিল পিনোচেৎ-এর সরকার? সেন্সরশিপ কি শেষ অব্দি সত্যি সর্বনাশ ঘটিয়ে দিতে পারে 888sport live chat ও 888sport live footballের? সে তো টিকেই থাকে, 888sport app download apk যেমন টিকে ছিল, অনুরণিত হয়েছিল লেখার প্রক্রিয়া আবিষ্কারেরও আগে। নেরুদা নিজেই তো একবার বলেছিলেন :

“আমাদের এই পৃথিবীতে লেখার কায়দাকানুন উদ্ভাবিত হবারও আগে, ছাপাখানা উদ্ভাবিত হবারও আগে, 888sport app download apk বেড়ে উঠেছিল, তার শ্রীবৃদ্ধি হয়েছিল। সেইজন্যেই আমরা জানি যে 888sport app download apk হলো রুটির মতো, এই রুটি ভেঙেই সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হবে, ভাগ করে নিতে হবে পণ্ডিতদের আর চাষী-মজুরদের মধ্যে, ভাগ করে নিতে হবে আমাদের এই বিশাল, অবিশ্বাস্য, অসাধারণ মানব পরিবারেই।”

তাই পিনোচেৎ না চাইলেও, তাঁর মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪-এর মধ্যে বেরিয়েছিল নেরুদার অন্তত আটটি মরণোত্তর 888sport app download apkর বই, বুয়েনোস আইরেসে, প্রকাশক ছিল আরহেনতিনার লোসাদা সংস্থা। এমনকী তাঁর 888sport sign up bonusকথারও পরিবর্ধিত সংস্করণ বেরিয়েছিল : “আমি কবুল করি যে আমি বেঁচে ছিলাম’ (১৯৭৪), যার মধ্যে বিবরণ ছিল তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলোর। এখনো তাঁর অনেক 888sport app download apk কত জায়গায় যে ছড়িয়ে আছে, এই শতবার্ষিকীর উদযাপনে তাদেরও প্রকাশ ঘটবে।

ওই মরণোত্তর বইগুলোর মধ্যেই একটি হলো লিব্রো দে প্রেগুনতাস (১৯৭৪; ‘প্রশ্নের বই’ বা ‘হেঁয়ালি পুঁথি’ নামে যার তর্জমা করা যেতে পারে)। আশ্চর্য এক বই এটি, ১৯৭২-এ ফ্রান্সে লেখা শুরু, এক অতিব্যক্তিগত অস্তিত্ববাদী দিনপঞ্জি। কবি তাকিয়ে আছেন নিজেরই দিকে- নিজেরই অতীতটায় আর বর্তমানে আর সে কী বিপজ্জনক টলমল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করে আছে তাঁর জন্যে! আর অমনি আবিষ্কার করে বসেছেন কত-কী যে তাঁর ভালো লাগত আর কতকী যে মনে হতো পরিতাপের আক্ষেপের বিষয়, কতকী যে মনে হতো বাতিলই করে দেওয়া যায়, আলো আর ছায়া দুইই, আর বিস্ময়, আর সচকিত আশা। আর এই 888sport app download apkগুলো আপ্রাণ চেষ্টা করেছে 888sport app download apk কেমন করে স্বচ্ছ সহজসরল হয়ে ওঠে, কেমন করে সব কথা বলা যায় সরাসরি, এমন এক শৈলীতে যেটা বাগবিধি থেকে সরিয়ে ফেলে দিয়েছে মেদের বাহুল্য। ছিমছাম, সপ্রতিভ, কৌতুকস্নিগ্ধ, বেদনাবিধুর – আগে তাঁর এসত্রাবাগারিও কিংবা ওদাস্ এলেমেন্তালেস-এ যার চর্চা করতে চাচ্ছিলেন তিনি, কিন্তু এখন তা গিয়ে ছুঁয়েছে কত কিছু, কত জটিল কিছু অথচ বাহুল্যবর্জিত, একেবারে যতটুকু না থাকলেই নয়, পড়তে কেমন যে সহজ, সব জটিলতাও ততটুকুই শুধু। আর প্রতিটি 888sport app download apkই পর পর প্রশ্ন করে যায়, প্রতিটি প্রশ্ন দুটি চরণেই শেষ, আর এর উত্তর কী হতে পারে জানবার জন্যেও যেন তার সয় না, পরক্ষণেই নতুন এক প্রশ্ন, নতুন এক জিজ্ঞাসা এসে হাজির, যেন কোনো বাচ্চা ছেলে একের পর এক প্রশ্ন ক’রে যাচ্ছে, ঝড়ের বেগে, তুচ্ছ সব বিষয়ে, কৌতূহলে টগবগে, উৎসুক, কিন্তু উত্তরের জন্যে তার কোনো মাথাব্যথাই যেন নেই। কে চায় সবকিছুর সহজ সাবলীল সমাধান, যদি কিছুই তার এখনো পুরোপুরি জানা হয়নি?

সেই প্রশ্নের বই থেকেই কতগুলো 888sport app download apk এখানে সংকলন করে দেওয়া হলো, যাতে নেরুদার মৃত্যুর ঠিক আগে লেখা 888sport app download apkতেই তাঁর শতবার্ষিকীতে আমরা 888sport apk download apk latest version জানাতে পারি। 888sport apk download apk latest version জানাতে পারি চিরকালের সেই ছটফটে ছেলেটিকে, প্রশ্ন করেই যে দুম করে অন্যখানে ছুটে যায়, উত্তর শোনবারও তার আর তর সয় না। কিন্তু সে তো কবুল করেই গেছে যে সে বেঁচে ছিল, এই পৃথিবীতেই।

2

আমি যদি মৃত কেউ, যে জানে না কবে-যে মরেছে,

এখন যে কটা বাজে কে আমায় বলে দেবে তবে?

কোনখান থেকে পায় এত কচিপাতা

ফরাসি বসন্তঋতু?

মৌমাছির তাড়া খেতে-খেতে

কোথায় পালিয়ে গিয়ে কোনো অন্ধ বাঁচে?

সমস্ত হলুদ যদি আগেই খরচ হয়ে থাকে

রুটি তবে বানাব কী দিয়ে?

গোলাপ কি সত্যি নগ্ন থাকে,

নাকি সে অমনভাবে সেজেগুজে আছে?

তাদের শিকড়মূল, ঝলমলে মহিমা,

গাছেরা লুকিয়ে রাখে কেন?

অপরাধী মোটরগাড়ির

অনুতাপ কে কবে শুনেছে?

বৃষ্টির ভিতরে কোনো নিশ্চল ট্রেনের চেয়ে কিছু

বিষণ্ণ আছে কি পৃথিবীতে?

তোমার কুঁজের মধ্যে কী লুকিয়ে রাখো?

– কচ্ছপেরে বলেছিল উট

এবং কচ্ছপ উলটে জিগ্যেস করেছে :

নারঙ্গের সাথে তুমি এত গল্পগুজব কী করো?

নাশপাতি গাছের পাতারা

হারানো দিনের 888sport sign up bonusচারণের চেয়ে বেশি বুঝি?

ভেতরে-ভেতরে যেই টের পায় হলুদ, তখন পাতারা নিজেকে খুন করে ফ্যালে কেন?

সমস্ত শান্তি কি শুধু কোনো পারাবতের শান্তিই?

চিতাবাঘ কখনও কি ভয়াবহ যুদ্ধ বাঁধিয়েছে?

অধ্যাপক কেন যে শেখান

মৃত্যু আর মৃতের ভূগোল?

কী যে হয় সোয়ালো পাখির,

কেন এত শ্লথ চলে ইশকুলের পথে?

এ-কথা কি সত্যি, তারা মানচিত্র ছড়িয়ে রেখেছে

যার মধ্য দিয়ে তুমি দেখতে পাও সমস্ত আকাশ?

10

আমার মাথার টুপি দেখে

পোলেরা কী ভাববে বলো শতবর্ষ পরে?

আঙুল কখনো যারা ডোবায়নি আমার রুধিরে

আমার 888sport app download apk নিয়ে কী বলবে তারা?

চুঁইয়ে পড়ে যত ফেনা আমার বিয়ার মগ থেকে

মাপা যাবে তাদের কী করে?

কী ক’রে মাছিরা, যারা বন্দি হয়ে আছে

পেত্রার্কের সনেটের মাঝে?

12

ভাত কার পানে চেয়ে

তার ওই অনিঃশেষ সাদা দাঁতে হাসে?

কেন-যে ছায়ায় 888sport app সুদূর অতীতে

তারা সব লিখে যেত অদৃশ্য কালিতে?

গোলাপের পেটিকোট কটা

তা কি শুনে বলে দিতে পারে কারাকাসের রূপসী?

আমাকে কেন-যে শুধু কুট করে কামড়ে যায় পিশু

আর যত 888sport live footballের নগরকোটাল?

১৬

সাদা এক মিনার গড়ার জন্যে বুঝি

নুন আর চিনি থাকে শশব্যস্ত সকল সময়?

এটা কি সত্যি কথা, উইয়ের ঢিবিতে,

স্বপ্ন দেখা বাধ্যতামূলক?

তুমি জানো হেমন্তে পৃথিবী

রোমন্থন করে যায় কী কী?

(প্রথম সোনালি পাতা ফোটার সময়

মেডেল দেয় না কেন কেউ তাকে?)

20

এটা কি সত্যি কথা, তৃণমণির ভিতরে

জমে আছে সাইরেনের অশ্রুবিন্দুগুলি?

যে-ফুল উড়াল দেয় পাখি থেকে পাখির উদ্দেশে

তার নাম জানো?

ভবিষ্যতের চেয়ে ‘কখনো না’ই কি শ্রেয় নয়?

এবং ফরাসি দেশে পণ্ডিতেরা কেন

এতটা বড়াই করে নিজের তেজের?

24

চিরকাল ৪ বুঝি সকলেরই জন্যে থাকে ৪?

সমস্ত সাতেরা বুঝি সবাই সমান?

বন্দিরা যখন ভাবে আলোর ছটাকে

সে কি সেই একই আলো তোমার জগৎটাকে আলো করে দেয়?

কখনো অবাক হয়ে ভেবেছো কি তুমি,

অসুস্থ লোকের কাছে এপ্রিলের রঙ কী রকম?

প্রতীচীর কোন রাজকুল

আফিম ফুলের থেকে পতাকা বানায়?

২৬

সেই ভাবগম্ভীর সাংসদ, যাঁর দাবি ছিল

আমার অনেক দুর্গ আছে

নিজের ভাগ্নের সাথে তিনি কি গোগ্রাসে গিলে খেয়েছেন

খুনির পাতের সব পিঠে?

সে কাকে ঠকাতে চায় ম্যাগনোলিয়া, তার

লেবুর সুগন্ধ দিয়ে?

কোথায় ঈগল তার ছুরি জমা রাখে

যখন সে ঘুমে ঢলে মেঘের ওপর?

৩১

কাকে যে শুধোতে পারি, আমি

কোন সিদ্ধি পেতে চেয়েছিলাম জগতে?

চাই না, তবুও কেন ঘুরেই বেড়াই,

কেন-যে পারি না ঠায় একঠায় অচল দাঁড়াতে?

চাকা নেই, তবুও গড়িয়ে যাই কেন?

কেন উড়ি, পালক অথবা ডানা বিনা ?

আমার অস্থি ও মজ্জা যদি থাকে চিলেয়, তাহলে

দেশান্তর পুনর্জন্ম—এ-সব কেমন করে বলি?

৩২

পৃথিবীতে এর চেয়ে উদ্ভট উন্মাদ কিছু আছে

পাবলো নেরুদা বলে ডাকা হয় আমাকে যখন?

আছে কেউ, মেঘ যে সংগ্রহ করে রাখে

কোলোম্বিয়ার আকাশে?

কেন তারা চিরকাল

ছাতার মহতী সভা বসায় লন্ডনে ?

শিবা’র রানির রক্তধারা

ছিল বুঝি পারিজাত ফুলের রঙের?

বোদলেয়ার যখন কাঁদতেন, তাঁর

গাল বেয়ে গড়াতো কি কালো অশ্রুজল?

৩৩

বনের ভেতরে ঘোরে যে পথিক, তার

এমন করুণ বন্ধু হবে কেন দিনের রোদ্দুর?

এবং কেন যে তার যত আবেদন

শুধু হাসপাতালেরই বাগানের মাঝে?

চাঁদের জালের মধ্যে ওরা কারা ধরা পড়ে গেছে—

ওরা মাছ, না কি ওরা পাখি?

ঠিক সেখানেই তারা আমাকে হারিয়ে ফেলে এসেছিল বুঝি

যেখানে নিজেকে আমি খুঁজেই পেলাম, অবশেষে ?

৩৫

অনির্দিষ্ট দুই স্বচ্ছতার মাঝখানে

আমাদের জীবন কি সুড়ঙ্গ হবে না কোনোদিনও?

অথবা সে স্পষ্ট হবে বুঝি

ছায়া888sport app দুই ত্রিভুজের মাঝখানে?

নাকি এ-জীবন বুঝি মাছ কোনো

এখনই যে পাখি হয়ে যাবে?

মৃত্যু বুঝি তৈরি হবে অনস্তিত্বে গড়া?

নাকি আরো বিপজ্জনক কিছুতে?

৩৮

মৃত্যু যে লুকিয়ে আছে চেরির সূর্যের মাঝখানে

তা কি তুমি ভাবতে পারোনি?

বসন্তের চুমো বুঝি ঠিক একইভাবে

তোমাকে খতম করে দিতে পারবে না?

তুমি কি বিশ্বাস করো নিয়তির নিশান তোমারই

দুঃখশোক সামনে এগিয়ে নিয়ে আসে?

করোটির মাঝখানে খুঁজে পাও কখনো তুমি কি

তোমার প্রজাতিটাই সবসুদ্ধ অস্থি হয়ে গেছে?

৩৯

সমুদ্র যখন অট্ট হেসে ওঠে হো-হো

তুমিও কি টের পাও না বিপত্তি, বিপদ?

আফিম ফুলের ওই রক্তরাঙা রেশমে তুমি কি

দুর্বিপাক দেখতেও পাও না?

তুমি কি দেখতেও পাও না কীভাবে আপেলগাছ মঞ্জুরিত হয়

আপেলেরই মাঝখানে মরে যাবে বলে?

তুমি কি কাঁদো না কভু যখন তোমায় ঘিরে থাকে

হাসি আর বি888sport sign up bonusর অজস্র বোতল?

40

ছেঁড়াখোঁড়া কণ্ডর বেচারা কার কাছে

তার বিশেষ দায়িত্বভার সামলাবার কৈফিয়ত দেয়?

একাকিনী স্ত্রী-ভেড়ার কাছে

বিষাদের নাম কী যে হয়?

এবং পায়রার খোপ কী হতে আরম্ভ করে দেয়

পায়রারা যেই শেখে গান?

মাছিরা মৌচাক বোনে যদি

মৌমাছিরা চটে যাবে বুঝি?

41

হৃদয় কোমল যদি হয়ে যায়, তবে

গণ্ডারেরা টিকবে কতক্ষণ?

কী কাহন শোনায় পাতারা

বসন্তের আবির্ভাবকালে?

পাতারা সবাই বুঝি গোপনেই বাঁচে

শিকড়মূলের মাঝে, শীতকালে?

মাটির বিষয়ে গাছ যে-কথা শিখেছে

আকাশের কাছে বুঝি ফাঁস করে দেয়?

44

যে-শিশু ছিলাম আমি, সে কোথায় আজ—

এখনো আমার মাঝে আছে সে কিনা কি চলে গেছে?

তাকে যে কখনো আমি ভালোই বাসিনি, সে কি জানে?

কিংবা সে যে আমাকে বাসেনি?

বড় হতে গিয়ে কেন কাটিয়ে দিলাম আমরা এতটা সময়

শুধু শেষে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাবে বলে?

যখন শৈশব মরেছিল

দুজনে আমরা কেন তখন মরিনি?

এবং আত্মাই যদি আমার ভিতর থেকে ঝরে পড়ে যাবে

আমার পেছনে কেন লেপটে থাকে একটি কঙ্কাল সারাক্ষণ?

47

মধ্যহেমন্তের মাঝে

হলুদ বোনার শব্দ শুনতে পাও তুমি?

বৃষ্টিরা আনন্দে কেন এমন উথাল কেঁদে চলে

কারণে অথবা অকারণে?

পাখির ঝাঁকের মাঝে কে যে আগে কে যে পিছে রবে

কোন পাখি সেটা ঠিক করে?

কোথা থেকে দোলায় গায়ক পাখি তার

চক্ষু ধাঁধিয়ে দেয়া উজ্জ্বল সুষমা?

50

যাতে সব বোঝেসাঝে

এ-কথা কে সমুদ্রকে বিশ্বাস করাবে?

নীল তৃণমণি আর সবুজ গ্র্যানাইট ধ্বংস করে

কী-যে লাভ হয়?

পাথরের গায়ে কেন

এতসব ভাঁজ ও ফাটল?

আমি তো এসেছি এই সমুদ্রের অন্য পার থেকে-

যদি সে চড়াও হয়, কোথায় পালাবো তবে আমি?

52

মৃত্যুর গলির ঠিক মাঝটাতে

শুধু টিকে থাকবার কী যে মানে হয়?

কী করে নুনের মরুভূমি

পাপড়িগুলি মেলে দেবে তার?

‘কিছুই না করা’র এই সমুদ্রের মাঝে

মরণ আসন্ন বলে কেউ বুঝি সেজে বসে থাকে?

অস্থি ও পঞ্জার যদি যায়

শেষের ধূলির মাঝে কে সে টিকে যাবে?

57

ওগো বর্ণ পরিচয়, আমাকে কি ভালোবাসো তুমি?

আমাকে দেবে কি তুমি শুধু এক প্রকৃত চুম্বন ?

অভিধান – সে কি কোনো কবর, না কি সে

মৌচাক, মোহর দিয়ে বন্ধ করে রাখা?

কোন্ জানলার পাশে উদগ্রীব দাঁড়িয়ে

মৃত সময়ের দিকে তাকিয়েছিলাম?

দূর থেকে যার শুধু ঝলকই দেখেছি

শুধু সে-ই বুঝি আজও কাছেই আসেনি, যাবে বলে?

৫৮

কোন-কোন মাছি আর ডানার পালকে লেখা আছে,

প্রজাপতি কখন যে নামগুলি পড়ে?

মৌমাছি কোন-কোন শব্দ পড়ে বানান করেই

নিজের গন্তব্যসূচি জেনে নেবে বলে?

এবং সে কোন 888sport free bet পিঁপড়ে খতিয়ে দ্যাখে যোগ করে করে

কত সেনা মরেছে বেঘোরে?

ঘূর্ণিঝড়ের নাম কী যে হবে

সব ঝড় যখন থেমেছে?

৬০

বাধ্যতামূলকভাবে কী বেগার খাটে

নরকে এখন হিটলার?

সে কি আঁকে মৃতদেহ, নাকি শুধু দেয়ালই রাঙায়?

সে কি শ্বাস নেয় ওই বিষবাষ্পে ধ্বংসের তাণ্ডবে?

তারা কি খাওয়ায় তাকে ছাইভস্ম অথবা অঙ্গার

শিশুদের পোড়া মাংস যে-ছাই ছড়ায়?

মারা তো গিয়েছে কবে, তবু এখনো কি

পান করে রক্তের কুপির মধ্য থেকে?

নাকি তারা হাতুড়ি পিটিয়ে ফের তার ওই মাথায় ঢোকায়

সেই সোনা, মৃতদের দাঁত থেকে যা সে উপড়ে নিয়েছে সেদিন?

৬২

সমস্ত নদীর জলই মিষ্টি হয় যদি

সমুদ্র কোত্থেকে পায় তার এত নুন?

কী করে ঋতুরা জানে

এখন সময় এল জামা বদলের?

শিকড় কী করে টের পায়

আলোর দিকেই তাকে বেয়ে বেয়ে উঠে যেতে হবে?

হাওয়াকে সেলাম ঠোকে তারপরে তারা

এত রঙ এত ফুল দিয়ে?

চিরকাল সে কি ওই একই বসন্তই ফিরে ফিরে আসে আর একই ভূমিকায় নেচে যায়?