(উৎস : শেখ মুজিবুর রহমান-রচিত অসমাপ্ত আত্মজীবনী)
ভূমিকা
সময় নির্মাণ করে মানুষের বহুবিধ কাজের সোপান
ওরা আমার উর্বর সময়ের বুকে
বসিয়ে রাখছে দাহ, জন্মক্রুদ্ধ বিষধর ছোরা
ক্লান্ত পথিকের মতো বেঁচে থাকাটুকু
বয়ে নিয়ে বাঁচি
‘বসেই তো আছ, লেখ, তোমার জীবনের গল্প আর
888sport sign up bonus-সত্যগুলো’
জেলগেটে যতবার দেখা, সহধর্মিণীর চাপা অনুরোধ
একবার, হাতে গুঁজে দিলো –
তার দীর্ঘশ্বাস আর অশ্রুছোঁয়া খাতা ও কলম
কী এমন জীবন আমার! লিখে লিখে শুধু
কাগজের অপচয় হবে!
জমাদার বাইরে থেকে তালা দিয়ে গেল
কোটরিতে আমি একা। শীর্ণ জানালায় উঁকি দিলো
ফুটফুটে সন্ধ্যাচাঁদের মুখ
মনে এলো কত কথা!
আমাদের এক চোখ হলো ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা’
অন্য চোখে ঝলসে ওঠে সমন্বিত ক্রোধের আগুন
না-হয় হবে না কিছু। তবু লিখি। নিঃসঙ্গতা কিছুটা কাটুক
সেই করে শুরু…
দয়াবান গাছ
গ্রেফতার যেন আমার পিছু ছাড়ে না
একটা ডিঙিয়ে যাই, আরো আরো হাতকড়া ভিড় করে আসে
করাচি ছাড়তে হবে, ওপরের কঠিন হুকুম
পাঞ্জাব হয়ে দেশে ফেরায় রয়েছে গ্রেফতার ঝুঁকি
স্বদেশে-স্বজনে যাব দিল্লি আর কলকাতা-পথে
সকল সীমান্তস্থান বরাবর সন্দেহপ্রবণ
সন্ধ্যা হয়-হয়
কয়েক মুহূর্ত পরে বেনাপোল
ওখানে কি অপেক্ষায় আছে হাতকড়া, নতুন গ্রেফতার!
সহযাত্রী যিনি, বললাম –
‘কাস্টমসরা এলে আমার এ মালপত্র
দয়া করে দেখিয়ে দেবেন।’
ট্রেনের অদূর পাশে অন্ধকার ছড়িয়ে রেখেছে
কোনো-এক দয়াবান গাছ
সেদিন তার আশ্রয়টুকু আমাকে যে কী-বাঁচা বাঁচিয়ে দিলো!
না হলে হয়তো
‘গ্রেফতার’ এসে আমাকে নিতো
চৌদ্দ শিকের অমানবিক-ঘরে
সে-বার আর দেখা হতো না
আব্বা, মা, স্ত্রী, হাচিনা ও শিশুপুত্র কামালের মুখ
তানসেনের বাড়ি
কারো কারো পক্ষপাত দুর্গ, রাজসমাধি ও প্রাসাদ দেখায়
আমি দেখতে গেলাম তানসেনের বাড়ি
সুরের সান্নিধ্য পেতে প্রাসাদের পরিসীমা নয়
প্রকৃতির কোমলতা ভালো
বাতাসে ছড়িয়ে ভাসে সবুজের থোকা থোকা হাসি
পাখি প্রজাপতি কীট ও পতঙ্গে থাকে প্রকৃত প্রকাশ
তানসেনের বাড়ি তাই ঝরনাময় পাহাড়চূড়ায়
যথেষ্ট বিখ্যাত কথা : তার সুরের মূর্ছনাঘ্রাণে
বৃক্ষ ও পাথর আন্দোলিত হয়, বাতি জ্বলে ওঠে
ভরা রৌদ্রের আকাশ – 888sport app download apkর ছন্দের মতো দেখা মেলে বৃষ্টির অঝর
নিঃসঙ্গ-বিমর্ষ, তবু, এই বাড়ি ধরে আছে ধ্যানের গৌরব

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.