আমার পুরো শিক্ষাজীবন কেটেছে রাজশাহীতে। রাজশাহী আমার হয়ে ওঠার শহর। ষাটের দশকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হই। সে-সময়ে আমাদের শিক্ষক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম ক্লাসে পড়ানোর সময় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মুসলিম-মানস ও বাংলা 888sport live football বইটির উল্লেখ করেন। তিনি নানা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে বইটি সম্পর্কে ক্লাসে আমাদের বলেন। আরো বলেন, আনিসুজ্জামানের পিএইচ.ডি গবেষণার বিষয় ছিল ইংরেজ আমলের বাঙলা 888sport live football-বাঙালি মুসলমানের চিন্তাধারা (১৯৫৭-১৯১৮)। ১৯৬৪ সালে বইটি প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৬৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় রাজশাহী নিউমার্কেটের ‘888sport free bet login’ নামে একটি দোকান থেকে আমি বইটি কিনি। তখন পর্যন্ত আমি অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে সামনাসামনি দেখিনি। এখনো বইটি আমার কাছে আছে। ১৯৬৬ থেকে ২০২০ – দীর্ঘ চুয়ান্ন বছর। জীবনের জল অনেক গড়িয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দশ-বারোটি বাড়িতে থেকেছি; কিন্তু বইটি হারাইনি। শুধু নরম হয়ে গেছে। পৃষ্ঠা আলগা হয়েছে মাত্র। এই বইয়ের বিভিন্ন অংশ পড়ার সময় বাংলা অনার্সের ছাত্রী আমি বিস্ময়ে স্যারের বিশ্লেষণাত্মক বাক্যের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। ভাবতাম, একটি নতুন বিষয় স্যার আমাদের সামনে এনেছেন। তিনিই বুঝি প্রথম, যিনি 888sport live footballে বাঙালি মুসলমানের অবদানকে ভিন্ন দৃষ্টিতে পরিমাপ করার পথ খুলে দিলেন।
রাজশাহীতে থাকার কারণে স্যারকে দেখার সুযোগ আমার ছিল না। একটি বই আমার সামনে স্যারের শিক্ষকতার প্রবাহ বইয়ে দিয়েছিল। আমি বইয়ের দিকে তাকালে ভাবতাম, আমি স্যারের ক্লাসে আছি এবং তাঁর পড়ানোর কথা শুনছি। বইটির ‘অবতরণিকা’ অংশে তিনি লিখেছেন, ‘মধ্যযুগের বাংলা888sport live football হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের অবদানে সমৃদ্ধ। এর তুলনায় আধুনিক বাংলা888sport live footballের ক্ষেত্রে বাঙালি মুসলমানের পশ্চাৎপদতা বিস্ময়কর। বাংলা888sport live footballের উৎসাহী পাঠকমাত্রই লক্ষ করেছেন যে, ১৮০০ থেকে ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত অর্থাৎ আধুনিক বাংলা888sport live footballের প্রস্তুতিপর্বে বাঙালি মুসলমান সম্পূর্ণরূপে নিষ্ক্রিয়। অথচ তাঁদের 888sport live footballানুরাগ বা সৃষ্টিক্ষমতা যে লোপ পায়নি তার প্রমাণ আরবি-ফারসি শব্দবহুল কাব্যধারার মধ্যে পাওয়া যায়। এই রীতির কাব্য অবশ্য রসে-রূপে বিচিত্র নয়, দৃষ্টিভঙ্গির পরিচ্ছন্নতাও সেখানে অনুপস্থিত। বাংলা888sport live footballে মুসলিম-সাধনার ইতিহাসে এই কাব্যধারা মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগের মধ্যে ঐতিহাসিক সূত্র রক্ষা করেছে মাত্র।’
এভাবে বাঙালি মুসলমানের সৃষ্টিশীলতাকে তিনি নির্মোহ দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করেছেন। তরুণ বয়সে তাঁর লেখা থেকে পাওয়া এই স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি আমার নিজের ভেতরের বোধকে গড়ে তোলার জন্য অত্যন্ত সহায়ক ছিল। এজন্য তিনি আমার শ্রদ্ধেয়।
স্যারের কথা নানাভাবে মাথায় রয়ে গিয়েছিল। আমার বিস্ময়ের সীমার কোনো আড়াল ছিল না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে 888sport appয় আসি। ১৯৭০ সালের জুলাই মাসে বাংলা একাডেমির গবেষণা বিভাগে গবেষণা সহকারী হিসেবে যোগদান করি। বাংলা একাডেমিতে আমি প্রথম স্যারকে দেখি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্যারের আলোচনা শুনি। গবেষণা বিষয়ে নানা কথা শুনতে পাই। দীর্ঘ বছর পেরিয়ে যায়। বাংলা একাডেমির বড় লাইব্রেরিটি আমার এক গভীর মনোযোগের জায়গা ছিল। আমি অফিসের কাজের ফাঁকে একাডেমির লাইব্রেরিতে গিয়ে বই খুঁজতাম। অজস্র বই আমার জানার জগৎ বাড়িয়ে দেয়। কখনো ওখানে বসে কিছুক্ষণ পড়তাম। তারপর নিয়ে আসতাম একটা বই। টেবিলে রেখে দিতাম। হাতে কাজ না থাকলে বইয়ের পাতা উলটাতাম। একদিন একটি বই পেলাম। আনিসুজ্জামান স্যারের বইটি সম্পর্কে ড. আহমদ শরীফ লিখেছেন : ‘এ এমন একটি বই, যা একবার পড়ে ফেলে রাখার মতো নয়, বারবার পড়ার প্রয়োজন এবং প্রতিবারেই নতুন নতুন তথ্য ও তত্ত্বের উদ্ভাস ঘটে এবং চিন্তার উদ্দীপন হয়।’ ড. আহমদ শরীফ এই বইয়ে পেয়েছেন ‘লেখকের সুষ্ঠু চিন্তার এবং নিরপেক্ষ ও পরিচ্ছন্ন উদার দৃষ্টির প্রসূন।’
নানা তথ্য থেকে নানা খবর পাই। আরেকজন গবেষকের পর্যবেক্ষণ আনিসুজ্জামানের গবেষণাকাজের গভীরতা মূল্যায়ন করে। ফরাসি ভাষার অধ্যাপক ফ্রাঁস ভট্টাচার্য লিখেছেন : Professor Anisuzzaman has all the qualities of a great man and a great scholar। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্লিনটন বি সিলি লিখেছেন : As impressive as he is as a truly good human being, Anis bhai is equally impressive and respected as a productive and wide ranging scholar।
দেশ-বিদেশের বিদ্বজ্জন তাঁর মানবিক বোধ ও পাণ্ডিত্যকে গভীর 888sport apk download apk latest versionর সঙ্গে দেখেছেন। এই বিশিষ্টতায় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান নন্দিত এবং বরণীয়।
স্যারের সঙ্গে সরাসরি কাজের সংযোগ হয় বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন রচনাবলি সম্পাদনার সূত্রে। আমি সেই সময়ে সংকলন উপ-বিভাগের উপ-পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে ছিলাম। এখান থেকে প্রখ্যাতজনের রচনাবলি প্রকাশিত হতো। আনিসুজ্জামান স্যারকে মুনীর চৌধুরীর রচনাবলি প্রকাশের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। স্যার তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন। স্যারের কাজ দেখে বুঝেছিলাম কীভাবে সম্পাদনার কাজ করতে হয়। এটিও ছিল আমার জন্য শিক্ষার দিক। পরবর্তী সময়ে আনিস স্যারকে নজরুল রচনাবলী সম্পাদনার দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলা একাডেমি থেকে। নয় সদস্যবিশিষ্ট সম্পাদনা পরিষদের সভাপতি ছিলেন স্যার। আমি ছিলাম সদস্য-সচিব। স্যার তাঁর ভূমিকায় লিখেছিলেন : ‘সম্পাদনা পরিষদের সদস্য-সচিব সেলিনা হোসেনের উদ্যম ও মোবারক হোসেনের পরিশ্রমের কথা উল্লেখ না করলে অন্যায় হবে। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ একপর্যায়ে আমাদের উৎসাহ ও সহযোগিতা দিয়েছেন। আমি তাঁদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি।’
স্যারের সৌজন্য আমাকে শিখিয়েছে কিভাবে বিনয়ের সঙ্গে কাজের মর্যাদা রাখতে হয়। একটি কাজ আন্তরিকভাবে সম্পন্ন করা যেমন কাজের প্রতি নিবেদন, তেমনি আয়োজকদের স্বীকৃতি সামাজিক মূল্যবোধের বড় দিক।
আনিসুজ্জামান স্যারের 888sport sign up bonusচারণ প্রসঙ্গে আনন্দ 888sport app download bd প্রসঙ্গটি আমাকে গভীর আনন্দ দেয়। ২০১৭ সালে আনিসুজ্জামান স্যার খুবই অসুস্থ ছিলেন। তাঁর মেরুদণ্ডে সমস্যা হয়েছিল। সেজন্যে তাঁকে ব্যাংকক-সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করাতে হয়েছিল। কয়েকদিন তিনি পিজি হাসপাতালে ছিলেন। ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে কলকাতার আনন্দ পাবলিশার্সের পরিচালক সুবীর মিত্র আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, এ-বছর আনন্দ 888sport app download bdের জুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে 888sport apps থেকে আপনি থাকবেন। আমরা আপনাকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠাচ্ছি। আমি কিছু বলার আগেই তিনি বললেন, ঠিক আছে রাখছি। আমি জানতাম আনিসুজ্জামান স্যার আনন্দ 888sport app download bdের জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। সুবীর মিত্রের চিঠি আসার পরে আমি পিজি হাসপাতালের কেবিনে স্যারের সঙ্গে দেখা করি। স্যারকে বলি, স্যার, আমার এটা কি গ্রহণ করা ঠিক হবে? বলার সঙ্গে সঙ্গে স্যার বললেন, না, না তুমি রাজি হয়ে যাও। থাকো জুরি বোর্ডের সদস্য হয়ে। আমি আর কথা বলি না। ভাবি কাছে ছিলেন। ভাবির সঙ্গে কথা বলে বেরিয়ে আসি। মাথার ভেতরে 888sport app download bdে পাঠানোর জন্য আনিসুজ্জামান স্যারের নাম ভেসে থাকে। এর আগে অন্তরা দেবসেন, অমর্ত্য সেনের মেয়ে, দিল্লি থেকে আমাকে ই-মেইল লিখেছিল সার্ক দেশের লেখকদের নিয়ে আমি একটি 888sport app download bd প্রদানের আয়োজন করেছি। তুমি আমার জুরি বোর্ডের সদস্য থাকবে। মোট সাতজন থাকবেন সার্কের বিভিন্ন দেশের লেখক। আমি রাজি হই। অন্তরার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের পরিচয়। The Little Magazine পত্রিকার সম্পাদক। ওর মা নবনীতা দেবসেন। সেই সূত্রে কলকাতায় পরিচয় হয়েছিল। ২০০৭ সালের কথা। আমার সামনে ভেসে ওঠে আমার দেশ, আমার 888sport live football, আমার দেশের লেখক।
আমি তখন কবি শামসুর রাহমানের কথা চিন্তা করি। পুরো কমিটির নাম আমাকে পাঠালে আমি দেখলাম চারজনের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। আমি রাহমানভাইয়ের 888sport app download apkর ইংরেজি 888sport app download apk latest version ওদেরকে পাঠিয়ে লিখি, ‘ইনি বাংলা ভাষার একজন উল্লেখযোগ্য কবি। তোমরা বাংলা পড়তে পারো না, সেজন্য 888sport app download apk latest version 888sport app download apk পাঠালাম। পড়ে দেখো কেমন লাগে।’ যা হোক, রাহমানভাই 888sport app download bd লাভ করেন। আমি আনন্দে আত্মহারা হই। 888sport app download bd প্রদানের দিন বিশাল মিলনায়তনের দর্শকরা জানল সার্ক দেশের মধ্যে 888sport appsের কবি পুরস্কৃত হয়েছেন। চুপচাপ বসে থেকে বিশাল মিলনায়তন আমার স্বপ্নের আকাশ হয়ে যায়। আমি এভাবেই দেখতে চাই নিজের দেশকে। হাসপাতালের লিফট দিয়ে নেমে নিচে আসি। গেটের কাছে দেখা হয় পিয়াস মজিদের সঙ্গে। ও আমাকে দেখে বলে, স্যারকে দেখতে এসেছিলেন? আমি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললাম। ও বলল, আমিও যাচ্ছি আপা।
- হ্যাঁ যাও। আর শোনো, দু-এক বছরের মধ্যে স্যারের নতুন কী বই বের হয়েছে তা কি তোমার জানা আছে?
- স্যারের আত্মজীবনী বের হয়েছে আপা। বিপুলা পৃথিবী নামে। আমার কাছে কপি আছে। আপনি পড়তে চাইলে দেবো।
- হ্যাঁ দিও। কালকেই দিও। আমি পড়ব।
পিয়াস মজিদ বইটা আমাকে দিয়ে যায়। আমি পড়ে শেষ করি।
সুবীরদা 888sport app download bd কমিটিতে বইয়ের নাম পাঠানোর জন্য ফোন করলেন। আমি বিপুলা পৃথিবীর নাম পাঠাই। তিনি আরো বললেন, যেদিন পুরো কমিটি ফাইনাল ডিসিশনের জন্য বসবে সেদিন আপনার সঙ্গে আমরা ফোনে কথা বলব। আপনার ডিসিশন জানাবেন। ফোন ফ্রি রাখবেন সেদিন।
আমি রাজি হই। ওদের কাছ থেকে ফোন এলে আমি বিপুলা পৃথিবীর নামের সঙ্গে স্যারের নাম বলি।
স্যার 888sport app download bdপ্রাপ্ত হন। জুরি বোর্ড স্যারকে মনোনীত করে। ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল 888sport app download bd প্রদান অনুষ্ঠান হয় কলকাতায়। সেদিন আমিও উপস্থিত ছিলাম গ্র্যান্ড হোটেলের মিলনায়তনে। প্রধান অতিথি ছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ।
আর একটি ঘটনার উল্লেখ করতে চাই। ইউনেস্কো কর্তৃক আমাদের ভাষা শহীদ দিবস ২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণার স্বপ্নদ্রষ্টা রূপকার ভ্যানকুভার প্রবাসী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট রফিকুল ইসলাম ২০০৫ সালে দেশে আসেন। তিনি আনিস স্যারের সঙ্গে ও আমার সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উদ্দেশ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘আমাদের ভূমিকা ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করেন। স্যারই আলোচনার সময় ও স্থান নির্ধারণ করেন – ২ জুলাই ২০০৫, স্থান : ধানমন্ডি ২৭নং সড়কে অবস্থিত ‘বেঙ্গল ক্যাফে’। ওই সভায় রফিকের বন্ধু সংগঠনের 888sport apps চ্যাপ্টারের আহ্বায়ক কবীর মেহরাবসহ আমরা কয়েকজন উপস্থিত ছিলাম। সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন আনিস স্যার। পরবর্তীকালে আনিস স্যার প্রস্তাব করেন আমাকে সংগঠনের 888sport apps চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করতে এবং মেহরাবকে জেনারেল সেক্রেটারির দায়িত্ব নিতে; মেহরাব প্রস্তাব করে স্যারকে সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করতে, স্যার তা সানন্দে গ্রহণ করে আমাদের কৃতার্থ করেছিলেন।
২০০৭ সালে আনিস স্যার আমেরিকা ও কানাডা সফরে গেলে রফিক স্যারের সঙ্গে টেলিফোন-আলাপে ইউনেস্কো কর্তৃক ঘোষিত ২১শে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণার ১৭ নভেম্বর দিনটিকে উদ্যাপন উপলক্ষে 888sport appয় এক মিনি ম্যারাথন দৌড় আয়োজন করার প্রস্তাব করেন। স্যার দেশে ফিরে এসে ১২ জুলাই ২০০৭, আমার শ্যামলীর বাসভবনে মেহরাব ও আমার সঙ্গে আলাপ করে ১৭ নভেম্বর ঘোষণার দিন উদ্যাপনের রফিকের ম্যারাথন দৌড়ের পরিবর্তে একটি আনন্দ র্যালি ও আলোচনা সভার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ২০০৭ সালে ১৭ নভেম্বরের বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা উপলক্ষে ২০ অক্টোবর টিএসসি মিলনায়তনে ৩০ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মান্যগণ্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে দিনটি উদ্যাপনের প্রস্তুতি সভা করা হয়।
২০০৯ সালের ৯ জুন স্যারের নেতৃত্বে মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভারস সংগঠনের পক্ষে আমরা 888sport apps সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করি। সময়ে সময়ে আমরা মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভারসের সভা স্যারের বাসায়ও করেছি। গত ১৮ ডিসেম্বর আমরা মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভারস অব দ্য ওয়ার্ল্ড, 888sport apps চ্যাপ্টারের উদ্যোগে ভাষা-আন্দোলন ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে’র ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্রের কাজ শুরু করি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনিস স্যারের ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে।
৩ মার্চ ২০২০-এ স্যারের ইন্টারভিউ নিই আমি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়ে (ভাষা-আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ডকুমেন্টারির জন্য ইন্টারভিউ) মাদার ল্যাঙ্গুয়েজের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে চিঠিতে সই করেছিলেন স্যার। চিঠিতে সই করে স্যার মেহরাবকে বলেছিলেন, সময়টা খুব একটা জুতসই নয়, কেননা সামনে ‘মুজিববর্ষের’ উদ্যাপন আছে। সাক্ষাৎ পাওয়া যাবে কি না কে জানে। মেহরাব স্যারকে বলেছিল – স্যার আমরা যদি এপ্রিল মাসেও একটা সময় পাই – সেই এপ্রিল মাসেই স্যার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গেলেন – ১৪ মে ২০২০-তে চলে গেলেন না-ফেরার দেশে।
২০০৩ সালে আমার গল্পসমগ্র প্রকাশিত হয়েছিল। বইটি আমি উৎসর্গ করেছিলাম স্যার ও ভাবিকে লিখেছিলাম –
প্রফেসর আনিসুজ্জামান
সিদ্দিকা জামান
প্রিয় নিসর্গের মুখচ্ছবি
এভাবে তাঁরা আমার 888sport apk download apk latest version আর ভালোবাসার মানুষ ছিলেন। স্যার অসুস্থ হয়ে ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ভাবির কাছ থেকে আমি খবরটা জানতে পারি। এরপর থেকে আমি স্যারের সঙ্গে ফোনে কথা বলিনি। ভাবিকে ফোন করতাম স্যারের অসুস্থতার খবর জানার জন্য। শেষ ফোন যেদিন করেছি ভাবি ফোন ধরে বললেন, আমি রাস্তায়। গাড়িতে। তোমার স্যারকে নিয়ে CMH হাসপাতালে যাচ্ছি। ওখানে ভর্তি করা হবে।
এই পরিস্থিতিতে আমি আর কথা বাড়াই না। ভাবিও ফোন রেখে দেন। ১৪ তারিখ স্যারের মৃত্যু নিয়ে আমি প্রথম ফোন পাই কবি-প্রাবন্ধিক কামরুল ইসলামের কাছ থেকে। দুচোখ পানিতে ভরে যায়। বারবার মনে পড়ে নিজের কথা, ‘প্রিয় নিসর্গের মুখচ্ছবি’। আমি কথা প্রসঙ্গে বিভিন্ন সময়ে বলতাম, স্যার আমার ক্লাসের শিক্ষক, তিনি আমার জীবনের শিক্ষক। তাঁর কাছ থেকে শেখার জগৎ পূর্ণ করতে পেরেছি বলে মনে হয় না। নিসর্গের বিশাল পৃথিবীর ভাবনায় স্যার আমার 888sport app download for androidের সবুজ বিস্তারে মাথার ওপরে বটবৃক্ষের ছায়া।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.