হেলাল হাফিজকে নিয়ে লেখার দূরতম সামর্থ্যও আমার নেই। ঘাসে শুয়ে আকাশ দেখার মতো তাঁকে দেখেছি। দূর থেকে, ভার্চুয়াল – তবে অনাত্মীয় অনুভব করিনি কখনো। বাংলা 888sport live footballের কিংবদন্তি এই কবিও নিজে 888sport app download apk থেকে নির্বাসনে থাকার পরেও 888sport app download apkকর্মী কোনো অনুজকে অবজ্ঞা করেননি। এটাই মহানদের বিশালতা। আর এই বিশালতা বুকে নিয়ে কীভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের মতো মান, যশ, খ্যাতি, বিস্তৃতি, পদবি, পদক, খ্যাতি –
সম্পদ-সংসার, ঘর – সব ছাড়ার পরে একজন মানুষ আসলে কী হয় – তলস্তয় বলেছেন চূড়ান্ত বিলুপ্তিই মানবের লক্ষ্য – তাহলে কি তাই হয়? হেলাল হাফিজ কী হয়েছিলেন
সে-আলোচনা মুখ্য করবো না। কারণ তাঁর 888sport app download apk বঙ্গোপসাগরের অসংখ্য ঢেউ হয়ে মিছিলে মিছিলে, প্রতিটি সংকটে, সংকল্পে, অভ্যুত্থানে-যুদ্ধে – কতটা পরিব্যপ্ত তা 888sport live footballজন মাত্রই জানেন। তাঁর 888sport app download apk কী পরিমাণ প্রেমে-বিরহে রসদ জুগিয়েছে তারুণ্যকে – প্রেমিক মাত্রই তা অবগত। প্রচলিত বিখ্যাত 888sport app download apkর বাইরে – যদিও তিনি খুব অল্পই লিখেছেন – বলা চলে শুধু একটি বই – সেই বিচারে, যে জ্বলে আগুন জ্বলের ভেতর তিনি জল ও আগুনের আখ্যানের বাইরে আরো কিছু স্বাক্ষরও রেখেছেন। নিছক ধ্বনিপ্রবাহ নয়, নয় স্লোগান, নয় আবেগ থরোথরো সংলাপ – বিরহী উচ্চারণ – সহজাত সেসব 888sport app download apkয়, 888sport app download apkংশে লেখকের মৌল প্রতিনিধিত্বের জায়গাটা খুব স্পষ্ট হয়েছে আমার কাছে। শাশ্বত সুন্দরের যা, যা প্রকৃতির মতো অকৃত্রিম, কোনো ইচ্ছে বা আকাক্সক্ষার সীমারেখাহীন দিগন্তের মতো, মহা888sport app download apkর নিরবচ্ছিন্ন পঙ্ক্তির মতো – যা যুগে যুগে দেশ-কালভেদে সকল লেখকই লিখে চলেছেন – সেই অনাবিল অবিরল কাব্যসুধার স্বাদও রয়েছে যে জলে আগুন জ্বলের কিছু 888sport app download apkয়।
দুই
হেলাল হাফিজের ‘অস্ত্র সমর্পণ’ ও এক অমোঘ 888sport app download apk, যেখানে অস্ত্র ও ভালোবাসা মিলেমিশে এক হয়ে গেছে। এটি শুধু যুদ্ধের কাব্য নয়, এটি আত্মার গভীরতম টানাপড়েন, প্রেম ও প্রতিশোধের মধ্যে জেগে ওঠা এক অনন্ত দ্বন্দ্ব। 888sport app download apkটি শুরু হয় 888sport sign up bonusর প্রতিধ্বনি দিয়ে – ‘মারণাস্ত্র মনে রেখো ভালোবাসা তোমার আমার।’ ভালোবাসা এখানে কোনো কোমল অনুভূতি নয়, এটি রক্তে ও অগ্নিতে জ্বলা এক অনন্ত শক্তি। কবি ভালোবাসাকে অস্ত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা একদিকে ধ্বংস করতে পারে, অন্যদিকে সুরক্ষা দিতে পারে।
যে-প্রেম একসময় যুদ্ধের নামান্তর ছিল, যে-প্রেম বন্দুকের নলে মাথা রেখে অন্ধকার রাতের পাহারায় কাটিয়েছে, সে-প্রেমই একসময় অস্ত্র সমর্পণ করে। কিন্তু এই সমর্পণ কোনো পরাজয়ের নয়, এটি এক নতুন শুরুর প্রতীক। ‘কারাগারে সমর্পণ করে, ফিরে যাচ্ছি ঘরে’ – এই ঘরে ফেরা কেবল ভৌত বাস্তবতার নয়, এটি মানবিকতার কাছে ফেরা, ভালোবাসার এক শান্তিপূর্ণ স্রোতে মিশে যাওয়া।
888sport app download apkর শরীরে লুকিয়ে থাকা প্রেম-ইতিহাসে ধরা পড়ে মানবজীবনের এক গূঢ় সত্য। যখন কবি বলেন, ‘তোমার কঠিন নলে তন্দ্রাতুর কপালের/ মধ্যভাগ রেখে, বুকে রেখে হাত/ কেটে গেছে আমাদের জঙ্গলের কতো কালো রাত!’ – তখন অস্ত্র শুধু যুদ্ধের হাতিয়ার থাকে না, এটি হয়ে ওঠে নির্ভরতার, ভালোবাসার এক নীরব সঙ্গী। এটি সেই সম্পর্কের ভাষা, যা দুঃসময়ের অন্ধকারে আলো জ্বালাতে জানে।
তবু, অস্ত্রের সঙ্গে এই অন্তরঙ্গ সম্পর্কের শেষে আসে বিদায়ের মুহূর্ত। কিন্তু সেই বিদায় স্থায়ী নয়। কবি স্পষ্ট জানিয়ে দেন – যদি পৃথিবী কখনো আবার ভালোবাসার ঘাটতিতে ভোগে, যদি মানুষ মানুষের প্রতি ভালোবাসা ভুলে যায়, তবে এই অস্ত্র আবার প্রেমের ভাষায় কথা বলবে, ‘ভেঙে সেই কালো কারাগার/ আবার প্রণয় হবে মারণাস্ত্র তোমার আমার।’
তিন
হেলাল হাফিজের ‘ডাকাত’ 888sport app download apkটি যেন অন্ধকারে ডুবে থাকা এক দহন-গান, যার প্রতিটি শব্দ দগ্ধ করে। এই 888sport app download apkর পঙ্ক্তিমালায় মিশে আছে সময়ের চাপা দীর্ঘশ্বাস, একটি নীতিহীন সমাজের অন্তর্লীন আর্তি, আর ধ্বংসের অতল গহ্বর। এখানে ‘তুমি কে হে?’ প্রশ্নটি কেবল ডাকাতের উদ্দেশে নয়; বরং এক জিজ্ঞাসা, যা প্রতিধ্বনিত হয় প্রতিটি অন্তরে, প্রতিটি বিবেকের অন্ধকারে। কবি যেন সময়ের ক্যানভাসে আঁকেন এক লুপ্তপ্রায় মানবতার প্রতিচ্ছবি, যেখানে লালসার জোয়ার ছাপিয়ে গেছে নৈতিকতার তীর।
সোনালি ছনের বাড়ি – এই চিত্রকল্প শুধু একটি বাড়ি নয়; এটি আমাদের সংস্কৃতি, মূল্যবোধ আর আত্মার প্রতীক। ‘বেগানা পুরুষ’ এখানে কেবল একটি চরিত্র নয়, বরং সেই অদৃশ্য অপশক্তি, যা নির্লজ্জভাবে আঘাত হানে আমাদের ভেতরের সৌন্দর্যে। 888sport app download apkর ভাষা তীক্ষ্ন, তার প্রতিটি শব্দ যেন এক বিষাক্ত তীরের মতো। ‘লাজ-শরমের মাথা খেয়ে’ বাক্যটি আক্ষরিক নয়, এটি আমাদের মানসিকতা ও আত্মপরিচয়ের ওপর আঘাতের এক রূপক।
888sport app download apkর অন্ধকার যেন এক গোপন বাণিজ্যের বাজার, যেখানে ‘চতুর বণিক’ রাতের ছায়ায় নেমে আসে। এই বণিক শুধুই এক ডাকাত নয়; এটি সেই ধূর্ত শক্তি, যা সমাজকে লুট করে, আমাদের বিশ্বাস, স্বপ্ন আর সংগ্রামকে তছনছ করে দেয়। ‘মারী ও মড়কে, ঝড়ে, কাঙ্ক্ষিত বিদ্রোহে’ – এই লাইনগুলো অতীতের সংগ্রামের প্রতি এক নীরব 888sport apk download apk latest version।
এ-888sport app download apkর শক্তি তার প্রশ্নমুখর কাব্যে। তিনি সরাসরি কিছু বলেন না; বরং তাঁর প্রতিটি বাক্যে এমন এক অন্তর্গত শূন্যতা সৃষ্টি করেন, যা পাঠককে চিন্তার গভীরে নিয়ে যায়। ‘লোভে আর লালসায় অবশেষে আগন্তুক সর্বস্ব হারাবে’ – এই লাইন কেবল ভবিষ্যদ্বাণী নয়; এটি এক ধ্রুব সত্য, যা দিনের আলোর মতো অনিবার্য। রাতের রাজত্ব বেশিদিন টেকে না; প্রভাতের ঢল সবকিছু মুছে দেয়।
হেলাল হাফিজের এই 888sport app download apk পড়ে মনে হয়, আমরা যেন দাঁড়িয়ে আছি এক ভাঙাচোরা বাড়ির সামনে, যেখানে প্রতিটি ইট আমাদের 888sport sign up bonus আর সংগ্রামের গল্প বলে। সেই বাড়ি কি আমরা রক্ষা করতে পেরেছি, নাকি অজান্তে সেই ডাকাতের সঙ্গে হাত মিলিয়েছি? 888sport app download apkর শেষ প্রশ্নে এই দহন আরো তীব্র হয়ে ওঠে।
এই 888sport app download apk সময়ের চেয়ে দীর্ঘ, কারণ এটি আমাদের চেতনায় একটি অমোঘ প্রশ্ন জাগিয়ে তোলে, যা উত্তরহীন।
চার
শোকের মধ্যে যে পূর্ণতা লুকিয়ে থাকে, হেলাল হাফিজের ‘তীর্থ’ সেই গভীরতর সত্যের 888sport app download apk। এটি কোনো সাধারণ ভাঙনের আখ্যান নয়, বরং এক মহাজাগতিক কম্পনের ভাষ্য, যা আমাদের অস্তিত্বের সবচেয়ে অপরিবর্তনীয় স্তরগুলোকে নাড়িয়ে দেয়। এই 888sport app download apk শুরুর প্রশ্নগুলো, ‘কেন নাড়া দিলে?’ – শুধু প্রশ্ন নয়; এগুলো ভেতরে বয়ে চলা এক অনন্ত ঝড়ের প্রতিধ্বনি। জীবনের অনিশ্চয়তা ও শূন্যতার সঙ্গে মিশে থাকা এই নাড়া দিয়ে ওঠা এক বিস্মৃত সত্যকে জাগিয়ে তোলে।
‘পৃথিবীর তিন ভাগ সমান দু’চোখ যার’, সেই চোখে এক মাসের শ্রাবণ ঢেলে দেওয়া, যেন অস্তিত্বের গহনে এক বন্যা বইয়ে দেওয়া। এই জল শুধু বৃষ্টি নয়; এটি চোখের জলে লেখা এক মহাকাব্য, যা মানুষের হৃদয়ের অতলে প্রবাহিত হয়। এখানে শ্রাবণ একাধারে প্রাকৃতিক ও আধ্যাত্মিক প্রতীক। এটি এমন এক ধারা, যা বেদনার সঙ্গে মিলেমিশে মানুষের হৃদয়ে গভীর এক দাগ রেখে যায়।
‘যেটুকু নড়ে না তুমুলভাবে ভেতরে বাহিরে/ কেন তাকে সেটুকু নাড়ালে?’ – এই প্রশ্নের মধ্যে নিহিত রয়েছে ভাঙনের এক অলৌকিক সৌন্দর্য। যে-অংশটি কখনো নড়ে না, সেটিকেই নাড়িয়ে দেওয়া – এ যেন পাহাড়ের শিকড় টেনে তোলা, সমুদ্রের তলদেশকে উন্মোচিত করা। এই নাড়ানো কেবল ধ্বংসের নয়; এটি রূপান্তরের শুরু। কবি বলতে চান, জীবনের গভীরে এমন কিছু স্তর আছে, যা তীব্র ব্যথা ছাড়া জাগে না, অস্থির হয় না।
ভয়ের কথা যখন আসে, তখন 888sport app download apkর ভাষা আরো শাণিত হয়ে ওঠে। ‘ভয় দেখালেই ভয় পায় না অনেকে’ – যিনি সমস্ত শোকের দ্বীপে ঘুরে এসেছেন, তার কাছে ভয়ের অস্তিত্ব আর থাকে না। হারানোর ভয় যিনি হারিয়েছেন, তিনিই তীর্থ।
শোক-দ্বীপের প্রতীকটি এখানে বহুমাত্রিক। দ্বীপ এক বিচ্ছিন্নতার প্রতীক, যেখানে মানুষ নিজেকে একা পায়, কিন্তু এই একাকিত্বের মধ্যে সে খুঁজে পায় আত্মার গভীরতম স্তর। 888sport app download apkয় এই দ্বীপের মধ্য দিয়ে মানুষ নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করে। দ্বীপ একান্ত শোকের, আবার একান্ত মুক্তিরও।
সেই অবস্থান, যেখানে সমস্ত ক্ষতি, শোক, এবং ভয়ের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষ খুঁজে পায় এক অন্তর্নিহিত পূর্ণতা। ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে পাওয়া এক নতুন জীবনদৃষ্টি, ‘সব কিছু হারিয়েই সে মানুষ/ হারাবার ভয় হারিয়েছে’।
‘তীর্থ’ আমাদের শেখায় ভাঙনের মধ্য দিয়েই মানুষ পৌঁছে যায় নিজের আত্মার শুদ্ধতম জায়গায়। শোক-দ্বীপের পথ বেয়ে, ভয়-শূন্যতার মধ্যে দিয়ে মানুষ নিজেকে এমন এক তীর্থে নিয়ে আসে, যেখানে আর কোনো প্রশ্ন থাকে না, কেবল গভীর এক উপলব্ধি থাকে, যা মৃত্যুর চেয়ে বড়।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.