তানভীর মোকাম্মেল

  • বেহুলা বাংলা – সনেট ২

    আমারও স্বপ্ন ছিল   পুঁইমাচা   নিকানো উঠোন আমারও আকাশ ছিল    বৃষ্টিভেজা   সজল সঘন আমারও নদী ছিল   স্বচ্ছতোয়া   অবিরাম বহমান আমারও 888sport promo code ছিল   অভিমানী   বেহুলা তার নাম যখন ফাগুন মাসে   বনে বনে   আগুন শিমুল ছায়াঘেরা   ডালে ডালে    সুগন্ধী   আমের মুকুল সাক্ষী ছিল   বনদেবী   মৃদুকণ্ঠে   রেখো আমায় মনে বলেছিলে     এলোচুলে    বিবশ   বসন্ত তখন; শ্রাবণের মেঘ হয়ে   আজো দেখি  …

  • বেহুলা বাংলা – সনেট ১

    বাল্যে গড়ে মাটির পুতুল খেলেছি তোমার শরীর নিয়ে দুরন্ত কৈশোরে মুছেছি ঘাম ওই শুভ্র আঁচল দিয়ে যৌবনে কাঁধে রাইফেল ঘুরেছি নদীর পারে পথে-প্রান্তরে ছুড়েছি গ্রেনেড তোমার জন্যে বিজাতীয়  শত্রুর বাঙ্কারে প্রৌঢ়ে স্বজন নিয়ে গড়েছি পুতুলের একান্ত সংসার বার্ধক্যে তুমি হয়েছ বেহুলা আরো আপন আমার তোমাকে ছাড়া আর তো কোনো নিশিস্বপ্ন দেখিনি তোমাতেই পেয়েছি খুঁজে আমার…

  • ইকারুস

    ফিরে এসো ইকারুস ডানা পুড়ে যাবে সূর্যকে ছুঁতে নেই ওসব  দেবতাদের একান্ত ভুবন; ফিরে এসো মাটির কাছাকাছি রেখে দিবাকর   মাথার পেছনে নতজানু হও     মা-ভূমির কাছে; বরং রোপণ করো  একটি বৃক্ষের চারা গর্ভে       ধরিত্রীর নতুন বীজসৃজন    দেবে অমরত্ব তোমায় স্বপ্ন রাখো আকাশে দুটি পা    পৃথিবীর বুকে; ফিরে এসো ইকারুস থাকো    মা-মাটির কাছাকাছি ॥

  • কৃষ্ণগহ্বর

    অমূল্য সময় গেল   অবুঝ প্রেমে আর  বাকিটা বয়স   অতৃপ্ত কামে কিছুটা কাল   ইট-কাঠ-কড়িবর্গার ধামে আর বাকি কালবেলা    ঠুঁটো ঈশ্বরের নামে; এই সব কিছু নিয়ে   জীবন শিরোনামে দুর্বল লেখকের    ব্যর্থ চিত্রনাট্য যেমন পায় না   কখনোই   প্রাণ     উজ্জ্বল পর্দায় তেমনই   অজান্তে    আমাদের    অযুত সুখ-দুঃখ-888sport sign up bonus কত না আলোকবর্ষের   অপূর্ণ    স্বপ্নসাধ যত  অচিন এক   কৃষ্ণ গহ্বরে হারিয়ে যায়    চিরতরে  …

  • ক্যাসান্দ্রা

    কবি যেন  অভিশপ্ত   কন্যা ক্যাসান্দ্রা বলে চলে  সূর্যজাত সত্য  যতদিন শ্বাস আমোদগেড়ে নগরবাসী  সে সবে  রাখে না বিশ্বাস অথচ  কত অনুক্ত কালবেলা বলেনি কী ডেলফি  সেই সব  অমোঘ সত্য বার্তা; সময় গড়িয়ে যায়  মুক্তা সময় হারিয়ে যায় নষ্টগ্রহ মানুষ  তবু তৃপ্তিহীন রয় এক যুদ্ধের পরে  থাকে আরেক  যুদ্ধের অপেক্ষায় আর প্রাচীন কবির পাণ্ডুলিপি  শুধু ধূসর…

  • শেষ শিরালী

    তানভীর মোকাম্মেল শেষ শিরালীর মতো টেনে বজ্রাঘাত আপন  শরীরে  বাঁচাবে তুমি কিষানের চৈতন্য ধান সাধনায়  পাবে লুপ্ত সরস্বতী নদী তুমি ব্যর্থ হলে কবি নিভে যাবে প্রমিথিউসের মশাল আদমের জন্ম বৃথা যাবে শুরু হবে চরাচরে মড়কমারি ধ্বংস অকাল; চাঁদ তুমি এই বার্তা পৌঁছে দিও বেহুলার কাছে একজন আজো কী এক মাথুর মায়ায় ঊষার আলোয় আর কালো জোৎস্নায়    নদীপারে ঘুরে ঘুরে কেবলই…

  • বেহুলা বাংলা – সনেট ১

    বাল্যে গড়ে    মাটির পুতুল   খেলেছি তোমায় নিয়ে দুরন্ত কৈশোরে   মুছেছি ঘাম   তোমার আঁচল দিয়ে যৌবনে   কাঁধে রাইফেল   ঘুরেছি নদীর পারে   পথে-প্রান্তরে ছুঁড়েছি গ্রেনেড   তোমার জন্যে   শত্রুর বাঙ্কারে প্রৌঢ়ে   স্বজন নিয়ে    গড়েছি   পুতুলের সংসার বৃদ্ধে তুমি    হয়েছ বেহুলা    আরো   আপন আমার তোমাকে ছাড়া   আর তো কোনো   স্বপ্ন দেখিনি তোমাতেই পেয়েছি খুঁজে   স্বরূপ  বিশ্বজননী; যখন ওরা বলেছে…

  • বেহুলা বাংলা – সনেট ২

    নদী বলে  স্বচ্ছতোয়া  জল দিই তোমায় জলের আরেক নাম   জীবন মধুময় বৃক্ষ বলে ছায়া দিই   চৈত্রের  নিদাঘ দুপুর আকাশ বলে বর্ষা দিই    সাজাই  তারার নূপুর বায়ু বলে    মৃদুমন্দ   বহি তোমার ঘর সূর্য বলে   আলোয় ভরাই   জগৎ চরাচর চাঁদ বলে   দিই তোমায়   অপরূপ  স্বপ্ন মায়াজাল তারারা বলে   সঙ্গী তোমার    আলোকবর্ষকাল; কেবল    বেহুলা   বলে না কিছু  নীরবে  …

  • সহোদর

    সহোদর

    ঝাউডাঙার পিচের বড় রাস্তাটায় উঠেই পরেশ দত্ত বুঝতে পারলেন, ভুল করে ফেলেছেন। কারণ দূর থেকে শাঁ-শাঁ করে আসা মিলিটারিভরা ট্রাকটা তখন ওদের অনেকটাই কাছে এসে পড়েছে। মাথায়, কাঁখে বোঁচকা-বুঁচকি নিয়ে পলায়নরত ওর পরিবারটি ততক্ষণে সৈন্যদের চোখে পড়ে গেছে। অবশ্য কেবল পরেশ দত্তের পরিবার নয়, আরো কয়েকটি পরিবার। আসলে চুকনগর গণহত্যা থেকে কপালগুণে সপরিবারে বেঁচে যাওয়া…

  • ছায়ালক্ষ্মী

    কে যেন এখনো কর্কটকালে অদৃশ্য আসে যায় আমাদের সিথানে বিষণœ শয্যায় বিরান ধানক্ষেতে আর বটতলার বিষাদ ছায়ায় মায়াচ্ছন্ন এক ছায়াপথ থেকে এ মøান জনপদে কে যেন নিভৃতে অস্ফুটে বলে যায় সুখে থাক; কেউ কী সে-ছায়ারূপ দেখতে পায় কেবল কবি ছাড়া কবি তাই ছন্নছাড়া যেমন পাগল খুঁজে ফেরে পরশপাথর তেমনই অচিন সে-রূপ আজো খোঁজে পাগলপারা। কিন্তু…

  • মুন্নী

    মুন্নী

    সাতচল্লিশের দেশভাগের পর ভারতের উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ থেকে দিনাজপুরে এসেছিল উর্দুভাষী আরিফ হাশমীর পরিবার। পরে দিনাজপুর শহর ছেড়ে পরিবারটি ঠাকুরগাঁওয়ে চলে আসে। উনিশশো একাত্তর সালে ওরা ঠাকুরগাঁওয়েই থাকত। হাশমী সাহেবের হার্ডওয়্যারের দোকান ছিল রেলস্টেশনের পাশে বাজারে। ঠাকুরগাঁও শহর ছাড়াও পঞ্চগড়, দেবীগঞ্জ এসব জায়গায় ওর পাইকারি দোকানের মাল চালান যেত। তাই ব্যবসাটা বেশ জমজমাটই ছিল হাশমী সাহেবের।…

  • কানাই

    কানাই

    শ্রীকৃষ্ণের নামে নাম রেখেছিলেন ঠাকুরমা – কানাইলাল বিশ্বাস। হাটে-মাঠে মানুষ অবশ্য ওকে শুধু কানাই বলেই চিনত। তবে কেন জানি এলাকায় তেমন একটা সুনাম ছিল না কানাইয়ের। জন্মের পরপরই মা মারা গিয়েছিল কানাইয়ের। আর বয়োপ্রাপ্ত হওয়ার আগেই কলেরায় ভুগে দুদিনের ব্যবধানে মারা যায় বাবা রসিকলাল বিশ্বাস ও দিদি মালতী। সেই থেকে কানাই একা। মানুষ বৃদ্ধ ঠাকুরমার…