হাসান হাফিজ

  • রঙ্গন চুম্বন চায়

    খোঁপায় বাগান সুন্দর হইল রঙ্গন ফুলের রংটা লাল সংযম ধইরা রাখতে কষ্ট মন কী ব্যাকুল হয় বেহাল। ছোঁয়া যায় না সেই ফুলে রে রই বেচইন কোন ভুলে রে দুঃখের নিশি কাটতে চায় না কিচ্ছুতে আর শান্তি পায় না দেখবে কবে ভোর সকাল। রঙ্গন পুষ্পের বর্ণিল ছটায় আবেগ-উচ্ছ্বাস ধুলায় লুটায় বুকের ভেতর দ্যায় সে মোচড় কাঁইপা…

  • বন্দি পাখি

    পরিণাম যে নির্মম হবেই আগে থাকতেই জানা চারপাশে খুব কড়াকড়ি বিঘ্ন বিপদ নানা জাইনা-শুইনাই বিষ খাইয়াছি বিষের বর্ণ নীল দংশন ছোবল জান পেরেশান মৌচাকে দ্যায় ঢিল পরানপঙ্খি আমি তোমার খুলবা কবে খাঁচার দুয়ার ভালোবাইসা হইছি কঙ্কাল খাইতে দিচ্ছ সকাল-বিকাল একটু পানি দানা। ওড়াউড়ি আর কী হবে? মুক্ত স্বাধীন হই যে কবে বন্দি যে একটানা।

  • কী যে চাওয়া কী যে পাওয়া

    নিঃসঙ্গতা জ্বেলে জ্বেলে অন্ধকারে পথ চলে কবি নৈঃসঙ্গ্যই তার ধ্যান আরাধনা সাধনার সিদ্ধি ও সুন্দর! একাকিত্ব, নিঝুম রোদন 888sport live chatতৃষ্ণা একবুক হাহাকার অতৃপ্তি ও অপমান কাঁটাগুল্ম তার অমøজান ও ক্লোরোফিল, ভাঙতে ভাঙতে বেদনায় নীল বেদনা ও মৃত্যুঝুঁকি পান করে করে বেঁচে থাকে ভাঙাপোড়া কবি, এঁকে যায় এক লপ্তে অপ্রাপ্তি ও বিরহের মনোলীনা ছবি!

  • রক্ত মৃত্যু ভালোবাসা

    জুলাই, তোমার কাছে বহু দেনা ঋণ শহিদের রক্তে পুষ্পে হয়েছো রঙিন। মøানতার স্পর্শ থেকে তোমাকে সরিয়ে হৃৎপিণ্ডের কোষে কোষে রেখেছি জড়িয়ে হঠিয়েছি অন্ধকার, পাশবতা কালো লাখো প্রাণ তোমাতেই আছে লীন, সর্বসত্তা দিয়ে            বেসেছো কী ভালো!

  • বেজে উঠছে সায়াহ্ন-সংগীত

    কালো কফি, তুমি কী মরণ? ধোঁয়াশায় নিভৃতির সংবেদ ক্ষরণ আধো নোনতা হালকা তেতো চিনি ও দুধের বি888sport app download for android হালভাঙা নৌকো তুমি পড়ে আছো তটে অবেলায় সখ্য তুমি দিতে পারবে কতটুকু আর? সংশয়ের মেঘ দেখছি ডানা ঝাপটায় ঝড় জল বিদ্যুতের ঝলসানি আহত আক্রোশ হয়ে উঠছে প্রবল, প্রবলতর আমরা ছিন্ন অসহায় দম হয়তো অচিরে ফুরাবে তখন উপায় –…

  • ভাঙাপোড়া জোড়া পঙ্ক্তি

    হাসান হাফিজ ১. ডুবে যাচ্ছি 888sport app download apk-শব্দের খনি, কাব্যলক্ষ্মী পাতালে তোমার জানি না সামনে আছে কী প্রচণ্ড বাধাবিঘ্ন শত্রু পারাবার ২. শব্দের পিপাসা তীব্র, এত ঘন, আগে তা জানিনি কোনোদিন বিলম্বে জেনেছি, তবু স্বীকার করছি তার মাদকতা সুদমুক্ত                                                           ঋণ ৩. যেতে সে চেয়েছে যাক, গিয়ে যদি সুখী হয় আপত্তি কিসের আমার সান্নিধ্য হয়তো ওর কাছে…

  • দরিয়া-গল্প

    এই দরিয়া ওই দরিয়া  মধ্যিখানে তুমি চারদিকেতে অকূল পাথার নাই পালানোর ভূমি জলের তলে অল্প আঁধার ডুবলে উপায় কি! নাই রে উপায় নাই রে পাগল বনে যাই রে এক দরিয়া তোমার যদি  অন্য সাগর আমি কোনখানেতে থামি কোনখানে জল ঘূর্ণিমায়া কুহকভরা পাতালচুমুক সেচতে সেচতে থামি  সাগর তুমি সাগর প্রকৃতিলীন বসুন্ধরার আর্তনাদেই জাগর রাত পোহালে একাকিত্বের…

  • কবি-সম্পাদকের প্রয়াণে শোকপঙক্তি

    (সম্পাদক আবুল হাসনাত ও কবি মাহমুদ আল জামান। একই বৃন্তে যুগল কুসুম) ধ্যানেজ্ঞানে কায়মনে আজীবন ছিলে তুমি নিঃসঙ্গ উদ্ভিদ ব্রতী ছিলে সম্পাদনে, একেলা নির্জন কবি তপস্যামগন, নিভৃতিপ্রিয়তা ছিল চিরসঙ্গী যেন শান্ত নিঃশব্দ ঘুঙুর হয়তো কোনো বহতা নদীর নাম, মর্মরিত দোলায়িত হাওয়ার বেহালাছড়ে বেজে উঠছে তোমার না-থাকা, আকস্মিক মৃত্যুর ছোবল এত ভয়াবহ কেন হয় কেন এই…

  • দীপ্র বাতিঘর তুমি

    পতাকায় মিশে গেছে পবিত্র রক্তের ধারা এই দায় মোচনের পূর্ণতা অর্জন করা সম্ভবপর নয়, লাল সূর্য সে-কারণে এত গাঢ় উচ্চকিত লাল ফেনিল সাগরে আছে দেশচেতনার ঢেউ আবেগে উত্তাল পলিমাটি জনপদ ভোর নদী মাঝি নাও হালট লাঙল দোয়েলের মগ্ন শিস, শাপলার উচ্ছ্বসিত ফোটা স্বপ্নে ও প্রত্যয়ে ঋজু সবকিছু হতে পারলো কীভাবে কেমন, অঙ্গীকারে স্বপ্নে ও সংগ্রামে…

  • নিবৃত্তির কোথায় সাকিন

    হাসান হাফিজ   পাহাড় প্রান্তর কেন ডাক দিচ্ছে উতরোল? এই ডাকে প্রণয়ের ভাত নুন লাবণ্য রয়েছে, উপেক্ষা কীভাবে করি? চাইলেও সম্ভবপর নয়। জাগতিক গ্লানির গ-ূষ ভাপ ইতিউতি ছলাকলা অস্বীকার করা যায় না। আষ্টেপৃষ্ঠে ছেঁকে ধরে তারা। বলছিলাম প্রণয়ের কথা। পরিণয় হবে না জেনেও কেন আর্তি দীর্ঘশ্বাস? চুঁইয়ে চুঁইয়ে রক্তের ক্ষরণ? নির্যাস জীবনমধু অনেক তো পান…

  • সন্নিধান : অনন্ত খনিজ

    হাসান হাফিজ   সুরলোকে আলোর মূর্ছনা আছে আত্মলয়ও আছে এ বন্দিশ কোনোদিনই ফুরাবার নয় রাগমালা ভুল (?) করে তোমাতে মজেছি, ভজন সাধন সিদ্ধি সে-কারণে হলো না হলো না! ধ্রম্নপদ সংগীতে আছে অনন্ত খনিজ সূক্ষ্ম মিহি অন্তরীণ বেদনাদহন ঐশিতার ধীরলয় ওঠানামা তান মর্মের মরমে পশে নতুন চরের মতো সুরলোক আবিষ্কার করি, মৃত্যুস্বাদ করি পান তারিয়ে তারিয়ে…

  • নির্বাসন দিচ্ছো দাও

    হাসান হাফিজ   আদিভাষা শরীরেরই শুধুমাত্র নয়। চৈতন্যেরও একই ভাষা। মনেরও তাহলে? এই কথা পুনরম্নক্তি দোষে দুষ্ট, তাও যাই বলে নিরঞ্জন প্রভু জানে, তোমারই তপস্যা আমি করছি আড়ালে   এই পঙ্ক্তি রচনায় উপবাসে তোমারই উপমা মনে-মনে যাচ্ঞা করে শর্তহীন ক্ষমা জানি না করবে কি-না সুন্দরী পরমা   না-ই করো দুঃখ নাই এ-কথা জানাই বিরহের প্রস্তাবনা…