888sport sign up bonusর খেয়ায় : দুটো বই

সনৎকুমার সাহা

প্রত্যয়ী 888sport sign up bonus ও 888sport app
আবুল হাসনাত
জার্নিম্যান
888sport app, ২০১৯
৬০০ টাকা

আমি তাঁর চেয়ে বয়সে বড়। তখনো এটা জানি না। একরকম নামগোত্রহীন। নিজের মতো থাকি। এখান থেকে পূর্বমেঘ বেরোয়। সম্পাদনায় মুস্তাফা নূরউল ইসলাম ও জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী। দুজনই আমার স্যার। পাশে পাশে ঘুরঘুর করি।। হয়তো উৎসাহ দিতেই কটা লেখা আমার ছাপেন। নাম-ধাম হবার মতো নয়। পূর্বমেঘও থেমে গেল। কিছু করার নেই। এমন সময় হঠাৎ একদিন হাতে এলো তাঁর একটা চিঠি। সংবাদ তখন মূলস্রোতের অন্যতম প্রধান দৈনিক কাগজ। মনে হতো আমাদের কথাই বলে। সাপ্তাহিক 888sport live chat-888sport live football-সংস্কৃতির পাতা ‘সংবাদ সাময়িকী’। পাবার জন্য তাকিয়ে থাকি। আগ্রহ নিয়ে পড়ি। তেমন একদিন ওই একটা চিঠি। বোধহয় চুয়াত্তরে। যোগাযোগ করছেন ওই পাতার সম্পাদক আবুল হাসনাত। আমার উত্তেজনা আকাশছোঁয়। চিঠি লেখাতে কেটে গেছে অনেক দিন। মুখোমুখি দেখা বেশ পরে। অচেনা মনে হয়নি। আসলে এখন আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ তিনি একজন। যদিও দেখা-সাক্ষাৎ কালেভদ্রে।
আমার বিবেচনায় ওই পাতাটি তখন এদেশে মানুষের চেতনাকে জাগ্রত, বহুমুখী ও সমৃদ্ধ করায় সর্বাগ্রগণ্য হয়ে উঠেছে। শামসুর রাহমান তো ছিলেনই। সৈয়দ শামসুল হকও। তাছাড়া ওই সময়ের নতুন প্রতিভা সেলিনা হোসেন, শাহীন আখতার, মোহাম্মদ রফিক, রফিক আজাদ, অর্থনীতির সেলিম জাহান, এঁরাও এই পাতায় এমন এক স্বচ্ছন্দ মুক্তধারায় বিকশিত হয়ে আমাদের সমন্বিত রুচির মান বাড়িয়েছেন, ভাবনা মীমাংসায় নতুন নতুন পথ খুঁজেছেন, যা আমাদের ক্রমাগত ঋদ্ধ ও প্রশ্নব্যাকুল করে চলেছে। এঁরা অন্য কাগজেও লিখেছেন। কিন্তু এই পাতায় সব মিলিয়ে যে চারিত্র্য একক ঐশ্বর্যে প্রতিফলিত হয়েছে, তেমনটি ওই সময়ের বিস্তারে আর কোথাও চোখে পড়েনি। এখন বুঝি, এমনটি সম্ভব হয়েছে সম্পাদনার দায়িত্বে থেকে আবুল হাসনাত প্রচ্ছন্নে এই পাতা সাজাবার কাজটিতে নীরবে প্রাণসঞ্চার করে তাকে ক্রমাগত সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন বলে। এখন তিনি কালি ও কলমের সারথি। এর মাথায় যে সেরার পালক, তা আমাদের অবাক করে না।
তবে একটা বিষয় জানতে পারিনি। অকপটে বলি, জানার চেষ্টাও করিনি। সেটি তাঁর নিজের লেখালেখি। ওই সাময়িকীর পাতায় আবুল হাসনাতের স্বনামে কোনো লেখা কখনো ছাপা হয়েছে বলে মনে পড়ে না। বোধহয় অলিখিত একটা রেওয়াজ ছিল, সম্পাদক নেপথ্যে থাকবেন। তিনি এটা সতর্কতার সঙ্গে মানতেন। অবশ্য 888sport app download apk লিখতেন মাহমুদ আল জামান, এই ছদ্ম নামে। তখন নয়, পরে জেনেছি। আরো জেনেছি, তাঁর ছড়ানো-ছিটানো গদ্য রচনা এখানে-সেখানে ছাপা হয়েছে। আমি তো আগ্রহী পাঠক নই। খোঁজ রাখিনি।
কথাগুলো এভাবে বলার কারণ, আমাকে অবাক করে তাঁর দুটো বই সম্প্রতি আমার হাতে এসেছে। গদ্য। এবং স্বনামে। দুটোই 888sport sign up bonusকথা ঘরানার। একটিতে আছে, শৈশব থেকে যেভাবে বড় হয়ে উঠেছেন, ভালো-মন্দ বুদ্ধি-বিবেচনা যেভাবে গড়ে উঠেছে তার অকপট বর্ণনা। তবে গাণিতিক শুদ্ধতা মেনে ধারাবাহিক নয়। মাঝ দরিয়ায় খেয়া নৌকোয় চারপাশ যেমন দেখায়, তেমন। দিগ্বিদিক ঠাহর করা সহজ হয় না। ঢেউয়ের ধাক্কায় অগ্র-পশ্চাৎ হারিয়ে যায়। বইটির নাম হারানো সিঁড়ির চাবির খোঁজে। খুবই যথাযথ। অনিশ্চিত বাস্তবতায় এলোমেলো পথচলা, খেই হারানোর আশঙ্কা, অহেতুক ঘুরপাক খাওয়া, তবু হাল ধরে থাকা – এমন জীবনাভিজ্ঞতার প্রতীকী মর্মকথা এতে যেন ধরা দেয়। তবে যা একান্ত ব্যক্তিগত, তাতে সাড়া জাগে বুঝি অনেকের। দ্বিতীয় বইটির নাম, প্রত্যয়ী 888sport sign up bonus ও 888sport app। ওই একই জীবনের মর্মভূমিতে কিছু মানুষ, কিছু হারিয়ে যাওয়া মিলিত চঞ্চলতা স্থায়ী প্রেরণার মতো, প্রবহমান বেদনাস্রোতের মতো থেকে যায়। পরম মমতায়, পরিণতিহীন আক্ষেপে তাদের মনে করা, বেঁচে থাকার স্বাদ বুঝি কিছু পাওয়া – এও ব্যক্তিগত অনুভবের মায়া রচনা। তবে করাঘাত তার বহু মানুষের হৃদয়ে। অনেকের রক্তসঞ্চালনে মেশে। থেকে যায়। ঘুরে ঘুরে আসে।
বই-দুটো নিয়েই এখানে কিছু বলতে চাওয়া। দুটোয় বলার কথায় বা মেজাজে যেন যোগসূত্র আছে। মনে হয়েছে দুটোর ভেতরে যাতায়াতের পথ বুঝি সবসময়ে খোলা। একসঙ্গে নিলে আবুল হাসনাতের মনের পরিসরটাও বোধহয় তা স্পষ্টতর করে।

দুই
888sport sign up bonusকথা বা আত্মকথা লেখার চল বাংলায় তুলনায় অর্বাচীন। কারণটা বোঝা কঠিন নয়। উনিশ শতকের আগে বাংলা গদ্যের যে নমুনা মিলেছে তা ব্যবসায়িক লেনদেনের কাগজপত্র ঘেঁটে। তাতে মনের কথা খুলে বলার কোনো সুযোগ নেই। উনিশ শতকে এসেও গদ্য ধীরে ধীরে দানা বেঁধেছে। রাজা রামমোহন রায়ের হাতে এর ব্যবহার মূলত তর্কের বাহন হিসেবে। তারই অনুষঙ্গ তত্ত্ববিদ্যার ব্যাখ্যা, যা তাঁর অবস্থানকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে জরুরি মনে হয়। এর মননপ্রভা অম্লান। শক্ত-গাঁধুনি ঈর্ষণীয়। যদিও রাত-দিনের আলাপের উপযোগী নয়। তিন-চার দশক পরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের হাতে গদ্যভাষা একটা সর্বজনীন শৃঙ্খলার ভেতরে ভদ্র-সভ্য-সংহত ও লাবণ্যময় আকার পায়। পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন তর্কমুখর হয়ে ওঠাতে তাতে যৌক্তিক আক্রমণের অস্ত্রও বহুমুখে শাণিত হয়। সমসাময়িক অন্য একটি ধারাও কিন্তু সূচনা করেন প্যারীচাঁদ মিত্র। কথ্যভাষার দৈনন্দিন ছাঁচটিকে অবলম্বন করেই তিনি প্রাত্যহিক জীবনের কল্পরূপ আঁকতে শুরু করেন। হয়তো ভারসাম্যের অভাব ছিল। কিন্তু আজ দেখি, বঙ্কিম যেমন অনুমান করেছিলেন, বাংলা গদ্যে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব তাঁরই বেশি। অবশ্য সক্ষম গদ্যে বিদ্যাসাগরের মননপ্রভা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো পথ নেই। তারপরেও বাংলা গদ্য যে আত্মনির্ভর ও বহুমুখী হতে পেরেছে, তার পেছনে প্রধান চালিকাশক্তি মুদ্রণযন্ত্রের ব্যবহার। এটা নয় যে, উপমহাদেশে আগে গদ্যের চল ছিল না। তামিল গদ্য সংস্কৃতের চেয়ে প্রাচীন। তুর্কি ভাষায় বাবরের আত্মকথা বাবরনামার গৌরব এখনো অক্ষুণ্ন। কিন্তু বাংলায় এসবের কোনো প্রভাব পড়েনি। ইংরেজদের এখানে উপনিবেশ স্থাপন ও মুদ্রণযন্ত্র ব্যবহারের সূত্রপাত প্রায় সমসাময়িক। দুইয়ের প্রভাবই পড়ে বাংলা গদ্যের বিকাশের ওপর এবং প্রাথমিকভাবে আত্মকথা রচনাও একটা পথ পায়। কালক্রমে হয়ে পড়ে তা বহুমাত্রিক, বহুমুখী। কে কী দেখছেন, কীভাবে দেখছেন, কতদূর দেখছেন – এসবের ছাপ তার ওপর অনিবার্যভাবে পড়ে। সততাও একটা ব্যাপার। কতটা বলি, আড়াল যদি কিছু করি, তবে সে কতটুকু, অনিচ্ছাতেও হারিয়ে যায় কত কী, এদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাতে যা থাকে তা কি কেবল ব্যক্তিগত বলে পার পেয়ে যেতে পারে? কালের দাবিও একটা আছে। এবং তা নৈর্ব্যক্তিক চৈতন্যশাসিত ফসল। তার সঙ্গে বোঝাপড়ার ছাপ যদি আত্মকথায় না থাকে, তবে তা উপভোগ্য হলেও যথার্থ হবে কি? এমন অনেক লেখা আমরা পড়ি, যাদের প্রসাদগুণ তৃপ্তি দেয়। কিন্তু অনুত্তর থাকি এ-প্রশ্নের সামনে, তা কি প্রকৃত বাস্তবের প্রতিরূপ নাকি পছন্দ-বাস্তবের কল্পিত রূপায়ণ? বাস্তবে যদি তা পাঠক-পাঠিকার আবেগের সমর্থন পায়, তবে তাতেই তার সার্থকতা। তাৎক্ষণিক নগদ মূল্য হয়তো মেলে। কিন্তু চেতনায় যথার্থ মূল্য সংযোজন যদি কিছু না হয়, অথবা ভ্রান্তির চাকচিক্যে যদি মন ভরে, তবে সবটাই অসার। মেকি দেবতার পুজোয় আমরা নৈবেদ্য সাজাই। ফল লাভ তাতেও ঘটতে পারে। ভালো-মন্দ আপেক্ষিক। এইটে মেনে নিয়েই 888sport sign up bonusকথায় মন দিই। যদিও গুরুত্ব বিচারে কোনো সিদ্ধান্ত টানা আমার সাধ্যের বাইরে। আমি কেবল আমার কথাই বলি।
হারানো সিঁড়ির চাবির খোঁজের ভূমিকায় আবুল হাসনাত জানাচ্ছেন – ‘আমার জীবন কোনো অর্থেই বর্ণময় নয়। সাধারণ ও আটপৌরে। তবে প্রত্যক্ষ করেছি এদেশের মানুষের সংগ্রাম ও বিজয়। এই বিজয় আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে বাঙালি সমাজকে স্বাজাত্যবোধে উদ্দীপিত করেছে। জাতীয় বিকাশ ও 888sport live chat ও 888sport live footballের প্রতিটি ক্ষেত্রকে করে তুলেছে দীপিত। এ যে কত বড় অভিজ্ঞতা তা বলে শেষ করা যায় না। … ধারাবাহিকভাবে সে বৃত্তান্ত বর্ণনা করিনি – পরের ঘটনাপ্রবাহ আগে বর্ণিত হয়েছে আর আগের কথা শেষে চলে গেছে। এ প্রচলছেঁড়া বিন্যাস আমাদের জীবনের প্রবাহের মতোই আনন্দ ও বেদনার অনুষঙ্গী।’
তাঁর এই বর্ণনা অবশ্যই আমাদের আনন্দ দেয়। বেদনাতেও ভাসায়। তবে আমাদের জীবনের প্রবাহ অনিবার্যত একমুখো। সবার মিলিত ইচ্ছা-অনিচ্ছা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, স্থিতি-গতি সঙ্গে-সঙ্গে চলে। ভারসাম্য কখনো টুকরো-টুকরো করে ভাঙে, কখনো বা থাকে অবিচল। বেঁচে থাকা-মরে যাওয়া ঘটনা মাত্র। কিছুতেই কিছু যায়-আসে না। ওই ষাটের দশকের শেষে, শুধু এখানে নয়, উন্নত বিশ্বের স্নায়ুকেন্দ্রেও ছাত্রসমাজের স্বতঃস্ফূর্ত মুক্তির আকাঙ্ক্ষা ও আশা-জাগানিয়া প্রতিবাদ মূর্ত হয়ে উঠেছিল। আমরা আকাশপানে হাত বাড়িয়েছিলাম। হাতের মুঠোয় অসম্ভব ধরা দিয়েছে। ফসকেও গেছে। ‘কাল নিরবধি’ থেমে থাকেনি। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কমেনি। খেয়া নৌকোয় সবাই ভাসমান। বড় বড় ঢেউ ঝাপটা দেয়। সামলাই। পড়েও যাই। আবার উঠি। দিগ্‌ভ্রমও ঘটে। বেলা-অবেলার হিসাব মেলে না। চলাটুকু যা সম্বল। জীবন-মরণের সীমানা পেরিয়ে। দিনের পরে দিন যে যায়। অবিরাম। ফেরানো যায় না।
তবু ‘হারানো সিঁড়ির চাবি’ খোঁজা। পেছন ফিরে সবটা দেখার আকুতি মরে না। প্রতিদিনের পথের ধুলোয় হয়তো মিশে থাকে। অবস্থা দেখা দেয় এখানে এক ধাপ, ওখানে অন্যটা। সবটা ফোটে না। হারানো চাবি মেলে না। তাই খোঁজ তার অবিরাম। হাতড়ে হাতড়ে ওই 888sport sign up bonusর খেয়াতেই। এবং তা অকৃত্রিম-আন্তরিক। ‘যেমন আছো তেমনি আসো’ – এ যেন তাই। তাঁর সত্যস্বরূপ অনাবিল ফোটে। শুরুটা তাঁর মুক্তিযুদ্ধে ঘর ছাড়ার বর্ণনা দিয়ে। সেই সূত্রে অনিবার্য মায়ের কথা। ‘আমি যখন মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ চলে যাচ্ছি বন্ধু ডা. ওয়াজেদুল ইসলামের সঙ্গে নিরুদ্দেশে, তখনো তিনি আমাদের বাড়ি ৯২ যুগিনগরের দোতলার রেলিংয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, যতক্ষণ আমাকে দেখা যায় ততক্ষণই তিনি নির্নিমেষ চেয়ে ছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ‘খুব শিগগির ফিরব’ বলে আমি যে চলে যাচ্ছি – এই বাড়ি ফেরা সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। …’ আসলে সেই 888sport app ছাড়ার পর টানা চার মাস পরিবারের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ ছিল না। আগরতলা হয়ে মুক্তিযুদ্ধের কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে বাকি সময়ের বেশির ভাগ তাঁর কলকাতায় কাটে। এক বিন্দু ফুরসত ছিল না। দলীয় সঙ্গীদের অস্ত্র হাতে প্রশিক্ষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা তদারকি করা থেকে উদ্বাস্তু শিবিরে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া, আবার 888sport appsের সাংস্কৃতিক পরিচয় ফুটিয়ে তোলায় নেতৃত্বে সংযোগ রেখে অবিরাম সহযোগিতা করা, এসবে আকণ্ঠ নিমজ্জিত থেকে কেটেছে তাঁর আমাদের মুক্তির সংগ্রামের পুরোটা সময়। বিষয় বর্ণনায় যথার্থই তিনি এই সংগ্রামের পুণ্য888sport sign up bonusকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর বলার কথা এখান থেকেই শুরু নয়। শৈশব, কৈশোর, বেড়ে ওঠা, কর্মজীবন – সবই এসেছে ঘুরেফিরে, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। অনেক কিছু জানি। কিন্তু অগোছাল মনে হয় না। আগ্রহে ভাটা পড়ে না।
তিনি কিন্তু কোথাও মাত্রা ছাড়ান না। বরাবর নিজের জায়গায় সৎ ও সংযত থেকেছেন। আত্মপ্রচারে নামেননি। শামুকের মতো নিজের ভেতরে গুটিয়েও যাননি। ভাষায় বাড়তি আড়ম্বর এতটুকু নেই। মর্যাদা কিন্তু তাঁর অক্ষুণ্ন থেকেছে। তাঁকে চিনি। তাই পড়ার সময় মনে হয়েছে, আমি যেন সামনে বসে তাঁর কথা শুনছি। তিনি যেমন, ঠিক তেমন।
মুক্তিযুদ্ধে হাসনাতের অংশগ্রহণ 888sport appsের কমিউনিস্ট পার্টির হয়ে। তাদের নির্দেশনায় অক্ষরে-অক্ষরে তাঁর দায়িত্ব পালন। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার শপথ থেকে তিনি একচুল নড়েননি। অবশ্য সেখানে প্রবাসী 888sport apps সরকারের সঙ্গে সমঝোতা হওয়ায় একই লক্ষ্য সামনে রেখে অগ্রসর হতে কোনো সমস্যাও তৈরি হয়নি। তবু আদর্শগত অবস্থান থেকে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে যৌথ কমান্ডে তাঁরা লড়েছেন। জানতে পারি, মুজিবনগর সরকারের সরাসরি কর্তৃত্বে প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধা ছিল পনেরো হাজার। কমিউনিস্টদের তত্ত্বাবধানে দশ হাজার। সবাই চলতো সেক্টর কমান্ডারদের নির্দেশ মেনে। দশ হাজার সেনার আরো একটা বাহিনী গড়ে উঠেছিল। একইভাবে নিয়েছিল সামরিক প্রশিক্ষণ। তবে তারা তাজউদ্দীন সরকারের মাথাব্যথার কারণ ছিল মুক্তিসংগ্রামকালে সবসময়। পঁচাত্তরের বিভীষিকায় তাদের নেতৃত্ব পরোক্ষে ইন্ধন জোগায়। ক্ষমতার পাশাখেলা কিন্তু তাদের বিন্দুমাত্র করুণা করেন। হাসনাত এদিকটিতে নজর দেননি। সমভাবাপন্নদের নিয়ে মুক্তিসংগ্রামের মৌলিক আদর্শে অটল থেকে সাংগঠনিক, সাংস্কৃতিক ও উদ্বাস্তু-ত্রাণ সংক্রান্ত কাজে নিজেকে দিনরাত এক করে ব্যস্ত রেখেছেন। এসব কথা বইটিতে উঠে এসেছে। ধারাবাহিক দিনক্ষণ মেনে নয়। ভাবনায়-কথায় যেমন এসেছে তেমন। পঁচিশে মার্চ রাতের বিভীষিকার প্রত্যক্ষ বর্ণনায় আছে জনন্নাথ হলে নরককাণ্ড থেকে কমরেড কালীরঞ্জন শীলের অবিশ্বাস্য উদ্ধার পাওয়ার গায়ে কাঁটা দেওয়া কথা। তিনি কিন্তু আজ নেই। পরে অকালেই চলে গেছেন। আদর্শচ্যুত হননি। কোনো মরীচিকার পেছনে ছোটেননি।
জন্ম, শৈশব, কৈশোর, বড় হওয়া, কর্মজীবন – হাসনাতের সবই 888sport appয়। এখনো। তাঁর 888sport sign up bonusর শহর, জীবনযাপনের শহর এই 888sport app তিনি যেমন দেখেছেন, দেখছেন, তার বিবরণ মিশে আছে নানা কথায়। বিশেষত্বহীন অতিসাধারণ ছিল তাঁর পারিবারিক পরিমণ্ডল। সর্বংসহা মা, বাবার অসহিষ্ণু ক্রোধ, হতাশা, আক্ষেপ, ঠোক্কর খেতে খেতে স্কুলের দিনগুলো পার করা, এসবে গতানুগতিকতার বাইরে কোনো জৌলুস ছিল না। চোখকাড়া কোনো কীর্তিও না। এলেবেলে বলতে যা বোঝায়, তাই। ক্রিকেট খেলার নেশা একসময় পেয়ে বসেছিল। দলের টিমে জায়গাও করে নিয়েছিলেন, এই যা। কথাগুলো পরপর এভাবে সাজিয়ে তিনি বলেননি। নানা কথার ফাঁকে ফাঁকে উঠে এসেছে। কিন্তু হারিয়ে যায়নি। একটা সংবেদনশীল মন গড়ে উঠছে এটা টের পেয়েছি। তিনি অবশ্য আলাদা করে নিজেকে দেখানোর চেষ্টা করেননি। হাটে-মাঠে-ঘাটে অখ্যাত-অনেকের ভেতর জীবন যেমন কাটে, তেমন।
তবে ওই অনেকের ছবি ফুটে ওঠায় এমন কিছু পাই, যা আগের কোনো 888sport sign up bonusকথায় এভাবে আসেনি। 888sport appজীবনের 888sport app download for androidীয় কথা অবশ্যই পেয়েছি। কোনো কোনোটি মনে গাঁথা হয়ে আছে। কিন্তু সবাই ভগ্নাংশ। আপনা থেকে এমন কোনোটা পুরো হয়ে ওঠেনি। হয়তো অন্যদের জীবনের পরিধি ছিল সমাজবাস্তবতার বেড়াজালে একপেশে, হয়তো পূর্ণদৃষ্টিতে দেখার বস্তুগত মানসিকতা ছিল সংকীর্ণ, প্রসাধনেও হয়তো নজর ছিল বেশি, যাতে আসলে-নকলে বাছবিচার আড়ালে পড়ে যেত, তাই হাতে যা পাই, তাতে মন ভরে না। হাসনাত কিন্তু পূর্ণদৃষ্টিতে অতীতে ও বর্তমানে চোখ রেখেছেন। মানব-বাস্তবতাকে খণ্ড খণ্ড করে দেখেননি। ক্ষত ও ক্ষতি যা মানুষের বিকৃত আত্মপরিচয়ের অসৎ উন্মাদনার কালগ্রাসী পরিণাম, তার নিরাসক্ত বর্ণনায় তিনি অবিচল থাকেন। আমরা জানি এই শহরেই গত শতকের চল্লিশের দশকে এক ফেরিওয়ালা অমর্ত্য সেনদের ‘ভুল’ পাড়ায় ঢুকে পড়লে ওখানকার বীরের দল জান্তব উল্লাসে তাকে হত্যা করে। সেই থেকে অমর্ত্য সেনের চেতনায় রক্তক্ষরণ অনিঃশেষ। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে উত্তেজনার বিশেষ বিশেষ কালখণ্ডে হাসনাতও এই রকম যন্ত্রণায় দগ্ধ হয়েছেন। তিনি তা আড়াল করেননি।
সম্ভবত সমাজতান্ত্রিক ভাবাদর্শে দীক্ষিত হওয়ার ফলেই হাসনাতের মানবিক বোধ এত স্বচ্ছ। বিশ্ববাস্তবতায় চড়াই-উতরাইয়ের গনগনে আঁচ গত নব্বইয়ের দশকে 888sport appsের কমিউনিস্ট পার্টিকেও পুড়িয়ে ছত্রখান করে। তিনি দল ছাড়েন। কিন্তু সমতার আদর্শ থেকে সরে আসেননি। ‘সংবাদ সাময়িকী’ সম্পাদনায় উদার মানবিক বোধ একই রকম বজায় থাকে। বৈরী সময়েও হাল ধরে থাকেন অবিচল। কাগজের ভেতরে-বাইরে সংকটই তাঁকে ওই কাজ ছেড়ে দিতে বাধ্য করে। তবে ওই কালপর্বে তাঁর সম্পাদনার ছাপ পাতাটি সগৌরবে ধরে রাখে। এমনটি সম্ভব হয়েছে তাঁর মানবিকবোধে সমদর্শিতায়, চিত্তের নির্মাল্যে ও কাজে ঐকান্তিক সততায়। কালি ও কলম সম্পাদনার দায়িত্ব নিয়ে তিনি একই রকম তাকে উজ্জ্বল করে তুলছেন। সতেরো বছরে এ যে 888sport live chat 888sport live football সংস্কৃতি ভাবনায় বাংলার সেরা হয়ে উঠেছে, এর কৃতিত্ব সিংহভাগ তাঁর।
হাসনাত যে আমাদের মুক্তিসংগ্রামে সক্রিয় অবদান রাখতে পেরেছিলেন, এটা তাঁর এক মহৎ প্রাপ্তি। কৃচ্ছ্রসাধন কম ছিল না। অনিশ্চয়তার মুখোমুখি কেটেছে প্রতিটি মুহূর্ত। তিনি সংহত থেকেছেন। যত অসুবিধার মুখোমুখিই পড়ুন, নিঃশব্দে নিজের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ এতটুকু অবহেলা করেননি। সমঝোতা ছিল তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গঠিত প্রবাসী সরকারের সঙ্গে। তাই সব প্রয়াসই সৎ থেকেছে। গণপ্রজাতন্ত্রী ধর্মনিরপেক্ষ 888sport apps মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। অন্তর্ঘাতের আশংকা ছিল। তার প্রমাণও এখন প্রকাশ্যে। তবু ওই একাত্তরে ষোলোই ডিসেম্বর ঠেকানো যায়নি। তার জন্যে হাসনাতও ছিলেন সহযোদ্ধা। এটা তাঁর মহৎ তৃপ্তি। আমরাও তাঁর বন্দনা গাই। তিনি নিজে অবশ্য, এ-বইতেও, পাদপ্রদীপের আলো এড়িয়ে যান।
আর একভাবে কলকাতায় থাকা তখন হাসনাতকে 888sport live chat-888sport live football-সংস্কৃতির বৃহত্তর পরিসরে নিজেকে চেনানোর ও আর সবাইকে চেনার সুযোগ করে দেয়। তিনি এভাবে বলেননি। তবে আমরা দেখি কলকাতায় এমন অনেকের সঙ্গেই পরিচয় ঘটছে যা উত্তমর্ণের সঙ্গে অধমর্ণের যোগাযোগের মতো নয়। বরং পারস্পরিক সৌহার্দ্যে ও 888sport apk download apk latest versionয়। 888sport apk download apk latest versionর অনেকটাই অবশ্য মুক্তিসংগ্রামে আন্তরিক আত্মনিবেদনের অর্জন। তাছাড়া তাঁর শুদ্ধ মানবিক বোধ, সততা ও মনের ব্যাপ্তি তাঁকে অনুপেক্ষণীয় করে তোলে। পরে এই যোগাযোগের বিস্তার ক্রমাগত বাড়ে। কালি ও কলম বেরোনোর সময় তা খুব কাজে লাগে, বাংলায় এমন কাগজ 888sport apk download apk latest version পায় সবখানে। সব বাঙালির 888sport live footballরুচি, মানবিক প্রত্যাশা ও 888sport live chatবোধের পরাকাষ্ঠাকে এ মূল্য দেয়। সারাবিশ্বের মানবকলাতেও এর উৎসাহ। অনেক অস্থিরতার ভেতরেও আমরা এতে আশ্রয় খুঁজি। একাত্তরের ওই সংযোগ, মনে হয়, এর ভিত গড়ে দিয়েছে।
হাসনাত লিখেছেন, ষাটের দশকের ছাত্র-আন্দোলন তাঁকে সংগ্রামী হতে শেখায়। বন্ধু মতিউর রহমানের মেধা ও উৎসাহ তাঁকে বামপন্থী ভাবধারায় পুষ্ট করে। ওই সময়ে ছাত্র ইউনিয়ন সংগঠনে তিনি সর্বাত্মক জড়িয়ে পড়েন। আইয়ুব খানের অচলায়তনে সংগ্রামী ছাত্র-আন্দোলনের বারবার আঘাত তার ভিত নড়বড়ে করে দেয়। বাষট্টির শরীফ কমিশনের শিক্ষানীতি-বিরোধী জোরদার সফল আন্দোলনে তখন ছাত্র ইউনিয়নই ছিল নেতৃত্বে। পরে চৌষট্টির প্রবল প্রতিবাদেও। ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলনের কাল থেকে ছাত্রলীগ সামনে চলে আসে। ঊনসত্তরের সামরিক শাসনবিরোধী
ছাত্র-আন্দোলন গণআন্দোলনের আকার নেয়। আইয়ুবশাহির পতনের পেছনে এর ছিল মুখ্য ভূমিকা। তখন ছাত্র ইউনিয়ন দ্বিধাবিভক্ত। তবে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদে তাদের ভূমিকা ছিল সর্বাত্মক। ওই সংগ্রামের সূত্র ধরেই ঘটে গণবিস্ফোরণ। তাতে শুধু যে আইয়ুব খানের পতন ঘটে, তাই নয়, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ফেঁসে যায়। বিজয়ীর বেশে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন শেখ মুজিবুর রহমান। পরদিন ওই সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত মহাসভায় বিপুল জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অনুমোদনে তিনি হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু। আর এক ধাপ পরেই আমাদের মুক্তিসংগ্রাম-স্বাধীনতা সংগ্রাম। ওই দশকে ছাত্র-সমাজের ধারাবাহিক উত্থানে সামনে থেকে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতায় হাসনাতের যে গৌরবদীপ্ত অর্জনে শামিল হওয়ার অহংকার, তা খুবই সংগত। কিন্তু আমাদের উল্টো দিকটাও দেখতে হয়, যা পরে আমাদের অনেক দুর্গতির পথ একই সঙ্গে রচনা করে চলে। স্বাধীন 888sport appsে আমরা বারবার পথভ্রষ্ট হই। নিশ্চিন্ত থাকতে পারি না।
তবে ওই ষাটের দশক হাসনাতের মতো আমারও হয়ে ওঠার সময়। অবশ্য কেন্দ্রভূমিতে নয়, পার্শ্বভূমিতে। তারপরেও ওই গৌরববোধ আমারও। যদিও মনে করি, পবিত্র উৎসভূমি বাহান্নোর 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি। ষাটের দশকে ঘটেছে নানামুখী স্বার্থের সংযোগ। তাই পটভূমি তুলনায় অস্বচ্ছ। সরলাংকে সবটুকু সমাধান মেলে না। দ্বিঘাত-ত্রিঘাত, অথবা কখনো-কখনো তারও বেশি মাত্রার সমীকরণের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। আমরা দেখি ছাত্রসমাজেও কায়েমি স্বার্থ অনেক বেশি হিসেবি, অনেক বেশি হিংস্র। সামনে এনএসএফের গুণ্ডামি একটা প্রচ্ছদ মাত্র। বিকার শিকড় ছড়ায় গোটা শিক্ষাব্যবস্থার মর্মমূলেই। ছাত্রদের আপসহীন সংগ্রামে ওই সময়ের কর্তৃত্ববাদীরা নিশ্চিহ্ন হয়। কিন্তু কর্তৃত্ববাদী আগ্রাসন যায় না। লতায়-পাতায় ছড়ায়। স্বাধীনতার পরেও। এবং শক্তিচক্রের আশ্রয়ে আরো নির্মম। আরো বেপরোয়া। উদ্বেগ আমাদের কাটে না। ষাটের দশকে এখানে বাঙালি তার মহৎ স্বপ্নকে আকাশমুখো করার শক্তি ও সাহস সংহত করেছে, সেই সঙ্গে অস্তিত্বে নির্মম বিকারের গ্লানিকেও নরকের পথে চালিত করার কলাকৌশল শিখিয়েছে। আমাদের দিন কাটে, রাত কাটে এসবের মুখোমুখি হতে হতে।
সুনির্দিষ্টভাবে হাসনাত তারিখ উল্লেখ করেননি, তবে আগে-পিছে মিলিয়ে পড়লে, অনুমান, সময়টা গত নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে – তিনি তখন ব্যক্তিগতভাবে পার্টি ছেড়ে দেন; যদিও বলছেন, ‘একদিনের জন্য কমিউনিস্ট আদর্শকে শত টালমাটালের মধ্যেও ত্যাগ করিনি কিংবা কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দিইনি। …’ দলীয় নেতা ও কর্মীদের ভেতর অস্থিরতা তখন তীব্র হয়ে উঠেছিল। এমন পরিস্থিতিতে অপ্রত্যাশিত নয়, দলীয় বিষয়-সম্পদের অধিকার নিয়েও দ্বন্দ্ব কাড়াকাড়ির পর্যায়ে চলে এসেছিল।
মানসিকভাবে হাসনাত যে কতটা আঘাত পেয়েছিলেন, তা অনুমান করতে পারি। সাম্যের বাণী আমাদেরও আকৃষ্ট করেছিল। জাগ্রতও। জাতি-ধর্ম-বর্ণের বিভাজন দূর হবে, ছোটলোক-ভদ্রলোক তফাত থাকবে না, আয় ও সম্পদের বণ্টনে সমতা আসবে, লক্ষ্য হিসেবে এগুলো আমরা লালন করতাম। এদের অর্জনের সংকল্পে অনেকে জীবন বাজি রাখতেও তৈরি ছিল। প্রেরণা হিসেবে কাজ করত সোভিয়েত ইউনিয়ন, পরে গণচীন। বাস্তবের সীমাতেই যে লক্ষ্য অর্জন সম্ভব, এটা জেনে আমাদের মনের জোর আরো বেড়ে যেত। লেনিন ছিলেন আমাদের কাছে দেবতুল্য। স্ট্যালিন ও মাও, অতিমানব। তাঁদের কীর্তি যেন রূপকথা। প্রথম ধাক্কা খাই স্ট্যালিন পর্ব শেষ হলে ক্রুশ্চভ যখন তাঁর অতিদানবিক কাণ্ডের ফিরিস্তি দলীয় সভায় পেশ করে তাঁর খলনায়ক হিসেবে পরিচিতি ঘটান, তখন তা মস্কোয় অনুমোদন পেলেও চীনে চেয়ারম্যান মাও স্ট্যালিন অনুসারী একনায়ক থেকে যান, নরমপন্থীদের বহিষ্কার করেন ও সাংস্কৃতিক বিপ্লব নামে দলে বুর্জোয়া অবশেষ উৎখাতে নামেন। যদিও সামাজিক ও আর্থনীতিক – দুদিক থেকেই তা ছিল উদ্ভট। কমিউন প্রথা চালু করে শ্রমশক্তি বাধ্যতামূলক একত্রীকরণে পূর্ণ বিশৃঙ্খলায় যে দুর্ভিক্ষ হয়, তাতে ১৯৫৮ থেকে ১৯৬২-র ভেতর কমপক্ষে ষাট লাখ মানব-মানবী প্রাণ হারায়। মাও তাঁর কৃষিনীতি পালটাতে বাধ্য হন। কিন্তু শোধ নেন ১৯৬৫ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত সাংস্কৃতিক বিপ্লবের নামে পলিটব্যুরোয় তাঁর নীতির বিরোধিতা যাঁরা করেন, তাঁদের সবাইকে প্রকাশ্যে জনসমক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করে। স্ট্যালিনের মতো উগ্র সন্দেহবাতিকগ্রস্ত হয়ে কাউকে নিশ্চিহ্ন করেছেন কি না, এটা অবশ্য জানা যায় না। তবে সংস্কৃতি-বিপ্লব যে বহু অজানা মানুষ লোপাট করেছে – তা নইলে বিপ্লব সর্বাত্মক হয় না – এটা অনুমান করা যায়। মাওয়ের ১৯৫৮-র ‘বৃহৎ উল্লম্ফন’ কাণ্ড ও ১৯৬৫ থেকে সাংস্কৃতিক বিপ্লবে অনুপ্রাণিত হয়ে এ-অঞ্চলেও ‘চীনের চেয়ারম্যান আমাদের চেয়ারম্যান’ আওয়াজ তুলে তখন সাচ্চা সমাজতন্ত্রের উগ্র দাবিদাররা হিংসাশ্রয়ী ‘গলাকাটা’ আন্দোলনে মাতে। বিপুল মমতায় তাদের নিয়ে মহাশ্বেতা দেবী লিখেছেন তাঁর সাড়া জাগানো 888sport alternative link হাজার চুরাশির মা। এটাও কিন্তু খেয়াল করার, ওই আন্দোলনে কলকাতার শিক্ষিত পরিবারের ‘আরবান গেরিলা’ যাঁরা রক্ষা পেয়েছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই নিরাপদ আশ্রয় মিলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। আমাদের এই ভূখণ্ডে বামপন্থী আদর্শের প্রেরণা বা কর্মকাণ্ড কখনোই দ্বিমাত্রিক ছিল না। বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন যদিও সংবেদনশীল অনেক তরুণমনকে সবসময় আকর্ষণ করেছে।
গত নব্বইয়ের দশকে 888sport appsের কমিউনিস্ট পার্টির এবং সেইসঙ্গে 888sport app বামপন্থী সংগঠনের প্রায় নিশ্চিহ্ন হওয়ার পেছনে মূল কারণ কিন্তু বৈশ্বিক। সবাই জানেন আন্তর্জাতিকতাবাদ সব বাম ধারায় প্রাথমিক বিন্দু। মস্কো ছিল তার কেন্দ্রভূমি। সেখান থেকেই নির্ধারিত হতো পার্টি-লাইন কোথায় কী ও কেমন হবে। স্ট্যালিন-পরবর্তীকালে মাওয়ের নেতৃত্বে পিকিংয়ে স্ট্যালিনপন্থী দ্বিতীয় কেন্দ্রের উদ্ভব ঘটে ষাটের দশকের গোড়ায়। আমাদের এখানেও তখন কমিউনিস্ট আন্দোলন দুভাগে ভাগ হয়ে যায়। পরিস্থিতি জটিলতর হয় সত্তরের দশকে বিশ্ব অর্থনীতিতে তুমুল সংকটে। তিয়াত্তরে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো জোট বেঁধে ওই তেলের দাম রাতারাতি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়ায় সব পণমূল্যে তার প্রভাব পড়ে। চাহিদাতেও পড়ে বিপরীত প্রভাব। ফলে একই সঙ্গে দেখা দেয় মুদ্রাস্ফীতি ও মন্দা। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় নির্দেশনা কাজে আসে না। এমনকি মোট উৎপাদন হারও চোখ রাঙায়। আমলাতান্ত্রিক স্থবিরতা গোটা ব্যবস্থাকে জড়ত্বের পথে ঠেলে। সোভিয়েত ইউনিয়নে কিছু কিছু উৎপাদন ব্যক্তিমালিকানায় ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বন্ধ্যত্ব কাটে না। গর্বাচভের পেরেস্ত্রইকা ও গ্লাসনস্ট গণবিরূপতাকে প্রকাশ্যে আনে, কিন্তু উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি আনে না। চীনে ছিয়াত্তরে মাও জে দং-এর জীবনাবসানের পর ভিন্নমতাবলম্বী যাঁরা, তাঁদের হাতেই চলে আসে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা। এক অদ্ভুত ব্যবস্থার উদ্ভব ঘটতে থাকে। রাষ্ট্রক্ষমতায় কমিউনিস্ট পার্টির দখলে কোনো পরিবর্তন আসে না। কিন্তু উৎপাদনকাণ্ডে – জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয়তই – কোনো বাধা আর থাকে না। সবটাই উন্মুক্ত। বাজার অর্থনীতি অবাধ। তারপরেও অতি উৎসাহী তরুণসমাজ স্বপ্ন দেখে আরো বাকস্বাধীনতার, সাংস্কৃতিক উচ্ছলতার। ১৯৮৯-তে ২-৩ জুনে তিয়েন-আন-ম্যান স্কয়ারে সমবেত হয়ে তারা তাদের প্রত্যাশার প্রকাশ ঘটালে রাষ্ট্রশক্তি বিপুল বিক্রমে তা ধূলিসাৎ করে দেয়। কত হাজার প্রাণ যে ঝরে পড়লো, তা আন্দাজের ব্যাপার। প্রকাশ্যে চীনের চেহারা আর অশান্ত নয়। তবে এই তালমিল উদ্বেগ কমায় না। বিশেষ করে, যখন জানি, সেখানে পলিটব্যুরো সদস্যদের বেশিরভাগই এখন বিলিয়নিয়ার।
১৯৯২-তে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ে। বাইরের আক্রমণে নয়, দলীয় অন্তর্ঘাতে। এবং আইন জারি করে নিষিদ্ধ হয় কমিউনিস্ট পার্টি। তারই অভিঘাতে বিদীর্ণ হয় 888sport appsের কমিউনিস্ট পার্টি। কারণ আন্তর্জাতিকভাবে তার গাঁটছড়া বাঁধা ছিল মস্কোর সঙ্গেই। তবু হাসনাতের বিষাদ আমাদেরও বিদীর্ণ করে। স্বপ্নের জাল যে বুনবো, তার অবলম্বনটুকুও যে হারিয়ে যায়। আরো যা দেখি, তা তথ্যপ্রযুক্তির বিস্ময়কর বিপ্লব, আর তার হাত ধরে বিশ্বায়ন। আমরা কীভাবে এর সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারি, সেইটিই প্রধান ভাবনা হয়ে দাঁড়ায়। বাস্তবে একটা ঢাল খুঁজি। তার আড়ালে থেকে যা খুশি করে পার পেয়ে যাওয়াতেই সিদ্ধি। এটা নিশ্চিন্ত করে না। উদ্বেগ বাড়ায়। হাসনাতের হারানো সিঁড়ির চাবি খোঁজার পেছনে আপাত প্রসন্নতা কি তা ঢাকতে পারে?

শুরুতেই জানিয়েছি হাসনাতের দ্বিতীয় বইটির নাম প্রত্যয়ী 888sport sign up bonus ও 888sport app। আংশিকভাবে হলেও, আমার মনে হয়েছে, প্রথম বইটির খাঁচায় পুরোপুরি মানানসই নয়, অথচ অভিজ্ঞতাকে ইতিবাচকভাবে প্রসারিত করে, জীবনের স্বাদ-বর্ণ-গন্ধ বিচিত্র আয়োজনে ভরে দেয়, 888sport sign up bonus হয়ে তৃপ্তি দেয়, হয়তো বর্তমানে 888sport sign up bonus হয়েছে বলে বেদনাও, এমন কিছু মানব-মানবীর সান্নিধ্য বা কীর্তির কথা, তাঁদের সংযোগে নিজের সমৃদ্ধ হওয়ার কথা তিনি এখানে আমাদের শুনিয়েছেন। অহেতুক নয়। পড়ে আমরাও বাঁচার রসদ কিছু না কিছু পাই। আরো অনুমান, একাত্তরে তিনি যে অনিবার্য স্রোতে নিজেকে ব্যাপ্ত করার সুযোগ পান, তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ পরিণাম এখানে বেশির ভাগ রচনা। প্রথমটির অনুসরণে এ কারণে বলি যে, ওটাতেও এই রকম ছাড়া-ছাড়া বিভিন্ন জনকে নিয়ে আলাদা আলাদা কথা রয়েছে। হয়তো তাঁর হয়ে ওঠার বা পেশার সঙ্গে তাঁদের যোগ গভীর, কিন্তু তাঁরাও একই রকম 888sport app download for androidীয়। যেমন, ‘আমার মা’, শঙ্খ ঘোষ, কালীরঞ্জন শীল, শহীদুল্লা কায়সার, সন্‌জীদা খাতুন, বজলুর রহমান, সন্তোষ গুপ্ত, জহুর হোসেন চৌধুরী, রেহমান সোবহান, বিষ্ণু দে ও 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি। এঁদের সবার সঙ্গে তিনি কোনো না কোনো সময়ে চিন্তা বা কর্মসূত্রে কাছাকাছি এসেছেন। দ্বিতীয় বইটির সূচিপত্র এখানে তুলে ধরি : ১.শম্ভু মিত্র, ২. অশোক মিত্র, ৩. রেহমান সোবহান, ৪. খালেদ চৌধুরী ও রক্তকরবী, ৫. হাসান আজিজুল হক, ৬. 888sport apk download apk latest versionঞ্জলি : ভাষাসৈনিক আহমদ রফিকের চেতনা-ছায়ায়, ৭. সন্‌জীদা খাতুন, ৮. সমর সেন, ৯. হামদি বে, ১০. দ্বিজেন শর্মাকে নিয়ে বিচ্ছিন্ন কিছু কথা, ১১, ভূমেন্দ্র গুহ, জীবনানন্দ দাসের মূলানুগ পাঠ প্রসঙ্গে, ১২. কথা888sport live chatী মাহমুদুল হক, ১৩. সৈয়দ হাসান ইমাম, ১৪. মতিউর রহমান, ১৫. মন্দিরা নন্দী, ১৬. আমাদের নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, ১৭. সুভাষ মুখোপাধ্যায়, কবি, ১৮. শামসুর রাহমান ও তাঁর 888sport app download apk, ১৯. 888sport live chat আন্দোলনের সুবীর চৌধুরী, ২০. বুলবুল চৌধুরীর নৃত্যসাধনা। (সূচিপত্রে কোনো ক্রমিক 888sport free bet দেওয়া নেই। শুধু আলম্ব সাজানো।) মনে হয়, বিস্তারিত আলোচনা নিষ্প্রয়োজন।
হাসনাতের নিরাভরণ ভাষার লাবণ্য নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। লেখাগুলো পড়তে পড়তে বিষয় যেমন আমাদের টানে, হাসনাতকেও তেমন আমরা আরো অন্তরঙ্গভাবে জানি।