April 2019
-
একলা থাকার ফাঁসি
নেয়ামুল নাহিদ গাছেরা রাত জেগে থাকে থাকুক, তাই বলে খারাপ মন, কিংবা মন খারাপ হলে Ñ যদিও নির্ঘুম থাকা যাবে অগণিত রাতে তবু জেগে থাকা ভালো নয়, গাছেদের সাথে। কারো মাথা উঁচু, কেউ তো আছে নুয়ে আমার মতো একলা হলে কেউ কি থাকে শুয়ে? অগুনতি পাতার খসখস, আমার কাছে ফিসফিস কেউ কি জানে, হারানো এক…
-
ঈর্ষা
শফিক আহমেদ কী এক ঈর্ষার দহনে জ্বলছি দিনরাত হাহাকার ভূশ–র কাকের মতো দেখছি ত্রিকাল স্থান নেই কোনোখানে ক্রমাগত ঈর্ষার আগুনে জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে মনে হয় প্রস্তরে বিলীন। ভাঙা ঘরে সারাদিন বসমেত্মর গান পাখিরা যায় যে উড়ে, বাতাসে হিন্দোলিত সুকুমার শাখা, পথিকেরা বলাবলি করে, ‘ও যে আমাদের একজন আমাদের কথা বলে আমাদের প্রাণের ভাষায়।’…
-
অনুভূতিদেশ
আদিত্য নজরুল তুমি বরং হারিয়ে যাও কিছুটা জটিল হারিয়ে যাওয়ার সূত্র দিয়ে। তুমি হারিয়ে গেলেই সুঁই হারানো গৃহিণীর শ্রমে খুঁজবো তোমাকে হাতের তালুর স্পর্শে। খুঁজে খুঁজেধ তোমাকেও পাবো নতুনভাবে। জীবন যেভাবে মৃত্যুকে খুঁজে নেয় তুমি হারিয়ে গেলেও খুঁজে নেব সেইভাবে।
-
তৃতীয় নয়ন
আদিত্য নজরুল চেয়েচিমেত্মই চলছে এ-পৃথিবী। যার যতটুকু প্রয়োজন হরণ করছে বিবিধ কৌশলে কোকিলের ঠোঁট থেকে কেউ কেউ ছিনিয়ে নিচ্ছে বসমেত্মর গান। সন্ন্যাস নিয়ে বসেছিল যে-অরণ্য বেহায়া নগর এসে দ্রৌপদীর বস্ত্রের মতোই খুলে দিলো ছায়ায় লাবণ্য। মৌজায় মৌজায় দেখি আইল সম্প্রসারণের দ্যুতি মাচানে বইছে যে লাউয়ের ডাঁটা তার চাওয়াও এখন দুর্বোধ্য নয়। …
-
ফুলের আয়ু
করিম রেজা ফুলের আয়ু, কোথায় তার জীবন রূপ ধাঁধিয়ে হঠাৎ ঝলসে যায়, দীর্ঘজীবী, ক্লামিত্ম যার ভূষণ অন্ধকারে কোথায় পথ হারায়! সবাই খোঁজে রূপলাবণ্যগন্ধ অন্ধকারে বন্ধ সব দুয়ার আঁধার-আলোর প্রকৃত এই দ্বন্দ্ব ফুলের কাঁটায় মন ভেঙেছে কার! ফুলের বনে সাপ ঢুকেছে কাল পাপড়ি ওড়ে বিষের যন্ত্রণায় ফুল কামিনী দংশনে মাতাল রূপলাবণ্যে পৃথ্বী পুড়ে যায়।
-
দুঁহু
শুভাশিস সিনহা একদা দুজনে মনে আছে শৈলবালা, হিমনগরীর পথে কেবল চক্ষক্ষর দীপ জ্বেলে ঘুরেছি, নিরন্ন প্রেমতরাসের গান কণ্ঠে নিয়ে জলসায় মজেছে চৌধারে, অভিসারিকারা, কেন চন্দ্রমা গলেছে দুধে, কেন জোনাকি পাহারা দিয়ে অগ্নিফুলে সাজালো বিরহশয্যা, পথান্তর-সংলগ্ন যুগল দেহাতি হারানো মন্দির, প্রত্নবেদনার হৃৎদুর্গ, ভাঙনপ্রস্তর দেখিনি দেখেও তবু, একদা শৈলের ভাবে, হিমনির্ঝরিণী আঙুলে আঙুলে জড়ানো প্রণয়-পত্রাবলি, ভাসে, ওড়ে,…
-
মাধুকরী
শুভাশিস সিনহা তুমি কাঙালিনী, আমিও কাঙাল, অন্তরীক্ষ-মদিরার ফুল কামনার পরশনে কেঁপে ওঠে আমাদের রুদ্ধস্নায়ুমূলে প্রস্ফুটিত বসমেত্মর দিন, সেই কবে গৃহহারা যে আমরা ফেরার রাস্তায় ঝঞ্ঝা, বিজুলি কি ঊনবর্ষা, বন্দুক, বারুদ শোণিত-আলতা পরে নাচো তুমি, আমি করি গান হাওয়াশিসে আমাদের সংবেদনার ত্বক কবে যেন বৃক্ষক্ষর বাকল, খররোদে পুড়ে পুড়ে যেচেছিল ভালোবাসা-ওষ্ঠ-ছোঁয়া সৌম্যপথিকের ঊর্ধ্বমুখী ক্ষক্ষপ্র তৃষা, নিজেতে…
-
ছায়াসখা
(উৎসর্গ – স্বর্গত দ্বিজেন শর্মা) আলোময় বিশ্বাস যে-বৃক্ষ রেখেছিলে সুরের বিস্তারে আকাশের ভাঁজে গোপনে, নীলে, সবুজে শীতলে – সে এক পুরনো অরণ্য। সে তো স্বপ্নবৃষ্টি হতে নেমে আসা প্রাণ ফুলে ফলে সুশোভিত। কথা বলে, এইসব প্রবাহিত সুষমা লতা তারা জেগে থাকে সময়ের ধমনি তরলে গান গায় নাচে। তবু তো হেঁটে চলা থামায়েছো…
-
আমলকী
তুষার কবির বৃষ্টির দোতারা বাজে – জলে ভেজা কিশোরী কদম ফুটে ওঠে মুগ্ধ দ্যোতনায়! রক্তহিজলের ঝাঁকে সুরের সরোদ বাজে – দুই পায়ে হেঁটে যায় অলীক ডাকপিয়ন – উড়ে যায় জমা চিঠি দূরের এক আমলকীবনে! প্রেমের ক্বাসিদা বাজে ভুলে থাকা সান্ধ্যগানে – অশ্রম্ননদীর কিনারে – সেই সুরে ঘোরে এক কুমারী রাধিকা! এসো, হারিয়ে…



