চঞ্চল শাহরিয়ার

  • ইচ্ছা 

    খুব দ্রুত ভুলে যেতে হবে সব। খুব দ্রুত ভুলে যেতে হবে এই চিরচেনা পথ। এই আবীর মাখানো স্বপ্ন স্বপ্ন দিন। এই রাতভর জেগে থাকা। এই বইয়ের পাতায় ছড়িয়ে থাকা ঝকমকে বুকের কাঁপন। ভুলে যেতে হবে কোকিলের ডাক শুনে জানালায় উঁকি দেওয়া ভোর। ভুলে যেতে হবে নীল শাড়ি পরা মেয়েটির দেওয়া অকারণ প্রতিশ্রুতিগুলো। কে কাকে প্রশ্রয়…

  • কিশোরীর নাম নুসরাত 

    যার ছায়ায় দাঁড়িয়ে তুমি বেড়ে ওঠো রোজ, যার অনুপ্রেরণা তোমায় নিশিদিন মোহাচ্ছন্ন করে রাখে, তার কথা একদিন চুপচাপ শুনবার ইচ্ছা খুব। সে তোমার শৈশব করেছে মধুময়, কৈশোরের দুরন্তপনায় মেতে আছো তার স্নেহ নিয়ে। আর তার তারুণ্যের দিনগুলো শুধু স্বপ্ন জোয়ারে ভেসেছো তার মতো হবে বলে। কেউ কি কারো মতো হয়? যে যার মতো হয়। তুমি…

  • মন মহুয়ার জন্য

    বসে গেছি। মন মহুয়ার দেখা পাবো বলে। মন মহুয়া তো অভিমানী। ফিরবে না হয়তোবা। আমি তবু গোছগাছ করি। এই গোছগাছ গোপন গোপন। এই পথ চাওয়া একান্ত আমারই। সে এলে স্বপ্ন গড়াবে। দিগন্ত পেরিয়ে। না এলেও ইচ্ছা রূপ নেবে কাব্যময়। কথাগুলো একা একা বসে ভাবি। গরম কফির কাপে প্রাণটা জুড়িয়ে যায়। আর মন মহুয়ার পেছনে পেছনে…

  • দূর পরবাসিনী

    হাস্নাহেনা আপনার নাম নয়। তবু হাস্নাহেনা গাছের নিচে দাঁড়ালে খুব করে মনে পড়ে আপনার মুখ। আপনি আমার কৈশোর  –  কাঁপানো প্রেম। আপনার কাছাকাছি থাকলে তখন ভাতের খিদে ভুলে যেতাম। স্কুলমাঠে ফুটবল খেলতে যেতে দেরি হলেও মন খারাপ হতো না। নানা অছিলায় আপনার মুখটা দেখার জন্য বারান্দায় ছুটে ছুটে আসতাম। এক ভরা জোছনায় তো আর একটু…

  • মায়া

    অন্দরমহলে ঢোকার আগে কত কিছু দেখে নিতে হয়। নদীপাড়ের মানুষ, অসহায় বেদেনীর মুখ, সাহেববাড়ির গেট, নির্জনতা থেকে বাঁচবার জন্য যাত্রাদলের নায়িকার আঁচল ধরে কেঁদে ফেলা।  অবসরে যাইনি কখনো। অন্দরমহলে ঢোকার আগে তাই মন ভরে দেখে নিই দূরের আকাশ, শীতের রোদ্দুর, অদিতির বাঁধভাঙা হাসি, সিংহ দরোজায় কারুকাজ করা ময়ূরের নাচ, খেয়ালী সংঘের নাটকের রিহার্সাল। অন্দরমহলে কে…

  • বুদ্ধদেব গুহ

    আপনার লেখা পড়ে যে কেউ ভাববে আপনি বন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। কিন্তু আপনি তো ছিলেন রসকষহীন ব্যস্ত চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। ছিলেন দারুণ প্রকৃতি-প্রেমিক।  আপনার ঠোঁটে রাখা পাইপের ধোঁয়া, তামাকের জন্য আপনার ব্যস্ততা দেখার সৌভাগ্য যাদের হয়েছে তারা ভাবতেই পারবেন না এই আপনার হাত দিয়েই লেখা হয়েছে একটু উষ্ণতার জন্য 888sport alternative link। এই আপনার হাত দিয়েই লেখা হয়েছে…

  • রাজকন্যা

    কী যে ভালোবাসি মেয়ে, কী যে ভালোবাসি। তুমি তা বোঝো না বোঝো না। বোঝো না বলে আবার হলুদ দোতলা বাড়ি নিয়ে 888sport app download apk লিখছি। ছাইরঙা জানালায় মিশে যাওয়া তোমার লজ্জা, আলো নিভিয়ে দেবার পর আরো আলোকিত ঘরের রহস্য আমাকে গোলকধাঁধায় ফেলে। তুমি চুল বাঁধতে বাঁধতে আমার বোকামো দেখে হেসে কুটিকুটি।  ময়ূরের পেখম ছুঁয়েছি কবে, কবে দেখেছি…

  • চিটাগাং

    আমি মোবাইল ফোন বন্ধ করে চার্জ দিলে তুমি খুব টেনশন করো। কক্সবাজার থেকে ফিরতে কখনো দেরি হলে আগ্রাবাদ থেকে চলে আসো চিটাগাং ক্লাব। আমার খোঁজ না পাওয়া পর্যন্ত তোমার অস্থিরতা কমে না, কমে না। আমি যেই চেরাগী পাহাড় মোড়ে ঢুকি, আমি যেই কাজীর দেউড়ী এসে কবুতর ওড়ানোর গল্প বলি, ফ’য়স লেকের ভোরবেলা আর আসকার দিঘির…

  • সোনাঝরা দিন

    চঞ্চল শাহরিয়ার   ঈশ্বরদী জংশন থেকে শেলী আপাকে আবার চুয়াডাঙ্গা পৌঁছে দিতে হবে। না হলে খুবই রাগ করবেন আমার সাহানা আপা। অভিমানে ভেঙে পড়বেন কুষ্টিয়ার খুকু ফুফু।   এইসব কা- দেখে আমি শুধু হাসি। হেসে হেসে মরি। তারপর শেলী আপার ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে পার হই শীতের ওভারব্রিজ। শেলী আপা বললেন, আমার খুব খিদে পেয়েছে। তেঁতুলের…

  • সেই সুখ

    চঞ্চল শাহরিয়ার   তখনো রবীন্দ্রনাথে আচ্ছন্ন আমি জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির দোতলায় হাফপ্যান্ট আর গেঞ্জি পরা কিশোরীর কৌতূহল ভেঙে ভেঙে হাতে তুলে দিচ্ছি।   জোড়াসাঁকো, শিলাইদহের রবীন্দ্র-কুঠিবাড়ি আর দক্ষিণডিহির বর্ষার দুপুর দিয়ে দিচ্ছি ভালোবেসে কিশোরীর আঙিনায়।   সেই সুখ-সোহাগী কার্নিশে খেলা করে নিশিদিন।

  • সেই সন্ধ্যাগুলো

    চঞ্চল শাহরিয়ার সেই সন্ধ্যাগুলো কাকে তুমি দিয়ে দাও রোজ টিভি রুম থেকে বেরিয়ে বারান্দা তারপর পড়ার টেবিল আর হালকা সাউন্ডে আসিফের গান। আজ কার কথা ভেবে পার করো সন্ধ্যা কফিতে মুখ রাখতে গিয়েও ভাবছো এই বুঝি এলো দুরন্ত কিশোর। অবুজ কিশোর আর ফিরবে না কোনোদিন তবু কার জন্য যতেœ রাখো সন্ধ্যা কেন ভাবো যদি একবার…