হঠাৎ ফাঁকা করে চলে গেলেন

যে-পাশে মনজুরভাই বসতেন সেদিকেই জানালা। কী ভেবে আসনটা হঠাৎ ফাঁকা করে চলে গেলেন তিনি। ঘরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে দরমার ওপাশে সাদা আকাশে চোখ পড়লেই মনে হয়, পরের মঙ্গলবার নিশ্চয়ই মনজুরভাই আসবেন।

888sport live chatকলা একাডেমিতে সুবীর চৌধুরী যখন পরিচালক তখন তাঁর অনুরোধে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বেশ কিছু চিত্রকলাবিষয়ক লেখা লিখেছিলেন। সে-সময়ে নানা সংকটের মধ্যে সুবীরদাকে কাজ করতে হতো আর তাই সবই ছিল শেষবেলার অনুরোধ। পরে সুবীর চৌধুরী যখন বেঙ্গল গ্যালারির পরিচালক হিসেবে যুক্ত হন তখনো তাঁর কামরায় উঁকি দিলে দেখা যেত মনজুরভাই আবারো শেষবেলার অনুরোধ রক্ষা করছেন। এখন মনজুরভাইয়ের 888sport live chatবিষয়ক লেখাগুলো এক করলে দেখি অন্তত অর্ধশত লেখা বেঙ্গল গ্যালারির নানা ক্যাটালগে রয়েছে। এর বাইরে 888sport live chat ও 888sport live chatী ও যামিনীতে (Jamini) লেখা তো আছেই। ২০০৩ সালে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম-সম্পাদিত (সোসাইটি ফর প্রমোশন অফ 888sport apps আর্ট-প্রকাশিত) 888sport apps আর্ট : কালেকশন অফ কন্টেম্পরারি পেইন্টিংস শিরোনামের বইটি বাজারে আসে। সেটাই বোধহয় 888sport appsের চারু888sport live chatীদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মানের প্রথম সম্যক প্রকাশনা (কয়েকটি নাম বাদে)।

প্রায় তেইশ বছর আগে, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে তাঁর সতীর্থ ফকরুল আলম ও কায়সার হককে সঙ্গে নিয়ে নতুন আঙ্গিকের কিছু সাময়িকী প্রকাশের প্রস্তাব করেন প্রকাশক আবুল খায়ের। সেই সুবাদে ২০০৩ সালে বের হয় 888sport live chatবিষয়ক ইংরেজি পত্রিকা যামিনী। একই সঙ্গে বাজারে আসে বাংলা লাইফস্টাইল পত্রিকা চারবেলা চারদিক (নামটা মনজুরভাইয়ের দেওয়া) এবং ইংরেজি ওপব ঞড়ফধু। চারবেলা চারদিক-এর প্রকাশনা ২০১০ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল, যদিও এর আগেই মনজুরভাইসহ অন্যরা পত্রিকা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। মনজুরভাইয়ের বিশেষ ঝোঁক ছিল যামিনীর প্রতি। পত্রিকাটি থেমে থেমে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়। বিদেশি লেখকদের সঙ্গে যোগাযোগে তিনি উৎসাহী ছিলেন। আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে 888sport appsের 888sport live chatকলা নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনার পথটি তিনিই প্রশস্ত করেছেন বলে আমার বিশ্বাস। কালি ও কলম-এর প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক আবুল হাসনাতের উদ্যোগে 888sport live chatকলাবিষয়ক সাময়িকী 888sport live chat ও 888sport live chatী বের হয় ২০১০ সালে। সেখানে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখা স্থান পায়। এইসব পত্রপত্রিকা নিয়ে কত সন্ধ্যায়ই না আমাদের কেটেছে পরিকল্পনায়, গল্পে, আড্ডায়।

অতিমারির দুঃসময়ে পরপর চলে গেলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং সম্পাদক আবুল হাসনাত। অসম্ভব বেদনাদায়ক এই পরিস্থিতিতে পরিত্রাতা ছিলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং হাসনাতভাইয়ের দীর্ঘদিনের সহযোগী সুব্রত বড়ুয়া। দায়িত্ব গ্রহণের পর কালি ও কলম-এর প্রথম সভায় মনজুরভাই বলেছিলেন, আমাদের কাজ শুধু পত্রিকাটিকে বাঁচিয়ে রাখা নয়, আনিস স্যার-হাসনাতভাই যে উচ্চতায় উন্নীত করেছেন, সেটা অক্ষুণ্ন রাখা। কালি ও কলমকে বড় যত্নে লালন করেছিলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

কিছুদিন আগে ওঁর একটা ছোটগল্প আমার মনে বেশ গেঁথে ছিল। এক প্রবীণ 888sport apkী টেবিল-ল্যাম্পে সারাক্ষণ কড়া হলুদ বাতি জ্বালিয়ে রাখেন কারণ তিনি বিশ্বাস করেন যে, আলো নিভে গেলে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। তাঁর ঘরে পুরনো একটা টেলিফোন। সেটার দিকেও তিনি তাকিয়ে থাকেন, কখন বেজে উঠবে। যদিও ফোন এক-আধ সময় বাজে, কিন্তু তিনি জানেন কোন বিশেষ রিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছেন। নিশুতি রাতে 888sport apkী শুনতে পান প্রকৃতির আর্তনাদ যখন কীটপতঙ্গ চিবিয়ে চিবিয়ে প্রকৃতিকে নাশ করছে। পরদিন মনজুরভাইকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এই চিন্তা কী করে মাথায় এলো? বললেন, বরিশালে সত্যি সত্যিই আমার এমন একজনের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। তাই ভাবি, সজ্জন সুবিবেচক মনজুরভাই কি নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে আলো নিভিয়ে দিলেন? জীবনকে উদ্যাপনে বিশ্বাসী মনজুরভাইয়ের যাওয়ার কোনো তাড়া ছিল না। স্বাস্থ্যের কোনো ঝুঁকির কথা কখনো শুনিনি। উৎকণ্ঠা ছিল, যেমন সবার থাকে। হঠাৎ কিসের ডাকে বেরিয়ে পড়লেন তা আর জানা হলো না। আমার দেয়ালের ওইপাশে মনজুরভাই বসতেন। আর উল্টোদিকে সুব্রতদা। আশফাক (সহযোগী সম্পাদক, কালি ও কলম) নানা লেখালেখি নিয়ে ঝুঁকে থাকত মনজুরভাইয়ের টেবিলের ওপর, তিনজনের আলোচনা হতো। মাঝে মাঝে গলা শুনে মনে হয়, এই তো মনজুরভাই এসেছেন, যাই দেখা করে আসি।