সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র 888sport alternative link : বয়ন ও ইঙ্গিত-সূত্রের অনুসন্ধান

বাংলা 888sport alternative link রচনা শুরুর প্রায় এক শতক পর সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র (১৯২২-১৯৭১) লালসালু-র প্রকাশ; যদিও সামান্য পরিচিতিটুকুর জন্যে এর লেখককে 888sport alternative linkটির দ্বিতীয় সংস্করণ (১৯৬০) পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল। আর তাঁর 888sport alternative linkের সঠিক মূল্যায়ন শুরু হয়েছে তিনি লোকান্তরিত হওয়ার পর, যা এখনো প্রয়োজনীয় মাত্রায় পৌঁছায়নি। এ অনুষঙ্গে কবি জীবনানন্দ দাশের (১৮৯৯-১৯০৫) সঙ্গে ঔপন্যাসিক ওয়ালীউল্লাহ্র একটি সাযুজ্য সহজেই চোখে পড়ে; আর তা হলো তাঁরা দুজনেই মৃত্যু-পরবর্তীকালেই যেন পাঠক-সমালোচক কর্তৃক বেশি করে পঠিত ও মূল্যায়িত। সময়ের অগ্রবর্তী লেখককে হয়ত এমন করেই অনাগত প্রজন্মের পাঠকের জন্যে অপেক্ষা করতে হয়। 888sport appsের 888sport alternative linkের পটভূমিকায় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র 888sport alternative linkের মূল্যায়ন গত কয়েক দশক ধরে চললেও তা ক্রমশ সে বৃত্তের পরিধিকে অতিক্রম করে চলেছে এবং এমন ভাবনাও অনেক সমালোচক করে থাকেন যে

সামগ্রিক বাংলা 888sport alternative linkের প্রেক্ষাপটে ‘অন্যতম প্রধান’ অভিধাটি তাঁর মুকুটে সংযোজিত হতে খুব বেশি দেরি নেই। তাঁর 888sport alternative link নিয়ে এমন সব উচ্চ ধারণার উৎস বোধ করি ঔপন্যাসিকের বর্ণনার কৌশল ও ইঙ্গিতদানের মধ্যে নিহিত। অভিনব এবং সুপ্রযুক্ত সে-পদ্ধতির কারণেই ওয়ালীউল্লাহ্র 888sport alternative link পুনঃপাঠের পরও পাঠ দাবি করে থাকে এবং উল্লেখ্য যে তাঁর প্রথম 888sport alternative link লালসালু (১৯৪৮) থেকেই তিনি পরিক্রমাটি শুরু করেছেন যা দ্বিতীয় ও তৃতীয় 888sport alternative link চাঁদের অমাবস্যা (১৯৬৪) বা কাঁদো নদী কাঁদো (১৯৬৮)-তে নতুন বিন্যাসে উপস্থাপিত।

ওয়ালীউল্লাহ্র সমসাময়িক যে-সকল বাঙালি লেখক মুসলিম সমাজের ধর্মান্ধতা অথবা ধর্মব্যবসায়ী ও আচারসর্বস্ব সমাজব্যবস্থার চিত্রায়নে এগিয়ে এসেছিলেন তাঁদের তালিকায় আরো রয়েছেন শওকত ওসমান (১৯১৭-১৯৯৮) এবং আবু ইসহাক (১৯২৬-২০০৩) এবং ঘটনাচক্রটি এমন যে তাঁরা সবাই 888sport appsের 888sport alternative linkের প্রথম পর্বের কথাকার। লালসালু-র সমকালে রচিত এই দুই লেখকের 888sport alternative link জননী (১৯৬১) এবং সূর্য-দীঘল বাড়ী (১৯৫৫)-তেও আধুনিক দৃষ্টিকোণ থেকে ধর্মব্যবসায়ীদের কার্যক্রমকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র ভিন্নতা এই যে তিনি প্রকৃতপক্ষে তাঁর পরবর্তী 888sport alternative link দুটিতেও এ অবস্থান থেকে সরেননি। লালসালু-তে মজিদ ও তার মিথ্যা আবিষ্কার মোদাচ্ছের পীরের মাজার এবং স্ব-উদ্ভাবিত ধর্মীয় বাণীর পর চাঁদের অমাবস্যা-তে কাদের এবং তার বড় ভাই দাদা সাহেবের চিন্তা ও কার্যের ভেতর দিয়ে ঔপন্যাসিক সে সফলতাতেই পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। আর কাঁদো নদী কাঁদো-র ‘কুমুরডাঙ্গায় ধর্মের তৎপরতা নেই। তবে সেখানে মুহাম্মদ মুস্তফা আছে, যার মায়ের নাম আমেনা, বাগদত্তার নাম খোদেজা, পিতা যার খেদমতুল্লাহ। মুস্তফা এ যুগের প্রেরিত-পুরুষ যেন, এ যুগে আবদ্ধ পূর্ববঙ্গের মুহাম্মদ মুস্তফা বিদ্রোহ করে না, নতুন ধর্মমত প্রচার করে না, নীরবে আত্মহত্যা করে।’১

শুধু কি তা-ই? খোদেজার মৃত্যুর কারণে অন্তর্যাতনায় দগ্ধ মুহাম্মদ মুস্তফা যখন গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিচ্ছিল তখনই কলিজাটির কথা অপ্রত্যাশিতভাবে তার মনে হয়েছিল। সে ‘বহুদিন আগে গ্রামের একটি মেয়েলোকের কাছে কলিজাটির কথা প্রথম শুনেছিল। মেয়েলোকটি বলত, খোদা কলিজার মতো দেখতে, কলিজার মতোই অবিরত থরথর করে কাঁপে’ (পৃ-৩৪২)। (এ 888sport liveে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র সকল 888sport alternative link থেকে উদ্ধৃত অংশই সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ রচনাবলী ১, সম্পা. সৈয়দ আকরম হোসেন, বাংলা একাডেমী, 888sport app, ১৯৯৩ থেকে নেওয়া হয়েছে)। সন্দেহ নেই প্রতীকীভাবে হলেও সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছিলেন যেখানে তিন দশক পরও আমরা পৌঁছতে পারিনি।

ধর্মীয় সংস্কারের উন্মোচন তাঁর 888sport alternative linkের একটি মাত্রা যাতে তিনি ক্রমান্বয়ে অধিকতর 888sport live chatিত উপস্থাপনার আশ্রয় নিয়েছেন। বিষয়গত প্রশ্নে তাঁর 888sport alternative linkত্রয়ের দ্বিতীয় অনুষঙ্গ হলো চরিত্রের অন্তর্গত প্লবমান চিন্তাস্রোত। লালসালু-র মজিদের দ্বন্দ্বপূর্ণ গোপন সে-ভাবনাস্রোতই 888sport alternative linkটিকে যেন পাঠকপ্রীতির স্তরে উন্নীত করে; যেমনভাবে চাঁদের অমাবস্যা-র আরেফ আলী বা কাঁদো নদী কাঁদো-র মুহাম্মদ মুস্তফা। তবে অতি আবশ্যক উল্লেখ-প্রসঙ্গ হলো ঔপন্যাসিক দ্বিতীয় এ-ব্যাপারটিতেও ক্রমউত্তোরণশীল। সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মতার অনুসন্ধান তিনি করেছেন। যেমন, ভাষা ও উপস্থাপনার কারুকাজে তেমনি মানব-মনের গহীনেও। আর সেসবের প্রতিস্থাপন ঘটেছে অব্যবহৃতপূর্ব নিরীক্ষাধর্মী কিন্তু শক্তিশালী এক শৈলীতে।

অনুসন্ধানটি লালসালু থেকেই শুরু করা উচিত। 888sport alternative linkটি শুরু হয়েছে মজিদ নামে ধর্মব্যবসায়ী কেন্দ্রীয় চরিত্রটির জন্মস্থানের বিবরণ দিয়ে এবং ওয়ালীউল্লাহ্র বিবরণ অর্থ যে বর্ণনামাত্র নয় – তা তীক্ষ্মধর্মী পাঠকের অজানা নয়। প্রতিটি বাক্য, এমনকি শব্দও বটে, প্রযুক্ত হয় হিসেব-নিকেশের পর, যা পাঠককে নতুনতর বোধনে নিয়ে যায় পুনঃপুনঃ পাঠে। মজিদের সেই জন্মস্থানের বিবরণ দিয়ে শুরু 888sport alternative linkটির প্রথম শব্দবন্ধটি হলো ‘শস্যহীন জনবহুল’ যা প্রথম ছোট্ট পরিচ্ছেদটিতে পৌনঃপুনিকভাবে ব্যবহৃত। সে-জনপদটির যে-চিত্র এ পরিচ্ছেদটিতে উপস্থাপিত তা যে-কোনো পাঠককে ভাবায়, বোধন ঘটে পাঠকের রোমন্থনে; কেননা বাংলার চিরকালীন চিত্র তো এমনটিই। অথচ সে-দারিদ্র্যের ভেতরও সাধারণ জনমানুষের যে-ধর্মপ্রীতি, ওয়ালীউল্লাহ্র চোখে তা পরিহার্য নয়। বর্ণনাটিকে মনোজ্ঞ করার জন্যেই সেখানে হাস্যরসের প্রাচুর্যও অনেক। যে-অঞ্চলের মানুষ রুটিরুজির সন্ধানে অঞ্চল ছাড়ার জন্য অধীর ও উন্মত্ত তাদেরকে বর্ণনায় লেখকের হাস্যরসাত্মক বাক্যরাশি এমন ঃ

(১) কারো জামা ছেঁড়ে, কারো টুপিটা অন্যের পায়ের তলায় দুমড়ে যায়। কারো-বা আসল জিনিসটা অর্থাৎ বদনটা – যা না হলে বিদেশে এক পা চলে – কি করে আলগোছে হারিয়ে যায়।

(২) অনেকের অনেক সময় গলায় ঝোলানো তাবিজের থোকাটা ছাড়া বিন্দুমাত্র বস্ত্র থাকে না শেষ পর্যন্ত।

অথচ এমন সব হাস্যউদ্রেককারী বাক্যাবলির ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসে সমাজ ও ধর্মের প্রতি ব্যঙ্গাত্মক শব্দ বা বাক্যরাশি, যেমন ঃ

১) শস্যের চেয়ে টুপি বেশি, ধর্মের আগাছা বেশি।

২) ভোরবেলায় এত মক্তবে আর্তনাদ ওঠে যে মনে হয় এটা খোদাতা’লার বিশেষ দেশ।

৩) কেউ কেউ আরো আশা নিয়ে আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ে। বিদেশে গিয়ে পোকায় খাওয়া মস্ত মস্ত কেতাব খতম করে। কিন্তু কেতাবে যে বিদ্যা লেখা তা কোন-এক বিগত যুগের চড়ায় পড়ে আটকে গেছে।

অথচ সে দেশটাতো বিরান। সর-ভাঙ্গা পাড় আর বন্যা-ভাসানো ক্ষেত। নদীগহ্বরেও জমি কম নেই। দেশে শস্য নেই। নিরন্তর টানাটানি। কেমন মরার দেশ। সেখানে খোদার এলেমে বুক ভরে না তলায় পেট শূন্য বলে। মাত্র তিন পৃষ্ঠার ভূমিকা-পরিচ্ছেদে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্কৃত এতসব সন্ন্যস্ত অনুষঙ্গ। আবার আর প্রায় এক পৃষ্ঠা ব্যেপে রয়েছে সেই বুটপরা বিদেশী পোশাকের নব্যশিক্ষিত মুসলমান শিকারির কথা। তবে শিকারির নাম শুনে মৌলবির চোখ যে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল তার পেছনের কারণটি কি এই যে শিকারিও মৌলবির স্ব-ধর্মের- এমন স্বচ্ছল একজন মুসলমানকে দেখেই কি মজিদের আকাক্সক্ষা জেগেছিল নতুন জীবনের, স্বপ্ন দেখেছিল সে – তা সে যে-উপায়েই হোক। এভাবেই লালসালু-তে ইঙ্গিতময়তার অনুসন্ধান করা চলে, যা 888sport alternative linkটির 888sport live chatভীতির মূল রহস্য।

‘কিন্তু তাঁর ভাষা আরো আধুনিক ও আরো ভালো হওয়া সম্ভব ছিলো’২- এমন মন্তব্য তাঁরই সমসাময়িকের। মন্তব্যকারীর প্রতি সম্মান রেখেই বলা যায়, ভাষার আধুনিকত্ব বা ভালোত্ব কত বিপ্রতীপ একটি ব্যাপার। অনুপুঙ্খ পাঠে স্পষ্ট হয় ওয়ালীউল্লাহ্ কাহিনী-বর্ণনায় ব্যবহার করেছেন শিষ্ট চলিত, মজিদের বুলিতে ব্যবহার করেছেন বৃত্তিক ভাষা ‘মোল্লাবুলি’, অন্যদিকে 888sport app চরিত্রের সংলাপে প্রবিষ্ট হয়েছে আঞ্চলিক বা উপভাষিক ভাষা৩। প্রথম 888sport alternative link থেকেই ওয়ালীউল্লাহ্ যে কাহিনী-বয়ানের প্রচলের বাইরে থেকেছেন, তা কিন্তু সমালোচকের দৃষ্টি এড়ায় না। আর সে-কারণেই ইংরেজি 888sport live footballের প্রাজ্ঞ অধ্যাপক, বাংলা কথা888sport live footballের অনুসন্ধানী সমালোচক আলী আনোয়ার বলেন, ‘ওয়ালীউল্লাহ্র লালসালু-তে কিন্তু ভাষা মোটেই সরল নয়, বরং তা বিদগ্ধ, জটিল অথচ দ্যুতিময়। পরতে পরতে ওয়ালীউল্লাহ্ এক জটিল ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করেন।’৪ ভিন্ন ভিন্ন তিন রকমের ভাষা ব্যবহার করে, নতুনতর ব্যঞ্জনা সৃষ্টির মাধ্যমে এভাবেই লালসালু-র লেখকের অভিযাত্রা। প্রথম 888sport alternative linkে যেমন মুসলমান সমাজচিত্রণ, ধর্ম-সংস্কারের আঘাত, মনুষ্য-মন বিশ্লেষণ, দ্বিতীয় ও তৃতীয়তেও তাই। পার্থক্য শুধু মাত্রাগত। বিশ বছরে মাত্র তিনটি বাংলা 888sport alternative link – অন্তর্গত প্রস্তুতি যে যজ্ঞমতো ছিল তা বুঝতে অসুবিধা হয় না।

তর্কাতীত যে, লালসালু থেকে অন্য দুটি 888sport alternative link প্লট-প্রশ্নে অসরল। লালসালু-তে প্রথম পরিচ্ছেদের কার্যকারণ অনুধাবনে পাঠকের মনে দ্বান্দ্বিক একটি অবস্থার তৈরি হলেও পরবর্তী পরিচ্ছেদগুলোতে গল্পের অগ্রসরণে বিশেষ জটিলতার মুখোমুখি পাঠককে পড়তে হয় না; যদিও তার অর্থ এই নয় যে এটি তরল গল্প-কাঠামোর একটি 888sport alternative link – বরং বলা যেতে পারে যে, লালসালু-তে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ প্রকৃতপক্ষে কোনো গল্পই বলতে চাননি। তিনি চেয়েছিলেন গ্রামীণ বাংলার মুসলমান সমাজটিকে চিত্র দিতে, সে-সমাজের রন্ধ্রে ধর্মীয় সংস্কারের চিত্রকে উন্মোচন করতে এবং সর্বোপরি সে-সমাজের মানুষের মননকে ধারণ করতে। মজিদ-রহীমা-জমিলার যে-গল্প তা আসলে সে-লক্ষ্য অর্জনে সামান্য অবলম্বন বৈ কিছু নয়। যদিও পরবর্তী 888sport alternative link চাঁদের অমাবস্যাতে আয়তনিক পরিমাণ বাড়লেও এতে গল্পটি হ্রস্ব হয়েছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। সরলরৈখিক গল্প-কাঠামোর বাইরের 888sport alternative link পাঠে অভ্যস্ত না হওয়াই এমন ভাবনার পেছনের কারণ। সে-কারণেই শিবনারায়ণ রায় লিখেছিলেন : ‘কৌতূহলী হয়ে যাকেই প্রশ্ন করি তিনি বলেন চাঁদের অমাবস্যা একটি দুর্বোধ্য 888sport alternative link, এটির লেখক দীর্ঘকাল যাবৎ প্রবাসী হওয়ার ফলে দেশের বাস্তব অবস্থা-বিষয়ে অজ্ঞ এবং অনবহিত, তাঁর অনাশ্রয়-কল্পনা তৎকালীন পশ্চিমি 888sport live footballের অনুচিকীর্ষু।’৫ চাঁদের অমাবস্যা বুঝতে শিবনারায়ণ রায়ের নিজের ভুল না হলেও বয়স-বিচারে তাঁর সমসাময়িক পাঠকদের চাঁদের অমাবস্যা বিষয়ে যে-মন্তব্য তা গুরুত্ববহ। ঘটনার ঘনঘটা দেখতে অভ্যস্ত বাঙালি পাঠক চাঁদের অমাবস্যা-র প্রথম পরিচ্ছেদে যেন কোনো গল্পের সূত্রই খুঁজে পাচ্ছিলেন না। যদিও একথা এখন সবাই মানেন যে, তরুণ প্রজন্ম খুব সহজেই এই 888sport alternative linkটির প্রথম পরিচ্ছেদেই একটি শক্তিশালী গল্প-কাঠামোর উপস্থিতি টের পেয়ে যায়, যা একই অধ্যায়ের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে অনন্যসাধারণ কুশলতায় বিবর্ধিত। এমন পরিমিত গদ্যে এত বিপুল ভাবনারাশির উথালপাথাল বাংলা ভাষায় রচিত আর কোনো গল্প-888sport alternative linkে হয়েছে কি? মাঝি বৌ ও কাদের প্রসঙ্গটি ঔপন্যাসিক পৌনঃপুনিকভাবে যুবক শিক্ষক আরেফ আলীর সামনে উপস্থাপন করেছেন যা একান্তই মানবোচিত, কেননা মানব-মন তো জটিল সমস্যার ব্যবচ্ছেদেই আগ্রহী। আর সে-কারণেই লেখক পঞ্চম অধ্যায়ে সে-ঘটনাটির বিশ্লেষণ করেছেন আরেফ আলীর দৃষ্টিকোণ থেকেই। এই যে পুনরাবৃত্তি, তা কিন্তু কোনোক্রমেই হুবহু নয়। শৈল্পিক দক্ষতার আঁচড়ে ওয়ালীউল্লাহ্ পুনঃপুনঃ স্থাপিত সে-বর্ণনায় অভিযোজন ঘটিয়েছেন নতুন ইঙ্গিতের – যা সৃষ্টি করেছে অপূর্বপঠিত এক একটি টেক্সট।

ভণ্ড দরবেশ কাদের যে মাঝি বৌকে গলা টিপে হত্যা করলো তার প্রত্যক্ষদর্শী আরেফ আলী যে কি-না একজন সাধারণ স্কুল শিক্ষক এবং ওই কাদেরের বাড়িতে আশ্রিত হলেও সে সত্যপ্রকাশে অদম্য। এবং ধর্মগৃধনু বাঙালি সমাজে যেমন অমোঘ পরিণতি স্বাভাবিক তেমনটিই ঘটেছে গল্পে : ওই হত্যার দায় এসে পড়েছে আরেফ আলীর ওপর। এত বেশি সমাজ-ঘনিষ্ঠ একটি কাহিনী কীভাবে যে পাঠক কর্তৃক প্রকাশপর অনাদৃত হয়েছিল, তা বুঝতে আমাদেরকে ওই বুনন-কৌশলের কাছেই আবার ফিরতে হয়। প্রথম অধ্যায়ে দুটি আলাদা আলাদা পরিচ্ছেদে একই ঘটনার ভিন্ন ভিন্ন মাত্রিক দুটি বিবরণ পাঠ করেই বর্তমান পাঠক যেন বুঝে ফেলেন ঔপন্যাসিকের অভীপ্সা এবং আরো কৌতূহলের যে দ্বিত্ব-বিবরণের সে-উপস্থাপন যে যথাযথ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ কোনোক্রমেই সে-নিশ্চয়তাতে পৌঁছতে দিতে চান না। অনিশ্চয়তার এমন ঘনঘটা বোধকরি দ্বিতীয় কোনো বাংলা 888sport alternative linkে মিলবে না। নয় পৃষ্ঠার প্রথম অধ্যায়ে অনিশ্চয়তাজ্ঞাপক ‘যেন’, ‘হয়তো’ এবং ‘মনে হয়’ ব্যবহৃত হয়েছে তেত্রিশ বার। উল্লেখ্য যে, দ্বিতীয় অধ্যায়টিতে যেখানে দাদা সাহেব কাদেরের দরবেশ হওয়ার বিত্তান্ত বলে বাড়ির শিশুদেরকে, সেখানে অনিশ্চয়তাজ্ঞাপক শব্দের কোনো ব্যবহার নেই। তৃতীয় অধ্যায়ে যুবক শিক্ষক আরেফ আলীর অনুপ্রবেশ ঘটলে তেমন শব্দরাশির ব্যবহার আবার লক্ষ করা যায়, যা প্রাবল্যে রূপ নেয় কাদের-মাঝি বৌ সম্পর্কিত ব্যাপারটির ভাবনায়। সারা 888sport alternative linkটিতে ‘যেন’ মোট একত্রিশ বার, ‘হয়তো’ মোট 888sport cricket BPL rate বার এবং ‘মনে হয়’ মোট এগারো বার ছাড়াও অস্পষ্টতাসূচক আরো 888sport app শব্দ প্রয়োগ হয়েছে যেগুলোর সামগ্রিক ফলাফলে 888sport alternative linkটি ক্রমে ক্রমে একটি পাঠক-নির্ভর টেক্সটে পরিণত হয়। 888sport alternative linkের কাহিনী সন্নিবেশে পাঠককে এত বেশি মাত্রায় স্বাধীনতা বোধকরি অন্য কোনো বাংলা 888sport alternative linkে দেয়া হয়নি। পাঠক লক্ষ করবেন কাঁদো নদী কাঁদো-তেও এমন অনির্দেশক শব্দের প্রাচুর্য : প্রথম পরিচ্ছেদেই রয়েছে পনেরোটি এবং ক্ষুদ্র তিন পৃষ্ঠার দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে এগারোটি। আর সে-কারণেই বাঁশঝাড়ের যুবতীটি যে কাদেরের হাতেই খুন হয়েছে – এ নিশ্চয়তা পেতে অষ্টম অধ্যায় এসে পড়ে। এবং নবম অধ্যায়ে প্রথম খোলসা করে বলা হয় :

আজ সকালে কাদের স্বীকার করেছে, সে-ই যুবতী 888sport promo codeর হত্যাকারী। তবে সেটি ঠিক হত্যা নয়, একটি দুর্ঘটনা। বাঁশঝাড়ের বাইরে যুবক শিক্ষকের পদধ্বনি এবং পরে তার গলার শব্দ শুনতে পেলে হঠাৎ ভয়ে দিশেহারা হয়ে সে যুবতী 888sport promo codeর গলা টিপে ধরেছিল। হত্যার উদ্দেশ্যে নয়, তার মুখের আওয়াজ বন্ধ করার জন্য। মুখ না ঢেকে গলা টিপে ধরেছিল কেন সে তা বলতে পারে না। (পৃ-১৫৩)

এবং এ-পর্যায়ে নতুন বিশ্লেষণে ঘটনাটি বিবৃত হয়। আপাত চলৎশক্তিহীন এ-ঘটনায় বারবার নতুন নতুন মাত্রাও যুক্ত হয়ে চলে। দশম পরিচ্ছেদে তেমন দুটি সংযোজন হলো : কাদের-যুবতী 888sport promo codeর সম্পর্কে প্রেম-অনুসন্ধান এবং দ্বিতীয়টি হলো যুবতী 888sport promo codeর হত্যার জন্য আরেফ আলীর নিজেকেই দায়ী করা। এভাবেই লক্ষ করা যেতে পারে যে, নতুন বিবরণ ক্রমশই পূর্ববর্তী বিবরণ থেকে এ-অর্থে অগ্রগামী যে, তাতে প্রথম রাতের ঘটনার সাথে পরবর্তী অংশও সংযোজিত। তবে একাদশ অধ্যায়ের শেষে এসে এটি স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় ‘কাদেরের পক্ষে দরিদ্র মাঝি বৌয়ের প্রতি কোনো ভাবাবেগ বোধ করা সম্ভব নয়’ (পৃষ্ঠা-১৬৮)।

দ্বাদশ অধ্যায়ে শুরুর ঘটনাটির পুনর্বিন্যাস ঘটেছে এবং তা অধিকাংশত করা হয়েছে কাদেরের দৃষ্টিকোণ থেকে। ভিন্ন কৌণিকে বিশ্লেষণে পাঠকের সামনে উপস্থিত অভিনবতর মাত্রা। কাদেরের হাতে কিভাবে যুবতী 888sport promo codeর মৃত্যু হলো তার ব্যাখ্যাসহ কেন সে মৃত 888sport promo codeদেহটিকে নদীতে নিক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেয় সে-বিবরণও সব্যাখ্যা উপস্থিত। আর এভাবেই 888sport alternative link পরিসমাপ্তির দিকে এগিয়ে যায়। আরেফ আলীকে কেন্দ্র করে চাঁদের অমাবস্যা-র এই যে কাহিনী-নির্মিত তাতে অন্তর্লোক যেমন বিবরিত, সমাজলোকও কম চিত্রিত নয়। তাই ওয়ালীউল্লাহ্র স্বনিষ্ট সমালোচক আবদুল মান্নান সৈয়দ বলেছেন:

আরেফ আলীর অন্তর্অভিযাত্রা এই 888sport alternative linkের [চাঁদের অমাবস্যা] বিষয়। তার এই অন্তর্অভিযাত্রা কি বিশ্বাস্যতার চৌকাঠ মাড়িয়ে যায়? আমার তো মনে হয় : আরেফ আলী ও তার মনোলোক-কে আবিষ্কার করেছেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্। এই আবিষ্কার কিছুতেই অক্ষিত নয় – দেশ-মৃত্তিকার সঙ্গে সম্পূর্ণ মিশ্রিত, সমাজসত্তার সাথে সম্পূর্ণ সংলগ্ন।৬

কিন্তু তা সত্ত্বেও পাঠক-সমালোচকের দৃষ্টি আকর্ষণে চাঁদের অমাবস্যা ব্যর্থ হয় কারণ :

বাংলা ভাষার আর কোনো 888sport alternative linkের সঙ্গে এর ঘটনা ও ঘটনা সংস্থানের, বিষয় ও প্রকরণের মিল খুঁজে না পেয়েই এর প্রতি গুরুত্বারোপ করা থেকে বিরত থাকেন সমালোচকরা।৭

আরো যে একটি কারণ তা হলো ঃ

সে-সময়কার অর্ধশিক্ষিত পাঠকসমাজ লালসালু-র প্রতিবাদী বক্তব্য যদি-বা গ্রহণ করল চাঁদের অমাবস্যা-র মূল চরিত্রের অন্তর্দ্বন্দ্বের অতলশায়ী গাম্ভীর্যকে হজম করার জারক তারা খুঁজে পেল না। কারণ তাঁর প্রথম 888sport alternative link থেকে দ্বিতীয় 888sport alternative linkের দূরত্ব চৌদ্দ বছরের। এই দীর্ঘ বিলম্বের অবসরে পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করে নিয়েছেন আবু রুশাদ, সরদার জয়েনউদ্দিন, রশীদ করীম, শওকত ওসমান, শামসুদ্দীন আবুল কালাম প্রমুখ লেখকেরা। এঁরা মূলত কাহিনীনির্ভর, সরলরৈখিক ও প্রথাগত 888sport alternative link নির্মাণে সিদ্ধহস্ত।৮

আর উপর্যুক্ত দুটি প্রধান কারণই পাঠককুলকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল দীর্ঘদিন, যদিও সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র তিনটি 888sport alternative linkই ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে 888sport appsের মুসলমান সমাজকেই চিহ্নিত করেছিল। তাঁর সর্বশেষ 888sport alternative link কাঁদো নদী কাঁদো-ও সে-ধারার বহির্ভূত কিছু নয়।

সর্বশেষ এই 888sport alternative linkটিতে লেখক নির্দিষ্টভাবে 888sport free bet দ্বারা অধ্যায়-বিভাজন করেননি। প্রয়োজনমতো সামান্য সামান্য স্থান ফাঁকা রেখে স্টিমারযাত্রার ভেতর দিয়ে মুহাম্মদ মুস্তফার কাহিনীটি রূপ লাভ করে। লক্ষ করা যেতে পারে, প্রথম 888sport alternative linkেও ওয়ালীউল্লাহ্ অধ্যায়-বিভাজনে একইরূপ একটি শৈলীর আশ্রয় নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় 888sport alternative linkে তিনি প্রথাগতভাবে ষোলোটি অধ্যায় ভাগ করলেও তা নিয়ে যে তিনি সন্তুষ্ট নন, সেটি স্পষ্ট হয় প্রথম অধ্যায়েই। প্রথম অধ্যায়টিতেই সামান্য ফাঁকা রেখে দুটি আলাদা পরিচ্ছেদমতো তৈরি হয়েছে, যেমনটি আরো লক্ষ করা যায় দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ অধ্যায়গুলো।

কাঁদো নদী কাঁদো-র প্রথম পরিচ্ছেদটি থেকেই পাঠক ইঙ্গিত পেয়ে যান একটি গল্পসূত্রের, যদিও নবম পৃষ্ঠাতে এসে মূল চরিত্র মুহাম্মদ মুস্তফার প্রসঙ্গ উপস্থাপিত হয় যা আরো পরে মূল কাহিনীর নতুন একটি ধারা নির্মাণ করে, যা থেকে স্পষ্ট হতে থাকে প্রথম পরিচ্ছেদের গল্পসূত্রটি প্রকৃতপক্ষে মূল গল্প নির্মাণের একটি পরিপ্রেক্ষিত। পূর্ববর্তী 888sport alternative link চাঁদের অমাবস্যা-তেও প্রথম পরিচ্ছেদটি একটি গল্পের সন্ধান দিয়েছিল এবং সে-প্রসঙ্গে বলা চলে, প্রথম 888sport alternative linkেই, অন্তত কথামুখ পর্যায়ে, ঔপন্যাসিক দুর্বোধ্য ছিলেন কেননা লালসালু-র প্রথম পরিচ্ছেদটি কোনো গল্পের সন্ধান দেয় না এবং সে-অর্থে লালসালু-র শুরুর অংশটি অন্য দুটি 888sport alternative linkের উন্মোচন পর্বের তুলনায় জটিলতর। তবে কাহিনী-অগ্রসরণে লালসালু দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ থেকে যে সহজতাতে বিস্তারিত, দ্বিতীয় ও তৃতীয় 888sport alternative linkে তা ক্রমশ জটিলতর। কিন্তু কাঁদো নদী কাঁদো কেন অমনোযোগী পাঠকের বিরূপতা পায় তার উৎস হয়ত এর দ্বি-কথক পদ্ধতিতে অনুসন্ধান করা চলে। বারবার কথক পরিবর্তন এবং কাহিনীসূত্রের অতীত-বর্তমানের পুনর্বিন্যাসকরণের ফলেই পাঠক কখনো কখনো খেই হারিয়ে ফেলেন অনবধানবশত।

888sport alternative linkটির কাহিনী বিবৃত হয়েছে দুজন কথকের বয়ানে। ‘আমি’ সর্বনামের কথককে প্রথমে স্বয়ং লেখক বলেই পাঠকের মনে হয়, যদিও আসলে সে মুহাম্মদ মুস্তফার চাচাতো ভাই। এই ‘আমি’ মুস্তফার সব ব্যাপারে জ্ঞাত হলেও নিজে একটি চরিত্র হিসেবে প্রকাশিত হয়নি। পুরো কাহিনী ‘আমি’র বয়ানে উপস্থাপিত হলেও তার সাথে ওতপ্রোতভাবে আরো যে-একটি বয়ান মিশ্রিত হয়েছে সেটি তবারক ভুইঞার, যার সাথে মুস্তফার যোগাযোগ ঘটেছিল কুমুরডাঙ্গায় ছোট হাকিম পদে মুস্তফার যোগদানের পর। মুস্তফার শৈশব থেকে আত্মহত্যা পর্যন্ত ঘটনাংশগুলো সম্পূর্ণতই বর্ণিত হয়েছে ‘আমি’র কথনে; অন্যদিকে সে-ঘটনার সঙ্গে সংস্থাপিত কুমুরডাঙ্গা এবং তৎসংলগ্ন জনপদের দীর্ঘ ইতিহাস সন্নিবিষ্ট হয়েছে তবারকের বর্ণনাতে। তবারক একবারও মুস্তফার কথা না বললেও ‘আমি’ বলেছে তবারকের সাথে মুস্তফার দেখা-সাক্ষাৎ-কথাবার্তার কথায়। ‘আমি’ এবং ‘তবারক’ দুজনই বারে বারে সর্বজ্ঞ লেখকের অবস্থানে চলে আসে। মুস্তফার অবচেতনের বিবরণ দিতে গিয়ে আমি এবং কুমুরডাঙ্গার মানুষজনের ভাবনার পরিস্ফুটন ঘটানোর কালে তবারক এমন ভূমিকায় অবতীর্ণ।

মুহাম্মদ মুস্তফার কাহিনীর সমতলে প্রতিষ্ঠিত কুমুরডাঙ্গার জনপদের কাহিনী, যার কেন্দ্রবিন্দুতে বাকাল নদীর কান্না স্থিত। নদীর সে-কান্না ব্যক্তি থেকে ক্রমশ ব্যক্তি-নির্বিশেষের দিকে এগোয়। মাইনর স্কুলের শিক্ষিকা সকিনা খাতুনের শ্রবণ দিয়েই এ পর্যায়ের উদ্বোধন। তারপর তা জনান্তরে একে একে মিহির মণ্ডল, বৃদ্ধ ঈমান মিঞা, রুকুনুদ্দিনের স্ত্রী, মুদিখানার মালিক ফনু মিঞা, জনতুন বিবি, মধ্যবয়সী উকিল সুরত মিঞা, স্কুলের হেডমাস্টার, জয়নাব খাতুন হয়ে করিম বক্স পার হয়ে প্রকৃতপক্ষে পুরো জনশ্রবণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর এভাবেই সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ তাঁর 888sport alternative linkের আলেখ্যকে ব্যক্তি থেকে নৈর্ব্যক্তিকতায় রূপ দিয়েছেন, যা যে-কোনো মহৎ 888sport live footballিকের কাছে প্রত্যাশার; কেননা 888sport live football তো সর্বোপরি ব্যক্তিক কোনো বিষয় নয়, তা সামগ্রিক, সর্বজনের। এমন এক যৌথ-শ্রবণের দিকে না এগোলে তা সকিনা খাতুনের আখ্যান৯ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থেকে 888sport alternative linkকে খুব কৌশলে ওয়ালীউল্লাহ্ রক্ষা করেন। আর তারই পরিণতিতে 888sport alternative linkটি সমগ্র মানবজাতির প্রতি লেখকের আহ্বানের রূপক হয়ে পড়ে। যেমনটি সৈয়দ শামসুল হক নির্দেশ করেছেন : ‘যেন একটি মিনতি তিনি করেন, মানুষ তুমি মানুষের জন্যে কাঁদো’।১০

এবার অন্য একটি বিষয়ের প্রতি পাঠককে ইঙ্গিত করতে চাই। 888sport alternative linkের শেষ পর্যায়ে আমরা জানতে পারি খোদেজার আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়ে মুহাম্মদ মুস্তফা কথক ‘আমি’ তার চাচাতো ভাইকে প্রশ্ন করেছিল সে এ-বিষয়ে কি ভাবে অর্থাৎ সেও কি ভাবে খোদেজা আত্মহত্যা করেছিল? অর্থাৎ এই ‘আমি’র উত্তরটি মুস্তফার কাছে ছিল অত্যন্ত গুরুত্বের। এ-কারণেই কি ঔপন্যাসিক মুস্তফার আখ্যান বলার দায়িত্বটি ঐ ‘আমি’তেই ন্যস্ত করেন? এবং সুকৌশলে ঔপন্যাসিক ‘আমি’র এই অবস্থান 888sport alternative linkের দীর্ঘ বর্ণনাকালে অনুল্লিখিত রাখেন। যেমনভাবে সে-প্রশ্নে ‘আমি’র উত্তর, ‘কি করে বলি? আমি তখন বাড়ি ছিলাম না’ (পৃ-৩৫৫)। ক্রান্তিলগ্নে 888sport alternative linkটিতে নতুন ইঙ্গিতের সূচনা করে যার চূড়ান্ত পরিণতি হলো মুস্তফার আত্মহত্যা। শুধু তাতেই আবার ওয়ালীউল্লাহ্র মতো কথাকার পরিতৃপ্ত নন। আর সে-কারণেই মুস্তফার আত্মহত্যার নেপথ্যের কারণ-নায়ক হিসেবে ‘আমি’ দগ্ধ :

… তার প্রতি কখনো এমন ক্রোধ বোধ করিনি। ক্রোধ বোধ করেছিলাম এই দেখে যে খোদেজা আত্মহত্যা করেছে তেমন একটা বিশ্বাস হলেও মুহাম্মদ মুস্তফার মনে একটু অনুতাপ নয়, মৃত মেয়েটির প্রতি ঈষৎ স্নেহমমতা নয়, সামান্য বিয়োগ-শোক নয়, নিদারুণ-ভীতিই দেখা দিয়েছে। হয়তো তাও সহ্য হতো যদি সরলা নিষ্পাপ খোদেজা তার চোখে একটি প্রতিহিংসাপরায়ণ দুটি আত্মায় পরিণত না হতো। তা কিছুতেই সহ্য হয়নি। বোধ হয় সে-জন্যেই সত্য কথা বলা সম্ভব হয়নি।

তবু বলতাম যদি জানতাম সত্য না বললে কী পরিণতি হবে, যদি বুঝতাম ইতোমধ্যে মুহাম্মদ মুস্তফা একটি অতল গহ্বরের প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে (পৃ-৩৫৫)।

এমন চূড়ান্ত ইঙ্গিতের ভেতর দিয়েই কাঁদো নদী কাঁদো-র পরিসমাপ্তি এবং নিজের ব্যক্তিক পাঠকে উদাহরণ ধরে সহজেই বলা চলে তা আসলে 888sport alternative linkটিতে প্রবেশের দ্বার-উন্মোচক মাত্র। নদীর কান্না যেমন করে কুমুরডাঙ্গার মানুষের কানে নিয়ত শ্রব্য, তেমনি 888sport alternative linkজুড়ে খেলে যাওয়া রহস্যরাশি পাঠকের করোটিতে প্রতিধ্বনিময়, প্রতিদ্যুতিময়। আর সে-ধ্বনি আর দ্যুতির উৎস অনুসন্ধানে পাঠকের নতুন অভিযাত্রা অবশ্যম্ভাবী।

মনোযোগী পাঠে লক্ষ করা যায়, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ তাঁর প্রথম 888sport alternative link থেকেই বিষয়বস্তুকে যেমন সমাজ ও মানুষের ঘনিষ্ঠে রাখতে চেয়েছেন তেমনি সেসবের সন্নিবেশন ঘটিয়েছেন চিন্তাউদ্রেককারী, আলস্যনিরোধক এক আখ্যান-কাঠামোয় – যার সহযোগী তার বহুমাত্রিক ও ব্যঞ্জনাময় ভাষা। নিজের শৈল্পিকবোধের পরিণতির সাথে সাথে তাঁর প্রকাশ হয়ে উঠেছে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম। প্রথম দুটি 888sport alternative linkের রচনাকালের বিশাল দূরত্ব সে দুটির বোধ ও শৈলীর বিপুল পার্থক্যের কারণ দ্বারা সূচিত। শেষ দুটিতে সে-পার্থক্যের মাত্রা তত অধিক নয় যেহেতু ঔপন্যাসিক তাঁর বিনির্মাণগত পরিণতিতে আকাশ-পাতাল ফারাক করতে পারেননি। তবে শেষ দুটি 888sport alternative linkে তিনি যে-মাত্রাবোধের স্বাক্ষর রেখেছেন তার তুলনা বাংলা ভাষায় রচিত 888sport live footballে মেলা ভার। ওয়ালীউল্লাহ্র 888sport alternative link প্রসঙ্গে ধুর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (১৮৯৪-১৯৬১), সতীনাথ ভাদুড়ী (১৯০৬-১৯৬৫) বা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (১৯০৮-১৯৫৬) নাম যত সাড়ম্বরেই উচ্চারিত হোক না কেন, এমন সিদ্ধান্ত আজ সর্বজনস্বীকৃত হওয়ার পথে যে – কথা888sport live footballে অভিরূপ অর্থচ্ছটা সম্ভবত আর কোনো বাঙালি ঔপন্যাসিক সৃষ্টি করতে পারেননি। 888sport appsের 888sport alternative linkে তো নয়ই, সমগ্র বাংলা ভাষার 888sport alternative link-পরিমণ্ডলেও নয়।

তথ্যসূত্র

১.             সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ ও নিঃসঙ্গ নায়ক’, সমকালীন বাংলা 888sport live football, এশিয়াটিক সোসাইটি, 888sport app, ১৯৮৯, পৃ-১৫৮।

২.            রশীদ করীম, ‘সমসাময়িকের চোখে : ‘লালসালু’, আর এক দৃষ্টিকোণ, বাংলা একাডেমী, 888sport app, ১৯৮৯, পৃ-৬৬।

৩.            লালসালু 888sport alternative linkে তিন ধরনের ভাষারীতির প্রয়োগ-বিশ্লেষণ করেছেন মনসুর মুসা তাঁর ‘লালসালু : ভাষারীতি’ 888sport liveে লালসালু এবং ওয়ালীউল্লাহ্, সম্পা: মমতাজউদ্দীন আহমদ, 888sport app, ১৯৮৯।

৪.            আলী আনোয়ার, ‘888sport appsের 888sport alternative link : থীম ও ফর্ম’, সমকালীন বাংলা 888sport live football, প্রাগুক্ত, পৃ-১২৮।

৫.            শিবনারায়ণ রায়, ‘ঔপন্যাসিকের বিবেক ঃ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্’, প্রতিক্ষণ, কলকাতা, শারদীয় ১৩৯১ বঙ্গাব্দ, পৃ-২৫।

৬.            আবদুল মান্নান সৈয়দ, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, 888sport app, ২০০১, পৃ-৬৪।

৭.            সৈয়দ আবুল মকসুদ, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র জীবন ও 888sport live football, 888sport app, ১৯৮১, পৃ-১১৭।

৮.            সৌদা আখতার, ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র চাঁদের অমাবস্যা’, 888sport live football পত্রিকা, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়, তেত্রিশ বর্ষ প্রথম 888sport free bet কার্তিক, ১৩৯৬, পৃ-৯৪।

৯.            রুশতী সেন, ‘কান্না মরণের তৃষ্ণা জীবনের’, পরিকথা সম্পা: দেবব্রত চট্টোপাধ্যায়, চতুর্থ বর্ষ, দ্বিতীয় 888sport free bet মে ২০০২, পশ্চিমবঙ্গ, পৃ-১২৫।

১০. সৈয়দ শামসুল হক, ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ : একটি 888sport apk download apk latest version নিবেদন’, সমকালীন বাংলা 888sport live football, প্রাগুক্ত, পৃ-১৬৮-১৬৯।