সুজিত বসু
-
সেতুর উপর গালিয়া
মস্কো নদীর সেতুর উপর হঠাৎ হলো সাক্ষাৎকার নদী তখন সূর্য-তেজে গলন্ত এক দীপ্ত ধাতু ফাল্গুন না চৈত্র মাস ঠিক মনে নেই এখন আমার উরালদেশি আধো আধো মিষ্টি রুশি উচ্চারণে মনের ভিতর কুয়াশানীল, চোখেও কী আশ্চর্য জাদু গলার রুমাল ঘোমটা হলো, কপালে টিপ কী বিভ্রমে হঠাৎ সিঁদুর, বেলাশেষের ক্লান্ত আলো এক ঝলকে স্নিগ্ধ শিথিল জ্যোৎস্না যেন…
-
বিষাদে লুবাকে
চাঁদ নেমে এসেছিল সেই রাতে সেবিকার পবিত্র অ্যাপ্রনে উন্নত পাহাড়চূড়া আলোর আভাসে স্নিগ্ধ ইশারায় ডাকে বিভাজিকা শান্ত স্নেহে সংকেত পাঠিয়েছিল আচ্ছন্ন আমাকে বাহুতে চাঁদের ছায়া, শিহরণে কেঁপে উঠি শরীরে ও মনে প্রথম বিদেশে যাওয়া, যৌবন প্রবেশদ্বারে সবে নাড়ে কড়া ভাষা তো অজানা ছিল, কথা নয়, শুধু জানা নাম তার লুবা লুবভের অপভ্রংশ, জেনেছি অনেক পরে,…
-
ঘরে ফেরা
ঘরে ফিরে মনে হয় স্বয়ংক্রিয় আলো জ্বলে উঠবে স্বপ্ননীল, ঘরে ফিরে রোজ মনে হয় কেউ আসবে, নিয়ে যাবে খোঁজ বেঁচে আছি কিংবা আমি মরে গেছি কি না প্রিয় বন্ধু কেউ এলে খুবই হয় ভালো বন্ধু যদি নাও আসে অন্তত শত্রুরা ঘরে এসে কথাচ্ছলে করে যাক ঘৃণা আমার তুচ্ছাতিতুচ্ছ দুঃখ ব্যথা সুখ ঘরের আসবাব ছাড়া কেউ…
-
যোগাযোগ
আলোছায়ার খেলা তোমার মুখে যতই কেন থাকি আলোর খোঁজে মুখ ঢাকলো ছায়াই অসংকোচে ভাগ্য হাসে বিদ্রƒপে কৌতুকে ওষ্ঠাধরে অনেক মধু জমা দাওনি পেতে কখনো তার স্বাদ একটা ছোট বিচ্যুতিকে ক্ষমা করলে জীবন হতো না বরবাদ চাঁপার সুবাস ছিল তোমার দেহে দূরে থেকেই উপভোগের স্নান চেয়েছিলাম, লুকোলে সন্দেহে সহ্য করি তীব্র অপমান অস্নাত সেই অবস্থাতেই বাঁচি…
-
ফেলে আসা দিন
সুজিত বসু গলির মোড়ে প্রথম দেখি তাকে নরম ভোরে পথে পটের ছবি সর্বনাশই হাতছানিতে ডাকে দু-চোখ হলো প্রতীক্ষাতে লোভী গলির মোড়ে বাগানওলা বাড়ি গোলাপ গাঁদা মল্লিকা মালতী ফুলকে দিত মৃদু জলের ঝারি আর আমাকে লাগামছাড়া ক্ষতি বুকে তখন কচি ঘাসের ঝোপ গলার স্বরও ভাঙতে থাকে রোজ তার দু-গালে লজ্জাগাঢ় ছোপ না চাইতেই নয়নসুখী ভোজ অতীতে…
