May-June 2025

  • আধখানা শীতল চাঁদ

    আধখানা শীতল চাঁদ

    জল চুইয়ে পড়া ছাদের সিলিংয়ের গায়ে যে ছোপ ছোপ দাগ হয়েছে সেই দিকে অপলক চোখে তাকিয়ে বিছানায় শুয়ে আগামীদিনের কথা ভাবছিল শবনম। গত দু-বছর ধরে নানারকম তাবিজ শরীরে বেঁধে রাখার পর, আজ সকালে সে একটা নতুন মাদুলি কিনেছে এক ফকিরের কাছ থেকে। গত বছরটায় মসজিদে মসজিদে দিন-রাত্রি চোখের জল ফেলেছে সে। তারপরও আজ সকালে যখন…

  • জলে ভাসা নীলডুমুরের ফুল

    জলে ভাসা নীলডুমুরের ফুল

    পিল পিল করে পায়ে হেঁটে মাটির কাঁচা রাস্তা ধরে ধূলি উড়িয়ে যাচ্ছে নানা বয়সী কিছু মানুষ। পথে পথে বাড়তে থাকে ঘরফিরতি উৎসুক মানুষের দল। এ-যাত্রায় মুখে আনন্দের বিন্দুমাত্র নেই, আছে বাতাসে ভর দেওয়া কানে-মুখে ফিসফিসানি। ছোটরা মুখ উঁচু করে কান খাড়া করে পাশের মানুষটা কী বলছে গোপনে তা জানার জন্য। হাঁটার পথে আছে উহ্-আহ্ শব্দ।…

  • জীবনকে ভালোবেসে…

    জীবনকে ভালোবেসে…

    ‘দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, স্যার। আমার জন্য কিছু একটা করেন। আর পারছি না। বেঁচে থেকেও প্রতি মুহূর্তে আমাকে প্রমাণ করতে হচ্ছে যে, আমি মরে যাইনি।’ কথাগুলো এক নিশ^াসে বলে শেষ করে আমার দিকে যুবকটি তাকালো ছলছল চোখে। দেখতে সুদর্শন, বয়স আনুমানিক পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশ বছর হবে। তার মায়াকাড়া চেহারার মধ্যে অদ্ভুত এক বিষণ্নতা এমন গভীরভাবে লেপটে আছে…

  • মৌরিন এবং নির্জন এক সাগরদ্বীপ

    মৌরিন এবং নির্জন এক সাগরদ্বীপ

    সৈকতের মোবাইলে অচেনা একটা নাম্বার থেকে ফোন এলো। ফোন ধরার পর মিষ্টি আর মিহি 888sport promo codeকণ্ঠ শুনে মনে হলো কণ্ঠটা তার চেনা। 888sport promo codeকণ্ঠ বলল, আপনার সঙ্গে একটু বসতে চাই। মে বি অ্যারাবিকা কফি হাউজে আমরা সন্ধ্যায় বসতে পারি। – আপনি? আমি ঠিক চিনতে পারছি না। – আমি লেভেল টু’র ভাড়াটিয়া। নাদিয়া শ্রাবন্তী। – ওহ, স্যরি। আপনার…

  • লালাই

    লালাই

    এই ঝালরকাটা জ্যোৎস্নায়, যখন না-দিন না-রাত, মন্দারবাড়ির উঠানে কে কথা কয়, কে ডাকে? এ কি ডাক, নাকি বিরহের সুর? যেন মানুষেরই কথা, মানুষেরই ডাক, মানুষেরই সুর। সে কি মানুষ? হয়তো মানুষ, কিংবা অর্ধমানুষ, কিংবা না-মানুষ। কিংবা সে মানবাধম কোনো প্রাণী। মানবাধম, না মানবোত্তম? এই বিচিত্র জগতে বিচিত্র সব প্রাণীর মধ্যে কে কার অধম, কে কার…

  • সুখমনের সুখ

    সুখমনের সুখ

    নাম সুখমন। জাতীয় পরিচয়পত্রে এমনই আছে। সেখানে একটা জন্মতারিখও লেখা আছে। তবে সেটা তার জন্মতারিখ ছিল কি না সে জানে না। এটা ভোটার তালিকা করা লোকের কৃতিত্ব। সুখমনের মায়ের বলা একটা কথা তার মনে গেঁথে আছে। তার জন্মের বছর মহাবন্যা হয়েছিল। তাদের জন্মভিটের নিচে নৌকা লেগেছিল। মায়ের কথাটা বিশ^াস করতে কষ্ট হয়। নৌকা এই উঁচু…

  • মেঘের বিদ্যুৎ মেঘে যেমন

    মেঘের বিদ্যুৎ মেঘে যেমন

    অনেকটা দূরত্ব পেরিয়ে ক্লান্ত তিতলি, ছয়তলার নিচে ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে যিশু। বিষণ্ন! যিশুকে দেখলে তিতলির বুকের ভেতর ব্যথা হয়, টনটন করে কোথাও। একবার মনে হয় ফিরে গেলেই হয়, কী হবে কাছে গিয়ে; এরচেয়ে এ-ই ভালো – থাকুক কেউ তার অপেক্ষায়! হয় না আর। যিশুর সুতোর টান অনিবার্য। তিতলি সিঁড়িতে এগোয়, হাত বাড়িয়ে কাঁধের ব্যাগটা নেয়…

  • রাজবিলাস

    রাজবিলাস

    গুড়ুম! গুড়ুম! গুড়ুম! বন্দুকের গুলির শব্দে অপরাহ্ণের রাজবিলাস জেগে ওঠে। হরেক রকম গাছের ঝোপ থেকে ঝাঁক-ঝাঁক পাখি সরবে উড়ে যায়। সেই উড়ালে গাছের ডালপালা ঝাঁকুনি খায়। পাকা আম থুপ্থাপ্ ঝরে পড়ে। সারি-সারি কড়ই গাছের ডালে কেহ্চকুমারী পোকার প্রিয় কচি পাতার কোনো কোনো ঝোপও কেঁপে ওঠে। এমন ঝলমলে দিনে বন্দুকের শব্দ বাজ পড়ার মতো চারদিক কাঁপিয়ে…

  • ভানুমতীর ঐরাবত যাত্রা

    ভানুমতীর ঐরাবত যাত্রা

    শুক্লপক্ষের ত্রয়োদশী তিথি। বৃক্ষায়ুর্বেদবিদ্যা পাঠ শেষে ভানুমতী পিতার জন্য ঘৃতান্নসমেত নালিতা শাকের বন্দোবস্ত করতে বসে গেল। প্রভাতের আগেই তিনি বিহার রওনা হবেন। ভানুমতীর বড় ইচ্ছা সেও একবার বিহারযাত্রা করবে পিতার সঙ্গে। কিন্তু সে এক দীর্ঘ ক্লান্তিকর পথ। কত দূর-দূরান্ত থেকে শাস্ত্রজ্ঞান নিতে আসছে মানুষ! গল্প শোনে আর মুগ্ধ হয়ে তারা মায়ের নামে সংকল্প ব্যক্ত করে,…

  • দিনটা যখন যায়, যার যায়

    দিনটা যখন যায়, যার যায়

    আমার ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট – নামটা নাই বা বললাম, খবিশ লোকেরা তো জেনেরিক, আলাদা নামের মহিমা তাদের জন্য না – আমাকে যে সহ্য করে না, তার প্রমাণ দিলো 888sport app থেকে হঠাৎ আমাকে বরগুনা বদলি করে, তার আস্তিনের নিচে লুকিয়ে রাখা বিশেষ ক্ষমতা আইনে, যদিও তার ক্ষমতাটা যে বউ-বাহিত এবং চুরি-চামারিঘটিত তা আমি জানি। তবে…

  • আগুন

    আগুন

    সত্যি বলতে একরকম রাতারাতিই গৌরীসেনের ভাণ্ডার লুটে এনেছিল তারা। কি দিনই না গিয়েছে সব। আর্থকাটিং, জাঙ্গলক্লিয়ারিং, হাটিং, ব্রিকসলোডিং, আর আনলোডিং, – এক একটা কন্টাক্ট-এর সঙ্গে রানিং পেমেন্ট। আরাং নেই এক পয়সার অথচ টাকা এসেছে যেন স্রোতের মতো – উপড়ে পড়েছে গিয়ে ব্যাঙ্কে ব্যাঙ্কে। আর সে কি কর্মচঞ্চল জীবন। রয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের এস, ডি, ও, থেকে…

  • মেহের জানের মা

    মেহের জানের মা

    ফাঁকা একটা প্রথম শ্রেণীর কামরার ভিতর দিয়া আসিয়া জমিলা রকীবাকে ছোট্ট একটা কুঠুরীর ভিতর প্রায় ধাক্কা দিয়া ঢুকাইয়া দরজা বন্ধ করিয়া দিল। রকীবার পেটে পিঠে শাড়ীর নীচে চটের থলিতে সুপারী বাঁধা। হাতে মবিলের টিন। দেওয়াল ধরিয়া দাঁড়াইয়া সে ঘন ঘন নিশ্বাস ফেলিতে লাগিল। নিজের পেটের দিকে নজর পড়িতে মনে হইল যেন আট-নয় মাস। মেরা-জান যখন…