অরূপ তালুকদার
-

পটভূমি হংকং
ভিক্টোরিয়া চূড়া থেকে ঝুঁকে নিচের দিকে তাকাতেই সমস্ত শরীর যেন শিরশির করে উঠল আকাশের। অনেক নিচে যতদূর দৃষ্টি যায় কিছুটা আবছা ধূসর বিশাল একটা ছবির মতো হংকং শহরটা ভেসে উঠল চোখের সামনে। তার একদিকের অনেকটা জুড়ে ভিক্টোরিয়া হারবারের নীল জল ঘিরে আছে। দুপাশে কাউলুন আর হংকং – পুরনো আর নতুন শহর। বিশাল বিশাল আকাশছোঁয়া স্কাইস্ক্র্যাপার…
-

অন্ধকার গভীরতর
মোটরবাইকে ওঠার আগেই কী ভেবে থমকে দাঁড়ালো শাহীন। মনে হলো, পেছন থেকে কেউ যেন ডাক দিলো। কোনো সিরিয়াস কাজে যাওয়ার আগে এভাবে পেছন দিয়ে কেউ ডাক দিক, সেটা একেবারেই পছন্দ নয় ওর। মেজাজটা একেবারেই খিঁচড়ে গেল। মাথায় হেলমেটটা গলানোর আগে ধীরে একবার ঘাড় ঘুরিয়ে পেছন দিকে তাকালো। পরিচিত কাউকে তো দেখা যাচ্ছে না। তাহলে কি…
-

মর্জিনার শূন্য যাত্রা
লা ল গেঞ্জি পরা ছেলেটির দিকে আমি তাকিয়েছিলাম। আমার মতো আরো দু-একজন দেখছিল ছেলেটিকে। ছেলেটি রাস্তার পাশের ছোট্ট চায়ের দোকানটির সামনে দাঁড়িয়ে – চা-ওয়ালার সঙ্গে কী নিয়ে যেন তর্কে জড়িয়ে গিয়েছে। কিছুটা দূর থেকে ঠিক বুঝতে পারছিলাম না আসলে তর্কটা কী নিয়ে হচ্ছে! অমল আমার পাশে পাশে হাঁটছিল। আমার দিকে একবার তাকিয়ে, একটু থেমে হাত…
-

জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে
শেষ পর্যন্ত ভাগ্য যেন সহায় হলো অনিমেষের। আগে থেকেই কিছু লোক দাঁড়িয়ে ছিল। অনিমেষ এসেছিল ঘণ্টাখানেক পরে। তার পরও আর কেউ কেউ এসেছে। ভিড়ের মধ্যে কয়েকজন মহিলাও আছে। সবাই লম্বা বোরখায় আবৃত। লঞ্চঘাটে এতগুলো মানুষ দাঁড়িয়ে আছে সেই কখন থেকে। সবার মুখে চোখে উৎকণ্ঠা, আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। গলায় তেমন জোর নেই। কথাবার্তা হচ্ছে খুবই কম।…
-

শিকার
ভোররাতে একটু দূরে চোখের সামনে দিয়ে ছোট পাখিগুলি দলবেঁধে উড়ে গিয়ে বসল আরেকটা ক্ষেতের মধ্যে। মফিজ আর সাজু তাকিয়ে তাকিয়ে শুধু দেখল। আসলে জালটা ঠিকমতো পাতা হয়নি। একপাশ খোলা ছিল। না হলে এমনটা হওয়ার কথা নয়। মফিজ তাকায় সাজুর দিকে, কেমুন হলো রে, তুই কোনো কামের না। এতদিনেও জাল-পাতা শিখলিনে! মফিজের চাইতে সাজু বয়সে কিছুটা…
-

গহিনে প্রলয়
কেন যেন হঠাৎ চমকে ওঠে খাদিজা। ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু এখন তো ঘুম ভেঙে যাওয়ার কথা নয়। খাদিজা কিছুই বুঝতে পারে না। বুকের ভেতর থেকে অজানা ভয়ের আবহ ধীরে ধীরে তার চেতনাকে যেন আচ্ছন্ন করে দিতে থাকে। চারদিকে গভীর রাতের নিকষ কালো অন্ধকার যেন সবকিছু জুড়ে একটা কালো চাদর বিছিয়ে রেখেছে। ঘুমভাঙা পাখপাখালিরও কোনো শব্দ…
-

জন্মান্তরের ঋণ
রাত প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। গাঢ় অন্ধকার এখন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। শীতের রাতের শেষে চারদিক জুড়ে কুয়াশার চাদর ছড়িয়ে আছে, যেন কান পাতলে জলের ফোঁটার মতো জমাট শিশির টুপটাপ ঝরে পড়ার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে এখান-ওখান থেকে। পুবের আকাশে লাল আলোর আভা দেখা যাচ্ছে। আস্তে আস্তে বাড়ছে। সূর্য উঠছে। কিছু পরেই লাল আলো ভোরের রোদ…
