জলধি হালদার

জলধি হালদার গভীর রাতে এই শহরের জেব্রা ক্রসিং পার হয়ে, সে উদোম রাস্তাগুলো মরা জ্যোৎস্নার ভেতর ঢুকে গেছে তার নির্জন বারান্দায় ঘুরে ঘুরে একজন লোক পুরনো স্বপ্ন কুড়োয়। কুড়োতে কুড়োতে উপচে পড়ছে কাঁধের ঝোলা ভেঙে যাওয়া স্বপ্নের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধুর টুংটাং। বয়সের গাছপাথর না-থাকা লোকটি বেশ কুঁজো হয়ে ঝোলা বইছে। এগুলো নিয়ে কী হবে? সারারাত…

জলধি হালদার এক এই বাংলার সব পাখি ও নদীর মতো আপনার সমূহ গা-ীব আর অগাধ জলের তূণীর চলে গেল বঙ্গোপসাগরে। কে ডাকবে তাঁরে! আমাদের লোক ও অলোককাহিনিতে এখন শূন্যতার প্রহর অভিদ্রোহী গাছের শিকড়ে। মনে করো সাবলীল, এসব বৈশাখে রচিত হয় ধারালো বঁটির সামনে ছাই মাখানো মাছ পরানের গহিন ভিতরে। দুই আমি নেপেন দারোগা থেকে আসছি…

জলধি হালদার   যেখানে দেখা হোক, মেয়েটি আমাকে চুমু দেয়। যে-কোনো আবহাওয়ায়, স্বপ্নের খড়কুটোর ভেতর   এই নড়বড়ে জীবনের কিচিরমিচির, যে-কোনো মূর্ছনায় সে ডানা মেলে আমার বিড়ি খাওয়া ঠোঁটের ওপর।   যেখানে এক মুহূর্তের দেখা – ব্যসত্ম শহরের কার্নিশে যে-কোনো গ্রামের এঁদো পুকুরের পাশে   ইস্, যেদিন সমসত্ম শিথেন জুড়ে ঘোলাটে হয়ে যাই তখনো আহ্লাদে…

জলধি হালদার শেষ রাতে মাঝে-মাঝে আমি বিছানা ভিজিয়ে ফেলি। গতকাল যেমন মরুভূমিতে বেড়াতে গেছি পঁয়তালিস্নশ পঞ্চাশ ডিগ্রিতেও গরম লাগছে না। কোনো দিন মধ্যশীতের আইসল্যান্ডে আমি দিব্যি হাফহাতা গুরু পাঞ্জাবি। মাঝে-মাঝে কুয়াশামাখা একটি মেয়ে খুব পরিচিত, মনে হয় কাছাকাছি থাকে শহর জুড়ে খুঁজে পাইনি কোনো দিন। মেয়েটির শরীরে আজো ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’। ঘুমের রক্তে যখন…

জলধি হালদার এই জলপ্রান্তরের গোধূলিসন্ধিতে দুরকম ঘণ্টি বাজে একটি লাগাতার, একটি সেভেন শর্ট ওয়ান লং। ঘণ্টি বেজে উঠলেই জাহাজের আনিতে স্পষ্ট রবিনসন ক্রুশো। বুকে লাইফ জ্যাকেট বেঁধে দৌড় দৌড়। বোটের প্ল্যাগ এঁটে, ল্যাসিং খুলে স্টার্নসিট, বোম্যানেরা তৈরি হারবার পিন সরিয়ে বকের গলার মতো ডেভিট ঝুঁকে পড়ে জলের দিকে। আনিতে গোঁফদাড়িওলা ঝাঁকড়াচুলো ক্রুশো আপন মনে হাসছে।…