বুলবন ওসমান
-

অনুজের জন্য শোক
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ছিল অনুজপ্রতিম। ১৯৫১ সালে তার জন্ম, সিলেটে। আমি তখন চট্টগ্রামে। দেশ ভাগ হয়ে গেছে। ১৯৫০ সালে চট্টগ্রামে স্থিতি। সরকারি এম. ই. স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি। এক যুগের ছোট। বাকি জীবন 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজনই সহকর্মী। অনুজ ছিল তাই সব সময় অগ্রজের সম্মান দিয়ে কথা বলত। বন্ধু হওয়ার সুযোগ বাস্তবে ছিল না। মানসে সহোদরপ্রতিম।…
-

আমিনা ফুপু ও বোন
আমার বাপ-দাদার পরিবারে ছেলের 888sport free bet খুব বেশি। তুলনায় মেয়েরা বড় 888sport free betলঘু। বড়দাদা ইরশাদ আলীর এক ছেলে ২৪-২৫ বছর বয়সে যক্ষ্মায় মারা যান। বাবার সমবয়সী ছিলেন। তার আগেই বড়দাদি মারা গেছেন, ফলে তাঁকে পুত্রশোক পোহাতে হয়নি। বড়দাদা একা সব দুঃখ বুকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে গেছেন। দ্বিতীয় বিয়ে করেননি। সন্তানহারা হয়ে তিনি আমাদের পরিবারের সদস্য হয়ে যান।…
-

আমিনা ফুপু
আমার বাবার মোট ভাইবোন ছিল আটজন। বড় পিসি বা ফুপু আনোয়ারা। তিনি বিবাহিত জীবনে বাইশ বছর বয়সে মারা যান। বাবা ছিলেন দাদা শেখ মোহম্মদ এহিয়া ও দাদি গুলেজান বেগমের দ্বিতীয় সন্তান। পুত্রসন্তান হিসেবে প্রথম। আনোয়ারা পিসিকে আমি দেখিনি। অর্থাৎ আমি জন্ম নেওয়ার আগেই তিনি ইহকাল ত্যাগ করেন। বাকি যাঁদের আমি দেখেছি ও জীবন কাটিয়েছি তাঁরা…
-

ফনেচাচা : দ্বিতীয় পর্ব
আমাদের গ্রামে কোনো শিক্ষালয় ছিল না। তাই বাবাকে (শওকত ওসমান) ছোটবেলায় কাদামাটি ভেঙে পাশের গ্রাম নন্দনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে হতো। নন্দনপুর আমাদের ঘর থেকে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার তো হবেই। সম্ভবত ১৯২৬ সালে আমাদের পাড়ার অদূরে পুবদিকে স্থাপিত হয় সবলসিংহপুর জুনিয়র মাদ্রাসা, অর্থাৎ প্রথম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি। বাবা তাঁর লেখাপড়ার শেষের দিকে এই সুযোগ পেয়েছিলেন। আমাদের এই…
-

ফনেচাচা
আমার বাবা ছিলেন আট ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয়। পুত্রসন্তান হিসেবে এক নম্বর। বড়ফুপু বা পিসির নাম ছিল আনোয়ারা। তিনি পূর্ণবয়স্কা হলে বিয়েও হয়, কিন্তু বিয়ের অল্প কিছুদিন পর মারা যান। আটজনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন আমার একমাত্র ছোটচাচা শেখ গোলাম জিলানী। তার ওপরে এক ফুপু ছিলেন আমিনা বেগম। বাবা ও এই দুজন, এঁদের সঙ্গেই আমার বেড়ে ওঠা।…
-

প্রসঙ্গ নন্দনতত্ত্ব
নন্দন – পুত্রসন্তান। রঘুনন্দন – শ্রীরামচন্দ্র। চট্টগ্রাম শহরে রিয়াজুদ্দিন বাজারের পাশে অবস্থিত ছিল – নন্দনকানন। মেয়েদের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও আছে ওই নামে। স্বর্গের-উদ্যান যার অধিপতি দেবরাজ ইন্দ্র : নন্দনকানন। নন্দনের সঙ্গে সুন্দরের একটা সংযুক্ততা আছে। আছে ভিন্ন অর্থও। সন্তানলাভ ভাবগত অর্থে আনন্দ-সংবাদ। এসব উচ্চমানের জায়গা ছেড়ে আমরা মানুষের জীবনের যাত্রাবিন্দুতে পৌঁছতে চাই। সেখানে নন্দন ছিল না।…
-

দাদা-দাদি
তৎকালীন যুগে আমরা সবাই ছিলাম গ্রামের ছেলে। আর জন্ম নিই মামার বাড়িতে। কারণ মায়ের বাবার বাড়িতে মায়ের যত্নটা ভালো হয়। অবশ্য এর ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়। তবে এটাই ছিল বিংশ শতাব্দী ও তার আগের সময়ের ধারা। আজ অবশ্য গ্রামেও স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে গেছে। এই প্রসঙ্গে মনে পড়ছে 888sport live chatাচার্য জয়নুল আবেদিনের কথা। এই মহান 888sport live chatী গ্রামীণ…
-

হরিশচকে যাত্রাপালা
সবলসিংহপুরের পুবদিক দিয়ে ছোট নদী মুণ্ডেশ্বরী বয়ে চলেছে। এপারে সবলসিংহপুর, ওপারে সরাসরি হরিশচক। আর উত্তরের শেষ দিকে পড়ে লতিফপুর। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পর জায়গার নামে অনেক অদল-বদল ঘটে।হিন্দু-মুসলমান দুই সম্প্রদায় জায়গার নাম বদল করে। কোথাও আবার সংক্ষেপে লিখে। যেমন 888sport appsে নারায়ণগঞ্জ হলো এন.গঞ্জ। তেমনি আমাদের মুণ্ডেশ্বরীর ওপারে হরিশচকের উত্তরের গ্রাম লতিফপুর হয়ে গেছে নতিবপুর।…
-

আমার গ্রাম সবলসিংহপুর
খুব মজার ব্যাপার হলো, আমার গ্রাম সবলসিংহপুরে থাকা হয়েছে কম। কারণ বহুবিধ। একে বাড়ি মাটির চালার। দুই, আশপাশে খালি জায়গা নেই। তিনদিকে ঘর। সামনে নতুন পুকুর। এই দক্ষিণটা খালি ছিল বলে বাঁচোয়া। না-হয় দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা। উঠোন বলতে তেমন আলাদা কিছু নেই। আমার বড়দাদা শেখ ইরশাদ আলী তাঁর মাটির দোতলা বাড়িটা আমার বাবা ভাইপো…
-

মামা-২য় পর্ব
কয়েকদিন িবাড়িতে থেকে মামা কলকাতা চলে গেলেন। এর মধ্যে বালক হিসেবে আমি মামার নিত্যসঙ্গী হয়ে গেলাম। বাগান ও খালপাড়ে দূরে দূরে যাওয়া ছোটদের পক্ষে সম্ভব নয়, তাই আমি একা মামার সঙ্গী। আর মাত্র যুদ্ধফেরত এক সোলজারের একজন ব্যাটম্যান তো চাই। তাই আমি সেই জায়গাটা পূরণ করে ফেলি। মামাকে বুঝতে না দিয়ে লেফট রাইট করে পা…
-

সেগুনবাগিচার কাঁচাবাজার ও ভাণ্ডারী
পশ্চিম গগনে সূর্য। মা’কে সঙ্গে নিয়ে নিজের আবাস বিক্রি করে সেগুনবাগিচায় ফ্ল্যাটে উঠতে হলো ফজলকে। ফার্নিচার খুব সামান্য। ভাণ্ডার বই-পুস্তকের। একটা কামরায় সব বই ঢেলে রাখল। পরে র্যাক তৈরি করে সাজাবে। রান্নাঘরে কোনো তাক নেই। ফলে মিস্ত্রিকে ডাক দিতে হবে অচিরে। রাস্তার পাশে পশ্চিমদিকের কামরা, তার শয়নকক্ষ, অথচ সকালটা কি নীরব। পাখ-পাখালির ডাক নেই। নেই…
-

মামা আসছে-১
জন্ম থেকেই শুনে আসছি মামা যুদ্ধে গেছেন। মামাকে দেখিনি অথচ আমি ছ’বছরের বালক। মা আর তাঁর দু’বোন – মামা একা। কিন্তু সবার বড়। ছবিতে দেখেছি ইংরেজ সোলজারদের মধ্যে। মামাকেও ইংরেজ মনে হতো। ছ’ফুট লম্বা, ফর্সা, মাথায় ফেল্ট হ্যাট। সেই গ্রুপ ছবিতে দেখে মামার পুরো চেহারা কল্পনা করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। মামা যুদ্ধে…
