888sport app download apk latest version : জয়কৃষ্ণ কয়াল
আমাদের বয়ঃসন্ধির দিনগুলোয় বা সদ্য যুবক বয়সে যদি হেরমান হেসের 888sport alternative link না পড়তাম, তাহলে আমাদের শিক্ষা তথা বিশ্বদর্শন সম্পূর্ণ হতো না। জার্মানিতে হেসে ছিলেন আমাদের জীবনের অঙ্গ। ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ব্যাপারে কিছুটা পিতৃপ্রতিম, রবীন্দ্রনাথ যেমন ভারতবর্ষে, বিশেষ করে বাংলায়, এখন যেখানে আছি আমি।
জার্মান লেখক হেরমান হেসে (১৮৭৭-১৯৬২) এদেশে সর্বাধিক পরিচিত তাঁর ‘ভারতীয় 888sport alternative link’ সিদ্ধার্থের স্রষ্টা হিসেবে। নাম দেখে যা মনে হয়, 888sport alternative linkটা কিন্তু তা নয়, বুদ্ধদেবের জীবনের আদলে এটি লেখা নয়। সিদ্ধার্থ একজন ব্রাহ্মণ যুবক, পরিব্রাজক সন্ন্যাসী হিসেবে জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সে। কিন্তু তাতে শান্তি না পেয়ে সে আবার ফিরে এলো ‘পার্থিব’ জীবনে। নগরনটী কমলার প্রেমে পড়ল, বিত্তবান ব্যবসায়ী কামস্বামীর ব্যবসার অংশীদার হলো। অনেক দিন কাটল এভাবে, যতদিন না সে উপলব্ধি করল যে যৌন-প্রেম এবং ধনসম্পদ শেষ পর্যন্ত কোনো স্থায়ী সুখ বা শান্তি দিতে পারে না। তখন সে আবার ফিরল তার তাপস-জীবনে, মাঝি হয়ে বসবাস করতে লাগল নদীর ধারে।
মুখ্য ভূমিকায় শশী কাপুরকে নিয়ে কোনরাড রুক্সের (Conrad Rooks) সিদ্ধার্থ সিনেমাটা (১৯৭২) সারা ভারতের বড়-বড় প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হয়েছে। তাতে হেসের 888sport alternative linkটি ভারতের বৃহত্তর জনগণের কাছে পরিচিতি পেয়েছে। ভারতীয় ভূপ্রকৃতি উজ্জীবিত করে তুলেছে বিশুদ্ধ ভারতীয় আবেগের আবহ। সিনেমার নিস্তরঙ্গ দীর্ঘ দৃশ্যগুলোয় ধরা হয়েছে সিদ্ধার্থের তরুণ বয়সের জন্যে ঋষিকেশের চারপাশ। তার পার্থিব জীবনের কমলা ও কামস্বামীর কাহিনির জন্যে বাছা হয়েছে জমকালো রাজস্থানি দুর্গ এবং শেষে নেওয়া হয়েছে গঙ্গার আর একটু নিচের সমতলভূমি ও বিক্ষিপ্ত তরাই বনাঞ্চল। ভারতের মানুষ তাদের চেনা নিসর্গের ভেতর দিয়ে হেরমান হেসের মনোরাজ্যে প্রবেশের দরজা খুঁজে পেয়েছে। সেই সুবাদে সিদ্ধার্থ 888sport alternative linkটি এদেশে খানিকটা খ্যাতি পেয়েছে, কারণ সিনেমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকে বইটা পড়তে চেয়েছে।
শুনেছি, বিশ শতকের ছয়ের বা সাতের দশকে, এ-দেশের উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েরা ইউরোপ-আমেরিকা থেকে আসা হিপি ছোকরা-ছুকরিদের কাছ থেকে সিদ্ধার্থ হাতিয়ে নিয়েছে। ভারতীয় উপকূলে তাদের তখন হরিহরের মেলা। জীবনদায়ী ওষুধের মতো অনেকে তারা বইটা হিপ পকেটে নিয়ে ঘুরত। তবে মোটের ওপর, পশ্চিমের দেশগুলোয় যেমন হয়েছিল, এদেশে কিন্তু বইটা সেভাবে সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি হয়ে উঠতে পারেনি। পারবে কী করে? ঐশী প্রেরণাদীপ্ত 888sport live football ভারতের নিজের কি কিছু কম আছে নাকি! জার্মান লেখকের কাছ থেকে সে কেন ভারতীয় জীবন জানতে যাবে?
হেরমান হেসের মাতামহ হেরমান গুন্ডের্ট (Hermann Gundert) ছিলেন কেরালার প্রোটেস্টান্ট খ্রিষ্টান মিশনারি। মালয়ালম ভাষা নিয়ে গবেষণার জন্যে তিনি আজো শ্রদ্ধেয়। হেসের বাবা-মাও ছিলেন কেরালার মিশনারি, তাঁর মায়ের জন্ম কেরালাতেই। তবে হেসের যখন জন্ম, তখন তাঁর দাদু, মা-বাবা সবাই জার্মানিতে ফিরে গেছেন। অল্প বয়সে ভারতীয় জনজীবনের গল্প হেসের কল্পনার পুষ্টি জুগিয়েছে। হেসে রোমাঞ্চপথের অভিযাত্রী ছিলেন না। তাঁর পছন্দ ছিল শান্ত ধ্যানিম জীবন। ইউরোপের বাইরে তিনি পা রেখেছেন মাত্র একবারই। সে ছিল ১৯১১ সালে, দীর্ঘ আর কষ্টকর সফরে তিনি বেরিয়েছিলেন এশিয়া পরিক্রমায়। তাতে সিংহল (Sri lanka), কুয়ালা লামপুর (Kuala Lumpur), সিঙ্গাপুর (Singapur) এবং সুমাত্রা (Sumatra) হয়ে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। পরিকল্পনা ছিল ফেরার পথে ভারতের মূল ভূখ– আসবেন। কিন্তু তিনি অসুস্থ, ক্লান্ত আর হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তাই সোজা ইউরোপে ফেরাই ভালো মনে করেছিলেন।
সফরটা ছিল মোটামুটি তিন মাসের সামান্য বেশি সময়ের। কিন্তু অন্য কোনো খ্যাতিমান জার্মান লেখক হেরমান হেসের মতো ভারত-ভাবনায় নিজেকে এমন পুরোপুরি সমর্পণ করেননি। যখনই কোনো ভারতীয় শাস্ত্রগ্রন্থের জার্মান 888sport app download apk latest version প্রকাশিত হয়েছে, পরিণত বয়সেও তিনি তক্ষুনি তা পড়ে ফেলেছেন। এর মধ্যে ছিল পাউল ডইসেনের (Paul Deussen) উপনিষদের 888sport app download apk latest version, শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা, কার্ল ইউজেন নইমান (Karl Eugen Neumann) আর হেরমান ওল্ডেনবার্গ (Hermann Oldenberg) অনূদিত বুদ্ধের উপদেশমালার একাধিক সংকলন, যা তাঁর লেখকমনে গভীর ছাপ ফেলেছিল। ভারত-বিষয়ক বইয়ের তিনি নিয়মিত সমালোচনা লিখতেন, এর মধ্যে রবীন্দ্রনাথের তিনটি বইও ছিল। তাঁর সুপারিশ করা 888sport live football তালিকা, লাইব্রেরি অব ওয়ার্ল্ড লিটারেচারে (Library of World Literature) তিনি অনেক ভারতীয় ক্লাসিক অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। ইউরোপের যা কিছু সেরা তার সঙ্গে প্রাচ্যের সমূহ সেরার সমাহার ঘটাতে তিনি এতটাই ব্যাকুল ছিলেন যে, একবার একটা চিঠিতে লিখেছিলেন : ‘অনেক দিন আগে থেকে আমি বুঝেছি যে আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে ইউরোপ ক্ষয়িষ্ণু হয়ে চলেছে, এশিয়ার উৎসমূলে তার ফেরা দরকার’১। সনাতন ভারতীয় মননের একজন আগ্রহী এবং ধৈর্যশীল প্রবক্তা হয়ে উঠেছিলেন তিনি, এবং তা অবশ্যই ইউরোপীয় সংস্কৃতির প্রশস্তি অক্ষুণ্ণ রেখেই। খ্রিষ্টবাদের দাদাগিরি উপেক্ষা করে ধর্মীয় সংগতির আদর্শে তিনি তাঁর সময়ের তুলনায় অনেকখানি এগিয়ে ছিলেন।
সিদ্ধার্থ 888sport alternative linkে তিনি উদ্ধৃতি দিয়েছেন উপনিষদ থেকে। বুদ্ধ আর সিদ্ধার্থের মধ্যে তিনি যে কাল্পনিক সংলাপ রচনা করেছেন, তাতে সিদ্ধার্থ শেষ পর্যন্ত বৌদ্ধদর্শন নস্যাৎ করে দিয়েছেন। বারবধূ কমলা এবং ব্যবসায়ী কামস্বামী অধ্যায়ে লেখক স্পষ্টতই অনুপ্রাণিত কামসূত্র দ্বারা। আর শেষে, শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার একাদশ অধ্যায়ের বিখ্যাত বিশ্বরূপ দর্শনের পুনর্রূপায়ণ ঘটিয়েছেন, তার প্রয়োগ ঘটিয়েছেন সিদ্ধার্থের নিজস্ব স্বাধীনতার উপলব্ধিতে। নদীর ধারে বসে তার প্রবাহিনী তরঙ্গলীলায় সিদ্ধার্থ তার মোক্ষের নিশানা পেয়েছে। জলের নিরবচ্ছিন্ন মন্দাক্রান্তা গতি তাকে তার নিজের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। যে ধ্রম্নব নিরাসক্তির জন্যে সে জীবনভর কাঙাল, নদী তাকে তাই দিয়েছে। এখন তার আত্মা শান্তি পেয়েছে।
হেসের নিজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, লেখকের প্রোটেস্টান্ট খ্রিষ্টান শিক্ষাদীক্ষায় বেড়ে ওঠা এবং সেই সঙ্গে ভারতীয় শুদ্ধশাস্ত্রে তাঁর যতটা পড়াশোনা, উভয়ের ফলশ্রম্নতি সিদ্ধার্থ। ভারতীয় উৎস থেকে তিনি যথেষ্ট রসদ নিয়েছেন, কিন্তু সিদ্ধার্থের জীবন পরিক্রমা মার্কামারা কোনো শুদ্ধসত্ত্ব হিন্দু বা বুদ্ধ সন্ন্যাসীর সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না। ধরা যাক এই ব্যাপারটা : যুবক সিদ্ধার্থকে হেসে তার মা-বাবার কাছছাড়া করলেন, তারপর তার বর্ণনা দিলেন পুরোদসত্মুর একজন পরিব্রাজক সাধু হিসেবে। এরপর তিনি বলছেন কমলার সঙ্গে থাকার জন্যে সে কীভাবে সন্ন্যাসীর সাজ ছেড়ে ফেলল। হেসে ব্যাপারটা দেখাচ্ছেন আত্মিক পূর্ণতার পথে সিদ্ধার্থের সদর্থক অভিযাত্রা হিসেবে। কিন্তু ব্যাপারটা হিন্দু ও বৌদ্ধ-ভাবনার বিপরীত। কোনো সন্ন্যাসী গৃহীজীবনে ফিরলে সমাজে সে ভীষণভাবে সমালোচিত হয়। সে-কালে হতো, এ-কালেও হয়। তার এই পদক্ষেপ কখনোই আধ্যাত্মিক উন্নতি হিসেবে দেখা হয় না, দেখা হয় স্খলন হিসেবে।
সাবেকি হিন্দু চতুরাশ্রম রীতি অনুযায়ী যুবক শিক্ষার্থী প্রথমে গৃহস্থ, তারপর বানপ্রস্থধারী তপস্বী, এবং সবশেষে সন্ন্যাসী। হেসে এই ক্রম উলটে দিয়েছেন, তাতে জীবনের চারটি পর্বের আধ্যাত্মিক ক্রমোন্নতির যুক্তি তিনি উপেক্ষা করেছেন। জীবনের এই চারটি পর্বের যুক্তি এই যে, প্রতিটি মানুষের সহজাত কিছু কামনা-বাসনা থাকে। সেগুলো পূরণ হওয়া দরকার। যেমন, শিক্ষালাভের বাসনা (প্রথম পর্ব), যৌন কামনা, সঙ্গ-সঙ্গিনী পিপাসা, সন্তানলিপ্সা ও
ধনতৃষ্ণা (দ্বিতীয় পর্ব) এবং শেষে মোক্ষ বা মুক্তি পিপাসা (তৃতীয় ও চতুর্থ পর্ব)। প্রাচীন হিন্দুদের শিক্ষা এই যে, এসব কামনা পূর্ণ করতে হবে এই ক্রম মেনে। কেবল সেই মানুষটাই সাধুসন্ত হওয়ার পথে পা বাড়াতে পারে যে কিনা সংসার-জীবনের ভোগে এবং কর্তব্য পালনে পরিতৃপ্ত। কিন্তু বৌদ্ধধর্ম এবং পরবর্তীকালের হিন্দুধর্মও পুরো গার্হস্থ্য পর্বটাই ছেঁটে দিয়েছে এ-সম্পর্কে পরে কোনো অভিজ্ঞতার অবকাশ না রেখে।
হেসে সিদ্ধার্থের জীবনচিত্র এঁকেছেন তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী। সারাজীবন তাঁকে লড়াই করতে হয়েছে একাধিক সংকটের মধ্যে। এজন্যে তাঁর আধ্যাত্মিক উন্মেষ কখনোই সরলরেখায় বা ‘যুক্তিসিদ্ধ’ পথে হয়ে ওঠেনি। তাঁর নায়ক সিদ্ধার্থও একইভাবে জীবনে এক অধ্যায় ছেড়ে অন্য অধ্যায়ে গেছে; এই কারণে নয় যে, সেই পর্বের সমস্ত সম্ভাবনা নিঃশেষ হয়েছে, গেছে সংকটের কারণে। সংকট তাকে বাধ্য করেছে অস্তিত্বের অন্য অবস্থানে যেতে।
আর একটু ঘনিষ্ঠভাবে সিদ্ধার্থ 888sport alternative linkটির দিকে তাকানো যাক। ভারতবর্ষ সম্পর্কে ধারণা তৈরির ক্ষেত্রে ১৯১১ সালে তাঁর শ্রীলংকা এবং ইন্দোনেশিয়া সফরকে অকিঞ্চিৎকর বলে মনে করেছেন হেসে। তাঁর মতে, বেশি গুরুত্বপূর্ণ ‘তাঁর যৌবনের প্রথমতর দিন’ থেকে হিন্দু ও বৌদ্ধ 888sport live football নিয়ে মনপ্রাণ ঢেলে পড়াশোনা। সত্যি কথা, সতর্কভাবে বইটা পড়লে এশিয়ায় হেসের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সঙ্গে কোথাও এর কোনো যোগসূত্র মেলে না। এমনকি, Aus Indien (ভারত থেকে) শিরোনামে প্রকাশিত২ হেসের দিনলিপি এবং টুকরো লেখার (notes) সঙ্গেও নয়। সুতরাং তাঁর 888sport alternative linkের প্রেক্ষাপটে আলোকপাত করতে হলে অবশ্যই আমাদের পুরোপুরি নির্ভর করতে হবে হিন্দু ও বৌদ্ধ দার্শনিক শাস্ত্রগ্রন্থের ওপর। 888sport alternative linkের মধ্যে উপনিষদের কিছু উদ্ধৃতির উলেস্নখ আমাদের নজরে এলেও এ-রচনা কাহিনিক্রমে এসব গ্রন্থের সরাসরি কোনো ঢেউ লাগেনি। উলটে বরং বলা যায়, কাহিনিধর্মী রচনায় যা প্রত্যাশিত, হেসের পড়াশোনা আর তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এমন অঙ্গাঙ্গিভাবে মিশে গেছে যে, দুটোকে আর কোনোভাবে আলাদা করা যায় না। তা সত্ত্বেও পূর্বোক্ত প্রভাবের বিভিন্ন স্তর পরম্পরা আমরা বুঝতে পারি।
888sport alternative linkের প্রথম পর্বে হেসে বর্ণনা করেছেন তর্পণ, যজ্ঞ ও পূজার্চনাকেন্দ্রিক ব্রাহ্মণ্য গার্হস্থ্যের। আচারের সংকীর্ণতায় বিরক্ত হয়ে সিদ্ধার্থ আশা করেছিল যে, পরিব্রাজক সন্ন্যাসী সামানা হলে তার মনের বেশি স্বাধীনতা মিলবে না। কিন্তু সেই জীবনও বিধান আর নিষ্প্রাণ অভ্যাসের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত দেখে সে প্রলুব্ধ হলো গৌতম বুদ্ধের আদর্শে পরিচালিত একটি সন্ন্যাসী দলে যোগ দিতে। বুদ্ধ ঐতিহাসিক চরিত্র, 888sport alternative linkে দুবার উপস্থিত হয়েছেন। তিনি খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ ও পঞ্চম শতাব্দীর মানুষ, মনে হয় 888sport alternative linkের পুরো ঘটনাক্রম লেখক সেই সময়ে স্থাপন করতে চেয়েছেন। আমি নিশ্চিত, লেখকের অভিপ্রায় তা ছিল না। বরং তিনি চেয়েছেন বুদ্ধ চরিত্রটিকে সময়-নিরপেক্ষ করতে, ইতিহাসের সমস্ত সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সচেতনভাবে এড়িয়ে একান্তভাবে চেষ্টা করেছেন তাঁকে একটা আদর্শগত আদল দিতে। এ ছাড়া 888sport alternative linkে কামসূত্রের প্রভাব অত্যন্ত স্পষ্ট। এ-গ্রন্থের সময়কাল খ্রিষ্টীয় তৃতীয় বা চতুর্থ শতাব্দী, ঐতিহাসিক বুদ্ধের সময়কালে তার কোনো প্রভাব থাকতে পারে না।
বুদ্ধের শিক্ষা নাকচ করেই সিদ্ধার্থের তাপস-জীবন থেকে পুরোপুরি উলটোমুখে হাঁটা শুরু। সিদ্ধার্থ আর বুদ্ধের মধ্যে উদ্দীপনী এক সংলাপের মাধ্যমে বুদ্ধের শিক্ষা নাকচ করার কারণ ব্যাখ্যা করেছে সিদ্ধার্থ। বুদ্ধ জীবনকে দেখেছেন পূর্বনির্দিষ্ট কার্যকারণের এক অবিচ্ছিন্ন শৃঙ্খল হিসেবে। বুদ্ধ-অনুগামীদের কর্তব্য জীবন অস্বীকার করে জীবনের সেই কার্যকারণ সম্পর্ক এড়িয়ে যাওয়া। সিদ্ধার্থ তার সংলাপে সংশয় প্রকাশ করেছে যে, কার্যকারণ শৃঙ্খল অতিক্রম করা যায়। মোক্ষ লাভ ঘটে অতীন্দ্রিয় লোকে, কিন্তু কার্যকারণ সম্পর্ক বাহ্যিক জগতের ঘটনা। সিদ্ধার্থ লক্ষ করেছে, বুদ্ধের শিক্ষায় ‘ছোট্ট একটা ফাঁক’৩ থেকে গেছে। তাই শুধু বুদ্ধের শিক্ষাই সে বাতিল করেনি, শিক্ষাদানের যাবতীয় ব্যবস্থা নাকচ করে দিয়েছে। বিশেষভাবে সে ঘোষণা করেছে : ‘উপদেশ শুনে কারো মোক্ষ লাভ হয় না’।৪
ব্রাহ্মণের ধর্মীয় আচার, হিন্দু এবং বৌদ্ধদের কৃচ্ছ্রসাধন – জীবনের এই ত্রিবিধ অভিজ্ঞতাই হতাশ করেছে সিদ্ধার্থকে। তারপর যখন সে তথাকথিত পার্থিব জীবনে ফিরেছে, তখন তার মুক্তির অভিজ্ঞতা হয়েছে। গোড়ায় যা বলেছি তার পুনরাবৃত্তিই করছি আবার, সন্ন্যাস-জীবন থেকে এভাবে গৃহীজীবনে ফিরে আসা হিন্দুদর্শনের দৃষ্টিতে এক ধরনের পতন, একটা পাপ। এ-পাপ আরো গুরুতর এই কারণে যে, কমলাকে বিয়ে করে এবং তার সন্তান লালনপালন করে সিদ্ধার্থ যথাযথ গার্হস্থ্য ধর্ম পালন করেনি। পরিবর্তে সে বার888sport promo code কমলার প্রেমিকের ভূমিকা নিয়েছে, তাকে সে কখনো বিয়ে করেনি। তাদের ছেলে হয়েছে কেবল তাদের সম্পর্কের শেষ পর্যায়ে, এবং কমলা একাই আমৃত্যু সেই ছেলের দায়ভার বহন করেছে। হিন্দু চতুরাশ্রমে গার্হস্থ্য-জীবনকে দেখা হয় ছাত্রজীবন থেকে আশ্রমিক এবং সন্ন্যাসজীবনে প্রবেশের প্রস্ত্ততি পর্ব হিসেবে। গার্হস্থ্য পর্বের উদ্দেশ্য যৌনপ্রেম-পিপাসার তৃপ্তি সাধন, এই পর্ব প্রতিষ্ঠার, সম্পদ আহরণের। এই পর্ব সন্তান-সন্ততির, এই পর্বের উদ্দেশ্য প্রজননের মাধ্যমে বংশধারা বজায় রাখা, পারিবারিক ধর্মাচরণের ধারা চলমান রাখা। হেসের 888sport alternative linkে ইন্দ্রিয়পর জীবনের যে-অভিজ্ঞতা তা সদর্থক শুধু সিদ্ধার্থের নিজের কাছে, তা বৃহত্তর কোনো পরম উদ্দেশ্য সাধন করে না।
আমার বিশ্বাস কামসূত্রের প্রভাবেই এমনটা ঘটেছে। সিদ্ধার্থের পরিকল্পনা পর্বে এ-বই হেসের মাথায় ছিল। ইউরোপীয় প্রোটেস্টান্ট খ্রিষ্টান হিসেবে তাঁর পক্ষেও ব্যাপারটা খুব অস্বাভাবিক যে, ইন্দ্রিয় পরিতৃপ্তির জন্যে কুড়ি-কুড়িটা বছর তিনি সিদ্ধার্থকে সঁপে দিলেন একজন বার888sport promo codeর করপুটে এবং তা বিয়ে ছাড়া, সন্তানবিহীন। প্রেম-ভালোবাসা বিশুদ্ধ ব্যবহারিক ‘888sport live chat’৫, কামসূত্র এই শিক্ষাই দেয়। প্রেমিক-প্রেমিকার সামাজিক অবস্থান বা নৈতিক অবস্থা তার বিচার্য নয়। প্রেমিক-প্রেমিকার বিয়ে হলো কিনা, এ-প্রশ্ন কামসূত্রে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। সে শুধু ভালোবাসার কায়দা-কৌশল বাতলে দেয়, ভালোবাসার ক্রিয়াটা যাতে পূর্ণতার স্বাদ পায়। আমার অনুমান, হেসে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন তাঁর কাল্পনিক চরিত্র সিদ্ধার্থকে একটা বিমূর্ত, আদর্শগত পরিবেশে স্থাপন করতে। যে-সামাজিক আবহে নর888sport promo code তাদের স্বাভাবিক মিলনকে বিনন্দিত করে, তা তিনি উপেক্ষা করেছেন। কমলার সঙ্গে সিদ্ধার্থ কথাবার্তা বলেছে ‘মার্জিত ও মিতবাক 888sport live chatী পুরুষের’ মতো৬।
মাত্র তিনটি পদক্ষেপে সিদ্ধার্থ সন্ন্যাসী স্তর থেকে খুব তড়িঘড়ি প্রেমিক স্তরে পৌঁছে গেছে। স্বপ্নে তার সন্ন্যাসসঙ্গী গোবিন্দ নিজেকে 888sport promo codeতে রূপান্তর করেছে। সংগত কারণে, সিদ্ধার্থ অবাক হয়ে ভেবেছে কোনো 888sport promo code তার পরবর্তী সঙ্গী হবে কিনা। ঠিক তার অনতি পরেই নদীর ঘাটে এক তরুণী রজকিনীর সঙ্গে তার দেখা। তারা কথাবার্তা বলল এবং পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট হলো। তরুণী মেয়েটি তার কাছে এসে তার বাঁ পা সিদ্ধার্থের ডান পায়ের ওপর রেখে নিজের ডান পায়ে এমন ভঙ্গি করল যেন সে তার ওপরে চড়তে চাইছে। কামসূত্র অনুসারে এটা 888sport promo code-পুরুষের পরস্পর যৌন মিলনেচ্ছার আটটি অভিব্যক্তির অন্যতম একটি। এ-অভিব্যক্তির নাম বৃক্ষারোহণ৭।
ভারতের প্রেক্ষাপটে দেখলে, কোনো অপরিচিত যুবতীর পক্ষে অজানা-অচেনা একজন সন্ন্যাসীর কাছে এগিয়ে গিয়ে দৈহিক মিলনেচ্ছার এমন সুস্পষ্ট ইঙ্গিত আদৌ বাস্তবসম্মত নয়। সত্যি বলতে কি, এটা আরোপিতই মনে হয়। কেবল প্রতীকার্থেই হেসে ব্যাপারটা ব্যবহার করতে পারেন, এর অর্থ হলো – সন্ন্যাস আশ্রমের কঠোর কড়াকড়ি কেবল একজন 888sport promo codeর পক্ষেই ভাঙা সম্ভব, যে-888sport promo code নিজের উদ্যোগে পুরুষের কাছে প্রস্তাব করতে পারে। সন্ন্যাসজীবন থেকে ‘সংসারজীবনে’ আবর্তনের তৃতীয় ধাপ কমলার সঙ্গে সাক্ষাৎ। তাকে দেখে সিদ্ধার্থ তার কাছে এগিয়ে গেল এবং প্রার্থনা জানাল, ‘যে কলায় তুমি কলাবতী’৮ তা তাকে শেখাতে। খুব স্পষ্ট যে, সে কামসূত্র শেখানোর কথাই বলেছে।
সিদ্ধার্থ ভালোবাসা শিখতে গেল ‘888sport live chat’ হিসেবে। সে এবং কমলা কোনো মানসিক সংযোগের খোঁজ করল না, পরস্পরের মধ্যে কোনো আবেগের আশেস্নষ থাকল না, উলটে উভয়ের মধ্যে গড়ে উঠল এক ধরনের নির্লিপ্ত-প্রণয়ের সম্পর্ক। কামসূত্র এই ধরনের নির্লিপ্ত-প্রণয়, এই ধরনের নিরাবেগ সম্পর্কের রীতি-পদ্ধতি শেখায়। কিন্তু শিখিয়ে-পড়িয়ে আবেগের টান জাগানো যায় না, ওটা কেবল ‘ঘটে যায়’। অপর পক্ষে যা শেখানো সম্ভব, যা শেখা যায়, কামসূত্র শুধু তারই পাঠ দেয়।
যাই হোক, ‘পার্থিব জীবনের’ কাছে আসেত্ম-আসেত্ম সিদ্ধার্থ তার নিরাসক্তির দূরত্ব হারিয়ে ফেলল। তার ব্যবসার অংশীদার কাম-স্বামীর সঙ্গে ব্যবহারে সে সংসক্তি আর উদ্বেগের শিকার হলো। লোভ আর কামনা থেকে যার সৃষ্টি, সেই সংশয় আর দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ল সে। যখনই এটা ঘটল, সিদ্ধান্ত তার বর্তমান জীবনকে আর তার আগের সন্ন্যাসজীবনের চেয়ে উন্নততর দেখল না, দেখল অবনতি হিসেবে এবং আবারো একবার সে-জীবনের দিক বদলের সিদ্ধান্ত নিল। কমলাকে ছেড়ে গেল সে, ছাড়ল কামস্বামীকে। আবার শুরু হলো তার পথ চলা।
শেষ পর্যন্ত সে আস্তানা নিল নদীর ধারে, এক বৃদ্ধ মাঝির সঙ্গে এক কুটিরে। তার এই নতুন জীবন হিন্দুধর্ম অনুসারে জীবনের তৃতীয় পর্বের স্বগোত্রীয়, বনবাসী সন্ন্যাসীর জীবন (বানপ্রস্থ)। এখানেই সিদ্ধার্থের আধ্যাত্মিক জীবনের উপসংহার তথা সিদ্ধার্থ 888sport alternative linkের সমাপ্তি ঘটতে পারত। কিন্তু হেসে আরো একটা অধ্যায় সংযোজনের মনস্থ করেছেন। সিদ্ধার্থের নদীর ধারের বিজনবাসে কমলা এসেছে তাদের ছেলেকে তার প্রাক্তন প্রেমিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে। ছেলেটিকে সিদ্ধার্থের কাছে রেখে কমলা আচমকা মারা গেল। এক অর্থে সিদ্ধার্থ আরো একবার সংসারী হলো। আগের সংসারজীবনে সে ছিল প্রেমিক, এখন পিতা। ছেলেটি যখন শহরে পালিয়ে গেল, তখনই সে প্রশান্ত মনে আহবান জানাতে পারল তার পরম মুক্তিকে, শান্তিতে বাস করতে লাগল নদীর ধারে।
হেসে তাঁর শ্রীলংকা ও ইন্দোনেশিয়া সফরের দশ বছর পরে সিদ্ধার্থ 888sport alternative linkটি লেখেন। ওই দশ বছরের মধ্যে প্রকাশিত আর একটি যুগান্তকারী বই তাঁকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। বইটি ছিল গৌতম বুদ্ধের বাণীর জার্মান 888sport app download apk latest version, ১৯১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত তিনখ– বইটির ভাষান্তর করেছেন কার্ল ইউজেন নইমান৯। হেসে সংগ্রহ করেছিলেন ১৯২১ সালের দ্বিতীয় সংস্করণ, দুবার তিনি বইটার সবিস্তার পর্যালোচনা করেছেন। সিদ্ধার্থ লেখার সময় হেসে এই উপদেশ পড়েছেন। নিউমানের ‘শান্ত, অনন্ত-প্রবাহী বিচ্ছুরণী’১০ ভাষার প্রশস্তি করেছেন তিনি, সে-ভাষা গভীর আধ্যাত্মিক আবহের বিচ্ছুরণ ঘটায়। হেসে জোর দিয়েছেন ‘জার্মান ভাষায় নিখাদ ভারতীয় সংগীতে’র১১ ওপর। তাঁর সিদ্ধার্থেও তিনি সেই একই নিখাদ ভারতীয় সংগীত সম্মোহন সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। নিউমানের মতো তিনিও স্বপ্ন দেখেছেন ‘ধ্যানিম ভাবনা’ সৃষ্টির, পাশ্চাত্যের মতো জ্ঞানের পরিসরে যা থেমে থাকবে না, ‘চৈতন্যের রূপান্তরের’১২ দিকে যা এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং যার ফলশ্রম্নতি অনাবিল সংগতি, যুক্তিসিদ্ধ চিন্তা আর সজ্ঞাসঞ্জাত ভাবনার বিমিশ্রণ।
সিদ্ধার্থ 888sport alternative linkে আমরা লক্ষ করি অস্তিত্বের দুই স্তরের মধ্যে অবিরাম নামাওঠা। নিম্নতর স্তরটা হলো মায়ার, বিভ্রমের (Täuschung বা সংসার) এবং বহিরঙ্গের (Schein) – যে শব্দ দুটো বারবার ব্যবহার করেছেন হেসে। এটাই আবেগজাত সংলিপ্তির (Kindermenschen) ক্ষেত্র। অস্তিত্বের উচ্চতর শুরুটা আত্মা, ব্রহ্ম, নির্বাণ এবং ওঁ প্রভৃতি শব্দের বৈশিষ্ট্যব্যঞ্জক। এই স্তরে উপনিষদের চিন্তাচেতনা এবং শুদ্ধশাস্ত্রের রহস্যময় পরমানন্দের প্রাধান্য।
সিদ্ধার্থ 888sport alternative linkে নদীও এই উচ্চতর অসিস্তস্তরের একটি বলিষ্ঠ প্রতীক। পাশ্চাত্য দৃষ্টিতে দেখলে চির প্রবাহিনী নদী বিশুদ্ধ নশ্বরতার প্রতীক, কালচক্রের চঙ্ক্রমণ। নিঃসন্দেহে এর অবস্থান অস্তিত্বের নিম্নতর স্তরে। কিন্তু ভারতীয় দৃষ্টিকোণে দেখলে নদী বলার সঙ্গে-সঙ্গে আমাদের মনে আসে উপনিষদের ‘নদী পারাপারের’ কথা, মনে আসে নদীর ‘অন্য পারের’ কথা। নদী ‘পার হওয়া’ আসলে কারো জীবন কালযাপনের রূপক, যতক্ষণ না কেউ নদীর ‘অন্য পারে’ অর্থাৎ মৃত্যুলোক বা মোক্ষধামে উত্তীর্ণ হচ্ছে। এখানে নদী বা নদীর ‘অন্য পার’কে অতি অবশ্যই আমাদের দেখতে হবে অস্তিত্বের উচ্চতর স্তরে পৌঁছানোর জন্যে আকুতির প্রতীক হিসেবে।
হেসে তাঁর নদী আবাহনে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের প্রতীকী ব্যঞ্জনা মিশিয়ে একটি বাণীমূর্তি নির্মাণ করেছেন, তা যতটা না দার্শনিক তার চেয়ে অনেক বেশি 888sport live chatময়। সিদ্ধার্থের জীবনের বিভিন্ন পর্বে নদী বিভিন্ন ধরনের অর্থঘোর নিয়ে এসেছে। নদী এখানে সারাক্ষণ এক ইতিবাচক, একটা সহযোগের প্রতীক। এমনকি, আত্মহত্যার চেষ্টায় সিদ্ধার্থ যখন নিজেকে নদীতে নিক্ষেপ করেছে, তখন নদী তার অসহনীয় অবস্থা থেকে মুক্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। সমাপ্তিতে, নদীজলের চির প্রবাহিনী শান্ত গতির কথা চিন্তা করে সিদ্ধার্থ তার পরম অকম্প্র শান্তি খুঁজে পেয়েছে, যা শাশ্বতিকের অনুরণন হয়ে উঠেছে। ভারতীয় দর্শন তথা ভারতের অসিস্তবাদী চৈতন্য এই দ্বিস্তরীয় অসিস্ত এবং দুই স্তরের চিন্তা ও অনুভবে সমৃদ্ধ। দৈনন্দিন ভারতীয় জনজীবনে তা বিকারের সংকেত দিচ্ছে। পুরো সিদ্ধার্থ 888sport alternative linkজুড়ে আমরা লক্ষ করি অস্তিত্বের উচ্চতর স্তরে পৌঁছানোর লক্ষক্ষ্য নিম্নবর্তী স্তরকে অতিক্রমের প্রয়াস। ‘উন্নততর জীবনের’ জন্যে এই গভীর আকুতিই সিদ্ধার্থ 888sport alternative linkের নিজস্ব ‘নিখাদ ভারতীয় সংগীত’।
হেসের জন্মস্থান জার্মানির কালফ্ (Calw) শহরে ২০০২ সালের জুলাই মাসে আয়োজিত আন্তর্জাতিক হেসে আলোচনাচক্রের মূল বিষয় ছিল সিদ্ধার্থ 888sport alternative link। সারাবিশ্বের বিদগ্ধম-লী জড়ো হয়েছিলেন 888sport alternative linkটি সম্পর্কে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁদের মন্তব্য পেশ করতে। ভারতবর্ষ থেকেও দুজন বিদগ্ধ মানুষ ছিলেন। আলোচনাচক্র ঘিরে ছিল একাধিক বিভাগে বিভিন্ন ধরনের বক্তৃতা আর কার্যক্রমের কয়েক মাসব্যাপী অনুষ্ঠান। সত্যি বলতে কি, হেসের জনপ্রিয়তাকে এমন একটা তারে বাঁধার চেষ্টা করেছে কালফ্ শহর, লেখককে বিপণনের কাজ এমন পর্যায়ে উঠেছে যে, সংবেদী লেখক এবং চিন্তাবিদ হিসেবে হেসের মর্যাদার ব্যাপারে কেউ-কেউ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
এই মহাপার্বণিক উদ্যোগের কারণ ২০০২-এর ২ জুলাই ছিল হেসের ১২৫তম জন্মজয়মত্মী। তাঁকে জনপ্রিয় করার জন্যে এ-ধরনের কোনো উদ্যোগের দরকার ছিল না হেসের। জার্মানিতে তাঁর পাঠককুল 888sport free betতীত। তাঁর প্রকাশক ফ্রাংকফুর্টের (Frankfurt) সুহর্কাম্প প্রকাশনী (Suhrkamp Verlag) তাদের সাম্প্রতিকতম প্রেসনোটে জানিয়েছে যে, শুধু ২০০১ সালে জার্মানভাষী দেশগুলোতে হেসের ৪,৯১,৬৮০ বই বিক্রি হয়েছে। বাকি ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় জার্মান লেখকদের মধ্যে হেসের বইয়ের বিক্রি সর্বাধিক। বারোটি ভারতীয় ভাষায় সিদ্ধার্থ 888sport app download apk latest version হয়েছে। হেসে পরিচিত নাম, তবু স্বীকার করতে হবে ভারতে তাঁর পাঠক888sport free bet অনেক সীমিত।
এ-ধরনের পরি888sport free betনে হেরমান হেসে মোটেই আপস্নুত হতেন না। বাজার গরম করা লেখক হওয়ার জন্যে তিনি কখনোই
হাঁচড়-পাঁচড় করেননি। তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্যে তিনি কিছুই করেননি। জনসভায় বক্তৃতা করতে তিনি নিজের বাড়ির বাইরে পা রেখেছেন কদাচিৎ। তাঁর মনের গড়ন ছিল অনেকটা সন্ন্যাসীসুলভ। নিজের 888sport alternative linkের live chat 888sportায়ণে নিষেধ ছিল তাঁর। যারা তাঁর কথা শুনতে প্রস্ত্তত, যারা তাঁর কঠোর ব্যক্তি সততা আর নিষ্ঠা অনুসরণের পক্ষপাতী, তাদের বিবেক সংরক্ষকের ভূমিকায় উৎসাহবোধ করতেন তিনি। যেমন সিদ্ধার্থে, তেমনি 888sport app রচনাতেও তাঁর বার্তা সাবেকপন্থী। তিনি বারবার বলেছেন : ‘আত্মস্থ হও, বিশ্বনিখিলের অভীপ্সার সঙ্গে সংগতি রেখে নিজেকে পূর্ণ করে তোলো এবং মানুষকে কখনো ভালোবাসতে ভুলো না।’ ঈশ্বর-প্রদত্ত স্বাধীনতা অনুশীলনের মাধ্যমে যে-যার নিজস্ব জীবনপথ নির্মাণ, ভারতবর্ষে আমরা যাকে বলি স্বধর্ম, তা খুঁজে নেওয়ার জন্যে প্রতিটি মানুষের অধিকার ও কর্তব্যের কথা প্রচার করেছেন তিনি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমর্থনে সাধারণের মধ্যে যখন উচ্চকিত এবং অত্যুৎসাহী ভেরি নির্ঘোষ চলছে, নৈতিক কর্তৃত্ব নিয়ে তখন তিনি আপসহীনভাবে যুদ্ধ বাতিলের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। পাশবিক হিটলারীয় যুগের দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময়েও তাই করেছেন।
গত শতকের সাতের দশক থেকে হেসে যেমন অসংখ্য পাঠক পেয়েছেন, তেমনি তার উলটো একটা দিকও আছে। অনেক প–তজন তাঁকে মুখ্য লেখক হিসেবে গণ্য করেন না। খুব পানসে, অত্যন্ত আবেগতাড়িত আর গতানুগতিক বলে তাঁরা তাঁকে বাতিল করে দেন। কথাটা সত্যি। তিনি খুব রোমান্টিক, তাঁর লেখার ধরনও কখনোই উদ্ভাবনীমূলক নয়। কিন্তু তাঁর 888sport alternative link, গল্প, 888sport app download apk নিবন্ধ আর হালে সামনে আসা পঁয়ত্রিশ হাজারেরও বেশি চিঠিপত্রের বিষয়বস্ত্ত আধুনিক মানুষের চৈতন্য জাগরণের এক অপ্রত্যাশিত দিগন্ত উন্মুক্ত করেছে।
পাঠকের পাঠবুভুক্ষা পরিতৃপ্তির জন্যে অবিরাম জনপ্রিয়তম রচনাগুলোর নতুন-নতুন সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে – প্রকাশিত হচ্ছে বিশেষ করে তাঁদের মুখ চেয়ে, এখন যে-নবীন প্রজন্ম জীবন গড়তে চলেছেন বা কর্মজীবনের অবসানে যাঁদের আবার সময় হয়েছে তাঁদের অস্তিত্বের প্রকৃত মূল্য সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করার। ফোলকের মিচেল্সের (Volker Michels) সম্পাদনায় হেরমান হেসের রচনাসমগ্র (Complete Works of Hermann Hesse) প্রকাশিত হয়েছে। এখানে সংগৃহীত রচনার অর্ধেকই হেসের রচনার আগের কোনো সংস্করণে ছিল না। অপ্রকাশিত রচনা ছাড়াও, সমকালীন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত লেখাগুলোও মিচেলস একত্রিত করেছেন। পুরোপুরি নতুন এক হেরমান হেসেকে আমাদের সামনে আনা হয়েছে। প–তজন চমকে যেতে বাধ্য হবেন, বাধ্য হবেন হেসের ব্যাপারে তাঁদের অভিমত পুনর্বিবেচনা করতে।
১. অ্যালিস লিউথোল্ডকে (Alice leuthold) লেখা চিঠি, ২৬ জুলাই ১৯১৯ : ফোলকের মিচেল্স-সম্পাদিত Materialien Zu Hermann Hesses Siddhartha-তে উদ্ধৃত। প্রথম খ-, সুহর্কাম্প প্রকাশনী (Suhrkamp Verlag), ফ্রাংকফুর্ট ১৯৮৬, পৃ ৮৯।
২. প্রথম প্রকাশ : ১৯১৩, লেখকের শ্রীলংকা সফরের দু-বছর পরে। ফোলকের মিচেল্সের সম্পাদনায় নতুন পরিবর্ধিত সংস্করণ : সুহর্কাম্প প্রকাশনী, ফ্রাংকফুর্ট ১৯৮০।
৩. Hermann Hesse : Siddhartha 888sport app download apk latest version : হিল্ডা রোজনের (Hilda Rosner), বন্তম্ বুকস্ (Bantam Books), নিউইয়র্ক ১৯৭১, পৃ ৩২।
৪. তদেব, পৃ ৩৪।
৫. তদেব, পৃ ৫৩।
৬. আমার 888sport app download apk latest version। হিল্ডা রোজনের যথাযথ 888sport app download apk latest version না করে বিষয়টা 888sport app download apk latest version করেছেন ‘বুদ্ধিমতী, সুন্দরী রাজনর্তকী’, পৃ ৬৬।
৭. দ্রষ্টব্য Kamasutra II, 2, 14-16.
৮. Hermann Hesse : Siddihartha, 888sport app download apk latest version : হিল্ডা রোজনের, পৃ ৫৩।
৯. Reden Gotomo Buddhos, 888sport app download apk latest version : কার্ল ইউজেন নইমান (Karl Eugen Neumann), আর. পাইপের প্রকাশনী, জুরিখ ১৯১৮।
১০. পর্যালোচনাটি প্রকাশিত হয়েছিল Neue Rundschau পত্রিকায়। ফোলকের মিচেল্স-সম্পাদিত Materialien zu Hermann Hesses Siddhartha-তে উদ্ধৃত। প্রথম খ-, সুহর্কাম্প প্রকাশনী (Suhrkamp Verlag), ফ্রাংকফুর্ট ১৯৮৬, পৃ ১৪৭।
১১. তদেব, পৃ ১৯৯।
১২. তদেব, পৃ ১৪৮। r

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.