সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের অজ্ঞাতবাস

শহীদ ইকবাল
আমাদের অন্যতম কথা888sport live chatী কায়েস আহমেদ মত দেন : ‘অভিজ্ঞতা রূপান্তরিত হয় উপলব্ধির সারাৎসারে, উপলব্ধি লেখকের চেতনায় আনে নৈর্ব্যক্তিকতা, এই নৈর্ব্যক্তিকতাই বাস্তবের উপরকার সমস্ত বায়বীয় আবরণকে ছিন্ন করে দেয়।’ আর উল্ফ লেখেন ‘the proper stuff of fiction’ does not exist; everything is the proper stuff of fiction, every feeling, every thought;
every quality of brain and spirit is drawn upon; no perception comes amiss.’
এগুলো প্রয়োজনমাফিক জ্ঞান করে 888sport alternative link পড়লে তার পাঠ-আন্তরপাঠে চিনিয়ে নেওয়া সম্ভবপর হয় – 888sport live chatসন্নধ্য সমাজ, তার বিবর্তমান কাঠামো এবং এর অন্তস্তলের প্রশ্বাস; বর্ণময় আবেগের শ্বাস, কষ্টক্লিন্ন কণ্ঠস্বরের ক্লান্ত করুণা আর উপেক্ষিত অনিবার্যতার বিশ্বাস-অবিশ্বাসের তৎ-সম্ভূত দায় প্রতিশ্র“ত পায়। ভেতর-প্রাসাদে গুঞ্জন ওঠে এবং নির্ধারিত উৎকণ্ঠার উপচারে যুক্ত হয় স্বপ্ন-দুঃস্বপ্নের বিষাদ-বিদীর্ণ আবর্তসমূহ। পড়ে যাই ‘আমি’-কথনের 888sport alternative link, এই প্রযুক্তিবিশ্বে, দাপুটে ব্যক্তিতাপিত সমাজের প্রতœ-হলুদ বিভাসিত দীর্ণতার উপল উন্মূল সমস্যাসমূহ। উপস্থাপিত, উত্থাপন সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ (১৯৩০-২০১২) – সদ্যপ্রয়াত এক দারুণ দুর্দমনীয় কথক। কোনো হার নেই তাঁর, কুঁদিয়ে বের করেন সমস্যার ভেতরের সমস্যা আর ওই বেশভূষা-রহস্য, রহস্যময়তা, রহস্যই তো জীবনের শেষ কিনারা! অন্ধিসন্ধিতে তার গূঢ় প্রলাপন, দ্বান্দ্বিক দোলায় কঠোর রাজনীতি, কিন্তু মধ্যবিত্ত জীবনের স্বাদে তার অভীপ্সিত উল্লেখ। অনেক লেখায় প্রধান তাঁর অলীক মানুষ আর রাণীরঘাটের বৃত্তান্ত, প্রায় দেড়শ নভেল আর শ-তিনেক গল্পের মধ্যে অনিবার্য বিবেচ্য হয়ে ওঠেন, বাংলাভাষী উষ্ণ অঞ্চলের শিক্ষিত পাঠককুলের কাছে। কিন্তু কীভাবে তাঁর চিন্তন-কাঠামো প্রস্তুত? কোন প্রতিবেশে তার অভিজ্ঞতা পলে পলে প্রকট প্রসন্নতার দায়ে উৎপন্ন! তাঁর জন্ম মুর্শিদাবাদে, জীবনের উত্তাপে যোগ লোকনাট্যসংস্কৃতি, ভ্রামণিক প্রয়াসে বৈচিত্র্যময় জীবনের দ্বন্দ্ব, বেছে নেন গল্পকে – বিন্যস্ত গল্পভাষ্যের দায়কে – ‘নতুন বাস্তবতার অভিজ্ঞতা লেখকের চৈতন্যকে কিভাবে মথিত করছে তার সারাৎসার লেখকের চেতনায় নৈর্ব্যক্তিকভাবে ধরা পড়লেই এই বাস্তবতা তার স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করবে’ – এমন সত্যকথনে। এই কথনদায় কথা888sport live chatীর। ছিন্ন জীবনের। অতুল অভীপ্সিত প্রাণনার। জীবনের জন্ম-মৃত্যু উৎসবের ভেতরে। পাড় বেয়ে চলা জীবনের ক্রান্তি-কলরোলে। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ এক অজ্ঞাতবাসের কথক। সমগ্র রচনায় অজ্ঞাতবাসী। এ অজ্ঞাতবাসের আড়ালে কী তাঁর জীবনবঞ্চনা বা বাঞ্ছিতধ্বনি, কীভাবে তার ভেতরের পাড় ধসে পড়ে, কোন প্রতিজ্ঞা তৈরি হয় আর তা শুধু প্রতিজ্ঞায় না বর্তিয়ে জীবনের অপার মুহূর্তসমূহকে দুর্মর করে তোলে কীভাবে, কীভাবে সবটুকু দৃঢ়মূলে পৌঁছায়, রসবোধে পূর্ণময় হতে চায়, কাক্সিক্ষত প্রবারণা ছিনতাই করে, ছিনিয়ে নেয় মিহির (দেবুমাস্টার), শচীন বা শ্রীর কল্যাণমুখী জীবন – এসব উত্তর প্রতি-উত্তরগাথা তাঁর রচনা। কিন্তু অতঃপর আরও তা ক্রুয়েল, জটিল-জীবন্ত। 888sport live football আর বাস্তবতা নিয়ে কায়েস আহমেদের মতো যেটুকু তুলে আনা চলে মুস্তাফা সিরাজের অজ্ঞাতবাস বা রাণীরঘাটের বৃত্তান্ত তার চেয়েও ততোধিক বিষাদ-বিভঞ্জনরত, আধুনিকতাবাহী, উন্মূল, উঞ্ছবৃত্তির ফ্যাকাশে রঙে অনেক দূরগামী। বিস্তর রঙে বহুবর্ণিল, যথাস্থিত।

দুই
888sport alternative linkটি অজ্ঞাতবাস, তার অজ্ঞাতবাসী ‘আমি’ কথকরূপে মিহির। খুব ‘প্রচ্ছন্ন’ নাম এ কাহিনির। শ্রেণিতে তার অবস্থান মধ্যবিত্তরূপে, প্রমাণটি তার কথক-বিবরণে ‘শ্রীকে আমি গান শেখাতুম। তখন গাঁয়ে-গাঁয়ে আমি আইবুড়ো মেয়ে আর গানপাগলা পুরুষ মানুষদের গান শিখিয়ে বেড়াই। সবাই বলে মাস্টার। সবাই ভালবাসে, ভক্তি করে, ভাবে – এই লোকটির মধ্যে কোনো পাপ নেই। আমার অনেক পাপ ছিল। ওরা কেউ জানত না।’ প্রারম্ভিকায় নায়ক ‘কুশলে’ এ-উচ্চারণের একটু আগে এ-চরিত্রের পটচিত্রটি আরও আকর্ষণীয়, বস্তুত সেই পরিবেশটি ‘ফিউডাল থ্রেসঔলডে’ – চিহ্নিত উত্তাপটি তলানি পর্যন্ত পৌঁছায়, দাঁড়াতে চায় ওই চরিত্রের দুরন্ত দার্ঢ্য,ে গতি রক্ষিত তাতে, জীবনের পেছনফেরা বা পাশফেরা সামূহিক প্রবর্তনায় একরকম ঈপ্সিত ইঙ্গিত দিয়ে, অতঃপর প্রকট আর পরিচ্ছন্ন সংবাদ যেন :
ঈশানদেবের মন্দিরের সামনে তেরো একর বাঁজা ডাঙায় কেউ কেউ ফসল ফলাবার চেষ্টা করেছিল। পারেনি। খরচায় পোষাত না। পাশের দীঘির জল পাম্পে তুলে ওই রুক্ষ কাঁকুরে জমিকে রসবতী করা রীতিমতো একটা সরকারী প্রকল্পের কাজ। ওদিকে সারের দাম যা বেড়েছে, তাতে উর্বরতা শেষঅব্দি স্বপ্নই হয়ে ওঠে।
এ-বিবরণের পর প্রাসঙ্গিকভাবে সরকারি তহশিলদার সদাব্রতর কথা আসে। যিনি কাহিনি-উৎসের কেন্দ্রে, নায়িকা শ্রীলতার বাবা। উপর্যুক্ত অংশটিতে গুরুত্বের অধিকারী তিনি – সদাব্রত। কথকশৈলীতে প্রকটরূপে দৃশ্যমান ঈশানদেবের ওই মাটি। লেখক রুক্ষ-কর্কশ রুদ্র জীবনকে তুলে আনেন তাতে। ‘ঈশানদেবের সেই বাঁজা মাটিতে অনেক বছর পর সেবার সরকারি চেষ্টায় মেলা বসল। আসলে কৃষি প্রদর্শনী একটা। বিশ পঁচিশ বছর আগে জমিদারি আমলে অবশ্য বরাবর মেলা বসত। জমিদারি উচ্ছেদের পর উঠে যায় স্বভাবত। চাষবাসের চেষ্টা হয়। তারপর অবশেষে মেলার কথা মাথায় আসে গ্রামনেতাদের।’ এই মেলাও কাহিনির অন্যতম উপপাদ্য। প্রসঙ্গত মনে পড়ে লেখকের অন্য গল্প রাণীরঘাটের বৃত্তান্তের কথা। দাঙ্গা-উত্তর কিছু উন্মূল মানুষের কঠোর-কঠিন আখ্যান। যেখানে সামাজিক মূল্যবোধ, বিধিবদ্ধ প্রচলিত সংস্কার আর অমোঘ সৃষ্টিশীল জীবনের প্রবৃত্তিগত প্রণোদনা দ্বন্দ্বে লিপ্ত। দ্বন্দ্বটুকু ভেতরের। এক জন্মপরিচয়হীন বালক সবার ভেতর দিয়ে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠলেও ভেতরে অন্তরের দহন ভস্মাচ্ছাদিত, তাতে করুণার পাশাপাশি ভয়, ভয়ের প্রহরা বাড়তে থাকে, বসতভিটার সকলেই কঠিন সত্যের মুখোমুখি পড়ে, চাপা উত্তরহীন জীবনে বাইরের বাস্তবে অন্ধকার-শঙ্কা নেমে আসে, সরকারি লোকেরা এসে বসতি-স্থাপনা উৎপাটনের সিদ্ধান্ত জানায়, দিশেহারা হলেও প্রতিবাদী কণ্ঠ চাপা পড়ে যায়, কিন্তু শঙ্কাহীন বিদ্রোহের প্রতীকরূপে একজন-দুজন দাঁড়ালেও নিরুত্তর সমবেত সকলেই স্তম্ভিত – এরূপ ফিকশানে খুব প্রসঙ্গময় লোকবাণী প্রতিধ্বনিত হলে, অঞ্চলের ভূমি-মাটি-জল-রোদ-বৃষ্টি-জ্যোৎøা আরও অর্থদ্যোতক হয়ে শোভময় রূপকে ‘সুঃযড়ং’ প্রতিজ্ঞাদ্যোতক, ক্যানভাস স্বরূপবীক্ষা পায়। বস্তুত গল্পের দুটো জিনিস আকর্ষণজ্ঞাপক. কর্কশ, রুদ্র ভূমিতে একদল ভূমিহীন মানুষের উন্মূল সংস্কৃতির দ্বন্দ্বময়-রূপ – যা আঞ্চলিক প্রান্তবর্তী প্রতিবেশ-সংস্কৃতি অনুষঙ্গী, অন্যটি প্রবৃত্তির ভেতরে প্রশ্নবিদ্ধ সংস্কার ও মূল্যবোধ। দুটো বিষয় দুর্লভ নন্দনে বিধৃত সমগ্রতায় অসামান্য হয়ে ওঠে। ঠিক এতে লেখক-দস্তুর চিনে ফেলা যায়। বীরভূম-মুর্শিদাবাদের মাটির আনুবীক্ষণিক বাস্তবকে নগ্নতার-নন্দনে অপূর্ব করে তুলতে সক্ষম হন। আঞ্চলিক প্রকৃতিও নির্ধারিত গল্পভাষ্যের চরিত্র হয়ে উঠেছে। গভীর মমতায় বেঁধেছেন সময়ের সাক্ষ্যসমূহ। তাতে শুধু কাহিনি নয়, প্রান্তিক জীবন-সংগ্রাম কিংবা তার ভেতরে অনুসৃত মানুষের চিন্তন-স্বপ্নও ধ্রুপদী মর্যাদা পায়। অজ্ঞাতবাসেরও উল্লিখিত উদ্ধৃতিটি আমাদের প্রান্তজনের কীর্তিকথার বা তার ভেতরের সংগ্রামের রোরুদ্যমান আখ্যান। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ প্রান্তবর্তী মানুষকেই মুখ্য করেন, আর সেটি কোনো বিশেষ অংশে নয়, পূর্ণাঙ্গমাফিক অনিবার্যতায় দুর্লভ-বীক্ষণে। মেলার উদ্ধৃতি, তার ভেতর দিয়ে মূল-কাহিনিতে প্রবেশ :
মেলা – তাই সার্কাস এল, ম্যাজিক এল, ভ্যারাইটি শো-পার্টি এল, এল অজস্র দোকানপাট। পাঞ্জাবিরা এল তাঁতের চাদর নিয়ে। এল পাহাড় এলাকা থেকে আদিবাসী বা উপজাতীয় লোকেরা – মরা গিরগিটি শিলাজতু, লাল নীল পাথরের মালা, শঙ্খচূড় সাপ নিয়ে। এল বিস্তর শহুরে মাস্তান। জুটল চারপাশের মাতাল সম্প্রদায়। এল কপাটওয়ালা, তক্তপোশওয়ালা। লোহালক্কড় নিয়ে এল শহরের হার্ডওয়্যার স্টোর্স। এল গাধার পিঠে জাঁতা নিয়ে পাহাড়ী জাঁতাওয়ালারা। মেলা – তাই সব পণ্য আসে। এল।
ঈশানপুরের মোটামুটি শান্ত নির্জন জীবন টগবগ করে ফুটতে থাকল, যেন কী এক আশ্চর্য খাদ্য তৈরি হতে চলেছে। সবার মুখে লোভ। রক্ত অস্থির। সবাই হাত বাড়িয়ে আছে।
নাগিন বাঁশি বাজে। ড্রাম ও কার্নেট বাজে। কোলাহলে সমুদ্রের শব্দ জাগে। মধ্যরাতের ঘরেফেরা মাতালের গলায় কাঁপা কাঁপা গানের সুরে ক্লান্তি ঝরে। ঘুম আসে না। মেলা থেকে ফিরে খাওয়াদাওয়া সেরে দরজা বন্ধ করে দিই। শুয়ে পড়ি। সারাক্ষণ কান পেতে থাকি, যেন চুপিচুপি শ্রী এসে দরজায় চাপা শব্দ তুলবে। সে আসবেই, আসতে হবে তাকে।
পরের স্তবকে ঘনীভূত আকর্ষণ, কাব্যময় মনোবীক্ষা, চমকপ্রদ ও আকর্ষণীয় :
মেলার পঞ্চম রাতে আমার দরজায় শব্দ শুনলাম…, জানালা দুটো খোলা ছিল। বাইরে ধবধবে চৈত্রের জ্যোৎস্না বাগানে ঘন ছায়ার পায়ের কাছে অনেক জ্যোৎস্না পড়ে আছে প্রণতা দেবদাসীর মতো! বাতাস বইছে উদ্দাম। দরজায় এবার অস্থিরতা…
কাহিনিটুকুতে এবার শুরু হয় ভবঘুরে জীবনের 888sport sign up bonusচারণ, কাক্সিক্ষত শ্রীর বদলে বিপ্লবী শচীনের অতর্কিত অনুপ্রবেশ। মধ্যবিত্ত আশঙ্কা-অনুরাগ-ভয়-দ্বিধার প্রভূত সংযুক্তি। তাতে রাজনীতির প্রচ্ছদ বাড়তি মাত্রা। যেভাবে শুরু হলো সে ধাতটুকু ক্রম-প্রতিসরণে কথকের (মিহির/দেবুমাস্টার) ভেতর দিয়ে ‘বুর্জোয়া বিলাসী’ মধ্যবিত্ত সৃজিত হয়। তাতে প্রাচুর্যময় মধ্যবিত্ত, কাহিনির ফাঁদে তার নির্মিতি ও প্রসার। কাঠামোটি জুৎসই ভিত্তি পেয়ে হয়ে ওঠে সম্মুখগতিমান। চেনা যায় স্বতন্ত্র স্বরের কথককে। অন্য বয়ানের প্রতিকৃতিও মুঠোতে আটকায়। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ বিবরণকৃত মাটিকে তাঁর অভিজ্ঞ চোখে জীবনসংবদ্ধ করে গড়তে থাকেন, বুঝে নেন এর পশ্চাৎ ইতিহাস, একইসঙ্গে ওই তরঙ্গের প্রতœ-মন। বাংলা ভাষা-সংস্কৃতির রূপটি তাঁর দস্তুর। লোকনাট্য, লোকদল, লেটো – বর্ধমান-বীরভূম-মুর্শিদাবাদ – সে ভূমির লালচে কর্কশতায় কাতর-কুণ্ঠিত আঞ্চলিক জনজীবন। সেটির অলীক রূপ তো শ্রেষ্ঠ অলীক মানুষে। তা যেন ছাপিয়ে চলে প্রাত্যহিক বিচিত্র কারুবাসনায়, চিহ্নিত সন্নধ্য দ্বৈরথ-সমরে – ভেতরে-বাহিরে। মুস্তাফা সিরাজ শুধু মাটিগন্ধী নন, রং ও রূপগন্ধীও। সূক্ষ্মতর অনেক বিরল বিষয়ের টান আসে ভেতর থেকে, যেখানে জন্ম-মাতৃত্ব-ভূমিহীন উন্মূলতার ক্রন্দন কঠোরশীল। সামন্ত ভঙ্গুর সমাজের পরবর্তী স্তরে পৌঁছে একান্নবর্তী পরিবারের দশা, তার আর্থনীতিক উৎপাদন, উৎপাদন-সম্পর্কের মধ্যে পুঁজির দাপট, ব্যক্তির স্তরান্তর, জন্মহীন জীবনের জন্মদাগ, পরিচয়হীন জন্ম-যন্ত্রণা, প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা, কূলভাঙার চাপে অন্যকূলের গড়ন-বীক্ষা, এক ঘাট থেকে অন্য ঘাট, এক জীবন থেকে অন্য জীবন, এক স্থান থেকে অন্য স্থান, এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চল – ব্যাপক জীবন-পরি888sport free betনগুচ্ছ আনন্দময় হয়ে সিরাজ-কথনে ধরা পড়ে। টানা যায় অজ্ঞাতবাসের ওইরূপ 888sport live chatময় উদ্ধৃতি :
(ক) আজ আমার আরেক শিকার সদাব্রতের মেয়ে শ্রী। শ্রীকে পুড়িয়ে মেরে আবার যাব অন্য কারও খোঁজে। এই আমার জীবন, প্রতিহিংসার নেশা, কিংবা অসহায়তার যন্ত্রণা। সেই পরশপাথর খোঁজা লোকটার মতন – যে কখন অজ্ঞাতসারে পেয়েছিল পরশপাথর এবং ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল…
(খ) প্রেম ঘৃণায় শেষ হতে পারে, অনেক শ্রেষ্ঠ আকাক্সক্ষাও এক-সময় ফিকে হয়ে যায় – কিন্তু প্রতিহিংসা? সে অমর। তুমি জানো, মানুষের ইতিহাসে একমাত্র প্রতিহিংসাই যুগ যুগ ধরে বংশ পরম্পরায় বেঁচে থাকতে পারে? এ শুধু আদিম মানুষদের নিছক রীতি নয় – সভ্যমানুষেরও রক্তের ধর্ম। কখনও এই প্রতিহিংসাবৃত্তি জাতিগত হয়ে ওঠে।
(গ) আমার মনে পাপ ছিল। সেই পাপ নিরন্তর গরগর করত গুহায় বন্দি জন্তুর মতন…
888sport live chatের এ আনন্দপাপ সম্পর্কে কিছু পাঠ এক্ষণে তুলে নিই :
(ক) To adopt the serious, passionate, alive form of literary study and of a sociological enquiry to become the moral historian of his time by analysis and exact psychological investigation and to assume the duties and methods of scientific workmanship.
(খ) A novel does not cover the whole life but a notable happening in life, of a kind which has made life reveal itself in a brilliant form, despite the formal spatial limits.
(গ) The object of this study of narrative art is not to set a new vogue, in either literature of criticism, but to provide an antidote to all narrow views of literature, ancient or modern.
সমাজতাত্ত্বিক অনুসন্ধান, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ, মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ সামগ্রিক জীবনধর্ম 888sport alternative linkে পরিকীর্ণ হয়ে উঠলে ‘sacred myth, folktale, epic, romance, legend, allegory, confession, satire’ সবকিছু সংগ্রামী সম্ভাবনায় তৎপর হয়ে ওঠে। উপর্যুক্ত অনুসন্ধান-তত্ত্ব সেদিকটিই ইঙ্গিত করে। ‘নোটাবল হ্যাপেনিং’ বা কথন বর্ণনারত প্রতিষেধক তো ওইরূপ সমগ্রতার আধারে (পুরাণ-রোমান্স-রূপক প্রভৃতি) পরিস্রুত হতে থাকে। ঈশানদেবের মন্দিরের ১৩ একর বাঁজা ডাঙার সংস্কারে ছিল ‘চষতে গেলেই অভিশাপ লাগে। সংসারে অনর্থ ঘটে যায়।’ আরও নিষ্ঠুর ও বাস্তব সত্য অমোঘ হয়ে আছে তার মধ্যে : ‘হেমলতা কেঁদে ফেলেছিলেন। সে বছরই ওঁর একটি বাচ্চা এসেছিল পেটে। কিন্তু পৃথিবীর আলোহাওয়া পাবার আগেই শেষ হয়ে যায় তার কচি জীবন।’ সংসার আর জীবনের এ প্রতœ-সংস্কারের ভেতরে আরও একটি ধারণা শ্রীমতীর মধ্যে বিবৃত : ‘ওই মাটির তলায় পাথর আছে। পাথরের তলায় আছে আগুন।’ গভীর স্পর্শকাতর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট বলিষ্ঠ আভাটুকু সমাজ-ভূমি ছাড়িয়ে পূর্ব-প্রজন্মের ইতিবৃত্তকে পরা-অভিজ্ঞতার আঁচড়ে বন্দি করে ফেলে। অজ্ঞেয় আদেশটুকু জ্ঞেয় পরাকাষ্ঠা পেলে পূর্বাভিজ্ঞতা সংহতরূপে সমাজ-পরিবার-ব্যক্তিতে আবদ্ধ হয়। যেটি সদাব্রতের মনস্তত্ত্ব, তার জ্ঞান-নৃবিশ্বাস বর্তমানে জারিত হয়ে পুনর্গঠিত হয় ‘to adopt the serious, passionate, alive’ ‘পাথরের তলায় আছে আগুন’ – কাঠিন্য-অনুষঙ্গে ভয়, টেলার সেটি প্রবিষ্ট করে দেন কাহিনির ভিত্তিভূমে। জীবনের পরতে স্পর্ধাকে জাগিয়ে দেন, মিলে যায় ‘conception of tradition’ -এর প্রাজ্ঞ বার্তার বর্তন-স্বরূপ। শ্রীর এ ভয়প্রদ বিশ্বাস চেতনার ভিতে পৌঁছালেও পরবর্তী কাহিনিতে তার অভিক্ষেপ ‘রহস্যময়ী’ 888sport promo code। 888sport promo codeত্ব বয়ন-কাঠামোয় পূর্ণরূপ সংস্কার-বুদ্ধি-চিন্তায়-ব্যক্তিত্বে ক্রম-সঞ্চরণশীল ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। রহস্যকে দারুণভাবে ‘এনজয়মেন্টে’ পৌঁছায় – সমস্ত শ্লীলতায়, তৎকৃত মুন্সিয়ানার চরম প্রতিবেশে। এ সম্পর্কিত তথ্যটি নেওয়ার জন্য আমাদের উপর্যুক্ত 888sport alternative link লক্ষণাক্রান্ত তত্ত্বের পাঠটুকু আমলে আনা চাই। যদিও কনরাডের উক্তি : ‘being a woman is a terribly difficult task, since it consists principally in dealing with men’
চমৎকারিত্ব তাই তা যখন আরও অনেকান্তরূপে আমাদের সম্মুখে দাঁড়ায়, বিচিত্র সম্ভাবনায় বর্ণিল বিচ্ছুরণে নির্জলা হয়ে ওঠে, বীক্ষণমন্ত্রে তা পাশ ফেরায় – বিভূতি ছড়ায়, ‘অনেকরকম’ হয়ে ওঠে। 888sport promo codeর প্রতিজ্ঞা তার সংস্কৃতি অলিগলির অভয়ারণ্য উৎক্ষিপ্ত উত্তাল হয়ে মানবমুখী সম্পর্কের আকর্ষণ-বিকর্ষণের কিনারাসমূহ ছেয়ে যায়। হৃদয়ের হরিৎ অরণ্যে সৃষ্টি করে প্রেমের বিশুদ্ধ উৎসারণ-কৃতি। চেনা নয়, শুধু জানা যায় রহস্যের ভেতরের অনেক রূপ, জেশ্চারের গূঢ়তায় ধরা দেয় কণারাশির কৃৎ-প্রত্যয়সমূহ। এতে ঝুরঝুর করে সরে পড়ে প্রথানুগ নীতি-নিয়ম, পরিস্রুত সমাজের আচরণিক বিষয় আর ভেঙে বেরিয়ে আসে মানব-মাহাত্ম্যের অনেক সমর-সংগ্রামে যুঝতে পারার জয়ী ক্ষমতা। 888sport alternative linkকার এটুকু করতে পারেন, বড় বা ছোট কলেবর যা-ই হোক, শক্তির ধারাতে তিনি নিশ্চুপ নন। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ সেখানে নিজের লেখক মাহাত্ম্যে অনেক বড় বলে পরিগণিত না হয়ে পারেন না। ছোট্ট 888sport alternative link অজ্ঞাতবাস ধরে এতো কথা বলতে বসে যেন তার প্রমাণটিই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

তিন
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের অজ্ঞাতবাস মাত্র তিন অংশের কাঠামোবন্দি। মৌল চরিত্র তিনটি। শ্রীলতা, শচীন বোস, দেবুমাস্টার (মিহির)। পার্শ্বচরিত্রে পাই বেগু, ঘনা, রমেন। এছাড়া ছায়া হয়ে কাহিনিকে গতি দেয় বেদানা, প্রণতি। স্বল্প পরিসরের চকিত কাহিনিটি পূর্ণাঙ্গ ও 888sport alternative link-আশ্বাসঋদ্ধ। তুচ্ছ ঘটনা কিন্তু অনন্ত বিশালতা আটকায়, প্রভূত প্রশ্ন আর স্বীকারোক্তিতে বাধা পড়ে। কিন্তু কেন্দ্রে প্রকট রাজনীতি। বিপ্লবপন্থার রাজনীতি। যেটি আগেই বলা আছে মধ্যবিত্তশ্রেণিপ্রবণতা, তার ভেতরে আবেগ আর কর্মসাক্ষ্যে তাণ্ডব দীপ্যমান। বুর্জোয়া প্রতিরোধ, শ্রেণিশত্র“ খতম, কে তার সত্যের লক্ষ্যে যাবে তার প্রত্যয়। অজ্ঞাতবাস কেন মিহিরের? সেটি ওই বিপ্লবপন্থা থেকে ছেড়ে স্বাধীন থাকার সত্যের পথ! কিন্তু কোনো কিছুই সহজ নয় – বিশেষ করে ভেতরের প্রশ্ন-জিজ্ঞাসার চুক্তিপত্রসনদসমূহ। দেবুমাস্টার কেন দেবু, তার গান শেখানোর কাজে শ্রীর মুখোমুখি হলেও সে স্বীকার করে শ্রীর প্রতি আকর্ষণ, তা তুচ্ছ বা ক্ষণস্থায়ী যতোই হোক, সেটি নানাপ্রান্ত ছোঁয়। এটি আরও দ্রুততা পেলে অনেকদূর এগিয়ে চলে, প্রান্ত ও কেন্দ্রের সবকিছু ধরেই এগোতে থাকে, অস্থির মনের চাঞ্চল্য, মনোস্তরের কম্পন, অন্তস্তলের চিক্কন কোমল সুরধ্বনি বেয়ে এগিয়ে চলে তার মাঝে 888sport sign up bonus, পেছনডাক আঁকড়ে ধরে। নস্টালজিয়াও গ্রাস করে চলমান বাস্তবতাকে। গুঁড়িয়ে দেয় অনেককিছু, বেদানার 888sport sign up bonus। বিপ্লবীর আকাক্সক্ষায় শচীন বোস বা খোকা বোস এখনও অটল। এ স্থিরলক্ষ্যে তার ঝুঁকি প্রবল, কিন্তু তবুও নিশ্চল-স্থির। পেছন ফেরার সুযোগ নেই। স্থির লক্ষ্যে সমাজবদলের সিদ্ধান্তগুলো তার কাছে মীমাংসিত। তবুও মধ্যবিত্ত করুণা বা আবেগের ভেতর সেটি প্রশ্নশীল হলেও তা কাটিয়ে প্রকট তাচ্ছিল্যে বেদানার প্রসঙ্গতে দেবুমাস্টারকে প্রতিপ্রশ্নে বিদ্ধ করে। এতে শ্রী অবলুপ্ত থাকে না। শ্রী মাস্টারমশাইয়ের বা শচীনের আদর্শবাঞ্ছিত না হলেও প্রবৃত্তি-প্রেমের বিষয়টুকুর অনাস্থা থাকে না। দেবুমাস্টারের বিপরীতে প্রোষিতভর্তৃকা শ্রীর পরিচয়, সংগীতে তালিম, বিভিন্ন ফাংশানের কৃতিত্ব, জীবনপ্রবাহের বিচিত্র রঙের সঙ্গে শ্রীর সংযুক্তি – ‘আমি’-কথকের চরিত্র বনে যাওয়া, সূক্ষ্মতর বুদ্ধি ও বিবেকপ্রসূত আলিঙ্গনে নিজেকে খুঁজে চলা, 888sport sign up bonus-নস্টালজিয়ায় ‘আমি’-বয়ানে সম্ভাব্যস্বরূপ উপলব্ধি, কামজ উৎকণ্ঠার ভেতরে এক অবসাদ-প্রেমার্থীর আস্থা, অজ্ঞাতবাসের মুক্তি, স্বাধীন-নিরস্ত্র হয়ে নিরুপদ্রব যাপিত জীবন, যে কারণে সে ফিরে এসেছে রাজনৈতিক জীবন থেকে, যে কারণে সে ঈশানদেবের মেলায়, সদাব্রতের বাড়িতে – তাও বলা যায় – তাবৎ কিছুর ভেতরে গড়ে ওঠা এক তৃষ্ণাময় আর্তিতে গড়ে ওঠা ‘প্রেম’। অনেকদূরের আহ্বান এতে আছে, সেটি অনুরণিত হয়, গড়ে ওঠে, জানাজানিও আছে – তাদের মধ্যে একটু তো বোঝাপড়াও কম নয়, ইনার জগতের রোমন্থনে তার প্রাচুর্যও ধরা পড়ে। প্রেমের স্বরূপটি চিহ্নিত করাই 888sport alternative linkকারের মুখ্য নয়। সেদিকে যাওয়াও নয়, কিন্তু প্রেম ও তার ভেতরের আস্থা-অনাস্থার দ্বিধা, সংকট, দোলাচলতা উপেক্ষা করা যায় না। যে উপেক্ষায় দেবুমাস্টারও কম যান না। উপেক্ষার ভেতর থেকেই পরস্পরের ভেতরের যে টান বা বিকর্ষণ সেটি শচীনের ভেতর দিয়ে প্রকাশ পায়। অনুমিত হয়, সেখানে শচীন বোসও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। ব্যক্তিটি আসে এ দুজনের ভেতরে অনিবার্য হয়ে। সে বিপ্লবী। পুলিশ তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। পুলিশের ওয়ারেন্টে ফেরারী সে। পলাতক। কী অসমভাবে সে ঢুকে পড়ে সদাব্রত বাবুর বাড়িতে। সেটি আকর্ষণীয়। দুর্বারও বটে। যে চিন্তাটিতে রত শ্রীর জন্য – সে চিন্তার ভেতর থেকেই যেন কড়া নাড়ে অন্য অনাহূত কেউ। অনাহূতই নয় শুধু, অনভিপ্রেত – বিশেষ করে ওই মাস্টারের কাছে। ভবঘুরে-আমি একটু বিস্মিত হয়। এ বিস্ময়বোধ কাক্সিক্ষত – বিশেষত পাঠকের জন্য। মুস্তাফা সিরাজ বরাবরই লেখকের মানুষ। কিন্তু বিশেষ ন্যাক ‘রহস্যগল্পে’। সে রহস্যটুকু কখনও প্রকট কখনোবা তীক্ষèভাবে ছড়ানো-ছিটানো। সে তীক্ষèতায় রসিকতা যেমন আছে তেমনি পরতের পর পরতে জীবনের মৌহূর্তিক উইট-প্রজ্ঞার চিহ্ন। যে নায়ক বিপুল পসার সাজিয়ে আছে নায়িকার অপেক্ষায়, প্রতিটি মুহূর্ত রোমান্সরসে ভরপুর, প্রসাদগুণে কামিনীময়, চিহ্নিত সর্বপ্লাবী আনন্দ – তখন সশস্ত্র শচীন বোসের অতর্কিত উপস্থিতি, তবে সে দুষ্কৃতি নয়, একই ঘরানার ও নিকটজন বন্ধু বললে ভুল হয় না। যদিও এ মানুষটির দলই তাকে মৃত্যুর পরোয়ানা কামিয়াবের জন্য দায়িত্ব দিয়েছে অন্য কোনো ব্যক্তিকে। দেবু তথা মিহির তো দলত্যাগী, এখন ওই আদর্শচ্যুত – স্বাধীন। সেইটি বলেও যান, প্রশ্নে প্রতিপ্রশ্নে ফেরেন পেছনের দিনগুলিতে, অনেক আনন্দের সময়ে। ফিরে আসে কাহিনিতে ওই শ্রেণিস্তরটি। মধ্যবিত্ত শ্রেণিস্তরের কাঠামোতে কী আছে? ফিউডালতন্ত্র, আদিম উল্লাস আর অঢেল অপব্যয়। সেটি আর্থনীতিক কারণে ধসে পড়ে, স্পর্শ করে শ্রেণিস্তরের অনেক কিনারা, আর ব্যক্তির ভেতরে তাতে আনে সবল-দুর্বল অনেক প্রান্ত। অজ্ঞাতবাসে সে-প্রান্তগুলি খুব সরল টানে চিনে নেওয়া যায়। বিষাদ, কাতরতা, বেদনাবিলাস, অহং-তাড়না, বিচ্ছিন্নতা, অনৈক্যের ভেতরে হতাশা, বিরহবিলাস এগুলোই তো শচীনকে আন্ডারগ্রাউন্ড বিপ্লবের প্রণোদনা জোগায়। কীভাবে ঊষ্মাবাহিতও করে তোলে! ‘মেয়েদের মধ্যে দুর্বলতা টের পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়ি। আমার এই সন্ন্যাসী অথবা হিপির মতন চেহারা এখনও যেন আলোর উজ্জ্বলতা আর আকর্ষণক্ষমতা অনেক আছে। তাই কেউ ভালবেসে ফেলে আমাকে। তারপর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। …শ্রীকে পুড়িয়ে মেরে যাব অন্য কারো খোঁজে। এই আমার জীবন…। শচীন আমিও তো বিপ্লবী ছিলুম। এই পুরনো জংধরা সমাজটা খতম হয়ে যাক। নতুন সমাজ জন্ম নিক। যেখানে আকাশ হবে অনেক বড়।’ আর শচীন বলেছে ‘বুর্জোয়া বিলাস’। প্রতি-প্রশ্নে কথক বলেছে, একদিন আমিও চেষ্টা করতুম ঠিক ওভাবেই বলতে। আমিও তো বেদানার সঙ্গে আলাপ হওয়ার আগে বুঝেছিলুম, যতক্ষণ না বিপ্লব আসছে বা নতুন সমাজ গড়ে উঠছে, ততক্ষণ আমাদের ব্যক্তিগত সুখের বিষয় সবটাই ভুল। যদিও মাস্টার (কথক) এসব এখন অতীত ও  ভ্রান্তিকর বলে অনেকদূরে অজ্ঞাতবাসের বিরান এলাকায় (নিজের স্বীকারোক্তিমতো) চলে এসেছে। সেই ভুল জীবনকে বা প্রেমকে সে ভুল বলছে, ভুলের পরে সে স্বাধীন, সত্তাগত স্বাধীন না হলেও একপ্রকার স্বাধীন। তবুও সে স্বাধীনতার ভেতরেও আছে পরাধীনতার উত্তাপ। তাই বেদানা, শ্রী ছাড়ে না; না-ছাড়ার মুহূর্তে অনেক সময় চলে যায়, পেয়ে চলেন অজ্ঞাতবাসের সময়সমূহ। বেদানা বা শ্রী এবং প্রণতি যেই হোক এক দুর্মর কাব্যগাথার ভেতরে চলে মধ্যবিত্ত অন্তর্বয়ন – প্রবহমান কাহিনি উপলক্ষমাত্র, ইনার স্ট্রাকচারে (inward story of the narrator)
গড়ে ওঠে আদ্যান্ত খাসা ভঙ্গুর সমাজ কাঠামোতে বাঁধা মধ্যবিত্ত শ্রেণি-সংকটের বাতাবরণ। কঠোরতায় আছে পাপ-নিষ্পাপ, আবেগ-নিরাবেগ, চিন্তন-অচিন্তন দ্বন্দ্ব। এর উৎকর্ষ-ক্রম ঘটে আন্ডারগ্রাউন্ড বিপ্লবের তত্ত্বে। পরিণতি যেমনটিই দাঁড়াক কিংবা প্রেমের যে পরিণতিই পর্যাপ্ততায় তুলে আনুক; শ্রী-বাহিত জীবনে অনিঃশেষ থেকে যায় দেবুমাস্টার, আর শচীন বোস পুলিশের হাতে, অন্যরা এ কাহিনির অনুঘটক হয়ে রয়। এমনটিই অজ্ঞাতবাসের কাহিনি। ভিন্নতাটুকু তুল্যমূল্যে পরিমাপ্য নয়, বিশেষ করে এনিকডৌটের শ্বাসের রহস্যটুকু, বিরল যে ‘আমি’-শেষাবধি স্পষ্ট করে না কিংবা 888sport app গৌণ চরিত্র সেই অস্পষ্টতার ভেতর দিয়ে সেঁটে যায় কৌশলের ঘনায়মান স্রোতরেখার টানে – এই সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ।

চার
যে কাহিনিকথা 888sport alternative linkশর্তে উপর্যুক্ত অংশে তুলে আনা হয়, তার প্রজেকশনটি কেমন? গড়ন কোন ধরনে, আদর্শটিই বা-কি! ‘as character, or any other element of narrative, becomes dynamic, it is a part of the plot’ – 888sport alternative linkে প্রথমেই যে সামন্ত-শর্তটি কায়েম হয়েছে ঈশানদেবীর মন্দিরের পরিবৃত্তে তা যে কাহিনির জন্য আর সে কাহিনিতে যে ভাঙাগড়ার কালচিহ্ন নিরূপিত তা এক রাজনীতির কলরোলে গঠিত। কারণ, ‘প্রোষিতভর্তৃকা’র ব্যাকগ্রাউন্ড। স্কুলশিক্ষকটি বিমানে ভর্তি পরে চীন-ভারত যুদ্ধের পরে চীনাদের শ্রমশিবিরে বন্দি কি-না ইত্যাদি ‘না-কি’ আশঙ্কায় বেজাত বিয়ের ব্যাপারটিও বিযুক্ত নয়। ফর্মটি এতে অচেনা থাকে না। কারণ ওইমতো সময় ও সমাজ : ‘new attitudes and resulted from the effects of the war; the creation of the welfare state; and a moderate redistribution of the nations affluence. These factors helped to lower tradition barriers between classes, creating some sense of possible social mobility. Changes of this sort encouraged many authors in the fifties towards renewed interest in class, conduct and manners’ এমনটি 888sport alternative linkের ফর্মে যুক্ত, ঘরজামাই অবিনাশ ফেরেনি পুঁজির আগ্রাসী ও অনুৎপাদন ক্রিয়ায় কিন্তু এর বিপরীত যা তাও ধরা পড়ে ‘গ্রামের সেকেলে’ সদাব্রতের চরিত্রে। আবার মেয়ের ধ্র“পদী বানাবার টানে ভবঘুরে ‘অজ্ঞাতবাস’ পাওয়া স্বাধীন দেবুমাস্টার ঢুকে পড়ে কাহিনিতে। পরে তা শাখা-শতদলে বিস্তর। 888sport alternative linkকার ‘creating some sense of possible social mobility’ কর্মপ্রয়াসে জানান দেন : ‘ঈশানপুরের মোটামুটি শান্ত নির্জন জীবন টগবগ করে ফুটতে থাকল, যেন কী এক আশ্চর্য খাদ্য তৈরি হতে চলেছে। সব মুখে লোভ। রক্ত অস্থির। সবাই হাত বাড়িয়ে আছে।’ ‘বাঁজা ডাঙায়’ এটি সম্ভব হলো ‘সরকারি চেষ্টায়’। কাহনি তারপর মলো বসল। কাহনি-িকাঠামোতে ধরল নতুন রাগ, সেটিতে তখন শচীনের আবির্ভাব, এতে খুলে যায় একে একে নায়কের অতীত ও বর্তমানটুকু। বিপ্লবী দল আর অজ্ঞাতবাসের পুরোদস্তুর কাহিনি। উন্মুক্ত পরিচয়, যোগাযোগ নির্দিষ্ট সংলাপে। কিন্তু নিজের বোঝাপড়াটুকু অবিরল ধারায় অকুণ্ঠিত। গতিমান কাহিনি, বেপথু নয়, পূর্ণদানে সতর্ক সম্মুখগামী। কীভাবে? ‘সে শুল। আমি দেয়ালের দিকে ওর মাথার কাছে হেলান দিয়ে বসলুম। আবার 888sport sign up bonusর দিকে তাকালুম। অস্পষ্ট, জীর্ণ, নষ্ট 888sport sign up bonusর পাহাড় সামনে দাঁড়িয়ে – আবর্জনার মতন। কী আছে তাতে? কী পাব আর? দীর্ঘশ্বাস পড়ল।’ প্রসঙ্গত এসে পড়ে বেদানা প্রসঙ্গ। শচীনের ক্রিয়াকর্মের আদেশ-উপদেশের ব্যাখ্যা। পুরো পরিবেশটুকু রূপময়, আস্থাজ্ঞাপক, আর্টশীল বিহঙ্গে উদ্যাপিত : ‘বাইরে ভোরের ভ্রমে কোকিল আর কাকেরা ডেকে উঠল এতক্ষণে।’ বিবরণের রূপটি ‘artful prose’-এর স্বতন্তr meaning of a work’
তিন অংশের অনতিদীর্ঘ কাহিনি বিশ্লেষণাত্মক, নৈর্ব্যক্তিক চিন্তনের ‘আত্মিক কর্ম’। প্রথম অংশের পর দ্বিতীয় অংশটিতে কাহিনির বিস্তার ও বিশ্লেষণ-পর্বে কথক মনোউক্তিতে সদাব্রতকে চিহ্নিত করেন, কাহিনির উত্তরণ-আকস্মিকতায় :
সদাব্রতের মধ্যে অনেক সৌখিনতা ছিল, সেটা ক্রমশ টের পাচ্ছিলুম। মেয়েকে গান শেখাবার উৎসাহ, তারই প্রকাশ হয়তো। তবে পান চিবুতে চিবুতে বন্দুক আর ছররা নিয়ে বিলের দিকে পাখি শিকারে যাওয়া, তাঁর ফুলবাগান পরিচর্যা, টাক888sport app টেরি, মাঝে মাঝে প্রচণ্ড উনিশ শতকী ফুলবাবু সেজে বেড়ানো – সব মিলিয়ে একরকম নিষ্ঠার পরিচয় ছিল। জীবনের প্রতি এ এক ধরনের নিষ্ঠা নিশ্চয়।
বিবরণের ভেতরে ‘হিরোইক’ উদ্ভাসন পরের ঘটনাপ্রবাহকে প্রাণচাঞ্চল্য দেয় – বিস্তর সম্মুখদ্বন্দ্ব মুখোমুখি দাঁড়ায়। এর কাহিনি-উৎসে গুরুত্বপূর্ণ প্রবহমান ঘটনা-তরঙ্গ – যা নানা প্রান্তে যুক্ত করে অনেক উপপ্লব, উপল-আঁধার। ‘মিহির, আজ রাত দশটায় দক্ষিণের মাঠে পুকুরপাড়ে জোড়া তেঁতুলগাছের তলায় আসবে, জরুরি দরকার আছে – শচীন’, এরপর জটিল পাঁকে আটকায়, রক্তদোলায় ছেয়ে যায় নায়কের সর্বাঙ্গ, শচীন ওরফে খোকা বোস বিশ্লেষণে পড়ে :
আমার চোখ সাতবছর আগে খুলে গিয়েছিল। শচীনের এখনও খোলেনি। বরং সে সেই প্রাগৈতিহাসিক ক্ষমতাপ্রিয়তার কবলে আজও অবশ হয়ে পড়ে রয়েছে। ক্ষমতা! জেনেছি, ইতিহাসের সারকথা নেই। কেউ ক্ষমতা চায়। কেউ কেউ প্রভু হবার তীব্র ইচ্ছা নিয়ে জন্মায়। আর বাকি সবায় জন্মায় দাসানুদাস হতে। এতেই তাদের সুখ।
কিন্তু আবার কেউ কেউ স্বাধীনতা কী টের পায়। স্বাধীনতাকে জানে। তার এ পৃথিবীতে অনেক যন্ত্রণা। কারণ সে আমারই মতো সবকিছুর মধ্যে নির্বিকার হয়ে ঘুরতে চায়। সে জেনে নিয়েছে যে এই স্বাধীনতাই প্রকৃতির অভিপ্রেত ছিল। সে স্বাধীনতায় নিঃশ্বাস নিতে চায়। সে বুঝতে পারে স্বাধীনতা আছে 888sport promo codeর প্রতি প্রেমে, সৌন্দর্যের প্রতি আনুগত্যে। যে এই স্বাধীনতাস্রোতে একবার  ঝাঁপ দিয়েছে, সে ভেসে চলেছে সম্পূর্ণতার দিকে।
আমি বহতা স্বাধীনতায় ভেসে চলেছি…
এমতে দৃষ্টিকোণ প্রতিষ্ঠিত হলে, তা পরিবর্তিত দেবুমাস্টারের ‘বায়োগ্রাফিক্যাল ফর্ম’। যেটি 888sport alternative linkেরও আত্মকথন, শ্রেণিসম্ভূত চৈতন্য-দর্শন। তার রাজনৈতিক মাত্রা আছে। কিন্তু বেশিরকম ব্যক্তির। নায়কের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে
‘based on an event from the past with his causes and consequences’ একইভাবে অন্য চরিত্র শচীনও তাই। ফর্মের দুটো দিক ইতিহাসগত ও নৈর্ব্যক্তিক বিষয়গত তাতে সমুন্নত থাকে বিষয়ীর নিষ্ঠা। ঔপন্যাসিকের এ ফর্মের ভেতরেই শঙ্কা ও দ্বিধার ভেতরে চরিত্রের স্থাপত্য নির্মিত। সেখানে সন্দেহ সংশয় বা ভীতি (যা শ্রেণিরক্ষিত) একটি ক্ষেত্র পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠে। তবে এ 888sport alternative linkে তা স্বাভাবিক শুধু নয় অধিকতর বাড়তি মাত্রার প্রতীয়মান হয়। বিচিত্র কার্যকারণে যেটি সংযুক্ত এবং বিস্তৃত। বিশেষ করে ঘটনার ভেতরে অন্য দীপ্র আলোর প্রক্ষেপণ। যেখানে শ্রীর জন্য সংশয় বা সত্তাময় শ্রীর রক্তরাগ দৃষ্টির বিকিরিত আলো নায়কের প্রচ্ছদপটে বহুমাত্রিক অনুরাগরঞ্জিত। যা নভেলকে স্বয়ম্ভূ নন্দনে বেঁধে দেয়। যে ফল তৈরি করে তা নিজেই নিজের সীমানায় ব্যাপক ও বিপুল। সে প্রক্রিয়াটি লেখকের চিন্তনসত্তার আদর্শ। এক অর্থে জীবনবীক্ষা বা তৎপ্রসূত রাজনৈতিক দর্শনে তা স্বাধীন-সর্বজ্ঞ, দেশ-কাল-গোত্র নিরপেক্ষ। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ তার বিপুল রচনারাশির মতো এ রচনাটিতেও এক ‘অজ্ঞাতবাসী’র ‘concept of omniscience’ -কে প্রতিষ্ঠা দিতে চান। নামেই যা অলঙ্কারময় আর তার ভেতরে রয়েছে প্রতীকী নির্যাসময় আলোকরশ্মির এসেন্স, তাই তো সে শ্রীকে অবলীলায় বলতে পারে : ‘তোমার গুরুদেব নামক সন্ন্যাসীর শবে এক জ্যোৎস্নার রাতে তুমি লাথি মেরেছিলে’। কোনো মূল্যে এ প্রতিজ্ঞা আটকায়নি বরং তা অনেকরূপে হয়ে পড়েছে উজ্জ্বলতর, প্রভাময়। এতেও সংশ্লিষ্ট ওই নায়ক, তিনি থাকেন এক সমগ্রতায়। বিচ্যুত নয়, প্রথানুগত্য পেরিয়ে সৃষ্টিতে কিন্তু দ্বন্দ্বের ভেতরে, তাবৎ মূল্যবোধকে পায়ে দলে যেন সৃষ্টির মুখাগ্নিই করে চলে, জয়শ্রী জীবনের উল্লাস-উৎসবে। মুস্তাফা সিরাজ তাই। 888sport alternative link সৃষ্টি বা সৃষ্টির যাত্রা সেদিকেই, এবং তা নিশ্চিত নৈর্ব্যক্তিক। শ্রীমতি শেষ দৃশ্যেও যেন তেমন সত্যই বলে গেছে – ওই প্রথানুগ রহস্যবেড়াজালে। সেটিই আধুনিকতার মাত্রা। সেখানে নমিত নয় কিছু, অপরাজেয়; পরাশ্রয়ও নয় কিছু। দিকসঞ্চারী বাস্তবতায় সার্বিক এক আলোকময় – পুনর্গঠিত ইঙ্গিত। এ ক্ষেত্রকে প্রাসঙ্গিক করে বলি : ‘the novel is a sign of our freedom. In the modern world, the only rules which are binding are those which we invent for ourselves. Politically speaking, this is known as democracy… as the novelist conjures a new world into existence, in a profane parody of God’s creation, so each individual shapes his or her inimitable life-history. 888sport alternative linkশৈলীর তৃতীয় অংশের শুরু :
উত্তরে কিছুটা দূরে ঈশানদেবের ময়দানে মেলার আলো জুগজুগ করছিল। জোর হাওয়া দিচ্ছিল মাঠে। বটতলার অন্ধকারে দাঁড়িয়ে শ্রীর প্রতীক্ষা করছিলুম। চাঁদ উঠতে দেরী আছে আজ। আমার সামনে পশ্চিম হাইওয়ে, তার ওপাশে সদাবাবুর বাড়ি। মাঝে মাঝে একটা করে গাড়ী যাচ্ছে। তার জোরালো আলোয় ঝলসে উঠছে দুধারের গাছপালা। ভয় হল, শ্রী রাস্তা পেরোতে গিয়ে ওই আলোয় ধরা পড়ে না যায়। অবশ্য শ্রীকে আজ আর তেমন সরল গ্রাম্য মেয়ে বলে ভাবতে পারছিলুম না।
বিবরণটুকু নির্মিত হয় শ্রীকে চিহ্নিত প্রকল্পে উদ্যাপনের জন্য। ন্যারেটর অনেকভাবে এ বিবরণের কারণ ও প্রতিক্রিয়াকে তুলে ধরতে চান। ইতোমধ্যে 888sport alternative linkের যে কাহিনিটুকু আমরা জেনেছি তাতে শ্রীর অবস্থান, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া কিংবা মনস্তত্ত্ব কীভাবে বহন করে মেসেজকে বা চরিত্রের চরিত্রায়নকে সহায়তা করে, টেনে নিয়ে চলে রাজনৈতিক পরিখার ভেতরে এবং তৎসৃষ্ট দ্বন্দ্বের ভেতরে – এমনকি নিজেও একটি পূর্ণায়ত চরিত্ররূপে প্রতিষ্ঠা পায় ইত্যাকার স্পৃষ্ট বিষয় অবলোকন করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু প্লটে বা ন্যারেটরের প্রতিপার্শ্ব বিবেচনায় 888sport live chat-আরাধ্যকল্পে ‘ইনার কথন’ : ‘he is retelling a traditional story, and therefore his primary allegange is not to fact, not to truth, not to entertainment, but to the Mythos itself’ –
মেলার ‘জুগজুগ আলো’ আর মাঠের ‘জোর হাওয়া’য় শ্রীর জন্য প্রতীক্ষা – দুটো প্রবণতা মুখোমুখি, ভেতরে তার জন্য শিহরণ, তার সঙ্গে যুক্ত চাঁদ না ওঠার রহস্য, দেরিতে চাঁদ উঠবে কিন্তু প্রস্তুত প্রাত্যহিক জীবনের মর্মর সবকিছু, অপেক্ষায় নেই কেউ – শুধু একজনের অপেক্ষা, অপেক্ষমাণ সে – কাল-নিরবধি  (mimetic)| remembrance of Things past লিখেছিলেন প্র“স্ত, তাতে তৈরি Mythos চিরকাল আকর্ষণীয় থাকে। কেন? ওইরূপ ট্র্যাডিশনাল বলে। মুস্তাফা সিরাজের বিবরণে ব্যাখ্যায়ন ঘনতলে গভীর রঙে। ভয়টুকু কাহিনি ব্যাপৃত – দেখে নেওয়া রাস্তার আলোর ভয়ে। প্রতিবেশটুকু ‘representational character’ যা ‘meaning of narrative’ । অজ্ঞাতবাসে কথক সেভাবেই রচিত। সে-ফর্মে ‘remembrance’, যেখানে পূর্বের ঘটনা-উল্লেখে বেদানা বা প্রণতির ভেতর দিয়ে ‘it is more of a portrait’ চরিত্রের উচ্চতা নির্ধারণ হয়। অনেক দূর-আশ্রিত ও পরম্পরিক।

পাঁচ
‘Novel does not give answers, it offer possiblities’ – অজ্ঞাতবাস আনন্দদায়ী হয়ে ওঠে সম্ভাবনাময় জীবনের রূপায়ণশৈলীতে। নিছক কাহিনি-বর্ণন যেমন 888sport live football পদবাচ্য নয়, তেমনি সরল প্রতিবেশ চিত্রণও 888sport live chat নয়। 888sport live chat 888sport live chatীর মনোবীক্ষণ। তাতে সমাজ-ইতিহাসের দ্বন্দ্ব যেমন থাকে তেমনি কালস্পর্শী দর্শনজ্ঞানও পরিস্রুত হয়। বহুকালের শোক-আনন্দস্রোতও থাকে নির্ধারিত। জীবন সমগ্রতায় রূপায়ণে প্রাচুর্যময় সময়বীক্ষার প্রকাশস্বরূপও তার অনিবার্য অংশ। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ গভীর জীবনস্পর্ধী 888sport live chatী। 888sport live chat তাঁর নিছক সমাজ উপর-কাঠামোর বয়ান নয়, মানব-সম্পর্কের তলানিটুকুর অনুসন্ধান করে তাতে অমিয় সুধার স্ফুরণ ঘটিয়ে যোজনা করেন অগ্নিশিখার আঁচড়। এখানে শ্রী এবং শচীন-সম্পর্কটুকু চলাফেরা বা পরিণয়ের মধ্যে শেষ হয়ে যায় না। গঠিত ও পুনর্গঠিত হতে থাকে ছেদ-বিচ্ছেদ বা রাগ-অনুরাগের বিশল্যকরণ প্রয়াস। নিশ্চয়ই তা মোটা দাগের আবর্ত নয়, সূক্ষ্মতর রসবোধের উদ্গম আলেখ্য। একইভাবে গোটা কাহিনিতে আত্মকথক – তার যে ইতস্তত সঞ্চরণশীল পর্যবেক্ষণ সেটিও বিচিত্র চালে ও রাগে অভিযোজিত। প্রকৃতির সান্নিধ্যে সমাজ-চিহ্নিত চরিত্রসমূহ অটুট, স্বক্ষেত্রে স্বয়ম্ভূ। প্রমথনাথ বিশীর বাক্যে 888sport app download for android করি 888sport live footballিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজকে : ‘আবিষ্কারের জন্য চাই জ্ঞান, সৃষ্টির জন্য চাই প্রেম; আবার আবিষ্কারের জন্য পর্যবেক্ষণশক্তি, সৃষ্টির জন্য চাই কল্পনাশক্তি। পর্যবেক্ষণশক্তির নেত্র জ্ঞান; কল্পনাশক্তির তৃতীয় নেত্র প্রেম’ – তারই প্রমাণ তাঁর রচনা।